হতে চাও চিকিৎসক? প্রস্তুতি শুরু করো এখন থেকেই

June 14, 2018 ...

ছোটবেলা থেকে বাবা-মায়ের পছন্দে হোক অথবা নিজের ইচ্ছা থেকেই হোক, অনেকেই ডাক্তার হতে চায়। কেউবা স্কুল কলেজে পড়ার সময়, Grey’s anatomy সিরিজে হাসপাতালে কাজ করা চিকিৎসকদের দেখেও ডাক্তার হতে চায়। উৎসাহ বা ইচ্ছাটা যখন থেকে যেভাবেই আসুক না কেন, মনে রাখতে হবে এ কঠোর পরিশ্রমের চিকিৎসা পেশাতে আসার পথটা সহজ না। তেমনি চিকিৎসক হওয়ার পরের জীবনেও পরিশ্রমটা চালিয়ে যেতে হয়।

যারা ভবিষ্যত জীবনে ঐ সাদা এপ্রনটা পরে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখো, তাদের জন্য বলবো, এখন থেকে নিজেকে অল্প অল্প করে তৈরি করো। কিছু বিষয় মেনে চলতে পারো, যা আমি আজ বলে দেবো:

রেজাল্ট ভালো করতে হবে:

Medical books, how to be a doctor, preparations to become a doctor

মেডিকেল এডমিশন টেস্টে প্রতি বছর ৫০ হাজারেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দেয়। চান্স পায় সরকারি, বেসরকারি, ডেন্টাল মিলিয়ে ছয় বা সাত হাজার। আর তোমার সাথে যারা পরীক্ষা দেবে তারা অধিকাংশ দু’টি এ-প্লাস পাওয়া। তাই প্রচণ্ড প্রতিযোগিতামূলক এই এডমিশন টেস্টে নিজের দক্ষতা প্রমাণের জন্য স্কুল-কলেজ জীবন থেকেই রেজাল্ট ও পড়াশোনার প্রতি যত্নশীল হতে হবে।

আমরা অনেক সময়ই কিছু ব্যতিক্রম ছাত্র-ছাত্রী দেখি, কোন এ-প্লাস না পেয়েও যারা এডমিশন টেস্টে খুব ভালো স্কোর করে মেডিকেলে চান্স পায়। কিন্তু ব্যতিক্রম কখনো উদাহরণ হতে পারে না। তোমার স্কুল/কলেজ জীবনের সামান্য অসচেতনতা যাতে তোমার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নটা নিভিয়ে না দেয়।

পড়াশোনাকে ভালবাসতে শেখো:

মেডিকেল কলেজ থেকে শুরু করে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত একজন ডাক্তারের পড়াশোনা করা লাগে। বুঝে বুঝে পড়তে হয় ও দরকারভেদে মুখস্ত করতে হয়। তাই পড়াশোনাটাকে চাপ কিংবা চিন্তার বিষয় মনে করা যাবে না। জানার জন্য পড়তে হবে ও সব বিষয় ইন্টারেস্ট খুঁজে নিতে হবে। তবেই চিকিৎসা পেশায় ভালো করতে পারবে।


cover 19 09 18আরো পড়ুন: Career Planning: ভবিষ্যতে কোন পেশা বেছে নেব?


পড়াশোনা জানার জন্য, শুধু পরীক্ষা পাশের জন্য না:

ভালো স্টুডেন্ট মানে শুধু জিপিএ-৫ না। একজন ভালো স্টুডেন্ট প্রতিটা বিষয় যা সে পড়ছে ভালোভাবে জানে, বুঝে ও পড়ে। ফলাফলস্বরূপ পরীক্ষার রেজাল্টও ভালো হয়। কিন্তু আমি শুধু জিপিএ-৫ পাবার উদ্দেশ্যে পড়াশোনা করছি এরকম যাতে না হয়। স্কুল-কলেজে যদি কেউ Biology, Chemistry ভালোভাবে পড়ে তার জন্য মেডিকেলের প্রথম দুই বছরের পড়াশোনাটা বেশ মজা লাগবে। স্কুল, কলেজ জীবনের পড়াশোনাটা বেসিক। এটা না জানলে মেডিকেলের পড়া বুঝা অত্যন্ত কষ্টকর হবে তোমার জন্য।

জোর দাও মানবদেহ চ্যাপ্টারে:

আমরা অনেকেই Biology-এর মানবদেহ চ্যাপ্টারটা ভয় পেয়ে কম পড়ি। অথচ এই মানবদেহ চ্যাপ্টার মেডিকেলের প্রথম দুই বছরের Anatomy সাবজেক্টের বেসিক। তাই মানবদেহ যার যত ভালভাবে পড়া থাকবে তার জন্য Medical-এর Anatomy-এর কঠিন সাবজেক্টটা ধরতে সহজ হবে।

ইংরেজী টার্মগুলা পড়তে ভুলো না:

Biology, Chemistry বইতে বাংলা টার্ম-এর পাশে ব্রাকেট দিয়ে তার ইংরেজি শব্দ লেখা থাকে যা আমরা পড়ি না। এটা করা যাবে না। কারণ মেডিকেলের পড়াশোনা পুরাটা ইংরেজিতে, কোন বাংলা শব্দের ব্যবহার নেই। তাই স্কুল-কলেজ থেকেই যদি তোমরা অভিস্রবন এর পাশাপাশি তার ইংরেজি Osmosis, অন্ত্র-এর পাশাপাশি তার ইংরেজি Intestine পড়ে রাখো, বিশ্বাস করো আর না করো মেডিকেলের কঠিন পড়াশোনাও পরবর্তীতে খুব সহজে ধরতে পারবে। তোমাদের পাঠ্যবইতে এমন হাজারও শব্দ আছে, দাগিয়ে দাগিয়ে পড়ে ফেলো।

মুখস্ত পড়া বলার অভ্যাস করো:

মেডিকেল জীবনে ভাইভা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ভাইভাতে পাশ করাটাও কঠিন। টিচার যে প্রশ্ন ধরবেন, তা মুখে বলতে হয়। তাই স্কুল-কলেজ জীবন থেকেই আমরা চেষ্টা করবো পড়া মুখস্ত করে তা পাশের বন্ধু, বড় কেউ অথবা শিক্ষকের কাছে পড়া দিতে। এতে করে যদি কথা বলার কোন জড়তা থাকে, তা কেটে যাবে।

মেডিকেল এডমিশন কোর্স ২০২২

কোর্সটিতে শিক্ষার্থীরা পাবে:

  • ২ ঘন্টা করে ৮৬ টি স্পেশাল লাইভ ক্লাস
  • মডেইলি এক্সাম, মান্থলি এক্সাম, পেপার ফাইনাল, সাবজেক্ট ফাইনাল, ৫ সেট পূর্ণাঙ্গ মডেল টেস্ট - সলভসহ এমসিকিউ এর উত্তরপত্র প্রদান
  •  

    হয়ে যাও Extrovert:

    অনেকেই খুব চুপচাপ, কথা বলার অভ্যাসটাও কম। এটা খারাপ না। তবে একজন চিকিৎসক এর জন্য এটা মোটেও ভালো কোন গুণ না। কারণ চিকিৎসককে হাজারটা রোগী দেখতে হয়, তাদের সাথে কথা বলতে হয়, বার বার এসে ফলো আপ করতে হয়। তাই কথা বলা ও মানুষের সাথে মেশার অভ্যাসটা আয়ত্ত করতে হবে।

    বিতর্ক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য ভলান্টিয়ার-এর কাজ করা এ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া স্টুডেন্ট পড়ানোর অভ্যাসটাও এক্ষেত্রে কাজে দেবে।

    ফাঁকিবাজিটা বাদ দিতে হবে:

    মেডিকেলে প্রচুর পড়ার প্রেসার। পড়াশোনাটা সেখানে করা লাগে নিয়মিত। তাই তোমরা যারা নিয়মিত না পড়ে, পরীক্ষার আগে কোমর বেঁধে পড়া শুরু করো, তাদের জন্য মেডিকেল নয়। এখন থেকেই প্রতিদিন অল্প করে পড়ার অভ্যাস করো। এতে পরীক্ষার আগে চাপও পড়বে না। রেজাল্টও ভালো হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে চিকিৎসা পেশায় গেলে এ অভ্যাসটা অনেক কাজে দেবে।

    how to be a doctor, preparations to be a doctor, medical preparation

    হতে হবে পরিশ্রমী :

    মেডিকেলে ভালো করার প্রধান উপায় “কঠোর পরিশ্রম”। মেধার চেয়ে এখানে পরিশ্রমের মূল্য বেশি। তাই এখন থেকে পরিশ্রম করো। আমাকে কষ্ট করতে হবে ভালো ডাক্তার হতে হলে-এ ধরনের মানসিকতা রাখতে হবে।

    দয়াশীল, ধৈর্যশীল  হওয়া:

    একজন চিকিৎসককে যেমন মেধাবী, পরিশ্রমী হতে হয়। তেমনি একজন ধৈর্যশীল, বিবেকবান, ভালো মানুষ হতে হয়। আজ যে তোমার কাছে চিকিৎসা নিতে আসবে, সে ব্যক্তিগতভাবে তোমার কিছু না হলেও অন্য কারও পরিবারের সদস্য। তাই তাকে নিজ পরিবারের সদস্যের মতো যত্ন নিয়ে দেখাটাও তোমার দায়িত্ব। ভালো মনের মানুষ হলে ভালো ডাক্তার হওয়াটা সহজ। ধৈর্য্য মেডিকেল জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।

    মেডিকেলে প্রতিটি পরীক্ষায় ৬০% মার্ক পেতে হয় পাশ করতে হলে। না হলে ফেল এবং সেই পরীক্ষা আবার দিতে হবে। অনেক ভালো স্টুডেন্টও মেডিকেলে এসে এ কারণে ফেল করে ও হতাশ হয়ে যায়। শুধু মেডিকেল জীবনে না, চিকিৎসক হওয়ার পরেও এ পাশ ফেলের যাত্রা অব্যাহত থাকে পোস্ট গ্রাজুয়েশনে। তাই রাগ, হতাশা এসব কিছু এখন থেকেই কন্ট্রোল করতে শেখো। জিম করা, ইয়োগা করা, নিজেকে নাচ, গান ইত্যাদিতে ব্যস্ত রাখা এক্ষেত্রে কাজে দেয়।

    মেডিকেল এডমিশন কোশ্চেন সল্ভ কোর্স

    কোর্সটিতে যা যা থাকছে

  • বিগত ১৫ বছরের মেডিকেল কোশ্চেন ব্যাংক সমাধান
  • ৫টি বিষয়ের ওপর মোট ১৫টি মক টেস্ট
  •  

    আঁকাআঁকিটা শিখে ফেলো ভালভাবে:

    স্কুল-কলেজে পাকস্থলী, হৃদপিন্ড ইত্যাদি নানাবিধ ছবি আঁকতে হয় আমাদের। মজার ব্যাপার হলো চিকিৎসক হওয়া পর্যন্ত এমনকি সারাজীবন এ ছবিগুলো মাথায় রাখতে হবে। প্রত্যেকটি ছবির লেবেলিং খুব ভালো ভাবে জানা, বোঝা ও আঁকতে পারা মেডিকেল-এর পড়াশোনায় কাজে  দেবে।


    2 June 2 Blog Cover 1আরো পড়ুন: নেতৃত্ব কী? নেতৃত্বের গুণাবলী কী কী? জেনে নিন বিস্তারিত


    লীডারশিপ দক্ষতা অর্জন:

    একজন চিকিৎসক স্বাস্থ্য খাতের লীডার। তাকে রোগী, নার্স, নিজের সিনিয়র, জুনিয়র, ঔষধ কোম্পানির লোক সবার সাথে Deal করতে হয়। তাই নেতৃত্বদান একজন ডাক্তার-এর বড় দক্ষতা। স্কুল জীবন থেকে রেড ক্রিসেন্ট, রেড ক্রস, স্কাউট ইত্যাদি কার্যক্রমে নিজেকে যুক্ত করো । এতে একদিকে যেমন কাজ শিখবে, পরবর্তীতে এই সার্টিফিকেটগুলো কর্মজীবনে কাজে দিবে।

    ব্যবহারিক কাজে দক্ষতা অর্জন :

    স্কুল, কলেজ জীবনে অনেকেই আমরা Biology-তে ব্যাঙ কাটি না, তেলাপোকা কাটি না। Chemistry-তে Practical-গুলো না করে লিখে দেই। ধরতে পারবো না, করতে পারবো না- এসব করা যাবে না। কারণ এসব কাজ করিয়ে তোমাকে খুবই ছোট আঙ্গিকে হাতের কাজ শেখানো হয় যাতে পরবর্তীতে তোমার জন্য ল্যাব-এর কাজ করা, মাইক্রোস্কোপে স্লাইড বোঝা কিংবা অপারেশন-এর এসিস্ট করার মতো হাতের কাজ করতে মজা লাগে।

    তো জেনে নেওয়া গেল কিছু ব্যাপার যা এখন থেকে মেনে চললে মেডিকেলের চলার পথটা সহজ হবে। তোমাদের মধ্যে অনেকেই ভবিষ্যতে চিকিৎসক হবে। হবু ডাক্তারদের জন্য অনেক শুভকামনা।

    এই লেখাটির অডিওবুকটি পড়েছে তাওহিদা আলী জ্যোতি


    মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:



    ১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com

    ১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/

    ১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com

    ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩

    দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই দেশসেরা শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হও ইন্টারেক্টিভ লাইভ ক্লাসে, নাও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির সম্পূর্ণ সিলেবাসের 💯তে💯 প্রস্তুতি!

    আপনার কমেন্ট লিখুন