পরীক্ষার নাম শুনলে কম বেশি সবারই হৃদস্পন্দন কয়েক গুণ বেড়ে যায়। পরীক্ষা না থাকলে ছাত্রজীবন কতই না সুন্দর হত। তাই বলে পরীক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে তো আর হবে না। নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ কিন্তু এখানেই। পরীক্ষায় নিজের সেরাটা দিলেই অর্জন করা যায় কাঙ্খিত সাফল্য। এজন্য পরীক্ষার প্রস্তুতিও হওয়া চাই সেরা। পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় সবাই কিছু না কিছু কৌশল অবলম্বন করে। কিন্তু কয়েকটি টিপস মেনে চললে আপনার প্রস্তুতিটি আরও সহজ ও পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে।
পরীক্ষায় ভালো করার উপায়:
১। পড়াগুলোকে সুবিন্যস্ত করে সাজিয়ে পড়া শুরু করা:
পড়া শুরু করতে হবে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে। শুরুতেই মন থেকে পরীক্ষাভীতি ঝেড়ে ফেলতে হবে। পড়াগুলোকে নিজের মতো করে সাজাতে হবে। পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী কোনদিন কি পড়ব তা আগে থেকে ঠিক করে নিতে হবে। এতে পড়তে সুবিধা হয়, পড়া মনে থাকেও বেশি।
২। পড়ে না দেখে লেখার অভ্যাস করা:
আমরা যা পড়ি তা কখনোই পুরোপুরি মনে থাকে না। পরীক্ষার খাতায় হুবহু নির্ভুল লেখা তাই অনেক সময়ই সম্ভব হয়ে উঠে না। কিন্তু পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে নির্ভুল লেখা। পরীক্ষায় নির্ভুল লেখার জন্য পড়ার পরে না দেখে লেখার অভ্যাস করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। কোন কিছু পড়ার পর তা না দেখে লিখলে ভুল গুলো সহজেই ধরা যায় এবং পরবর্তীতে সেই ভুল হবার সম্ভাবনা কমে যায়
৩। ভুল থেকে শেখা:
ভুল করে শেখা জিনিস অনেকদিন মনে থাকে। তাই ‘কোথায় ভুল হচ্ছে? কেন ভুল হচ্ছে? কী বুঝতে পারছিনা?’ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করতে হবে। এগুলো সমাধান করলেই পরীক্ষায় ভালো করার হার অনেক গুণ বেড়ে যাবে।
ফুল সিলেবাস কোর্সে যা যা থাকছে:
৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৫
৪। গ্রুপ স্টাডি করা:
ভালো ফলাফল করার জন্য গ্রুপ স্টাডি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোন বিষয় একসাথে গ্রুপ করে পড়লে সেই বিষয়ের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হয়। এতে করে পড়াগুলো আয়ত্ত করা যেমন সহজ হয়, তেমনি আলোচনার মাধ্যমে জটিল বিষয়গুলো সম্পর্কে বিশদ ধারণা লাভ করা যায়। গ্রুপ স্টাডি করার ফলে শেখার প্রতি আগ্রহও বাড়ে।
৫। ক্লাস লেকচার ফলো করা:
ক্লাসে নিয়মিত উপস্থিত হতে হবে ও মনোযোগ দিয়ে লেকচার শুনতে হবে। কেননা পরীক্ষায় কি আসবে বা কি আসতে পারে তা নিয়ে শিক্ষকরা ক্লাসেই কিছু না কিছু ধারণা দিয়ে থাকেন। এছাড়া কঠিন বিষয়গুলো ক্লাসেই শিক্ষকের কাছ থেকে বুঝে নিলে তা অনেকদিন পর্যন্ত মনে থাকে। তাই নিয়মিত ক্লাস লেকচার ফলো করলে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া সহজ হয়।
৬। নোট তৈরী করা:
নোট করে পড়া ভালো ফলাফলের জন্য বেশ কার্যকর। ভালো নোট পাঠে মনোযোগ বাড়ায় এবং পাঠকে আকর্ষণীয় করে তুলে। তাছাড়া নোট করলে পরীক্ষার আগেই একবার বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। এতে প্রস্তুতি নিতে বেশ সুবিধা হয়।
৭। মেমোরি টেকনিক ব্যবহার করা:
কিছু কিছু বিষয় থাকে যা মুখস্ত করতেই হয়। সেক্ষেত্রে মেমোরি টেকনিক ব্যবহার করা যেতে পারে। ছড়া দিয়ে অথবা বাস্তব জীবনের উদাহরণ দিয়ে পড়া মনে রাখা যায়। যেমন পর্যায় সারণীর 4A গ্রুপের মৌল গুলো হল: C, Si, Ge, Sn, Pb। এগুলোকে এভাবে মনে রাখা যায়: “কাঁদলে (C) সাইকেল (Si) গেন্জি (Ge) স্যান্ডেল (Sn) পাবে (Pb)”। এক্ষেত্রে ছবি এবং ছকও অনেক কার্যকরী।
৮। খাতায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা:
পরীক্ষার খাতায় সুন্দর হাতের লেখা এবং গোছানো উপস্থাপন শিক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, যা অধিক নম্বর পেতে সহায়ক। প্রস্তুতি অনেক ভালো হবার পরও যদি তা খাতায় ঠিকমত উপস্থাপন করা না হয় তবে সেই প্রস্তুতির কোন মূল্য নেই। পরীক্ষার হলে টাইম ম্যানেজমেন্ট করাও এজন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা জয়ের নীল নকশা: কিছু অজনপ্রিয় টিপস!
৯। পড়ার মাঝে বিরতি নেওয়া:
একটানা অনেকক্ষণ পড়ার চেয়ে বিরতি দিয়ে পড়া অনেক বেশি কার্যকর। এক নাগাড়ে বেশ কিছুক্ষণ ধরে পড়লে পড়ায় মনযোগ ধরে রাখা যায় না। এ কারনে টানা অনেকক্ষণ না পড়ে প্রতি ২০-২৫ মিনিট পর পর পড়ার মাঝে অন্তত ৫ মিনিট বিরতি দিন। বিরতি নেওয়ার ফলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং পড়া খুব সহজেই আয়ত্ত করা যায়।
১০। রুটিন বানিয়ে পড়া:
সঠিক প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন সঠিক সময় নির্দেশনা। তাই রুটিন করে পড়া অত্যন্ত জরুরি্। প্রতিটি বিষয়ের জন্য পর্যাপ্ত সময় ভাগ করে নিয়ে একটি টাইম রুটিন তৈরি করে ফেলুন। এতে করে সকল বিষয় যেমন সমান গুরুত্ব দেয়া যায় তেমনি পড়াটাও সহজতর হয়।
১১। অতিরিক্ত রাত জাগা পরিহার করা:
পরীক্ষার সময় অনেকেরই রাত জেগে পড়ার অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু এটা একদমই করা উচিত নয়। মস্তিষ্কে স্মৃতি তৈরীর কাজটি ঘুমের মধ্যে হয়। পরীক্ষার আগের রাতের ঘুম তাই অত্যন্ত জরুরী। লরেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত রাত জাগা মস্তিষ্কের ক্ষতিসাধন করে। নর্থ টেক্সাসের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত রাত জাগা চোখের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই পরীক্ষার সময় রাত জাগা পরিহার করুন। তার চাইতে রাতে আগে ঘুমিয়ে সকালে উঠে পড়ার অভ্যাস করতে পারেন।
১২। কঠিন পড়া গুলো ঘুমানোর আগে পড়ার চেষ্টা করা:
বিশেষজ্ঞদের মতে, অপেক্ষাকৃত কঠিন এবং বর্ণনামূলক পড়া ঘুমানোর আগে পড়া উচিত। এতে করে পড়াটি মস্তিষ্কে দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ঘুম থেকে উঠার পর পড়াটি মনে করা সহজতর হয়।
১৩। পরীক্ষার আগের রাতের জন্য পড়া জমিয়ে না রাখা:
সকল পড়া পরীক্ষার আগের রাতের জন্য জমিয়ে না রেখে প্রতিদিন অল্প অল্প পড়ুন। পরীক্ষার আগের রাতে সকল পড়া একসাথে পড়তে গেলে মানসিক চাপ বাড়বে যা পরীক্ষায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই পরীক্ষার আগের রাতের প্রস্ততি হিসেবে নতুন কিছু না পড়ে আগে যা পড়া হয়েছে তাই রিভাইস করুন।
১৪। পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করা:
খাবারের সাথে মস্তিষ্কের ক্রিয়াক্ষমতার সম্পর্ক রয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে পরীক্ষার সময় চর্বিহীন এবং আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত। কারন এসব খাবার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
১৫। নিজেকে যাচাই করা:
পরীক্ষার পূর্বে নিজেই নিজের ছোটখাট টেস্ট নিয়ে নিন। নিজেই তাতে মার্কিং করুন। এতে করে পড়া ভালোমতো হয়েছে কিনা তা যেমন বুঝা যায় তেমনি আত্মবিশ্বাসও বাড়ে। এই আত্মবিশ্বাস পড়া মনে রাখতে ও পরীক্ষায় ভালো করতে সাহায্য করে।
“গাইতে গাইতে গায়েন”
১৬। নিজের উপর আস্থা রাখা:
হচ্ছে না, হবে না এ সমস্ত ধারণা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। নিজের উপর আস্থা রেখে সামনে এগিয়ে যান। বারবার অনুশীলন করুন। পরীক্ষার উত্তরপত্রেও আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রশ্নের উত্তর লিখুন। পরীক্ষায় সফল হওয়ার উপায় হিসেবে এটিই ছিল আমাদের সর্বশেষ বার্তা।
পরীক্ষার খাতায় লেখার নিয়ম
পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের কাছে চরম আরাধ্য। এক্ষেত্রে যে কোনো বিষয়ের উপর ভালো কনসেপ্ট থাকার সাথে সাথে খাতায় কিভাবে উত্তর উপস্থাপন করলে নম্বর ভালো আসে তা জানা থাকাটাও জরুরি। আজকের লেখাটি থাকছে মূলত পরীক্ষার খাতায় লেখার নিয়ম নিয়েই। লেখাটি পড়ে যেকোনো প্রতিযোগিয়ামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার উপায় গুলো জেনে উপকৃত হবে আশা করি।
১। হাতের লেখা:
পরীক্ষার খাতায় লেখার নিয়ম হিসেবে প্রথমেই থাকছে হাতের লেখা। হাতের লেখা ভালো হতে হবে এমন কোন কথা নেই। তবে হাতের লেখা পরিষ্কার হতে হবে। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, “আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী” অর্থাৎ প্রথমে দর্শনে ভালো হতে হবে পরে গুণের বিচার করা হবে। আর তাই পরীক্ষার খাতায় হাতের লেখা ভালো হলে পরীক্ষকের একটা আলাদা আকর্ষণ তৈরি হয়। সর্বোপরি, সুন্দর ও স্পষ্ট হাতের লেখা পরীক্ষার্থীর সম্পর্কে একটা ইতিবাচক ধারণা তৈরী করে যার প্রভাব সম্পূর্ণ খাতার উপরেই পড়ে। কাটা-ছেঁড়া কম করার চেষ্টা করবে, কাটা গেলে একটান দিয়ে কাটবে।
একটি উদাহরণ থেকে বিষয়টি সহজেই উপলব্ধি করা যায়। যেমন -পাঁচ নম্বরের একটি প্রশ্নের একই উত্তর করে, একটি খারাপ হাতের লেখার উত্তরপত্রের চেয়ে একটি সুন্দর হাতের লেখার উত্তরপত্রের নম্বর যদি আধা নম্বরও বেড়ে যায়, তবে পঞ্চাশ পূর্ণমানের একটি পরীক্ষায় উভয় উত্তরপত্রের নম্বরের ব্যবধান হয় পাঁচ। অর্থাৎ একই উত্তর করে খারাপ হাতের লেখার উত্তরপত্র ৩৫ পেলে ভালো হাতের লেখার উত্তরপত্র পায় ৪০। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ভালো হাতের লেখা এ প্লাস পাওয়া না পাওয়ায় ভূমিকা রাখতে পারে!
২। প্যারা করে লেখা:
উত্তরপত্রে লেখা উপস্থাপনের ক্ষেত্রে আরেকটি দিক খেয়াল রেখে উত্তর করা যেতে পারে, তা হল প্যারা করে লেখা। প্যারা করে লিখলে একই সাথে তোমার উপস্থাপিত তথ্য ভালোভাবে শিক্ষকের চোখে পড়ে এবং তোমার উপস্থাপিত তথ্যও সুস্পষ্টভাবে দৃষ্টিগোচর হয়। উত্তর লেখার সময় পয়েন্ট সহকারে প্যারা করে লিখতে হবে আর খেয়াল রাখতে হবে উভয় প্যারার মাঝে দূরত্ব লাইনের মধ্যবর্তী দূরত্বের দ্বিগুণ হবে।
আরো পড়ুন: রমজানের পর পরীক্ষা? পড়াশোনা চালিয়ে যাও ৮টি ধাপে
৩। পরীক্ষার খাতায় নানা রঙের কলম ও কালি ব্যবহার:
পরীক্ষার খাতায় লেখার স্টাইল করতে অনেকেই পরীক্ষার খাতায় নানা রঙের কলম ও কালি ব্যবহার করে থাকে। এতে সময় যেমন নষ্ট হয় তেমনি খাতার উপস্থাপনার সৌন্দর্যও নষ্ট হয়। তাই তোমরা এমনটি করবে না। খাতা মার্জিন করার নিয়ম হলো একটি ভালো মানের পেন্সিল দিয়ে মার্জিন করা। বিশেষ পয়েন্ট চিহ্নিত করার জন্য পরীক্ষার খাতায় নীল কালির কলম অথবা মার্জিনের পেন্সিলটিও ব্যবহার করতে পারো। নানা রকম অতিরঞ্জিত কালি ব্যবহার করলে খাতার সৌন্দর্য নষ্ট হবে এবং তা নম্বর পাওয়াতেও প্রভাব ফেলতে পারে। লেখার সময় উপরে ও বামপাশে এক স্কেল এবং নিচে ও ডানপাশে হাফ স্কেল জায়গা ফাঁকা রাখবে।
৪। প্রশ্নপত্র ভালোভাবে পড়া:
পরীক্ষার সময় ধৈর্য সহকারে প্রশ্নের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেলো। অনেক শিক্ষার্থীরই অভ্যাস পুরো প্রশ্ন না পড়েই উত্তর করা শুরু করা। সময় বেশি লাগলেও ধৈর্য সহকারে কাজ কর। প্রশ্নে যে রকম চেয়েছে তাই বুঝিয়ে লেখার চেষ্টা করো। উত্তর উপস্থাপনের সময় প্রশ্নের সাথে প্রসাঙ্গিক উত্তর করার চেষ্টা করো। অযথাই এক কথা বারবার লিখে উত্তর অপ্রাসঙ্গিক করলেও নাম্বার তেমন আসে না! তাই খেয়াল রাখো প্রশ্নে কী চেয়েছে। পরীক্ষার হলে প্রশ্ন দেখে ঘাবড়ে যাওয়া যাবে না।
৫। কখনো কিছু ছেড়ে আসবে না:
পরীক্ষায় খালি খাতা দিয়ে জমা দিয়ে আসার চাইতে কিছু লিখে আসা অনেক অনেক ভালো। হারাবার তো কিছু নেই, তাই না? খালি খাতা দিলে নিশ্চিত 0 পাবে। তার চাইতে কিছু তো লিখে আসতে পারো। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বলেছেন:
“একবার পরীক্ষায় কয়েকটা বিষয়ে আমি ফেল করেছিলাম কিন্তু আমার বন্ধু সব বিষয়েই পাশ করে। এখন সে মাইক্রোসফটের একজন ইঞ্জিনিয়ার আর আমি মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা।”
তাই পাশ ফেলের কথা চিন্তা না করে যতটুকু পারো উত্তর করে আসো।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
ঘরে বসে Spoken English
৬। নিশ্চিত প্রশ্ন সবার আগে:
যেটা পারো, সেটা আগে উত্তর করো। জটিল কাজ আগে করে লাভ নাই। যে উত্তর ভালোভাবে পারো না সেটা নিয়ে অযথা সময় নষ্ট করবে না।
৭। গাদা গাদা লুজ শিট নেয়ার প্রতিযোগিতা:
অনেকেরই ধারণা থাকে পরীক্ষায় অনেক লুজ শিট নিয়ে খাতা ভারি হলেই তা বেশি নম্বর প্রাপ্তিতে সহায়তা করবে। এই চিন্তা বাদ দাও। আরবি পরীক্ষা বা বাংলা পরীক্ষায় অনেক সময়ে পরীক্ষকেরা খাতার পৃষ্ঠা গুনে নম্বর দেন। কিন্তু সেগুলো বাদে বাকি পরীক্ষায় অতিরিক্ত ইনিয়ে বিনিয়ে লিখে পাতার পর পাতা ভরাবার মানে নাই। মনে রাখবে, “Don’t work hard, work smart.”
৮। সময় মেপে কাজ করা:
৭টা প্রশ্নের জন্য ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় থাকলে সময় থাকলে অবশ্যই ঘড়ি ধরে প্রশ্নপিছু ২০-২২ মিনিট ধরে লিখবে। চেষ্টা করবে পরীক্ষার হলে ডিজিটাল ঘড়ি ব্যবহার করতে, যাতে নিখুঁতভাবে সময়ের হিসাব থাকে। পরীক্ষা শেষে কোনটা ঠিক হলো, কোনটা ভুল হলো তার হিসাব করা একেবারেই বাদ দাও। তোমার বন্ধুর ১০টা হলে তোমার যদি হয় ৪টা হয়, সেটা জেনে কী করবে? সেটা জানার চাইতে না জানাই ভালো। তাই পরীক্ষা শেষে প্রশ্নটাকে নির্বাসনে পাঠাও। প্রশ্ন নিয়ে চিবিয়ে খেলেও যা লিখে এসেছো তা তো আর পাল্টাবে না, তাই না?
৯। আত্মবিশ্বাস:
পরীক্ষার হলে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি তা হল আত্মবিশ্বাস। পরীক্ষার আগে তুমি যা যা পড়েছো তা সঠিকভাবে খাতায় উপস্থাপন করে আসাটাই মাথায় রাখবে শুধু। আর কিছু নয়! যা শিখে গেলে তা যদি অতিরিক্ত টেনশনে ভুলে গিয়ে লিখে দিয়ে আসতে না পারো তাহলে লাভ নেই। পড়াশোনা আর পরীক্ষা শব্দ দুটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটিকে ছাড়িয়ে আরেকটি কল্পনা করা যায় না। পরীক্ষার হলে প্রশ্ন দেখে ঘাবড়ে যাওয়া যাবে না। আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে।
পরীক্ষা ছাড়া যেমন কি পড়াশোনা করলে তা মূল্যায়ন করা যায় না তেমনি পড়াশোনা না করলে পরীক্ষাতেও তুমি যথাযথ মূল্যায়ন পাবেনা। তোমার পড়াশোনার পরিমাণের উপর নির্ভর করবে তোমার পরবর্তী কর্ম জীবনের সফলতা। আর পরীক্ষার হলে একটু সচেতন থাকলে আর যা কিছু পড়েছো তা ভালোভাবে পরীক্ষার খাতায় লিখে আসতে পারলে আশানুরূপ ফলাফল পাবে আশা করা যায়। আর একটি কথা মনে রাখবে,
“Hard work without talent is a shame, but talent without hard work is a tragedy”
পরীক্ষার হলে যে ১০টি ভুল এড়িয়ে চলা উচিৎ:
মাঝে মাঝেই দেখা যায় যে, আমরা অনেক ভালো প্রস্তুতি নেয়ার পরও পরীক্ষা আশানুরূপ হয় না। এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে পরীক্ষার হলে করা কিছু ছোট ছোট ভুল। আমরা সবাই যেকোনো পরীক্ষাতে অবশ্যই আমাদের সেরাটা দিতে চাই কিন্তু এই কিছু ভুলের কারণে সেরাটা দিয়েও সেরা ফলাফলটা পেতে পারি না আমরা। চলো দেখে নেয়া যাক এমন ১০টি সাধারণ ভুল।
১। প্রশ্নপত্র ঠিকমত না পড়া:
এই ভুলটা হচ্ছে অনেকটা “বিসমিল্লায় গলদ” এর মত। আমরা যত উপরের ক্লাসে উঠি, তত বড় বড় প্রশ্নের উত্তর আমাদের লিখতে হয়, আর এত বড় বড় উত্তর কিন্তু কোনোরকমে না বোঝার মত করে প্রশ্ন পড়ে লেখা অসম্ভব। এছাড়াও অনেক সময় পরিক্ষার্থীদের বিচলিত করার জন্যও কনফিউজিং প্রশ্ন করা হয়। সেক্ষেত্রেও শুধুমাত্র তারাই ঠিকমত উত্তর করতে পারে, যারা প্রশ্নটা ঠিকমত পড়ে।
২। বিগত বছরের প্রশ্নগুলো না দেখে পরীক্ষা দিতে যাওয়া:
একাডেমিক হোক আর অ্যাডমিশন টেস্ট, সকল প্রশ্নেই সাধারণত হুবহু না আসলেও বিগত বছরের কিছুটা ছোঁয়া থাকে। তাই পরীক্ষার আগে একটু সময় করে বিগত বছরের প্রশ্নগুলো দেখে নিলে, প্রশ্ন কেমন হবে সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায় আর পড়ার সময় ছুটে গেছে এমন অনেক টপিকও বিগত বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান করলে একবার দেখা হয়ে যায়।
৩। আগের রাতে পুরো বই হজম করার চেষ্টা করা:
একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা অনেক ভালো করেই জানি যে, পরীক্ষার আগের রাত ছাড়া কখনো পড়া হয় না কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, প্রত্যেক মানুষেরই নির্দিষ্ট সহ্যসীমা রয়েছে যার বাইরে যাওয়া উচিত না।
যতটুকু সম্ভব, শুধুমাত্র ততটুকু পড়েই ঘুমাতে চলে যাও। পরীক্ষার আগের রাতে ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখে শেষের দিকে যা পড়বে, সেই পড়াটুকু থেকে তুমি পরীক্ষা দিতে দিয়ে যে উপকার পাবে, এর থেকে অনেক বেশি উপকার পাবে পড়া বাদ দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে।
৪। অন্যদের রচনা লিখতে দেখে/অতিরিক্ত পৃষ্ঠা নিতে দেখে বিব্রতবোধ করা:
আমাদের মাঝে একটা ভুল ধারণা আছে যে, শিক্ষকরা পৃষ্ঠা গুণে নম্বর দেন কিন্তু আসলে এমনটা নয়। কোনো শিক্ষকই প্রয়োজনের অতিরিক্ত লেখা পছন্দ করেন না। আর বেশিরভাগ শিক্ষক প্রশ্নের উত্তরটা পরিপূর্ণভাবে সংক্ষিপ্ত আকারে পেতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যেকোনো পরীক্ষা শেষেই, শিক্ষকদের কাছে গিয়ে জমা হয় ৫০০-১০০০ খাতা যা একমাসের মাঝে দেখে দিতে হয়।
একবার নিজেদের শিক্ষকদের জায়গায় বসিয়ে দেখিতো, এমন পরিস্থিতিতে যখন কোনো শিক্ষকের সামনে অতিরিক্ত পৃষ্ঠার কোনো খাতা যায়, তখন তাঁর অনুভূতিটা কী হয়? তাই কাউকে বেশি লিখতে দেখে বিব্রতবোধ না করে বরং আত্মবিশ্বাসী হতে হবে এই ভেবে যে, আমি যতটুকু লিখেছি তাই যথেষ্ট।
৫। সবচেয়ে কঠিন প্রশ্ন দিয়ে শুরু করা:
আমরা অনেক সময় মনে করি যে, পরীক্ষার একদম শেষে যখন সময় কম থাকবে, তখন তাড়াতাড়ি করে সহজ প্রশ্নের উত্তর দিব। এখন কঠিনটা দিয়ে শুরু করি। যা করা একেবারেই ঠিক না কারণ পরীক্ষার সময় সবসময় অনেক রিল্যাক্সড মুডে থাকতে হয়। সেখানে, শুরুটাই যদি ব্রেইনস্টর্মিং এর মাঝে দিয়ে যায় তাহলে তা বাকি উত্তরগুলোর উপর খারাপ প্রভাব ফেলবে আর কঠিন প্রশ্নের উত্তর না মিললে তো আর কথাই নেই।
আরো পড়ুন: হাতের লেখা সুন্দর করার ৭টি কৌশল
৬। বুঝে উঠতে না পারা কোথায় শেষ করতে হবে:
বাংলায় আমি সবসময় উপন্যাসের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে শুরু করতাম। একবার করলাম কী, উপন্যাসের উত্তর সুন্দর করে লিখতে আমার এত ভালো লাগছিলো যে, আমি সময় ভুলে গিয়ে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখেই যাচ্ছিলাম এবং ফলশ্রুতিতে আমার বাকি উত্তরগুলো অনেক কম সময় নিয়ে সংক্ষেপে লিখতে হয়েছিল।
আমাদের অনেক বিষয়েরই কিছু কিছু টপিক অনেক প্রিয় থাকে যে টপিকের উত্তর লিখতে গেলে আর শেষ করতেই ইচ্ছা করে না। মনে রাখতে হবে যে, ১০ নম্বরের উত্তরে কখনো ১৫ দেয়া হয় না বরং ১০ নম্বরের প্রশ্নে ১৫ নম্বরের উত্তর দিলে, বাকি উত্তরগুলোর নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। আরো মনে রাখতে হবে যে, শিক্ষক আসলে আমরা উত্তরটা জানি কি না তা দেখতে চায়, আমাদের সাহিত্যিক প্রতিভা না।
৭। বুঝে উঠতে না পারা কোথায় হাল ছাড়তে হবে:
পরীক্ষার সময় আমরা অনেক সময় জানা জিনিসও মনে করতে না পেরে মস্তিষ্কে চাপ দিয়ে তা মনে করার চেষ্টা করতেই থাকি যা একদম ঠিক না। এতে করে অনেক সময় নষ্ট হয়। তার চেয়ে বরং ঐ প্রশ্নটা একদম শেষে উত্তর করার জন্য রেখে দিতে হবে।
৮। আগে আগে হল থেকে বেরিয়ে যাওয়া:
আমাদের অনেকেরই পরীক্ষার সময় আগে আগে হল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অভ্যাস আছে। হুম, কারো তাড়া থাকলে ঠিক আছে। না হলে শেষ মিনিট পর্যন্ত সবারই উচিত, পরীক্ষার উত্তরপত্রটা নিখুঁতভাবে বারবার দেখা কারণ অনেক ভুল একবারে চোখে পড়ে না। আমার এক সিনিয়র অনেক আগে আমাকে বলেছিলেন, “তোমাকে ৫ মিনিট দেয়া হলে সেটাকেই ইউটিলাইজ করার চেষ্টা কর।”
৯। পরীক্ষার আগে ভুল খাবার খাওয়া:
পরীক্ষার আগে অনেকেই অনেক ভারী খাবার কিংবা রাস্তার কোনো খাবার খেয়ে ফেলে কিংবা পরীক্ষার দুশ্চিন্তায় সকালে না খেয়েই হলে ঢুকে যায় যাতে করে পরীক্ষা চলাকালীন শরীর খারাপ লাগা শুরু করে। পরীক্ষার আগে যথাসম্ভব অমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত যাতে করে মস্তিষ্ক ভালো কাজ করে।
১০। প্রয়োজনের চেয়ে কম পানি খাওয়া:
পরীক্ষায় মনোযোগ না আসার একটা কারণ হচ্ছে পানিশূন্যতা। পানিশূন্যতার সময় মস্তিষ্ক ঠিকমত কাজ করতে পারে না।
মাঝে মাঝে আমাদের ছোট ছোট সমস্যাগুলোই বড় সমস্যার জন্ম দেয়। তাই আশা করি এই ছোট সমস্যাগুলো সমাধান করে ফেলতে পারলে পরীক্ষায় আর কোনো বড় সমস্যা হবে না।
পরীক্ষা ভীতি দূর করার উপায়
বর্তমান প্রজন্মের নাম যদি দেওয়া হয় “The Eleventh Hour Generation”, আশা করি খুব একটা ভুল হবে না। তাদেরকে সময় যতই দেওয়া হোক না কেন, তারা সবকিছু করতে বসবে সেই শেষ মুহূর্তে। পড়াশোনা অর্থাৎ পরীক্ষার প্রস্তুতিও তার ব্যতিক্রম নয়।
“কালকে পড়বো এখনো তো অনেক দিন বাকি……………”
এই কালকে পড়বো-র পুনরাবৃত্তি করতে করতে পরীক্ষা দ্বারপ্রান্তে দণ্ডায়মান। অথচ সিলেবাসের কিছুই পড়ার সুযোগ মেলেনি। এই সমস্যা আমাদের সবার বেশ পরিচিত এক সমস্যা। অথচ সময়ের পড়াগুলোকে যদি সময়েই শেষ করে ফেলা হতো তবে কিন্তু এই বিদঘুটে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় না। অনেক উপদেশ হলো। যেটা হবার সেটা যেহেতু হয়েই গেছে, এবার অল্প যেটুকু সময় বাকি সে সময়টাকে কাজে লাগাতে পারলেও কিন্তু বিপদ অনেকাংশে কেটে যাবে।
ছাত্রজীবনে এই “কালকে পড়বো……” – এর চক্করে ফেঁসে গিয়ে একদম শেষ মুহূর্তে এসে কান্নাকাটি আমিও করেছি। কিন্তু কান্নাকাটি করে লাভ যে খুব একটা হবে, তা কিন্তু নয়। বরং এতেও সেই সময়ই নষ্ট হবে। পরীক্ষা একদম দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে, এমতাবস্থায় প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যেটা প্রয়োজন সেটা হলো মাথা ঠান্ডা রেখে কুশলী হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া।
পরীক্ষাকে দরজার বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে পুরোপুরি প্রস্তুতি নিতে করণীয় কিছু কৌশল জেনে নেওয়া যাক তাহলে।
১। মাথা ঠান্ডা রাখা জরুরি:
প্রস্তুতি হয়নি অথচ পরীক্ষার আর তর সইছে না! এই সমস্যাটা তোমার আমার সবার পরিচিত সমস্যা। আমাদের প্রত্যেকেই জীবনের কোনো না কোনো পরীক্ষায় এই পাপের ফল ভোগ করে এসেছি। কাজেই পরীক্ষার প্রস্তুতি তুমি বাদে বাকি সবাই নিয়ে ফেলেছে এমন ভাবাটা অবান্তর। বিশ্বাস না হলে তোমার বন্ধুকে প্রশ্ন করে দেখো, উত্তরটা সেই ঘুরেফিরে তোমার মতোই হবে।
তাই, শুধু শুধু হতাশ হয়ে মুষড়ে না পড়ে অল্প যেইটুকু সময় বাকি আছে সে সময়টাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করো।
২। পড়াশোনায় চিন্তায় পড়াশোনাকে ভুলে যাওয়া যাবে না:
ইন্টারনেটে একটা বেশ পরিচিত মিম আছে যেখানে বলা হয়ে থাকে,
“পড়াশোনার চিন্তায় পড়াশোনা হচ্ছে না।”
পরীক্ষার ঠিক আগমুহূর্তে আমাদের সবার এইরকমের একটা অনুভূতি হয়ে থাকে। প্রস্তুতি নেওয়া হয় নি; আহ! কী করলাম এটা; এখন আমার কী হবে; আমি তো ফেল করবো; কিচ্ছু তো পড়া হয় নি…… এবং আরো অনেক কিছু। এইসব দুশ্চিন্তা করতে গিয়ে আসল কাজখানাই আর হয় না। এসব দুশ্চিন্তা যাতে কখনোই তোমার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নেবার ক্ষেত্রে কোনোরকম প্রতিবন্ধকতা না সৃষ্টি করে। যেটা হবার সেটা তো হয়েই গেছে। তাই সেটা নিয়ে ভাবতে গিয়ে আবারো সময় নষ্ট করাটা বোকামী ছাড়া আর কিছুই নয়।
তাই, পরীক্ষার আগে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাকে প্রশ্রয় নয়।
৩। গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো চিহ্নিত করে রেখো:
পড়ার সময় গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোকে হাইলাইটার দিয়ে হাইলাইট করে রেখো। স্টিকি নোটসে প্রয়োজনীয় পয়েন্টগুলো লিখে বইয়ে আটকে দাও। রিভিশনের সময়ে ওই চিহ্নিত অংশগুলো আর স্টিকি নোটসের লেখাগুলো পড়ে ফেললেই পুরো বিষয়টা নিয়ে তোমার ধারণা নেওয়া হয়ে যাবে।
এতে করে তোমার পরীক্ষা দেয়ার ঠিক আগে একদম শেষ সময়ে রিভিশন দেওয়াটা অপেক্ষাকৃত সহজ ও কম সময়সাপেক্ষ হবে।
৪। নতুনকে গুরুত্ব নয়:
অনুচ্ছেদের নাম শুনে ভড়কে গেলে? আজীবন আমরা শুনে এসেছি পুরোনোকে সরিয়ে দিয়ে নতুনদের জায়গা করে দিতে হবে। আজ উল্টো কেন? কিন্তু পরীক্ষা শুরুর ঠিক ঠিক আগমুহূর্তে করারও কিছু নেই। পরীক্ষার আগের সময়টায় অনেক অনেক নতুন নতুন বিষয়, অধ্যায়, তত্ত্ব, সূত্র, উদাহরণ দলবেঁধে সামনে পড়বে। খেয়াল রাখতে হবে, নতুন এই জিনিসগুলো শিখতে গিয়ে যেন পুরোনো পড়াগুলো আবার ভুলে না যাওয়া হয়।
তাই, নতুন বিষয়গুলো শেখার পেছনে সময় কম দিয়ে নিজের জানা ও শেখা প্রয়োজনীয় পড়াগুলোই আবার রিভিশন দাও। শেখাটা পাকাপোক্ত করে ফেলো।
৫। ইউটিউব লেকচারের গতি বাড়িয়ে নাও:
পরীক্ষা দ্বারপ্রান্তে দণ্ডায়মান। অনেক পড়া, বোঝা, জানা ও শেখা বাকি। সময় অনেক কম। কিন্তু, ইউটিউবের ১ ঘণ্টার বিশাল বিশাল লেকচারগুলো কীভাবে দেখে শেষ করা যাবে সব? এরও সমাধান আছে। ইউটিউব ভিডিওর স্পিড অপশনে গিয়ে ভিডিও দেখার গতি প্রয়োজনমতো বাড়িয়ে নেওয়া যায়।
ধরো, তোমাকে একটি ১ ঘণ্টার লেকচার দেখা প্রয়োজন। অথচ, হাতে সময় কম। তুমি চাইলেই এখন ১ ঘণ্টার লেকচার ৪০ মিনিটে দেখে শেষ করতে পারবে।
৬। পরীক্ষা নিয়ে ইতিবাচকতা:
পরীক্ষা ভীতির অন্যতম বড় কারণ আত্মবিশ্বাসের অভাব। অনেক সময় ভালো প্রস্তুতি নিয়েও শুধু আত্মবিশ্বাসের অভাবে পরীক্ষা খারাপ হয়। তাই, পরীক্ষা ভীতির বিরুদ্ধে তোমার প্রথম অস্ত্র হবে – নিজের প্রতি এক ইতিবাচক মনোভাব।
বিশ্বাস করতে হবে যে, তুমি পারবে। নেতিবাচক চিন্তাগুলো- যেমন , ‘এই বিষয়ে তো আগে আমি সবসময় খারাপ করেছি! এবারও করবো!’ – এ সবকিছু একেবারেই ঝেড়ে ফেলো মাথা থেকে। সঙ্গে পরীক্ষায় খারাপ করলে কী কী হবে, সে চিন্তাও।
পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে চেষ্টা করবে সেই সব বন্ধুদের সাথে কথা না বলতে, যারা সবসময় নেতিবাচকতা নিয়ে চলে। কারণ, ভয় ও দুশ্চিন্তা সংক্রামক। প্রশ্ন উত্তরের সময় এমন প্রশ্নগুলোর উত্তর সবার আগে দেবে, যেগুলো তুমি অনেক ভালো পারো। এই কৌশল তোমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে কয়েকগুণ।
স্বপ্ন দেখার ক্ষেত্রে কৃপণতা কখনই করবে না। তবে হ্যাঁ, এটা মাথায় রেখো – তোমার আশা যাতে তোমার ওপরই অতিরিক্ত চাপের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়।
৭। মেডিটেশন:
ধ্যান বা মেডিটেশন অস্থিরতা দূর করতে অসম্ভব কার্যকর। মেডিটেশন তোমার দুশ্চিন্তা দূর করে মস্তিষ্ককে ঠান্ডা করবে এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করবে। মেডিটেশনের পাশাপাশি Breathing Exercise (যেটিকে দমচর্চা বা প্রাণায়ামও বলা হয়) একই রকম ফলপ্রসূ।
একটা সাদা কাগজ নাও এবং লিখে ফেলো কেন তুমি ভয় পাচ্ছো সেই পরীক্ষা নিয়ে।
মেডিটেশনের নাম শুনলেই আমাদের মাথায় ভেসে ওঠে বৃন্দাবনে ধ্যানরত কোনো সাধুর ছবি। ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই। মেডিটেশন শিখতে তোমাকে বনবাসে বা হিমালয়ে যেতে হবে না। ইউটিউব বা প্লে স্টোরেই রয়েছে অনেক অ্যাপ যার মাধ্যমে তুমি সহজেই ধ্যানচর্চা করতে পারবে। যেমন – Quantum Meditation, Headspace, Calm ইত্যাদি।
আরেকটি মনস্তাত্ত্বিক অনুশীলন তুমি করতে পারো। সেটি হল – চোখ বন্ধ করে তোমার সবচেয়ে প্রিয় সময় বা অভিজ্ঞতার কথাটি ভাবো। তারপর নিজেকে কল্পনা করো পরীক্ষার হলে। পরীক্ষার হলে বসে তুমি খুব সুন্দর ভাবে প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর লিখে যাচ্ছো।
এই মানসিক অনুশীলনে সুখকর অভিজ্ঞতার সাথে পরীক্ষার দুশ্চিন্তার সম্মিলন ঘটে। ফলে, দুশ্চিন্তা বা ভয় হ্রাস পায় অনেকাংশে।
৮। ভয়গুলোকে লিখে ফেলা:
পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে এক কাজ করো। একটা সাদা কাগজ নাও এবং লিখে ফেলো কেন তুমি ভয় পাচ্ছো সেই পরীক্ষাটি নিয়ে। কিছু কিছু কারণ অনেক হাস্যকর এবং হালকা মনে হতে পারে, তবুও প্রতিটি কারণই লিখে ফেলো। তারপর ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দাও সেই কাগজটা।
এই মনস্তাত্ত্বিক কৌশলটির ওপর ২০১১ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করে। সে গবেষণায় দেখা যায়, এই কৌশল শুধুমাত্র পরীক্ষা ভীতিই কমায় না, পরীক্ষার রেজাল্টেরও অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটায়।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
Personal Fitness
৯। খাবার:
পরীক্ষার সময় আমাদের দৈনন্দিন রুটিনের বারোটা বেজে যায়। যার প্রভাব পড়ে খাদ্যাভ্যাসেও। এই খাদ্যাভাস কিন্তু অনেক ভাবেই আমাদের পরীক্ষাভীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। কারণ, আমাদের গ্রহণকৃত খাদ্য সরাসরি আমাদের মানসিক অবস্থায় প্রভাব ফেলে।
উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবারের বদলে আমাদের গ্রহণ করা উচিত কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার সম্পন্ন খাবার। কারণ, এসব খাবার পরিপাক হয় ধীরে ধীরে। তাই, মস্তিষ্ক একাগ্রতা ধরে রাখতে পারে। এই মনোযোগ বা একাগ্রতার অভাবই আমাদের পরীক্ষাভীতির অন্যতম কারণ।
পরীক্ষার আগের রাতে আমাদের পরীক্ষাভীতি উঠে যায় একেবারে এভারেস্টের শিখরে। মনে হয় – “হায় হায়! কিছুই তো পারি না”। তখন আমরা হুড়মুড় করে সব পড়তে যাই এবং বিসর্জন দেই ঘুমকে। চিন্তা করি – “৩৬৪ রাত তো ঘুমিয়েছি, একরাত না ঘুমালে আর কী হবে?”
এটি কিন্তু অনেক বড় একটি ভুল। স্বাভাবিকভাবে, একজন মানুষের ৭-৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। সেটি সম্ভব না হলে কমপক্ষে ৬ ঘন্টা ঘুম পরীক্ষার আগের রাতে খুব জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের মস্তিষ্ক থেকে স্ট্রেস হরমোনগুলো দূর করে আমাদের দুশ্চিন্তাকে কমিয়ে আনে। সেই সাথে মস্তিষ্ক তার ক্ষমতা ও স্মৃতিশক্তিও শানিয়ে নেয় ঘুমের মাধ্যমে।
১০। বন্ধ রাখো ফোনের সব নোটিফিকেশন:
মোবাইল আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের প্রজন্মের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু, মোবাইল একবার হাতে নিয়ে ফেসবুকে লগইন করলে সেখান থেকে বের হওয়ার রাস্তাটা কোনও এক অজ্ঞাত কারণে গায়েব হয়ে যায়। তাই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা তোমার ডিজিটাল প্রোফাইল একেবারে ডিঅ্যাক্টিভেট করতে না পারলেও অন্তত পরীক্ষার কয়েকটা দিন বন্ধ রাখো ফোনের সব নোটিফিকেশন যাতে করে তোমার পড়াশোনা কিংবা পরীক্ষার ফলাফল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোনও বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
১১। রুটিনের ব্যাকআপ রাখো:
পরীক্ষার রুটিন একটি অতি প্রয়োজনীয় বিষয়। রুটিনের কপি নিজের কাছে রাখার পাশাপাশি পরিবারের অন্য সদস্যের কাছেও দিয়ে রাখতে পারো যাতে করে কখনও কোনও পরীক্ষার সময়ে কোনও ধরণের পরিবর্তন এলে তোমাকে ধর্ম পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে গিয়ে বিজ্ঞান পরীক্ষা দিতে না হয়।
১২। বানিয়ে নাও একটি চেকলিস্ট:
পরীক্ষার হলে যাওয়ার ঠিক আগের সময়টা বেশ গোলমেলে। এ সময়টায় কেন যেন নিজেকে নিয়ে বড্ড সংশয়ে পড়তে হয়। পরীক্ষার হলে প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ একসাথে ঠিক করে গুছিয়ে নেওয়ার পরও কেন যেন সংশয় থেকেই যায়। এ সমস্যা দূর করতে আগেভাগেই বানিয়ে নাও একটি চেকলিস্ট যেখানে তোমার প্রয়োজনীয় সব উপকরণের নাম লেখা থাকবে। ফাইলে একে একে রাখার সাথে সাথে লিস্টে ওই নামের ওপর চিহ্ন দিয়ে দিলেই আর ঝামেলা হবে না।
পরীক্ষার হলে এবং পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে করণীয়:
১। হাসির সদ্ব্যবহার করো:
আমাদের সবার কাছেই হাসি নামক এক অতি শক্তিশালী অমোঘ অস্ত্র রয়েছে। পরীক্ষার হলে স্বভাবতই আমরা ভয় ও আতঙ্কগ্রস্ত থাকি। ওই সময়টায় হাসি হতে পারে তোমার ভয় দূরীকরণ দাওয়াই। আমরা সবাই জানি, হাসলে আমাদের দেহে ‘ডোপামিন’ নামক একটা হরমোন এর নিঃসরন ঘটে যা আমাদের আনন্দের অনুভূতি জাগিয়ে তুলতে সাহায্য করে। আর তোমার হাসি ক্ষেত্রবিশেষে তোমারই কোনও মেধাবী বন্ধুর আত্মবিশ্বাসকে হুট করে তলানিতে নামিয়ে দিয়ে তোমাকে প্রতিযোগীতার দৌড়ে এগিয়ে দিতেও সক্ষম।
তাই, হাসিটাকে কাজে লাগাও!
২। ঘামের বিপদ:
আমাদের অনেকেরই হাত-পা ঘেমে যাওয়ার মতো সমস্যা রয়েছে। কারও ক্ষেত্রে এটা শারীরিক কারও বা কেবল ভয় পেলে বা দুশ্চিন্তা করলে এ সমস্যা দেখা দেয়। পরীক্ষা যেহেতু ক্ষেত্রবিশেষে কারও কাছে বিভীষিকা কিংবা আতঙ্ক তাই পরীক্ষার হলে হাত-পা ঘামাটাও একটা বাজে সমস্যা। হাত ঘেমে ভিজে গেলে বেঞ্চে লেগে থাকা ময়লা হাতের সংস্পর্শে এসে পরীক্ষার খাতা কিংবা ওএমআর শিটের পরিচ্ছন্নতা নষ্ট করে দিতে পারে। তাই, যাদের এ ধরণের সমস্যা আছে তারা খাতা কিংবা ওএমআরের ওপর রুমাল রেখে লেখার অভ্যাস করতে পারো।
৩। আগেই অতিরিক্ত নিয়ে রাখো অতিরিক্ত খাতা:
পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর খাতার সাথে সংযুক্ত লেখাভর্তি পৃষ্ঠার ওপর নির্ভর করে! এটা আমাদের প্রচলিত ধারণা যদিও অনেকক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য নয়। তবুও অনেকের হাতের লেখার আকারজনিত কারণে অতিরিক্ত কাগজ বা খাতার প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আগে ভাগেই বেশী করে অতিরিক্ত খাতা পরীক্ষকের কাছ থেকে চেয়ে নেওয়া উচিত যাতে করে পরে আর কোনও সমস্যায় না পড়তে হয়।
৪। পরীক্ষার পর নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর মিলানো বর্জনীয়:
আমাদের অনেকেরই পরীক্ষার হল থেকে বেরিয়েই বন্ধুদের সাথে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন নিয়ে ছোটখাটো আলোচনা শুরু করে দিই। ক্ষেত্রবিশেষে যেটা পরবর্তী পরীক্ষার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। যে পরীক্ষা দেওয়া হয়ে গিয়েছে সেটার ভুল খুঁজে পেলেই বা আর কতটুকু লাভ হবে বরং পরের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার মানসিকতাটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেটা নিশ্চয়ই কারও কাম্য নয়!
৫। ভবিষ্যত ভেবো ভবিষ্যতেই:
আমাদের অনেকেরই এমন কিছু বন্ধু আছে যে কিনা এক ক্লাসে অধ্যয়নরত থাকাকালীনই পরবর্তী ক্লাসের পড়াশোনা করতে থাকে যেমন- এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার আগেই ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া; যেটা কখনও কখনও চলমান অবস্থানের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ ব্যাপারটা পরীক্ষার সময় বাদ দিতে হবে।
পরীক্ষার প্রতি এই ভয় বা দুশ্চিন্তা কিন্তু অনেকটাই স্বাভাবিক। পরীক্ষার সময় মানুষ যে মানসিক চাপ অনুভব করে তা নিঃসরণ ঘটায় অ্যাড্রেনালিন, কর্টেসোল সহ অন্যান্য স্ট্রেস হরমোনের। এই স্ট্রেস হরমোন মস্তিষ্ককে “ফাইট অর ফ্লাইট” রেস্পন্সের সংকেত দেয়। এজন্যই পরীক্ষা আসলে আমাদের ভয় শুরু হয়ে যায়।
২০১৫ সালে প্রায় ১৩০০ পরীক্ষার্থীর ওপর “চাইল্ডলাইন” নামক এক সংস্থার চালানো জরিপে দেখা যায় – ৯৬% পরীক্ষার্থী বিভিন্ন মাত্রায় পরীক্ষা ভীতিতে আক্রান্ত। তাহলে দেখতেই পাচ্ছ, পরীক্ষার দুশ্চিন্তায় ঘুম চলে যাওয়ার দলে তুমি একা নও।
তবে, পরীক্ষার প্রতি ভয় বা উদ্বেগ আবার সবার ক্ষেত্রে একরকম হয় না। পরীক্ষাভীতি যখন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হয়, তখনই তা অনেক ধরনের ক্ষতিকর লক্ষণ দেখায়। যেমন – মনোযোগের ঘাটতি, পরীক্ষার হলে সব ভুলে যাওয়া, ডিপ্রেশন, অস্থিরতা, অসুস্থতা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি। পরীক্ষার ভীতি দূর করতে তাই উপরের টিপসগুলো মনে রেখো এবং সে অনুযায়ী করে তোমার পরীক্ষার কাঙ্ক্ষিত ভালো ফলাফল অর্জন করো – এই শুভ কামনায় আজকের ব্লগটি এখানেই শেষ করছি।
এইচএসসি ও এডমিশন পরীক্ষার্থীদের জন্য আমাদের কোর্সসমূহঃ
- HSC 25 অনলাইন ব্যাচ ২.০ (বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- HSC 26 অনলাইন ব্যাচ (বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- HSC 25 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি)
- HSC 26 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি)
- মেডিকেল এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- ঢাকা ভার্সিটি A Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- ঢাকা ভার্সিটি B Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- বুয়েট কোশ্চেন সলভ কোর্স
- গুচ্ছ A Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- গুচ্ছ B Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
বছরজুড়ে অভিজ্ঞ টিচারদের সাথে ক্লাস 6-10 এর পড়াশোনা ও পরীক্ষার জন্য সেরা প্রস্তুতি নিতে আজই ভিজিট করো আমাদের অনলাইন ব্যাচ ২০২৫ -এ:
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন