পুরোটা পড়ার সময় নেই ? ব্লগটি একবার শুনে নাও !
পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়া করার স্বপ্ন বুকে লালন করে শত শত মেধাবী তরুণ। অনেকে হয়তো তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারে,অনেকে আবার পারে না। তবে প্রত্যেকের মধ্যেই পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্কে জানার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়।
একটি দেশের জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি তৈরির অন্যতম মূল বুনিয়াদ হিসেবে কাজ করে ঐ দেশের উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলো। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন,
একমাত্র প্রতিভা নিয়োগের মাধ্যমেই একটি বিশ্ববিদ্যালয় সেরা অবস্থানে যেতে পারে। যা সত্যিই খুব সহজ!
নিজের দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আমাদের সবারই কম-বেশি ধারণা আছে। কিন্তু বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্কে জানার কৌতূহল আমাদের থেকেই যায়। কৌতূহলী সেসব মানুষের জন্যই আজকের এই লেখাটি! ‘হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি’ -এর গুরুত্ব অনুসারে ক্রমান্বয়ে বিশ্বসেরা ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ও খুঁটিনাটি জেনে নাও লেখাটি পড়ে।
কোর্সটিতে যা যা পাচ্ছেন:
বিসিএস প্রিলি লাইভ কোর্স
১। ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড (University of Oxford)
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড পৃথিবীর একটি প্রাচীন ও বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সঠিক তারিখ সম্পর্কে জানা যায় না, তবে ধারণা করা হয় ১০৯৬ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইংরেজি ভাষাভাষী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। পৃথিবীর সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। ৩১টি কলেজ নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে থাকে। উচ্চাকাঙ্ক্ষী মানুষদের কাছে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি এক স্বপ্নের নাম।
২। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (California Institute of Technology)
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার প্যাসেনাডোতে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত। এটি একটি বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেখানে অসাধারণ কিছু অনুষদ আর সারা বিশ্ব থেকে আগত অসংখ্য ছাত্রের সমাগম থাকে। ১৮৯১ সালে এটি প্রথম ‘Throop University’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯২০ সালে ‘ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি’ নামকরণ করা হয়।
এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে এখন পর্যন্ত ৩৪ জন নোবেল বিজয়ী এবং জাতীয় পদক পেয়েছেন ৫৮ জন। এছাড়াও প্রতিনিয়তই বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে সুনাম কুড়াচ্ছে। পৃথিবীর বিখ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি অনেক মেধাবী তরুণের আকাঙ্ক্ষার জায়গা।
৩। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (Stanford University)
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত আরেকটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়। এটি মূলত গবেষণার জন্য বিখ্যাত। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৮৫ সালে। ১৮৯১ সালের ১ অক্টোবর ৫৫৫ জন ছাত্র নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। ১৯০৫ সালে এক ঘূর্ণিঝড়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে ১৯০৬ সালে তা পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা হয়। পৃথিবীর বিখ্যাত লোকদের অনেকেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। তরুণদের কাছে এ বিশ্ববিদ্যালয়টিও একটি স্বপ্নের নাম।
৪। ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজ (University of Cambridge)
ইংরেজি ভাষাভাষী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। পৃথিবীর সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এটি তৃতীয় প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজ প্রতিষ্ঠিত হয় মূলত ১২০৯ সালে। বর্তমানে ৩১ টি কলেজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। ৯০ জন নোবেল বিজয়ী এ প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযুক্ত ছিলেন। যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে প্রাচীন ও বিখ্যাত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি অনেক তরুণেরই স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়।
৫। Massachusetts Institute of Technology (MIT)
আমেরিকার আরেকটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি মূলত শরীরবিদ্যা ও ইঞ্জিনিয়ারিং-এর জন্য বিখ্যাত। তবে বর্তমানে জীববিজ্ঞান,অর্থনীতি, ভাষাবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনাও এখানে পড়ানো হয়। ১৮৬১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে শিল্পায়ন বৃদ্ধির সময় প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। বাংলাদেশের কিছু মেধাবী শিক্ষার্থীও বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণ করছে। তরুন মেধাবীদের কাছে এমআইটি এক বিশাল স্বপ্নের আরেক নাম।
৬। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় (Harvard University)
আমেরিকার বিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পেয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৬৩৬ সালে। পৃথিবীর অনেক জ্ঞানীগুণী মানুষের জন্ম হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। নোবেল বিজয়ী থেকে শুরু করে পৃথিবীর বড় বড় সব পুরষ্কার বিজয়ীদের অনেকেই লেখাপড়া করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। মেধাবী শিক্ষার্থীদের অনেকেরই জীবনের লক্ষ্য থাকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা।
আরও পড়ুন:
IELTS Writing Task 1 ও Writing Task 2: টিপস ও স্ট্র্যাটেজি
IELTS Speaking ও Listening টেস্টে এ ভালো করতে কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
৭। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় (Princeton University)
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির প্রিন্সটনে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৭৪৬ সালে কলেজ অব নিউ জার্সি নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। আমেরিকান বিপ্লবের আগে প্রতিষ্ঠিত কলোনিয়াল ৯টি কলেজের মধ্যে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় একটি। বর্তমানে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি পৃথিবীর ৭ম বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হিউম্যানিটিজ, সোশ্যাল সায়েন্স, ন্যাচারাল সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়। তরুণ মেধাবীদের কাছে এটিও একটি প্রত্যাশিত বিশ্ববিদ্যালয়।
৮। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় (Yale University)
১৭০১ সালে কানেকটিকাট উপনিবেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চশিক্ষার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়টি আমেরিকার তৃতীয় প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটের নিউ হ্যাভেনে অবস্থিত। এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম একাডেমিক ইনস্টিটিউশন। পৃথিবীর ৫১ জন নোবেল বিজয়ী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংযুক্ত ছিলেন। মেধাবী তরুণদের কাছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিও একটি স্বপ্নের নাম।
৯। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলি (University of California, Berkeley)
যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৬৮ সালে। ১০ টি ক্যাম্পাস নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে ৯টি আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েট ক্যাম্পাস,আর একটি প্রফেশনাল। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় এ বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মেধাবী তরুণদের কাছে এ বিশ্ববিদ্যালয়টিও একটি স্বপ্নের নাম।
১০। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় (Chicago University)
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় ঊনিশ শতকের গোধূলি লগ্নে সাধারণ মানুষকে শিক্ষার দোরগোড়ায় নতুন আলো দেখানোর জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যুক্তরাজ্যে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি নিয়মিতভাবে শিক্ষাগত দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় নিম্ন স্তরে গণ্য হলেও পুরষ্কার বা ক্রীড়াঙ্গনে বেশ প্রসারিত। স্যাটেলাইট ক্যাম্পাস ও বৈদেশিক সুবিধার সঙ্গে, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় খুব অল্প সময়েই তার মার্কিন ভূগোল অতিক্রম করেছে। সর্বোপরি এই বিশ্ববিদ্যালয়ও অনেক শিক্ষার্থীরই স্বপ্নের জায়গা।
স্কুলজীবনের দশ বছরের মত বিশ্ববিদ্যালয় জীবন এত দীর্ঘ হয় না। তবে মনে রাখার মত জীবনের কয়েকটি স্মরণীয় বছর হয়ে থেকে যায়। আর ব্যাপারটা কেমন হয়? যদি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চেয়েছিলে, নিজের সেই পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়টিতেই পড়াশোনার পাট চুকানো যায়! কে জানে আজকে বাংলাদেশের কোনো প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসে তুমি বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটিতে পড়ার স্বপ্ন দেখছো; কিন্তু হয়তো কয়েক বছর পরে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনাতেই নিজেকে আবিষ্কার করলে! ব্যাপারটি নিঃসন্দেহে অসাধারণ!
আমাদের জীবন ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম অনুসারে চলে না, তেমনি বাঁধভাঙা প্রবল স্রোতের সাগরে নিজেকে ভাসিয়ে দিলেও হবে না। স্বপ্ন দেখতে হবে, তা বাস্তবায়ন করার প্রয়াসও থাকতে হবে। আর স্বপ্ন দেখার সময় সবসময় মনে রাখবে,
“Always Dream Big”
আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:
- IELTS Course by Munzereen Shahid
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- সবার জন্য Vocabulary by Munzereen Shahid
- Spoken English for Kids by Munzereen Shahid
- English Writing for Students by Sakib Bin Rashid and Shahnawaz Hossain Jay
- চাকরিজীবীদের জন্য English by Munzereen Shahid
- English Grammar Crash Course by Sakib Bin Rashid
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন