বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্যাংকিং সেক্টর বর্তমানে হতে পারে ক্যারিয়ার গঠনের জন্য একটি আদর্শ জায়গা। স্বচ্ছ ও দ্রুততর নিয়োগ প্রক্রিয়া, স্মার্ট ক্যারিয়ার, বৈধ উপায়ে আর্থিক সচ্ছলতার সুযোগ, সামাজিক মর্যাদা প্রভৃতি কারণে তরুণদের মধ্যে ব্যাংকিং সেক্টরে কাজ করার আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলছে। এছাড়া মুদ্রানীতি প্রণয়ন, দেশের আর্থিক নীতিমালা প্রণয়ন, বড় বড় প্রজেক্টে সরাসরি কাজের সুযোগ থাকায় ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যাংকে চাকরি (ব্যাংক জব) অনেক গ্র্যাজুয়েটের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে।
এই সেক্টরটি তুলনামূলক বড় হওয়ায় এখানে সারা বছরই দক্ষ কর্মকর্তার প্রচুর চাহিদা থাকে এবং করোনাকালীন সময়ে নিয়োগ বন্ধ থাকায় বর্তমানে প্রায় সব ব্যাংকেরই নিয়োগপ্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তাই বর্তমানে সঠিক প্রস্ততি ও নিয়মিত পড়াশোনা করলে সহজেই ব্যাংকিং সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব।
এখানে আমি সরকারি ব্যাংক কয়টি, বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির সুবিধা, প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা, ব্যাংকে নিয়োগের সার্বিক প্রক্রিয়া ও ব্যাংকিং সেক্টরে নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষার প্রস্তুতি, অর্থাৎ ব্যাংক জব (Bank Job) প্রস্ততি বিষয়ে ধাপে ধাপে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি আলোচনাটি সকল চাকুরী প্রার্থী, বিশেষ করে যারা ব্যাংকে চাকরির প্রস্তুতি একদম নতুন করে শুরু করতে যাচ্ছেন তাদের জন্য অনেক উপকারী হবে।
ব্যাংক জব প্রস্তুতি নেওয়ার আগে সবার মনে কিছু প্রশ্ন থাকে, যেমন: সরকারি ব্যাংক কয়টি বা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কি কি, বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির সুবিধা কি কি কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংকে নিয়োগ পেতে কি কি যোগ্যতা লাগে? ব্যাংক জব প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করার আগে, জেনে নেই ব্যাংক জব প্রস্তুতি নিয়ে এই খুঁটিনাটি প্রশ্নগুলোর উত্তর।
সরকারি ব্যাংক
বাংলাদেশে ৬টি সরকারি ব্যাংক রয়েছে, এই ব্যাংকগুলো সরাসরি সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। বাংলাদেশে ৬টি সরকারি ব্যাংক হলো –
১) সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ,
২) জনতা ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ,
৩) রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ,
৪) অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ,
৫) বেসিক ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ
৬) বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশ।
উপরের এই ব্যাংক ছয়টি বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংক বা ৬টি রাষ্ট্রয়াত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক। এই প্রত্যেকটি ব্যাংকের শতভাগ অথবা প্রায় শতভাগ মালিকানা বাংলাদেশ সরকারের।
বেসরকারি ব্যাংক
বাংলাদেশে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা ৪৩টি, যেগুলোর বেশিরভাগ মালিকানা রয়েছে ব্যক্তি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের। বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ৩৩টি ব্যাংক প্রথাগত বা সাধারণ ব্যাংকিং কার্যক্রম করে এবং ১০ টি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম করে। বেসরকারি ব্যাংকে চাকরির খবর পেতে নিয়মিত চোখ রাখতে পারেন খবরের কাগজের পাতায় কিংবা এই ব্যাংকগুলোরনিজস্ব ওয়েবসাইটে।
বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের মুদ্রানীতি বাংলাদেশ ব্যাংক দ্বারা নিরূপিত ও পরিচালিত হয়। এছাড়া এটি বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে বাংলাদেশী টাকার বিনিময় হার নির্ধারণ করা এবং সরকারের কোষাগারের দায়িত্বও পালন করে থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির সুবিধা
- বছরে দু’টি আনুষ্ঠানিক ভাতা।
- বছরে প্রায় দুই-তিনটি লভ্যাংশে বোনাস ও
- চাকরিজীবী ঋণ, কম্পিউটার ঋণ, গৃহ ঋণ ইত্যাদি ঋণের সুবিধা।
বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়োগ
বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলো বাংলাদেশ ব্যাংক। এখানে প্রধানত ৩টি পোস্টে সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকে নিয়োগ দেয়া হয়; সেগুলো হলো:
১) সহকারী পরিচালক,
২) অফিসার (জেনারেল) ও
৩) ক্যাশ অফিসার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারি পরিচালক (জেনারেল) পদটিকে ধরা হয় ব্যাংকিং সেক্টরে এন্ট্রি লেভেলে সর্বোচ্চ পোস্ট। অন্যান্য সরকারি ব্যাংগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়া বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত ‘ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয়’ কর্তৃক সম্পাদিত হয়।
ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা
সরকারি ব্যাংক ও বেসরকারি ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু পার্থক্য রয়েছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যখন সকল অনুষদের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে, অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ব্যবসা শিক্ষার ছাত্র ছাত্রীদেরকে বেশী প্রাধান্য দেওয়া হয়। তা বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে উচ্চ মাধ্যমিকে অবশ্যই ব্যবসা শিক্ষার শিক্ষার্থী হতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য সরকারি ব্যাংকগুলোতে প্রধানত সিনিয়র অফিসার, অফিসার (জেনারেল) ও অফিসার (ক্যাশ) পদে সরাসরি নিয়োগ দেয়া হয়। যেকোনো বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করা বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এসব পদে আবেদন করতে পারবেন। এসএসসি, এইচএসসি, অনার্স বা মার্স্টার্স পরীক্ষার অন্তত যেকোনো একটিতে প্রথম বিভাগ থাকতে হবে।
বেসরকারি ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা
সাধারণত বেসরকারি ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা ও নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্ভর করে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব (নীতিমালার) উপর। কিছু ব্যাংক আছে যাদের নিয়োগের প্রক্রিয়া অনেকটা একইরকম হয়ে থাকে, আবার কিছু কিছু ব্যাংক আছে, যারা নিজেদের মতো করে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সাজিয়ে নেয়।
বেসরকারি ব্যাংকসমূহ তাদের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার, প্রবেশনারী অফিসার, ইয়াং প্রফেশনাল, এক্সিকিউটিভ অফিসার, ট্রেইনি এসিস্ট্যান্ট অফিসার প্রভৃতি পদে নিয়োগ দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ব্যাংকভেদে ভিন্ন হলেও নিয়োগের ক্ষেত্রে ভালো বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দেয়া হয়। বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে মৌখিক পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকারকে অধিক গুরুত্ত্ব দিয়ে থাকে এবং তাদের এই প্রক্রিয়াটি তিন থেকে সাতটি ধাপে সম্পন্ন হয়।
ব্যাংক জবের (Bank Job) নিয়োগ প্রক্রিয়া
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল সরকারি ব্যাংকগুলোতে চাকুরী পাবার জন্য একজন প্রার্থীকে ধাপে ধাপে প্রিলিমিনারি (১০০ নম্বর), লিখিত (২০০ নম্বর) ও মৌখিক (২৫ নম্বর) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ,বসায় শিক্ষা অনুষদ, আইবিএ, ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান ব্যাংক জব (Bank job) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ সম্পাদন করে থাকে।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে বিভিন্ন বিশেষায়িত সেক্টর যেমন আইটি ও ইঞ্জিনিয়ারিং, গবেষণা, পরিসংখ্যান ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়াও পূর্বে বর্ণিত প্রক্রিয়ার অনুরূপ।
ব্যাংক জব প্রস্তুতি: পরীক্ষা পদ্ধতি
বিসিএসের মতন ব্যাংক জবেও যেকোনো বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি থাকলেই চাকরির জন্য আবেদন করা যায়। তবে অন্যান্য চাকরির পরীক্ষার তুলনায় ব্যাংক জবের পরীক্ষার ধরন একটু আলাদা, তাই প্রস্তুতিটাও হতে হবে জুতসই। তাই স্নাতক পাশ করেই ব্যাংক জব প্রস্তুতি শুরু করে দিন। ব্যাংকের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন কেমন তা জানার জন্য আগে জানতে হবে ব্যাংকে নিয়োগ পরীক্ষা পদ্ধতি ও মানবন্টন সম্পর্কে।
ব্যাংক জব সিলেবাস ও মানবন্টন:
পরীক্ষার নাম | নম্বর |
প্রিলিমিনারি | ১০০ |
লিখিত | ২০০ |
মৌখিক | ২৫ |
ব্যাংক জব প্রস্তুতি: প্রিলিমিনারি পরীক্ষা
যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রথম ধাপ প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। পরিক্ষার্থীর সংখ্যা কমিয়ে আনতে এইখানেই বাদ পড়ে যান অনেকে৷ একটু কৌশলী না হলে প্রিলিতে টেকা মুশকিল। ব্যাংকভেদে পরীক্ষার ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হলেও মানবন্টনের ক্ষেত্রে একটা সাধারণ প্যাটার্ন অনুসরণ করা হয়৷ তাছাড়া পদভেদে ভিন্নতা আসে পরীক্ষার প্রশ্নেও৷ তবে আপনি যেখানেই পরীক্ষা দেন না কেন, আপনাকে প্রথমেই প্রিলিমিনারি উতরে যেতে হবে
ব্যাংক জবস কোর্স
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার নম্বর বন্টণ
সরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে ১০০ নাম্বারের এমসিকিউ পরীক্ষা হয়। এতে উত্তর করতে হয় ৮০ নাম্বার। প্রতিটি সঠিক উত্তর এর জন্য ১.২৫ নাম্বার ও ভুল উত্তরে ০.২৫ নাম্বার কাটা যায়। সাধারণতবাংলা ব্যাকরণ, বাংলা সাহিত্য, ইংরেজি ব্যাকরণ, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, কম্পিউটার, বিজ্ঞান, সমসাময়িক বিশ্ব থেকে প্রশ্ন করা হয়। সাধারণত গণিত থেকে ৩৫-৪০ টি, বাংলা ও ইংরেজি থেকে ১৫-২০টি করে এবং সাধারণ জ্ঞান ও আইসিটি থেকে ১৫-২০টি করে প্রশ্ন আসে। এর কোনো নির্দিষ্ট বাঁধাধরা নিয়ম নেই। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার বিষয়বস্তু:
- বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
- ইংরেজি
- সাধারণ গনিত ও মানসিক দক্ষতা
- সাধারণ জ্ঞান
- আইসিটি
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সিলেবাস ও প্রস্তুতি
এবার আসি ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক সিলেবাস ও প্রস্তুতির (Bank job preparation) নিয়ে।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ টপিক: বাংলা
আপনার যদি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ভালো দখল থেকে থাকে, তাহলে আপনি খুব সহজেই ২৫-৩০টি প্রশ্নের উত্তর করতে পারবেন। ব্যাকরণ অংশ থেকে ভাষা, বর্ণ, শব্দ, বাক্য, লিঙ্গান্তর, সন্ধি-বিচ্ছেদ, বচন, বানান শুদ্ধিকরণ, সমাস, কারক ও বিভক্তি, পদ, প্রকৃতি-প্রত্যয়, বাগধারা, এককথায় প্রকাশ, অর্থনীতিবিষয়ক প্রবন্ধ, অনুবাদ প্রভৃতি বিষয় থেকে প্রশ্ন হয়ে থাকে। আর বাংলা ভাষা ও সাহিত্য থেকে ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ, বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিকদের জীবনী, তাঁদের কাজ, উক্তি, বিখ্যাত পত্রপত্রিকার সম্পাদক ইত্যাদি সম্বন্ধেও প্রশ্ন এসে থাকে।
বিসিএস পরীক্ষার বাংলা ব্যাকরণ ও সাহিত্য অংশটির জন্য প্রস্তুতি নেয়া থাকলে ব্যাংকের জন্য আলাদাভাবে এ বিষয়ে প্রস্ততি নেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। ব্যাকরণের জন্য ৯ম-১০ম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ বোর্ড বইটি নখদর্পণে থাকতে হবে। এর বাইরে সাধারণত আর কিছুই পড়তে হয়না। এই বইয়ের ধ্বনিতত্ত্ব, ধ্বনির পরিবর্তন, শব্দের প্রকারভেদ, কারক, সমাস, ধাতু, উপসর্গ, প্রত্যয়, বাক্য চ্যাপ্টারগুলো খুব ভালোভাবে পড়তে হবে। বোর্ড বইটিতে এ সংশ্লিষ্ট যেসব উদাহরণ আছে তার বাইরে ব্যাংক জব পরীক্ষায় (Bank exam) আসে না বললেই চলে।
বাজারে প্রচলিত যে কোনো বই থেকে শুদ্ধ বানান, বিভিন্ন শব্দের ইংরেজি পরিভাষা, বাগধারা, এককথায় প্রকাশ ও সন্ধি নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। যেসব বিষয় সহজে মুখস্ত হয় না,সেগুলো আলাদাভাবে মার্ক করে প্রতিদিন একবার দেখার চেষ্টা করলে পরীক্ষার হলে তাৎক্ষণিক মনে না থাকলেও অনেক সময় অপশন দেখে উত্তর দেয়া যায়।
বাংলা সাহিত্যের পরিধি অনেক বড়। যারা আগে থেকে প্রস্ততি নিবেন তারা বাংলা সাহিত্যের ক্রমবিকাশ (প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ, আধুনিক যুগ) বিভিন্ন যুগের গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিকদের সৃষ্টি, সমকালীন সাহিত্য, আঞ্চলিক সাহিত্য, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাহিত্য ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত পড়াশোনা করবেন। সিলেবাসটি বেশ বড় মনে হলেও বর্তমান সময়ে বিসিএস ও ব্যাংকে চাকরির মৌখিক পরীক্ষায় সাহিত্য থেকে প্রশ্ন করার প্রবণতা দেখা যায়।
যারা দীর্ঘমেয়াদে প্রস্ততি নিচ্ছেন তাদের জন্য আমার পরামর্শ থাকবে নিয়মিত উপন্যাস পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে করে অবসর সময়ে বিনোদনের পাশাপাশি বিভিন্ন বই সম্বন্ধে বিশদ জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। তাই বলে যাদের দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতি নেয়ার সময় নেই, তারা হতাশ হবেন না। বাজারে প্রচলিত বই থেকে বাংলা সাহিত্যের যুগবিভাগ, বিখ্যাত সাহিত্যিকদের (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মীর মশাররফ হোসেন, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবনানন্দ দাশ, কাজী নজরুল ইসলাম, জসীমউদদীন, শামসুর রাহমান, বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামাল) সাহিত্যকর্ম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাহিত্যকর্ম এবং সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ও পুরস্কারপ্রাপ্ত সাহিত্যকর্মগুলো বিষয়ে অধ্যয়ন করলে ব্যাংকে চাকরির প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা সম্ভব।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষা: বাংলা বুকলিস্ট
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বাংলার প্রস্তুতির জন্য যেসব বই পড়তে পারেন তা হলো:
- ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ বোর্ড বই,
- বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর),
- এমপিথ্রি বাংলা।
- এমসিকিউ অনুশীলনের জন্য জয়কলি বিসিএস বাংলা।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ টপিক: ইংরেজি
শুধু ব্যাংক নয়, যেকোনো চাকুরীর পরীক্ষায় ইংরেজিতে ভালো করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক লেভেলে ইংরেজির শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়না। যার ফলে পরবর্তী একাডেমিক জীবনে এবং চাকুরীর নিয়োগ পরীক্ষায় তাদেও অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এর কোনো স্বল্পমেয়াদী সমাধান নেই। সঠিক উপায়ে নিয়মিত ১-১.৫ বছর অনুশীলন করলে ইংরেজিতে দুর্বলতা অনেকাংশে লাঘব করা সম্ভব।
কোনো এক অজানা কারণে সব ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ইংরেজিতে অকৃতকার্য হওয়ার সংখ্যা অন্যান্য বিষয়ের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে। সেজন্য যেসব ইংরেজির যেসব বিষয় না পড়লেই নয়, সেগুলোর দিকে ভালো নজর দিতে হবে। যেমন:
- Parts of Speech
- Sentence
- Tense
- Person
- Narration
- Voice
- Correction ইত্যাদি।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
English for Govt. Jobs
ব্যাংক জব (Bank job) পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে মূলত ভোকাবুলারি ও গ্রামার অংশ থেকে। ভোকাবুলারির জন্য ৩-৪ হাজার ওয়ার্ড মুখস্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে ‘জিআরই ৩৩৩ হাই ফ্রিকোয়েন্সি ওয়ার্ড’ দিয়ে আপনার অধ্যয়ন শুরু করতে পারেন। এগুলো গুগলে সার্চ করলেই পাওয়া যায়। তারপর ‘ওয়ার্ড স্মার্ট’ বই থেকে পার্ট-১ এর ৭৫০+ ওয়ার্ড শেষ করলে আপনার প্রস্তুতির একটি বড় অংশ সম্পন্ন হয়ে যাবে। পরবর্তীতে হাতে সময় থাকলে ‘ওয়ার্ড স্মার্ট’ বইয়ের পার্ট-২ শেষ করতে পারেন।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষা: ইংরেজি বুকলিস্ট
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ইংরেজির প্রস্তুতির জন্য যেসব বই পড়তে পারেন তা হলো:
- Cliff’s Toef,
- Applied English Grammar and Composition,
- A Passage to English Grammar,
- English for Competitive Exam,
- APEX English,
- Master English Grammar.
ইংরেজি ব্যাকরণ অংশের জন্য Cliff’s Toefl ও পি.সি. দাস রচিত Applied English Grammar and Composition বই দুটি আমার কাছে বেশ ভালো হয়েছে। তবে যাদের ভিত্তি একেবারেই দুর্বল, তাদের জন্য এস.এম. জাকির হোসেন রচিত A Passage to English Grammar বইটি অনেক ভালো হবে। তবে নিয়মিত অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। অনুশীলনের জন্য বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন বই যেমন, English for Competitive Exam, APEX English, Master English Grammar ইত্যাদি থেকে আপনার পছন্দমত যেকোনো বই থেকে প্রতিদিন অনুশীলন করবেন। Appropriate Preposition, Group Verb, Proverb, Idioms and Phrases অংশগুলো এসব বই থেকে অনুশীলন করলেই চলবে।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ টপিক: গণিত
যেকোনো চাকুরীর নিয়োগ পরীক্ষায় একমাত্র গণিত অংশে সহজেই ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। আমাদের অনেকের মধ্যেই গণিতভীতি কাজ করে, তবে কিছু কৌশল অবলম্বন করলে সহজেই এই ভীতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব।
অনেক পরীক্ষায় গণিতের প্রশ্ন ইংরেজি ভাষায় করা হয়, যার ফলে ভাষাগত দক্ষতা না থাকলে সমাধান জানা থাকলেও অনেক সময় সঠিক উত্তর দেয়া সম্ভব হয়না। এই সমস্যা সমাধানের জন্য R. S. Agarwal রচিত Quantitative Aptitude বই এবং বিভিন্ন ভারতীয় ওয়েবসাইট যেমন, Indiabix, Examveda ইত্যাদি থেকে অনুশীলন করতে পারেন।
যে রেফারেন্সগুলো দিলাম সেখানে প্রতিটি টপিকের Easy, Medium, Hard লেভেল আলাদাভাবে আছে। এগুলো অনুশীলন করতে পারলে প্রিলিমিনারির পাশাপাশি লিখিত অংশের প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়ে যাবে। যেসব টপিকের বিষয়ে বিশেষভাবে প্রস্তুতি নিবেন সেগুলো হলো- Number, Ratio and Proportion, Work and Time related math, Train related math, Percentage, Interest, Geometry ও Probability.
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষা: গণিত বুকলিস্ট
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ইংরেজির প্রস্তুতির জন্য যেসব বই পড়তে পারেন তা হলো:
- ৮ম থেকে ১০ম শ্রেণির সাধারণ গণিতের বোর্ড বই,
- Khairul’s Basic Math
- Professor’s Key to Bank Job
- Khairul’s Advance Math
- Bank Job or MBA Shortcut Math by Arifur Rahman
যারা একদম নতুন অবস্থায় ব্যাংক জব প্রস্তুতি (Bank job preparation) শুরু করছেন, তারা ৮ম থেকে ১০ম শ্রেণীর সাধারণ গণিতের বোর্ড বই খুব ভালোভাবে শেষ করবেন। বেসিক ভালো করার জন্য Khairul’s Basic Math বইটি অনেক ভালো। অনেক বইতে শর্টকাটে গণিত সমাধানের কৌশল দেয়া থাকে যা অনুসরণ করা উচিৎ হবে না। আপনার বেসিক ভালো হলে আপনি নিজে নিজেই শর্টকাট বের করতে পারবেন। এই ৩টি বই শেষ করলে ৩/৪ মাসের মধ্যে আপনার গণিতে ভালো একটা ভিত্তি তৈরি হবে।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষা: সাধারণ জ্ঞান ও আইসিটি
সাধারণ জ্ঞানের আসলে কোনো নির্দিষ্ট সিলেবাস নেই। যে কোনো জায়গা থেকেই প্রশ্ন আসতে পারে। এক্ষেত্রে বেসিক প্রিপারেশনের জন্য এমপিথ্রি বাংলাদেশ বিষয়াবলী ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী পড়লেই যথেষ্ট। ব্যাংকে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় সাম্প্রতিক অংশ থেকে প্রশ্ন বেশি আসে। সেজন্য নিয়মিত পত্রিকা পড়া ও খবর দেখার অভ্যাস থাকতে হবে। ব্যাংকিং সম্পর্কিত টার্ম ও অর্থনৈতিক বিষয়াবলি সম্পর্কে ভালো ধারণা করলে এই অংশে ভালো করা সম্ভব।
ব্যাংকে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় আইসিটি অংশটি একটু আলাদা। এখানে অনেক টেকনিক্যাল প্রশ্ন আসে। এখানে আমি শর্টকাটে শুধু ব্যাংকের জন্য প্রিপারেশন না নিয়ে সার্বিকভাবে সব পরীক্ষার জন্য প্রিপারেশন নেয়ার বিষয়ে পরামর্শ দিব। এক্ষেত্রে উচ্চমাধ্যমিক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বইটি সবচেয়ে ভালো। বইটির প্রোগ্রামিং অংশ বাদে অন্য সকল অধ্যায় ভালোভাবে শেষ করলে যেকোনো প্রিলিমিনারি ও লিখিত অংশে ভালো করা সম্ভব। অনেক সময় বিশেষ কোনো টপিক (নেটওয়ার্কিং, ডকুমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন ডিভাইস) না বুঝলে টপিক ধরে ধরে ইউটিউবে সার্চ দিলে অনেক ভালো ভালো লেকচার পাবেন। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ সাইট, ই-কমার্স, ই-ব্যাংকিং, আইসিটি খাতে সরকারের কার্যক্রম বিষয়ে ধারণা রাখবেন।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষা: সাধারণ জ্ঞান ও আইসিটি বুকলিস্ট
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান প্রস্তুতির জন্য যেসব বই পড়তে পারেন তা হলো:
- কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স (সাম্প্রতিক বিষয়ের জন্য)
- MP3 বাংলাদেশ বিষয়াবলি
- Professors Job Solution
- জোবায়ের’স GK
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় আইসিটি প্রস্তুতির জন্য যেসব বই পড়তে পারেন তা হলো:
- ৯ম-১০ম শ্রেণীর ICT বোর্ড বই
- ১১শ-১২শ শ্রেণির শ্রেণীর ICT বোর্ড বই
- George’s Easy ICT
- Current Affairs for ICT
- জয়কলি পাব্লিকেশনের ICT Suggestions
- জোবায়ের’স সিরিজের আইসিটি মাস্টার
আরো পড়ুন: বিসিএস নাকি ব্যাংক জব – কোনটি বেছে নেয়া উচিত
ব্যাংক জব প্রস্তুতি: লিখিত পরীক্ষা
আপনি চাকুরী পাবেন কি না, তা বহুলাংশে নির্ভর করে আপনার লিখিত পরীক্ষার উপর। এই অংশটি চাকুরী পাওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। সরকারি ব্যাংকগুলোতে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হয়, সময় থাকে ২ ঘন্টা। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে পরীক্ষাভেদে ২-৪ টি বিশ্লেষণমূলক প্রশ্নের উত্তর (ফোকাস রাইটিং), একটি ইংরেজি প্যাসেজ, ২টি আবেদনপত্র, ২টি অনুবাদ ও ৫-৭ টি গণিতক সমস্যা সমাধান করতে হয়।
ব্যাংক জব লিখিত পরীক্ষার মানবন্টন:
বিষয়বস্তু | নম্বর |
বাংলা | ২৫-৩০ |
ইংরেজি | ১০০ এর বেশি |
গনিত | ৫০-৭০ |
বেসরকারি ব্যাংকের লিখিত পরীক্ষার নম্বর বণ্টন ভিন্ন হলেও প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য নেই। পরীক্ষার খাতায় প্রতিটি প্রশ্নের জন্য উত্তরপত্রে প্রদত্ত নিদিষ্ট স্থানের মধ্যেই উত্তর সম্পন্ন করতে হয়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ২মাসের মধ্যেই লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় বিধায় আলাদাভাবে প্রস্তুতির সময় খুব একটা পাওয়া যায় না। সুতরাং ব্যাংকে চাকরির প্রিলিমিনারির পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার সময়েই লিখিত অংশের প্রস্তুতি নিতে হবে।
ব্যাংক জব প্রস্তুতি: ফোকাস রাইটিং
ব্যাংকের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন সঠিকভাবে উত্তর করার জন্য লিখিত পরীক্ষায় ফোকাস রাইটিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এজন্য বাংলা ও ইংরেজি রাইটিং স্কিল ভালো হতে হয়। এখানে অনেক বেশি লেখার সময় ও স্থান নেই। তাই খেয়াল রাখতে হবে যাতে লেখার সময় বাক্য গঠন শুদ্ধ হয়, বাক্যে বানান ও ব্যাকরণগত ভুল না হয়, শব্দচয়ন সুন্দর ও আধুনিক হয় এবং সর্বোপরি লেখাটি যাতে তথ্যসমৃদ্ধ হয়।
এজন্য নিয়মিত বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদকীয় পড়ার কোনো বিকল্প নেই। বাজারে বর্তমানে সারা মাসের বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদকীয় সংবলিত বই (যেমন মহিদস্ সম্পাদকীয় সমাচার) পাওয়া যায় যা লিখিত ও ভাইবার জন্য খুব কাজে দেয়। যাদের প্রস্তুতি নেয়ার সময় আছে তারা এস.এম. জাকির হোসেন রচিত An Anatomy of English Sentence বইটি দেখতে পারেন। বইটিতে Clause ও Complex Sentence লেখার কিছু দুর্দান্ত কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
সরকারি চাকরি প্রস্তুতি বেসিক কোর্স
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
ফোকাস রাইটিংয়ের জন্য নিম্নোক্ত টপিকগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখতে পারেনঃ
- Cyber Security for Banking Sector,
- Initiatives taken by the central bank during the Covid-19 pandemic,
- Money laundering and anti-money laundering initiatives
- Fiscal policy and monetary policy,
- Single-digit interest rate,
- Megaprojects run by the government,
- Foreign currency reserve,
- Economic zones and their impact,
- Poverty and development in Bangladesh,
- Women empowerment,
- Any recent global and local issue
এছাড়া প্রতিদিন একটি করে ইংরেজি থেকে বাংলা ও বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ করার অভ্যাস থাকলে দ্রুত সময়ে অনুবাদ, ভোকাবুলারি ও ফোকাস রাইটিং বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব। অনুবাদের ক্ষেত্রে আক্ষরিক অনুবাদের চেয়ে ভাবানুবাদের দিকে বেশি গুরুত্ব দিবেন এবং Complex Sentence অনুবাদে সমস্যা হলে অর্থ ঠিক রেখে বাক্যকে ভেঙ্গে ছোট ছোট করে আলাদাভাবে অনুবাদ করবেন। অনুবাদের জন্য আলাদাভাবে বই কেনার কোনো প্রয়োজন নেই।
ব্যাংকে চাকরির লিখিত পরীক্ষা ও প্রিলিমিনারি পরীক্ষার গণিত অংশের প্রস্তুতি একসাথে নেয়াটা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এক্ষেত্রে, প্রিলিমিনারির ক্ষেত্রে যে সাজেশন দিয়েছি তা অনুসরণ করলেই চলবে। তবে মনে রাখতে হবে, লিখিত পরীক্ষায় গাণিতক সমস্যা সমাধানের জন্য খুব কম সময় পাওয়া যায়। এজন্য R. S. Agarwal রচিত Quantitative Aptitude ও জাফর ইকবাল আনসারী রচিত Bank Written Math বইদুটি শেষ করতে পারলে লিখিত পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব।
ব্যাংক জব প্রস্তুতি: মৌখিক পরীক্ষা
সরকারি ব্যাংক জবের মৌখিক পরীক্ষায় মাত্র ২৫ নম্বর থাকে। এজন্য বিসিএস এর মত আলাদাভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ভাইবা বোর্ডে আপনার স্মার্টনেস, প্রেজেন্টেশন ও কথা বলার ধরন চেক করা হয়। আপনি যদি বেয়াদবি না করেন তাহলে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলেও আপনাকে ফেল করাবে না।
বোর্ডে সবসময় পজিটিভ থাকবেন। কোন উত্তর না জানা থাকলে বিনয়ের সাথে অপারগতা জানাবেন, তবে কনফিডেন্টলি ভুল উত্তর দেওয়া পরিহার করবেন। সাধারণত বাংলাতেই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে, তবে ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস থাকাটাও জরুরী। ভাইবা বোর্ডে যাওয়ার আগে নিচের টপিকগুলো দেখে যেতে পারেনঃ
- নিজ নামের অর্থ
- নিজ জেলা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
- মুক্তিযুদ্ধ
- সাম্প্রতিক আলোচ্য বিষয়
- যে ব্যাংকের চাকুরীর পরীক্ষা দিচ্ছেন সেই ব্যাংকের সাধারণ কিছু বিষয়
- অনার্সে পঠিত বিষয়
- ব্যাংকিং সম্পর্কিত টার্ম
এ বিষয়গুলো পড়ে গেলে আশা করি ভাইবা বোর্ডে ভালো করবেন।
আপনারা যারা ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যাংকিংকে বেছে নিতে চান তারা এই গাইডলাইন ফলো করে যদি এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেন তাহলে ৬-৮ মাসের মধ্যেই খুব গোছানো একটি প্রস্তুতি নিতে সক্ষম হবেন। আপনাদের এই প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করেই টেন মিনিট স্কুল তাদের ব্যাংক জব কোর্সটি সাজিয়েছে যেখানে আপনি পাবেন বিভিন্ন ব্যাংকে চাকরির পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির গাইডলাইন। যারা সামনের দিনগুলোতে আমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নেতৃত্ব দেয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করতে যাচ্ছেন তাদের সকলের জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং ভালোবাসা।
লেখক:
আসহাবুল মাহমুদ সিফাত
সহকারী পরিচালক,
বাংলাদেশ ব্যাংক।
চাকরি প্রস্তুতিতে আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- GK for Govt. Jobs
- English for Govt. Jobs
- বিসিএস প্রিলি লাইভ কোর্স
- বিসিএস প্রিলি মডেল টেস্ট
- সরকারি চাকরি প্রস্তুতি বেসিক কোর্স
- সরকারি চাকরি পরীক্ষা মডেল টেস্ট
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারেন এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন