শিশুর জন্য সহজ অরিগ্যামি (Origami)

April 17, 2022 ...

আজকে আমরা কথা বলবো জাপানি সংস্কৃতির দারুণ এক অবদান অরিগ্যামি নিয়ে। অরিগ্যামি কী, এর উৎপত্তি, কিছু বেসিক ফোল্ডস, এদের প্রকারভেদ আর অরিগ্যামির সুবিধাগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। সবশেষে শিশুদের জন্য সহজ কিছু অরিগ্যামি নিয়েও কথা হবে। তবে চলুন, শুরু করা যাক। 

অরিগ্যামি কী?

অরিগ্যামি শব্দটির অরি অর্থ ফোল্ডিং তথা ভাঁজ, আর কামি>গ্যামি অর্থ পেপার বা কাগজ। সাধারণত কাগজ ভাঁজ করে বিশেষ আকার দিয়ে এই অরিগ্যামি বানানো হয়। যদিও বর্তমানে শুধু কাগজই নয়, আরও অন্যান্য বস্তু দিয়েও অরিগ্যামি বানানো যায়, তবুও সচরাচর অরিগ্যামি শুনলেই কাগজের বানানোই বোঝায়। নতুন এক ধরনের অরিগ্যামির উদ্ভব হয়েছে, এর নাম মডুলার অরিগ্যামি। এই অরিগ্যামিতে ছোট ছোট বস্তু বানিয়ে তা জোড়া দিয়ে অনেক বড় কোনো আকার দেয়া হয়। 

শিশুর জন্য সহজ অরিগ্যামি (origami)
শিশুর জন্য সহজ অরিগ্যামি (Image Source: Pinterest)

অরিগ্যামির উৎপত্তি

অরিগ্যামির ইতিহাস বলতে গেলে বলতে হয়, চীন, জাপান ও ইউরোপে স্বতন্ত্রভাবে অরিগ্যামির কালচার গড়ে উঠেছিল। বিংশ শতকের আগ পর্যন্ত এরা আলাদা আলাদাই ছিল। 

চীনে বেশ আগে থেকেই মৃতের সৎকারের সময় আচারের অংশ হিসেবে ভাঁজ করা কাগজ পোড়ানোর চল আছে। এর নাম ছিল ইয়ানবাও। কাঠ বা মাটির বদলে এই কাগজ পোড়ানোর আচার সং ডাইনাস্টির আমল (৯০৫-১১২৫) থেকে চলে আসছে। 

জাপানের অরিগ্যামি সংস্কৃতি সম্পর্কে প্রথম জানতে পারা যায় ১৬৮০ সালে ইহারা সাইকাকুর লেখা এক কবিতার মাধ্যমে। সেই কবিতায় জাপানি শিন্তো বিয়ের সময় করা তাদের ঐতিহ্যবাহী মৌমাছির ডিজাইনের কথা উল্লেখ ছিল। ১৬০০ থেকে ১৮৬৮ সাল পর্যন্ত জাপানে ইডো (বা টকুগাওয়াও বলা হয়) সময়কাল ছিল, তখনকার আমলেও নোশি দেয়ার চল ছিল, যা ছিল এক ধরনের গিফট কার্ড। এভাবেই অরিগ্যামি বিকাশ লাভ করে সেখানে। 

শিশুর জন্য সহজ অরিগ্যামি
একটি হাতির অরিগ্যামি (বিশেষ নাম: মানিগ্যামি) [Image Source: TSC]

ইউরোপে সপ্তদশ আর অষ্টাদশ শতকে এক ধরনের ভাঁজ করা ন্যাপকিনের প্রচলন শুরু হয়, যদিও অবশ্য দ্রুতই এর বিলোপ হয়। ইতিহাসবিদ জন সালাসের মতে, এর পরে আরও জটিল কিছু ভাঁজ করা ন্যাপকিনের আবির্ভাব হয়, যার সূত্র ধরে পরবর্তীতে আসে ফ্রিডরিখ ফ্রেবেলের কিন্ডারগার্টেন মেথড। 

১৮৬০ সালে জাপান যখন আন্তর্জাতিকীকরণের অংশ হিসেবে তাদের সিমান্ত খুলে দেয়, তখন তারা ফ্রেবেলের কিন্ডারগার্টেন মেথড আত্তীকরণ করে, সাথে জার্মান পেপারফোল্ডিং এর ধাঁচও একীভূত করে। সাথে সাথে তারা কিছু নিয়মকানুন জুড়ে দেয়, যেমন কাগজ কাটা যাবে না, শুরুর কাগজটা বর্গাকৃতির হতে হবে, কিছু কালার কোড ইত্যাদি। মূলত তারা জাপানি সংস্কৃতির সাথে ইউরোপীয় ধাঁচের একটি মিশ্রণ আনে।   

অরিগ্যামি শেখার জন্য অরিগ্যামি ডট মি ওয়েবসাইট প্রকাশ করেছে এই বইটি

এরপর সবশেষ বিংশ শতাব্দীর দিকে এসে অরিগ্যামি এক নতুন রূপ লাভ করে। কম্পিউটেশনাল গণিতের উন্নতির সাথে সাথে ক্রমোন্নতি সাধিত হওয়া এই নতুন ঘরানাকে নিউ অরিগ্যামি বলা হতে থাকে:

বক্স প্লিটিং, টেসেলেশন্স, ওয়েট ফোল্ডিং প্রভৃতি নতুন পদ্ধতি যেমন বের হয়, তেমনি রবার্ট ল্যাং, এরিক ডিমেইন, সিফো মাবোনার মত নতুন শিল্পীরা আসেন তাদের নব নব পদ্ধতির ঝুলি নিয়ে। এভাবেই অরিগ্যামি তার আধুনিকতম রূপ নিয়ে একবিংশ শতাব্দীতে প্রবেশ করে।  

Spoken English for Kids

কোর্সটি করে যা শিখবেন

  • ইংরেজিতে কথোপকথনের স্কিল আয়ত্ত ও বৃদ্ধি করার পদ্ধতি
  • দৈনন্দিন জীবনে শিক্ষক, বন্ধু, এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলা
  • বিভিন্ন চেনা-অচেনা ইংরেজি শব্দের সঠিক উচ্চারণ
  •  

    অরিগ্যামির কিছু টেকনিক আর মৌলিক ভাঁজ

    বেশিরভাগ অরিগ্যামিই শুরু হয় কিছু বেসিক অরিগ্যামি স্ট্রাকচার থেকে, যেগুলো কিছু মৌলিক ভাঁজের সমন্বয়ে তৈরি করা যায়। এর মধ্যে আছে ভ্যালি আর মাউন্টেইন ভাঁজ, প্লিডস, রিভার্স ফোল্ড, স্কোয়াশ, সিঙ্ক ইত্যাদি। এসবের জন্য কিছু স্ট্যান্ডার্ড নামও আছে, যেগুলো দিয়ে লোকে একনামে চেনে টেকনিকটি সম্পর্কে।

    উদাহরণস্বরুপ, বার্ড বেইজ বললেই সবাই বুঝে যাবে কাগজ ভাঁজ করে ফ্ল্যাপি বার্ড বানিয়ে যে অন্তর্বর্তী ধাপ (ইন্টারমিডিয়েট স্টেজ) বানানো হয়, সেটিকে বোঝানো হচ্ছে। এমন আরও কিছু বেইজ আছে যেমন, স্কয়ার বেইজ (প্রিলিমিনারি বেইজ), ফিশ বেইজ, ফ্রগ বেইজ ইত্যাদি। 

    অরিগ্যামির প্রকারভেদ

    শিশুর জন্য সহজ অরিগ্যামি
    অরিগ্যামির প্রকারভেদ (Image Source: Superprof)

    অনেকধরনের অরিগ্যামিই প্রচলিত রয়েছে, এর মাঝে কিছু উদাহরণস্বরুপ দেয়া হলো:

    মডিউলার অরিগ্যামি

    এই অরিগ্যামিতে ছোট ছোট অনেকগুলো স্ট্রাকচার একত্রে বেশ বড় একটা কাঠামো দাঁড় করে। প্রায়শই ছোট খণ্ডগুলো অনেক সরল গড়নের হলেও বড় কাঠামোটি বেশ জটিল আর বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হতে পারে। কুসুদামার মত কিছু মডিউলার অরিগ্যামি শৌখিন বা শোভাবর্ধনকাজেও ব্যবহৃত হয়, এগুলোতে জোড়া লাগানোর কাজে গ্লু বা আঠার ব্যবহার দেখা যায়। অরিগ্যামির দূরতম আত্মীয় চাইনিজ থ্রিডি অরিগ্যামিতেও এরকম ব্যবহার হয়ে থাকে।  

    শিশুর জন্য সহজ অরিগ্যামি
    মডিউলার অরিগ্যামির উদাহরণ ।(Image Source: Polypompholyx)

    ওয়েট ফোল্ডিং

    ওয়েট ফোল্ডিং অরিগ্যামিতে সূক্ষ্ম জ্যামিতিক সোজা ফোল্ডের বদলে একটু কোমল (কিছুটা ভেজা) আর কম সূক্ষ্ম বক্র ভাঁজ থাকে। ওয়েট ফোল্ডিং-এ কাগজের কোণাগুলো একটু ভিজিয়ে নেয়া হয়, যাতে সহজেই কাঙ্ক্ষিত আকার-আকৃতি দেয়া যায়। উদাহরণস্বরুপ, বিভিন্ন জীবন্ত প্রাণীর আকৃতি প্রদানের জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার হয়। 

    শিশুর জন্য সহজ অরিগ্যামি
    একটি ওয়েট ফোল্ডেড বুল (Image Source: Pinterest)

    কিরিগ্যামি

    পেপার কাটিংকে জাপানি ভাষায় কিরিগ্যামি বলা হয়। আগে কাগজ কাটাকাটি অরিগ্যামির প্রায় অপরিহার্য বিষয় ছিল, কিন্তু সময়ের সাথে নতুন নতুন ইনোভেশন আসায় কাটাকাটির অংশ বলতে গেলে অপ্রয়োজনীয়ই হয়ে গেছে।

    যারা একদমই পেপার কাটিংকে অরিগ্যামির অংশ ভাবেন না, তারা কাটাকাটি সংশ্লিষ্ট অরিগ্যামির বিভাগটিকে কিরিগ্যামি আখ্যা দেন। বর্তমানে পেপার কাটিং সহকারে অরিগ্যামিকেই তাই কিরিগ্যামি ধরা হয়।

    টি-ব্যাগ অরিগ্যামি

    ওলন্দাজ শিল্পী তিনি ফন দার প্লাসকে টি-ব্যাগ অরিগ্যামির কৃতিত্ব দেয়া হয়। এই পদ্ধতিতে ছোট ছোট কাগজের টুকরা (যেমন: টি-ব্যাগ) বিভিন্ন ভঙ্গিতে একত্রিত করে ত্রি-মাত্রিক রূপ দেয়া হয় এবং বেশ দৃষ্টিনন্দন আর আকর্ষণীয় অরিগ্যামি বানানো যায়।

    টি-ব্যাগ অরিগ্যামির সবথেকে বেসিক রূপ দেখা যায় দ্বি-মাত্রিক রূপে, আর কাইট শেপে এগুলো বানানো হয়। গণিতের শিক্ষকগণ চাইলে প্রতিসমতা বোঝাতে এই অরিগ্যামি ব্যবহার করতে পারেন।

    শিশুর জন্য সহজ অরিগ্যামি
    টি-ব্যাগ অরিগ্যামি (Image Source: Pinterest)

    অরিগ্যামির উপকারী দিকগুলো

    ১। অরিগ্যামিতে হাতের ব্যবহার হয় প্রচুর। আর হাতের ব্যবহার ব্রেইনের কর্মক্ষমতা বাড়ায় আর মোটর নিউরনের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। একারণে হাতের আঙ্গুলে যে পেরিফেরাল নার্ভ থাকে সেটিকে সেকেন্ড ব্রেইনও বলা হয়। 

    ২। অরিগ্যামি চিন্তাশক্তি ও কল্পনাশক্তি বর্ধনে ভূমিকা রাখে। কারণ অরিগ্যামিতে শুরু থেকে কোনো একটি বস্তুকে এক বিশেষ আকার দিতে হয়, যাতে ইমাজিনেশন দরকার পড়ে। 

    ৩। রং শনাক্তকরণের দক্ষতাও বাড়ায় অরিগ্যামি, কারণ অনেক অরিগ্যামিতেই বেশ কয়েকটি রং নিয়ে কাজ করতে হয় শিশুদের। 

    ৪। মনোযোগ বাড়াতে এবং স্পেশিয়াল সচেতনতা (spatial awareness) বাড়াতে সাহায্য করে অরিগ্যামি। যখন বাচ্চারা অরিগ্যামি তৈরি করে তখন প্রতিটা ধাপেই মনোযোগ দরকার পড়ে, আর একেকটা পর্যায়ে আকার আকৃতি প্রদানের সময় স্পেশিয়াল কনশাসনেসও বৃদ্ধি পায়। 

    শিশুদের জন্য সবচেয়ে সহজ কিছু অরিগ্যামি

    অরিগ্যামির সবথেকে ভালো দিকগুলোর একটি হলো, এটি দিয়ে ছোট বাচ্চাদের এনগেইজড রাখা যায়। বর্তমান সময়ে বাবা-মাদের কাছে অন্যতম এক সমস্যা উদ্ভূত হয়েছে, আর তা হলো তাদের শিশুরা মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল ফোনে আসক্ত, বা টিভির কার্টুনে অস্বাভাবিক রকম আসক্ত:

    এই পরিস্থিতিতে অরিগ্যামি দিয়ে তাদের কাজে ব্যস্ত রাখা যাবে। এতে তাদের ডিজিটাল স্ক্রিনটাইম যেমন কমবে, তেমনি বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশেও অবদান রাখবে। ছোট বাচ্চাদের উপযোগী ৩টি সহজ অরিগ্যামি নিচে আলোচনা করা হলো। 

     


    আরও পড়ুন: জেনে নিন মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ১০০+ কিবোর্ড শর্টকাট!


    বাচ্চাদের উপযোগী ৩টি সহজ অরিগ্যামি

    জাম্পিং ফ্রগ

    শিশুর জন্য সহজ অরিগ্যামি
    জাম্পিং ফ্রগ অরিগ্যামির (Image Source: Youtube)

    উপকরণ: রঙিন কাগজ ১৮*৯ সেমি, দুয়েকটি গুগলি চোখ

    পদ্ধতি: 

    ধাপ ১: প্রথমে একটি আয়তাকার কাগজকে মাঝ বরাবর ভাঁজ করুন এবং মেলে ধরুন। এবার এর টপ রাইট কর্নারের বিন্দুকে সবার বামে নিয়ে ভাঁজ করুন এবং আবার মেলে ধরুন। 

    ধাপ ২: টপ লেফট কর্নারের বিন্দুটিকে একইভাবে ডানে আনুন এবং মেলে ধরে কাগজটিকে এবার উল্টান। 

    ধাপ ৩: এবার কর্ণগুলো যে বিন্দুতে মিলিত হয়েছে, সে বরাবর বাইরেরদিকে ভাঁজ করুন এবং কাগজটিকে ঘুরিয়ে ভিতরের পাশকে এবার উপরে রাখুন।

    ছবি দেখলে বুঝতে সুবিধা হবে: 

    শিশুর জন্য সহজ অরিগ্যামি
    ফ্রগ বানানোর প্রথম থেকে  ধাপ (Image Source: HandMade Base)

    ধাপ ৪: এইবার কোণাগুলোকে মাঝে নিয়ে আসুন যেন এরা একে অপরকে স্পর্শ করে (একেই স্কোয়াশ ফোল্ড বলে), এবং আয়তের দুই কোণাকে সমতল করে দিন যাতে ত্রিভুজের মত আকৃতি লাভ করে। 

    ধাপ ৫: এটি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এখন ত্রিভুজের উপরের অংশের দুই বিন্দুকে মাঝবরাবর নিয়ে যান এবং ভাঁজ করে দিন। সাথেসাথে ত্রিভুজের নিচের অংশের ভাঁজ দুটিকেও মাঝামাঝি এনে ভাঁজ করে ফেলুন। 

    ধাপ ৬: শেষ ধাপে উপরের দুই ছোট ত্রিভুজের মাথাকে ভাঁজ করে বাইরের দিক বরাবর বের করে দিন এবং পুরো কাঠামোটিকেই প্রস্থ বরাবর অর্ধেকে ভাঁজ করে ফেলুন। এবারে একে উল্টিয়ে দুটো গুগলি চোখ বসিয়ে দিন, আর ব্যস আপনার ফ্রগ তৈরি! 

    বাটারফ্লাই

    বাটারফ্লাই অরিগ্যামি (Butterfly origami)
    একটি বাটারফ্লাই অরিগ্যামি । (Image Source: BBC Good Food)

    উপকরণ: একটি বর্গাকৃতির রঙিন কাগজ

    পদ্ধতি: 

    ধাপ ১: কাগজটিকে লম্বালম্বি ও আড়াআড়ি দুইভাবেই ভাঁজ করুন এবং মেলে ধরুন।

    ধাপ ২: এরপর ভাঁজ করুন কোণাকুণি, দুইদিকেই। তারপর মেলে ধরুন।

    ধাপ ৩: এবারে পাশের দিকের দুই অংশকে মাঝে নিয়ে আসুন যেন একে অপরকে স্পর্শ করে (যেটির নাম আদতে স্কোয়াশ ফোল্ড)। এরপর সমতল করে ফেলুন যাতে আকৃতিটি ত্রিভুজের মত দেখতে হয়। 

    শিশুর জন্য সহজ অরিগ্যামি
    বাটারফ্লাই অরিগ্যামি তৈরির প্রথম (Image Source: Pinterest)

    ধাপ ৪: ত্রিভুজের নিচের দুই কোণাকে উপরের বিন্দুটির সাথে স্পর্শ করান এবং ভাঁজ করে দিন।

    ধাপ ৫: পুরো লেয়ারটিকে ধরে উল্টিয়ে দিন এবং মাথাটাকে নিচের দিকে ৫ মিলিমিটারমত বের করে দিন। এরপর একে চাপ দিয়ে ধরে উল্টিয়ে আগেরমত করুন। 

    ধাপ ৬: শেষে প্রতি অর্ধাংশকে ভাঁজ করে কোণার দিকগুলো মাঝের দিকে নিয়ে আসুন, যাতে বাটারফ্লাইয়ের পাখাগুলো কিছুটা ভর পায়। এইতো, বাটারফ্লাই প্রস্তুত!  

    অরিগ্যামি ডগ

    শিশুর জন্য সহজ অরিগ্যামি
    একটি অরিগ্যামি ডগ। (Image Source: Shutterstock)

    উপকরণ: একটি রঙিন স্কয়ার কাগজ, একটি কালো কলম। 

    পদ্ধতি: 

    ধাপ ১: কাগজের দুই কর্ণ বরাবর পুরোটা একবার ভাঁজ করে ভাঁজ খুলতে হবে। এবারে অর্ধেকটা নিয়ে অর্ধ কর্ণ বরাবর মুড়ে ফেলতে হবে। এতে করে একটা ছোট স্কয়ার তৈরি হয়ে যাবে।

    ধাপ ২: কোনো এক মাথা বের করে সেটির কোণা ভেতরের দিকে ছোট করে মুড়ে ফেলতে হবে। এরপর সেই বের করা মাথাটি আবার ভিতরে ঢুকিয়ে দিতে হবে, যেন আবার স্কয়ার শেপটা ফেরত আসে। তবে এবারের স্কয়ারটা আগের থেকে ছোট হবে। 

    ধাপ ৩: এবারে ভেতরে মুড়ে দেয়া মাথাটির ঠিক বিপরীতদিকের মাথাটির কিছু অংশ বাইরেরদিকে বের করে দিতে হবে। তারপর পুরো কাঠামোটিকে দৈর্ঘ্য বরাবর ভাঁজ করে ফেলতে হবে। শুনতে একটু কঠিন লাগলেও ছবি দেখলে সহজেই বোঝা যাবে:

    Dog origami
    অরিগ্যামি ডগ তৈরির শুরুর তিনটি পর্যায় । (Image Source: BBC Good Food)

    ধাপ ৪: এইবারে উপরের ফ্ল্যাপটি খুলে বের করে কর্ণবরাবর ভাঁজ করে ভিতরের পাশে মুড়ে দিতে হবে।

    ধাপ ৫: কাঠামোটি কিন্তু প্রায় হয়ে এসেছে। এই পর্যায়ে বিপরীত পাশে যেতে হবে এবং ঠিক ধাপ ৪ এর কাজগুলোই আবার মিরর করে ইনভার্টভাবে করতে হবে। এটি করা শেষে দেখা যাবে ডগ আমাদের প্রায় তৈরি। শেষে ডগের মুখটা একটু বের করে দিতে হবে যাতে সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায়, এবং কলম দিয়ে নাক এবং চোখের দিকটা এঁকে দিলেই কাজ শেষ! অরিগ্যামি ডগ একদম হাজির!

    Dog origami
    তৈরি হয়ে গেলো আমাদের অরিগ্যামি ডগ । (Image Source: BBC Good Food)

    এভাবেই আপনারাও ঘরে বসেই অতি সহজেই হাতের কাছের জিনিসপত্র দিয়ে ঝটপট বানিয়ে ফেলতে পারেন অসাধারণ কিছু অরিগ্যামি। শেখাতে পারেন বাসার ছোট বাচ্চাদেরকেও, এতে তাদের সময়টা যেমন ভালো কাটবে, তেমনি শরীর ও মনের সুষম ব্যয়ামও হবে। মানসিক দিকে বিকশিত হয়ে তারা বেটার হিউম্যান বিইং এ পরিণত হওয়ার পথে আরেকধাপ এগিয়ে যাবে।  


    References: 

    1. Origami facts for kids, Kiddle.
    2. What are the benefits of Origami, Gymbo Global Japan.
    3. Easy origami for kids, BBC Good Food.

    4. আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:


    ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩

    দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই দেশসেরা শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হও ইন্টারেক্টিভ লাইভ ক্লাসে, নাও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির সম্পূর্ণ সিলেবাসের 💯তে💯 প্রস্তুতি!

    আপনার কমেন্ট লিখুন