“রেললাইনের ঐ বস্তিতে
জন্মেছিল একটি ছেলে
মা তার কাঁদে
ছেলেটি মরে গেছে।
হায়রে হায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ”
কষ্ট ও হাহাকার মাখানো এই গানের পেছনে যে বলিষ্ঠ মনোবল আর দৃঢ়চেতা ব্যক্তিত্বের মানুষ রয়েছেন, তিনি হলেন আমাদের ‘গুরু’ আজম খান। ১৯৭৪-১৯৭৫ সাল, তখন যুদ্ধ পরবর্তী হাহাকার চলছিল চারদিকে। না পাওয়ার বেদনা স্বাধীনতার উল্লাসকে আড়াল করে ফেলেছে। এই সময় আজম খান গাইলেন এই হতাশার গান। হৈ চৈ পড়ে গেল চারদিক। এ যেন এক নতুন জাগরণ। হাজার মানুষের মনের কথা যেন ফুটে উঠছে তার কণ্ঠে। শুরু হলো বাংলায় পপ গানের বিস্তার।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
ঘরে বসে Freelancing
জন্ম ও বেড়ে ওঠা:
২৮ ফেব্রুয়ারী, ১৯৫০ সালে ঢাকার আজিমপুরের ১০ নম্বর কলোনীতে জন্ম মাহবুবুল হক ‘আজম’ খানের। তাঁর বাবার নাম আফতাবউদ্দিন আহমেদ, মা জোবেদা খাতুন। বাবা ১৯৫৬ সালে কমলাপুরে বাড়ি নির্মাণ করলে আজিমপুর থেকে নিজ বাড়িতে চলে আসেন তারা। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা বাবা, মা এবং চার ভাই ও এক বোনের সাথে। বাবা মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন খান ছিলেন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার, সেক্রেটারিয়েট হোম ডিপার্টমেন্ট, মা জোবেদা খাতুন।
তাঁর বাবা আফতাবউদ্দিন আহমেদ ১৯৫৬ সালে কমলাপুরে বাড়ি নির্মাণ করলে আজিমপুর থেকে নিজ বাড়িতে চলে আসেন তাঁরা।
শিক্ষাজীবন:
আজম খান পড়াশোনা শুরু করেন ১৯৫৫ সালে আজিমপুরের ঢাকেশ্বরী স্কুলে। এরপর কমলাপুরের প্রভেনশিয়াল স্কুলে প্রাইমারিতে ভর্তি হন তিনি। সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুলে বাণিজ্য বিভাগে থেকে ১৯৬৮ সালে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭০ সালে টিঅ্যান্ডটি কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে এইচএসসিতে দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। কিছুদিন পর মুক্তিযুদ্ধের জাগরণ শুরু হওয়ায় আর পড়ালেখায় অগ্রসর হতে পারেননি।
সময় যখন যুদ্ধে যাওয়ার:
ফেব্রুয়ারী, ১৯৫০ সালে ঢাকার আজিমপুরের ১০ নম্বর কলোনীতে জন্ম মাহবুবুল হক ‘আজম’ খানের। তাঁর বাবার নাম আফতাবউদ্দিন আহমেদ, মা জোবেদা খাতুন। বাবা ১৯৫৬ সালে কমলাপুরে বাড়ি নির্মাণ করলে আজিমপুর থেকে নিজ বাড়িতে চলে আসেন তারা। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা বাবা, মা এবং চার ভাই ও এক বোনের সাথে। বাবা মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন খান ছিলেন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার, সেক্রেটারিয়েট হোম ডিপার্টমেন্ট, মা জোবেদা খাতুন।
তাঁর বাবা আফতাবউদ্দিন আহমেদ ১৯৫৬ সালে কমলাপুরে বাড়ি নির্মাণ করলে আজিমপুর থেকে নিজ বাড়িতে চলে আসেন তাঁরা।
আরো পড়ুন: সফলদের স্বপ্নগাঁথা: জেফ বেজোস যেভাবে পৃথিবীর শীর্ষ ধনী হলেন
শিক্ষাজীবন:
আজম খান পড়াশোনা শুরু করেন ১৯৫৫ সালে আজিমপুরের ঢাকেশ্বরী স্কুলে। এরপর কমলাপুরের প্রভেনশিয়াল স্কুলে প্রাইমারিতে ভর্তি হন তিনি। সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুলে বাণিজ্য বিভাগে থেকে ১৯৬৮ সালে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭০ সালে টিঅ্যান্ডটি কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে এইচএসসিতে দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। কিছুদিন পর মুক্তিযুদ্ধের জাগরণ শুরু হওয়ায় আর পড়ালেখায় অগ্রসর হতে পারেননি।
সময় যখন যুদ্ধে যাওয়ার:
সময়টা তখন ১৯৬৮ সাল। আজম খানের বয়স তখন প্রায় ১৮ বছর। রক্ত টগবগ করা, খুবই সাদামাটা গোছের দেখতে, লিকলিকে তবে দীর্ঘদেহী কিশোর ছিলেন আজম খান। সেই সাথে ছিল তাঁর সেই লম্বা চুলের গোছা! তাঁর চোখ থেকে তখনো কৈশরের সারল্যমাখা চাহনি মুছে যায়নি। তবে তাঁর ভেতর ব্যক্তিত্ব ছিল প্রচুর!
ধীরে ধীরে দেশে শুরু হয় তুমুল সংগ্রাম। তিনিও শামিল হন সেই সংগ্রামে। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করেন তিনি। সেই সময় তিনি ‘ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী’র সক্রিয় সদস্য হিসেবে গণসঙ্গীত প্রচার শুরু করেন। এসব কারণে তিনি আর তাঁর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি।
মাত্র ২১ বছর বয়সেই যুদ্ধ অংশ নেওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়তে চান তিনি। মাকে এই নিয়ে বলার পর তাঁর মা বলেন বাবার সাথে কথা বলতে। বাবাকে তিনি প্রচুর ভয় পেতেন। তবুও দুরুদুরু বুকে বাবার কাছে কথাটা বলতেই বাবা তাঁকে সাহস ও অনুপ্রেরণা দিলেন যুদ্ধে যাওয়ার জন্য। সাথে এও বলে দিলেন, দেশকে স্বাধীন না করে আসার আগ পর্যন্ত তিনি যেন ঘরে না ঢুকেন।
‘অপারেশন তিতাস’:
২১ বছরের টকবটে তরুণ আজম খান পায়ে হেঁটে আগরতলায় যান। আগরতলার পথে তার সঙ্গী হন তার দুই বন্ধু। এসময় তার লক্ষ্য ছিল সেক্টর ২ এ খালেদ মোশাররফের অধীনে যুদ্ধে যোগদান করা।
সেখান থেকে তিনি যান ভারতের মেলাঘরের শিবিরে। সেখান থেকে তিনি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেন। যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষে কুমিল্লার সালদায় পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন আজম খান। কুমিল্লার সালদায় ছিল তার প্রথম যুদ্ধ। যুদ্ধ সফল ভাবে সম্পন্ন হলে তিনি ফিরে যান আগরতলায়।
প্রথম সম্মুখযুদ্ধে তাঁর বীরত্বের কারণে আগরতলা থেকে ঢাকার গেরিলাযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁকে পাঠানো হয়। তিনি ২ নম্বর সেক্টরের একটা সেকশনের ইন-চার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখানকার সেক্টর কমান্ডার হিসেবে ছিলেন কর্ণেল খালেদ মোশাররফ। আজম খান ঢাকা ও এর আশেপাশে বেশ কয়েকটি গেরিলা আক্রমণে অংশ নেন।
আজম খান মূলত যাত্রাবাড়ি- গুলশান এলাকার গেরিলা অপারেশনগুলো পরিচালনার দায়িত্ব পান। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল তার নেতৃত্বে সংঘটিত ঢাকার ‘অপারেশান তিতাস’। সেখানে কিছু গ্যাস পাইপলাইন ধ্বংস করার মাধ্যমে বিশেষ করে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (বর্তমান রূপসী বাংলা হোটেল), হোটেল পূর্বাণী ইত্যাদির গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটানো। তাদের লক্ষ্য ছিল, হোটেলে অবস্থানরত বিদেশীরা যাতে বুঝতে পারে, যে দেশে যুদ্ধ চলছে। এই অপারেশনে তিনি বাম কানে আঘাত পান। পরবর্তীতে এই আঘাত তার শ্রবণক্ষমতায় বিঘ্ন ঘটায়।
আজম খান তার সঙ্গীদের নিয়ে পুরোপুরি ঢাকায় প্রবেশ করেন ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। এর আগে তারা মাদারটেকের কাছে ত্রিমোহনীতে সংগঠিত যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের পরাজিত করেন।
যুদ্ধ ও গান:
আজম খানের গান প্রশিক্ষণ শিবিরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা জোগাতো। যুদ্ধক্ষেত্রেও কখনো তাঁর গানটাকে ও গানের প্রতি তাঁর ভালোবাসাকে ভোলেননি তিনি। সাময়িক যুদ্ধ বিরতিতেও সহযোদ্ধাদের কাছে তাঁর গানই ছিল একমাত্র বিনোদন। এই বিষয়টা চোখে এড়ায়নি শহীদ জননী জাহানারা ইমামেরও।
আজম খানের স্মৃতিকথা উল্লেখ করতে গিয়ে ‘একাত্তরের দিনগুলি’ গ্রন্থে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম লিখেন,
“২০শে আগস্ট, ১৯৭১ একটা তাঁবুতে আলো জ্বলছে, আর সেখান থেকে ভেসে আসছে গানের সুর: হিমালয় থেকে সুন্দরবন হঠাৎ বাংলাদেশ- বুঝলাম আজম খান গাইছে। আজম খানের সুন্দর গলা। আবার অন্যদিকে ভীষণ সাহসী গেরিলা, দুর্ধর্ষ যোদ্ধা।”
গানই যাঁর জীবন:
“হে আল্লাহ, হে আল্লাহ রে
এতো সুন্দর দুনিয়ায়
কিছুই রবে না গো
হে আল্লাহ, হে আল্লাহ রে।”
আজম খানের কর্মজীবনের শুরু প্রকৃতপক্ষে ৬০ দশকের শুরুতে। বহুল প্রতীক্ষিত স্বাধীনতা পাওয়ার পরেও সংগ্রামের শেষ হয়নি। সেটি ছিল অর্থনৈতিক মুক্তি ও শিল্প সংস্কৃতির শক্তিশালী অবস্থান অর্জনের সংগ্রাম। দিশাহীন পথের গন্তব্য খোঁজার চেষ্টায় পাশে পেলেন তাঁর ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’ এবং আখন্দ (লাকী আখন্দ এবং হ্যাপী আখন্দ) ভ্রাতৃদ্বয় দেশব্যাপী সঙ্গীতের জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। বন্ধু নিলু আর মনসুরকে গিটারে, সাদেক ড্রামে আর নিজেকে প্রধান ভোকাল করে করলেন অনুষ্ঠান।
ব্যান্ড স্পন্দনের পর এটি ছিল বাংলা নামে স্বাধীন দেশের দ্বিতীয় ব্যান্ড।
তারপর ১৯৭২ সালের কোনো একদিন বিটিভিতে প্রচার হলো সেই অনুষ্ঠান। ‘এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ আর ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি সরাসরি প্রচার হলো বিটিভিতে। ব্যাপক প্রশংসা ও তুমুল জনপ্রিয়তা তাঁকে এনে দিলো এই দুটো গান।
১৯৭৪-১৯৭৫ সালের দিকে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘বাংলাদেশ’ (রেললাইনের ঐ বস্তিতে) শিরোনামের গান গেয়ে হৈ-চৈ ফেলে দেন। তাঁর পাড়ার বন্ধু ছিলেন ফিরোজ সাঁই। পরবর্তীকালে তার মাধ্যমে পরিচিত হন ফকির আলমগীর, ফেরদৌস ওয়াহিদ, পিলু মমতাজের সঙ্গে। এক সাথে বেশ কয়েকটা জনপ্রিয় গান করেন তারা। এরই মধ্যে আরেক বন্ধু ইশতিয়াকের পরামর্শে সৃষ্টি করেন একটি এসিড রক ঘরানার গান ‘জীবনে কিছু পাবোনা এ হে হে!’ আজম খানের দাবী, এটি বাংলা গানের ইতিহাসে প্রথম হার্ডরক ঘরানার গান।
আজম খানের গাওয়া অসংখ্য গান আজও বাঙালির হৃদয়ে ঢেউ তুলে। এখনো বাংলাদেশের বাইরেও রকস্টার হিসেবে তাঁর নাম উচ্চারিত হয়। তাঁর গাওয়া বেশ কিছু গান সত্তর এবং আশির দশকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ‘ওরে সালেকা- ওরে মালেকা’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘অনামিকা’, ‘অভিমানি’, ‘আসি আসি বলে’, ‘অ্যাকসিডেন্ট’, হাইকোর্টের মাজারে’, ‘পাপড়ি’, ‘বাঁধা দিও না’, ‘যে মেয়ে চোখে দেখে ইত্যাদি গানগুলো এখনো মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত।
আজম খানের আরেকটি বিখ্যাত গান হলো, ‘চার কালেমা সাক্ষী দেব’। মরমী ধারার এই গান মানুষের অন্তরে নতুন এক আবেগের সঞ্চার ঘটায়, যা আজম খানকে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে দেয়।
তাঁরই হাত ধরে ফিরোজ সাঁই, ফকির আলমগীর, ফেরদৌস ওয়াহিদ, পিলু মমতাজের গানের জগতে আসা। ধীরে ধীরে শ্রোতাদের হৃদয় জয় করে পপ সম্রাট হয়ে উঠলেন সঙ্গীতের মহাগুরু আজম খান।
‘আমি বাংলাদেশের আজম খান, বাংলাতে গাই পপ গান…’ এই গানটির মধ্য দিয়ে আজম খানের জীবনের কিছু অংশ চমৎকারভাবে উঠে এসেছে। মৃত্যুর কিছুদিন আগে তিনি নিজেই গানটি লিখেছিলেন।
দেশজ লোকসঙ্গীত, পল্লীগীতি, আধুনিক অথবা সমাজ সচেতন গানের সঙ্গে পপ শৈলীর মিশ্রণ দিয়ে গানের এক বিরাট সম্ভার রেখে গিয়েছেন তিনি। এটি যেন একমাত্র তিনিই পারেন! আজম খান ছিলেন একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। তাঁর পপ গানের আঙ্গিকে সঙ্গীতগুলো বাংলাদেশের যুব সমাজের কাছ থেকে পেয়েছে বিপুল সমাদর।
‘হারিয়ে গেছে খুঁজে পাব না, এত দিনের আশা হল নিরাশা’- গুরু আজম খানের একটি জনপ্রিয় গান। তিনি চেয়েছিলেন দেশের মানুষ সঠিক পথে চলবে, স্বাধীন দেশে স্বাধীন পতাকায় মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবে।
১৯৮২ সালে ‘এক যুগ’ নামের এ্যালবাম দিয়ে অডিও জগতে আত্মপ্রকাশ করেন আজম খান। এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে মোট ১৭টি একক এ্যালবাম করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য এলবামগুলোর মধ্যে আছে ‘দিদি মা’, ‘বাংলাদেশ’, ‘কেউ নাই আমার’, ‘অনামিকা’ ইত্যাদি সহ ১৭টিরও বেশি হিট গানের অ্যালবাম বেরিয়েছে। এগুলো বিক্রিও হয়েছে বেশ।
কিন্তু কপিরাইটের কারচুপির কারণে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা তাঁর কোনোদিন ছিল না। একটা সময় গান থেকেও তিনি বেশ দূরে সরে যান। সকলের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। তিনি গান নিয়ে কখনো ব্যবসা করতে চাননি, নিজেকে কারো কাছে বিক্রিও করতে চাননি তিনি।
আরো পড়ুন: আমার দেখা সাহিত্যের পঞ্চপাণ্ডব
বিবাহ ও একাকিত্ব:
বিয়ে করেন ১৯৮১ সালে ঢাকার মাদারটেকের সাহেদা বেগমকে। তাদের ঘরে আসে এক ছেলে এবং দুই মেয়ে। সহধর্মিণী মারা যাবার পর থেকে অনেকটা নিভৃতে অনাড়ম্বর একাকি জীবন যাপন করে গেছেন আজম খান।
নাটক, বিজ্ঞাপন ও ক্রিকেট:
গানের বাইরে পপ গুরু আজম খানকে কখনো কখনো দেখা গেছে অন্য ভূমিকায়।
বিটিভির একাধিক নাটকে বাউল চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন।
১৯৮৬ সালে ‘কালা বাউল’ শিরোনামের একটি নাটকে কালা বাউলের চরিত্রে এবং শাহীন-সুমন পরিচালিত ‘গডফাদার’ নামের একটি ছবিতে নাম ভূমিকায় খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজম খান। পরবর্তীতে আরো ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও তা গ্রহণ করেন নি। ২০০৩ সালে ক্রাউন এনার্জি ড্রিংকসের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রথম বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হন। এরপর ২০০৫ ও ২০০৮ সালে বাংলালিংক এবং ২০১০ সালে কোবরা ড্রিংকসের বিজ্ঞাপনের মডেল হন।
ক্রিকেটার হিসেবে আজম খান তৈরি করে গেছেন এক অনন্য রেকর্ড। তিনি দেশের বয়স্ক ক্রিকেটার হিসেবে ৪১ বছর বয়স থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত একটানা ১০ বছর ক্রিকেট খেলেছেন। ১৯৯১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলেছেন গোপীবাগ ফ্রেন্ডস ক্লাবের হয়ে। ক্রিকেটে আজম খান ছিলেন একজন অলরাউন্ডার।
পুরস্কার ও সম্মাননা:তাঁর বর্ণাঢ্য সঙ্গীত জীবনে অনেকবার পুরস্কৃত হয়েছেন, যার মধ্যে হলিউড থেকে ডিসকো রেকর্ডিংয়ের সৌজন্যে ১৯৯৩ সালে ‘বেস্ট পপ সিঙ্গার অ্যাওয়ার্ড’, ‘টেলিভিশন দর্শক পুরস্কার ২০০২’, ‘কোকাকোলা গোল্ড বটল’ সহ ‘লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’, ‘একুশে পদক’ অন্যতম।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
মৃত্যু:
২০১০ সালে মুখগহ্বরের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন আজম খান। এজন্য দুবার তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিয়েও চিকিৎসা করানো হয়। অসাধারণ প্রতিভা ও দৃপ্ত কণ্ঠের এক সংগীত জাদুকরের জীবন থেমে যায় ৬১ বছর বয়সে। দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধির সঙ্গে লড়াই করে ২০১১ সালের ৫ জুন রোববার সকাল ১০টা বেজে ২০ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গানের জগতকে শূন্য করে এবং অসংখ্য ভক্তকূলের চোখের পানি দিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই পপ তারকা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা।
Communication Masterclass by Tahsan Khan
আজম খান হলেন আমাদের অন্যতম ক্ষণজন্মা এক বীর। একরকম অভিমান করেই আমাদের কাছ থেকে তিনি চলে গেলেন দূরে, বহু দূরে। মহাগুরুর স্মরণে তাঁর গাওয়া একটি গান বারবার মনে বাজে অসংখ্য ভক্তের,
“হারিয়ে গেছে খুঁজে পাবো না।
এতো দিনের আশা হল নিরাশা।
যদি জানিতাম তবে আর মিছে মরিতাম না।।
ভালোবাসা, শুধু মিছে আশা।
এ জীবনে তারে আর ফিরে পাব না।।”
Source:
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
- Microsoft Word Course by Sadman Sadik
- Microsoft Excel Premium Course
- Microsoft PowerPoint Course by Sadman Sadik
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন