পুরোটা পড়ার সময় নেই ? ব্লগটি একবার শুনে নাও !
পরীক্ষার ঠিক আগের দিন পড়ার টেবিলে যখন মন বসে না, তখন স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিতা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। অনেক সময় একনাগাড়ে পরীক্ষা দেওয়ার কারণে, কোন বন্ধ না পাওয়ার কারণে এমন সমস্যার মুখোমুখি আমরা কম বেশি সবাই হয়েছি। অনেক সময় ভালো প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও দেখা যায়, পরীক্ষা মনমত হয় না রিভিশন ভালো না থাকার কারণে। এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়, যেখানে তোমার বন্ধু আর তোমার একই প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও তোমার বন্ধু পরীক্ষায় ভাল করছে কিন্তু তোমারটা আশাস্বরূপ হয়ে উঠে নি?
যে পরীক্ষার জন্যই এত পরিশ্রম করা, সে পরীক্ষা যেন তোমার পরিশ্রমের ফলটা অন্তত দিতে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এখন প্রশ্ন হল, সেটা কিভাবে সম্ভব? পরীক্ষার প্রস্তুতিটা ঠিকভাবে পড়াশুনা করার পাশাপাশি নির্ভর করে সঠিকভাবে রিভিশন দেওয়ার ওপর। পড়াশুনার পাশাপাশি তোমাকে রিভিশন দেওয়ার একটা ভাল পরিকল্পনা করে রাখতে হবে অনেক আগে থেকেই।
কোর্সটিতে শিক্ষার্থীরা পাবে:
HSC 2024 ক্র্যাশ কোর্স - প্রথম পত্র [বিজ্ঞান বিভাগ]
এমন কিছু উপায় বেছে নিতে হবে যেন তোমার রিভিশনে কোন গাফিলতি থেকে না যায়। তোমার পরীক্ষা ভাল না খারাপ হবে তা অনেকাংশেই নির্ভর করবে তোমার রিভিশনের ওপর। কয়েকটা পদ্ধতি অবলম্বন করলেই পরীক্ষার আগের রাতে আর রিভিশন নিয়ে ঘাবড়াতে হবে না। যেসব বিষয় তোমার মাথায় রাখা প্রয়োজন তা সম্পর্কে নিম্নে তুলে ধরা হল–
১. সময় ব্যবস্থাপনা
পরীক্ষার আগের রাতে সময়টা কোনভাবেই নষ্ট করা যাবে না। সময়টুকুর যথাসাধ্য সদ্ব্যবহার করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, পরীক্ষার আগে কয়েকদিন বন্ধ পেলে, পরীক্ষার ঠিক আগের রাতেই পড়তে বসা হয়। দেখা যায়, সবকিছু পড়া থাকা সত্তেও তখন সময়ের অভাবে সম্পূর্ণ সিলেবাসটা কাভার করা সম্ভব হয়ে উঠে না। এমনটা যেন না হয় তার জন্য আগে থেকেই প্রস্তূতি নিয়ে নাও।
২. সিলেবাস সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা
পরীক্ষার আগেই পরীক্ষার সিলেবাসটা একটা ডায়রীতে কিংবা স্টিকি নোটে স্পষ্ট করে লিখে তা তোমার বইয়ে ভেতর রেখে দাও। রিভিশন দেওয়ার সময় যেন কোন সমস্যায় পরতে না হয়। কিছু সামান্য ভুলের জন্য তোমার পরীক্ষার নাম্বার যেন কমে না যায়। সম্পূর্ণ সিলেবাসটা যখন তোমার জানা থাকবে তখন রিভিশনেও কম গাফলতি থাকবে।
৩. গুরুত্বের ক্রমানুযায়ী রিভিশন
একটা খুবই কমন ভুল আমরা করে থাকি প্রায় সময়ই তা হল, গুরুত্ব অনুসারে রিভিশন না দেওয়া। পরীক্ষার কিছু খুব গুরুত্বপূর্ণ টপিক থাকে যা পরীক্ষায় আসার সম্ভাবনা অন্যান্য স্বাভাবিক টপিকগুলো থেকে অনেক বেশি। যে টপিকগুলোর প্রতি শিক্ষকরা ক্লাসেই অধিক গুরুত্ব দেন, এ টপিকগুলোই সবার আগে রিভিশন দিতে হবে। কেননা, এতে করে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো কাভার হয়ে যাবে।
এরপর ক্রমানুসারে গুরুত্ব বুঝে রিভিশন দিতে হবে। যে বিষয়গুলো তোমার কাছে সহজ, সেগুলোর উপর কম সময় ব্যয় করবে। অপর দিকে, যে বিষযগুলো তোমার রিভিশনে একটু বেশি নিবে, সেগুলো আগেই শেষ করে নিবে।
৪. পূর্ববর্তী প্রশ্নপত্রের সমাধান
কোন পরীক্ষার পূর্ব প্রশ্নপত্রগুলো সংগ্রহ করে তা দেখতে হবে এবং তা সমাধান করতে হবে। এতে পরীক্ষা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে এবং পরীক্ষার প্রস্তুতি আরো ভাল হবে। প্রশ্নপত্রের সমাধানের আরেক সুবিধা হল এই যে, এতে অনেক প্রশ্ন কমন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
৫. নোট যেন সময় নষ্টের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়
নোট করাটা কখনই নেতিবাচক নয়, তবে হ্যাঁ, নোট করতে গিয়ে কখনোই এই ভুল করবে না যেন এর পিছনেই তোমার বেশি সময় চলে যাবে। সবকিছুই যে তোমাকে নোট করে রাখতে হবে এমন কোন কথা নেই, নির্ধারিত যে টপিকগুলোর নোট না করলেই নয়, সেগুলো নোট করে রাখতে পার। নোট তুমি নির্দিষ্ট খাতায় না করে, একটা পৃষ্টায় করে সেটা বইয়ের নির্দিষ্ট টপিকের পাশে যদি স্ট্যাপল করে রাখ তবে সহজেই পড়ার সময় তোমার চোখে পরবে।
৬. সবকিছু গুছিয়ে নাও
পরীক্ষার আগে কোন কিছু যেন অগোছালো না থাকে। এজন্য অবশ্যই তোমার সিলেবাস, নোটবুক, প্রয়োজনীয় যা যা দরকার সেগুলো পরীক্ষার আগেই সবকিছু ঠিক করে রাখতে হবে। রিভিশন দেওয়ার সময় কোন কিছু খুজে না পেয়ে যেন ঘাবড়ে না যাও।
৭. আগের রাতের জন্য কোন পড়া রেখে দিবে না
আমরা কম বেশি এটা প্রায় সময়ই করে থাকি, পরীক্ষার আগের রাতের জন্য পড়া জমিয়ে রাখা। পরীক্ষার আগের রাতের জন্য পড়া জমিয়ে রাখাটা একটা বড় রিস্ক। কেননা কোন কারণে যদি পড়াটা কাভার করতে না পার তবে সেটার কারণে তোমার পরীক্ষাটা হয়ত খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই যতটা সম্ভব এটা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবে।
কোনো পড়া যদি মুখস্থ না হয়, তবে সেটা লিখে পড়ার অভ্যাস গড়ে তোল
এক্ষেত্রে আরেকটা মাইনাস পয়েন্ট হল, পরীক্ষার সিলেবাসে তোমার যেগুলো ভাল করে পড়া থাকে, সেগুলো রিভিশন দিয়ে কাভার করতেই অনেক সময় ব্যয় হয়ে যায়। তুমি যদি সম্পূর্ণ নতুন টপিক নিয়ে বস পরীক্ষার আগের রাতে তবে সম্পূর্ণ সিলেবাসটা শেষ করাটা সম্ভব নয়। এমনকি এটার জন্য তোমার প্রস্তুতিতেও বিঘ্ন ঘটতে পারে।
৮. লিখে পড়ো
কোনো পড়া যদি মুখস্থ না হয়, তবে সেটা লিখে পড়ার অভ্যাস গড়ে তোল। এমন কিছু পড়া আছে দেখবে যেগুলো তোমার মনে থাকছে না, সেগুলো লিখে মনে রাখার চেষ্টা করবে।
৯. আলোচনা করে ধারণা পরিষ্কার কর
রিভিশন দেওয়ার সময় কিছু টপিক লক্ষ্য করবে যেগুলো পড়ার সময় তোমার মনে রাখতে সমস্যা হচ্ছে। সে টপিকগুলো আলোচনা করে বেসিক ধারণাটা পরিষ্কার করে নিবে, যেন তোমার মনে রাখতে সমস্যা হলেও বেসিক ধারণাটা তোমাকে পরীক্ষায় সহায়তা করবে।
১০. সামাজিক মাধ্যমগুলো থেকে দূরে থাকো
পরীক্ষার আগের রাতটায় সব বন্ধুবান্ধবদের কার কেমন পড়া হয়েছে সেটা খোঁজ নেয়াটা তোমার পড়ার উপর যেন কোন প্রকার নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে, সে ব্যাপারে তোমাকে সচেতন হতে হবে। উপরের নির্দেশনাগুলো ঠিকভাবে যদি প্রয়োগ করতে পার তবে তোমার রিভিশনে কোনো গাফিলতি থাকবে না। পরীক্ষার প্রস্তুতিও অনেক ভাল হবে। এ পদ্ধতিগুলো ছাড়াও যেগুলো তোমার ক্ষেত্রে কার্যকর সেগুলো মেনে চললে, পরীক্ষার প্রস্তুতি অনেকাংশে ভাল হবে।
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন