পুরোটা পড়ার সময় নেই ? ব্লগটি একবার শুনে নাও !
প্রথমেই ভারতীয় জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক চেতন ভগতের একটি বক্তৃতার কিছু অংশ তুলে ধরছি, “বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আগে আমাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। সবাই সুখী, ধনী আর সফল প্রতিবেশীর সঙ্গেই বন্ধুত্ব করতে চায়, তাই না? যে পরিবারে সব সময় দ্বন্দ্ব আর ঝগড়া লেগেই থাকে, তাদেরকে সবাই এড়িয়ে চলে। জাতির ক্ষেত্রেও ঠিক একই নীতি প্রযোজ্য। আমাদের মধ্যে অসংখ্য সমস্যা আর বিভেদ। তবে আজ আমাদের প্রশ্ন এটা নয় যে, এই সমস্যার দায় কার? আমাদের প্রশ্ন, কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা হবে?
এমন দেশ গড়তে হবে যেখানে সবাই নিজের যোগ্যতা, উদ্যম আর পরিশ্রম দিয়ে উন্নতি করতে পারবে। যেখানে কেউ জিজ্ঞেস করবে না, তুমি কোথা থেকে এসেছ, সবাই জানতে চাইবে, তুমি কোথায় যাচ্ছো।” আমরা সবাই এমন দেশের স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে সবাই। স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করা মানুষগুলোও পূজনীয় হয় সবার কাছেই। তাদেরকেই আমাদের আদর্শ মেনে নেই। তবে সেই মানুষগুলোর ভালো অবস্থানে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে ডেডিকেশন ও প্যাশন নিজের মাঝে ধারণ করা উচিৎ, সেটারই ঘাটতি দেখা যায় বেশীরভাগ ক্ষেত্রে।
আমাদের মাথায় কত সময় কত ভালো ভালো চিন্তার উদ্ভব ঘটে। চিন্তা করে দেখো, সব যদি বাস্তবায়ন করা যেত তাহলে আমাদের জীবনযাত্রা কতটা আধুনিক হয়ে উঠতে পারতো! তোমার চিন্তা-ভাবনাগুলো যখন অন্য কারো সাথে শেয়ার করছো তখন হয়ত সে বলছে, “হুম সেটা খুব ভালো একটি আইডিয়া, তোমার উচিৎ যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে এটাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া।”
সাধারণত কী ঘটে? বেশিরভাগ সময়ই আইডিয়াগুলো বাস্তবে রূপ দেওয়া সম্ভব হয় না। মহৎ চিন্তা-ভাবনাগুলো সুপ্তই থেকে যায়; সেটার আর বিকাশ ঘটে না। কারণটা কী? কেন সম্ভব হচ্ছে না আইডিয়াগুলো বাস্তবে রূপ দেওয়া! মানুষের সেই পরিমাণ সাহস, সময় অথবা অর্থ নেই সেটা বাস্তবায়ন করার মতো। অনেকেই পদক্ষেপ নিয়েও পিছিয়ে যাচ্ছে; তাদের কাছে মনে হচ্ছে তাদের মূল্যবান সময় ও টাকা ধূলিসাৎ করে দিচ্ছে একটি স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য।
বারে বারে লাথি দিলে তালা ঠিকই ভাঙ্গবে, স্বপ্নের দরজাটা একদিন খুলবে। তবে বারে বারে লাথি কিন্তু একটা তালাতেই দিতে হবে। একদিন জেলের তালা, আরেকদিন শপিং মলের তালা আর তার পরেরদিন গার্লফ্রেন্ডের বাসার গেটের তালায় লাথি দিলে কোনটাই খুলবে না। আর লাথি দিতে গেলে যদি মনে ভয় ঢুকে যে, শেষপর্যন্ত তালা যদি না ভাঙ্গে বা আমি তালাটা ভাঙ্গতে পারলাম না সেটা যদি কেউ দেখে ফেলে! অথবা একসময় আমার নিজেরই পা ব্যথা করা শুরু হবে, তখন আমি কী করবো?
অথবা ধরো, তুমি পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে চাও। অন্য কেউ উঠতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গেছে বা মাঝপথে কুকুরে কামড়িয়ে জলাতঙ্ক বাধিয়ে দিয়েছে। সেই ভয় যদি তোমাকে ঘায়েল করে ফেলে তাহলে তোমার লক্ষ্য হওয়া উচিত, পাহাড়ের তলায় চানাচুর বিক্রি করা। পাহাড়ে উঠার জন্য অবশ্যই তোমাকে প্রথমে দশ কদম তারপর আরো দশ কদম করেই এগিয়ে যেতে হবে; হোক সেটা হাজার কদমের সমান উচ্চতা।
একটি মহৎ চিন্তা-ভাবনা অথবা একটি সুন্দর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়াটা কখনোই সহজ কাজ নয়; বরং এটি বেশ কঠিন একটি কাজ।
If it were easy – everyone would do it.
হয়তো ভাবছো কীভাবে সম্ভব একটি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া!
Microsoft Office 3 in 1 Bundle
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
কিছু পদক্ষেপ মেনে চললে তোমার চিন্তা-ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া খুবই সম্ভব। চলো তাহলে দেখে নেওয়া যাক পদক্ষেপগুলো কি কি!
১. নিজের উপর আত্মবিশ্বাস রাখো
নিজের উপর পর্যাপ্ত আত্মবিশ্বাস না থাকলে তুমি কখনোই সফল হবে না। লোকে তোমাকে অনেক কিছুই বলবে, এতে পিছু হটবে না। কাজটি সম্পন্ন করার জন্য নিজের উপর ১০০% বিশ্বাস থাকা সবচেয়ে প্রয়োজন।
২. অতিমাত্রায় ধৈর্য ধারণ করো
নিজের উপর কখনোই অতিমাত্রায় চাপ নেবে না, পর্যাপ্ত সময় নাও। বেশিরভাগ মানুষ তাদের কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়ার জন্য এতটাই উদ্বিগ্ন থাকে যে নিজের অজান্তেই ভুল পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করে।
স্বপ্ন দেখেই ক্ষান্ত হবে না, স্বপ্নকে জীবিত করে তোলো
একটা ব্যাপার অবশ্যই মাথায় রাখা প্রয়োজন। তোমার স্বপ্ন পূরণের পথে অপ্রত্যাশিত ফলাফল চলে আসতে পারে যেকোন সময়, এইজন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। এইসব ব্যাপারগুলোর সাথে লড়াই করে এগিয়ে যেতে হবে। কখনোই স্যাক্রিফাইস করা যাবে না।
Compromise is a choice, not a sacrifice.
৩. Passion হোক অভীষ্ট লক্ষ্যের প্রতি
তুমি যে কাজটা করতে যাচ্ছো যদি সেটার সাথে গভীর প্রণয় ঘটাতে পারো; তাহলে এটা তোমার মাঝে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটা শক্তি তৈরি করে দিবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। প্যাশনটাই তোমাকে অসীম সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিবে।
For your passion will lead you directly to your purpose.
৪. বিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত মেন্টর তৈরি করে ফেলো
বিজ্ঞ এবং বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের শরণাপন্ন হও। কখনোই ভেবে নিবে না সব প্রশ্নের উত্তর তোমার কাছে আছে। তোমার স্বপ্ন পূরণে তাদের থেকে মূল্যবান পরামর্শ নাও; পরামর্শগুলো সতর্কভাবে মূল্যায়ন করো। তারপর নিজের বিচার-বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করে সামনের দিকে অগ্রসর হও।
আরও পড়ুন: সফলদের স্বপ্নগাঁথা- জেফ বেজোস যেভাবে পৃথিবীর শীর্ষ ধনী হলেন
৫. স্বপ্ন পূরণে আউটলাইন তৈরি করে ফেলো
তোমার লক্ষ্য কীভাবে হাসিল করবে সেটার আউটলাইন বানাও। প্ল্যান বানিয়ে টাইম নষ্ট করবে না। কারণ পারফেক্ট প্ল্যান স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ বানাতে পারবে না। পারফেক্ট সময়, পারফেক্ট আইডিয়া, পারফেক্ট মুড বলতে কিচ্ছু কোনোদিন পাবে না। সেগুলার জন্য চেষ্টা বা অপেক্ষা করে কোন লাভ নাই। আর যদি সকল বিপত্তি পেরিয়ে তুমি লক্ষ্যে পৌঁছে যাও, তখন দেখবে শ’খানেক এমবিএ গবেষণা করে বের করবে ঐটাই পারফেক্ট টাইম, পারফেক্ট স্ট্রাটেজি এবং পারফেক্ট আইডিয়া ছিলো।
কিন্তু এইটা অর্জন করতে তোমাকে কত কত ত্যাগ করা লেগেছে, কত চোখের জল, কপালের ঘাম, নাকের সর্দি মিশিয়েছো, কতগুলা বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছো, কতদিন পকেটে টাকা ছিলো না দুপুরে খাবার কেনার বা মেসের ভাড়া দিতে না পারার লজ্জায় হুডির ভিতরে মুখ ঢেকেছো, সেটা তারা দেখবে না।
ঘরে বসে Freelancing
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
৬. ঝুঁকিকে সাদরে গ্রহণ করো
তোমার পরিকল্পনাটা বাস্তবায়নে হয়তো প্রচণ্ড ঝুঁকি থাকতে পারে। তোমাকে সেটা মোকাবেলা করার মত সাহস থাকতে হবে। ঝুঁকি থাকবেই কিন্ত উপরের ধাপগুলো তোমাকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
Success is the ability to go from failure to failure without losing your enthusiasm.
পরিশেষে বলবো, স্বপ্ন দেখেই ক্ষান্ত হবে না, স্বপ্নকে জীবিত করে তোলো। তৈরি করো নতুন নতুন এক একটি কাব্য। তোমার স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাঝে হাজারো স্বপ্ন বেঁচে থাকবে যুগ যুগ ধরে।
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
আপনার কমেন্ট লিখুন