বর্তমান যুগে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী এবং মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর কাজ কী-এসব জানে না, এমন লোক পাওয়া আসলেই দুষ্কর। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড -কে সচরাচর এমএস ওয়ার্ড বলে ডাকা হয়। বর্তমান প্রযুক্তি নির্ভর যুগে, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর কাজ জানা সকলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। নিজস্ব কাজ, চাকরি, ব্যবসা সকল জায়গায় মাইক্রোসফট ওয়ার্ড প্রয়োজন।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী?
আশা করছি প্রায় সবাইই জানেন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী। তারপরও একান্তই যারা জানেন না যে, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী এবং কী কাজে লাগবে এটি, তাদের জন্যই এই অংশটি। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড হলো মাইক্রোসফট অফিস গ্রুপের একটি সফটওয়্যার। এটি একটি ওয়ার্ড প্রসেসর। ১৯৮৩ সালে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন এটি প্রকাশ করে। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ওয়ার্ড প্রসেসর হলো মাইক্রোসফট ওয়ার্ড।
Microsoft Word
কোর্সটিতে যা যা পাচ্ছেন:
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর সেরা ৬টি ব্যবহার
- ডকুমেন্ট তৈরি
- সিভি ও রেজুমি তৈরি
- আয়ের উপায়
- সুন্দর লেকচার শিট তৈরি
- আর্টিকল লেখা
- পোস্টার ও কার্ড তৈরি
জেনে নিন কিভাবে ২-৩ ঘণ্টার কাজ আধা ঘণ্টায় করা যায় MS Office দিয়ে!
ডকুমেন্ট তৈরি
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড দিয়ে খুব সহজেই যেকোনো ধরনের ডকুমেন্ট তৈরি করা যায়। এছাড়াও ফরম্যাটিং, কোয়ালিটি কন্ট্রোল, পাবলিশিং থেকে শুরু করে সবই হয়ে যায়, একটি সফটওয়্যার দিয়ে।
সিভি ও রেজুমি তৈরি
সিভি ও রেজুমি তৈরির জন্য মাইক্রোসফট ওয়ার্ড অনবদ্য। প্রায় সবাই-ই এ কাজে এক নামে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডকে চেনে। অনেক মাইক্রোসফট ওয়ার্ড টেম্পলেটও পাওয়া যায় যা দিয়ে কাজ হয়ে যাবে।
আয়ের উপায়
মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের কাজ শিখে যে শুধু নিজের কাজই হবে, তেমন না কিন্তু। সাথে অন্যদের কাজ করে দিয়ে আয় করাও সম্ভব। পাশাপাশি, এটি যেহেতু বহুল ব্যবহৃত অফিস সফটওয়্যার, তাই সবখানেই এটি কাজে লাগবে। ফলে চাইলে এর কাজ অন্যদের শিখিয়েও আয়ের ব্যবস্থা হতে পারে।
সুন্দর লেকচার শিট বা নোট তৈরি
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কোচিং সেন্টার, যেকোনো জায়গায় লেকচার শিট খুবই কমন একটি বিষয়। লেকচার শিট তৈরি বেশ ঝামেলার বটে। কিন্তু মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ইউএক্স অনেক ভালো মানের হওয়ায় সুন্দর সুন্দর লেকচার শিট তৈরি করা খুব সহজ এর মাধ্যমে। এছাড়াও অনেকে নিজের পড়াশোনার নোট গুছিয়ে রাখতে পছন্দ করেন। হাতে লিখে তৈরি করা নোটের চেয়ে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে তৈরি করা নোটের সুবিধা হচ্ছে এটি পরবর্তীতে যেকোনো সময় এডিট বা পরিবর্তন করা যায়।
আর্টিকল লেখা
লেখালেখির অভ্যাস আছে? তাহলে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড আপনার জন্য সেরা সফটওয়্যার হতে পারে। লেখালেখি করার জন্য খুবই চমৎকার ও সহজ ইন্টারফেস আপনি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড থেকেই পেয়ে যাবেন।
পোস্টার ও কার্ড তৈরি
আমাদের প্রায়শই পোস্টার ও কার্ড তৈরি করতে হয়। এগুলো কোনো ফটো এডিটর দিয়ে করার জন্য বাড়তি অনেক কিছু শেখা লাগে। কিন্তু মাইক্রোসফট ওয়ার্ড দিয়ে সেটা একদম সহজ। সাধারণ কাজকর্ম জানা কেউও সুন্দর পোস্টার বা কার্ড তৈরি করে ফেলতে পারবে। সাথে আছে অনেক অনেক টেম্পলেট। যা আপনার কাজ অনেকটাই কমিয়ে দেবে।
এমনকি মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের নতুন ভার্সনে থ্রিডি নিয়ে কাজ করা আরও সহজ হয়ে গিয়েছে। ফলে আপনি বিভিন্ন থ্রিডি টেক্সট, ছবি ও অন্যান্য শেইপ যেকোনো সফটওয়্যারের চেয়ে সহজে ব্যবহার করতে পারবেন।
আরও পড়ুন:
মাইক্রোসফট এক্সেল কি? কেন শিখবেন এক্সেল এর কাজ?
মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট কি? প্রেজেন্টেশন তৈরির টিপস
একটি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ডকুমেন্ট তৈরি করবেন ও সেভ করবেন যেভাবে
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর কাজ শেখাতে এই অংশে আমি একদম শুরু থেকে কীভাবে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ডকুমেন্ট তৈরি ও সেভ করা যায় সেটা দেখাবো। এক্ষেত্রে আমি উইন্ডোজ ১১ ও মাইক্রোসফট অফিস ২০২১ এর লেটেস্ট ভার্সন ব্যবহার করে উদাহরণ দিচ্ছি। আপনি পুরনো ভার্সন ব্যবহার করলে ইন্টারফেস একটু ভিন্ন হতে পারে। তবে, নিয়ম একই হবে।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ডকুমেন্ট তৈরি করতে প্রথমে সার্চবারে গিয়ে টাইপ করুন Word। শুরুতেই আপনি এই অ্যাপটি পেয়ে যাবেন।
তারপর আপনি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড হোমপেইজে চলে আসবেন। সেখানে Blank Document অপশনে ক্লিক করুন।
এখন আপনার জন্য নতুন একটি ডকুমেন্ট তৈরি হয়ে যাবে। সেই ব্ল্যাংক পেইজে যা ইচ্ছা লিখুন। উপরের টুলবার থেকে ফন্ট সাইজ, রং, নামসহ নানানসব ফরম্যাটিং অপশন থেকে আপনার পছন্দমত যা যা প্রয়োজন ব্যবহার করুন।
চাইলে আপনি হাইপারলিঙ্ক ব্যবহারের মাধ্যমে টেক্সটকে ক্লিকেবল লিঙ্কে পরিণত করতে পারবেন। এছাড়াও ইন্টারনাল লিঙ্কিংও করা যায় মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের মাধ্যমে।
চাইলে উপরের Insert ট্যাব থেকে টেবিল, ছবিসহ বিভিন্ন জিনিস যুক্ত ও তৈরি করতে পারবেন। অনেক ধরনের নকশাও যুক্ত করা যায়। নিচের ছবির মতো আমি একটি টেবিল যুক্ত করেছি।
Insert ট্যাবের পাশে Draw ট্যাব রয়েছে। সেখান থেকে চাইলে আপনি ইচ্ছেমত আঁকিবুকি করতে পারেন নিচের ছবির মত।
Design ট্যাব থেকে আপনি বিভিন্ন ডিজাইন দিয়ে ফরম্যাটিংয়ের বাকি কাজ সারতে পারবেন। সাথে চাইলে আপনি ওয়াটারমার্কও অ্যাড করতে পারবেন। নিচের ছবিতে দেখুন, আমি ১০ মিনিট স্কুল দিয়ে ওয়াটারমার্ক করেছি।
এরপর আসে Layout ট্যাব। এখান থেকে চাইলে আপনি পেইজ সাইজ, ওরিয়েন্টেশনসহ নানান অপশন পরিবর্তন করতে পারবেন। আপনার লেখার ফরম্যাটিংয়ের জন্য অনেক অপশন এখানে পাবেন। যেমন: ব্রেক, লাইন নাম্বারিং, ইনডেন্ট, স্পেসিং, অ্যালাইনমেন্ট ইত্যাদি।
এবার আসি Reference ট্যাবে। এ ট্যাব দিয়ে আপনি সুন্দরভাবে রেফারেন্সিং করে ফেলতে পারবেন। APA, Chicago থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্টাইল রয়েছে। ফলে অ্যাকাডেমিক কাজকর্ম হয়ে যাবে অনেক সহজ। নিচের ছবিতে আমি একটি ফুটনোট যুক্ত করে দেখিয়েছি।
এর বাইরেও নানান অপশন আছে। যা বলতে গেলে দিন পেরিয়ে যাবে। আপনি নিজে থেকেই বিভিন্ন অপশন ঘুরে দেখতে পারেন। এখন অনেক তো হলো আলোচনা। এখন চলুন দেখি, কীভাবে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ডকুমেন্ট ফাইল সেভ করবেন।
প্রথমে আপনার কিবোর্ডের Ctrl বাটন ও S বাটন দু’টি একত্রে চাপতে হবে। মুহূর্তেই দেখবেন নিচের ছবির মতো একটি ডায়ালগ বক্স চলে এসেছে সেভ করার জন্য। সেই বক্সে আপনার নাম ও ফাইল লোকেশন দেখিয়ে Save বাটনে ক্লিক করবেন। আপনার ফাইলটি সেভ হয়ে যাবে।
এভাবেই স্টেপ-বাই-স্টেপ অনুসরণ করলে সহজেই মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ফাইল তৈরি ও সেভ করতে পারবেন।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর গুরুত্বপূর্ণ ফিচারসমূহ
- হোম (Home)
এই অংশে ফন্ট কালার, ফন্ট সাইজ, ফন্ট স্টাইল, টেক্সট অ্যালাইনমেন্ট, বুলেট লিস্ট, নাম্বার লিস্ট, প্যারাগ্রাফ স্পেসিং, লাইন স্পেসিংসহ সচরাচর ব্যবহৃত বিভিন্ন টুল আছে টুলবারে। ডকুমেন্ট এডিটিংয়ের বেশিরভাগ কাজকর্ম এই অংশ থেকেই হয়ে যায়। - ইনসার্ট (Insert)
এই ট্যাব থেকে বিভিন্ন জিনিস অ্যাড করা যায়। যেমন: টেবিল, শেইপ, ছবি, চার্ট, গ্রাফ, হেডার, ফুটার, পৃষ্ঠা নম্বর ইত্যাদি। হেডার ও ফুটার থেকেই আবার আরও নানান অপশন পাওয়া যায়। আবার টেবিল, ছবি ও বিভিন্ন শেইপ ইনসার্ট করার পর, সেগুলোর জন্য আরও এক বা দু’টি ট্যাব যুক্ত হয়, যেটা বা যেগুলো দিয়ে ওসব আরও ভালোভাবে এডিট করা যায়। - ডিজাইন (Design)
এই অংশে মূলত পুরো ডকুমেন্টের ডিজাইনিংয়ের কাজটি করা যায়। ডিজাইনের অপশন থেকে বিভিন্ন থিমেটিক স্টাইল চাইলে সেট করা যায়। আবার, কোনো প্যারাগ্রাফ হেডিং বা প্যারাগ্রাফ স্টাইলও বলে দেয়া যায়। ফলে টেবিল অব কনটেন্টস ক্রল করে নিয়ে আসা যায় সহজেই এছাড়াও আরও অনেক অপশন ও ফিচার আছে এখানে। - পেইজ লেআউট (Page Layout)
এই পেইজ লেআউট ট্যাব থেকে পেইজের বিভিন্ন সেটিংস পাবেন। আপনি চাইলে মার্জিন, পেইজের ওরিয়েন্টেশন (লম্বালম্বি বা আড়াআড়ি), কলাম সংখ্যা, লাইনিং, ইনডেন্টিং, স্পেসিং ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিস পরিবর্তন করতে পারবেন। পাশাপাশি আমাদের প্রায়শই পেইজ ব্রেকিং, সেকশন ব্রেকিং, লাইন ব্রেকিং, কলাম ব্রেকিং ইত্যাদি করা লাগে। সেগুলোও এখানেই পাবেন। - রেফারেন্স (Reference)
এই রেফারেন্স ট্যাব থেকে আপনি অ্যাকাডেমিক কাজকর্মের জন্য খুব সহজেই রেফারেন্স যুক্ত করতে পারবেন। যারা মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে অ্যাকাডেমিক কাজকর্ম করেন, তাদের জন্য এই অপশনটি খুবই উপকারী। এখানে বিভিন্ন স্টাইলে রেফারেন্স যুক্ত করার অপশন পাবেন। APA, Chicago থেকে শুরু করে অনেক ধরনের রেফারেন্স স্টাইল দেয়া যায়। এমনকি চাইলে আপনি নিজের তৈরি কাস্টম রেফারেন্স স্টাইলও যুক্ত করতে পারবেন। - রিভিউ (Review)
এই রিভিউ ট্যাবটি মূলত আপনার সকল কাজ শেষ হওয়ার পর দেখার ট্যাব। এখান থেকে আপনি আপনার পুরো কাজের ওভারঅল আলোচনা দেখতে পাবেন। স্পেল চেক (বানান ভুল খোঁজা), গ্র্যামার চেক (ব্যাকরণ মেলানো), থিসারাস (শব্দকোষ), শব্দের সংখ্যা, ভাষাগত রিভিউ, অনুবাদ, কমেন্ট (মন্তব্য) ইত্যাদি ট্র্যাক করা যাবে এখান থেকেই। ফলে কোনো ডকুমেন্ট পাবলিশ করার আগেই এখান থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাওয়া যাবে এবং সবকিছু ঠিক করা যাবে।
আরও পড়ুন:
গুগলে সার্চ করার ৫টি চমৎকার কৌশল
জিমেইল এর এই ১০টি ব্যবহার কি জানতে?
১০টি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড টিপস যা না জানলেই নয়
- কাস্টম ফন্ট ব্যবহার ও স্টাইল
- হেডার ও ফুটার
- হেডিং ও প্যারাগ্রাফ স্টাইল
- স্বয়ংক্রিয় সময়
- রঙিন থিম
- পেইজ লেআউট
- কলাম
- ছবির ব্যবহার
- বানান ও ব্যাকরণ নিরীক্ষণ
- পিডিএফ আকারে সেভ করা
কাস্টম ফন্ট ব্যবহার ও স্টাইল
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর কাজ করতে গিয়ে চাইলে আপনি কাস্টম যেকোনো ফন্ট ব্যবহার করতে পারবেন। এজন্য সেই ফন্টটি আপনার কম্পিউটারে ইনস্টল করা থাকতে হবে। আপনি ইন্টারনেট থেকে যেকোনো ফন্ট ডাউনলোড করে সেটা ইনস্টল করলেই হয়ে যাবে। তারপর যেই অংশে সেই ফন্টটি ব্যবহার করতে চান, সে অংশটুকু সিলেক্ট করবেন। তারপর Home ট্যাব থেকে ফন্ট লিস্টে গেলেই আপনার ফন্ট পেয়ে যাবেন। সেটি সিলেক্ট করলেই আপনার সিলেক্টেড টেক্সটে সেই ফন্টটি দেখা যাবে।
এর বাইরে আপনি ফরম্যাটিংয়ের বিভিন্ন টুল ব্যবহার করতে পারবেন। চাইলে বোল্ড, ইটালিক, আন্ডারলাইন করতে পারবেন যেকোনো টেক্সট। কিংবা ফন্ট সাইজ পরিবর্তন করে টেক্সটকে বড়ো বা ছোটো করতে পারবেন।
হেডার ও ফুটার
হেডার ও ফুটার অপশনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ দু’টি অপশন। আমরা প্রায়শই বিভিন্ন বই বা ফাইলের উপর বা নিচে একই জিনিসের প্রতি পৃষ্ঠায় রিপিট দেখতে পাই। সেটা মূলত এটা দিয়েই করা হয়। আপনি যদি পেইজের উপরের অংশে কিছু যুক্ত করতে চান, সেটা হেডার অপশন দিয়ে করতে হবে। অন্যদিকে ফুটার অপশনের মাধ্যমে পৃষ্ঠার নিচের অংশে যেকোনো কিছু যুক্ত করা যাবে।
পৃষ্ঠা নম্বরও এভাবেই যুক্ত করা হয়। উপরে বা নিচে বিভিন্ন স্টাইল ব্যবহার করে পেইজ নাম্বার দেয়া যাবে। আবার, সেটা চাইলে কোনো নির্দিষ্ট পৃষ্ঠা থেকেও শুরু করা যায়।
হেডিং ও প্যারাগ্রাফ স্টাইল
হেডিং ও প্যারাগ্রাফ স্টাইল দিয়ে সুন্দর করে ফরম্যাটিং ঠিক করা যায়। এক বা একাধিক প্যারাগ্রাফের জন্য নির্দিষ্ট হেডিং ঠিক করা যায়। সেটাকে আবার বিভিন্ন স্টাইলের মাধ্যমে পরিবর্তন করা যায়। হেডিং দেয়ার মাধ্যমে খুব সুন্দর করে টেবিল অফ কনটেন্টসের জন্য ডেটা পুল করা যায়।
স্বয়ংক্রিয় সময়
ধরুন, আপনি চাইছেন যে আপনার ডকুমেন্টের একটা জায়গায় সর্বশেষ আপডেট সময় যুক্ত থাকবে। সেটা আপনি যদি নিজে করতে চান, তাহলে প্রতিবার সময় দেখে সময়টা বসাতে হবে। কিন্তু এটা চাইলে খুব সহজেই এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবেই করা যায়। এটার জন্য মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে বিল্ট-ইন অপশন রয়েছে।
রঙিন থিম
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর কাজ করার সময় বিভিন্ন কালারফুল থিমের ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন থিম থেকে আপনার জন্য ডকুমেন্টের সাথে মিলযুক্ত থিম বেছে নিতে পারেন।
পেইজ লেআউট
পেইজ লেআউট অপশনটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে আপনি চাইলে পেইজের লেআউট বিষয়ক বিভিন্ন পরিবর্তন আনতে পারবেন। চাইলে পেইজের অরিয়েন্টেশন বদলে লম্বালম্বি থেকে চওড়া করতে পারবেন। বিভিন্ন ধরনের পেইজ ব্রেক, সেকশন ব্রেক, কলাম ব্রেক ইত্যাদি ব্রেকিং করতে পারবেন।
কলাম
কলাম অপশনটি বিভিন্ন ম্যাগাজিন বা এ ধরনের প্রকাশনায় বহুল ব্যবহৃত। এর মাধ্যমে আপনি একটি পৃষ্ঠায় একাধিক কলামে লেখা দিতে পারবেন। আবার, শুধু পৃষ্ঠায় কলামই নয়, চাইলে প্রত্যেকটি সেকশনে একাধিক কলাম করে একটি পেইজ লেআউট তৈরি করতে পারেন।
ছবির ব্যবহার
ডকুমেন্টে ছবি ছাড়া কি ডকুমেন্ট সুন্দর হয়? তাই মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর কাজ করার সময় সফটওয়্যারটি আপনাকে ছবি ব্যবহার করতে দেয়। শুধু ব্যবহার করতে দেয় বললে ভুল হবে, ছবি চাইলে এডিটও করার অপশন দেয়। এছাড়াও রয়েছে নানান টুল। যেমন: ছবি ক্রপ করা, ছবি রিসাইজ করা, ছবির ইফেক্ট পরিবর্তন, ছবির মধ্যে বিভিন্ন ফিল্টার ব্যবহার করা, ছবি কমপ্রেস করা ইত্যাদি নানান টুলস রয়েছে।
আবার, ছবিকে চাইলে ফ্লোটিং করতে পারেন। সেগুলোর অনেকগুলো মোড রয়েছে। সেটা দিয়ে আপনি চাইলে লেখার মাঝেও ছবি রাখতে পারবেন। আবার, সে ছবিকে লেয়ার-বাই-লেয়ার সাজানোও যায়।
বানান ও ব্যাকরণ নিরীক্ষণ
ধরুন, একটি ডকুমেন্ট তৈরি করলেন। কিন্তু পাবলিশ করে দেখলেন, অনেক বানান ভুল এবং ব্যাকরণগত ভুলও রয়েছে। ফলে এ থেকে বাঁচতে হলে এরকম একটি টুল থাকা খুবই চমৎকার। ফলে আপনার বানান নিয়ে বাড়তি চিন্তা করতে হবে না। ভুল হলেই সেটা মার্ক করে দেখিয়ে দেবে। পাশাপাশি ব্যাকরণগত ভুলও ঠিক করে দেবে। এই ভুল সংশোধনের ফিচার ইংরেজি ভাষার ডকুমেন্টে বেশি কাজে আসে।
পিডিএফ আকারে সেভ করা
প্রায়শই বিভিন্ন জায়গায় ডকুমেন্ট পিডিএফ আকারে পাঠাতে হয়। কেননা পিডিএফ-এ ফরম্যাটিং একদমই পরিবর্তন হয় না। আপনি যেভাবে সেভ করবেন, সেভাবেই আজীবন থাকবে। এমনকি ফন্ট সংক্রান্ত সমস্যাও তৈরি করবে না। এজন্য ফাইল মেন্যুতে ক্লিক করতে হবে। বাম পাশে সেভ অ্যাজ পাওয়া যাবে। সেখানে ক্লিক করলে সেভ করার অপশন পাওয়া যাবে।
সেখান থেকে ফাইল সেভ করার লোকেশন বের করতে হবে। তারপর ইচ্ছেমত ফাইল নেম দিতে হবে। নিচের ফাইল টাইপ বক্স থেকে পিডিএফ সিলেক্ট করে সেভ করলেই ফাইলটি পিডিএফ হয়ে যাবে।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
Microsoft Office 3 in 1 Bundle
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ব্যবহার কীভাবে শিখবেন
আপনি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড নানান উপায়ে শিখতে পারেন। শেখার উপরে ভিত্তি করে এগুলোকে প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো হলো:
- অনলাইন
- অফলাইন
এখানে সহজে শেখার কিছু উপায় আলোচনা করা হলো:
অনলাইন
অনলাইন কোর্স
এটিই সবচেয়ে সহজ এবং ভালো উপায় মাইক্রোসফট ওয়ার্ড শেখার জন্য। বিভিন্ন জায়গা থেকেই অনলাইনে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের কোর্স করতে পারেন। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোর্সগুলো ইংরেজিতে হয়। তাই, আপনি চাইলে ১০ মিনিট স্কুল থেকেও মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের কোর্সটি করতে পারেন। কেননা এখানে কোর্সটি বাংলায় হওয়ায় খুব সহজে শেখা যাবে। উপরন্তু, কোর্স শেষে পেয়ে যাবেন একটি সার্টিফিকেট। যা আপনার চাকরি বা বিভিন্ন কাজে অনেক সহায়ক হবে। কোর্সটি করতে বা কোর্স সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
ইউটিউব
ইউটিউবের মাধ্যমে বিনামূল্যেও আপনি এ সংক্রান্ত প্রচুর টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন। এটি যদিও কোর্সের মতো গোছানো হবে না। কিন্তু ইউটিউব টিউটোরিয়ালও পর্যাপ্ত, যদি শিখতে চান। ইউটিউবে বাংলা, ইংরেজি থেকে শুরু করে যেকোনো ভাষায়ই টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়।
ওয়েবসাইট
বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকেও অনেক টিউটোরিয়াল পাবেন। ইংরেজিতে যদিও বেশি টিউটোরিয়াল, তবুও বাংলায়ও অনেক টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন।
অফলাইন
নিজে শেখা
চাইলে আপনি নিজে থেকেও শিখতে পারেন, কারো সাহায্য ছাড়া। এক্ষেত্রে নিজেকে নিয়ে কিছু সময় দিতে হবে। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড চালু করে এই লেখার গাইডলাইন থেকে নিজে নিজে শেখার চেষ্টা করুন। বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে দেখুন তার এফেক্ট কী হয়। এভাবে চাইলে নিজেও শিখতে পারবেন।
ট্রেনিং সেন্টার
চাইলে অফলাইনে আপনি যেকোনো ট্রেনিং সেন্টার থেকেও শিখতে পারেন। এটার মাধ্যমেও আপনি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড শিখতে পারবেন খুব সহজেই। এখানে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এর মাধ্যমে আপনি কারো থেকে হাতে-কলমে শিখতে পারেন। সরাসরি সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড শর্টকাট কী
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- Microsoft Office Starter Course
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
- Microsoft Word Course by Sadman Sadik
- Microsoft Excel Course by Abtahi Iptesam
- Microsoft PowerPoint Course by Sadman Sadik
- স্মার্ট প্রফেশনাল বান্ডেল Course
- Web Design Course (by Fahim Murshed)
- Communication Masterclass Course (by Tahsan Khan)
- Facebook Marketing Course (by Ayman Sadiq and Sadman Sadik)
- Data Entry দিয়ে Freelancing Course (by Joyeta Banerjee)
- SEO Course for Beginners (by Md Faruk Khan)
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন