গত পর্বে আমরা বিদেশে পড়তে যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনেছি। আজকে জানবো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ‘স্কলারশিপ’ নিয়ে৷ বিদেশে স্কলারশিপ নিয়ে অনেকেই পড়তে যেতে চান। কারণ বাইরে পড়াটা বেশ ব্যয়বহুল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অনেকেই কীভাবে স্কলারশিপ খুঁজতে হয় সেই বিষয়টি নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। সঠিক পরিকল্পনার অভাব ও বাস্তব জ্ঞান না থাকার কারণে এই স্কলারশিপ পাওয়ার স্বপ্ন মাঝেমধ্যে দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়।
স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে হলে যেসব বিষয় জানা জরুরি:
বিদেশের টিউশন ফি তুলনামূলক বেশি হওয়ায় অনেকেই সেই খরচটা বহন করতে পারেন না। কিন্তু যদি আপনার রেজাল্ট, ভাষাগত দক্ষতা ও সহশিক্ষা কার্যক্রম ভালো হয়ে থাকে তাহলে স্কলারশিপ খুব সহজেই হাতের নাগালে চলে আসবে।
স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে হলে যেসব বিষয় জানা জরুরি:
-
স্কলারশিপের মেয়াদ কত দিন এবং নবায়ন করা যাবে কী না
-
নবায়ন করার সুযোগ থাকলে কী ধরনের যোগ্যতা লাগবে
-
স্কলারশিপের অর্থ কী কী খাতে খরচ করা যাবে
-
আপনার পক্ষে স্কলারশিপের অর্থে সেখানকার জীবনযাত্রা নির্বাহ করে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব কী না
এইচএসসির পর বিদেশে স্কলারশিপ:
আমাদের দেশ থেকে বর্তমানে প্রতি বছর স্নাতক করতে একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী বাইরে পাড়ি দিচ্ছেন৷ তাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই লক্ষ্য থাকে ফুল রাইড স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা শেষ করার।
যারা স্কলারশিপ নিয়ে এইচএসসির পর দেশের বাইরে পড়তে যেতে চান, তাদের জন্য ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মিশর, রাশিয়া, আজারবাইজান, চীন, জাপান, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, জার্মানি, ব্রুনাই, তুরস্কের সরকারি বৃত্তি চালু রয়েছে।
এরকম বিখ্যাত কয়েকটি বৃত্তি হলো জাপানের মনবুশো বৃত্তি ও মনবুকাগাকুশো বা মেক্সট বৃত্তি, এমএইচটিটি স্কলারশিপ প্রোগ্রাম, জার্মানির ডিএএডি, অস্ট্রেলিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কলারশিপ, যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথ স্কলারশিপ, শেভেনিং স্কলারশিপ, কানাডার আইলট স্কলারশিপ, কানাডার হাম্বার ইন্টারন্যাশনাল এন্ট্রান্স স্কলারশিপ ইত্যাদি। এছাড়া প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষার্থীদের ফুল ফ্রি স্কলারশিপ এবং আংশিক বৃত্তির সুযোগ রয়েছে।
বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইউনিভার্সিটিগুলোতে নাম মাত্র ব্যয়ে অথবা বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ রয়েছে জার্মানিতে। জার্মান সরকার তাদের রাষ্ট্রীয় বাজেটের একটি বিরাট অংশ ব্যয় করে শিক্ষা খাতে। তাই এখানে স্কলারশিপসহ বেশ ভালো মানের শিক্ষা লাভ করার সুযোগ তুলনামূলক বেশি। আপনি যদি আন্ডারগ্রাজুয়েট স্কলারশিপ নাও পান, তবে গ্রাজুয়েট কোর্সের জন্য প্রতি বছর মাত্র ৩৫০০ ডলার খরচ হবে।
উত্তর পূর্ব ইউরোপের স্ক্যান্ডেনেভিয়ান পাঁচটি দেশে (ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন) বেশ সুযোগ-সুবিধা নিয়ে পড়ালেখা করা যায়। যেমন, নরওয়েতে বিশ্বমানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি স্তরে উচ্চশিক্ষা একদম ফ্রি, সেক্ষেত্রে নরওয়েজিয়ান ভাষায় দক্ষতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডেও বিভিন্ন বৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে। এসব বৃত্তির মাধ্যমে বিনামূল্যে পড়ালেখা ছাড়াও থাকা-খাওয়ার জন্য বৃত্তি পাওয়া যায়।
বৃত্তিগুলোর আবেদনের সাধারণ সময়কাল ডিসেম্বর থেকে মে মাসের মধ্যে। তাই এইচএসসির রেজাল্টের পর আপনি প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য হাতে বেশ কিছু দিন সময় পাবেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক বৃত্তিও দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে আবেদনের সময়ই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি সম্পর্কে ওয়েবসাইট থেকে জেনে নিন।
বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা:
ভাষাগত দক্ষতা
প্রথমেই আপনাকে IELTS বা TOEFL দিয়ে নিতে হবে। অনেকক্ষেত্রে ভাষাগত দক্ষতার সার্টিফিকেট না লাগলেও, আপনি যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিয়ে বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য নানান জায়গায় আবেদন করবেন, তাই তৈরি হয়ে কাজে নামাই শ্রেয়। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই ন্যূনতম আইইএলটিএস (IELTS) ব্যান্ড স্কোর ৭.০ এবং প্রতিটি সেকশনে ৬.৫ চাওয়া হয়। আপনি যে বিষয়ে পড়তে চান, সেই বিষয়ের চাহিদা দেখে সে অনুযায়ী IELTS এর প্রস্তুতি নিয়ে টেস্টটি দিতে হবে।
লেটার অব রেকমেন্ডেশন (Letter of Recommendation)
আবেদনের সময় এক থেকে তিন জনের কাছ থেকে রেকমেন্ডেশন লেটার (LOR) নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে সহায়তা করতে পারবেন যারা আপনার সম্পর্কে ভালো জানেন, যেমন যারা কিনা আপনাকে চেনেন, আপনার কাজ সম্পর্কে ধারণা রাখেন এবং তাঁরা আপনার পরিবারের কেউ নন। তাই দুজনকে ঠিক করা ভালো। প্রথমত, আপনার একজন সরাসরি শিক্ষক, দ্বিতীয়ত, আপনি যদি কোনো চাকরি করে থাকেন, তাহলে আপনার সরাসরি ঊর্ধ্বতন কেউ। এমন কারও নাম রেফারেন্সে দিন, যাঁর সঙ্গে আপনার ভালো সম্পর্ক আছে, যিনি আপনার জন্য সময় বের করে রেফারেন্স লিখে দেবেন।
স্টেইটমেন্ট অব পারপাস (Statement of Purpose)
আপনাকে একটি স্টেইটমেন্ট অব পারপাস বা এসওপি (SOP) লিখতে হবে। কেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতে চান, সেটিই মূলত ওখানে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে হবে। তবে ভুলেও এটা ইন্টারনেট থেকে কপি করবেন না। সময় নিয়ে নিজের মতো করে লিখুন।
এসব তৈরি করার পাশাপাশি আপনি যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান ও বৃত্তি পেতে চান, সেখানকার প্রফেসরদের প্রোফাইল দেখুন। আপনার আগ্রহের সঙ্গে যাদের কাজের মিল আছে, তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে মেইল পাঠান। তবে এক বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে একাধিক প্রফেসরের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না। একজন প্রফেসর কোনো কারণে প্রত্যাখ্যান করলে তারপরই ওই বিভাগের অন্য প্রফেসরের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য করণীয়:
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (UGC) ওয়েবসাইটেও বিভিন্ন দেশের দূতাবাস বা সরকারি স্কলারশিপের নোটিশ পাওয়া যায়। স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পছন্দের দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, চীন, জার্মানি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং রাশিয়া। এইসকল দেশের সরকারি স্কলারশিপ সংক্রান্ত খোঁজখবর মিলবে তাদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটগুলোতে।
সেখান থেকে অনলাইনেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে বৃত্তির আবেদন করতে পারেন। এছাড়াও ফেসবুকে বিদেশে স্কলারশিপ-সংক্রান্ত অনেক গ্রুপ রয়েছে। সেগুলোতে যোগ দিন এবং নিয়মিত বিভিন্নজনের পরামর্শ পড়তে থাকুন। এগুলো কাজে লাগবে। আপনার কোনো পরামর্শ থাকলেও সেখান থেকে পেতে পারেন।
আর আপনি যদি নিজ খরচে পড়তে যান তাহলে আপনার পছন্দের কোর্সটি শেষ করতে মোট কত টাকা খরচ হবে এবং কীভাবে ফি পরিশোধ করতে হবে তা মাথায় রাখবেন। বিশ্ববিদালয়ে ই-মেইল করলে তারা মোট খরচের একটি খসড়া হিসাব ও পরিশোধের পদ্ধতি জানিয়ে দেয়। মেইলে সাধারণত টিউশন ফি, আবাসন খরচ, খাবার খরচ, বইপত্র বাবদ খরচ, ইন্সুরেন্স খরচের একটা তালিকা দেওয়া হয়। আপনি চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মে না থেকে কোনো বাড়িতে পেইং গেস্ট হিসেবে থাকতে পারেন। আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ সেমিস্টারের টিউশন ফি একসাথে দিলে কিছুটা কমিশন বা ছাড় পাওয়া যায়।
সরকারি স্কলারশিপের ওয়েবসাইট:
দেশ / স্থানের নাম | ওয়েবসাইট | |
১ | যুক্তরাষ্ট্র | www.dol.gov |
২ | অস্ট্রেলিয়া | www.workplace.gov.au |
৩ | আলবেনিয়া | www.moi.gov.al |
৪ | ইংল্যান্ড | www.ukba.homeoffice.gov.uk |
৫ | ইতালি | http://www.visaservices.org.in/Italy-Bangladesh-Tracking |
৬ | ইউক্রেন | http://www.mlsp.gov.ua/ |
৭ | কানাডা | http://www.labour.gov.on.ca/ |
http://www.huembwas.org/ | ||
http://www.cic.gce.ca/english/index.asp | ||
৮ | কাতার | http://www.mot1.gov.qa/site/english |
৯ | কোরিয়া | http://www.niied.go.kr/eng/contents.do?contentsNo=78&menuNo=349 |
১০ | জাপান | http://www.mhlw.go.jp/english |
১১ | তুরস্ক | https://tbbs.turkiyeburslari.gov.tr/ |
১২ | নিউজিল্যান্ড | http://www.dol.govt.nz/ |
১৩ | নেদারল্যান্ডস | http://www.english.szw.nl/ |
১৪ | ভারত | http://www.labour.nic.in/ |
১৫ | মালয়েশিয়া | http://www.mohr.gov.my/ |
১৬ | রাশিয়া | http://www.labour.gov.on.ca/ |
১৭ | সৌদি আরব | http://www.moi.gov.sa/ |
১৮ | স্পেন | http://www.mtin.es/en |
১৯ | সিঙ্গাপুর | http://www.mom.gov.sg/ |
পার্ট-টাইম চাকরির ব্যবস্থা:
বিদেশে পড়তে যেয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা প্রধান যে বিষয়টি নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয় তা হলো পার্ট-টাইম চাকরি। নিজের হাতখরচ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় অর্থের তাগিদে রোজগারের জন্য পার্ট-টাইম চাকরি নেওয়া যায়, কিন্তু দিনের একটা বড় সময় ওই চাকরি করার পর ঠিকমতো ক্লাস করা ও পড়াশোনা চালানোর পেছনে সময় দিতে ব্যর্থ হয় অনেকেই।
অনেক সময় দেখা যায় এই কারণে গ্রেড কমতে থাকে, ফলে স্কলারশিপও বাতিল করে দেওয়া হয়। এমনটা হলে বিদেশে পড়তে যাওয়ার যে মুখ্য উদ্দেশ্য, সেটা ব্যহত হয়। তাই বিদেশে গিয়ে আপনি নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কী জাতীয় পার্ট-টাইম চাকরি করতে পারেন, সে ব্যাপারে ধারণা থাকা প্রয়োজন। অনেক দেশে আবার পার্ট-টাইম কাজ করা নিষিদ্ধ।
যেসব দেশে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ:
চেষ্টা করলে মোটামুটি সব দেশেরই স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ, তবে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্ডিয়া, মালয়েশিয়া, চীন, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, মাল্টা, হাঙ্গেরি, ফিনল্যান্ড, পর্তুগাল এসব জায়গায় যাওয়াটা সহজ। আর বাকি দেশগুলোয় স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া তুলনামূলকভাবে কঠিন। যেই দেশেরই ভিসা নেন না কেন, সে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে ভালো ধরণা নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট দেশের বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার যোগ্যতাটাও তৈরি করতে হবে।
ভিসা প্রসেসিং-এর ধাপ:
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানো অফার লেটারে উল্লেখিত সময়সীমার মধ্যেই প্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে হবে। অন্যথায় ভর্তি বাতিল বলে ধরা হবে। তাই নির্দিষ্ট তারিখের আগেই আপনাকে সেদেশের ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। কোনো দেশে ভিসা পেতে হলে প্রথমে সেদেশের ভিসার আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হয়।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই ভিসার আবেদনপত্র সরবরাহ করে থাকে। তা না হলে নির্দিষ্ট দূতাবাস থেকে ভিসার আবেদনপত্র সংগ্রহ করে সঠিক তথ্য দিয়ে নির্ভুলভাবে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রসহ দূতাবাসে জমা দিতে হবে এবং নির্দিষ্ট দিনে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহ:
-
শিক্ষাগত যোগ্যতা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র: সনদপত্র, নম্বরপত্র, প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রশংসাপত্রের সত্যায়িত ফটোকপিসহ মূলকপি।
-
জন্মসনদ
-
বর্তমান ও আগের পাসপোর্টের ব্যবহৃত পাতা। পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ১ বছর থাকতে হবে এবং পেশা, জন্ম তারিখ ও অন্যান্য সকল তথ্যের সাথে শিক্ষাগত কাগজপত্রের মিল থাকতে হবে।
-
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রমাণপত্র বা অফার লেটার।
-
আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণপত্র
-
ছবি
-
পূরণকৃত অর্থনৈতিক সামর্থ্যের (স্পনসর বা গ্যারান্টর) ফরম।
-
স্পন্সরের সঙ্গে আবেদনকারীর সম্পর্কের প্রমাণ হিসেবে জন্মসনদ, পাসপোর্ট কিংবা স্কুলের কাগজপত্র।
-
স্পন্সরের আয়ের উৎসের বিস্তারিত কাগজপত্র।
-
সশস্ত্র বাহিনীতে কাজ করার ইতিহাস থাকলে সেখানে কাজের রেকর্ড ও ছাড়পত্র।
-
ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণপত্র
-
স্বাস্থ্যবিমার প্রমাণপত্র
-
পুলিশ ছাড়পত্র

বিদেশে পড়াশোনার খরচ:
আপনি বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তি পাবেন কিনা এর উপর ভিত্তি করে দেশ নির্বাচন করা উচিত, কেননা বিদেশে পড়ালেখার সাথে ব্যয়ের সম্পর্ক রয়েছে। যদি বৃত্তি পেয়ে যান, তাহলে ওয়ার্ল্ড র্যাংকিং-এ থাকা এক নম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতেও অসুবিধা নেই। কিন্তু যদি বৃত্তি না পান অথবা আংশিক বৃত্তি পান, সেক্ষেত্রে আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী দেশ নির্বাচন করা উচিত।
কারণ, আমেরিকায় সাধারণত গ্রাজুয়েট লেভেলে পড়তে প্রতি বছর বিশ লাখ টাকা লাগে। কানাডায় সেটা পনেরো লাখ টাকা। অস্ট্রেলিয়া ও ইউকেতে পনেরো থেকে আঠারো লাখ টাকা লাগে। মালয়েশিয়া, চীন ও ভারতে মোটামুটি বাংলাদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতোই পড়ালেখার খরচ।
সেই পরিমাণ অর্থ অবশ্যই ব্যাংকে থাকতে হবে। তবে আপনি যদি স্কলারশিপ পান, স্কলারশিপের শতাংশ এই হিসাবের বাইরে রাখতে পারেন। সেই সাথে ওই দেশে গিয়ে পারিপার্শ্বিক যেসব খরচ হবে, যেমন থাকা-খাওয়া, যাতায়াত, পোশাক, হাতখরচ, চিকিৎসা ইত্যাদির জন্যও ব্যাংকে সন্তোষজনক অর্থ দেখাতে হবে। সব মিলিয়ে যদি দেখা যায় যে, টিউশন ফি হিসেবে ১০ লাখ টাকা এবং থাকা-খাওয়ার খরচ হিসেবে ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে, তাহলে ব্যাংক স্টেটমেন্ট হিসেবে অন্তত ২৫ লাখ টাকা দেখালে ভালো।
এইচএসসির পর বাইরে স্নাতক করতে যাওয়ার অসংখ্য সুযোগ আছে। একইসাথে আছে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করার সুযোগও। তাই ভালোমতো প্রস্তুতি নিয়েই বাইরে পড়তে যাওয়া উচিত। এসময় বিভিন্ন দালাল কিংবা ফ্রড এজেন্সির লোকেদের থেকে কয়েক হাত দূরে থাকবেন। তারা যেন আপনাদের অনভিজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি না করে বসে!
আপনার কমেন্ট লিখুন