পুরোটা পড়ার সময় নেই ? ব্লগটি একবার শুনে নাও !
ছোটবেলা থেকেই আমরা লেখালেখি করে আসছি, তাই না? হ্যাঁ, যা শিখেছি তা পরীক্ষার খাতায় কলমের খোঁচায় লিখে এসেছি। এখনকার যুগে পরীক্ষার খাতায় শুধু মুখস্ত লিখলেই হয় না, সৃজনশীল পদ্ধতি আসার কারণে নিজের জ্ঞান ব্যবহার করেও লিখতে হয়। এছাড়াও নোট খাতায় প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোও টুকে রেখেছি, কেউ কেউ হয়তো গল্প-কবিতা লিখে আশেপাশের মানুষগুলোকে তাক লাগিয়ে দিয়েছি।
একটা জিনিস খেয়াল করে দেখেছ? একটা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর একই টপিক পড়ে একেকজন একেকরকম লিখে আর একেকরকম নাম্বারও পায়। অথবা অনেকেই গল্প-কবিতা লিখে, কিন্তু কারোটা একটু অন্যরকম হয়, কেমন যেন একটু বেশি আকর্ষণ করে, তাই না? এর কারণ কী? কারণ হচ্ছে তার লেখার দক্ষতাটা একটু বেশি। সে জেনে বা না জেনে এমন কিছু কৌশল ব্যবহার করে যা তার লেখাকে গ্রহণযোগ্য করে তোলে। চলো জেনে নিই এমন কিছু উপায় যা দিয়ে তোমার লেখাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবে তুমিও।
১। মূল বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানো:
তুমি যে বিষয় নিয়ে লিখছো সে বিষয় সম্পর্কে তোমার যথাযথ জ্ঞান থাকা জরুরি। তাই কোন কিছু নিয়ে লেখার আগে সেই বিষয় সম্পর্কে ভালো করে জেনে নাও। তুমি যদি একটা বিষয় সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখো তাহলে সেটা নিয়ে তুমি স্বচ্ছন্দে লিখতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য যোগ করতে পারবে। যখন কোন কিছু নিয়ে লিখতে যাবে, একবার গুগল সার্চ করে তার উপর একটু পড়াশোনা করে নিতেই পারো। একই কথা খাটে পড়াশোনার প্রসঙ্গেও। যে টপিকটা পড়ছ, গুগল সার্চ করে তার সম্পর্কে একটু বেশি জেনে নিতেই পারো সময় থাকলে।
২। সংক্ষিপ্ত খসড়ায় এঁকে ফেলো আইডিয়াটি:
কোন লেখা শুরু করার আগে একটা খসড়া এঁকে ফেলাটা জরুরি। লেখার একটা খসড়া এঁকে নেয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল তুমি সহজেই বুঝতে পারবে তোমাকে কী কী লিখতে হবে এবং কী কী তথ্য তোমার প্রয়োজন হবে।লেখার আগে অন্তত পয়েন্টগুলো সাজিয়ে নিলে গুছিয়ে লিখতে সুবিধা হয়।
সময়স্বল্পতা থাকলে খসড়া সাজাতে পারো মাথার ভেতরেই। যেমনটা হতে পারে পরীক্ষার হলে। প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর করার আগে প্রশ্নটা পড়ে ত্রিশ সেকেন্ড ভেবে নাও কী লিখবে খাতায়। সেই অনুযায়ী লিখা শুরু কর।
সুন্দর ও দ্রুত ইংরেজি হাতের লেখা
এই কোর্সটি থেকে যা শিখবেন
৩। বিষয়বস্তুটিকে দেখো পাঠকের চোখ দিয়ে:
লেখার বিষয়বস্তু সমৃদ্ধ না হলে কিন্তু তুমি পাঠককে আকর্ষণ করতে পারবে না। বিষয়টিকে পাঠকের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করো। ভেবে নাও পাঠকের কী কী বিষয়ে সমস্যা হতে পারে, সে সমস্যাগুলোর সমাধান দাও। কোন শ্রেণির পাঠকের উদ্দেশ্যে লিখছো সেটাও ভাবো। যে লেখাটি তুমি ছোটদের জন্য লিখছো সেটা তো আর বড়দের লেখার মত গুরুগম্ভীর হলে চলবে না, তাই না?
লেখাকে প্রতিষ্ঠিত করতে মনীষীদের বাণী থেকে উদ্ধৃতি দিতে পারো। এছাড়া প্রাসঙ্গিক পরিসংখ্যান, চার্ট কিংবা গ্রাফও ব্যবহার করা যায়। তবে, যাই ব্যবহার করো না কেন, তা যেন সঠিক হয়। সম্ভব হলে তথ্যসূত্র উল্লেখ করে দাও।
৪। মনোযোগী হও খুঁটিনাটি বিষয়গুলোতে:
লেখার সময় ছোটখাট কিছু স্কিলের দিকে মনোযোগ দেয়া বেশ জরুরী। চলো দেখে নেই বিষয়গুলো কী কীঃ
- বাক্য গঠনের দিকে মনোযোগ দাও। সংক্ষিপ্ত কিন্তু গোছানো এবং সহজ বাক্য পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করে। জটিল বাক্য যথাসম্ভব কম ব্যবহার করো।
- লেখার মাঝে নিজেই প্রশ্ন করো এবং নিজেই উত্তর দাও। এতে কথোপকথনের আবহ আসে এবং পাঠক নিজেকে লেখার সাথে সহজে relate করতে পারে।
- এক বিষয় থেকে আরেক বিষয়ে যেতে কিছু মসৃণ বাক্য ব্যবহার করো। হুট করে বিষয় পরিবর্তন পাঠকের মনে বিরক্তির উদ্রেক করে।
- দুর্বোধ্য বিষয় বোঝানোর সময় রূপকের ব্যবহার কিন্তু বেশ কাজে দেয়! চেষ্টা করে দেখতে পারো!
- যেকোন বিষয় ভালোভাবে বোঝাতে দুই তিন লাইনের গল্প ব্যবহার করতে পারো। এতে বিষয়বস্তু বুঝতে সহজ হয় এবং পাঠক একঘেয়ে বোধ করে না।
- শিরোনাম নির্বাচনে কৌশলী হও। অসাধারণ একটি লেখাও হয়ত পাঠকপ্রিয়তা না পেতে পারে, যদি শিরোনামটি আকর্ষণীয় না হয়। কিছুটা ছন্দের ব্যবহার করে সুন্দর শিরোনাম দেয়া যায়।
লেখার সময় এই বিষয়গুলো একটু খেয়াল করলে তোমার লেখা সহজেই আকর্ষণীয় হতে পারে!
আরও পড়ুন:
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী? জেনে নিন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড -এর কিছু কার্যকরী ব্যবহার
নামাজ পড়ার নিয়ম: কোন নামাজ কত রাকাত ও নামাজের ফরজ কয়টি?
৫। খানিক লিখে নিজেই পড়ে দেখো:
যখন কিছুটা লেখা হবে তখন আরেকবার দেখে নাও। এভাবে একটু পর পর দেখে নাও আগে কী লিখেছ। এতে করে তুমি বুঝতে পারবে তোমার লেখা প্রাসঙ্গিক হচ্ছে কিনা আর যা লিখেছো তার সাথে যা লিখছো তার সম্পর্ক আছে কিনা।
এর মাধ্যমে আরেকটা সুবিধা পাওয়া যায়। লেখার মধ্যে যদি কোন ভুল থাকে তা সহজেই চোখে পড়ে যায়। এতে করে ভুলগুলো শুধরে নেয়া যায় খুব সহজেই।এছাড়া পুরো লেখা শেষ করে আরেকবার চোখ বুলিয়ে ভুলগুলো ঠিক করে নিতে ভুলো না যেন!
৬। লেখা শেষ করে অন্যকে দেখাও:
না, আমি পরীক্ষার মাঝে পাশের বন্ধুকে দেখানোর কথা বলছি না। পরীক্ষার খাতা তো শিক্ষকই দেখবেন। যদি গল্প-কবিতা লেখার অভ্যাস থাকে তাহলে তা অন্যদেরকে দেখানোর কথা বলছি। নিজের লেখাগুলোকে প্রকাশ করো অন্যের কাছে। বন্ধুদের দেখাও, ভালো লেখালেখি করে এমন কাউকে দেখাও। নিজের ভুলত্রুটি সহজে চোখে পড়তে চায় না। তবে নির্ভরযোগ্য কাউকে দেখিয়ে নিলে সে সহজেই তোমার ভুলগুলো দেখিয়ে দিতে পারবে।
প্রচুর পরিমাণে লেখালেখি করলে কোথায় কোথায় ভুল হচ্ছে তার ধারণা পাওয়া যায়
অনেকেই নেগেটিভ মন্তব্য করতে পারে, তবে তাতে দমে যেও না। চেষ্টা করবে এমনভাবে লিখতে যাতে তাদের নেগেটিভ মন্তব্য পজিটিভ হতে বাধ্য হয়।
৭। পড়, পড়, পড়:
লেখালেখি ভালো করার আরেকটা উপায় হচ্ছে পড়া। তুমি যত বেশি পড়বে, তোমার তত ধারণা আসবে ভালো লেখকরা কীভাবে লিখেন, তোমার কীভাবে লেখা উচিত। নিজে পড়ার সময় লক্ষ্য করো, কোন ধরণের শব্দ ব্যবহার করা হলে তুমি পড়তে আগ্রহী হয়ে ওঠো। একজন ভালো লেখকের বৈশিষ্ট্য হলো পাঠকের আগ্রহ ধরে রাখা।
এছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ের উপর পড়ালেখা করা তোমার জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে সাহায্য করবে। এতে করে তুমি তোমার লেখায় প্রয়োজনীয় তথ্য যোগ করতে পারবে। তাই ভালো লিখতে হলে বেশি বেশি পড়া অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষার খাতায় লেখার জন্য তো এটা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
৮।লেখালেখির অভ্যাস হোক নিয়মিত:
বেশি বেশি লেখালেখি করার সবচেয়ে বড় উপকারিতা হচ্ছে তুমি বুঝতে পারবে তোমার কোথায় কোথায় ভুল হচ্ছে। ফলে লেখার ভুলগুলো খুব সহজেই শুধরে নিতে পারবে। এছাড়াও লেখালেখির চর্চা বেশি বেশি করলে কল্পনার জোর বাড়বে। ফলে গল্প বা কবিতা লেখার প্লট পাওয়া সহজ হবে।লেখালেখি চর্চার সময় ভিন্ন ভিন্ন টেকনিক ব্যবহার করে দেখতে পারো। কে জানে, এক্সপেরিমেন্ট করতে করতেই হয়ত তুমি তোমার সহজাত ভঙ্গিটি খুঁজে পেয়ে যেতে পারো!
লেখার মান ভালো হওয়াটা অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। সেটা তোমার পরীক্ষার খাতায় মার্কস পাওয়ার ক্ষেত্রেই হোক আর পাঠকের মন জয় করার মধ্যেই হোক। তাই উপরের জিনিসগুলো চর্চা করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
সুন্দর ও দ্রুত বাংলা হাতের লেখা
এই কোর্সটি আপনাকে কীভাবে সাহায্য করবে?
অনেকেই হয়তো না জেনে কোন না কোনটা চর্চা করে এসেছো এত দিন। একটু মিলিয়ে নাও তো এগুলোর মধ্যে কোনটা তুমি করেছো। আর যারা উপরের কোনটাই করনি এতদিন, আর বসে না থেকে শুরু করে দাও। দেখবে তোমার লেখা আগের থেকে ধীরে ধীরে ভালো হচ্ছে।
আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Study Smart Course by Seeam Shahid Noor
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
- Microsoft Word Course by Sadman Sadik
- Microsoft Excel Course by Abtahi Iptesam
- Microsoft PowerPoint Course by Sadman Sadik
- Personal Finance Course by Nafeez Al Tarik
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন