পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। সামনেই নতুন ব্যাচ নতুন ভার্সিটি জীবন শুরুর অপেক্ষায়। তোমাদের অনেক কষ্টের ফসল এই ভার্সিটিতে চান্স পাওয়াটা। সব ভার্সিটিতেই দেখা যাচ্ছে চার-পাঁচটা ‘কাঙ্ক্ষিত বিষয়’, সবাই সেই বিষয়গুলো নিয়েই পড়তে চায়। ভর্তি কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর দেখা যায় অল্প কিছু ছাত্র-ছাত্রী তাদের মনমতো বিষয়গুলো পায়, বাকিদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে তারা যেই বিষয়ের স্বপ্ন দেখেছিল সেই বিষয়টি পায়নি। তোমরা যারা সেই বিষয়গুলো নিয়ে পড়তে পারছো না; তোমাদের মনের মধ্যে একধরণের হতাশা কাজ করা শুরু করে। আবার দেখা যাচ্ছে সবার মনে একটা কৌতূহল কাজ করে, কোন বিষয়টা চাকরির বাজারে প্রাধান্য পাবে।
এইসব ভেবেই অনেক ছাত্র-ছাত্রী ভার্সিটি জীবনের প্রথম থেকেই সে যেই বিষয়টি নিয়ে পড়ছে তার উপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ফলশ্রুতিতে দেখা যাচ্ছে তোমাদের অবস্থাটা নিজের পায়েই নিজে কুড়াল মারার মতো। এইটাই বুঝছো না যে তোমাদের ভার্সিটি জীবনটা কেমন হওয়া উচিত ছিলো। শুধুই কি তোমার বিষয়টি তোমার ক্যারিয়ার গড়ে দিবে!
ক্যারিয়ার গড়ে নিতে হয় নিজেকে, এইখানে তুমি কোন বিষয় নিয়ে পড়ছো সেটার প্রভাব তেমন নেই বললেই চলে। তোমার যোগ্যতা থাকলে অবশ্যই তুমি সফল হবে, কোন বিষয়ের ছাত্র ছিলে, সেটা কোন মুখ্য ব্যাপার নয়।
এই সময়টার মাঝেই নিজকে গড়ে তুলতে হবে যেন যেকোন পরিস্থিতির মোকাবিলা করার মত সামর্থ্য তোমার হয়ে ওঠে।
কেমন হওয়া উচিত ভার্সিটি জীবন?
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের লেখাপড়া হওয়া উচিত আনন্দ এবং উৎসাহময় , এখানে জ্ঞানের চর্চা হবে এবং জ্ঞানের সৃষ্টি হবে। আমাদের সবার প্রিয় জাফর ইকবাল স্যার বলেছিলেন “একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসরুমের ভেতরে একজন ছাত্র বা ছাত্রী যেটুকু শিখে তার চেয়ে অনেক বেশি শেখে ক্লাসরুমের বাইরে!” ক্লাসরুমের যে ছাত্রটি পরীক্ষায় খুব ভাল ফলাফল করছে বাস্তব জীবনে তারাই যে সবসময় খুব সাফল্য দেখাচ্ছে তা কিন্তু পুরোপুরি সত্য নয়।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
Microsoft Office 3 in 1 Bundle
ক্লাসরুমের সবচেয়ে অমনোযোগী ছাত্রটি, যাকে সবাই তাচ্ছিল্যের চোখে দেখে, দেখা যাচ্ছে সে-ও হয়তো একদিন অনেক বড় প্রতিষ্ঠানে একটি সম্মানীয় পদে জব করছে, দিচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ একটি দলের নেতৃত্ব। তাই একজন ছাত্রের পড়ালেখার বুদ্ধিমত্তার পাশাপাশি অন্য বুদ্ধিমত্তাগুলোকেও খুঁজে বেড়ানো উচিত।
ভার্সিটি জীবনের চারটি বছর। ২০০-২৫০ সপ্তাহ। এই জীবনটা তোমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় এবং সবচেয়ে সুন্দর সময়। তোমাকে এই সময়টার মাঝেই নিজকে গড়ে তুলতে হবে যেন যেকোন পরিস্থিতির মোকাবিলা করার মত সামর্থ্য তোমার হয়ে উঠে। একাডেমিক ক্লাস, এসাইনম্যান্ট,পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের উপযোগী।
তোমার CGPA খুব ভালো করার জন্য সারাদিন পড়ালেখা করতে হবে না, নিয়মমাফিক পড়ালেখা আর পরীক্ষার আগের সময়গুলো ঠিকভাবে কাজে লাগালেই CGPA ভালো রাখা যায়। একজন শিক্ষার্থীর ভার্সিটি জীবনটা কেমন হওয়া উচিত? তোমার প্রথম কাজটি হল পড়ালেখা ঠিক রাখা যেন তোমার CGPA স্কোর ভালো থাকে। বলছি না ক্লাসের সবচেয়ে বেশি CGPA তোমার হতে হবে। এর পাশাপাশি তোমাকে বিভিন্ন বিষয়ের উপর দক্ষতা বাড়াতে হবে। বিভিন্ন গঠনমূলক কার্যক্রমের সাথে নিজেকে যুক্ত রাখতে হবে।
ভার্সিটি জীবনের চারটি বছর শেষে লক্ষ্য করে দেখবে তোমার মাঝে personality, extra curricular activities যেটা তোমার পরবর্তী জীবনে experience হিসেবে কাজ করবে এবং সব শেষে skill আছে কিনা। এই তিনটির মেলবন্ধন তোমার ভার্সিটির পরবর্তী জীবনের জন্য ঢালস্বরূপ কাজ করবে।
আরো পড়ুন: কী হবে এতো পড়ালেখা করে?
Extra curricular activities-এর সাথে জড়িত থাকা:
পাবলিক ভার্সিটিগুলোতে বিভিন্ন ধরনের সংগঠন রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন, বিজ্ঞান সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন , debating club থেকে শুরু করে নানা ধরনের যুগোপযোগী সংগঠন রয়েছে। তুমি একজন introvert ছেলে হলে এইসব সংগঠনের সাথে কাজ করার ফলশ্রুতিতে তোমার মাঝে সবার সাথে মেলা-মেশার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে; একটি টিমকে লিড দেওয়ার মতো ক্ষমতা হবে।
ঘরে বসে Freelancing
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
স্কিল বাড়ানোই হোক তোমার লক্ষ্য :
ভার্সিটি জীবনেই তোমার মাঝে তিনটি skill জাগ্রত করতে হবে। presentation skill, communication skill অপরটি হল public speaking। যে কোনো ভাইভা, প্রেজেন্টশনের সময় দেখা যাচ্ছে আমরা অনেক কিছু জানার পরেও বুঝিয়ে বলতে পারছি না। এই দুইটি স্কিলের বড়ই অভাব আমাদের মাঝে; যার জন্য নানা জায়গায় বাধার সম্মুখীন হচ্ছি।
তুমি হয়তো কোন একটি বিষয়ে খুব বেশি জানো কিন্তু পরীক্ষকের সামনে বিষয়টি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারো নাই, অপরদিকে অন্য একজন তোমার থেকে কম জানার পরেও তোমার থেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য পরীক্ষক কিন্তু নম্বরটা তাকেই বেশি দেবেন। তাই অবশ্যই এই তিনটি স্কিল তোমার মাঝে থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। শুধুই যে এই তিনটি বিষয়ের উপর দক্ষ হলেই হলো, এমনটা কিন্তু না, নানা রকম গঠনমূলক বিষয়ের উপর দক্ষ হয়ে উঠতে পারো।
তুমিই তোমার অভিভাবক:
পাবলিক ভার্সিটির জীবনটাই হল মুক্ত, স্বাধীন। তোমার কোনটা করা উচিত, কোনটা উচিত না সেটা বোঝার ক্ষমতা তোমার মাঝে থাকতে হবে। এখানে তোমার অভিভাবক তুমি নিজেই। পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পাওয়া মানেই কিন্তু জীবনের সব না। এটাও সাফল্য পাওয়ার একটি সিঁড়ি মাত্র। সুতরাং ভার্সিটি জীবনটা হয়ে উঠুক পড়ালেখা এবং গঠনমূলক কার্যক্রমের সমন্বয়। তাহলেই তোমার ভার্সিটি জীবনটি সার্থক হয়ে উঠবে।
সবশেষে জাফর ইকবাল স্যারের কথাটাই আবারো মনে করিয়ে দেই, ক্লাসরুমের ভেতরে তোমরা যেটুকু শিখবে তার থেকে অনেক বেশি শিখবে ক্লাসরুমের বাইরে! ম্যাক্সিম গোর্কির একটি বইয়ের নাম ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়’ (My Universities) – এটি একটি অসাধারণ বই যেখানে তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলেছেন।
মজার ব্যাপার হচ্ছে ম্যাক্সিম গোর্কি কিন্তু কখনও কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেননি-এই পৃথিবীটাই ছিল তার বিশ্ববিদ্যালয়।
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- Adobe Illustrator Course (by Mohammad Yeasir)
- Graphic Designing with Photoshop Course (by Sadman Sadik)
- Graphic Designing with PowerPoint Course (by Anisha Saiyara Taznoor)
- মোবাইল দিয়ে Graphic Designing Course (by Sadman Sadik)
- Facebook Ads Mastery by Mark Anupom Mollick
- Web Design Course (by Fahim Murshed)
- Communication Masterclass Course by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course (by Ayman Sadiq and Sadman Sadik)
- Data Entry দিয়ে Freelancing Course (by Joyeta Banerjee)
- SEO Course for Beginners (by Md Faruk Khan)
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন