Not Found

The requested URL was not found on this server.


Apache/2.4.52 (Ubuntu) Server at streamcore.pro Port 80
তারেক মাসুদ: সিনেমার ফেরিওয়ালা

তারেক মাসুদ: সিনেমার ফেরিওয়ালা

December 6, 2018 ...

পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবার শুনে নাও।

বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ বা ঐতিহাসিক দিনকে স্মরণ করার জন্য গুগল তাদের হোমপেজে লোগো পরিবর্তন করে সেই বিশেষ দিনের সঙ্গে মানানসই বিশেষ একটি লোগো তৈরি করে থাকে৷ একে গুগল ডুডল বলা হয়।

ডিসেম্বর ৬। গুগলটা ওপেন করেই একটা পাখির ছবি দেখা যাচ্ছে গুগল ডুডলে। একটা ছোট্ট হাত নীল-হলুদ রঙের একটা মাটির পাখি ধরে আছে৷ এর মধ্যে গুগল লেখাটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কী সুন্দর! পরিচিত লাগছে? “মাটির ময়না” সিনেমাটার কথা মনে আছে? সিনেমাটা না দেখলেও নামটা সবার খুব পরিচিত। এবার সেই মাটির ময়নাতে ক্লিক করলে আমরা দেখতে পাই “মাটির ময়না”-র স্রষ্টাকে। তারেক মাসুদ, বাংলাদেশের একজন প্রয়াত চলচ্চিত্রনির্মাতা।

প্রথম কোনো বাংলাদেশি সিনেমা হিসেবে অস্কারে নমিনেশনের জন্য জমা পড়েছিলো তাঁর মাটির ময়না চলচ্চিত্রটি। দেশে স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাণের চালিকাশক্তি মনে করা হয় তাঁকে। স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদকে নিয়ে তিনি বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে ঘুরেছেন। তিনি পরিচিত ছিলেন ‘সিনেমার ফেরিওয়ালা’ নামে।

১৯৫৬ সালে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ৬ ডিসেম্বর তার ৬২তম জন্মদিন। বেঁচে থাকলে যার বয়স হতো ৬২। আমরা কি আরো কিছু অসাধারণ চলচ্চিত্র পেতাম না? হয়তো পেতাম। ২০১১ সালে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ দেয়ার আগে ৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি আমাদের যা দিয়ে গেছেন সেসবই বা কম কিসে!

শৈশব

১৯৫৭ সালে বেশ রক্ষণশীল পরিবারে জন্মেছিলেন তিনি। প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন মাদ্রাসায়। মাদ্রাসায় গতানুগতিক শাসন তার একদম ভালো লাগতো না। বহুবার মাদ্রাসা পরিবর্তন করিয়েছিলেন তার বাবা। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় মাদ্রাসা শিক্ষার সমাপ্তি ঘটে৷ নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে পড়ালেখা করেন। সারাজীবন মাদ্রাসার এই কড়া শাসনে থাকা ছেলেটি সিনেমা চিনতো না। আর তিনিই কিনা কান চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়ে বিশ্বব্যাপী পেয়েছেন খ্যাতি। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে অস্কার চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছে তার বানানো চলচ্চিত্র।

পথের পাঁচালী থেকে যখন শুরু

তিনি তার একটি লেখায় বলেছেন, “আমি ভালো – মন্দ কোন সিনেমা দেখিনি। পথের পাঁচালী আমাকে দুইটি কারণে বিস্মিত করেছে৷ একটি ছবি কী করে আমার জীবনের এত কাছাকাছি হতে পারে!” অপুর সাথে নিজের আশ্চর্য মিল খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি। অপুর মতই ভীষণ লাজুক আর ভীরু ছিলেন৷ পরিবারের সাথেই আশ্চর্য মিল পেয়েছিলেন। ১৬ মিলিমিটার প্রজেক্টরে তার প্রথম দেখা চলচ্চিত্র ছিল “পথের পাঁচালী”।


blog may 3 2019 01

আরো পড়ুন: বাংলা সিনেমা ও ইতিহাস: সেকাল থেকে একাল! (পর্ব ১)


এক সিনেমায় সাত বছর

শিল্পী এস এম সুলতানের জীবন নিয়ে বানানো একটি প্রামাণ্যচিত্র হলো ” আদম সুরত”। এস এম সুলতান ছিলেন বাংলাদেশের এক বিখ্যাত চিত্রশিল্পী। তিনি শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বে পরিচিত ছিলেন। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়য়ের বায়োগ্রাফিকাল সেন্টার সুলতানকে ‘ম্যান অব এচিভমেন্ট’ সম্মাননায় ভূষিত করে। তাঁর আঁকা ছবি স্থান পেয়েছে পিকাসো, সালভাদর দালির মতো শিল্পীদের সাথে একই প্রদর্শনীতে। তার জীবন নিয়ে সিনেমা বানানোর চিন্তা মাথায় আসে তারেক মাসুদের৷

চলচ্চিত্র নিয়ে পড়ার স্বপ্ন ছিল মাসুদের। পারিবারিকভাবে টাকা জোগাড় করেন তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিল্ম নিয়ে পড়ার জন্য। কিন্তু একদিন তিনি শুনলেন যে শিল্পী অসুস্থ। তিনি যদি পড়তে যান হয়তো এসে শুনবেন তিনি আর নেই। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন ওই টাকা দিয়েই প্রামাণ্যচিত্র বানাবেন। বন্ধু মিশুক মুনীরকে নিয়ে তিনি শুরু করলেন কাজ। সেসময় মিশুক মুনীর ও তারেক মাসুদ দুজনই ছিলেন অদক্ষ৷  তারেক মিশুককে ক্যামেরার কাজ করতে বললে মিশুক বললেন, “আমি তো ক্যামেরা চালাতে জানি না”। উত্তরে তারেক বললেন, “আমিও ছবি পরিচালনা করতে জানি না। আমরা বাসে যেতে যেতে শিখবো।”

এরপর সাত বছর ধরে তারা নির্মাণ করেন “আদম সুরত”। আমরা পরিচিত হই শিল্পীর সাথে৷ তিনি বলেন, “অনেক বড় একজন শিল্পী থাকেন, কিন্তু তাঁর মধ্যে একজন বড় দার্শনিক শিল্পী থাকেন না।” এস এম সুলতানকে নিয়ে এজন্যই কিছু বানাতে চেয়েছিলেন তিনি।  আদম সুরত একটি চমৎকার প্রামাণ্যচিত্র।

মুক্তির গান ও একজন লিয়ার লিভিন

“মানুষ লাইন ধরে একটি ছবি দেখার জন্য অপেক্ষা করছে৷ এমন দৃশ্য বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কল্পনাতীত। তবে এমন ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯৫ সালে। আমাদের নির্মিত ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক ছবি ‘মুক্তির গান’ দেখার জন্য।” – “মুক্তির গান” নিয়ে এরকমই লিখেছেন তারেক মাসুদ। “মুক্তির গান” তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বাংলা প্রামাণ্য চিত্র। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে। ছবিটি দক্ষিণ এশিয়া চলচ্চিত্র পুরস্কারে বিশেষ উল্লেখ পুরস্কার এবং ২০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে পুরস্কার লাভ করে।


Bangla sinema ekal sekal

আরো পড়ুন: বাংলা সিনেমা ও ইতিহাস: সেকাল থেকে একাল! (পর্ব ২)


মুক্তির গানের সাথে যে মানুষটির নাম খুব নিবিড়ভাবে জড়িত তিনি হলেন লিয়ার লিভিন। ১৯৭১ সালে শরণার্থী শিবিরে এসে মার্কিন চিত্রগ্রাহক ও চলচ্চিত্রনির্মাতা লিয়ার লিভিন ৬ সপ্তাহে যে শুটিং করেছিলেন তা থেকে নির্মিত হয় মুক্তির গান। ২৫ বছর পর তারেক মাসুদ নতুন প্রজন্মকে শুনিয়েছিলেন মুক্তির গান। লিয়ার লিভিন সম্পর্কে তিনি বলেছেন, “মুক্তির গান নির্মাণের জন্য আমি আর ক্যাথরিন (স্ত্রী) তাঁর বাসায় গিয়ে দেখেছিলাম, কী মমতায় তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ফুটেজগুলো সংরক্ষণ করে রেখেছেন। ২৫ বছর পর মুক্তির গান এর মাধ্যমে হয়তো লিয়ারের অসম্পূর্ণতাকে আমরা পূরণ করেছি।”

ঘরে বসে Spoken English

কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • জব ইন্টারভিউ, ভাইভা, প্রেজেন্টেশন, দেশি-বিদেশি ক্লায়েন্ট মিটিং, কলিগদের সাথে আলাপচারিতা, পাবলিক স্পিকিং, অপরিচিত কারো সাথে কথা শুরু করা, ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইংরেজিতে কথা বলা
  •  

    আমেরিকান নাগরিক হওয়ায় লিয়ারকে মুখোমুখি হতে হয় সীমাহীন প্রতিকূলতার। এর মধ্যেই তিনি কাজ করেন। একাত্তরে রণাঙ্গনে যখন তুমুল যুদ্ধ চলছে, তখন ভিন্ন রকম আরেক যুদ্ধে নেমেছিলেন একদল তরুণ সংস্কৃতিকর্মী। তাঁদের সাথে ছিলেন লিয়ার লিভিন। অক্টোবর মাসে তিনি কলকাতায় মাত্র ৬ মাস তাঁর ক্যামেরায় ধারণ করেছিলেন কিছু মুহূর্ত। সেই গানের দলে তাঁদের একমাত্র অস্ত্র ছিল গান। একটি ট্রাকে করে শরণার্থীশিবির থেকে শরণার্থীশিবিরে ছুটে বেরিয়ে তাঁরা শুধু গান গেয়ে লড়াই-সংগ্রামে অনুপ্রাণিত করেছেন মানুষকে। তাদের নিয়েই “মুক্তির গান”।

    ১৯৯০ সালে তারেকের ফোন পেয়ে লিয়ার চমকে উঠেছিলেন। বলেছিলেন, এত বছর ধরে হয়তো তিনি এই ফোনটির জন্যই অপেক্ষা করছেন। তারেক ও ক্যাথরিন মাসুদ ঠিক করেন, লিয়ার লেভিন যেখানে থেমে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে আবার শুরু করবেন তাঁরা। স্বাচ্ছন্দ্যে ফুটেজগুলো ব্যবহার করতে অনুমতি দেন লেভিন। নির্মাতারা ঠিক করেন, প্রায় ১৮ ঘণ্টার এই ফুটেজের সঙ্গে তাঁরা যোগ করবেন মুক্তিযুদ্ধের আরও ঐতিহাসিক ফুটেজ। এমন একটি চলচ্চিত্র তাঁরা নির্মাণ করতে চাইলেন, যেটি দেখে তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী হবে। ছবিটি এমনভাবে সম্পাদিত হবে, যেন এটিকে তথ্যচিত্র মনে না হয়। অসম্পূর্ণ গানগুলোকে নতুন করে আবার রেকর্ড করালেন তিনি।

    এই ১০-১২ জন শিল্পীর সাথে যোগাযোগ করেন তারেক মাসুদ। গানগুলো ছিল- পাক পশুদের মারতে হবে’, ‘এই না বাংলাদেশের গান’, ‘কিষান মজুর বাংলার সাথি রে’, ‘জনতার সংগ্রাম চলবেই’, ‘বলো রে বাঙালির জয়’, ‘যশোর খুলনা বগুড়া পাবনা’, ‘বাংলা মা-র দুর্নিবার আমরা তরুণ দল’। এ ছাড়া ছিল রবীন্দ্রনাথের ‘দেশে দেশে ভ্রমি’, ‘আমার সোনার বাংলা’, ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে’, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ গানগুলো। ছিল নজরুলের গানের সুর ‘এ কী অপরূপ রূপে মা তোমায়’। তারেক মাসুদ লিখেছেন – ” আমরা ছবিটি গ্রাম বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে দেখিয়েছি। আজও ডিসেম্বর ও মার্চ মাস এলেই তা দেখানো হয়। প্রতিটি প্রজন্ম আসছে, তারা ‘মুক্তির গান’ দেখে মুক্তিযুদ্ধকে চিনছে। এজন্য আমাদের একটা তৃপ্তিবোধ রয়েছে।”

    মুক্তির গানের পর মুক্তির কথা

    মুক্তির কথা তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ পরিচালিত ১৯৯৯ সালের বাংলাদেশী নাট্য চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটিতে ১৯৭১ সালে বাংলদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন মানুষের সংগ্রামের কাহিনী বিবৃত হয়েছে। ছবিটিতে সাধারণ জনগণ কিভাবে গণহত্যা, ধর্ষণ ও বর্বরতার শিকার হয়েছে তার উল্লেখ রয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো মানুষ তেমনি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করছে। এই চলচ্চিত্রের কিছু ফুটেজ মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা লিয়ার লেভিন-এর থেকে নেয়া হয়েছে। তারেক মাসুদ বলেছেন, “মুক্তির গান ছবিতে যা নেই, আমরা ‘মুক্তির কথা’ দিয়ে তার পূর্ণতা দেওয়ার চেষ্টা করছি।”

    চার বছর ধরে (১৯৯৬-১৯৯৯) একদল তরুণ প্রজেকশনিস্ট বাংলাদেশের গ্রামে গ্রামে ঘুরে ‘মুক্তির গান’ ও অন্যান্য মুক্তিযুদ্ধের ছবির উন্মুক্ত প্রদর্শনী করেছিল। ছবি দেখাতে গিয়ে প্রদর্শক দল যুদ্ধের বৃহত্তর ইতিহাসের মুখোমুখি হয়। গ্রামের মানুষ গানে এবং কথায় বলতে শুরু করে একাত্তরে তাদের নির্যাতিত হবার কথা ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের কথা। ব্রাত্যজনের এই কথ্য ইতিহাস নিয়েই নির্মিত এই প্রামাণ্যচিত্র।

    মাটির ময়নার বিশ্বখ্যাতি

    মাটির ময়না তাঁর প্রথম ফিচার চলচ্চিত্র যার জন্য তিনি ২০০২-এর কান চলচ্চিত্র উৎসবে ডিরেক্টর’ ফোর্টনাইট সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন এবং এটি বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য একাডেমি পুরস্কারে মনোনীত হয়েছিল৷ চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে ষাটের দশকে পূর্ব পাকিস্তানের উদ্বেগের পটভূমিতে তারেক মাসুদের ছেলেবেলার মাদ্রাসা জীবনের অভিজ্ঞতা ফুটে উঠেছে।

    পুরো চলচ্চিত্র জুড়ে ঐতিহাসিক ঘটনার উদ্ধৃতি থাকলেও সেগুলো একটি কিশোরের মানবিক অভিজ্ঞতায় প্রকাশিত হয়েছে। মাদ্রাসায় তার শিক্ষক, সহপাঠীদের আচরণ আর পরিবারের সদস্যদের সাথে তার সম্পর্কের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রটির কাহিনী এগিয়ে গিয়েছে। মাটির ময়না – বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা যা অস্কার পুরষ্কারে (Academy Award) ‘সেরা বিদেশী ভাষার ছবি’ বিভাগে মনোয়ন পায়। নানা চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় মাটির ময়না।

    ‘আদম সুরত’, ‘মুক্তির গান’, ‘মুক্তির কথা’, ‘মাটির ময়না’, ‘অন্তর্যাত্রা’ ও ‘রানওয়ে’–র মতো ছবিগুলো তারেক মাসুদ তৈরি করেন।

    তারেক মাসুদ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে বিরাট অবদান রেখেছিলেন। তাঁকে বলা হয় “সিনেমা ফেরিওয়ালা”।  এই প্রজন্মের সামনে তিনি অনেক বিষয় তুলে ধরেছেন চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। ২০১১ সালে তাঁর নির্মীয়মান চলচ্চিত্র ” কাগজের ফুল” এর শুটিং এর কাজে গিয়ে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি। তারেক মাসুদের পরিচালিত প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সোনার বেড়ি’ (১৯৮৫) এবং সর্বশেষ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘রানওয়ে’ মুক্তি পায় ২০১০ সালে। চলচ্চিত্রে তাঁর অবদানের জন্য ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত করে।

    যদিও তিনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য সিনেমা বানিয়েছেন, তথাপি তাঁর সিনেমা পুরো পৃথিবীর কথাই বলেছে। তাঁর সিনেমার বিষয় ছিল আন্তর্জাতিক। সত্যজিৎ রায়, আকিরা কুরোসাওয়া, সের্গেই আইজেনস্টাইনের মতো চলচ্চিত্রকারদের ডুডলের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হ‌ুমায়ূন আহমেদকেও ডুডলের মাধ্যমে সম্মান জানানো হয়েছিল। শামসুর রাহমান, হুমায়ূন আহমেদসহ অনেককে গুগল ডুডলে বাংলাদেশের অডিয়েন্সে দেখালেও কোনো বাংলাদেশিকে এবারই প্রথম গুগল ডুডলে বিশ্বব্যাপী দেখানো হচ্ছে।

    Communication Masterclass by Tahsan Khan

    বাস্তব জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে রিটেন, ভার্বাল ও নন ভার্বাল কমিউনিকেশন আরো ইফেক্টিভ করার দারুণ সব কৌশল শিখুন তাহসান খানের Communication Masterclass কোর্সে, এগিয়ে থাকুন ব্যক্তিগত ও প্রফেশনাল লাইফে!

     

    প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র হিসেবে অস্কারে স্থান পেয়েছিল তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’। জহির রায়হানের “স্টপ জেনোসাইড” এর পর তারেক মাসুদের “মুক্তির গান”-কে বিবেচনা করা হয় মুক্তিযুদ্ধের সেরা প্রামাণ্যচিত্র হিসেবে। তারেক মাসুদ শিল্পকে ভালোবাসতেন। তিনি প্রতিটি কাজ করতেন যত্নের সাথে৷ তিনি নতুন প্রজন্মকে দিয়েছেন অনেক কিছু। “আদম সুরত” নির্মাণের জন্য ৭ বছর সময় নেন তিনি। শিল্পীর কাছাকাছি থেকে শিল্প সম্পর্কে, জীবন সম্পর্কে নিজের মধ্যে ধারণা বিকশিত করেন তিনি।

    “মুক্তির গান” নির্মাণের জন্য সেই লিয়ার লিভিনকে খুঁজে বের করা, সেই ১০-১২ জন শিল্পীর সাথে কথা বলা, গানগুলোর পুনর্নির্মাণ – তাঁর পরিশ্রম ছিল অতুলনীয়। তারেক মাসুদের কাজে আমরা যত্ন ও ভালোবাসা দেখতে পাই৷ তারেক মাসুদ আমাদের মাঝে মুক্তির গান ছড়িয়ে দিয়ে গেছেন। নতুন প্রজন্ম “মুক্তির গান” দেখে কিছুটা হলেও যুদ্ধকে উপলব্ধি করতে পারবে। অকালে হারানো এই চলচ্চিত্রযোদ্ধার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ এই অসাধারণ চলচ্চিত্রগুলোর জন্য।  

    তথ্যসূত্র– চলচ্চিত্রযাত্রা (তারেক মাসুদ)

    উইকিপিডিয়া


    আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন: 



    ১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com


    ১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com

    ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩

    দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই দেশসেরা শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হও ইন্টারেক্টিভ লাইভ ক্লাসে, নাও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির সম্পূর্ণ সিলেবাসের ?তে? প্রস্তুতি!

    আপনার কমেন্ট লিখুন