বিংশ শতকের সূচনালগ্ন, অল ইন্ডিয়া মোহামেডান এডুকেশনাল কনফারেন্স। পূর্ববঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবী ওঠে। নাথান কমিশন প্রণীত রূপকল্পে, ১৯২১ সালের ১ জুলাই যাত্রা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ইতিহাসের পাতায় যুক্ত হয় এক নতুন অধ্যায়। ঔপনিবেশিক, সাম্রাজ্যবাদী, সামন্ততান্ত্রিক ব্রিটিশদের শাসন-শোষণে পরাস্ত ও দুর্বল পূর্ববঙ্গ নতুন প্রাণ ফিরে পাবার আশায় বুক বাধে। মাত্র তিনটি বিভাগ নিয়ে হাঁটি হাঁটি পা পা করে যাত্রা শুরু করে একটি স্বপ্ন, একটি জাতির বাতিঘর। ২০২২-২০২৩ শতবর্ষে পা দেয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ কলেবরে বেড়েছে অনেকটুকুই।
মাত্র ৮০০ শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হওয়া ঢাবিতে বর্তমানে প্রায় ৩৬,০০০ জন নিয়মিত অধ্যয়ন করছেন। এই স্বপ্নিল রথের সারথি কীভাবে তুমিও হতে পারবে, আজকের নিবন্ধ সে বিষয়েই! তাহলে চলো জেনে নেওয়া যাক ঢাবি ক ইউনিট ভর্তি প্রস্তুতির জন্য কী কী করণীয়!
কেন ঢাবি?
ইংরেজ আমলে কলকাতা বাংলার রাজধানী হয়, আর সেই সাথে ঢাকার গুরুত্ব কমতে থাকে। রাজধানী স্বভাবতই বেশি মনোযোগ পায়, পায় বড় বাজেট। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে পূর্ববঙ্গ বেশ খানিকটা অবহেলিত থেকে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছিল তৎকালীন অত্র অঞ্চলের অনগ্রসর মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি ব্রিটিশদের এক ধরনের সহানুভূতি, এক ধরনের ক্ষতিপূরণ। কালের পরিক্রমায় ঢাবি তার লক্ষ্য ভালোভাবেই পূরণ করতে পেরেছে।
ভার্সিটি A Unit + গুচ্ছ এডমিশন কোর্স - ২০২৩
কোর্সটিতে যা যা পাচ্ছেন:
একদিকে যেমন ঢাবি উৎপাদন করেছে ড. মো. ইউনুসের মত নোবেল লরেট, তেমনি তৈরি করেছে শেখ মুজিব, তাজউদ্দীনের মত জাতির ভাগ্যপরিবর্তনকারী রাজনীতিবিদ। শুধু তাই নয়, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, আব্দুস সাত্তার খানদের মত বিজ্ঞানী যেমন এসেছে ঢাবি থেকে, তেমনি ঢাবি দিয়েছে ফজলুর রহমান খানদেরও। উল্লেখ্য, আধুনিক স্কাইস্ক্রেপার তথা গগনচুম্বী বিল্ডিং বানানোর গবেষণায় পুরো বিশ্বের মধ্যে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন এফ আর খান। প্রখ্যাত সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দিন, শাইখ শিরাজ, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব শাহরিয়ার নাফিস… কী উপহার দেয়নি তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়!
এই লিস্টে নিজের নামটা অন্তর্ভুক্ত করতে চাইলে তোমাকে ভর্তি পরীক্ষা টা উৎরে যেতে হবে ঢাবি ক ইউনিটে। তবে, এসো আর কথা না বাড়িয়ে আসল আলাপ শুরু করা যাক। জেনে নেই ঢাবি ক ইউনিট বিষয়সমূহ ও আসন সংখ্যা, ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা, পরীক্ষার মানবন্টন ও প্রস্ততি নেওয়ার পদ্ধতি।

ঢাবি ক ইউনিট বিষয়সমূহ ও আসন সংখ্যা
প্রতি বছর লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আসন নিজের করে নেওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ঢাবি ক ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ২০২১ সালে ঢাবি ক ইউনিটের ১৭৮১টি আসনের বিপরীতে ১ লাখ ১০ হাজার ৩৭৪ জন শিক্ষার্থী ঢাবি ক ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। অর্থাৎ প্রতি আসনের বিপরীতে ৬২ জন শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতা করেছিল। বুঝতেই পারছো কতটা প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয় ঢাবি ক ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক ইউনিটের বিভিন্ন বিভাগ/ইনস্টিটিউট-এ প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তির জন্য নির্ধারিত আসন সংখ্যা (কোটা সহ) নিম্নরূপ:
অনুষদ/ইনস্টিটিউট | ভর্তির বিভাগ/বিষয় |
আসন সংখ্যা |
বিজ্ঞান অনুষদ | পদার্থ বিজ্ঞান | ১০০ |
গণিত
|
১৩০ | |
রসায়ন | ৯০ | |
পরিসংখ্যান
|
৯০ | |
ফলিত গণিত | ৬০ | |
জীববিজ্ঞান অনুষদ | মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ | ১০০ |
উদ্ভিদবিজ্ঞান | ৭০ | |
প্রাণিবিদ্যা | ৮০ | |
প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান | ৬০ | |
মনোবিজ্ঞান
|
৮০ | |
অনুজীব বিজ্ঞান | ৪০ | |
মৎস্যবিজ্ঞান | ৪০ | |
জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি | ২৫ | |
ফার্মেসী অনুষদ | ফার্মেসী | ৭৫ |
আর্থ এন্ড এনভারনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদ |
ভূগোল ও পরিবেশ
|
৮০ |
ভূতত্ত্ব | ৫০ | |
সমুদ্রবিজ্ঞান | ৪০ | |
ডিজাস্টার সায়েন্স এন্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স | ৪০ | |
আবহাওয়া বিজ্ঞান | ২৫ | |
ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদ | ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং | ৭০ |
ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল | ৬০ | |
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল | ৬০ | |
নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং | ৩০ | |
রোবটিক্স এন্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং | ২৫ | |
পরিসংখান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট | ফলিত পরিসংখ্যান | ৫০ |
পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট | পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান | ৪০ |
তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট | সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং | ৫০ |
লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট | লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং | ৫০ |
ফুটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং | ৫০ | |
লেদার প্রোডাক্টস ইঞ্জিনিয়ারিং | ৫০ | |
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট | ভৌত বিজ্ঞান – ২২ | ৪১ |
জীববিজ্ঞান – ১৯ | ||
মোট | ১৮৫১ |
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক ইউনিট: ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা
বিজ্ঞান/কৃষিবজ্ঞান শাখার ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা
প্রার্থীকে অবশ্যই ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে এসএসসি বা সমানের পরীক্ষায় পাশ করতে হবে । শুধুমাত্র ২০২২ সালের উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা আবেদন করতে পারবেন ।
বাংলাদেশের যেকোনো শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞান/কৃষিবজ্ঞান শাখায় উচ্চ মাধ্যমিক অথবা মাদ্রাসা বোর্ডের বিজ্ঞান শাখায় আলিম অথবা বিজ্ঞান শাখায় IAL/A-Level বা সমমানের বিদেশি ডিগ্রিধারী হতে হবে এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক (বা সমমানের) গ্রেডভিত্তিক পরীক্ষার প্রতিটিতে পৃথকভাবে ৪র্থ বিষয়সহ ন্যূনতম ৩.৫ জিপিএসহ প্রাপ্ত জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ হতে হবে।
IGCSE/O-Level এবং IAL/A-Level বা বিদেশি ডিগ্রিধারীদের ক্ষেত্রে সমতা নিরূপনকৃত গ্রেড গণনা করতে হবে। এছাড়া প্রার্থী যে বিভাগ/ইনস্টিটিউটে ভর্তি হতে ইচ্ছুক তাকে ঐ বিভাগ/ইনস্টিটিউটের জন্য নির্ধারিত যোগ্যতার শর্ত পূরণ করতে হবে।
আরো পড়ুন: ঢাবি খ ইউনিট প্রস্তুতি: কিভাবে জিতবে ভর্তি যুদ্ধ?
মানবিক/সাধারণ ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা
বাংলাদেশের যেকোনো শিক্ষা বোর্ড হতে ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মাধ্যমিক অথবা সমমান এবং ২০২২ সালের উচ্চ মাধ্যমিক অথবা সমমান পরীক্ষায় মানবিক/সাধারণ ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাও এই ইউনিটে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।
সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অথবা সমমানের গ্রেডভিত্তিক পরীক্ষার প্রতিটিতে পৃথকভাবে ৪র্থ বিষয়সহ ন্যূনতম ৩.০ জিপিএসহ প্রাপ্ত জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৭.৫ হতে হবে। IGCSE O-Level এবং IAL/GCE/A-Level অথবা বিদেশি ডিগ্রিধারীদের ক্ষেত্রে সমতা নিরূপণকৃত গ্রেড গণনা করা হবে
ঢাবি ক ইউনিট মানবন্টন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা MCQ এবং লিখিত উভয় পদ্ধতিতে মোট ১০০ নম্বরে অনুষ্ঠিত হবে এবং মোট সময় থাকে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। ভর্তি পরীক্ষার মোট নম্বর হবে ১০০ তারমধ্যে ৬০ নম্বরের MCQ এবং ৪০ নম্বরের লিখিত অংশ থাকবে। MCQ পরীক্ষা ৪৫ মিনিট এবং লিখিত পরীক্ষা ৪৫ মিনিটের হবে।
ঢাবি ক ইউনিট মানবণ্টন নিম্নরূপ:
ইউনিট নাম | এমসিকিউ (MCQ) পরীক্ষা | লিখিত পরীক্ষা | ||||
মোট নম্বর | সময় | পাস নম্বর | মোট নম্বর | সময় | পাস নম্বর | |
ক ইউনিট | ৬০ | ৪৫ মিনিট | ২৪ | ৪০ | ৪৫ মিনিট |
১২ |
ঢাবি ক ইউনিট: বিষয়ভিত্তিক মানবণ্টন
বিষয় |
এমসিকিউ (MCQ) অংশ | লিখিত অংশ |
মন্তব্য |
|
মোট বরাদ্দকৃত নম্বর |
প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কর্তনকৃত নম্বর | মোট বরাদ্দকৃত নম্বর | ||
পদার্থবিজ্ঞান | ১৫ | ০.২৫ | ১০ |
*উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের অতিরিক্ত (৪র্থ) বিষয়ের পরিবর্তে বাংলা অথবা ইংরেজি যেকোনো একটি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে মোট ৪টি বিষয় পূর্ণ করতে হবে। |
রসায়ন | ১৫ | ০.২৫ | ১০ | |
জীববিজ্ঞান | ১৫ | ০.২৫ | ১০ | |
উচ্চতর গণিত | ১৫ | ০.২৫ | ১০ | |
বাংলা | ১৫ | ০.২৫ | ১০ | |
ইংরেজি | ১৫ | ০.২৫ | ১০ |
একজন প্রার্থী যে ৪টি বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর দিবে তার উপর নির্ভর করবে সে কোন বিভাগ/ইনস্টিটিউট এ ভর্তি হতে পারবে। (পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, উচ্চতর গণিত বিষয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে সাধারণত সকল বিভাগ/ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়া যায়।)
MCQ পরীক্ষায় ২৪ নম্বর পেলেই কেবল লিখিত পরীক্ষার (বর্ণনামূলক) প্রশ্নের উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য বিবেচিত হবে। তবে MCQ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে ‘ক’ ইউনিট এর মোট আসনের কমপক্ষে ৫ গুণ লিখিত পরীক্ষার (বর্ণনামূলক) উত্তরপত্র মূল্যায়িত হবে। ১০০ নম্বরের মধ্যে MCQ এবং লিখিত (বর্ণনামূলক) অংশের মোট পাস নম্বর ৪০।
কোর্সটিতে শিক্ষার্থীরা পাবে:
ঢাবি ক ইউনিট কোশ্চেন সলভ কোর্স
ঢাবি ক ইউনিট -এর প্রস্তুতি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির সময় পাওয়া যায় বেশ কম। এইচএসসি পরীক্ষার পর মাত্র মাস তিনেক সময় হাতে থাকে, প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। প্রস্তুতি তখনই সার্থক হবে যদি তা হয় পুর্ণাঙ্গ, নচেৎ তা ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা কেবল ক্ষীণতরই হতে থাকে। শারীরিকভাবে যেমন ফিট থাকতে হবে, তেমনি মানসিকভাবেও নিজেকে চাঙ্গা রাখতে হবে।
মন ভালো না থাকলে কিন্তু কিছুই করতে মন বসবে না, পড়াশুনা করতেও ইচ্ছা করবে না। তাই মোটিভেটেড থাকতে হবে। আর প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নেওয়া খুবই জরুরি। কারণ, একেক বিষয়ের জন্য প্রস্তুতির প্যাটার্ন একেক রকমের হয়ে থাকে।

ঢাবি ক ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি
সাধারণত ঢাবি ক ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা তে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং উচ্চতর গণিত থেকে প্রশ্ন আসে। এখন এখানে একটা কিন্তু আছে, কিন্তুটা হলো উচ্চতর গণিত বা জীববিজ্ঞান যে বিষয় তোমার চতুর্থ/ঐচ্ছিক বিষয়, তুমি চাইলে সেটির বদলে বাংলা বা ইংরেজি উত্তর করতে পারো। এক্ষেত্রে ঢাবি ঘ ইউনিট প্রস্তুতি নেওয়া শিক্ষার্থীরা এগিয়ে থাকে। কারণ, তাদের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়ই বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান এই বিষয়গুলোতে পড়তে হয়। সেক্ষেত্রে তারা সহজেই চতুর্থ বিষয় বাদ দিয়ে তার ইচ্ছা অনুযায়ী বাংলা অথবা ইংরেজি উত্তর করতে পারে।
বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির ক্ষেত্রে, পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতের সূত্রগুলো বেশি করে প্র্যাকটিস করতে হবে। সাধারণত সহজ সূত্র থেকে ম্যাথ বেশি আসে। এবং এমন সব ম্যাথ আসবে যেগুলো ক্যালকুলেটর ছাড়া করা সম্ভব, কারণ তোমরা সবাই জানো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে দেয়া হয় না। অন্যদিকে জীববিজ্ঞান এবং রসায়নের স্পেশাল ইকুয়েশন বা বিক্রিয়াগুলো দেখে যেতে হবে। সাধারণত শেষ সময়ে পুরো পড়া নতুন করে পড়ার সুযোগ হয়না। তাই আগের করে রাখা নোটগুলোতে চোখ বুলিয়ে যাওয়া যায়।
ভার্সিটি A Unit + গুচ্ছ এডমিশন কোর্স - ২০২৩
কোর্সটিতে যা যা পাচ্ছেন:
ঢাবি ক ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার শেষ সময়ের প্রস্তুতি
একদম শেষ সময়ে চলে আসলে তখনকার প্রস্তুতিকে আমরা মোটাদাগে দু’ভাগে ভাগ করতে পারি। এক, পরীক্ষার পূর্বে আর দুই, পরীক্ষার সময়। পরীক্ষার সপ্তাহখানেক আগের মধ্যে তোমার পুরো সিলেবাস একবার বা ক্ষেত্রবিশেষে দু’বার রিভিশন দেওয়া হয়ে যাওয়ার কথা। তারপর শেষ মুহূর্তে মাথার উপর চাপ কম দিয়ে দেখে যেতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম আর ঘুম খুব জরুরি। অনেকেই এই দিকটায় একদম বেখবর থাকে, ফলত পরীক্ষার আগে অসুখ বাঁধিয়ে বসে। এবং শেষমেশ এত সাধের ক্যাম্পাসে আসার স্বপ্নে দিতে হয় গুড়েবালি। তাই স্বাস্থ্যের ঠিকমত যত্ন নিতে হবে। এবং সাথে সাথে পড়াও চালিয়ে যেতে হবে।

ঢাবি ক ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার পূর্বে
এই অংশটার ব্যাপ্তি হবে এইচএসসির পর থেকে পরীক্ষার একদম আগে আগে পর্যন্ত। এসময় সতর্ক থাকা এবং নিজেকে কন্ট্রোল করা খুব জরুরি। কারণ, অনেকেই ইন্টারমিডিয়েটের দুই বছর পড়াশুনার পর আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারে না। বিভিন্ন জায়গায় ট্যুর দেয়, কিছুদিন আড্ডা ফুর্তি করে, ভাবে সময় তো আছেই। আর ক’টা দিন যাক, তারপর এডমিশনের পড়া শুরু করবে। কিন্তু এই সময়টুকু খুবই দামী, প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। তাই পড়ার মোমেন্টাম যেন হারিয়ে না ফেলো, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দুয়েকদিন বিরতি নেওয়া স্বাভাবিক, তবে তারপর আবার ট্র্যাকে ফিরতে হবে।
অনেকে কোচিং করে, অনেকে অনলাইন কোর্সে ভর্তি হয় , আবার অনেকে কোচিং ছাড়াই ভালো করতে পারে। কোচিং করা বাধ্যতামূলক না, তবে এর মাধ্যমে একটু নিয়মতান্ত্রিক পড়াশুনা হয়, যেটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপকারী হয়ে থাকে। তবে প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সবথেকে যে বিষয়টি তোমাকে এগিয়ে রাখবে তা হল বিগত বছরগুলোতে আসা প্রশ্ন সলভ। যখনই তুমি প্রশ্নব্যাংক সমাধান করতে থাকবে, তোমার আত্মবিশ্বাস নিজে থেকেই বাড়তে থাকবে। কারণ, ঢাবিতে প্রশ্ন রিপিট হয় না সত্য, তবে প্রশ্নের টাইপ কিন্তু রিপিট হয়। তাই পূর্বের প্রশ্ন সমাধান করা খুবই কাজে দেয়।
আরেকটা কার্যকরী বিষয় হচ্ছে মডেল টেস্ট দিতে থাকা। এটা কোনো প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বা এনরোল করেও দিতে পারো, অথবা বাসায় বসে নিজেও ঘড়ি ধরে পরীক্ষা দিতে পারো। নিজেকে ঝালিয়ে নেয়ার এটাই মোক্ষম উপায়।

সাথে পূর্বসূরি সিনিয়র ভাইবোনদের থেকে নিয়মিত পরামর্শ নিবে, তারা কীভাবে পড়তেন, কোন স্ট্র্যাটেজি ধরে আগানো ভালো… এসব বিষয়ে। সময়ের সদ্ব্যবহার করতে হবে সম্পূর্ণরূপে, নাহলে কোন ফাঁকে যে মাস কয়টা চলে যাবে বুঝতেও পারবে না। একদম দুশ্চিন্তা করা যাবে না, সবাই সবাইকে সাহস যোগাবে। বন্ধু বান্ধবদের সাথে দেখা হলে বা ফোনে যোগাযোগের সময়, “দোস্ত, কিছুই তো পড়ি নাই” এই জাতীয় কথার বদলে বলবে “দোস্ত, আমি জানি আমরা সবাই পারবো। শুধু নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টাটুকু করতে হবে।” এতে ইতিবাচকতা সবার মাঝে ছড়িয়ে যাবে। সবে মিলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে।
আরো পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি তথ্য – জানার আছে যা কিছু!
পরীক্ষার সময়
ভর্তি পরীক্ষার ঠিক আগ মুহূর্তে এই অংশ শুরু হয়। এই সময়টা তুলনামূলক কম খাটুনির, কারণ যা পড়ার তা ইতোমধ্যে পড়া হয়ে যাওয়ার কথা। যারা এইচএসসিতে কিছুটা পিছিয়ে ছিল কিন্তু বেশ পরিশ্রম করেছে, শেষ ক’মাসে তারা এগিয়ে যায়। আর এই ক্রান্তিকালেও যাদের টনক নড়ে না, তারা শেষমেশ তুষারের দেশেই রয়ে যায়। একদম শেষে এসে শুধু হ্যান্ডনোট দেখতে থাকবে, আর সূত্রগুলোতে চোখ বুলাবে। ফটোগ্রাফিক মেমরি কাজে লাগাবে, যাতে দেখলেই হয়ে যায়। অন্য সময়ের মত কষ্ট করে যেন পড়তে না হয়।
আর একদম প্যানিক করা যাবে না, মাথায় রাখতে হবে- শুধু এফোর্ট দেয়ার মালিক আমি, ফলাফল আমার হাতে না; এটা মনে ধারণ করতে পারলেই দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে পারবে। পরীক্ষার হল, ক্যাম্পাস এগুলো আগেই দেখে রাখবে এবং পারলে কোনো এক ফাঁকা দিনে পরীক্ষার বেশ আগে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে ঘুরে দেখে আসবে। এতে শেষ সময়ে অহেতুক উটকো দুশ্চিন্তার আরেকটা বোঝা কমবে।

শেষকথা
কথায় বলে, আত্মবিশ্বাসই বিড়ালকে বাঘে পরিণত করে, আর হীনমন্যতা বাঘকে নামিয়ে দেয় বিড়ালের কাতারে। তাই সবসময় মনে বল রাখতে হবে, কোনোমতেই হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না। আমাকে দিয়ে হবে না, এমন চিন্তা যেন কখনই মনে দানা বাঁধতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। উপযুক্ত প্রস্তুতির মাধ্যমে নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তুত করে তোলো এবং নিজের প্রাপ্য আসনটি বুঝে নাও- এই আমাদের কামনা।
লেখক: শিক্ষার্থী, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতিতে আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- ঢাবি-ক কোশ্চেন সলভ কোর্স
- ভার্সিটি A Unit + গুচ্ছ এডমিশন কোর্স
- ভার্সিটি B Unit + গুচ্ছ এডমিশন কোর্স
- ভার্সিটি C Unit + গুচ্ছ এডমিশন কোর্স
ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত বাকি কোর্সসমূহ:
ঘরে বসে বিভিন্ন বিষয়ে করো স্কিল ডেভেলপ:
- ঘরে বসে English Grammar
- ঘরে বসে Spoken English
- IELTS Course by Munzereen Shahid
- Facebook Ads Mastery
- Microsoft Word
- Microsoft PowerPoint
- Microsoft Excel
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারেন এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন