শুভ্র ও অভ্র দুই বন্ধু। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করে এখন চাকরি প্রত্যাশী। দুজনেরই প্রথম পছন্দ সরকারি চাকরি। শুভ্রর ইচ্ছা বিসিএস হলেও অভ্র চায় ব্যাংকিং সেক্টরে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে। তবে অভ্রর দেখাদেখি শুভ্র বিসিএসের পাশাপাশি ব্যাংক জবের প্রস্তুতিটা সেরে নেবে বলেই ভাবছে!
শুভ্র আর অভ্রর মত বেশিরভাগ তরুণই ক্যারিয়ার অপশন হিসেবে ব্যাংক জব ও বিসিএসকে বেছে নিচ্ছেন। ব্যাংক জব নাকি বিসিএস এ নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাজ করে অনেকের মাঝে। অনেকে আবার একই সাথে দুটোর প্রিপারেশন নিতে আগ্রহী। ব্যাংক জব বা বিসিএসে আগ্রহী এরকম অসংখ্য প্রার্থীর জন্য আজকের এই ব্লগটি।
বিসিএস নাকি ব্যাংক জব- কোনটি ভালো?
প্রথমেই দুই বন্ধুর উদাহরণ দিয়েছি। আসলে ক্যারিয়ার প্ল্যানিং একেক জনের একেক রকম হয়। যেহেতু ক্যারিয়ার প্ল্যানিং এ ইচ্ছা, আগ্রহ ও প্রেষণা একটা বড় জায়গা জুড়ে থাকে সেখানে একটি আরেকটির থেকে বেশি ভালো কিনা এই তুলনায় যাওয়া অমূলক।
বিসিএস ক্যাডার হয়ে সরাসরি দেশ সেবার সুযোগ পাওয়া যায়। তাছাড়া চাকরির নিরাপত্তা , উচ্চশিক্ষার সুযোগ, চাকরি শেষে বিশাল পেনশন, প্রশিক্ষণ ও দাপ্তরিক কাজে বিদেশ সফর করার সুযোগ, সামাজিক মর্যাদা প্রভৃতি কারণে বিসিএসকে প্রথম পছন্দে রাখেন অনেকে।
অন্যদিকে, বিশ্ববাজারে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সাথে সাথে উদ্যোক্তারা নতুন নতুন ব্যবসা শুরু করছে, যার ফলে বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। তেমনই একটি কর্মসংস্থান হচ্ছে ব্যাংকিং জব। সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে দেশে ৬১টি ব্যাংক রয়েছে।
বর্তমানে মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রভাবে দেশে বাণিজ্য বৃদ্ধির সাথে সাথে গড়ে উঠেছে প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ব্যাংক ব্যবস্থা। সামাজিক সম্মান, আকর্ষণীয় বেতন, আর্থিক নিরাপত্তা, ক্যারিয়ারে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ- এই সবকিছুই রয়েছে ব্যাংকিং সেক্টরে। তাছাড়া প্রথম শ্রেণির চাকরি, কম সময়ে পদোন্নতি, বছরে একাধিক ইনসেন্টিভ বোনাস, ইনক্রিমেন্ট—এসব কারণেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে চাকরি অনেকের কাছেই লোভনীয়।
বিসিএস নাকি ব্যাংক জব – কোনটি সহজ?
বিসিএসের সার্কুলার থেকে শুরু করে ফলাফল প্রকাশ অবধি সময়টা অনেক দীর্ঘমেয়াদী। এই যেমন, কিছুদিন আগে ৪৪ তম বিসিএসের সার্কুলার প্রকাশ করা হয়েছে আর প্রিলিমিনারীর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ৪২তম বিসিএসের! চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করতে আরও অনেকটা সময় লেগে যায়।
দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই দীর্ঘ সময় বেকার বসে থাকাটা অনেকের জন্যই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। আবার, কয়েকবার বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে আশানুরূপ ফলাফল না পেয়ে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েন।
সেদিক থেকে, ব্যাংক নিয়োগে দীর্ঘসূত্রিতা নেই বললেই চলে। ক্ষেত্রবিশেষে প্রাইভেট ব্যাংকগুলোতে নিয়োগের সময় অনেক কম। তাছাড়া ৬টি সরকারি, ৪২টি বেসরকারি, ৩টি বিশেষায়িত ব্যাংকসহ দেশের অন্যান্য ব্যাংকগুলোতে নিয়োগ পাওয়ার ভালো সুযোগ রয়েছে।
তবে মনে রাখতে হবে, There are no shortcuts to success; সফলতার কোনো সহজ সূত্র নেই। ব্যাংক জব বা বিসিএস উভয় ক্ষেত্রেই প্রবল প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষার মাধ্যমে আপনাকে আপনার যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে। আর তার জন্য ধৈর্য্য ও অধ্যবসয়ের বিকল্প নেই কোনো ক্ষেত্রেই।
বিসিএস ও ব্যাংক জব: মিল-অমিল
সার্কুলার
৪৪তম বিসিএস সার্কুলার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দুটি ক্ষেত্রেই যে কোনো বিষয়ে স্নাতকধারীরা আবেদন করতে পারেন। একাধিক তৃতীয় শ্রেণী গ্রহণযোগ্য নয় কোনোটিতেই। তবে ব্যাংকে আবেদনের ক্ষেত্রে এসএসসি বা উর্ধ্ব পর্যায়ের পরীক্ষার যে কোনো একটিতে প্রথম শ্রেণী থাকতে হবে।
আবার বিসিএস সার্কুলারে, মুক্তিযোদ্ধা/ শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা, প্রতিবন্ধী এবং বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার প্রার্থী ছাড়া অন্যান্য প্রার্থীর বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৩০ বছর। বাকিদের ২১ থেকে ৩২ বছর। অন্যদিকে ব্যাংক সার্কুলারে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত প্রার্থীর সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছর ও বাকিদের ৩২ বছর।
কোর্সটিতে যা যা পাচ্ছেন:
বিসিএস প্রিলি লাইভ কোর্স
পরীক্ষা পদ্ধতি ও মানবণ্টন
বিসিএস(BCS)
বিসিএস পরীক্ষার ধাপ তিনটি-
-
প্রিলিমিনারী
প্রিলিমিনারীতে ২০০ নম্বরের মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নের উত্তর করতে হয়। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১ এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.৫০ করে কাটা যায়।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের প্রত্যেকটিতে ৩৫; বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ৩০; আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে ২০; গাণিতিক যুক্তি, সাধারণ বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও আইসিটি, মানসিক দক্ষতার প্রতিটিতে ১৫ এবং ভূগোল ও পরিবেশ-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নৈতিক মূল্যবোধ ও সুশাসনে ১০ করে মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়ে থাকে।
প্রিলিমিনারী মূলত মূল পরীক্ষায় টেকার লড়াই। পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা।
-
লিখিত
প্রিলিমিনারীতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ২০০ করে; আন্তির্জাতিক বিষয়াবলিতে ১০০; গাণিতিক যুক্তি-মানসিক দক্ষতা ও সাধারণ বিজ্ঞান-প্রযুক্তি এর ওপর ১০০ করে মোট ৯০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন ছাড়া সব প্রশ্নের উত্তর প্রার্থী বাংলা বা ইংরেজি যেকোনো ভাষায় করতে পারবেন।
টেকনিক্যাল ক্যাডারের ক্ষেত্রে, বিষয়গুলোতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।
-
মৌখিক
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ২০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা হয়ে থাকে।
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় মোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে একজন প্রার্থী ক্যাডার হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন।
ব্যাংক জব(Bank Job)
ব্যাংক জবের নিয়োগও বিসিএসের মত তিনটি ধাপেই অনুষ্ঠিত হয়-
-
প্রিলিমিনারী
বিসিএসের মত ব্যাংকের প্রিলিমিনারীও পরবর্তী ধাপে প্রার্থীকে বেছে নেয়ার পদ্ধতি। তবে এক্ষেত্রে মোট নম্বর ১০০। উত্তর করতে হয় ৮০টি প্রশ্নের। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১.২৫। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ করে কাটা যায়।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞানে ২০ করে; গণিত ও মানসিক দক্ষতায় ৩০; কম্পিউটারে ১০ করে মোট ১০০ নম্বর।
-
লিখিত
এখানে তিনটি বিষয়ের ওপর মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। যদিও ব্যাংক বা বছরভেদে নম্বর বণ্টনে কিছুটা ভিন্নতা থাকে তবু সাধারণ হিসাবে বাংলায় ২৫-৩০, গণিতে ৫০-৭০ ও ইংরেজিতে ১০০ এর বেশি নম্বর বরাদ্দ থাকে।
প্রশ্ন ও লেখার মাধ্যম ইংরেজি।
-
মৌখিক
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়ে সর্বশেষ ২৫ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে ব্যাংকভেদে নিয়োগ পদ্ধতির কিছুটা ভিন্নতা দেখা যায়। তবে মূল বিষয়গুলোতে সাধারণত তারতম্য দেখা যায়না।
আরও পড়ুন:
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী? জেনে নিন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড -এর কিছু কার্যকরী ব্যবহার
চাকরির ইন্টারভিউয়ের কিছু কমন প্রশ্ন ও তার উত্তর
একইসাথে বিসিএস ও ব্যাংক জব প্রস্তুতি
যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কোয়ালিফাই করার নিশ্চয়তা থাকেনা। তাছাড়া,দেখা যায় বিসিএস আর ব্যাংকের সার্কুলারগুলো অনেকটা কাছাকাছি সময়ে প্রকাশিত হয়। এজন্য বিসিএসের সাথে সাথে ব্যাংক জবের প্রস্তুতিটাও সেরে ফেলা যায়।
সিলেবাস ও প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বিসিএসের সিলেবাসের পরিসরটা তুলনামূলকভাবে বিস্তৃত। তবে বিসিএসে থাকা সাব্জেক্টগুলোর একটা বড় অংশই কিন্তু ব্যাংক জবের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত। যেমনঃ দুই পরীক্ষাতেই সমসাময়িক বিষয়, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, বাংলা, ইংরেজি ইত্যাদি থেকে প্রশ্ন আসে। তাই একটু টেকনিক্যালি পড়াশোনা করার মাধ্যমে একইসাথে বিসিএস ও ব্যাংক জবের প্রস্তুতি নিয়ে ফেলা সম্ভব-
ইংরেজিতে জোর দিন
বিগত পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিসিএস প্রিলির গ্রামার অংশ কিছু কমন টপিক থেকেই আসে। এর মধ্যে Subject-Verb Agreement, Illogical Comparisons, Parallelism, Modifiers, Inversions ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত। Preposition, Idioms and Phrases, Article & Group verb গুলোও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও Parts of Speech, Identification of Clause, Conditional Sentence, Voice, Narration, Degree of Comparisons, Embedded Question—এগুলো থেকে পরীক্ষায় অনেক প্রশ্ন আসতে দেখা যায়।
লিখিত পরীক্ষায় Translation, Reading Comprehension, Passage Summary, Essay Writing ইত্যাদি অংশেও অনেক নম্বর বরাদ্দ থাকে। এক্ষেত্রে ভোকাব্যুলারিতে দক্ষতা থাকা ও ফ্রিহ্যান্ড রাইটিং জানাটা ভীষণ জরুরি।
এদিকে ব্যাংক নিয়োগের জন্যও Synonym- Antonym, Phrase and Idioms, One word substitutes, Spelling Mistake, Analogy এসব জানা জরুরি। আর গ্রামারের জন্য Tense, Verbs, Prepositions, Parts of Speech, Voice, Narration, Degree of Comparison, Group Verbs এগুলোর নিয়ম শিখে রাখা জরুরি।
লিখিত অংশে Focus Writing in English আসে, এখানে কোনো একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়। Creative Writing in English থাকে, এটি মূলত আপনি ইংরেজিতে কতোটা সাবলীলভাবে লিখতে পারেন তা বোঝার জন্য। তাছাড়া English Comprehension ইত্যাদি থাকে।
লক্ষ্য করে দেখুন, এই একই ধরনের প্রশ্ন কিন্তু বিসিএস লিখিততেও আসে। আপনি যখন কম্প্রিহেনশন শিখবেন তখন কিন্তু দুটির প্রস্তুতিই হয়ে যাবে। আবার ফ্রিহ্যান্ড রাইটিং এর মাধ্যমে ফোকাস রাইটিং ইন ইংলিশ আর এসে রাইটিং দুটোই কাভার হয়ে যায়। আর ভোকাব্যুলারি আর গ্রামার অংশ তো দুই ক্ষেত্রেই জরুরি।
তবে এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, ব্যাংক নিয়োগের সম্পূর্ণ প্রশ্ন সাধারণত ইংরেজিতে হয়ে থাকে (বাংলা বিষয় ব্যতীত)। এজন্য পুরো ভাষার ওপরই দক্ষতা রাখাটা জরুরি।
গণিতে বিশেষ নজর
একটু খেয়াল করে দেখুন, বিসিএস প্রিলিতে ২০০ এর মধ্যে গাণিতিক যুক্তিতে মাত্র ১৫ নম্বর বরাদ্দ। আর লিখিতর ৯০০ এর মধ্যে ১০০ নম্বর গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতায়। অর্থাৎ প্রিলিতে কোয়ালিফাই করতে কেউ যদি গণিতকে কম গুরুত্ব দিতে চান তাহলে তিনি তা করতেই পারেন। একই কথা লিখিতর জন্যও প্রযোজ্য।
কিন্তু ব্যাংক নিয়োগের একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে গণিত। প্রিলির ১০০ এর মধ্যে ৩০ আর প্রশ্নভেদে লিখিতর ৫০-৭০ নম্বর থাকে গণিতে! সুতরাং, আপনি যদি বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার ব্যাংক জব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গণিতে একটু বাড়তি নজর দেয়া উচিত।
ব্যাংকের গণিতে শতকরা, সুদ-আসল, লাভ-ক্ষতি, বিন্যাস-সমাবেশ, অনুপাত, লসাগু-গসাগু, সরল, ঐকিক নিয়ম, বর্গ, মান নির্ণয়, সমান্তর ধারা নির্ণয়, জ্যামিতিক সূত্র ও সংজ্ঞা, সমীকরণ অর্থাৎ বেসিক বিষয়গুলো থেকে প্রশ্ন আসে। বিসিএসের ক্ষেত্রেও এসব টপিক গুরুত্বপূর্ণ। ৫ম-১০ম শ্রেণির গণিত বই থেকে অনুশীলন করলে গণিত নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
তবে যেহেতু ব্যাংকের প্রশ্ন ইংরেজিতে আসে তাই, ব্যাংক জবের প্রস্তুতির জন্য গণিত প্রশ্নের ইংরেজি সংস্করণ অনুশীলন করা যেতে পারে।
বাংলায় অবহেলা নয়
বিসিএস আর ব্যাংক জব দুই ক্ষেত্রেই বাংলা অংশ থেকে ব্যাকরণ ও সাহিত্য থেকে প্রশ্ন করা হয়। উভয় পরীক্ষাতেই ব্যাকরণ থেকে ভাষা, বর্ণ, শব্দ, বাক্য, লিঙ্গান্তর, সন্ধি-বিচ্ছেদ, বচন, বানান শুদ্ধি, সমাস, কারক ও বিভক্তি, পদ, প্রকৃতি-প্রত্যয়, বাগধারা, এককথায় প্রকাশ, প্রবন্ধ, অনুবাদ প্রভৃতি থেকে প্রশ্ন হয়ে থাকে। অর্থাৎ বাংলার বেসিকটা জানা থাকা দরকার। এজন্য, ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ পড়া যেতে পারে।
এ ছাড়া বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উৎপত্তি এবং বিকাশ, বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিকদের জীবনী, তাদের কর্ম, সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য চরিত্র, ঘটনা ও উক্তি, বিখ্যাত পত্রপত্রিকার সম্পাদক ইত্যাদি সম্বন্ধে প্রশ্ন হয়ে থাকে।
ব্যাংকের পরীক্ষায়, Focus Writing in Bangla থাকে, যেখানে বাংলায় কোনো নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। বাংলায় সাহিত্যের ভাষা ব্যবহার করে কতটা সুন্দরভাবে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছেন তা যাচাই করা এ প্রশ্নের উদ্দেশ্য। বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় গ্রন্থ সমালোচনা, কাল্পনিক সংলাপও একইভাবে আপনার চিন্তা ও উপস্থাপনের দক্ষতাকে প্রকাশ করে। তাই প্রস্তুতিটা একসাথে মিলিয়ে নিলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
সাধারণ জ্ঞানে হতে হবে কৌশলী
বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে মোট ৫০ নম্বর বরাদ্দ। আবার, লিখিত পরীক্ষায় বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে যথাক্রমে ২০০ ও ১০০ নম্বর বরাদ্দ থাকে।
একইভাবে ব্যাংক নিয়োগেও সাধারণ জ্ঞানে অনেকটা নম্বর বরাদ্দ থাকে। ব্যাংক জবের সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন মূলত সাম্প্রতিক, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি থেকেই হয়ে থাকে।
দুটো পরীক্ষারই সাধারণ জ্ঞানের প্রস্তুতি হিসেবে আপ টু ডেট থাকা জরুরি। দৈনিক পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করতে হবে। বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা প্রভৃতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নিয়মিত চোখ রাখতে হবে। এতে সাম্প্রতিক বিষয়গুলো সহজে পারা যায়। বাজারে তথ্যবিষয়ক যে মাসিক ম্যাগাজিন পাওয়া যায় তা নিয়মিত পড়তে পারেন।
তাছাড়া বাংলাদেশের সংবিধান আর মানচিত্র সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত কোথাও পেলে তা ডায়েরিতে নোট করে রাখা যেতে পারে। আর সাধারণ জ্ঞান যেহেতু পরিবর্তনশীল তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে অপ্রাসঙ্গিক এমন তথ্য পড়ে সময় নষ্ট করার দরকার নেই।
কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি-র প্রস্তুতি
এ বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর যেকোনো বই অনুসরণ করে বেসিক বিষয়গুলো শিখে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে নিয়মিত অনুশীলনের বিকল্প নেই।
প্রথমেই বলেছি, আমাদের দেশের চাকরির বাজারে বৈচিত্র্য কম। তাছাড়া প্রতিযোগিতা অনেক বেশি হওয়ায় সম্পূর্ণভাবে চাকরির নিশ্চয়তা দেয়া সম্ভব নয়। এজন্য চাকরির বাজারে আরেকটু এগিয়ে থাকতে বিসিএসের পাশাপাশি ব্যাংকের প্রস্তুতিটাও নিয়ে ফেলতেই পারেন। এতে লাভ ছাড়া ক্ষতি হবে না।
ধৈর্য্য, অধ্যবসায় আর পরিশ্রমের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হোক- এই শুভকামনা রইল।
আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:
- GK for Govt. Jobs
- English for Govt. Jobs
- বিসিএস প্রিলি লাইভ কোর্স
- বিসিএস প্রিলি মডেল টেস্ট
- Trade Sales
- সরকারি চাকরি প্রস্তুতি বেসিক কোর্স
- সরকারি চাকরি পরীক্ষা মডেল টেস্ট
- ব্যাংক জবস কোর্স
- ব্যাংক জবস প্রশ্ন সমাধান + মডেল টেস্ট কোর্স
আপনার কমেন্ট লিখুন