বিতর্ক কী? জেনে নিন কেন বিতর্ক গুরুত্বপূর্ণ থাকবে সবসময়!

February 7, 2023 ...

সেই গ্রিক সভ্যতার সময় থেকেই বিতর্কের শুরু। ক্লিওন, ডায়োডটাস, সিসেরোর মত ব্যক্তিরা সে যুগে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কার্যক্রমের ভালো-মন্দ বিচার করতেন, সুপারিশ করতেন জনসম্মুখে বিতর্ক করে। দু’হাজার বছর পরে এসেও, রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা – সবাই যুক্ত হয় বিতর্কের সাথে। কেউবা সক্রিয়ভাবে বিতর্ক করে, কেউ বিতর্ক দেখে, আর কেউ দূরে দাঁড়িয়ে বিতার্কিকদের ‘ঝগড়াটে’ উপাধি দিয়ে ব্যঙ্গ করে। তবে স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্কের নাম শোনে নি, এরকম মানুষ মেলা ভার।

তাই এই ব্লগে প্রথমেই জানবো বিতর্ক কি বা বিতর্ক কাকে বলে? এরপর আলোচনা এগিয়ে যাবে বিতর্ক প্রতিযোগিতা এর বিভিন্ন বিষয়, যেমন: বিতর্ক কিভাবে শুরু করতে হয়, একক বিতর্ক কি, একক বিতর্কের নিয়ম এবং বিতর্ক প্রতিযোগিতার নিয়ম কানুন ইত্যাদির মধ্য দিয়ে। সেই সাথে আপনি আরো জানতে পারেন কেন বিতর্ক গুরুত্বপূর্ণ থাকবে সবসময়?

Communication Masterclass by Tahsan Khan

কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ কৌশল
  • স্মার্টলি কমিউনিকেট করার প্রয়োজনীয় স্কিলস
  • হাই-প্রোফাইল মানুষদের সাথে নেটওয়ার্কিং এর কৌশল
  •  

    তাহলে চলুন আমরা প্রথমেই জেনে নিই বিতর্ক কি বা বিতর্ক কাকে বলে?

    বিতর্ক কি?

    বিতর্ক প্রতিযোগিতা এর বিষয় সমূহ জানার আগে জানতে হবে বিতর্ক কাকে বলে?

    বিতর্ক হলো একটি নির্দিষ্ট বিয়ষ নিয়ে সংগঠিত যুক্তি বা ধারণার প্রতিযোগিতা, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা দুটি বিপরীত পক্ষ বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে এবং সেই বিষয়ের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে তাদের যুক্তি উপস্থাপন করে।

    বিতর্কের একাল-সেকাল 

    একটা সময়ে যুক্তিপূর্ণ তর্কের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান বা দু’জন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির মানুষের আলোচনাটা ছিলো স্বাভাবিক। যতই দিন গিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যাপ্তি বেড়েছে। রাজনৈতিক, নীতিনির্ধারক আর জ্ঞানী ব্যক্তিদের সাধারণের কাছে পৌঁছানোর ক্ষমতাটাও বেড়েছে।

    বিতর্ক
    বিতর্ক (Image source: Freepik)

    আজকাল টকশো বা টিভি প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিজের মতামতকে গ্রহণযোগ্যতা প্রদান করার সুযোগও বেড়েছে অনেক। একই সাথে, স্কুল কলেজ পর্যায়ে এক্সট্রা কারিকুলার কার্যক্রম হিসেবে বিতর্কের গুরুত্ব কমতে শুরু করেছে। একটা সময় ছিলো যখন লেখালেখি বা বিতর্ক ছিল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পাঠবহির্ভূত কার্যক্রম। সে জায়গাটা হারিয়ে ফেলেছে বিতর্ক, আজকাল কেউই এত বেশি পড়াশুনো বা পরিশ্রম করে বিতর্কে আসতে চায় না।

    দুঃখের বিষয় হলো, এর সাথে সাথে আনুপাতিক হারে কমেছে মানুষের যুক্তি দিয়ে কথা বলাটা। সংসদীয় আলোচনা থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কমেন্ট সেকশন – সবখানেই এখন চলে এসেছে গায়ের জোরে বা ভাষার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিজেকে জাহির করার প্রবণতা। কথায় না পারলে অসংলগ্ন বিষয় টেনে আনা, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করা, এমনকি অপর প্রান্তকে অসত্য উপাধি দেয়া (ট্যাগ দেয়া) আজকাল ডালভাত  ব্যাপার।

    এই পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়ে, যখন যুক্তিভিত্তিক কথা বলার চেয়ে মানুষ যেকোন উপায়ে নিজের মতামত দাঁড় করাতেই বেশি আগ্রহী – প্রশ্নটা চলেই আসে, বিতর্ক কি আদৌ গুরুত্ব রাখে এখনো?

    বিতর্ক নিয়ে মানুষের চিন্তাটা কী?

    • বিতর্ক নিয়ে মানুষের মূল চিন্তাধারাটাই নেগেটিভ। প্রায় অধিকাংশ মানুষ মনে করে, বিতর্ক আসলে ঝগড়া ছাড়া কিছুই না, আর বিতর্ক যারা করে তারা সবকিছুতেই তর্ক করার একটা সুযোগ খোঁজে। সাধারণ মানুষের মনে এই চিন্তাধারাটার কারণে বিতর্ক কখনোই গান বা আবৃত্তির মত জনপ্রিয় হয় না।
    • ইদানীংকালের তরুণদের বিতর্ক নিয়ে একটা মতামত হচ্ছে, জিনিসটা গ্ল্যামারাস নয়। অন্যান্য অনেক কার্যক্রম মানুষকে খ্যাতি এনে দেয়, জনপ্রিয় করে তোলে। ‘ক্লাসি’ হওয়ার শর্টকাট হিসেবে অনেকেই এগুলোতে অংশগ্রহণ করে। সে তুলনায়, বিতর্ক খুব বেশি দর্শকপ্রিয়তা পায় না। এসব কারণে মানুষ বিতর্কের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।  

    বিতর্ক এর গুরুত্ব: যে কারণে বিতর্ক গুরুত্বপূর্ণ থাকবে সবসময়!

    বির্তক নিয়ে মানুষের বিভিন্ন নেতিবাচক চিন্তার কারণে দিনে দিনে কমছে বিতার্কিকের সংখ্যা। কিন্তু, এখনো যে বিতর্কের গুরুত্ব কমে নি, সেটার পেছনে অনেক যুক্তিই আছে, যা প্রায়ই চোখ এড়িয়ে যায়। তাই জেনে নেই কেন বিতর্ক গুরুত্বপূর্ণ থাকবে সবসময়:

    গুছিয়ে কথা বলার দক্ষতা

    পাবলিক স্পিকিং যেকোন মানুষের জন্যেই খুব গুরুত্বপূর্ণ স্কিল। যেকোন জায়গায় নিজেকে এগিয়ে রাখতে এর জুড়ি নেই। কিন্তু পাবলিক স্পিকিং মানেই যে যা ইচ্ছা তাই বলে যাওয়া, তা কিন্তু নয়।

    সবার সামনে কথা বলার মূল লক্ষ্যই হলো সবার মনোযোগ আকর্ষণ করা। বিতর্ক একজন মানুষকে বিস্তর জটিল বিষয়াদি নিয়ে কথা বলতে শেখায়, আর কেবল তাই নয়, শেখায় কীভাবে বিচারক ও প্রতিপক্ষ সহ উপস্থিত সবাইকে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি বুঝিয়ে দিতে হয়। যেকোন কাজেই এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্কিল।

    বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জানা

    বিতর্কের একটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হচ্ছে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তর জ্ঞান থাকা লাগে এই কাজে। একটা বিতর্কে প্রতিপক্ষ আর বিচারকমণ্ডলি সবসময় খেয়াল রাখছে, কখন আপনি একটা ভুল তথ্য বা বানানো তথ্য দিয়ে বসবেন।

    এইসব ক্ষেত্রে বিষয়টা নিয়ে পুরোপুরি জানা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। এই বিচিত্র জ্ঞানভান্ডার ক্লাসরুম থেকে জব ইন্টারভিউ – সবখানেই কিছু না কিছু কাজে লাগে। এটিও বিতর্কের অন্যতম ভালো দিক।

    অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি জানা ও সম্মান করা

    সম্ভবত এখনকার সময়ে বিতর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক এটি। যে সময়ে মানুষ একে অন্যের মতামতকে সম্মান করতে ভুলে যাচ্ছে, যেকোন উপায়ে নিজের মতামতকে চাপিয়ে দেয়ার কালচার সৃষ্টি হচ্ছে, সে সময়ে এসে বিতার্কিকরা প্রতিপক্ষের যুক্তি শুনছে, চিন্তা করে দেখছে।

    লাইফ স্কিল বা জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে বিতর্ক এখনো গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে

    আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীরা – যারা ভিন্ন সমাজব্যবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা থেকে এসেছে – একই বিষয় নিয়ে বিভিন্নভাবে যুক্তি দিচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে সহনশীলতা বাড়ে, আর বর্তমানে অনলাইন আর অফলাইন – যেকোন জায়গাতেই সহনশীলতা খুবই জরুরি।

    বিপক্ষের যুক্তিকে কাজে লাগানো

    অন্যের দৃষ্টিভঙ্গির জানার পাশাপাশি একজন ভালো বিতার্কিকের যে দক্ষতাটি দরকার হয় তা হলো নিজের মতামতকে প্রয়োজনমত পালটে নেয়া। বিপক্ষ একটা সত্যি কথা বা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে ফেললে সে কথাকে ফেলে দেয়া চলে না বিতার্কিকের। বরং সে কথাকে ঘুরিয়ে নিজের যুক্তিতে এনে ফেলাই বিতার্কিকের কৃতিত্ব। যেকোন তর্কে বা আলোচনায় এই দক্ষতাটি অনেক কাজে দেয়।

     

    বিতর্ক প্রতিযোগিতার নিয়ম কানুন

    বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন বিষয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিতর্ক প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী। বিতর্ক প্রতিযোগিতা এর নিয়ম কানুন জানলে আপনি শিখতে পারবেন বিতর্ক কিভাবে শুরু করতে হয় এবং কিভাবে সাবলীলভাবে যুক্তি উপস্থাপন করতে হয়।  তাই এবার জানবো “বিতর্ক কিভাবে শুরু করতে হয়” তা সহ আরো কিছু  বিতর্ক প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী – 

    সংজ্ঞায়ন: বিতর্ক কিভাবে শুরু করতে হয়?

    একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতা এর শুরুটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। কারণ বিতর্ক কিভাবে শুরু করতে হয় তা না জানলে শুরুরেই বিতার্কিকের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। 

    বিতর্ক প্রতিযোগিতা এর শুরুটা হতে হবে সংজ্ঞায়ন দিয়ে। বিতর্ক প্রতিযোগিতার নিয়ম হলো পক্ষ দলের প্রথম বক্তা বিতর্কের টপিক বা বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিষয় সমূহ সুন্দরভাবে সংজ্ঞায়ন করবেন। এক্ষেত্রে বিতর্কের বিষয়ের সাথে যায় এমন কোনো কোটেশন বা কবিতার কয়েকটি লাইন উল্লেখ করতে পারেন । সেই সাথে বিতর্কের টপিকে পক্ষ দলের অবস্থান স্পষ্ট করবেন এবং সম্ভাব্য কয়েকটি যুক্তি খন্ডন করবেন। অন্যদিকে বিপক্ষ দলের প্রথম বক্তা পক্ষ দলের প্রথম বক্তার দেয়া সংজ্ঞায়নের মেনে নেওয়া অংশ বাদে, বাকী মূল শব্দগুলোর সংজ্ঞায়ন করবেন। বিতর্কের টপিকে বিপক্ষ দলের অবস্থান স্পষ্ট করবেন এবং সেই সাথে প্রথম বক্তার দু’চারটি যুক্তি খন্ডন করবেন।

    দলীয় কৌশল ও অবস্থানের ব্যাখ্যা

    দ্বিতীয় ধাপে, পক্ষ দলের দ্বিতীয় বক্তা বিপক্ষ দলের প্রথম বক্তার দেওয়া দলীয় কৌশল ও অবস্থানের ব্যাখ্যার পাশাপাশি বিভিন্ন তথ্য, তত্ত্ব, যুক্তি ও উদাহরণের মধ্য দিয়ে প্রথম বক্তার দেওয়া দলীয় অবস্থান আরও স্পষ্ট করে যাবেন। অন্যদিকে বিপক্ষ দলের দ্বিতীয় বক্তাও পক্ষ দলের দ্বিতীয় বক্তার মতো তার দলের পক্ষে বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করবেন।

    বিতর্ক প্রতিযোগিতা
    বিতর্ক প্রতিযোগিতা (Image source: Dhaka Tribune)

    তথ্য, তত্ত্ব ও যুক্তি উপস্থাপন

    এ ধাপে দুই দলের দলনেতা যার যার দলের পক্ষে বিতর্ক করবেন। পক্ষ দলের দলনেতা তার প্রথম ও দ্বিতীয় বক্তার বক্তব্যের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে বিভিন্ন তথ্য, তত্ত্ব, যুক্তি ও উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টিকে তার দলের পক্ষে প্রমাণ করে যাবেন। অন্যদিকে বিপক্ষ দলের দলনেতাও তার দলের পক্ষে বিষয়টিকে প্রমাণ করে যাবেন।

    যুক্তি খন্ডন পর্ব

    যুক্তি খন্ডন পর্ব বিতর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। এ ধাপে পক্ষ দলের দলনেতা বিপক্ষ দলের তিনজন বক্তার প্রদত্ত যুক্তিগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যুক্তিগুলো ধরে ধরে খন্ডন করেন এবং সেই সাথে নিজের দলের যুক্তিকে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য করে তোলার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে বিপক্ষ দলের দলনেতাও পক্ষ দলের দেওয়া যুক্তিগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যুক্তিগুলো খন্ডন করেন এবং বিপক্ষ দলের যুক্তিকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার চেষ্টা করবেন।

    বিতর্কের সময় 

    বিতর্কের সময় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আয়োজক কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করেন। তবে তা সাধারণত বিতর্কের মূল পর্বের জন্য প্রত্যেক বক্তা ৩-৫ মিনিট করে ও যুক্তি খন্ডন পর্বে উভয় দলের দলনেতা ২ মিনিট করে সময় পাবেন। বিতর্ক প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক বক্তার সময় শেষ হওয়ার এক মিনিট পূর্বে সতর্ক সংকেত বাজাতে হবে। যুক্তি খন্ডন পর্বে সময় শেষ হওয়ার দেড় মিনিটে সতর্ক সংকেত বাজাতে হবে।

    বিতর্কের নাম্বার 

    বিতর্কে সাধারণত সংজ্ঞায়ন, উচ্চারণ, বাচনভঙ্গির সাবলীলতা, তথ্য, তত্ত্ব ও উদাহরণ দেওয়া, যুক্তি প্রয়োগ ও খন্ডন ইত্যাদি বিষয়ে নাম্বার দেওয়া হয়ে থাকে।  

    ঘরে বসে Spoken English

    কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • জব ইন্টারভিউ, ভাইভা, প্রেজেন্টেশন, দেশি-বিদেশি ক্লায়েন্ট মিটিং, কলিগদের সাথে আলাপচারিতা, পাবলিক স্পিকিং, অপরিচিত কারো সাথে কথা শুরু করা, ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইংরেজিতে কথা বলা
  •  

    একক বিতর্কের নিয়ম

    একক বিতর্ক হলো বক্তাকেন্দ্রিক বিতর্ক, যেখানে পক্ষে বা বিপক্ষ কোন দল থাকে না। একটি নির্দিষ্ট বিয়ষ নিয়ে স্বাধীনভাবে যুক্তি বা ধারণার প্রকাশ করতে পারেন একক বিতর্ক -এর অংশগ্রহণকারীরা। এই ধরণের বিতর্ক বারোয়ারী বিতর্ক নামেও পরিচিত। এবার জেনে নিবো একক বিতর্ক -এর নিয়মগুলো –

    • একক বিতর্কে কোনো দল নেই, তাই যেকোনো সংখ্যক প্রতিযোগী এই বিতর্কে অংশগ্রহণ করতে পারে। 
    • প্রথমেই সভাপতিকে ধন্যবাদ দিয়ে বিতর্কের টপিকের উপর ভিত্তি করে নিজের মতামত নিয়ে একটি যুক্তি বা পয়েন্ট দাঁড় করাতে হবে। এ বিতর্কের টপিক, আবেগ ও শব্দচয়নের মধ্যে একটি সাবলীল সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে।
    • একক বিতর্কে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর জন্য প্রায় তিন থেকে চার মিনিট সময় বরাদ্দ করা থাকে। এছাড়া এই বিতর্কে ধরা-বাঁধা কোনো নিয়ম নেই।

    কিভাবে হয়ে উঠবেন একজন ভালো বিতার্কিক? 

    বিতর্ক প্রতিযোগিতা এর বিষয় সমূহ জানার পাশাপাশি জানতে হবে একজন ভালো বিতার্কিক হওয়া কৌশলগুলো। তাই এবার জনাবো একজন ভালো বিতার্কিক হওয়ার কিছু টিপস – 

    শান্ত থাকুন

    একজন ভালো বিতার্কিক হওয়ার সবচেয়ে প্রথম শর্ত হলো বিতর্কের সময় শান্ত থাকা। তবে অনেক সময় বিতার্কিকরা নিজের যুক্তি উপস্থাপন করতে গিয়ে অনেক উত্তেজিত হয়ে পরেন, যা হতে পারে উদ্বেগ সৃষ্টির কারণ। তাই একজন ভালো বিতার্কিক হওয়ার জন্য কণ্ঠস্বর সব সময় স্বাভাবিক রাখা উচিত। 

    বিতর্ক প্রতিযোগিতার নিয়ম
    বিতর্ক প্রতিযোগিতা (Image source: Freepik)

    আত্মবিশ্বাসী হন

    প্রেজেনশন, ইন্টারভিউ, ভাইভা, পাবলিক স্পিকিং হোক কিংবা বিতর্ক হোক সবক্ষেত্রে ভালো করতে প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস। কারণ ভালো বিতার্কিক নিজেকে উপস্থাপন করতে আত্মবিশ্বাসের কোনো বিকল্প নেই।

    শরীরের অঙ্গভঙ্গি

    একজন দক্ষ বিতার্কিকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কথার সাথে সমন্বয় রেখে প্রয়োজনমতো হাতের বা শরীরের নড়াচড়া। আরো সহজভাবে বললে, বিতর্কে কথার পাশাপাশি বডি ল্যাঙ্গুয়েজও খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। 

    বিতর্ক প্রতিযোগিতা -এর নিয়ম কানুন

    একজন ভালো বিতার্কিক হওয়ার আগে জানতে হবে বিতর্ক প্রতিযোগিতার নিয়ম কানুন। সংজ্ঞায়ন, যুক্তি খন্ডন কিংবা বিতর্ক প্রতিযোগিতা -এর অন্যন্যা মৌলিক বিষয়গুলো না জানা একজন ভালো বিতার্কিক হওয়ার পথে বাঁধা।

    শব্দ ভান্ডার সমৃদ্ধ করুন

    বির্তকের সময় একই শব্দ বার বার বলা পরিহার করুন, সেই সাথে একজন ভালো বিতার্কিক হওয়ার জন্যবাএ বাএ ব্যবহার হওয়া শব্দগুলোর সহজ সমার্থক শব্দগুলো জেনে রাখুন।

    বিতর্কের টপিক নিয়ে ধারণা

    ভালো বিতার্কিক হতে চাইলে অবশ্যই ভালো প্রস্তুতির প্রয়োজন। আর সেজন্য বিতর্কের টপিক নিয়ে সুস্পষ্ট ও সঠিক ধারণা রাখা একজন ভালো বিতার্কিকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

    শেষ কথা 

    চিরকালই বিতর্ককে মানুষ চশমা আঁটা ভালো ছাত্রদের একচেটিয়া অধিকার মনে করে এসেছে, আর সময়ের সাথে সাথে বিতর্কের বিরুদ্ধে অনেক মতামতই তৈরি হয়েছে। কিন্তু লাইফ স্কিল বা জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে বিতর্ক এখনো গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।


    তথ্যসূত্র


    আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:

    1. Communication Masterclass by Tahsan Khan
    2. Facebook Marketing Course (by Ayman Sadik and Sadman Sadik
    3. ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid

    1. Microsoft Word Course by Sadman Sadik
    2. Microsoft Excel Premium Course
    3. Microsoft PowerPoint Course by Sadman Sadik
    4. Microsoft Office 3 in 1 Bundle 

    ১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com

    ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩

    দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই দেশসেরা শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হও ইন্টারেক্টিভ লাইভ ক্লাসে, নাও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির সম্পূর্ণ সিলেবাসের 💯তে💯 প্রস্তুতি!

    আপনার কমেন্ট লিখুন