Lateral thinking : সমাধান হবে এইবার ঘুরপথে

September 13, 2018 ...

আমাদের এক স্যার আছেন। মুখে সবসময় হাসি তাঁর লেগেই থাকে। মুচকি হাসি। তবে অনেক ভয়ানক। তাঁর হাসি দেখলেই কেন যেন বুকের ভিতর ধড়ফড় করা শুরু করে। স্যার প্রথমদিন ক্লাসে এসেই অ্যাটেন্ডেস শিট দিয়ে বললেন, “কেউ প্রক্সি দিবে না। যার যার নামের পাশে সাইন করবে। প্রক্সি ধরা পড়লেই কিন্তু শাস্তি পাবে!” কিন্তু আমাদের মতো কিছু ফাঁকিবাজ স্টুডেন্টরা এসব কথা প্রায় সব টিচার থেকেই শোনে। তাই আমরা কম-বেশি প্রক্সি দিয়েই যাই। বন্ধুত্বের খাতিরে এইটুকু করাকে আমরা নৈতিক দায়িত্ব ভাবি। সেদিনও তাই স্যারের হুংকার শুনেও, কী আছে জীবনে- বলে প্রক্সি দিয়েছিল কয়েকজন।

ক্লাস শেষে স্যার করলেন কী, এক এক করে নাম ডাকা শুরু করলেন। ধরা পড়ে গেল কারা কারা কাদের প্রক্সি দিয়েছে। আমরা ভাবলাম বড়জোর কিছু নাম্বার কাটবে হয়ত। কিন্তু স্যার কী করলেন, শুধু মুচকি হাসলেন। কিছু বললেন না।

পরের দিন এসে আমাদের সবার হাতে একটা একটা করে প্রশ্ন ধরিয়ে দিয়ে তাঁর বিখ্যাত মুচকি হাসি হেসে বললেন, “নাও! আজকে তোমাদের ক্লাস টেস্ট। এটাই ফাইনালে যোগ হবে।”

আমাদের তো মাথায় হাত! ক্লাসই হইল না আর ক্লাস টেস্ট! স্যার হেসে বললেন, “বলেছিলাম তো প্রক্সি দিলে শাস্তি দিব!” এবং স্যারের সেই হাসি দেখে আবারো বুক ধড়ফড় করা শুরু করল।

স্যার বললেন, “সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল বাঁকাতে হয়।“ আবারো সেই হাসি!

তারপর থেকে প্রক্সি দেওয়ার মত ঘটনা ঘটে না। প্রক্সি রোধে স্যারের এরকম অভিনব উপায় দেখে আমরা আসলেই অবাক হয়েছিলাম।

স্যারের এই সমস্যার সমাধানের উপায়টি ছিল ব্যতিক্রমী। তিনি করেছিলেন কী, একদম গতানুগতিক পন্থায় না গিয়ে এমন একটি পন্থা অবলম্বন করেছিলেন যেটা ছিল অনেক অপ্রত্যাশিত। এবং কার্যকরীও বটে। সাইকোলজিতে এ ধরনের কাজের একটা নাম আছে। একে বলে ল্যাটেরাল থিংকিং (Lateral thinking)। আমার ক্লাসের সবাই হয়তো খুব রাগ করবে আমার উপর। বিনা প্রস্তুতিতে পরীক্ষা দিয়ে আসার পর ল্যাটেরাল ট্যাটেরাল নিয়ে বক বকাচ্ছি। তবে একটু ধৈর্য ধরো! আমি নিশ্চিত এটা ভালো লাগবে তোমাদের।

৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৪

ফুল সিলেবাস কোর্সে যা যা থাকছে:

  • প্রতি ক্লাসে ২ জন শিক্ষক পড়াবেন; একজন ক্লাস নিবেন, অন্যজন সমস্যার সমাধান দিবেন
  • দেশের যেকোনো জায়গায় বসে দেশসেরা শিক্ষকদের কাছ থেকে অনলাইনে সর্বোচ্চ মানের পড়ালেখার সুযোগ
  • লাইভ ক্লাসের ভেতরেই পরীক্ষা দেওয়ার সুবিধা
  •  

    ২.

    স্যারের সেই কথাটাতে ফিরে যাই আবার। সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠার কথাটাতে। ল্যাটেরাল থিংকিং (Lateral thinking) নামটা কিছুটা খটমট শুনাচ্ছে বৈকি! তবে বিষয়টা কিন্তু  খুবই ইন্টারেস্টিং! ল্যাটেরাল থিংকিং (Lateral thinking) মানে হচ্ছে ঘি যদি সোজা আঙ্গুলে উঠাতে না পারো তবে আঙ্গুল বাঁকিয়ে উঠাও। একদম সোজাসাপ্টা বাংলায় বললে, কোনো সমস্যা যদি সচরাচর নিয়মে সমাধান করতে সমস্যা হয় তাহলে তা একটু ঘুরপথে সমাধান করো। এই ঘুরপথে বা অন্য উপায়ে সমাধানের চিন্তাই হল ল্যাটেরাল থিংকিং।

    আচ্ছা এবার আরেকটু ভেঙ্গে ভেঙ্গে বুঝাই। সবার আগে ল্যাটেরাল মানে জানতে হবে। এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে পার্শ্বীয়। থিংকিং মানে তো আমরা জানিই। তো নামেই পরিচয়। সাধারণত আমরা কোনো সমস্যা সমাধান করি চিরাচরিত উপায়ে। আমরা সমাধানের চেষ্টা করি প্রথমেই কিছু লজিক দিয়ে, কিছু তথ্যের উপর ভিত্তি করে। যেগুলো আসলে সমাধানের কিছু উপাদান মাত্র। আচ্ছা, ঐগুলোর নাম দিলাম রেডিমেড লজিক। এইভাবে লজিক ব্যবহার করা হচ্ছে খুবই টিপিকাল। এবং এটাকে আমরা বললাম ভার্টিকাল (vertical)। মানে একদম সোজা। সোজাপথে সমাধান করা।

     

    http://thepeakperformancecenter.com/wp-content/uploads/2016/06/Analytical-vs.-Lateral-Thinking.jpg

     

    আসলে কি জানো? আমরা না, বড্ড সোজা, একঘেয়ে ভার্টিকাল থিংকিং(vertical thinking) করি, যেগুলো হয় অনেক অনেক অনুমেয়। কিন্তু ল্যাটেরাল থিংকিং(Lateral thinking) এর পন্থাই হল, অনিশ্চিত এবং অভিনব।

    যেমন ধরো, স্যার যদি যারা প্রক্সি দিয়েছে এবং যাদেরটা দেওয়া হয়েছে শুধু তাদের কিছু নাম্বার কেটে নিতেন সেটা হতো চিরাচরিত সমাধান। যেটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু বাকিদের কারো কিছুই হতো না, দেখা যেত কয়েকদিন পর আমরা বন্ধুত্বের খাতিরে আবারো প্রক্সি দিচ্ছি। তাহলে তুমিই বলো, সমাধানটা কি খুবই কার্যকরী?

    কিন্তু স্যারের অবলম্বনকৃত পন্থাটা অনেক কার্যকরী। যেটার কথা আমরা ভাবতেই পারিনি। এটা ছিল একদমই নতুন একটা সমাধান। ঠিক সেটাই হল, পার্শ্বীয় চিন্তাভাবনা। একদম সোজাসুজি কমন লজিকগুলো দিয়ে ভাবলে অনেক সময় সেটা তেমনটা কাজে লাগে না।

    তাই একটু ঘুরপথে ভাবলে সমাধানটা তো ফলপ্রসূ হয়ই সাথে আমাদের বুদ্ধিও খুলে যায়! কারণ প্রথাগত উপায়ে না ভেবে একটু অন্য উপায়ে ভাবলে নতুন নতুন আইডিয়া যেমন আসে তেমনি আমাদের সৃজনশীলতাও বাড়ে। তাই ধাপে ধাপে ট্রেডিশনাল রেডিমেড লজিক ব্যবহার করার চেয়ে সৃজনশীলতা বাড়ানোই শ্রেয় না?


    blog 44

    আরো পড়ুন: অরিগ্যামি (Origami) : কাগুজে বিস্ময়


    ৩.

    এই যে আমি বারবার ল্যাটেরাল থিংকিং, ল্যাটেরাল থিংকিং করছি এই জিনিসটার আবিষ্কার হলো কীভাবে!

    ১৯৬৭ সালে এডওয়ার্ড ডি বোনো (Edward De Bono) প্রথম এই টার্মটি ব্যবহার করেন। তিনি এই টার্মটি বুঝাতে Judgment of Solomon কাহিনীটি ব্যবহার করেন । এই গল্পটি আমরা হয়তো কমবেশি সবাই জানি। আচ্ছা, তারপরো একটু রিভাইস করে নেওয়া যাক।

     

    Edward de Bono.jpg

    এডওয়ার্ড ডি বোনো

    একদিন রাজা সলোমনের কাছে দুই নারী আসলেন। তাদের দুইজনই একটা বাচ্চার মাতৃত্ব দাবি করলেন। তখন সলোমন পড়লেন ভালোই ফ্যাসাদে। কে আসল মা তিনি বুঝতেই পারছেন না। দুইজনই বলছে তারা বাচ্চাটির মা। তবে তাদের মধ্যে একজন অবশ্যই মিথ্যা বলছে। কে বলছে সেটা ধরা মুশকিল। কিন্তু সলোমনকে তো বিচারকার্য সম্পন্ন করতেই হবে। তাই তিনি বুদ্ধি বের করলেন এবং বললেন যে, বাচ্চাটিকে দুইভাগ করে দুইজনকেই দেওয়া হোক। সঙ্গে সঙ্গেই একজন নারী তার মাতৃত্ব অস্বীকার করে নিলেন। বললেন, “হুজুর, আপনি ওকে বাচ্চাটি দিয়ে দেন। আমার লাগবে না।“

    আর এইভাবেই সলোমন বুঝলেন ওই মাতৃত্ব অস্বীকারকারী মহিলাই আসল মা। কারণ কোনো মা ই তার সন্তানের অমন পরিণতি চান না।

    একটু খেয়াল করো, এখানে কিন্তু ট্রেডিশনাল ভার্টিকাল (লজিক) পথে সমাধান একেবারেই সম্ভব ছিল না। অথচ একটু বুদ্ধি অন্যভাবে খাটিয়েই কিন্তু খুব সহজে অনেক বড় বড় সমস্যাও সমাধান করা যায়।

    মূলত, বোনোর মতে, ল্যাটেরাল থিংকিং(Lateral thinking) আমাদেরকে ট্রেডিশনাল চিন্তা থেকে বের হতে সাহায্য করে এবং নতুনভাবে চিন্তা করতে বাধ্য করে।

    ঘরে বসে Spoken English

    কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • জব ইন্টারভিউ, ভাইভা, প্রেজেন্টেশন, দেশি-বিদেশি ক্লায়েন্ট মিটিং, কলিগদের সাথে আলাপচারিতা, পাবলিক স্পিকিং, অপরিচিত কারো সাথে কথা শুরু করা, ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইংরেজিতে কথা বলা
  •  

    ৪.

    ল্যাটেরাল থিংকিং ব্যাপারটা আসলে তোমার ভার্টিকাল থিংকিং এর মধ্যে যে ব্যারিয়ার থাকে সেটাকে ভেঙ্গে দেয়। আর এর নানারকমের টেকনিক আছে। নামগুলো কিছুটা খটমট শুনালেও কাজগুলো কিন্তু দারুণ!

    Idea generating tool :

    এই টুল বা টেকনিকটি আমাদের প্রথাগত চিন্তা ধারণাকে ভাঙ্গতে সাহায্য করে। এবং অন্যরকমভাবে চিন্তার সুযোগ ঘটায়। সেখান থেকেই উদ্ভব হয় নানা রকম প্রশ্নের। আমরা অনেক সময় কমন আইডিয়াগুলোকে দুই একবার না ভেবেই প্রয়োগ করে ফেলি। সেই আইডিয়াগুলোকে বেদবাক্যের মত বিশ্বাস করি বলে এর বিপরীতে কোনোরকম প্রশ্নই মাথায় আসে না। তবে আমরা যদি নিজেদের একটু প্রশ্ন করার সুযোগ দিই তাহলেই কিন্তু অন্য আইডিয়া মাথায় আসতে পারে।

    যেমন What if. আবার প্রক্সির কাহিনীতে আসি। স্যার হয়তো প্রক্সি রোধে এমন একটা পন্থা বের করতে চেয়েছিলেন যা একটা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান দেবে। তাই ধরে নিলাম তাঁর মাথায় What if- এর প্রশ্ন এসেছে। যেমন, নাম্বার না কেটে অন্যকিছু করা গেলে কেমন হয়? এমন প্রশ্ন।

    এভাবেই আইডিয়া জেনারেট হয়েছে।

    Focus tool :

    যখন প্রথাগত চিন্তা থেকে সরে আসলাম তখন আমাদের এই টুল ব্যবহার করতে হবে। যেহেতু ট্রেডিশনাল আইডিয়া আমরা ব্যবহার করব না তখন অন্য কী কী ব্যবহার করা যেতে পারে তা এর মাধ্যমে বোঝা বা জানা যায়। এক কথায় আমাদের বুদ্ধিকে আরো শানিয়ে নেওয়ার জন্য এটি অনেক দরকারি টুল।

    স্যার যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলেন, নাম্বার কাটবেন না। তখন অন্য অনেক পন্থা নিশ্চয়ই ভেবেছেন। যেমন ধরলাম, প্রক্সি যারা দিয়েছে তাঁদের পুরো ক্লাস দাঁড় করিয়ে রাখবেন বা সবাইকে দাঁড় করাবেন বা সবার এক নাম্বার করে কাটবেন ইত্যাদি স্যার ভেবেছেন। ভাবতে ভাবতে সারপ্রাইজ টেস্ট নেওয়ার কথাও ভেবেছেন। মূলত, এই টুলটি অনেক নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে।

    Harvesting tool :

    আচ্ছা, এখন অনেক তো নতুন নতুন আইডিয়া বের হল। এ টুল দ্বারা যেটা সবচেয়ে বেশি ভ্যালু যোগ করবে সমস্যা সমাধানে সেটাকে খুঁজে পাওয়া যায়।

    যেমন এখন তোমরা হয় তো নিজেরাই বলে দিতে পারবে স্যারের ক্ষেত্রে কোনটা সবচেয়ে বেশি ফলপ্রসূ ছিল। হ্যাঁ, ঠিক তাই। ঐ সারপ্রাইজ টেস্টটাই ছিল স্যারের সবচেয়ে লাভজনক আইডিয়া।

    Treatment Tool :

    কারো অসুখ হলে যেমন ট্রিটমেন্ট লাগে এই টুলের কাজও একই। যেসব নতুন এবং উদ্ভাবনী আইডিয়া বের করা হয়েছে তা আসল ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা। ঐ আইডিয়াগুলোর সাথে বাস্তব জীবনের সমন্বয় ঘটানো। যেমন, স্যার তাঁর নতুন আইডিয়াটি আমাদের উপর প্রয়োগ করে সমস্যা সমাধান করেছিলেন। (এখানে কোনো দীর্ঘশ্বাসের ইমোজি থাকলে সেটা হবে)

    যাই হোক, এই ছিল প্রধান চারটি টুল। মূল ব্যাপার হচ্ছে মাথাটা খাটানো। তবে একটু অন্যভাবে। একটু ঘুরপথে। আমরা সাধারণত, একই দিক থেকে ভাবতে ভাবতে মাথার চুল ছিঁড়তে থাকি। আসলে এতে করে সমস্যার তো সমাধান পাওয়া যায়ই না বরং আমার কাছে তো মনে হয় মাথার প্রেশার বেড়ে যায়! ল্যাটেরাল থিংকিং আমাদের যে উপকারটি করে সেটা হল, ইচ্ছা করেই অন্যদিকে ভাবনাকে নিয়ে যায়। যেসব ট্রেডিশনাল থিংকিং করি সেগুলো থেকে দূরে রাখে। আর এভাবেই আমরা আমাদের বুদ্ধির জট সহজেই খুলতে পারি।

    আমার কাছে মনে হয়, ল্যাটেরাল থিংকিং এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী টেকনিক হচ্ছে প্রশ্ন করা। What if, why, ইত্যাদি। এমনকি পুরনো পন্থাকে প্রশ্ন করতে করতেও কিন্তু আমরা অভিনব আইডিয়া পেতে পারি।

    ৫.

    এই যে বারবার ল্যাটেরাল থিংকিং করে এই করা যাবে সেই করা যাবে করছি! আসলে কখন আমরা এটা ব্যবহার করব? একদম সহজ উত্তর হচ্ছে, সবখানে। ছোট থেকে বড় কোনো সমস্যা সমাধানে কিংবা নতুন কোনো উপায় খুঁজতে, সৃজনশীল কোনো কিছু খুঁজতে।

    ছোট থেকে বড় যেকোনো ক্ষেত্রেই এটি ব্যবহার করা যায়।। যেমন ধরো, কোনো ম্যাথ সল্ভ করছো। বামপক্ষ ডানপক্ষ মিলাতে হবে। সাধারণত, আমরা করি কী? বামপক্ষ থেকে আস্তে আস্তে সমাধান করতে করতে ডানপক্ষ মিলাই। কিন্তু যদি একটু মাথা খাটাই তাহলে কিন্তু এমন কোনো উপায় বের হয়ে যেতেই পারে যেখানে ডানপক্ষ থেকে মিলালে সেটি অনেক তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে যায়।

    আবার ধরো কোনো বড় কাজে। যেমন ইন্টারভিউতে। ইন্টারভিউতে ল্যাটেরাল থিংকিং(Lateral thinking) কিন্তু অনেক অনেক বেশি কাজে লাগে। চাকরি পাওয়ার দৌড়ে এটি তোমাকে এগিয়ে রাখতে পারে।

    আচ্ছা ধরেই নিলাম তুমি টেন মিনিট স্কুলের নেক্সট ব্লগ প্রজেক্টে ইন্টার্ন হতে চাও। তারজন্য তোমাকে আগে কিন্তু একটা ইন্টারভিউ ফেইস করতে হবে। তখন যদি তোমাকে জিজ্ঞেস করা হয় যে, টেন মিনিট স্কুল ব্লগের ভালোমন্দ দিক নিয়ে কিছু বলতে। আর উত্তরে তুমি যদি বলতে থাকো, টেনমিনিট স্কুল ব্লগ একটি বিশাল প্ল্যাটফর্ম (নিঃসন্দেহে), এর কোনো ভুল ভ্রান্তি হয় না, এখানে যা যা আছে সবকিছুই সেরা, কোনো মন্দ দিক নেই। তাহলে আমি হলপ করে বলতে পারি, যারা ইন্টারভিউ নিচ্ছেন তাদের উত্তরটি ভালো লাগবে না। এককথায় বোরিং লাগবে। উত্তরটি অনেকপরিচিত তাদের। কারণ অধিকাংশ ক্যান্ডিডেটই এরকমই উত্তর দেয়। এটাকে কী বলে, বলতো? এটিই হচ্ছ ট্রেডিশনাল থিংকারদের উত্তর। গতানুগতিক উপায়ে চিন্তা করে সবাই একই রকম উত্তর পেয়েছে।

    কিন্তু ইন্টারভিউতে আসলে কী হয়? যে সেরা তাকেই তো নেওয়া হয়, তাই না? তো সবার উত্তরের মতো যদি তোমার উত্তরও একই রকম এবং একঘেয়ে তাহলে কেন তোমাকে তারা নেবেন? ঠিক তখনি দরকার হয় ল্যাটেরাল থিংকিং এর। তুমি যদি গতানুগতিক ধারায় না ভেবে একটু অন্যভাবে ভেবে উত্তর দাও তবেই তুমি যারা ইন্টারভিউ নিচ্ছেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। যেমন তুমি যদি সুন্দর করে টেনমিনিট স্কুল ব্লগের ভালো মন্দ উভয় দিক তুলে ধরো এবং ব্লগ আরো ভালো করার জন্য কিছু সাজেশন ও দিতে পারো তাহলেই তুমি অন্যদের থেকে নিজেকে একটু এগিয়ে রাখতে পারবে। এখানেই ল্যাটেরাল থিংকিং(Lateral thinking) এর জাদু!

    আবার একদম অনেক বড় পরিসরে, যেমন ধরো দেশের কোনো সমস্যা সমাধানে যদি ল্যাটেরাল থিংকিং ব্যাপারটা প্রয়োগ করা হয় তবে আমি নিশ্চিত অনেক সমস্যারই দীর্ঘমেয়াদী সমাধান পাওয়া যাবে।  

    ল্যাটেরাল থিংকিং এর জাদু আসলে সর্বক্ষেত্রেই আছে। হ্যারি পটারে আমরা ইনভিসিবল ক্লোক দেখতাম না? আমার কাছে মনে হয় ল্যাটেরাল থিংকিং ও যেন ইনভিসিবল ক্লোক পরে বসে আছে। আমাদের পাশেই আছে কিন্তু আমরা দেখছি না। কারণ আমাদের মস্তিষ্ক একদম প্রথাগত চিন্তার বাক্সে বন্দী। কিন্তু একবার আমরা একটু চেষ্টা করে দেখি না, মস্তিষ্ককে বাক্স থেকে বের করে আনতে। একবার একটু আউট সাইড দ্য বক্স ভেবেই দেখি না! ল্যাটেরাল থিংকিং(Lateral thinking) এর কারিশমা তখন অবশ্যসম্ভাবী।

     

    তথ্যসূত্রঃ

    ১। https://www.edwddebono.com/lateral-thinking

    ২।http://www.businessdictionary.com/definition/lateral-thinking.html

    ৩। http://www.innovationmanagement.se/imtool-articles/what-is-lateral-thinking/


    আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন: 



    ১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com


    ১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com

    ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩

    দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই দেশসেরা শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হও ইন্টারেক্টিভ লাইভ ক্লাসে, নাও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির সম্পূর্ণ সিলেবাসের 💯তে💯 প্রস্তুতি!

    আপনার কমেন্ট লিখুন