চাকরির ইন্টারভিউয়ের কিছু কমন প্রশ্ন ও তার উত্তর

March 15, 2024 ...

ইন্টারভিউ! বলা হয়ে থাকে চাকরি-প্রত্যাশী এবং তার ড্রিম-জবের মাঝখানে অন্তরায় শুধুই তার সিভি এবং ইন্টারভিউ। এই দুইটি উতরে গেলেই মিলবে সোনার হরিণ। রকমভেদে এবং ফিল্ডভেদে বিভিন্ন জবের ইন্টারভিউয়ে বিভিন্নরকম প্রশ্ন করা হলেও কিছু বিষয় থাকে বলতে গেলে কমনই। আজকে আমরা আলোচনা করবো এইরকম কিছু সাধারণ কিছু চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে।

তবে অতিঅবশ্যই শুরুতেই ডিসক্লেইমার দিয়ে নিই, এইসব উত্তরগুলো ইন্টারভিউ বা ভাইভা বোর্ডে হুবহু উগড়ে দিলেই যে চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি, বেলা শুনছ!- গেয়ে উঠবেন তা কিন্তু নয়। ইন্টারভিউ বা ভাইভা মানেই সাব্জেক্টিভ, একেকজনের একেক-মতন হবে এটাই স্বাভাবিক।

ইন্টারভিউ নাকি ভাইভা?

যদিও আমরা একই অর্থে ব্যবহার করি দুটোকেই, তবে এরা কিন্তু পুরোপুরি এক নয়। ইন্টারভিউ আর ভাইভার মাঝেও অল্পবিস্তর ফারাক আছে। ইন্টারভিউ পূর্বে ব্যবহৃত হত রাজা-রাজড়া বা এরকম মান্য-গণ্য ব্যক্তিবর্গের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করার ঘটনাকে বুঝাতে। যেখানে ভাইভা বলতে সাধারণ যে-কোনো মৌখিক পরীক্ষাকেই বলা চলত, এখন অবশ্য এই পার্থক্য চলে না। দুটোই একই অর্থে সাধারণ্যে ব্যবহার করা হয় হাল জামানায়।

আবার মজার ব্যাপার হলো, আমরা হয়তো অনেকেই জানি না, ভাইভা শব্দটা দিয়ে কিন্তু কোনোকিছু অ্যাপ্রিশিয়েট করাও বুঝায়। টু অ্যাপ্লড, টু অ্যাপ্রিশিয়েট, টু চিয়ার আপ- এসব বোঝাতেও ভাইভা চলে, এমনকি লং লিভ বোঝাতেও ভাইভা শব্দটি ব্যবহারযোগ্য; যদিও আমরা এসবের কোনো ক্ষেত্রেই ভাইভা শব্দটি ব্যবহার করি না। এতসব ব্যতিক্রম থাকলেও ব্যবহারিক জীবনে ইন্টারভিউ আর ভাইভা প্রায় একই অর্থে ধরা হয়, আজকের নিবন্ধেও আমরা সেভাবেই এগোবো। 

 

ঘরে বসে Spoken English

দৈনন্দিন জীবনে Spoken English-এ পারদর্শী ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠুন। ইংরেজি বলায় দক্ষ হয়ে উঠতে এনরোল করুন “ঘরে বসে Spoken English” কোর্সে।

 

তবে ভাইভা কিংবা ইন্টারভিউ, যাই বলি না কেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তরগুলো ইংরেজিতে দিতে হয়, যার জন্য প্রয়োজন স্পোকেন ইংলিশের শক্ত দখল। আপনার যদি স্পোকেন ইংলিশে দুর্বলতা থেকে থাকে, আপনার জন্য টেন মিনিট স্কুল নিয়ে এসেছে “ঘরে বসে স্পোকেন ইংলিশ” কোর্স, যার মাধ্যমে আপনি আপনি কাটিয়ে তুলতে পারবেন ইংরেজিতে কথা বলার ভয়। এছাড়া যদি আপনার ইংরেজি গ্রামারে দুর্বলতা থেকে থাকে, আপনার জন্য আছে English Grammar Crash Course, যার মাধ্যমে রুলস মুখস্ত করা ছাড়াই সহজ পদ্ধতিতে শিখতে পারবেন ইংরেজি গ্রামারে সকল নিয়ম।

ইন্টারভিউয়ের কিছু কমন প্রশ্ন এবং এর উত্তরে কী বলবেন/কী বলবেন না তা নিয়েই এই আলোচনা:

১। চাকরির ইন্টারভিউতে নিজের সম্পর্কে বলা (Introduce yourself)

যে প্রশ্নটি সব ইন্টারভিউ বা ভাইভাতেই আপনাকে মোকাবিলা করতে হবে তা হল নিজের পরিচয় দিন। ইন্ট্রডিউস ইয়োরসেলফ! চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে কমন।

ইন্টারভিউর শুরুতেই  সাধারণত এই প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। একটু ঘুরিয়ে প্রশ্ন করলে এভাবে করে যে , আপনার সিভি সম্পর্কে কিছু বলুন। প্রশ্নটিকে সহজ মনে করে অগোছালোভাবে উত্তর দিলে হবে না। “নিজের সম্পর্কে বলুন” প্রশ্নটির উত্তর থেকে আপনার আত্মবিশ্বাস, উৎসাহ ও কমিউনিকেশন স্কিল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এর জবাবে নিজের গোছালো একটা বিবরণ দিয়ে ফেলতে পারেন, মনে রাখবেন ফার্স্ট ইম্প্রেশনই কিন্তু লাস্ট করে: অর্থাৎ মনে গভীর ছাপ ফেলে। তাই শুরুটা করতে হবে পারফেক্ট।

যা বলা যাবে না:

আমার নাম অমুক, এটা বলেই- আমার বাবা-মা, ভাই-বোন অমুক, চাচার বংশে একজন অফিসার ছিলেন, দাদা তো অফিসের পেয়াদা ছিলেন, সে সুবাদেই চাচার চাকরিটা হয়- এ জাতীয় কথা শুরু করে দেয়া যাবে না। এতে যেমন নিজের থেকে অন্য দিকে ফোকাস বেশি চলে যায়, সাথে পরীক্ষক ভাববেন অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দেয়ার প্রবণতা রয়েছে আপনার মধ্যে, কর্পোরেট জীবনে যা পরিহার করা জরুরি একেবারেই।

“আমি মুভি  দেখতে পছন্দ করি”, “আমার অনেক বন্ধু আছে” এধরনের উত্তর পরিহার করো। সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় নিজেকে উপস্থাপন করুন।

 

সরকারি চাকরি প্রস্তুতি বেসিক কোর্স

কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • বিষয়ভিত্তিক স্ট্রং বেসিক তৈরির উপায়
  • সরকারি চাকরি প্রস্তুতির জন্য প্রতিটি বিষয়ের বেসিক টপিক
  • পরীক্ষা দিয়ে নিজের প্রস্তুতি যাচাই এর মাধ্যমে দুর্বল টপিক চিহ্নিত করা
  •  

    যেভাবে উত্তর  দিবেন:

    তাহলে শুরুটা কীভাবে পারফেক্ট করবেন? নিজের নাম, পড়াশুনা, পূর্ববর্তী কর্মস্থল বলার পাশাপাশি বলতে পারেন নিজের শখ, প্যাশন, বিভিন্ন স্কিল আর এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিসের টুকিটাকি। তাহলে একটা ভালো ইম্প্রেশন তৈরি হবে পরীক্ষক এবং আপনার মধ্যে। একেবারেই ঘাবড়ে যাওয়া যাবে না, দিনশেষে এটা শুধুই একটা পরীক্ষাই এর বেশি তো কিছু নয়। মনোবল দৃঢ় রেখে স্মিতহাস্যে, আত্মবিশ্বাসের সাথে পরের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে থাকবেন।

    ২। আপনার সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী গুণ কী কী? (What are your biggest strengths?)

    চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তরের মধ্যে সবচেয়ে কমন প্রশ্নগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। নিজের সম্পর্কে তুমি কতটুকু পজিটিভ এবং তুমি কোন কোন বিষয়ে দক্ষ তা জানতে পারা যায় এই প্রশ্নের উত্তরের দ্বারা।

    যা বলা যাবে না:

    আপনি মানুষের সাথে ভালোভাবে মিশতে পারেন ও আচার ব্যবহার ভালো এভাবে এক কথায় উত্তর না দিয়ে সংক্ষেপে তা নিয়ে আলোচনা করলে ভালো হয়।

    যেভাবে উত্তর দিবেন:

    উত্তর দেয়ার সময় ভেবে-চিন্তে নিজের  গুণের কথা প্রকাশ করুন। যেমন: আমি যেকোনো কাজ নিখুঁতভাবে সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করি। পরিকল্পনার মাধ্যমে ধাপে ধাপে সামনে এগিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো যে কোম্পানি সাধারণত এমন প্রার্থী খোঁজে যারা ৩ টি কাজ ভালোভাবে করতে পারে এবং সেগুলো হল আয় বাড়ানো, সময় বাঁচানো, ব্যয় কমানো।

    স্ট্রেংথ বলা তুলনামূলক সহজ, নিজের পড়ার বিষয় বলতে পারেন। কোর্সেরা, ইউডেমি, ইডিএক্স, কোডক্যাডেমি এজাতীয় MOOC (ম্যাসিভ ওপেন অনলাইন কোর্স) সাইট থেকে করা কোর্সগুলোর কথাও বলবেন। সাথে আরও যদি কোনো টপিক রিলেটেড কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজ থাকে সেসবও এখানেই তুলে ধরবেন।


    ইন্টারভিউ প্রশ্ন এবং উত্তর ইংরেজিতেআরো পড়ুন: ইংরেজিতে ইন্টারভিউয়ের টপ প্রিপারেশন


    ৩। আপনার দুর্বল দিকগুলো কী কী? (What are your weaknesses?)

    এই প্রশ্ন করার উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনি আপনার দুর্বল দিকগুলো সম্পর্কে অবগত কিনা এবং কীভাবে তা কাটিয়ে উঠবেন, তা যাচাই করা।

    যা বলা যাবে না:

    এই প্রশ্নের উত্তরে “ আমি অনেক রগচটা”, “আমার ধৈর্য কম” এভাবে সরাসরি না বলে একটু ঘুরিয়ে বলবেন এবং আপনি আপনার দুর্বলতাকে কীভাবে কাটিয়ে উঠছেন সেটা অবশ্যই বলবেন। এমন কোনো উইকনেসের ব্যাপারে বলবেন না যেটা শুধরে নেয়া যায় না। যেমন ধরুন আপনি বলে বসলেন, আমি প্রখরমাত্রার বদমেজাজি, রেগে গেলে জিনিসপত্র ভাংচুর করে ফেলি। জন্ম থেকেই আমার এমন রাগ, রাগ উঠলে বন্ধুবান্ধব, সিচুয়েশন, অফিস কোনো বাছ-বিছার থাকে না!

    এটা বললে কিন্তু তাদের মনে আপনার ব্যাপারে নেগেটিভ মনোভাব তৈরি হবে, এবং আপনার চাকরিটা না পাওয়ার চান্সই বেশি হয়ে যেতে পারে। তবে ভুলেও ক্লিশে উত্তরটা দিবেন না, যে আপনি পারফেকশনিস্ট। এটা সবাই জানে, গুগল করলে প্রথমে ঐ উত্তরটাই আসে। এতে বাস্তবতা থেকে বিমুখতা প্রকাশ পায়। তবে কী বলা যেতে পারে?

    যেভাবে উত্তর দিবেন:

    অনেকভাবেই বলতে পারেন, যেমন উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, “আমার একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং, তবে প্যাশনের ফিল্ড দাবা আর ইতিহাস। এই দুইটার মধ্যে ব্যালেন্স করতে মাঝেমধ্যে একটু সমস্যায় পড়ি আমি। তবে আমি চেষ্টা করছি সেটা ঠিক করে নেবার।” লক্ষ্য করলে দেখবেন, এবারের উত্তরটা কিন্তু উইকনেসই বুঝালো, কিন্তু এটা রিপেয়ারেবল এবং ততটা খারাপ উইকনেসও না যেটার জন্য আপনাকে ছাঁটাই করে দিবে।

    সাথে আপনি এটাও বলে রাখলেন যে, আপনি আপনার এই দুর্বলতাটি শুধরে নিতে চাচ্ছেন, অর্থাৎ আপনার ভুল থেকে বেরিয়ে আসার মনোভাব আছে। তাই এই উত্তরটা পরীক্ষকদের মনে ভালো ইম্প্রেশন তৈরি করার সম্ভাবনাই বেশি।

    ৪। আগামী পাঁচ/দশ বছর পর নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চান? (Where do you see yourself in the next 5/10 years?)

    এটিও খুব কমন একটা প্রশ্ন। আপনি কতটা দূরদর্শী তা যাচাই করা যায় এর উত্তরের মাধ্যমে। এর উত্তর এভাবে দিতে পারেন যে ৫ বছর পর কোম্পানির উচ্চপদে আপনি নিজেকে দেখতে চান।

    যা বলা যাবে না:

    অ্যারোগেন্ট উত্তর (যেমন, পরীক্ষককে বলা- আপনার চেয়ারে বসতে চাই) সবসময়ই নিরুৎসাহিত করা হয়। আর আকাশ-কুসুম কিছুও বলা যাবে না, যেমন আমি সিইও হয়ে যেতে চাই! বড় কোন কোম্পানির ক্ষেত্রে মাত্র পাঁচ/দশ বছরের ব্যবধানে সিইও হয়ে যাওয়া- যা সাধারণত অসম্ভব।

    যেভাবে উত্তর দিবেন:

    এই প্রশ্নের উত্তরে মূলত সেই কোম্পানির বড় কোন পদে, বড় কোনো দায়িত্ব সামলাতে চান এমন উত্তর কাম্য। এছাড়া আপনার যদি বিশেষ কোন ক্যারিয়ার গোল থেকে থাকে সেটি সেয়ার করতে পারেন।

    চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তর
    কর্পোরেট জগতে আমাদের ব্যবহারটাও কিন্তু হতে হবে কর্পোরেটই; Image Courtesy: Pixabay

    ৫। কেন আমরা আপনাকে হায়ার করবো? (Why should we hire you?)

    একই প্রশ্ন ঘুরিয়ে অন্যভাবেও করা হতে পারে- আপনি কেন নিজেকে এই প্রতিষ্ঠানের যোগ্য মনে করেন? চাকরির ইন্টারভিউ এর এই প্রশ্নের উত্তরে যদি প্রশ্নকর্তা সন্তুষ্ট থাকেন তাহলে তোমার চাকুরীর সম্ভাবনা যেমন অনেক বেড়ে যাবে ঠিক তেমনি অসন্তুষ্ট হলে সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।

    যা বলা যাবে না:

    এই প্রশ্নের উত্তরটা আপনাকে দিতে হবে নিখুঁতভাবে, কেননা বেশিরভাগ অ্যাপ্লাইইয়েন্ট এখানেই ভুলটা করেন। কেউ কেউ এত বেশি বিনয়ী হয়ে যান, যেন ভাবখানা এমন যে আমি তো আসলে কিছুই পারি না, আমাকে না নিলেও চলবে আপনাদের। আবার অনেকে নিজের সম্পর্কে বাড়িয়ে বলতে বলতে এমন পর্যায়ে নিয়ে যান, তখন আর সেটা বিশ্বাসযোগ্য থাকে না। তাই ট্রাম্পকার্ডটা এখানে খেলবেন আপনি ঠাণ্ডা মাথায়।

    যেভাবে উত্তর দিবেন:

    এই প্রশ্নের উত্তরে আপনার নিজস্ব যোগ্যতাগুলো নম্রভাবে ও সুচারুরূপে তুলে ধরবেন, কেননা এটাই পুরো ভাইভার ক্রিটিক্যাল মোমেন্ট। নিজের স্কিলসেটগুলো বলুন, সাথে এটাও বলুন কীভাবে সেসব কোম্পানির মোটোর সাথে মিলে যায়। কারণ একটা কোম্পানি তখনই আপনাকে হায়ার করবে যখন তারা দেখবে আপনি তাদের গ্রোথে সাহায্য করতে পারবেন এবং তাদের মিশন-ভিশনের সাথে আপনার কর্মপন্থা মিলে যায়।

    আপনি কীভাবে আমাদের কোম্পানিতে ভ্যালু অ্যাড করতে পারবেন? এই প্রশ্নের উত্তরও বলতে গেলে একইরকমই। সুন্দরভাবে নিজের যোগ্যতা উপস্থাপন করা এবং তাদের লক্ষ্যের সাথে মিলিয়ে দেয়াটুকু পর্যন্তই আপনার কাজ। বাকিটা তারাই বুঝে নেবেন।

     

    চাকরিজীবীদের জন্য English

    কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • জব ইন্টারভিউ, প্রেজেন্টেশন, দেশি-বিদেশি ক্লায়েন্ট মিটিং, কলিগদের সাথে আলাপচারিতা, ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইংরেজিতে কথা বলার দক্ষতা।
  • অফিসে যোগাযোগ, মিটিং-এ সঠিক শব্দ ও উচ্চারণে ইংরেজিতে কথা বলার সহজ উপায়।
  •  

    ৬। আমাদের জন্য আপনার কোনো প্রশ্ন আছে? (Do you have any questions for us?)

    এর উত্তরে যদি আপনি বলেন কোনো প্রশ্ন নেই, তা বোঝায় আপনি কম আগ্রহী তাদের ব্যাপারে। সেক্ষেত্রে ভালো অ্যাপ্রোচ হল তাদের ফলো-আপ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন। কবে রেজাল্ট দিতে পারে, তার সম্ভাব্য তারিখ বা আপনি জবে যোগদান করলে খুঁটিনাটি কোন কোন বিষয়ের সম্মুখীন হতে পারেন, যেগুলো রিক্রুটমেন্ট পোস্টে ছিল না এসব।

    আবার দারুণ একটা কাজ হবে যদি আপনি জিজ্ঞেস করেন তাদের কোম্পানির অন্য কোনো সেক্টরে কাজের সুযোগ আছে কিনা তা জিজ্ঞেস করা। এটা বোঝায় আপনি তাদের সাথে কাজ করতে আগ্রহী। এবং আপনি যে তাদের সম্পর্কে ব্যাকগ্রাউন্ড স্টাডি বা রিসার্চ করে এসেছেন তাও বুঝাতে সহায়ক হবে এই প্রশ্ন। তাই এই চান্স একদম মিস করতে নেই।

     

     

    Massive Open Online Course
    গ্লোবাল ভিলেজের বাস্তবতায় MOOC-এর সুবাদে ঘরে বসেই হার্ভার্ড-এমআইটির কোর্স করার সুযোগ মিলেছে; Image Courtesy: Mathieu Plourde/Flickr

    চাকরির ইন্টারভিউয়ের আরও কিছু কমন প্রশ্ন ও তার উত্তর

    এসব ছাড়া আরও কিছু চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তর রয়েছে, যেমন:

    ইন্টারভিউয়ের কমন প্রশ্ন

    যেভাবে উত্তর দিবেন

    আগের চাকরিটি আপনি কেন ছেড়েছেন? এক্ষেত্রে আগের চাকরি সম্পর্কে কোনো নেগেটিভ কথা বলা যাবে না এবং আগের সহকর্মীদের প্রশংসা করতে হবে। উত্তরটা এভাবে দিতে পারেন “আমার দক্ষতা ও  পেশাগত যোগ্যতা বাড়ানোর জন্য আমি আরো ভালো চাকরির সন্ধানে আছি।”

    সবসময়ই মাথায় রাখতে হবে সততা আগে, সত্য কথাটাই বলে দেবেন; কোনোমতেই মিথ্যার আশ্রয় নেয়া যাবে না। তাছাড়া অনলাইনের এই জামানায় কর্পোরেট জগতের কোনো তথ্যই লুকানো থাকে না। আপনার চাকরিচ্যুতি ঘটে থাকলে সেটা বের করে ফেলা পরীক্ষকদের কাছে পূর্ববর্তী প্রতিষ্ঠানে ওয়েবসাইটে জাস্ট দুই ক্লিকের দূরত্ব মাত্র।

    কোনো চাপের মুহূর্ত কীভাবে সামলেছেন? এই প্রশ্নের জবাবে চাপের মুখে ভেঙে পড়েছি- এ জাতীয় জবাব দিলে তা নেগেটিভ ইম্প্রেশন তৈরি করবে। পূর্ববর্তী কর্মক্ষেত্রে কীভাবে প্রেশার হ্যান্ডেল করেছেন তা বলবেন এক্ষেত্রে। কোনো অভিজ্ঞতার উল্লেখ করতে পারেন।
    আপনি কী জানেন আমাদের কোম্পানি সম্পর্কে? এই প্রশ্নের উত্তর থেকে বোঝা যায় আপনি কোম্পানির সাথে কাজ করতে কতটা আগ্রহী এবং কতটা ডেডিকেশনের সাথে কাজ করবেন।

    তাই এর উত্তর দেওয়ার জন্য ইন্টারভিউর পূর্বে অবশ্যই  কোম্পানি সম্পর্কে ভালভাবে জেনে যাবেন।

    আপনার নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পর্কে কিছু বলুন মানুষকে প্রভাবিত করতে পারা, নেতৃত্ব দেয়া, নেগোশিয়েট করতে পারা ,সঠিক পদক্ষেপ নেয়া। এসকল গুণাবলি তুলে ধরতে পারেন এবং আপনার এ বিষয়ে পূর্বের অভিজ্ঞতার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা করতে পারেন
    আপনি কি দলবদ্ধ কাজ করতে পারেন? দলবদ্ধ হয়ে সঠিকভাবে কাজ করতে পারা একটি বড় ও অতি প্রয়োজনীয় গুণ। এর উত্তরে বলবেন, “অবশ্যই। আগের কর্মক্ষেত্রে দলের অধীনে থেকেই আমরা সঠিক সময়ে নিয়মিত প্রজেক্টের কাজ শেষ করেছি।”
    গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আপনি কতটুকু বিচক্ষণ? কর্মজীবনে প্রায়ই আপনাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কর্মচারীদের সিদ্ধান্তের ওপরই কোম্পানির লাভ-ক্ষতি ও ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল। এই প্রশ্নের জবাবে বলা যেতে পারে “সিদ্ধান্ত নেয়া কখনই সহজ কাজ নয়। সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আমি পুরো বিষয়ের খুঁটিনাটি যাচাই করব, আমার টিমের সদস্যদের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করব, আমার পূর্বের অভিজ্ঞতা থাকলে কাজে লাগাবো এবং কোম্পানির জন্য সর্বোচ্চ মঙ্গলজনক কাজটি করব।”
    পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা আপনার কতটুকু? পরিবর্তন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আপনার জীবনের কোনো ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তা ব্যাখ্যা করতে পারেন।

    “আমি পূর্বে অনেকবার পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে চলেছি এবং ভবিষ্যতেও পারব। আমার আগের কর্মক্ষেত্রে আমাদের প্রজেক্টের মেন্টর পরিবর্তন হওয়ার পর নতুন মেন্টর আমাদের প্ল্যান ও স্ট্রাটেজিতে অনেক পরিবর্তন আনেন এবং সফলতার সাথেই আমি প্রজেক্টটা সম্পন্ন করি।

    আপনার সবচেয়ে বড় অর্জন কী? এই প্রশ্নের উত্তরে আপনার প্রফেশনাল লাইফের অর্জনের কথা বলবেন। পার্সোনাল লাইফের অর্জনের কথা না জানতে চাইলে না বলাই শ্রেয়।
    আপনি এতদিন কোনো চাকরিতে কর্মরত ছিলেন না কেন? এর উত্তর আপনি বলতে পারেন, “আমি নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কিছু কোর্স করেছি এবং ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করেছি।”
    তুন টেকনোলজিকে কীভাবে গ্রহণ করছেন আপনি? কী কী সফটওয়্যারের সাথে আপনি পরিচিত? নতুন টেকনোলজিকে পজিটিভভাবে নিতে হবে এবং যেসকল সফটওয়্যারের কথা বলবেন হচ্ছে তা যেন তোমার চাকরির কাজে লাগে।

    “নতুন টেকনোলজি আমাদের কাজকে অনেক সহজ করে দিয়েছে এবং অবশ্যই কম শ্রমে ও সময়ে কাজ করা যাচ্ছে।”

    আপনার ম্যানেজমেন্টের কৌশল সম্পর্কে কিছু বলুন এর উত্তর আপনি বলতে পারেন, “আমার ঊর্ধ্বতন ও অধীনস্থ কর্মচারীদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ বজায় রাখি এবং সময়ের কাজ সময়ের মধ্যে শেষ করতে পছন্দ করি”

    তাছাড়া চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তররের মধ্যে আপনার নেগোসিয়েশন স্কিল বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হতে পারে। কারণ, চাকরিজীবনে আরও বৃহদার্থে বলতে গেলে কর্পোরেট জগতে বিভিন্ন সময় আপনাকে বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে এবং নেগোসিয়েশন স্কিল সেখানে খুবই কার্যকর।

     

    Negotiation
    কর্পোরেট জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেগোসিয়েশনের স্কিল থাকা জরুরি; Image Courtesy: Negotiation Academy

    চাকরির ইন্টারভিউ টিপস

    চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তরের কথা বলতে বলতেই কিন্তু আমরা টিপসগুলো জেনে ফেলেছি, আবারও মনে করিয়ে দিই।

    • ইন্টারভিউ টিপস#১: ইন্টার্ভিউ বোর্ডে সর্বদাই ঠাণ্ডা মাথায় থাকতে হবে, সাথে মনে জোর রাখতে হবে। অর্থাৎ কনফিডেন্সটাও চাই চাঙ্গা, নচেৎ কম এনার্জেটিক কাউকে কোম্পানিও হায়ার করতে চাইবে না।
    • ইন্টারভিউ টিপস#২: আপনি যদি ইণ্টারভিউ চলাকালীন হাই তোলেন বা এরকম লেথার্জিক ভাব প্রকাশ করেন, পরীক্ষক কিন্তু তাতেই বুঝে নিবে যে আপনার কাজের উদ্যম হয়তো কম। তাই চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়ার সময় ফ্রেশ আর ফুরফুরে মেজাজে থাকাটা ভালো।
    • ইন্টারভিউ টিপস#৩: আমরা ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির সময় যেসব উপদেশ শুনে এসেছি, এখনও কিন্তু তার কিছু কিছু সমান প্রাসঙ্গিক। যেমন, দিনশেষে চাকরির পরীক্ষাও কিন্তু একটা পরীক্ষাই। এটি কোনোমতেই আপনার জীবন মৃত্যুর নির্দেশক হতে পারেনা। একটা পরীক্ষায় ব্যর্থতা মানেই যে জীবন শেষ, এমনটা নয়।
    dos and donts in viva
    ইন্টারভিউ বা ভাইভার কিছু ডু’স অ্যান্ড ডোন্ট’স; Image Courtesy: PostGrad.com
    • ইন্টারভিউ টিপস#৪: আর অবশ্যই পরীক্ষার আগে ব্যাকগ্রাউন্ড স্টাডি করতে হবে ভালো করে। কোম্পানির হিস্ট্রি এবং যে পজিশনে অ্যাপ্লাই করছেন সেটার কাজের বিষয়াদি। টুকটাক এসব বিষয় মাথায় রাখলে এগুলো নিজের মনোবল বুস্ট করতেও হেল্প করবে আপনাকে।
    • ইন্টারভিউ টিপস#৫: কিছু সাধারণ নিয়ম কোনোক্ষেত্রেই ভুলে গেলে চলবে না, যেমন ফোন সাইলেন্ট রাখতে হবে। ভাইব্রেশনও নয়, নরমাল রিং মোডে রাখার তো প্রশ্নই ওঠে না। নাকে-মুখে হাত দেয়া যাবে না, ইত্যাদি। এসব বিষয়গুলো কিন্তু হালের অনলাইন ভাইভাগুলোতেও মেনে চলতে হবে!
    • ইন্টারভিউ টিপস#৬: আর এসব ছাড়া অনলাইন ভাইভায়- পোষা পাখি-বেড়াল-কুকুর থাকলে দূরে রাখবেন। ব্যাকগ্রাউন্ডে ডিস্ট্র্যাকশন যত কমানো যায় তত ভালো, আর লাইটনিংটা ভালো রাখতে হবে, এগুলো মেনে চললেই হবে।

    এসব বিষয়গুলো মাথায় রাখলে আর ভাইভা কিংবা ইন্টারভিউ বোর্ডে দরদর বেগে ঘাম ছুটবে না। মার্জিত ভাষায় উপযুক্ত উত্তরের মাধ্যমে পরীক্ষককে ইম্প্রেস করতে পারলেই কিন্তু চাকরিটা আপনার হাতের মুঠোতেই।। দারুণ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে মনমতো ভাইভা দিয়ে পছন্দের চাকরিটা বাগিয়ে নিন, এটিই আমাদের প্রত্যাশা।


    আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:



    ১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারেন এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com

    আপনার কমেন্ট লিখুন