বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট: জেনে নিন বিভিন্ন ক্যাডারের সুবিধা ও অসুবিধা

March 6, 2023 ...

বিসিএস বা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস কমিশন প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগের জন্য উপযুক্ত এবং যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি নির্বাচন করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সরকারি চাকুরিতে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা ক্যাডাররাই বিসিএস ক্যাডার নামে পরিচিত। বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট ও বিভিন্ন ধরনের ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা ও অসুবিধা কী – এ নিয়ে অনেকের মধ্যেই বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন থাকে। এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই সাজানো হয়েছে এই ব্লগটি। দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।

বিসিএস ক্যাডার কয় ধরনের?

বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে যে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ক্যাডার কতটি বা বি সি এস ক্যাডার কয়টি? বিসিএস ক্যাডার সাধারণত তিন ধরনের হয়:

১। সাধারণ ক্যাডার

২। শিক্ষা ক্যাডার

৩। টেকনিক্যাল ক্যাডার বা প্রফেশনাল ক্যাডার

বিসিএস প্রিলি লাইভ কোর্স

কোর্সটিতে যা যা পাচ্ছেন:

  • পিএসসি প্রণীত সিলেবাসের আলোকে সাজানো ৮০টি লাইভ ক্লাস
  • বিসিএস স্ট্যান্ডার্ডের প্রশ্ন মোকাবেলা করার কৌশল
  • ১৪৭টি রেকর্ডেড ভিডিও এবং ১৪৭টি ক্লাস ম্যাটেরিয়াল
  • ১২৫টি লেকচার শিট, ২৯৪০টি কুইজ ও ২৪টি মডেল টেস্ট
  •  

    নিচে সংক্ষেপে এই তিন ধরনের ক্যাডার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

    সাধারণ ক্যাডার:

    সাধারণ ক্যাডার -এ সবাই আবেদন করতে পারে। অর্থাৎ আপনি অনার্স যে বিষয়েই পড়েন না কেন সাধারণ ক্যাডার -এ আবেদন করতে পারবেন। অনার্স পাশকৃত সকলেই বিসিএস সাধারণ ক্যাডার -এ আবেদন করতে পারে। বিসিএস সাধারণ ক্যাডারগুলো নিম্নরূপ:

    ক। পররাষ্ট্র

    খ। প্রশাসন/ পুলিশ

    গ। অডিট/ কাস্টমস/ ট্যাক্স

    ঘ। তথ্য ও আনসার

    ঙ। রেলওয়ে ও খাদ্য

    চ। সমবায় ও পরিবার

    শিক্ষা ক্যাডার:

    নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা করে সেই বিষয়ের শিক্ষকতার পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করা যায় শিক্ষা ক্যাডার হয়ে। উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, আপনি যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স সম্পন্ন করেছেন, এখন আপনি বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষা ক্যাডার হয়ে সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হয়ে যেতে পারবেন।

    আপনি চাইলে শিক্ষা ক্যাডার এর পাশাপাশি সাধারণ ক্যাডার – এও আবেদন করতে পারবেন।

    বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট

    টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যাডার:

    যারা নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন যেমন চিকিৎসক, প্রকৌশলী ইত্যাদি তারা প্রফেশনাল ক্যাডার এ আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রেও প্রফেশনাল ক্যাডার -এ আবেদন করার পাশাপাশি সাধারণ ক্যাডার -এ আবেদন করা যায়। 

    নিচে বিভিন্ন ধরনের ক্যাডারের নাম এবং ক্যাডারের ধরণ (বিসিএস ক্যাডার তালিকা) উল্লেখ করা হলো:

    ক্রমিক (Serial) ক্যাডারের নাম (Cadre Name) ক্যাডারের ধরণ (Cadre Type)
    ১. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) সাধারণ ক্যাডার
    ২. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি) কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ৩. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (আনসার) সাধারণ ক্যাডার
    ৪. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (নিরীক্ষা ও হিসাব) সাধারণ ক্যাডার
    ৫. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সমবায়) সাধারণ ক্যাডার
    ৬. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (শুল্ক ও আবগারি) সাধারণ ক্যাডার
    ৭. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ইকনমিক) সাধারণ ক্যাডার
    ৮. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পরিবার পরিকল্পনা) সাধারণ ক্যাডার
    ৯. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (মৎস্য) কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ১০. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (খাদ্য) সাধারণ এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ১১. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পররাষ্ট্র) সাধারণ ক্যাডার
    ১২. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বন) কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ১৩. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সাধারণ শিক্ষা) কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ১৪. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (স্বাস্থ্য) কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ১৫. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (তথ্য) সাধারণ এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ১৬. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পশু সম্পদ) সাধারণ এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ১৭. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পুলিশ) সাধারণ ক্যাডার
    ১৮. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ডাক) সাধারণ ক্যাডার
    ১৯. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল) কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ২০. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (গণপূর্ত) কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ২১. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (রেলওয়ে প্রকৌশল) কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ২২. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক) সাধারণ এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ২৩. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সড়ক ও জনপথ) কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ২৪. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পরিসংখ্যান) কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ২৫. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কর) সাধারণ ক্যাডার
    ২৬. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কারিগরি শিক্ষা) কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার
    ২৭. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বাণিজ্য) সাধারণ এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার

    কীসের ভিত্তিতে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাবেন?

    ক্যাডার পদ কীভাবে বণ্টন করা হয় – এটা বুঝতে পারলে ক্যাডার চয়েস বা পছন্দক্রম ঠিক করা অনেকাংশে সহজ হয়ে যায়। ক্যাডার চয়েসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো – নিজের আগ্রহ, পরিবার, চাকরির সুযোগ-সুবিধা, কর্মপরিবেশ, কর্মস্থল, পঠিত বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্ক, সামাজিক মর্যাদা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা। আমাদের সমাজে ক্যাডারগুলো সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। আবার আমাদের সামাজিক বাস্তবতা ও অন্যান্য কারণে অনেকে  চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর হতাশায় ভোগেন।

    এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে না চাইলে পছন্দক্রম নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়গুলো ভালোভাবে বিবেচনা করে অনলাইনে আবেদন করার আগে একটা খসড়া করে নেওয়া ভালো। ক্যাডার চয়েস দেওয়ার সময় মনে করবেন আপনার সামনে সব ক্যাডার রাখা আছে। সব কিছু বিবেচনা করার পর আপনি কোন চাকরিটি করতে চান, সেটি প্রথমে রাখুন। আপনার প্রথম পছন্দের চাকরিটি না পেলে কোন চাকরিটি করতে চান, সেটি ২ নম্বরে রাখুন। এভাবে আপনি যে চাকরিগুলোর যেকোনোটি হলেই করবেন সব লিস্টে রাখবেন।

    যে চাকরিগুলো করার সুযোগ পেলেও আপনি করবেন না, শুধু সেগুলো বাদ দেবেন। যেমন ধরুন, এরই মধ্যে আপনি ভালো একটি চাকরি করছেন। পররাষ্ট্র বা প্রশাসন ক্যাডারে কাজ করার আগ্রহ আপনার, অন্য কোনো চাকরি হলেও করবেন না, সেক্ষেত্রে শুধু এই দুটি ক্যাডারই পছন্দক্রমে রাখবেন। কিন্তু যেকোনো চাকরি হলেই করবেন, সেক্ষেত্রে সব ক্যাডারই আগ্রহের ক্রমানুসারে লিস্টে রাখবেন।অনলাইনে আবেদন করার সময় আবেদন ফরমে ব্যক্তিগত তথ্য (পার্ট-১) ও শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য (পার্ট-২) পূরণ করার পর আপনার পছন্দক্রমে রাখতে পারবেন – এরকম সব ক্যাডারের তালিকা (পার্ট-৩) স্ক্রিনে আসবে। আপনার কাজ হবে ক্যাডারগুলো থেকে পছন্দের একটা ক্রম তৈরি করা।

    ক্যাডার চয়েস দেওয়ার সময় বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত পদের সংখ্যা দেখার দরকার নেই। ‘এই ক্যাডারে পদ বেশি, এটা আগে দিব’ এ ধরনের চিন্তা করা বোকামি। আপনি চিন্তা করবেন—সব বিবেচনায় আপনার আগ্রহ কোনটিতে বেশি, পদসংখ্যা যা-ই হোক, সেটি আগে। ভাইভায় ক্যাডার চয়েস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ক্যাডার চয়েসের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়গুলো যাঁরা ভাইভা নেবেন, তাঁরাও জানেন। চয়েস দেখে তাঁরা আপনার বিবেচনাবোধ সম্পর্কে একটি ধারণা পাবেন। চেষ্টা করবেন আপনার চিন্তা যেন অদ্ভূত না হয়। আর ভাইভা বোর্ডে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় চয়েস থেকেই বেশির ভাগ প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। ক্যাডার চয়েসের ক্রম নিয়ে ভাইভায় প্রশ্ন করা হলে একটি যৌক্তিক কারণ বলার জন্য প্রস্তুত থাকবেন।

    ক্যাডার চয়েসের ক্ষেত্রে যেসব ক্যাডার পেতে তুলনামূলক বেশি নম্বর প্রয়োজন সেগুলো পরে দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। উদাহরণস্বরূপ, কারও ফরেন ক্যাডার হওয়ার ইচ্ছা থাকলে তা ১ নম্বর চয়েসে দেয়া উচিত। ২ বা ৩ নম্বর বা তারও পরের চয়েসে ফরেন ক্যাডার দিলে সেটা পাওয়ার সম্ভাবনা তো থাকবেই না বরং অনেক সময় ভাইভা বোর্ডে অনেক প্যাঁচায় এই নিয়ে। তাই ‘ফরেন ক্যাডার’ চয়েসে দিলে ১ নাম্বারে দিন, না হয় একেবারে বাদ দিন।

    বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট

    বিশেষজ্ঞদের মতে ক্যাডার চয়েসের ক্ষেত্রে ‘Both Cadre’ দিলে আপনি নিম্নোক্ত যেকোনো পদ্ধতিতে চয়েস দিতে পারেন:

    পদ্ধতি-১

    ১. ফরেন (ইংলিশে ভালো হলে, না হয় বাদ দিন এবং দিলে সর্বপ্রথমে না হয় বাদ দিন)
    ২. এডমিন/পুলিশ
    ৩. পুলিশ/এডমিন
    ৪. ট্যাক্স/কাস্টমস
    ৫. কাস্টমস/ট্যাক্স
    ৬. অডিট/আনসার
    ৭. আনসার/অডিট
    ৮. কো-অপারেটিভ (সমবায়)/তথ্য
    ৯. তথ্য/কো-অপারেটিভ (সমবায়)
    ১০. খাদ্য/পরিবার পরিকল্পনা
    ১১.পরিবার পরিকল্পনা/খাদ্য
    ১২. বাণিজ্য/ডাক
    ১৩. ডাক/বাণিজ্য
    ১৪. রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্য
    ১৫. শিক্ষা ক্যাডার/হেলথ ক্যাডার/ইঞ্জিনিয়ার/অন্যান্য টেকনিক্যাল ক্যাডার

    পদ্ধতি-২

    যাদের ইংলিশ স্পিকিংয়ে সমস্যা আছে, ফরেন ক্যাডার বাদ দিয়ে এডমিন বা পুলিশ ক্যাডার প্রথম চয়েসে রাখতে পারেন:
    ১. এডমিন/পুলিশ
    ২. পুলিশ/এডমিন
    ৩. ট্যাক্স/কাস্টমস
    ৪. কাস্টমস/ট্যাক্স
    ৫. অডিট/আনসার
    ৬. আনসার/অডিট
    ৭. কো-অপারেটিভ (সমবায়)/তথ্য
    ৮. তথ্য/কো-অপারেটিভ (সমবায়)
    ৯. খাদ্য/পরিবার পরিকল্পনা
    ১০.পরিবার পরিকল্পনা/খাদ্য
    ১১. বাণিজ্য/ডাক
    ১২. ডাক/বাণিজ্য
    ১৩. রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্য
    ১৪. শিক্ষা ক্যাডার/হেলথ ক্যাডার/ইঞ্জিনিয়ার/অন্যান্য টেকনিক্যাল ক্যাডার

    পদ্ধতি-৩

    যারা শিক্ষা ক্যাডার বা নিজের অধীত টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যাডার ২য় চয়েসে রাখতে চান:
    ১. এডমিন/পুলিশ
    ২. শিক্ষা ক্যাডার/টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডার
    ৩. ট্যাক্স/কাস্টমস
    ৪. কাস্টমস/ট্যাক্স
    ৫. অডিট/আনসার
    ৬. আনসার/অডিট
    ৭. কো-অপারেটিভ (সমবায়)/তথ্য
    ৮. তথ্য/কো-অপারেটিভ (সমবায়)
    ৮. খাদ্য/পরিবার পরিকল্পনা
    ১০.পরিবার পরিকল্পনা/খাদ্য
    ১১. বাণিজ্য/ডাক
    ১২. ডাক/বাণিজ্য
    ১৩. রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্য

    পদ্ধতি-৪

    বোথ ক্যাডার দিতে চান; কিন্তু শিক্ষা ক্যাডার/প্রফেশনাল ক্যাডার/টেকনিক্যাল ক্যাডার যার ক্ষেত্রে যেটা প্রযোজ্য, সেটা প্রথমে রাখতে চান:
    ১. শিক্ষা ক্যাডার/টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডার
    ২. এডমিন/পুলিশ
    ৩. ট্যাক্স/কাস্টমস
    ৪. কাস্টমস/ট্যাক্স
    ৫. অডিট/আনসার
    ৬. আনসার/অডিট
    ৭. কো-অপারেটিভ (সমবায়)/তথ্য
    ৮. তথ্য/কো-অপারেটিভ (সমবায়)
    ৮. খাদ্য/পরিবার পরিকল্পনা
    ১০.পরিবার পরিকল্পনা/খাদ্য
    ১১. বাণিজ্য/ডাক
    ১২. ডাক/বাণিজ্য
    ১৩. রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্য

    পদ্ধতি-৫

    যারা শুধু জেনারেল ক্যাডার চয়েসে রাখতে চান, কিন্তু প্রফেশনাল/শিক্ষা/টেকনিক্যাল ক্যাডার দিতে চান না:
    ১. ফরেন (ইংলিশে ভালো হলে, না হয় বাদ দিন এবং দিলে সর্বপ্রথমে না হয় বাদ দিন)
    ২. এডমিন/পুলিশ
    ৩. পুলিশ/এডমিন
    ৪. ট্যাক্স/কাস্টমস
    ৫. কাস্টমস/ট্যাক্স
    ৬. অডিট/আনসার
    ৭. আনসার/অডিট
    ৮. কো-অপারেটিভ (সমবায়)/তথ্য
    ৯. তথ্য/কো-অপারেটিভ (সমবায়)
    ১০. খাদ্য/পরিবার পরিকল্পনা
    ১১.পরিবার পরিকল্পনা/খাদ্য
    ১২. বাণিজ্য/ডাক
    ১৩. ডাক/বাণিজ্য
    ১৪. রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্য

    পদ্ধতি-৬

    আপনি যদি শুধু শিক্ষা ক্যাডারে বা হেলথ ক্যাডার/টেকনিক্যাল ক্যাডারে যেতে চান কেবল চয়েস ১টি দিবেন অর্থাৎ সেই ক্যাডারটি ১ নাম্বার চয়েসে দিবেন; আর অন্য কোনো ক্যাডার চয়েসে দিবেন না। সেক্ষেত্রে আপনার ক্যাডার চয়েস হবে শুধু ১টি।

    ১। শিক্ষা ক্যাডার/হেলথ ক্যাডার/ইঞ্জিনিয়ার/টেকনিক্যাল ক্যাডার (যার জন্য যেটা প্রযোজ্য)

    এবার চলুন কয়েকটি ক্যাডার এবং এগুলোর সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক:

    বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার

    বাংলাদেশের সবচেয়ে আকাঙ্খিত ক্যাডার পদ এই বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার । প্রার্থীদের প্রায় ৯০ ভাগ প্রার্থীরাই তাদের পছন্দক্রমের বা বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট -এ পররাষ্ট্র ক্যাডার -কে প্রথমে রাখেন।

    আপনি কি চাকরি করার পাশাপাশি বিদেশে ভ্রমণ করতে চান?  মানুষের খুব কমন একটি ইচ্ছা নতুন নতুন জায়গা দেখা ও ঘুরা। নতুন নতুন সাক্ষাৎ করা।  পররাষ্ট্র ক্যাডার এমন একটি ক্যাডার যেখানে আপনার এই সকল ইচ্ছা পূরণ হতে পারে।  চাকরির পাশাপাশি আপনি বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন নতুন নতুন মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।  তাহলে চলুন বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা কেমন।

    সুবিধা:

    • আপনাকে দূতাবাসে পদায়ন করা হলে দেশের নিয়মিত বেতনের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১২০০ ডলার (মাসিক ভাতা) দেওয়া হবে। সাথে মাসিক ৩০০ ডলার বিনোদন ভাতা সহ বছরে ২০,০০০ হাজার ডলার দেওয়া হবে বাসা ভাড়া ভাতা হিসেবে। এছাড়া দুইটি সন্তানের সম্পূর্ণ পড়াশুনার খরচ এবং পরিবারের সদস্যদের মোট ৯০ ভাগ চিকিৎসা ভাতা সরকার বহন করবে।
    • আপনি বিদেশে থাকা অবস্থায় ট্যাক্স ছাড়া গাড়ি কিনতে পারবেন। কিন্তু সেই গাড়ি দেশে আনতে হলে অবশ্যই ট্যাক্স দিতে হবে।
    • দেশে বিদেশে সরকারি খরচে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। আপনার থাকা, খাওয়ার সব খরচ সরকার বহন করবে।
    • বিদেশে যেকোন অনুষ্ঠানে আপনি এবং আপনার পরিবারের সবাই অংশগ্রহন করতে পারবেন ও কুটনীতিক মর্যাদা পাবেন।
    • বিদেশে প্রভাবশালীদের সঙ্গে তাদের মতো একই স্ট্যান্ডার্ডে রাজকীয় ভাবে চলাফেরা করতে পারবেন।
    • বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রতিনিধি কম থাকায় নিশ্চিতভাবে রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত প্রমোশন পেয়ে যাবেন।

    সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের কোন ধরনের রাজনৈতিক চাপ থাকবে না। ফলে নিশ্চিতে আপনি আপনার নিজের কাজ করতে পারবেন।

    অসুবিধা:

    • চাকরির প্রথমদিকে আপনাকে সহকারী সচিব হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদান করতে হবে। ওই সময় আপনাকে দেওয়া সকল কাজই হবে প্রশিক্ষণমূলক। সহকারী সচিব হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরির সময় টাইপিং থেকে শুরু করে সকল প্রকার দাপ্তরিক কাজ আপনাকেই করতে হবে। এসময় কাজের প্রতি অনীহা চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
    • চাকরির প্রথমদিকে আপনাকে কোন গাড়ি দেওয়া হবে না। গণমাইক্রোবাসে করে অফিসে আসা-যাওয়া করতে হবে।
    • ৬ বছরের মধ্যে ২টি দেশে পোস্টিং দেওয়া হবে। ৬ বছর পর অভিজ্ঞতা অর্জন ও দক্ষ হয়ে ৩ বছর ঢাকায় পোস্টিং দেওয়া হবে আপনাকে। এর কারণে বেশিদিন এক জায়গায় থাকতে পারবেন না।

    সবশেষে পররাষ্ট্র ক্যাডারের কথা বলতে গেলে যদি আপনি পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুযোগ-সুবিধাগুলোর কথা  চিন্তা করেন।সেখানে অসুবিধাগুলো তেমন কোনো অসুবিধা হয় না।  দেশ-বিদেশে রাজকীয় ভাবে চলাফেরা করা নিজের দেশকে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করা,  নিজের এবং নিজের পরিবারের জন্য এত সব সুযোগ-সুবিধা অন্য কোন বিসিএস ক্যাডারে পাওয়া যাবে না। আপনি যদি বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার পছন্দ করে থাকেন তাহলে আপনার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট -এ এটাকে প্রথমদিকে রাখুন।

    বিসিএস পুলিশ ক্যাডার

    মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর পর আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়ে থাকে নিরাপত্তা। পুলিশ কাজ করে জনগণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। একদম মাঠ পর্যায় থেকে শুরু করে উপরমহল পর্যন্ত পুলিশের বিস্তৃতি রয়েছে। অন্য কোনো বিসিএস ক্যাডার -এর মধ্যে এত বিস্তৃত কর্মপরিধি খুঁজেও পাওয়া যাবে না।

    সুবিধা:

    • বিসিএস পুলিশ ক্যাডার -এ থেকে একজন তার পরিবারের বা আত্মীয়স্বজনকে যতটা সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারে, অন্য কোন বিসিএস ক্যাডারে থেকে সেটা সম্ভব নয়। যেকোনো ধরনের সমস্যাই হোক না কেন, একজন পুলিশ ক্যাডার হিসেবে সব জায়গাতেই রয়েছে আলাদা ধরনের একটি সম্মান।
    • রাজশাহীর সারদা একাডেমীতে প্রশিক্ষণ করার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি মাস্টার্স ডিগ্রিও সম্পূর্ণ করে ফেলতে পারবেন।
    • চাকরির প্রথমদিক থেকেই বডিগার্ড, বাংলো, ভাতা, গাড়িসহ সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে যাবেন।
    • বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য সরকারি খরচে দেশ বিদেশে যেতে পারবেন। এছাড়াও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করার সুযোগ পেয়ে যাবেন। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষার প্রতি মিশনে ২০ থেকে ৪০ লাখ টাকা সম্মানি পেয়ে যাবেন।
    • সাধারণ পুলিশি কাজ করতে ইচ্ছুক না হলে স্পেশাল ফোর্স, এসএসএফ, গোয়েন্দা, র‍্যাব সহ আরও অন্যান্য ফোর্সগুলোতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
    • সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে মর্যাদা, সম্মান, খ্যাতি অন্যদের থেকে তুলনামূলক ভাবে বেশি পাবেন।
    • দেশের নিরাপত্তা বিষয়ক পরিকল্পনাগুলো নিজে মাঠে থেকে বাস্তবায়ন করতে পারবেন।

    অসুবিধা:

    • বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের চাকরির কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ নেই। দিনে-রাতে ২৪ ঘন্টাই ডিউটি করতে হবে। এই চাকরিতে বড় কোনো ছুটি কল্পনাও করা যায় না। যদি রাত ২টার সময়ও কল আসে, তখনও বিছানা ছেড়ে ডিউটিতে যেতে হবে।
    • এই চাকরিতে অবৈধ পথে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অনেক। তবে আপনি নিজে সৎ থাকলে এগুলো অনেকটাই এড়ানো যাবে।
    • পুলিশ ক্যাডারে রাজনৈতিক প্রেশার অনেক বেশি।
    প্রশাসন ক্যাডার
    বাংলাদেশ সচিবালয় (Image Source: Dhaka Tribune)

    বিসিএস এডমিন বা বিসিএস প্রশাসন

    সরকার কর্তৃক সকল ধরনের প্রশাসনিক কাজ, প্রতিবাদ, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, সকল ক্যাডারের সমন্বয়ে এই কাজগুলো সম্পন্ন করে থাকেন প্রশাসন বা এডমিন বিসিএস ক্যাডারা।

    সুবিধা:

    • এডমিন ক্যাডারদের মধ্যে থেকে শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ কর্মকর্তার নিয়োগ হয় সচিবালয়ে। তাই আপনি এডমিন ক্যাডার হতে পারলে সচিবালয়ে পদোন্নতি পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। এমনকি আপনি যদি কম বয়সে চাকরিতে জয়েন করতে পারেন তাহলে ক্যাবিনেট সচিব পর্যন্ত হয়ে যেতে পারবেন, যার পদমর্যাদা একজন সংসদ সদস্যের চেয়েও বেশি।
    • বিভিন্ন অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সুযোগ পাবেন।
    • বিদেশ ভ্রমণসহ বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনগুলোতে কাজ করার সুযোগ পাবেন।  সরকারি খরচে বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জন ও ট্রেনিং করতে পারবেন।
    • স্থানীয় পর্যায়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার ক্ষমতা পেয়ে যাবেন। এছাড়া গাড়ি, বাংলোর সুবিধা তো রয়েছেই।

    অসুবিধা:

    • বিসিএস এডমিনের উপর রাজনৈতিক চাপ বেশি থাকে। কর্মক্ষেত্রে নিজের স্বাধীনমত কাজ করার সুযোগ অনেকটাই কম। এই ক্যাডারেও রয়েছে দুর্নীতির বেশ অভিযোগ। কিন্তু আপনি নিজে সৎ থাকলে নির্দ্বিধায় কাজ করতে পারবেন।
    • কাজে বৈচিত্র্যতা অনেকটাই বেশি এবং ট্রান্সফারও ঘন ঘন হবে। ফলে, কোনো জায়গায় বেশিদিন থাকতে পারবন না। তাই নতুন পরিবেশে যারা সহজেই নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে পারেন না, তাদের জন্য একটু সমস্যা হবে।

    বিসিএস প্রিলি লাইভ কোর্স

    বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিন পিএসসি প্রদত্ত সিলেবাসের ওপর নেওয়া লাইভ ক্লাস, লেকচার শিট, টপিকভিত্তিক এক্সাম ও সাপ্তাহিক পূর্ণাঙ্গ মডেল টেস্ট এর সাহায্যে।

     

    বিসিএস কাস্টমস

    অনেকেই কাস্টমস ক্যাডার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট -এর প্রথম চয়েজ এ রাখেন।  এই বিভাগে কোন ঝামেলা না থাকায় নিরিবিলি পরিবেশে শান্তি মতো কাজ করা যায়।  চাকরির শুরুর দিকে আপনাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সহকারি কমিশনার (কাস্টমস) পদে যোগদান করতে হবে।

    সুবিধা:

    • চাকরির শুরুতেই আপনার যাতায়াতের জন্য গাড়ি দেওয়া হবে।
    • অফিস থাকবে নিরিবিলি পরিবেশে। অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন শিল্পপতি ও গণ্য মান্য ব্যক্তিদের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠবে।
    • বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারে বৈধ উপায়ে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন। চোরাচালান ধরে দিতে পারলে সরকার থেকে আপনাকে মূল্যভেদে ১০-৪০% পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়া হবে।
    • সাধারণ চাকরি করতে ভালো না লাগলে শুল্ক গোয়েন্দা হিসেবেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

    অসুবিধা:

    • কাস্টমস ক্যাডার দুর্নীতির জন্য অনেক সমালোচিত। দুর্নীতি করার জন্য অনেক সুযোগ এই কর্মক্ষেত্রে রয়েছে। কিন্তু সৎ থাকলে কোনো প্রকার দুর্নীতি ছাড়াই বৈধ উপায়ে চাকরি করতে পারবেন। চোরাচালান ধরে দিতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত অনেক টাকা পুরস্কার হিসেবে পাওয়া যাবে।
    • পদোন্নতি অতিরিক্ত কমিশনার পর্যন্ত অনেকটাই ভালো কিন্তু অনেকেই  আছেন যারা চাকরির এক পর্যায়ে প্রশাসন ক্যাডারে চলে যান সচিবালয়ে চাকরির উদ্দেশে। এদিকে রাজস্ব বোর্ডের প্রধান ও এসে থাকেন প্রশাসন ক্যাডার হতে।

    বিসিএস কর

    আয়কর বিভাগের ক্যাডাররা কাজ করে থাকেন অর্থমন্ত্রণালয়ের অধীন এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) এর একটি শাখাতে। সরকারের প্রত্যক্ষ সকল ধরনের কর এই বিভাগে নেওয়া হয়ে থাকে। বিসিএস কর ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য।

    সুবিধা:

    • কর ফাঁকি ধরতে পারলে ভালো পরিমাণ টাকার গ্রান্ট বা রিওয়ার্ড পাওয়ার সুযোগ রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
    • প্রথমদিকে পদোন্নতি বেশ ভালোই থাকে। কিন্তু চাকরির মাঝপথে পদোন্নতি কিছুটা স্থবির হয়ে যায়। কারণ প্রশাসন ক্যাডার থেকে অনেকেই আসতে চান এই বিভাগের উর্ধ্বস্থানীয় পদে।
    • সারা বছরে কাজের চাপ খুব একটা নেই বললেই চলে, শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত।
    • দেরি করে চাকরিতে যোগদান হলে বিসিএস কর ক্যাডারে আসা লাভজনক।

    অসুবিধা:

    • এই চাকরির শুরুরদিকে সুবিধা মোটামোটি বেশ ভালই থাকে কিন্তু কাস্টমস ক্যাডার থেকে তুলনামূলক অনেক কম।
    • বিশেষ করে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের সময়ে কাজের প্রেশার অনেক বেশি থাকে, এমনকি রাত ১০-১২টা পর্যন্ত কাজ করার প্রয়োজন হতে পারে।
    • রাজস্ব বোর্ডের প্রধান কিন্তু নেওয়া হয় প্রশাসন ক্যাডার হতে। এজন্য যতই পদোন্নতি হোক রাজস্ব বোর্ডের প্রধান হওয়ার সুযোগ নেই।

    বিসিএস অডিট বা বিসিএস নিরীক্ষা ও হিসাব 

    সরকারের যত আয় এবং ব্যয় হয়ে থাকে, তার হিসাব ও নিরীক্ষা করে থাকেন অডিট ক্যাডাররা। এই বিসিএস অডিট ক্যাডার অনেক সম্মানজনক একটি চাকরি। সবাই সমীহ করে চলেন অডিট ক্যাডারদের।

    প্রশ্ন আসতে পারে, কেন বিসিএস অডিটদের সবাই সমীহ করে চলে? শুনুন তাহলে…সরকারের প্রত্যেকটি বিভাগেই খরচ ও আয়ের হিসেবে কিছু না কিছু ভুল থেকে থাকে। আর এই ভুলগুলো ধরে থাকেন বিসিএস অডিট ক্যাডাররা। তাই অন্য সব বিসিএস ক্যাডাররা অডিট ক্যাডারদের কিছুটা হলেও ভয় পেয়ে থাকেন। দেশের সরকারের প্রত্যেকটি বিভাগের কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেন বিসিএস অডিট ক্যাডাররা।

    সুবিধা:

    • সরকারের প্রত্যেকটি বিভাগেই অডিট বিভাগ রয়েছে। তাই কাজের ভিন্নতা দেখতে পাবেন।
    • সরকারি খরচে বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও ট্রেনিং করতে পারবেন সেটাও ফ্রিতে।
    • আপনাকে সম্মান দেওয়া হবে প্রশাসন বা পুলিশ ক্যাডারদের মতো।
    • সর্বোপরি স্বাধীনভাবে নিজের মতো করে কাজ করতে পারবেন এবং বৈধ ও সৎ উপায়ে টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
    • চাকরি থেকে অবসর প্রাপ্ত হলেও বিভিন্ন কোম্পানি থেকে আপনার কাছে অডিট করার অফার আসতে থাকবে।

    অসুবিধা:

    অন্যান্য কিছু ক্যাডারের মতো এখানেও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এই ক্যাডারে। চাকরিতে থাকাকালীন বেশ কিছু দুর্নীতির অফার আসবে আপনার কাছে। একটা পেপারে সাইন করাতেই হয়তো দেওয়া হবে ৫০ লাখ টাকা। তবে সদিচ্ছা আর সততা থাকলে কোন দুর্নীতি আপনার কাছে আসতে পারবেনা।

    বিসিএস খাদ্য

    আমরা কেউই খাদ্য ছাড়া বেঁচে থাকতে পারব না। এই খাদ্যের উৎপাদন, বিপণন, বিতরণ নিশ্চিত করে থাকেন খাদ্য বিভাগের ক্যাডাররা। চাকরির শুরুরদিকে সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়া হবে। তারপরে আপনাকে পদায়ন করা হবে খাদ্য অধিদপ্তরে। এরপর ওখান থেকে জেলা পর্যায়ে কাজ করাতে পারবেন।

    সুবিধা:

    • কোনো ঝামেলা নেই এই চাকরিতে। কাজেরও খুব বেশি প্রেশার থাকে না। বেশ সহজেই কাজ করা যাবে।
    • মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সঙ্গে কাজ করতে হবে এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো দেখতে পারবেন।
    • যারা কৃষক প্রেমী রয়েছেন তারা এই ক্যাডারে আসতে পারেন। এই চাকরিতে আসতে পারলে দেশের মূলধারার কৃষিকাজের স্বচ্ছতা নির্ভর করবে আপনার উপর।

    অসুবিধা:

    • চাকরির শুরুতে আপনাকে গাড়ি দেওয়া হবে না।
    • অতিরিক্ত আয় যেমন, সরকার কর্তৃক কোন ধরনের অর্থ পুরস্কার পাওয়ার সুযোগ নেই।

    বিসিএস বাণিজ্য

    বাণিজ্য ক্যাডারদের কাজ হচ্ছে দেশের আমদানি ও রপ্তানির সাম্যাবস্থা দেখা। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী বাণিজ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ে অথবা বিভাগীয় শহরে পোস্টিং করা হবে।

    সুবিধা:

    • আপনার যাতায়াতের জন্য গাড়ি দেওয়া হবে।
    • এই চাকরিতে কাজের তেমন চাপ নেই। তাই বেশি সময় ধরে ছুটি কাটাতে পারবেন।
    • বাণিজ্য বিসিএস ক্যাডারে পদোন্নতি ভালো ও দ্রুত পাওয়া যায়।
    • বিদেশে ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। এমনকি বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে আপনাকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে।

    অসুবিধা:

    অদূর ভবিষ্যতে একীভূত হবার সুযোগ আছে বাণিজ্য ক্যাডারের সাথে প্রশাসন ক্যাডারের।

    বিসিএস আনসার

    বিসিএস আনসার ক্যাডারে চাকরি করতে হলে আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম পড়ে ডিউটি করতে হবে পুলিশের মতো। চাকরির শুরুরদিকে আপনাকে আনসার ও ভিডিপি অধিদপ্তরের অধীনে সহকারী জেলা এডজুটেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। আনসার ক্যাডাররা পুলিশের মতো আইন প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখেন না। তাদের কাজ হচ্ছে কেবল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়ক হিসেবে কাজ করা।

    সুবিধা:

    • চাকরির শুরুতেই পাওয়া যায় গাড়ি, বাড়ি, বডিগার্ড। একজন পুলিশ ক্যাডারের জন্য যেসব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে; একজন বিসিএস আনসার ক্যাডারদের জন্যও সেই সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
    • পদোন্নতির অবস্থাও বেশ ভালো। সবকিছু ঠিক থাকলে মহাপরিচালক পর্যন্ত হতে পারবেন।
    • বিদেশে মিশনে কাজ করার জন্য আপনাকে সুযোগ দেওয়া হবে।

    অসুবিধা:

    • অনেকেই এই ক্যাডারে আসতে চান না একটা কারণে, সেটা হচ্ছে মহাপরিচালক হলেও প্রতিরক্ষা বিভাগের অধীনে কাজ করতে হয়।

    বিসিএস তথ্য

    প্রচারেই প্রসার বলে একটা কথা রয়েছে আমাদের দেশে। একজন বিসিএস তথ্য ক্যাডারের কাজ হচ্ছে সরকারি কাজের তথ্য-উপাত্ত সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। চাকরির শুরুরদিকে সহকারি পরিচালক বা সমমানের পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিসিএস তথ্য ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ হচ্ছে প্রধান তথ্য অফিসার।

    সুবিধা:

    • খুব সহজেই মিডিয়ার সাথে সখ্যতা গড়ে নিজের পরিচিতি বিস্তার করার সুযোগ রয়েছে।
    • এই চাকরিতে কাজের প্রেশার তুলনামূলক কম। এমনকি নেই কোন রাজনৈতিক চাপ।
    • এই চাকরিতে মন না লাগলে পুল সিস্টেমের মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

    অসুবিধা:

    • প্রশাসনিক সম্মান ও ক্ষমতা অনেকটাই কম।
    • কাজের পরিধি খুবই কম।
    • এই কাজগুলো একই ধরনের হওয়ায় কর্মক্ষেত্রে একঘেমেয়িতা চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আপনি যদি মিডিয়ার সাথে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেন তাহলে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এ বিসিএস তথ্য ক্যাডার প্রথমে দেন।

    বিসিএস ডাক

    ডাক বিভাগের সকল ধরনের কাজের দায়িত্ব এই ক্যাডারদের। ডাক বিভাগে নিয়োগ পাবেন সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল হিসেবে। বিসিএস ডাক ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ হচ্ছে মহাপরিচালক। সরকারি চিঠিপত্র আদান-প্রদান থেকে শুরু করে মানি অর্ডার, ব্যক্তিগত চিঠি, ডাক বিভাগের সঞ্চয়ী হিসাব সহ অন্যান্য সকল দাপ্তরিক কাজগুলোর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করেন বিসিএস ডাক ক্যাডারা।

    সুবিধা:

    • এই চাকরিতে কাজের তুলনামূলক কম।
    • পর্যাপ্ত ছুটি নেওয়ার সুযোগ আছে।
    • ২০ বছর চাকরি করার অভিজ্ঞতা থাকলে প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

    অসুবিধা:

    • পদোন্নতি থাকলেও অনেক ধীর।
    • ক্ষমতা, সম্মান কোনটাই নেই বললেই চলে।

    সরকারি চাকরি প্রস্তুতি বেসিক কোর্স

    কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • বিষয়ভিত্তিক স্ট্রং বেসিক তৈরির উপায়
  • সরকারি চাকরি প্রস্তুতির জন্য প্রতিটি বিষয়ের বেসিক টপিক
  • পরীক্ষা দিয়ে নিজের প্রস্তুতি যাচাই এর মাধ্যমে দুর্বল টপিক চিহ্নিত করা
  •  

    বিসিএস সমবায়

    সমবায় বিসিএস ক্যাডারদের কাজ হচ্ছে বিভিন্ন সমবায় সমিতির লাইসেন্স প্রদান থেকে শুরু করে বার্ষিক অডিট পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। চাকরির শুরুতে নিয়োগ দেওয়া হবে সহকারী নিবন্ধক হিসেবে। পরবর্তীতে জেলা বা বিভাগীয় পর্যায়ে পোস্টিং হয়ে থাকে।

    সুবিধা:

    • কাজের চাপ তুলনামূলক কম।
    • কোন রাজনৈতিক চাপ নেই।
    • চাকরির শেষেরদিকে প্রশাসন ক্যাডারে উপসচিব হওয়ার জন্য আবেদন করার সুযোগ রয়েছে।

    অসুবিধা:

    • কোন ধরনের গাড়ি, বাড়ি পাবেন না।
    • প্রভাব প্রতিপত্তি একেবারেই নেই।

    বিসিএস রেলওয়ে পরিবহণ ও বাণিজ্যিক

    বিসিএস রেলওয়ে পরিবহণ ও বাণিজ্যিক ক্যাডারদের কাজ হচ্ছে রেলওয়ে পরিবহণ, উন্নয়ন ও রেলওয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করা। চাকরির শুরুরদিকে সহকারী ট্রাফিক সুপারিন্টেন্ডেন্ট হিসেবে আপনাকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এই ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ হচ্ছে মহাপরিচালক।

    সুবিধা:

    • প্রয়োজনীয় সব ছুটির ব্যবস্থা রয়েছে।
    • আপনি চাইলে ১৮/২০ বছর পরে প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার আবেদন করতে পারবেন।

    অসুবিধা:

    • পদোন্নতি থাকলেও অনেক ধীরগতির। পদোন্নতির মাধ্যমে মহাপরিচালক পদে যাবার সম্ভাবনা অনেক কম, কারণ কারিগরি ক্যাডার থেকে মহাপরিচালক পদে নিয়োগ হয়ে থাকে।
    • ক্ষমতা, সম্মানের ক্ষেত্রে এই ক্যাডার অনেক পিছনে। এজন্য প্রায় সবাই এই ক্যাডার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এর নিচের দিকে রাখেন।

    বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা

    পরিবার পরিকল্পনার জন্য সরকারি সব ধরনের প্রোগ্রাম বা আয়োজন সম্পূর্ণ হয় বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারদের মাধ্যমে। এই ক্যাডারে পোস্টিং হয়ে থাকে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর বা বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে। আপনি এই ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়ার পর জনগনের সাঙ্গে মাঠ পর্যায়ে মিলেমিশে পরিবার পরিকল্পনার কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে পারবেন।

    সুবিধা:

    • এই ক্যাডারে কাজের তেমন একটা চাপ নেই।
    • প্রকল্পগুলো নিজেই বাস্তবায়ন করার সুযোগ রয়েছে।
    • চাকরি পছন্দ না লাগলে পরবর্তীতে আপনি প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

    অসুবিধা:

    • আপনার পোস্টিং উপজেলা পর্যায়ে হোক বা জেলা পর্যায়ে, প্রশাসন ক্যাডারের অধীনেই আপনাকে কাজ করতে হবে, কিংবা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অধীনে আপনাকে কাজ করতে হয়।

    উপরে উল্লেখিত ক্যাডারগুলোই  প্রার্থীরা বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট -এ রাখেন।  তবে প্রত্যেকটি প্রার্থীর ইচ্ছার উপর বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট ভিন্ন হয়ে থাকে। সবাই যদি পররাষ্ট্র ক্যাডার প্রথম চয়েসে দিকে থাকে; তাহলে আপনাকেও তাই দিতে হবে বিষয়টি মোটেও এমন নয়। যেই কাজগুলো করতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এমন কোন ক্যাডার আপনার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এর উপরে রাখুন। তাহলে কাজের মধ্যে কখনো অনিহা বা অলসতা আসবে না বরং স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারবেন।

    বাকি অন্য সব বিসিএস ক্যাডারগুলো হচ্ছে কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডার। কারিগরি ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ সবার থাকে না। প্রকৌশলী ক্যাডারে যাওয়ার জন্য আপনার প্রকৌশলী বা ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে।

    বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য সেরা প্রস্তুনি নিতে এনরোল করতে পারেন 10 Minute School – এর “বিসিএস প্রিলি লাইভ কোর্স” – এ। এছাড়াও বিগত বছরগুলোর “বিসিএস প্রশ্ন সমাধান” করে নিজের প্রস্তুতিকে বহুগুণে বাড়িয়ে নিতে এখানে ক্লিক করুন

    ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩

    দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই দেশসেরা শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হও ইন্টারেক্টিভ লাইভ ক্লাসে, নাও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির সম্পূর্ণ সিলেবাসের 💯তে💯 প্রস্তুতি!

    আপনার কমেন্ট লিখুন