বিশাল লাইনে ঠেলাঠেলির পর কোনোমতে একটা টিকিট সংগ্রহ করা, বাসা থেকে তাড়াহুড়ো করে বের হয়ে স্টেডিয়ামের গেট পর্যন্ত যাওয়া, মাঠে ঢুকেই একদল বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা হওয়া, ব্যাগ থেকে একটা লাল সবুজ পতাকা বের করে গায়ে জড়িয়ে নেয়া, ওপেনারদের চার-ছয়ের প্রতিটি মুহূর্তে লাফ দিয়ে ওঠা, ৯৯ এর ঘরে থাকা মুশফিকের জন্য দোয়া পড়তে পড়তে গলা শুকিয়ে যাওয়া, দুহাত প্রসারিত ও চিৎকার করে সাকিবের সাথে সাথেই এলবিডব্লিউ এর আবেদন করা, গ্যালারিতে হাজারো মানুষের বিকট শব্দের ভিরে ফোনে “আম্মু আমরা জিতে গেছি” বলা- এরকম ছোট ছোট হাজারো গল্পই বলে দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট নামের খেলাটির প্রতি বাঙালির ভালোবাসার কথা।
(source: Gettyimages)
একসময়ের আন্ডারডগ থেকে বর্তমান বিশ্বের সমীহ জাগানিয়া একটা দল হয়ে ওঠার পেছনে রয়েছে গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের কিছু দারুণ ইতিহাস। দেখে আসা যাক বাংলাদেশ ক্রিকেটের একাল-সেকাল,
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাস
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ ক্রিকেটের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া আইসিসি ট্রফিতে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে। কিন্তু বাংলাদেশে ক্রিকেট প্রচলনের কথা বললে ফিরে যেতে হবে এমন এক সময়ে যখন বাংলা পারতপক্ষে বাংলা ছিল না। সেই ব্রিটিশ শাসনামল থেকে বাংলাদেশে ক্রিকেটের প্রচলন। ১৯৪১ সালে ঢাকা স্টেডিয়ামে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম) অনুষ্ঠিত হয় বেঙ্গল গভর্নর একাদশ বনাম বেঙ্গল জিমখানা একাদশের একটি ম্যাচ।
আর্কাইভ অনুযায়ী এই ম্যাচটিই হলো আমাদের ভূখণ্ডে হওয়া প্রথম ক্রিকেট ম্যাচ। ব্রিটিশ শিকল থেকে মুক্ত হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে আমাদের দেশে নিয়মিত ক্রিকেট প্রচলন শুরু হয়। পাকিস্তানের অংশীদার থাকাকালীন সময়েই এদেশে স্থানীয় পর্যায়ের ক্রিকেট চালু হয়। ১৯৫০ সালে বাংলার মাটিতে অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তান ও রিপাবলিক অফ ইন্ডিয়ার মধ্যকার ঐতিহ্যবাহী এক টেস্ট ম্যাচ। ১৯৬০ সালের দিকে ঢাকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিয়মিত ভেন্যু হিসেবে খ্যাতি লাভ করে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড
স্বাধীনতা উত্তর যুগে আমাদের দেশে ক্রিকেটের বিকাশ ও উন্নয়নের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের খুব দরকার ছিল। স্বাধীন হওয়ার ঠিক এক বছর পরই ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড। এই প্রতিষ্ঠানের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিলো দেশের সকল প্রান্তে ক্রিকেটের ছোঁয়া নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে তুলে ধরা। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের শুরুটা খুব একটা সহজ ছিল না। কেননা যুদ্ধ-বিদ্ধস্থ একটি দেশে ক্রীড়ার আগে দেশ পুনর্নির্মাণ করাকে প্রাধান্য দেয়া হবে- এটাই স্বাভাবিক। এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড প্রতিষ্ঠার সময় দেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামেও ছিল ভাঙাচোরা ও ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন।
ব্রিটিশ ক্রিকেট সাংবাদিক রবিন মারলার বাংলাদেশ ক্রিকেটের তৎকালীন অবস্থার প্রশংসা করে “Whither Bangladesh?” নামক একটি লেখা প্রকাশ করেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের নজরে আসামাত্র বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নড়েচড়ে বসে। ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে স্থানীয় লীগ শেষ হলে বোর্ডের তখনকার কার্যনির্বাহী সম্পাদক রেজা-ই-করিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বরাবর একটি চিঠি প্রেরণ করেন। চিঠির মূল উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে আইসিসির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা। ১৯৭৬ সালে রেজা-ই-করিম অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত মেলবোর্ন ক্রিকেট কাউন্সিলকে (এমসিসি) বাংলাদেশ ভ্রমণে আহবান জানান।
এমসিসির সফরের উপরই অনেকটা নির্ভর করছিলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পদচ্ছাপের গৌরব। ২৭ ডিসেম্বর, ১৯৭৬ সালে এমসিসি বাংলাদেশের মাটিতে পা দেয় এবং ৪০ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে একটি প্রীতি ম্যাচে অংশ নেয়। সবশেষে ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ অফিশিয়ালি আইসিসির সহযোগী দেশের খেতাব লাভ করে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল, ১৯৮৬ (source: wikimedia)
১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয়ের পর প্রথমবারের মত বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আসরের অংশ নেয়ার সুযোগ পায়। ঐ যে শুরু, এরপর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মূলমঞ্চে স্কটল্যান্ড ও পরাশক্তি পাকিস্তানকে হারিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে রীতিমত চমকে দেয় টাইগাররা। খালেদ মাসুদের অসাধারণ উইকেট কিপিং ও খালেদ মাহমুদের দুর্দান্ত বোলিং এ ভর করে ওয়াসিম আকরামদের পাকিস্তানকে ৬২ রানের ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। এই জয় বাংলাদেশকে র্যাঙ্কিং টেবিলে অনেকটাই এগিয়ে দেয়, যার ফলে ২০০০ সালে টেস্ট খেলুড়ে দেশের অন্তর্ভুক্ত হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল একাধারে টেস্ট-ওয়ানডে-টি টুয়েন্টির মত সবগুলো ক্রিকেট সংস্করণে নিয়মিত অংশগ্রহণকারী। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ আয়োজিত করছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এর মত তুমুল উত্তেজনায় ভরপুর টুর্নামেন্ট। ওয়ানডে র্যাঙ্কিং এ ৭ নম্বর ও টেস্ট র্যাঙ্কিং এর ৯ নম্বরে অবস্থিত বাংলাদেশ প্রতিনিয়তই উপহার দিয়ে যাচ্ছে ক্রিকেটের দারুণ সব ম্যাচ, সঙ্গে বিশ্বকে উপহার দিচ্ছে অসাধারণ কিছু ক্রিকেট প্রতিভা।
(source: Gettyimages)
আমাদের দেশের মেয়েরাও কিন্তু ক্রিকেটে ছেলেদের তুলনায় কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। বরং, সমান তালেই উন্নতি হচ্ছে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলেরও। সালমা খাতুনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু সফলতা দেখেছে, যার মধ্যে রয়েছে কিছুদিন আগেই ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপ জয়ের সাফল্যও।
বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল (source: womencriczone)
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচ
গত দুই দশকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বেশ কিছু কোচ নিয়োগ দিয়েছে দল পরিচালনার জন্য। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ছিলেন অনেক বেশি সফল, কেউ কেউ ছিলেন একটু কম, তবে প্রত্যেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে ক্রিকেটের বিভিন্ন দিক শেখানোর শতভাগ চেষ্টাই করেছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উল্লেখযোগ্য কোচের তালিকায় আছেন,
গর্ডন গ্রিনিজ:
যার অধীনে বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপ খেলার গৌরব অর্জন করেন, তিনি হচ্ছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের গর্ডন গ্রিনিজ। ১৭ বছরের খেলোয়াড়ি জীবনের পর তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল পরিচালনায় আসেন এবং একটি সোনালী সময়ের অংশীদার হন।
ডেভ হোয়াটমোর:
একটা দল যারা প্রতিনিয়তই হারের মুখ দেখতো থেকে একটা দল যারা প্রতিনিয়তই অঘটনের জন্ম দেয়- হ্যাঁ, বাংলাদেশ দলে এমনই একটা পরিবর্তন এনেছিলেন তিনি। তাঁর সময়েই বাংলাদেশ ওয়ানডেতে সর্বপ্রথম অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করে, ভারতকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে। তাঁর সময়েই উঠে এসেছে দেশের অনেক জনপ্রিয় খেলোয়াড়েরা।
শেন জার্গেনসন:
মনে আছে, বাংলাদেশ যেবার নিজের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইট ওয়াশ করেছিলো? শেন জার্গেনসন কিন্তু সেসময় বাংলাদেশ দল পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে:
একটা সাধারণ দল থেকে আক্ষরিক অর্থেই অসাধারণ এক দলে পরিণত হওয়ার পেছনে এই ভদ্রলোকের অনেক বড় অবদান। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল কোচ হলেন এই চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তাঁর সময়েই বাংলাদেশ ওয়ানডে তে ৫০% এর বেশি ম্যাচ জিতেছে, জিতেছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট ম্যাচ। ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়, বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করা, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলংকার সাথে টেস্ট ম্যাচ জয়ের মত সাফল্য এসেছে হাথুরুসিংহের হাত ধরে।
স্টিভ রোডস:
বাংলাদেশ দলের বর্তমান কোচ হলেন স্টিভ রোডস। একসময়ে ইংল্যান্ডের জার্সি জড়ানো রোডস ২০১৮ সালের ৭ জুন বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অধিনায়ক
প্রতিটি খেলাতেই একজন অধিনায়কের ভূমিকাটা অপরিসীম। তবে ক্রিকেটে যেন অধিনায়কের দায়িত্বটা কয়েকগুণ বেশি। ফুটবলের মত খেলার মাঠে অধিনায়কের খুব বেশি একটা দায়িত্ব থাকে না যেমনটি রয়েছে ক্রিকেটে। টস থেকে শুরু করে মাঠের ফিল্ডিং ঠিক করা, বোলার নির্বাচন করা, দ্রুত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া ইত্যাদি নানা দায়িত্বের ভার থাকে প্রত্যেক দলের অধিনায়কের কাঁধে। বাংলাদেশ দলেও গত কয়েক বছরে কয়েকজন অধিনায়ক দলের দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে যাদের কথা না বললেই নয়, তারা হলেন,
গাজী আশরাফ:
তিনি ছিলেন বাংলাদেশ দলের সর্বপ্রথম অধিনায়ক। ১৯৮৬-১৯৯০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে ওয়ানডে সংস্করণে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
নাইমুর রহমান:
বাংলাদেশ টেস্ট দলের সর্বপ্রথম ক্যাপ্টেন। ভারতের বিপক্ষে সেই টেস্টে তিনি অধিনায়কের বাহুবন্ধনি পড়ে মাঠে নামেন।
আকরাম খান:
সম্পর্কে তামিম ইকবালের চাচা আকরাম খানের অধীনেই বাংলাদেশ সর্বপ্রথম এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম জয়লাভ করে।
হাবিবুল বাশার:
বাংলাদেশ দলের দিনবদলের শুরুটা হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বেই হয়। টেস্টে ২০০৩-২০০৭ এবং ওয়ানডেতে ২০০৪-২০০৭ সাল পর্যন্ত লম্বা একটা সময় বাংলাদেশ দলের ভরসার প্রতিক ছিলেন হাবিবুল বাশার। অধিনায়ক থাকাকালীন সময়ে তাঁর ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সও ছিল দেখার মত।
মাশরাফি বিন মুর্তজা:
বাংলাদেশ দলের প্রতিচ্ছবি বললে এক বাক্যে যার নাম ঠোঁটের কিনারায় চলে আসে, তিনিই হলেন আমাদের “নড়াইল এক্সপ্রেস” মাশরাফি বিন মুর্তজা। মাশরাফির হাত ধরেই ক্রিকেট বিশ্বে পরাশক্তি হওয়ার দিকে অনেকটাই এগিয়ে গেছে আমাদের দেশ। কিছু কঠিন সময় মাশরাফির ক্যারিয়ারটাকেই হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছিলো। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলারত অবস্থায় হাঁটুতে মারাত্মক এক ইনজুরি মাশরাফিকে ঠেলে দেয় আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটের বাইরে।
(source: imgci)
তবে পায়ে সাত সাতটি অস্ত্রোপচারের পর মাশরাফি ফিরে এসেছিলেন আগের চেয়েও ভয়ংকর রূপে, ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন সাফল্যের স্বর্ণচূড়ায়। মজার ব্যাপার হলো, মাশরাফি যেই টেস্টে ইনজুরির জন্য আজীবনের জন্য ছিটকে যান টেস্ট ক্রিকেট থেকে, সেই টেস্ট ম্যাচটি বাংলাদেশ জিতে নেয়। অর্থাৎ অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে মাশরাফির জয়ের হার পুরোপুরি ১০০ পারসেন্ট ! সেই ২০১০ সাল থেকে আজ অব্দি ওয়ানডেতে মাশরাফির কোনো বিকল্প ছিলোনা, ৫৭.১ শতাংশ জয়ের হার নিয়ে মাশরাফি একাই যেন ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক।
(source: Twitter)
সাকিব আল হাসান:
টেস্ট, ওয়ানডে, টি টুয়েন্টি- সবক্ষেত্রেই অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের পদচারণা ছিলো। ২০০৯-২০১১ এবং ২০১৮-বর্তমান মোট ২ দফায় বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ৫দিনের ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করেন সাকিব আল হাসান।
মুশফিকুর রহিম:
পকেট ডাইনামাইট খ্যাত মুশফিকুর রহিম একসময়ে ছিলেন একাধারে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান-অধিনায়ক। টেস্টে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন ছিলেন মুশফিক। ওয়ানডে অধিনায়ক থাকাকালীন সময়েও বেশ কিছু জয়ের মুহূর্ত উপহার দেন তিনি।
বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব যাদের হাতে, তারা হলেন,
টেস্ট ও টি টুয়েন্টি: সাকিব আল হাসান
ওয়ানডে: মাশরাফি বিন মুর্তজা
বাংলাদেশ ক্রিকেট অলরাউন্ডার
অলরাউন্ডারের কথা বলতে গেলে আসলে খুব বেশি একটা গবেষণার দরকার পড়ে না। বাংলাদেশ ক্রিকেটে ব্যাটে-বলে পারদর্শী এবাবৎ অনেক অলরাউন্ডার এসেছে। নাসির হোসেইন, মাহমুদুল্লাহ, মেহেদি হাসান মিরাজ এর মত অনেকে থাকলেও ধারাবাহিকতার দিক দিয়ে সাকিব আল হাসানের ধারেকাছেও কেউ নেই। আইসিসির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে শীর্ষ অলরাউন্ডারের কৃতিত্ব কেবল সাকিবেরই, একই সাথে ইতিহাসের একমাত্র অলরাউন্ডার হিসেবে ক্রিকেটের তিনটি সংস্করণের শীর্ষস্থানে থাকার রেকর্ড সাকিবের। শেষ কবে সাকিব আল হাসানকে শীর্ষ ৫ অলরাউন্ডারের তালিকার বাইরে দেখা গেছে, খুঁজে বের করা যথেষ্টই কষ্টসাধ্য। বর্তমানে টেস্টের ১ নম্বর অলরাউন্ডার, ওয়ানডে ও টি টুয়েন্টিতে ২ নম্বর স্থানে অবস্থান করা সাকিব আল হাসান হলো বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার।
(source: Behance)
বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্কোর রেকর্ড:
(source: Star of my sore)
১. ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান- ৩২৯/৬ (প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, ২০১৫)
২. সর্বাধিক তাড়া করা স্কোর- টার্গেট ৩১৯ (প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড, ২০১৫)
৩. রানের হিসেবে জয়ের ব্যবধান- ১৬৩ রান (প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা, ২০১৮)
৪. দেশের হয়ে সর্বাধিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা- মাশরাফি বিন মুর্তজা (২০২টি)
৫. সর্বাধিক রান, এক ম্যাচে সর্বোচ্চ রান, সর্বাধিক সেঞ্চুরি- তামিম ইকবাল
৬. সর্বাধিক উইকেট, এক ম্যাচে সেরা বোলিং – মাশরাফি বিন মুর্তজা
৭. সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ- সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ (প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ম উইকেটে ২২৪ রান, ২০১৭)
উপরের এত এত তথ্য, শত শত রেকর্ড যেন সেকাল থেকে একালের বাংলাদেশ ক্রিকেটের সোনালী সময়কেই প্রতিনিধিত্ব করে, তাই না?
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন