ক্যারিয়ার গড়তে কর্পোরেট জব বর্তমানে তরুণদের আগ্রহের কেন্দ্রে। সামাজিক অবস্থান থেকে কর্পোরেট দুনিয়া, প্রায় সব জায়গাতেই সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হলো মানুষের সাথে তাল মিলিয়ে চলে আপনার প্রয়োজনটুকু আদায় করে নেয়া। এটি একদম কথা বলা থেকে শুরু হয়। আপনার কথা বলা থেকে যদি কেউ অভিভূত না হয় তবে কিন্তু আপনার সাথে কেউ বিজনেস করতে চাইবে না। তাই এখানে ক্যারিয়ার গড়তে জানা থাকা দরকার কিছু বিশেষ আদব কায়দা।
তাহলে চলুন জেনে নেই! কর্পোরেট জব কি, কর্পোরেট অর্থ কি আর কর্পোরেট জব -এ বেতন কেমন? এমন বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর এবং কর্পোরেট লাইফে উন্নতির কিছু সেরা টিপস।
কর্পোরেট অর্থ কি?
কর্পোরেট জব কিংবা কর্পোরেট লাইফে উন্নতির টিপস জানার আগে জানতে হবে কর্পোরেট অর্থ কি বা কর্পোরেট শব্দটির মানে কি? সাধারণভাবে কর্পোরেট বলতে মিলিত বা যৌথ কোনো কিছুকে বোঝায়। কিন্তু কর্পোরেট জব -এর ক্ষেত্রে কর্পোরেট মানে একটি কর্পোরেশনের সাথে সম্পর্ক থাকা।
কর্পোরেট জব কি?
কর্পোরেট জব বলতে সাধারণত কোনো বহুজাতিক কোম্পানি বা বড় কোম্পানিতে চাকরি করাকে বোঝায়। আরো সহজ ভাষায়, কর্পোরেট জব হলো কর্পোরেশনের অধীনে চাকরি করা।
কিভাবে করবেন কর্পোরেট জব?
বর্তমানে কর্পোরেট জব তরুণদের পছন্দের শীর্ষে থাকলেও কীভাবে ও কোথায় কর্পোরেট জবের জন্য আবেদন করতে হয় কিংবা সার্কুলার কোথায় পাওয়া যায় এই ধরণের প্রাথমিক বিষয়গুলো অনেকেরই জানা নেই। তাই আসুন জেনে নেই কিভাবে খুঁজে পাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত কর্পোরেট জবের সন্ধান!
দৈনিক পত্রিকার চাকরির পাতা
বর্তমান পৃথিবীর সবাই প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে গেলেও, সাম্পতিক বিষয়াবলী সম্পর্কে জানার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো প্রতিদিন নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা পড়া। জনপ্রিয় পত্রিকাগুলোতে চাকরির খবর নিয়ে আলাদা একটি পাতাই থাকে, যেখান থেকে আপনি নিয়মিত পাবেন বিভিন্ন কোম্পানির চাকরির খবরাখবর।
ক্যারিয়ার ফেস্ট বা চাকরির মেলা
এখনকার সময়ে বেশিরভাগ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়শই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির মেলা আয়োজন করে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সিভি নেওয়ার মাধ্যমে জবের ব্যবস্থা করে থাকে। চাইলে আপনিও সেখানে অংশ নিয়ে সিভি জমা দিতে পারেন আপনার পছন্দের কোম্পানিতে।
বিডিজবস ডট কম
বিডিজবস ডট কম হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন জব পোর্টাল, যেখানে প্রতিদিন শত শত চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আপনি চাইলে খুব সহজেই সেখানে নিজের একটি একাউন্ট খুলে, আপনার যোগ্যতার ভিত্তিতে পছন্দসই কোম্পানিতে জবের আবেদন করতে পারবেন।
লিঙ্কডইন (LinkedIn)
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের মতো লিঙ্কডইনও একটি সামাজিক যোগাযোগর মাধ্যম। তবে ফেসবুকের সাথে লিঙ্কডইন -এর ভিন্নতে হচ্ছে এটি একটি প্রফেশনাল সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইট, যেখানে আপনি কর্পোরেট জগতের প্রায় সবাইকেই খুঁজে পাবেন এবং সেই সাথে খোঁজ পাবেন অসংখ্য জব সার্কুলারের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়রদের সাথে যোগাযোগ
আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন সেখানকার অসংখ্য সিনিয়র ভাইয়া-আপুরা হয়তো বর্তমানে কর্পোরেট দুনিয়ার নানা কোম্পানিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত আছেন। আপনি চাইলে তাদের মাধ্যমে কর্পোরেট জব সার্কুলারের খোঁজ খবর নেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নিতে পারেন।
আরো পড়ুন: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার ৮টি কারণ
কর্পোরেট জব বেতন
কর্পোরেট জব সম্পর্কে ভাবলে সবার আগে মনে যে প্রশ্নটি আসে তা হলো কর্পোরেট জব বেতন কেমন দেয়? আবার অনেকেই মনে করেন কর্পোরেট চাকরিজীবীরা বেশ মোটা অঙ্কের বেতন কত পান। তাই এবার যেন নেই কর্পোরেট জব বেতন সম্পর্কে –
- প্রাথমিকভাবে বিবিএ বা ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক করা যেকোনো মানুষের বেতন ধরা হয় ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা । তবে নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমানা এবং কোম্পানির ওপর ভিত্তি করে আপনার বেতন ন্যূনতম ৩০ হাজার টাকা থেকেও শুরু হতে পারে।
- এছাড়া বহুজাতিক অর্থাৎ মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রাথমিক বেতন ৫০ হাজার থেকে শুরু করে পাচ অংকের একটি সংখ্যা হতে পারে ।
- একটি কোম্পানিতে কয়েক বছর নিজের দক্ষতা আর পরিশ্রমের ভিত্তিতে পদোন্নতি হলে বেতন বাড়তেও পারে।
কর্পোরেট লাইফে উন্নতির ১০ টিপস
কর্পোরেট জগতে হাজারো রকমের মানুষের সাথে আপনার ওঠাবসা করতে হবে। করতে হবে সমালোচনা কোনরকম কটু কথা ছাড়াই। আজ আমরা দেখবো কর্পোরেট দুনিয়ার উন্নতির জন্য এমন ১০ টি টিপস যা শাণিত করতে পারে আপনার বিজনেসের উন্নতির মাত্রা। শুধু যে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেই আপনি এগুলো ব্যবহার করতে পারবেন তা কিন্তু নয়; বরং যে কোন প্রোজেক্ট বা অন্য কোন ক্ষেত্রেও কাজে লাগাতে পারেন এসব টিপস। তো চলুন দেখে নেয়া যাক।
১. হাতে কলমে শেখানো:
বছর পাঁচেক আগে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা সংস্থা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যাতে মানুষের শেখা ও মনে রাখার পদ্ধতির কার্যকারিতা প্রকাশ করে। সেখানকার তথ্যমতে, সাধারণ একজন মানুষ শুধুমাত্র শুনে যতটা শিখতে পারে তার থেকে দেখে দেখেই শিখে ফেলার সম্ভাবনা প্রায় ৭০% বেশি। অর্থাৎ মানুষ যদি শুনে ১১% শেখে তবে দেখার মাধ্যমে কোন জিনিস শিখতে পারে ৮৩%। এর মাধ্যমে একটা জিনিস স্পষ্ট।
আমরা যদি কাউকে কিছু শেখাতে চাই তবে মোবাইল ফোন, মেসেঞ্জার কল বা অন্য কোনভাবে শুনিয়ে শুনিয়ে শেখানোর চেয়ে হাতে কলমে শেখানোটা অনেক বেশিই কার্যকরি। আপনি যাকে শেখাতে চান সে যদি ঠিকমতো নাই শিখতে পারে তবে আপনার উদ্দেশ্য কিন্তু ঠিকমতো হাসিল হলো না। আবার সাথে সাথে তার পেছনে ব্যয় করা সময়টাও মাঠে মারা গেলো। আর যদি সে শিখেও ফেলে তবুও শুনে শুনে কেউ মনে রাখতে পারে ২০%। আর দেখে মনে রাখতে পারে তার দ্বিগুণ অর্থাৎ ৪০%। এই তথ্যই প্রমাণ করে হাতে কলমে শিখিয়ে দেয়ার গুরুত্ব কতটুকু।
২. মানুষকে বুঝতে চেষ্টা করা:
মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার রপ্ত করতে হলে বা কারো সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার দক্ষতা অর্জন করতে হলে প্রথমেই যেটা দরকার তা হলো মানুষের স্বরূপ অর্থাৎ তার প্রকৃতি সঠিকভাবে বুঝতে পারা। যখন আপনি ভালোভাবে মানুষকে বুঝতে পারেন অথবা জানতে পারেন মানুষের এক একেকটা আচরণের পেছনে কী ধরনের কারণ থাকতে পারে তখন আপনি বুঝে যাবেন বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে মানুষের আচরণ বা কোন কথার সময় কোন ধরণের প্রতিক্রিয়া মানুষের থেকে পাওয়া যায়।
যেমন ধরুন আপনি ও আপনার বন্ধু মিলে ছোটখাটো একটা ব্যবসা দাঁড় করাতে চাচ্ছেন। ধরা যাক তার রাগ একটু বেশি। কিন্তু এসব ছোটখাটো বিষয়ে রাগারাগি ব্যবসার উন্নতিতে ক্ষতি করতে পারে। এখন আপনি যদি বুঝে নিতে পারেন আপনার বন্ধু আসলে কী ধরনের কথা বললে রাগের প্রতিক্রিয়া দেখায় তবে কিন্তু আপনারই লাভ। আপনি সহজেই সেগুলো এড়িয়ে গিয়ে ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারেন।
৩. অন্যকে প্রাধান্য দেয়া:
এটা জীবনের সর্বক্ষত্রে প্রযোজ্য। আমরা একদম জন্মলগ্ন থেকেই নিজেদের নিয়ে ভাবি। সত্যি বলতে, এ জগতের বেশিরভাগ মানুষেরই মাথাব্যথা তার নিজের ব্যাপার-স্যাপার নিয়ে। অথবা এটাও বলা যায় কোন ব্যক্তি আপনার সম্পর্কে বা অন্য কারো সম্পর্কে যতই না আগ্রহী তার চেয়ে হাজার গুণ বেশি আগ্রহী তার নিজের সম্পর্কে। সুতরাং আপনি যদি অন্যকে প্রাধান্য দেন তবে সে কিন্তু যারপরনাই খুশি হবে। অন্যকে প্রাধান্য দিলে সহজেই যে কোন সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
অন্যকে আপনি যদি গুরুত্ব দেন তবে সেও আপনার কাজের বেলায় সঠিক গুরুত্বটাই দেবে। সহজভাবে বলতে গেলে আপনি যদি অন্যকে গুরুত্ব না দেন তবে অন্যদের থেকে কিভাবে আপনার বেলায় গুরুত্ব আশা করতে পারেন! সুতরাং নিজের মতামত দেবার আগে অন্যের মতামত নেয়াটা আসলেই বুদ্ধিমানের কাজ। গ্রুপ ডিসিশানে দরকার হলে সবার পরে নিজের মতামত দিন। অন্যের মতামতগুলো গুরুত্বের সাথে নিন। এবং তাদের বুঝান যে আপনার কাছে তাদের সবার মতামত সমান গুরুত্বপূর্ণ।
৪. হতে হবে ভালো শ্রোতা:
যত বেশি অন্যদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবেন ততই বক্তার ভালো লাগবে। মজার ব্যাপার হলো বক্তা এও বুঝবে যে আপনি আসলে খুবই বোধসম্পন্ন লোক। সে ভাববে তার যে কোন কথাই আপনি বেশ ভালভাবে বুঝতে পারছেন। ভালো শ্রোতা হবার কিছু টিপস রয়েছে। যেমন,
- যিনি কথা বলছেন তার মুখের দিকে তাকিয়ে কথা শোনা।
- প্রশ্ন করা। এতে যিনি কথা বলছেন তিনি নিশ্চিত হবেন যে আপনি আসলেই তার কথা মনোযোগ সহকারে শুনছেন।
- আলোচনার বিষয়বস্তু থেকে সরে না পড়া বা মাঝখানে বাধা না দেয়া। একটা বিষয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাঝপথে কখনোই অন্য প্রসঙ্গে যাওয়া ঠিক নয়। কারণ এতে বক্তার কথার ছন্দপতন হয়। এবং তিনি এর জন্য আপনাকে দায়ী মনে করবেন।
এছাড়াও আর অনেক টিপস রয়েছে ভালো শ্রোতা হবার। চাকরি থেকে ব্যবসা যে কোন কাজেই ভালো বক্তা হবার পাশাপাশি ভালো শ্রোতা হবার বিকল্প নেই।
৫. অর্জন করুন সবার বিশ্বাস:
মানুষ মানুষকে যতটা না বিশ্বাস করে তার চাইতে বেশি করে সন্দেহ। অথবা বিশ্বাস একবার ভেঙ্গে গেলে তার থেকে বিশ্বাস অর্জন করাটা খুবই মুশকিলে বিষয়। কারণ ধরা যাক, আমি আপনাকে বললাম যে আপনার পরবর্তী ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশে আমি আপনাকে সাহায্য করবো। আপনি সহজেই এটা বিশ্বাস করতে পারেন। কিন্তু পরবর্তীতে আমি কোন অজুহাত দিয়ে সেটা না করে পাশ কাটিয়ে গেলাম। পরবর্তীতে আপনি কি আর আমাকে আগের মতো বিশ্বাস করবেন? নিশ্চয়ই না।
আর পরে যে কোন কাজেই আপনার সন্দেহ হবে ‘আসলেই এটা ও করবে তো!’। বিশ্বাস অর্জন করা যে কারো জন্যই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা হোক আপনার নিজের ব্যবসায়িক জায়গা অথবা হোক আপনার বন্ধুদের মাঝে। মনে রাখবেন বিশ্বাস কিন্তু চারিত্রিক গুণাবলির মাঝে সবচেয়ে উপরে।
৬. বাদ দিন অজুহাত:
আমাদের খুব কমন সমস্যা হলো আমরা কারণে অকারণে অজুহাত দেই। ক্লাসের টিচার থেকে শুরু করে অফিসের বস সব জায়গায় আমাদের অজুহাতের শেষ নেই। এসব দেখলে মনে হয় আমরা নিমিষেই লিখে ফেলতে পারবো ‘অজুহাত সমগ্র’ নামের এক পেট মোটা সাইজের বই। কিন্তু আপনি কি জানেন সামান্য অজুহাতের কারণে অন্যের নিকট আপনার গ্রহণযোগ্যতা কমতে পারে!
ধরুন আপনি একটা কর্পোরেট অফিসে চাকরি করেন। আপনার কাজও বেশ ভালোই। কিন্তু আপনি মাঝেমধ্যেই অফিসে দেরি করে ঢোকেন। আর বসের কাছে আস্ত অজুহাতের বুলি ঝাড়তে থাকেন। একদিন জরুরি কাজ, অন্যদিন ছোট ভাইকে স্কুলে দিয়ে এসেছেন অথবা রাস্তার জ্যাম তো আছেই। কিন্তু হয়তো এ কারণেই ভবিষ্যতে কোম্পানীর বড় কোন প্রোজেক্টে কাজ করার সুযোগ আপনি হারাতে পারেন।
কেননা উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শুধু আপনার কাজই দেখবেন না; বরং সাথে সাথে দেখবেন আপনার কাজের গতি এবং চালচলন এমনকি কথা বার্তাও। যেখানে আপনি সামান্য দেরিতে ইয়া বড় বড় অভিযোগ দেন সেখানে বিশাল এক প্রোজেক্টে আপনাকে নেবার ঝুঁকি নেবেই বা কেন! সুতরাং অন্যদের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে অথবা মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে নিতে হলে কিন্তু আপনার বাদ দিতে হবে সকল ধরণের অজুহাত।
৭. তারিফ করতে দোষ কী!
একটা গল্প বলি আগে। একবার এক রাজা নিজের একই রকম দু’টো ছবি বানাতে বললো তার রাজসভার শিল্পীকে। তো ছবি দুটো নিয়ে একটা রাজ্যের দরজায় লাগানো হলো। এবং ঘোষণা করা হলো এটা রাজসভার শিল্পীর আঁকা ছবি। ছবিতে কোন ভুল দেখলে সেখানে দাগ দেয়ার জন্য। তো এক সপ্তাহ পর দেখা গেলো দাগাদাগিতে ছবির আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। পরের সপ্তাহে অন্য ছবিটা দরজায় ঝুলিয়ে সেই একই ঘোষণা। কিন্তু এবার সবাইকে বলা হলো ছবিটা এঁকেছেন ভীনদেশের এক বিখ্যাত চিত্রকর। সপ্তাহ যায় মাস যায় কিন্তু কোন দাগ ছবিতে পড়েনা। এভাবেই রাজা বুঝতে পারলেন যে আসলে আমরা নিজেদের মানুষকে কখনোই প্রশংসা করতে পারি না।
এটা অবশ্য আমাদের শুধু অভ্যাস না; বরং বিশাল বদ অভ্যাস। তারিফের বেলায় আমরা বেজায় কৃপণ। অথচ বয়সে ছোট একটা মানুষকে সামান্য প্রশংসা করলে সে অনেক অনুপ্রাণিত হতে পারে। যেটিতে হয়তো আপনার নিজেরও বড় কোন উপকার লুকিয়ে আছে। আমরা ঐ রাজ্যের প্রজাদের মত সবার কাজের মন্তব্যে দাগ দাগ দিতে দিতে তবে নষ্ট করে ফেলছি। কিন্তু সামান্য কাউকে ধন্যবাদ বা ছোট কাজে যদি একটু বড় প্রশংসা দিন তবে সমস্যাটা কোথায়! বরং মানুষ আপনাকেই পছন্দ করবেন।
আপনারা নিশ্চয়ই আয়মান সাদিক ভাইয়ার ভিডিওটা দেখেছেন যে সামান্য সালামের মত দুইটা বাক্য ব্যবহার করে কিভাবে অন্যদের মনে বিশাল প্রভাব ফেলা যায়। আপনার বড় হোক বা ছোট, যে কাউকে তার কাজের প্রাপ্য সম্মান থেকে একটু বেশিই প্রশংসা করুন। এতে করে ভবিষ্যতে সে আপনার কাজ করার প্রতি বেশি আগ্রহী হবে। ভালো কাজ হবে তাকে দিয়েই। এতে অবশ্য কিছু ক্রেডিট কিন্তু আপনারও থাকছে। তবে আর দেরি কেন! আজ থেকেই শুরু হোক তারিফের বাহাদুরী!
৮. সমালোচনায় সাবধান:
সবার তারিফ করতে হবে ঠিকই কিন্তু কিছু না কিছু সমালোচনা তো থাকবেই। সেটাও করতে হবে নিয়মমাফিক। এক্ষেত্রে আপনি সমালোচনায় বিশ্ববিখ্যাত বার্গার পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। এটি খুবই জনপ্রিয় ও কার্যকরী। আমরা জানি বার্গার সাধারণত তিন ভাগে বিভক্ত। উপরে একটি রুটির স্তর। পরের স্তরে বিফ বা চিকেন এবং সবশেষে আবার রুটি। অর্থাৎ শুরুতেও রুটি এবং শেষেও রুটি। মাঝখানে শুধু আসল জিনিস।
সমালোচনার শুরুতে তার ভালো দিক দিয়ে শুরু করে মাঝখানে তার খারাপ দিকটা উল্লেখ করতে পারেন। সবশেষে আবারো তার ভালো কাজের তারিফ। এভাবে শুরু ও শেষে প্রশংসা ও মাঝে সমালোচনা করলে সেটি বেশি কার্যকরী হয়। আপনি ও সমালোচনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন বার্গার পদ্ধতি। তবে সমালোচনার সময় আরো যেসব জিনিস মাথায় রাখতে পারেন
- নৈর্ব্যক্তিক সমালোচনা করুন। লোকটার নয় ; বরং লোকের কাজের সমালোচনা করুন।
- রাস্তাটাও দেখিয়ে দিন। সে যা ভুল করেছে তা বলার সাথে সাথে সমাধানের রাস্তাটাও আপনিই দেখান।
- একটি কাজের সমালোচনা একবারই করুন। বারবার সমালোচনা করলে মনে হতে পারে আপনি আসলে তার দোষ ধরতে ব্যস্ত। ন্যায্য সমালোচনা একবারই ন্যায্য হয়।
- সংশোধনের জন্য সমালোচনা করুন, ছোট করার জন্য নয়।
- সবশেষে হয়ে যান ভালো বন্ধু। কারণ সমালোচনা হওয়া উচিত সংশোধন করবার জন্য। আপনি যদি বলেন, ‘আমার যা বলবার আমি বলে নিলাম। এবার আপনি আপনার পথ দেখুন।’ তাহলে কিন্তু আপনার সমালোচনায় সে আদৌ শুধরাবে কিনা তা বলা মুশকিল। বরং আপনি এটা বলতে পারেন, ‘আর আমাদের মাঝে কোন সমস্যা নেই। আমরা পরস্পরের বন্ধু।’ তাহলে আপনার সমালোচনা কাজে আসার সম্ভাবনা শতভাগ। আর সবগুলো নিয়মের মধ্যে এটিই বেশি কার্যকর।
৯. বসতত্ত্ব থেকে বিরত থাকুন :
কোন অফিস বা কোম্পানি তে বস নিয়ে সবারই কোন না কোন সমস্যা থাকে। কারো কারো বসদের সাথে একদমই যায়না। আবার কেউ কেউ ভয়ে কোম্পানির স্বার্থে বর্তমানের কোন ভুলের কথাও বলতে পারেনা। বেশিরভাগ মানুষের কাছেই সব ব্যাপারে ‘ইয়েস বস’ বলতে হবে বলে একটা গৎবাঁধা বসতত্ত্বের ধারণা রয়েছে। কিন্তু ব্যাপারটা কি তাই হওয়া উচিত? অথবা আপনি যদি একজন বস হন আপনার কর্মকর্তাদের সাথেই বা কী রকম সম্পর্ক থাকা উচিত!
টেন মিনিট স্কুলের কথাই ধরা যাক। টেন মিনিট স্কুলকে যদি আমরা একটা কর্পোরেট অফিস ধরি তবে সেখানকার সবার বস হলেন আয়মান সাদিক ভাইয়া। অথচ দেখুন আমি এখানেও তার নামের সাথে ‘ভাইয়া’ বলে সম্বোধন করেছি। অর্থাৎ এখানে সবার সাথে আয়মান ভাইয়ার সম্পর্ক খুব কাছের। এজন্য যে কেউ টেন মিনিট স্কুল নিয়ে যে কোন আইডিয়া বা ভুল ত্রুটি নিয়ে তার সাথে খুব সহজেই শেয়ার করতে পারে।
এজন্য সবার মাঝে থাকা বসতত্ত্ব দূর করা বেশ দরকার। এতে সবাই একসাথে মিলে কাজ করে উন্নতি করা বেশ সহজ। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে থাকতে হবে ভালো ও সৎ সম্পর্ক। এতে করে যে কোন বড় কাজ আপনার মাধ্যমে করতে দেয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর যে কোন কোম্পানিতে উপরে-নিচে সব কর্মকর্তার মাঝে সম্পর্ক যত ভালো, কোম্পানির উন্নতি তত তাড়াতাড়ি হবে বলেই আমাদের ধারণা।
আরো পড়ুন: ক্যারিয়ারের শুরু ইন্টার্নশিপ দিয়ে! জেনে নাও ইন্টার্নশিপ এর প্রয়োজনীয়তা
১০. শেখার নেইকো শেষ :
Never stop learning-বাক্যটার সাথে নিশ্চয়ই আগে থেকে পরিচিত। আমরা বেশিরভাগ সময়ই যেটা মনে করি যে, যেহেতু আমি এই বিষয়ের সাথে অনেক দিন ধরে আছি, তাই হয়তো অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি জানি। এই ধারণা পোষণ করাটা কিন্তু একদম বোকামি। আপনি একটা বিষয়ের সাথে অনেকদিন ধরে কাজ করছেন মানে এটা হতে পারে যে আপনি আপনার সামনে বসে থাকা মানুষ থেকে বেশিই অভিজ্ঞ। কিন্তু এর মানে এই না যে আপনি তার থেকে সবসময়ই বেশি জানেন।
সুতরাং তার থেকে আপনি কিছু শিখতে পারবেননা এটা ভুল। বরং এই ভেবে রাখা উচিত যে আপনি সবার থেকে শিখবেন। ব্যক্তিগতভাবে আমার নিজেরও প্রতিদিন নতুন নতুন জিনিস শিখতে ভালো লাগে। আমার থেকে ক্লাসে জুনিয়র একটা মেয়ে আমাকে ডিকশনারির হার্ড কপি থেকে শব্দের অর্থ খুঁজে বের করার কৌশল শিখিয়েছিলো। এজন্য এখনো আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। শেখার মনোভাব নিয়ে থাকলে আপনার উন্নতির ধাপ বাড়বে। শেখার ক্ষেত্রে ছোট বড় বা দাম্ভিকতা রাখা মোটেও উচিত নয়। এজন্যই কিন্তু টেন মিনিট স্কুলের ট্যাগলাইন হলো নেভার স্টপ লার্নিং।
জেনে রাখুন Corporate World -এর শিষ্টাচারগুলো!
চাকরিজীবনে প্রতিদিনই এমন শিষ্টাচার কিংবা ‘etiquettes’ অনুসরণ করে চলতে হয়। Corporate World এ এই শিষ্টাচারগুলো অনুসরণ করার গুরুত্ব অনেকখানি। কিন্তু অনেক সময় এই বিষয়ে জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে আমাদের নানা ধরণের ভুল করে ফেলাটা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই Corporate World এ ঢোকার পর যাতে শিষ্টাচারগুলো অনুসরণ করা নিয়ে কোনো ধরণের সমস্যায় না পড়তে হয় সেজন্য আমাদের এই শিষ্টাচারগুলো জানতে হবে। আর Corporate World এ ঢোকার আগেই শিষ্টাচারগুলো নিয়ে জানতে হলে পড়তে হবে এই লেখাটি।
১. কর্মক্ষেত্রে শিষ্টাচার:
এটি পুরোপুরি নির্ভর করে আপনি যে অফিসে চাকরি করছেন কিংবা করতে যাচ্ছেন সেটির এবং সেখানে আপনার আচরণের উপর। একটি কোম্পানির কালচার বা সংস্কৃতির থেকে অন্য কোম্পানির সংস্কৃতি আলাদা হতে পারে। যেমন – অ্যামেরিকার কোম্পানিগুলোতে এক হাত দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলতে লোকজন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। যেখানে ইউরোপের কোম্পানিগুলোতে একজন আরেকজনের সাথে কথা বলার সময় ১২ ইঞ্চি বা তার চাইতে কিছু কম দূরত্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলে। তেমনি আমাদের দেশেও Corporate World এ বিভিন্ন কোম্পানির সংস্কৃতি বিভিন্ন রকমের হতে পারে।
অনেক কোম্পানিতে আপনি চাইলেই আপনার পোষা কুকুর বা বিড়াল নিয়ে যেতে পারেন; কিন্তু অন্য কোম্পানিগুলোতে আপনার এই আচরণে আপনার সহকর্মী কিংবা আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অত্যন্ত বিরক্ত বোধ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে কোম্পানির বর্ণ, ধর্ম বা জাতীয়তাবাদে আঘাত করে না এমন যে কোনো সংস্কৃতিই আপনি অনায়াসে অনুসরণ করতে পারেন। আর সেটাই হবে পেশাদারিত্বের লক্ষণ।
তবে সাধারণভাবেই যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন Corporate World এ সেগুলো হচ্ছে:
নামের প্রতি খেয়াল রাখুন:
স্বাভাবিকভাবেই আমরা নতুন কারোর সাথে পরিচিত হলে তার নামটাই সবার আগে জানি। নাম দিয়েই যেহেতু আমরা মানুষকে মনে রাখি, সেহেতু কর্মক্ষেত্রে কারোর সাথে প্রথম দেখা হলে তার নামের দিকে মনোযোগ দিন। কারোর নাম উচ্চারণে সমস্যা মনে হলে তাকে তার নাম আবার জিজ্ঞেস করে নিন।
অনেক সময় আমরা অন্যের নাম ভুলে যাই, সেক্ষেত্রে বিনয়ী হয়ে তাদেরকে নাম পুনরায় জিজ্ঞেস করুন। আর মনে রাখবেন, বন্ধুমহলে একে অন্যের অনেক ধরণের নাম দিলেও কর্মক্ষেত্রে কোনোভাবেই কারোর নাম বিকৃত করা যাবে না। যার যে নাম সে নামেই তাকে ডাকতে হবে। কেননা আপনি যার নাম বিকৃত করার চেষ্টা করছেন, সে সেটা পছন্দ নাও করতে পারে। যেমন আপনাকে আপনার নামে না ডেকে বিকৃত নামে ডাকলে আপনি পছন্দ নাও করতে পারেন। তাই কারোর নাম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন হোন।
চোখে চোখ রেখে হ্যান্ডশেক করুন:
হ্যান্ডশেক হচ্ছে সার্বজনীন ব্যবসায়িক অভিবাদনের একটি পন্থা। দৃঢ় হ্যান্ডশেক করার মাধ্যমে বোঝা যায় যে, ব্যক্তি দুইজনের সাক্ষাৎকার কিংবা প্রয়োজন খুব ভালোভাবে মিটেছে এবং হ্যান্ডশেক যদি হয় দুর্বল তবে বুঝতে হবে যে, দিনটি বাজেভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সচরাচর উপরস্থ কর্মকর্তা তাদের হাত বাড়িয়ে দেয় হ্যান্ডশেক করার জন্য। তবে তারা যদি আগে হাত বাড়িয়ে না দেয়, তবুও আপনি আপনার হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন। হ্যান্ডশেক করার সময় সামনের মানুষটির চোখে চোখ রাখুন এবং স্মিতভাবে হাসুন। যারা হ্যান্ডশেক করার সময় তাদের চোখ সামনের ব্যক্তির চোখের দিকে রাখে না, তাদের আত্মবিশ্বাস এবং সততায় অভাব আছে বলে মনে করা হয়। অর্থাৎ আপনার মাঝে আত্মবিশ্বাস আনতে চাইলে কিংবা নিজেকে আত্মবিশ্বাসী প্রমাণ করতে চাইলে চোখে চোখ রেখে হ্যান্ডশেক করুন।
মনোযোগ দিন:
যখন আপনার সামনে কেউ কথা বলছে, তখন তাদের কথা শুনুন, মাথা নাড়ুন অথবা স্মিতভাবে হাসুন। এই আচরণগুলো প্রকাশ করে যে, আপনি তার কথা শুনছেন। কারোর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা মানে তার চিন্তাভাবনাগুলোকে গুরুত্ব দেয়া।
কিন্তু কারোর কথার মাঝে বাধা দেয়া যাবে না। প্রচণ্ড রকমের বাজে স্বভাবগুলোর মাঝে একটি ধরা হয় কারোর কথার মাঝে বাধা দেয়ার স্বভাবকে। আপনি যদি কারোর কথার মাঝে কিছু বলতে চান তবে আপনি বিনয়ের সাথে আপনার অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে বোঝাতে পারেন। তবে কারোর কথা শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করাকেই এক ধরণের নম্রতা বলে ধরা হয়।
উপযুক্ত পোশাক পরুন:
অনেক কোম্পানিতেই ড্রেসকোড কিছুটা শিথিল করা হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আপনি আপনার পছন্দমত যা খুশি তাই পরে অফিসে চলে যাবেন। আমরা যতই বলি না কেনো ‘কোনো বইকে তার কাভার দেখে মূল্যায়ন করতে নেই’, কোনো কিছুর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কিন্তু আমরা ঠিক এটাই করি। এমনকি অনেক গবেষণায় এটাই প্রকাশিত হয়েছে যে, কারোর ব্যাপারে প্রথমেই যেটি মানুষ লক্ষ করে সেটি হচ্ছে তাকে দেখতে কেমন লাগছে। প্রথম দেখায় এটিই প্রাথমিকভাবে অন্যকে প্রভাবিত করে।
কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সাথে প্রফেশনাল জীবনের পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে বেশ পার্থক্য বজায় রাখতে হয়। কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমরা চাইলেই যেকোন রকমের পোশাক পরিধান করতে পারি। কিন্তু Corporate World এ ঢোকার পর এটি সম্ভব নয়। কেননা প্রায় সব কোম্পানিতেই ড্রেসকোড মানতে হয়। প্রফেশনাল কাজগুলোর মধ্যে এটি একটি।
অফিসে অবশ্যই একটা নির্দিষ্ট ড্রেসকোড মেনে পোশাক পরে যেতে হবে। সাদা, নীল, ধূসর বা বাদামী রং-এর মত রংগুলো বেছে নিন, কেননা এই রংগুলো অফিশিয়াল বেশভূষার ইঙ্গিত বহন করে। আবার উজ্জ্বল রং কর্পোরেট অফিসে বেশ বেমানান। বরং হালকা রং-এর পোশাক বেশ প্রফেশনাল বেশভূষার পরিচয় দেয়।
আর অফিসে যাওয়ার আগে অবশ্যই কাপড় ইস্ত্রি করে পরে যাবেন। কখনোই কুঁচকানো পোশাক পরে অফিসে যাবেন না। কারণ আগেই বলেছি, এটা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কলেজের ক্লাসরুম নয়। Corporate World এ ড্রেসকোড মেনে চলা প্রফেশনালিজমের একটি চমৎকার উদাহরণ। মনে রাখবেন, আপনার পোশাকে স্মার্টনেস আনার প্রচেষ্টা দেখে আপনি কাজেও কতটা আগ্রহ আর প্রচেষ্টা দেখাবেন সেটি বুঝতে পারা যায়।
পুরুষদের জন্য:
- পুরষদেরকে সাধারণ শার্ট এবং প্যান্ট পরতে হবে। খেয়াল রাখবেন এই দুটোর রং-এ যেন সামঞ্জস্য থাকে। হালকা রং-এর শার্ট এবং গাঢ় রং-এর প্যান্ট অথবা উল্টোটা পরতে পারেন। কোনো ধরণের ডিজাইন করা শার্ট পরবেন না। ফরমাল অফিস শার্টগুলো পরুন।
- শার্ট পরে প্যান্ট-এ গুঁজে রাখতে হবে। ফুলহাতা শার্ট পরুন। শার্টের হাতা গুটাবেন না।
- প্রফেশনাল দেখানোর জন্য সিল্ক টাই পরা সবচেয়ে ভালো। কোনো ধরণের ডিজাইন করা টাই পরবেন না। টাই যেন খুব ছোট কিংবা খুব বড় না হয়। টাইয়ের প্রান্ত বেল্ট এর বাকল পর্যন্ত যেন পৌঁছায় এমনভাবে পরতে হবে। খেয়াল রাখবেন, চিকন টাই অফিসে ব্যবহার করার জন্য উপযুক্ত নয়।
- কালো বা বাদামী রং-এর লেদারের বেল্ট পরার চেষ্টা করুন। চটকদার ডিজাইন কিংবা মোটা বাকলযুক্ত বেল্ট ব্যবহার করবেন না অফিসে।
- পোশাকের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মোজা পরুন।
- শব্দ করে এমন জুতা পরা পরিহার করুন। কালো বা বাদামী রং এর লেদারের নরম জুতা ব্যবহার করুন। খেয়াল করুন জুতা পালিশ করা আর ফিতা ঠিকমতো বাঁধা আছে কি না। স্পোর্টসের জুতা কিংবা স্নিকার্স পরে অফিসে যাবেন না।
- হালকা ঘ্রাণের পারফিউম বা ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করুন।
নারীদের জন্য:
- শরীরের অনেক বেশি অংশ প্রকাশ করে এমন পোশাক পরা থেকে বিরত থাকুন। যে পোশাকগুলো আপনার সবচেয়ে ভালো ফিট হয় সেগুলো পরুন। অতিরিক্ত টাইট কিংবা ঢোলা পোশাক পরিহার করুন।
- পার্টি আর অফিসের বেশভূষার মাঝে পার্থক্যের বিষয়টা খেয়াল রাখুন। কখনোই নিচু গলার ব্লাউজ পরে অফিসে যাবেন না। ‘ডিপ ব্যাক’ কিংবা ‘নুডল স্ট্র্যাপস’ ব্লাউজ পরে কোনোভাবেই অফিসে যাওয়া যাবে না। স্বচ্ছ শাড়ি পরে অফিসে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- যারা ওয়েস্টার্ন পোশাক পরতে পছন্দ করেন তারা হালকা রঙের শার্ট আর গাঢ় রঙের প্যান্ট পরতে পারেন।
- ভারী গহনা পরে অফিসে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত মেকাপ করা কিংবা সাথে মেকাপ বক্স নিয়ে অফিসে যাওয়া প্রফেশনাল আচরণের মাঝে পরে না। তাই এই কাজগুলো থেকে বিরত থাকুন। নখ ছেঁটে প্রাকৃতিক শেডস রঙের নেলপলিশ ব্যবহার করতে পারেন।
- তীক্ষ্ণ উঁচু হিলের জুতা পরে অফিসে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- আপনার হাতব্যাগের রং যেন পোশাকের রঙের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
পরিচ্ছন্ন থাকুন:
আপনি যে পোশাকই পরেন না কেনো, সবসময় পরিচ্ছন্ন থাকা খুবই জরুরি। অফিসে যাওয়ার আগে চুল আঁচড়ান, দাড়ি ছাঁটুন, নখ কাটুন এবং পরিষ্কার করুন। খেয়াল রাখবেন আপনার পোশাক থেকে যেন বাজে গন্ধ না বের হয়। এরকম হলে কেউ কাজের সময় আপনার আশেপাশে বসে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে না।
কাজের জায়গা পরিষ্কার রাখুন:
আপনি অফিসের যেখানে কাজ করেন সে জায়গা পরিষ্কার রাখুন। আপনার ডেস্কে রাখা পুরনো কফির কাপ, অপ্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র আপনার কাজের মনোযোগ বিঘ্নিত করবে আর অন্যদের এই অপরিচ্ছন্ন ডেস্ক দেখে বিরক্ত লাগবে। আপনার সহকর্মী, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং অফিসের অন্যান্যরা ভাবতেই পারেন, যে লোক তার ডেস্কই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখতে পারে না সে তার কাজ কতটা যত্ন সহকারে করবে?
আপনার কাজের জায়গাটুকুই আপনার পেশাদারি ভাবমূর্তির প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলতে পারে। তাই অত্যন্ত যত্নসহকারে আপনার কাজের জায়গা পরিষ্কার করুন। দরকারে একটি ময়লা ফেলার ঝুড়ি ব্যবহার করুন এবং প্রতি সপ্তাহে দুই বা তিনবার করে সেই ঝুড়ির ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দেয়ার ব্যবস্থা করুন।
ব্যবহারকৃত জিনিস নিয়ে সচেতন হোন:
ছোটবেলায় স্কুলে থাকতে দেখতাম শিক্ষক-শিক্ষিকা বোর্ডে লিখে চলে যাওয়ার সাথে সাথে কে কার আগে গিয়ে বোর্ড মুছবে সেটা নিয়ে একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যেতো। আস্তে আস্তে যত বড় হলাম, এই প্রতিযোগিতাটা কমতে থাকলো। শুধু যে কমে গেলো তাই না, প্রায় বন্ধই হয়ে গেলো। বড় হওয়ার পর আমরা আমাদেরই ব্যবহারকৃত বিভিন্ন জিনিস নিয়ে এত বেশী অসচেতন হয়ে গেলাম যে, এক জায়গা থেকে একটা জিনিস নিয়ে আমরা কাজ শেষে সে জায়গায় না রেখে অন্য জায়গায় রাখছি আর পরে দরকারের সময় সেই জিনিস খুঁজে না পেয়ে বাড়ি মাথায় তুলছি।
অফিসে কাজ করার সময় প্রিন্টার, স্ট্যাপলার থেকে শুরু করে অনেক রকমের জিনিসই সবার শেয়ার করে ব্যবহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে ব্যপারটি খেয়াল রাখতে হবে সেটি হলো যে জিনিস যেখান থেকে নেয়া হচ্ছে, কাজ শেষে সেটি সেখানেই রেখে দিতে হবে। এতে করে পরবর্তীতে জিনিসটি হারানোর সম্ভাবনা থাকে না। আর আপনি যখন কোনো জিনিস ব্যবহার করবেন, খেয়াল রাখবেন অন্য কেউ পরবর্তীতে ব্যবহার করার জন্য যেন সেটি তার পরিষ্কার করে ব্যবহার করতে না হয়। আপনার ময়লা করা জিনিস সবসময় আপনিই পরিষ্কার করে রেখে আসবেন। তাহলে দেখবেন চমৎকার যে প্রফেশনাল কর্মপদ্ধতি চালু হবে অফিসে সেটির জন্য আপনাকেও কখনও অন্যের অপরিষ্কার করে রাখা জিনিস ব্যবহার করতে হবে না। কাজ করতে গিয়ে আপনিও সবসময় পরিষ্কার করা জিনিসপত্র ব্যবহার করতে পারবেন।
সবাইকে সম্মান দিন:
এটা সবাই জানে যে, একটি প্রতিষ্ঠানের সবাই তাদের ক্যারিয়ার এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। একে অন্যকে প্রতিযোগী ভেবে যদি আপনি কেবল মই বেয়ে আপনার ক্যারিয়ারে উপরের দিকেই উঠতে চান, তবে আপনার সহকর্মীদের সাথে আপনার সম্পর্ক খুবই বাজে অবস্থায় গিয়ে দাঁড়াবে।
আপনি আপনার সহকর্মী, কোনো প্রজেক্ট এ আপনার টিম এর অন্যান্য সদস্য এমনকি কোম্পানির কোনো ইন্টার্ন অথবা সিইও এর সাথে চমৎকার আচরণ করুন, সবাইকে সম্মান দিন। দেখবেন আপনি তার বিনিময়ে সেরকমভাবেই ফিডব্যাক পাচ্ছেন।
আমার বাবার কাছ থেকে শোনা একটা কাহিনী বলি। উনার ভাষায়, “আমাদের অফিসের ম্যানেজার সেরকমভাবে কাউকে সাহায্য করেন না। কিন্তু উনি এত চমৎকারভাবে সবার সাথে কথা বলেন আর সবাইকে সম্মান করেন যে তার প্রতি সবাই সন্তুষ্ট। তিনি কাউকে কোনো কিছু করতে বললে তার কাজগুলো অফিসের লোকজন বেশ আগ্রহ নিয়েই ডেডলাইনের আগে করে দেয়।
একবার জমিজমা সংক্রান্ত কারণে তাকে হুমকি দিতে কিছু লোক অফিসে আসে। উনি তাদেরকে এত সুন্দর করে আপ্যায়ন করে তার রুমে বসিয়ে চা, বিস্কুট খাওয়ার প্রস্তাব দেন, এত ভালো ব্যবহার করেন আর সম্মান দেন যে, হুমকি দিতে আসা লোকগুলো পর্যন্ত মুগ্ধ হয়ে তার সাথে কোলাকুলি করে চলে যায়।”
অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন, চমৎকার ব্যবহার আর সবাইকে সম্মান দিলে কত কিছুই না হতে পারে! অফিসে সবাইকে সম্মান দিয়ে আপনি যেমন আপনার পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে পারবেন, তেমনি আপনি হয়ে যেতে পারেন আপনার অফিসের মধ্যমণি।
দরজা ধরে রাখুন:
যখন আপনি দরজা খুলে কোথাও যাচ্ছেন তখন খেয়াল করুন আপনার পেছনে কেউ আসছে কিনা। যদি কেউ আসে তবে তার জন্য দরজা খুলে ধরে রাখুন। তাকে যেতে দিয়ে এরপর আপনি যান। লিফটে ওঠার পরেও যদি আপনি দেখেন কেউ আসছে তবে তার জন্য লিফট এর দরজা খোলা রাখুন। এটি শুধু Corporate World এই নয়, একটি সার্বজনীন ভদ্রতা।
অতিরিক্ত শেয়ার কিংবা দূরত্ব তৈরি থেকে বিরত থাকুন:
আপনার ব্যক্তিগত জীবন আর পেশাদারি জীবনের মাঝে একটি সীমারেখা টানুন। কাজের জায়গায় গিয়ে সহকর্মীদেরকে আপনার ব্যক্তিগত জীবনে ঘটে যাওয়া কাহিনী বলা নিয়ে বসে যাবেন না। কর্মক্ষেত্রের জন্য এটি উপযুক্ত কাজ নয়।
অতিরিক্ত কিছু শেয়ার করা থেকে বিরত থাকবেন মানে আবার এই নয় যে সহকর্মীদের থেকে দূরত্ব তৈরি করে ফেলবেন। আপনার সহকর্মীরা আপনার সম্পর্কে অল্প কিছু জানতে চাইতেই পারে। সেক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে কোন ব্যাপারগুলো কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদেরকে বলার মত আর কোন ব্যাপারগুলো বলার মত নয়।
রাজনীতি এবং ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা প্রায় প্রতিটা কোম্পানিতেই অনুপযুক্ত হিসেবে ধরা হয়। সেক্ষেত্রে সচেতনতা অবলম্বন করবেন। আর আপনার যদি ব্যক্তিগত কিংবা অসুস্থতাজনিত কোনো ব্যাপার থাকে যেটি আপনার কাজকে প্রভাবিত করবে তবে অফিসের ম্যানেজার কিংবা আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলাদা করে কথা বলে নিন।
মনে রাখবেন, আপনি হয়ত আপনার ব্যক্তিগত জীবনের অনেক কথাই বলে ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি লাভ করতে পারেন, কিন্তু আপনার সহকর্মীরা কিন্তু সেগুলো শুনতে কিংবা নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ নাও করতে পারে।
সবাইকে যার যার মত কাজ করতে দিন:
আপনি হয়ত অনেকের সাথে গল্পগুজব করে কাজ করতে ভালোবাসেন। কিন্তু অনেকেই থাকতে পারে যারা শব্দের মাঝে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। তাদেরকে কাজ করার জন্য যথেষ্ট সুযোগ দিন। কর্মক্ষেত্রে কাজ করার বদলে কারোর সাথে গল্প করবেন না কিংবা অন্য কারোর কথা শোনার জন্য আড়ি পাতবেন না।
অযথা অভিযোগ করবেন না:
অফিসের কোনো একটি ব্যাপারে যদি আপনার নজর পড়ে যেটি অফিসের নিয়ম-কানুন এবং নৈতিকতা বিঘ্নিত করে, তবে ব্যাপারটি নিয়ে ঘ্যানঘ্যান না করে উপযুক্ত ব্যক্তির কাছে খবরটি পৌঁছান।
যদি অন্য কোনো ব্যাপারে আপনার অভিযোগ থাকে, তবে কিছু বলার আগে ভেবে নিন। সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন এবং বিষয়টি নিয়ে কথা বলার সময় ভেবেচিন্তে বলুন। বিষয়টিকে ত্রুটিপূর্ণ বা ভুল হিসেবে আখ্যা দেয়ার পরিবর্তে এটিকে নতুন করে উন্নত করার সুযোগ হিসেবে প্রকাশ করুন।
আপনি আপনার অভিযোগ এর মাধ্যমে অনেক সময় অন্য কাউকে কষ্ট দিয়ে ফেলতে পারেন। যেমন মনে করুন কোনো মিটিং এ লাঞ্চ করার পর আপনি বলে বসলেন খাবার খুবই বাজে ছিল। লাঞ্চ এর দায়িত্বে থাকা আপনার সহকর্মীর হয়ত এতে খারাপ লাগতে পারে। তাই অভিযোগ করার আগে ভেবে বলুন এবং বিষয়টিকে অভিযোগ হিসেবে না প্রকাশ করে পরবর্তীতে কীভাবে ভালো করা যায় তেমন ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে চমৎকার উপায়ে উপস্থাপন করুন।
চাকরিজীবীদের জন্য English
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
২. প্রফেশনালিজম বা পেশাদারিত্ব:
Corporate World এ পেশাদারিত্ব বজায় রাখা বলতে বোঝায় কোম্পানির পরিবেশকে সুন্দর, মনোরম আর উৎপাদনক্ষম করতে অবদান রাখা। প্রফেশনালিজম বজায় রাখতে অনেক ধরণের আচরণের মাঝে যে গুরুত্বপূর্ণ আচরণ বা কাজগুলো করবেন-
সময়ানুবর্তী হোন:
কর্মক্ষেত্র হোক কিংবা কোনো সাক্ষাৎকার অথবা কোনো প্রজেক্টের কাজ ডেডলাইন এর মাঝে শেষ করা গুরুত্বপূর্ণ অনেক। Corporate World এর সব রকমের কাজেই সময়ানুবর্তী হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময় অত্যন্ত মূল্যবান।
যখন আপনি কোনো প্রজেক্টের কাজ ডেডলাইনের মাঝে শেষ করতে ব্যর্থ হন, তখন আপনার পুরো টিম আপনার কাজ শেষ করতে না পারার কারণে পিছিয়ে যায়। একটি প্রজেক্টে থাকা টিমের প্রত্যেক সদস্য একে অপরের উপর নির্ভর করে। আপনি কাজে সময়ানুবর্তী না হলে সেটার জন্য আপনার টিমের সদস্যদের কাজেও সেটার প্রভাব পড়বে এবং তাদেরকে আপনার জন্য ভুগতে হবে।
Corporate World এ প্রফেশনালিজম বা পেশাদারিত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে এটি চরমভাবে বাধা দেয়। তাই পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে চাইলে সময়ানুবর্তী হওয়ার অভ্যাস শুরু করে দিন এখন থেকেই।
শান্ত থাকুন:
Corporate World এ যদিও অনেক কোম্পানিতেই ‘জ্বী, স্যার’ অনুশীলন পরিত্যাগ করা হচ্ছে, তবুও কখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে মতবিরোধ দেখা গেলে অথবা সহকর্মীদের সাথে কোনো কিছু নিয়ে তর্ক শুরু হলে মাথা ঠান্ডা রাখুন এবং যুক্তিসহ আপনার মতামত উপস্থাপন করুন।
কথা দিয়ে কথা রাখুন:
আপনি যখন কাউকে কোনো ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তখন সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করুন। কথা দিয়ে কথা রাখুন – তা সে যত বড় কিংবা ছোট ব্যাপারেই হোক না কেন। যদি কোনো কারণে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা অসম্ভব বলে মনে হয় তবে যত দ্রুত সম্ভব অপরপক্ষকে জানিয়ে দিন।
মানিয়ে চলুন:
কাজের জন্য মাঝে মাঝেই আপনাকে রাত জাগতে হতে পারে, খুব তাড়াতাড়ি উঠতে হতে পারে, পরিকল্পনা বদলাতে হতে পারে, সাক্ষাৎকারের সময় পরিবর্তন করতে হতে পারে। যদি সবসময়ই এমন না হয় তাহলে কোনো অভিযোগ না করে মানিয়ে চলুন।
কূটনীতি ব্যবহার করুন:
Corporate World এ এমন হওয়া খুবই স্বাভাবিক যে, কোনো সহকর্মী বা অফিসে কাউকে আপনার পছন্দ হচ্ছে না কিন্তু তার সাথে কাজ করতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তার কিংবা তাদের সাথে হাসিমুখে কথা বলুন, বিনয়ী থাকুন।
ফোন সরিয়ে রাখুন:
পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে অন্যতম একটি কাজ হচ্ছে সামনের মানুষটিকে বা কাজকে গুরুত্ব দেয়া। এখনকার দিনে আমাদের স্মার্টফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ নিয়ে এত বেশি মোহ তৈরি হয়ে গেছে যে, আমরা মানুষের চেয়ে এইসব বস্তুকে গুরুত্ব দেই বেশি। অনেক সময় দেখা যায় আমাদের সামনে কেউ একজন কথা বলছে আর সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে তিনি স্মার্টফোনে টেক্সটিং করছেন। প্রফেশনালিজমকে এই কাজটি চরম মাত্রায় ব্যাহত করে।
অনেক সময় আমাদের কাজের ক্ষেত্রেও স্মার্টফোন আমাদের মনোযোগে অনেক বেশি বিঘ্ন ঘটায়। এজন্য কারোর সাথে কথা বলার সময়, কাজের সময় কিংবা অন্য যেকোন দরকারে স্মার্টফোন বা মনোযোগ ব্যাহত করে এমন অন্য যেকোন কিছু দূরে সরিয়ে রাখতে হবে।
গঠনমূলক সমালোচনা গ্রহণ করুন:
আপনার পুরো ক্যারিয়ারজুড়েই অনেকে অনেক সময় আপনার বিভিন্ন কাজে ফিডব্যাক দেবে, অনেকে অনেক ভাবেই আপনার কাজের সমালোচনা করবে। আমরা সমালোচনাকে খুব সহজভাবে নিতে পারি না। কিন্তু আপনি যদি লোকজনদেরকে আপনার কাজের সমালোচনা করতে না দেন, তাহলে আপনি নতুন করে আপনার নিজের কোনো কিছু আর উন্নত করতে পারবেন না।
আপনার কাজে যত ভুল হবে, যত লোকজন সমালোচনা করবে, তত আপনি সেসব থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে আগের চাইতেও ভালো করে কাজ করতে পারবেন। সেজন্য কেউ কখনও আপনার সমালোচনা করলে মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনুন এবং নিজেকে আরও উন্নত করার জন্য কাজ করুন।
৩. খাবার টেবিলের শিষ্টাচার:
অনেক সময়েই সহকর্মী কিংবা অফিসের বসের সাথে লাঞ্চ কিংবা ডিনারে কোনো রেস্টুরেন্টে যেতে হতে পারে। আর সেখানে কীভাবে চাকু ব্যবহার করতে হবে কিংবা কাঁটাচামচ ব্যবহার করতে হবে সেটা জানার চাইতেও কিছু শিষ্টাচার জানা বেশি জরুরী। আর মোটামুটিভাবে শিষ্টাচারগুলো জানলে আপনি সব ধরণের পরিস্থিতিতেই খাবার টেবিলে বসে খেয়ে আসার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারবেন।
খাবার টেবিলের শিষ্টাচার নিয়ে লিখতে গেলে পুরো আরেকটি ব্লগ লিখে ফেলা যাবে। আমি এত কিছু লিখতে যাচ্ছি না। তবে যে সাধারণ বিষয়গুলো খেয়াল রাখা প্রফেশনাল জীবনে আপনার জীবনে দরকারি সেগুলো হচ্ছে –
- খাবার টেবিলে বসে ন্যাপকিন আপনার কোলে রাখুন অথবা গলার কাছে পোশাকে ভাঁজ করে ঢুকিয়ে দিন।
- আপনার সাথে যারা খেতে গেছেন, তাদের খাবারের দামের রেঞ্জের মাঝেই খাবার অর্ডার দিন। অতিরিক্ত দামি খাবার অর্ডার দেয়াটা দৃষ্টিকটু দেখায়।
- প্রত্যেকের সামনে খাবার সার্ভ করার আগ পর্যন্ত খাওয়া শুরু করবেন না।
- কোনো খাবার টেবিলের একপাশ থেকে আরেকপাশে না দিয়ে বাম থেকে ডান দিকে দিন।
- মুখ বন্ধ করে খাবার চিবিয়ে খান। আর খাবার মুখে নেয়ার সময় যথাসম্ভব ছোট পরিমাণ হাঁ করে খাবারের অংশ মুখে নিন।
- খাবার সার্ভ করছে যে লোকটি তাকে তুড়ি মেরে ডাকবেন না।
- খাওয়া শেষে ন্যাপকিনটি খানিকটা ভাঁজ করে আপনার প্লেটের বাম পাশে রাখুন।
আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখবেন, আপনি যদি আপনার কোনো সহকর্মী বা অফিসের কাউকে একসাথে কোথাও খাওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন তাহলে তার খাবারের বিল দেয়ার দায়িত্ব আপনার। শুধু Corporate জগতেই নয়, এই শিষ্টাচারগুলো বাস্তব জীবনেও জানা থাকা দরকার।
৪. যোগাযোগের শিষ্টাচার:
আমাদের প্রফেশনাল জীবনের সম্পর্কগুলোর ক্ষেত্রে যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যোগাযোগের শিষ্টাচারকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়-
ফোনে শিষ্টাচার:
- অনেক সকাল কিংবা বেশি রাত কল দেয়ার জন্য বাজে সময়। এমন বাজে সময়গুলোতে কাউকে কল দেবেন না। কারণ, এই সময়গুলোতে কেউ জেগে থাকলেও আপনার সাথে কথা বলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করবে না।
- অফিসিয়াল কল হলে শুরুতেই জিজ্ঞেস করে নিন “এখন আপনার সাথে কথা বলা যাবে কিনা?” যদি অপর পাশের মানুষটি ব্যস্ত থাকে, তবে পরবর্তীতে তিনি ফ্রি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
- কাউকে কল দিয়ে ছোট্ট করে অভিবাদনের মাধ্যমে কথা শুরু করুন। ফোনে কল ধরার সাথে সাথেই কথা বলা শুরু করে দেয়াটা প্রফেশনালিজমের মাঝে পড়ে না।
- সবসময় যাকে কল দিয়েছেন অপর পাশে ফোনে সেই ব্যক্তিটিই আছেন কিনা নিশ্চিত করে তবেই কথা শুরু করুন।
- খুব বেশি জোরে কিংবা আস্তে কথা বলবেন না। আপনার কথা বলার আওয়াজ নিয়ে আপনি বেশী চিন্তিত হলে সরাসরি জিজ্ঞেস করুন,”আপনি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন? আমি কি এই আওয়াজেই কথা বলব?”
- যে বিষয়ে কথা বলতে চাইছেন সেটি নিয়ে কল দেয়ার পূর্বেই একবার ভেবে নেবেন। খেয়াল রাখবেন, কথা বলার বিষয় যেন যথেষ্ট স্পষ্ট হয়।
- যত দ্রুত সম্ভব কথা শেষ করুন। কেননা অপর পাশের ব্যক্তিটি ব্যস্ত হয়ে যেতে পারেন।
- আপনি যদি কোনো কনফারেন্স কলে থাকেন কিন্তু কথা বলছেন না এমন হয়, তাহলে আপনার কলটি মিউট করে দিন। যাতে করে বাকিদের বাইরের শব্দে মনোযোগ ধরে রাখতে অসুবিধা না হয়।
- নাম্বার ডায়াল করার সময় তাড়াহুড়ো করবেন না। যদি কোনো কারণে ভুল নাম্বারে কল দিয়েও ফেলেন তবে কথা-বার্তা ছাড়াই কলটি কেটে দেবেন না। স্যরি বলুন এবং এরপর কল কাটুন।
- ফোনে কথা বলার সময় কিছু চিবোবেন না কিংবা খাবেন না। আগে খাবার শেষ করুন এবং এরপর নাম্বার ডায়াল করুন। আর আপনি যদি বই পড়ার মাঝে থাকেন তাহলে বই একপাশে সরিয়ে রেখে কল ধরুন আর অপর পাশের মানুষটি কী বলছে সেটি মনোযোগ দিয়ে শুনুন।
- কথাবার্তা শেষ হলে সাথে সাথেই কলটি কেটে দেবেন না। নিশ্চিত হোন অপর পাশের মানুষটি আপনাদের কথোপকথনের সব বিষয় ঠিকভাবে বুঝছেন কিনা। এরপর ‘ভালো থাকবেন’ বা ‘আপনার সাথে কথা বলে ভালো লাগলো’ এরকম কিছু বলে কল কাটুন। কল কেটে দেয়ার আগে ‘গুডবাই’ বলবেন না।
- আপনার আশেপাশে টেলিভিশন বা অন্য কোনো কিছুর শব্দ থাকলে সেগুলোর আওয়াজ কমিয়ে দিন। আশেপাশে আওয়াজ থাকলে যোগাযোগে মনোযোগ দেয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
- নেটওয়ার্কে যদি কোনো ধরণের সমস্যা থাকে তাহলে কথা বলতে থাকবেন না। অন্য কোথাও গিয়ে বা পরবর্তীতে নেটওয়ার্ক ভালো হলে কল করে কথা বলুন।
আরো পড়ুন: ইমেইল লেখার সঠিক নিয়ম: কী লিখবেন ও কী এড়িয়ে চলবেন
ইমেইলে শিষ্টাচার:
- অফিসের অভ্যন্তরীণ মেইলগুলোর রিপ্লাই একদিন আর বাইরের মেইলগুলোর রিপ্লাই তিনদিনের মাঝে দেয়ার চেষ্টা করুন।
- মেইলে অতিরিক্ত আশ্চর্যবোধক চিহ্ন এবং স্মাইলি ফেইসগুলো ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
- “Reply All” ব্যবহার না করে “Reply” ব্যবহার করুন।
- সিগনেচার ব্লক ব্যবহার করুন।
- মেসেজের প্রুফরিড করুন।
সাক্ষাতে শিষ্টাচার:
- কারোর কোনো কিছু অপছন্দ হলে সরাসরি বলা হতে বিরত থাকুন। এটি তাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিতে পারে।
- কথা বলার পুরো সময়ের ৬০% – ৭০% সময় চোখে চোখ রেখে কথা বলুন।
- গলার আওয়াজ সমন্বয় করে কথা বলুন।
- অপরপক্ষ যা বলছে সেটি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করুন।
৫. মিটিং এর শিষ্টাচার:
ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে Corporate World -এ মিটিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মিটিং-এই বিভিন্ন টিম প্রজেক্টে তাদের আইডিয়া, স্ট্র্যাটেজি শেয়ার করতে পারে। এতে করে সবাই মিলে কাজ করে এগিয়ে যাওয়া সহজ হয়। মিটিং এর কিছু শিষ্টাচার হচ্ছে-
- মিটিং এ একেবারে শূন্য অবস্থায় যাবেন না। মিটিং কী বিষয় নিয়ে হবে, কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ – এই বিষয়গুলো জেনে যাওয়ার চেষ্টা করুন। দরকারে মিটিং-এ যাওয়ার আগে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলোর উপর নোট করে নিয়ে যান।
- মিটিং-এ যেসব ব্যাপারে আলোচনা হয় সেগুলোর সবই মনে রাখা সম্ভব হয় না। মিটিং-এ তাই কলম আর নোটপ্যাড নিয়ে যান। ছাত্রজীবনে শিক্ষকের লেকচার খাতায় তোলার অভ্যাস না থাকলেও মিটিং-এর গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো নোটপ্যাড এ লিখে রাখা কিন্তু প্রফেশনালিজমের মাঝেই পড়ে।
- মিটিং – এ যাওয়ার পূর্বে সবসময়ই ফোন সাইলেন্ট অথবা ভাইব্রেশন মোডে রাখুন। যাতে করে মিটিং-এর মাঝে হুট করে ফোনে কল আসায় রিংটোন বেজে না ওঠে।
- মিটিং-এর মাঝে কল আসলে সেটি ধরে কথা বলাকে অত্যন্ত বাজে স্বভাব বলে ধরা হয়। খুব বেশি জরুরি না হলে এই কাজটি থেকে বিরত থাকুন।
- মিটিং-এ কখনোই দেরি করে পৌঁছাবেন না। প্রফেশনালদের কাছ থেকে এরকম আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।
- মিটিং-এ চিউইংগাম চিবোনো শিশুসুলভ কাজ এর মধ্যে পড়ে। এটি অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
- মিটিং-এ একজন ভালো শ্রোতা হোন। এখন আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা শুধু কথা বলে যাই; অন্যের বলা কথা শুনতে চাই না। কিন্তু প্রফেশনালিজমের খাতিরে মিটিং-এ প্রত্যেককেই কথা বলার যথেষ্ট সুযোগ দিন এবং সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। আপনার সময় আসলে তখন কথা বলুন।
- মিটিং-এর জন্য রুমে ঢুকে যেখানেই জায়গা খালি পান, বসে পড়ুন। এখানে ওখানে গিয়ে বারবার জায়গা পরিবর্তন করবেন না।
- কেবল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা না বলে থাকলে আপনার চা বা কফির কাপ নিয়ে মিটিং রুমে প্রবেশ করবেন না।
- কলম বা নোটপ্যাড নিয়ে খেলা করবেন না। মিটিং বোরিং মনে হলেও মনোযোগ দিয়ে শুনুন।
- মিটিং রুমে প্রফেশনালিজম বজায় রেখে কথা বলুন। সবাইকে সম্মান দিন।
- মিটিং-এ অবশ্যই ফরমাল পোশাক পরে যাবেন।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা – যিনি মিটিংটির আয়োজন করবেন তাকে অবশ্যই মিটিং এর আগে এর বিষয়বস্তু সম্পর্কে সবাইকে অবগত করতে হবে। যাতে করে অন্যান্যরা সবাই মিটিং এর জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে আসতে পারে। শুধু মিটিং হওয়ার খাতিরে মিটিং ডাকলে হবে না। মিটিং-এ কী ধরণের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে সেগুলোর লিস্ট করতে হবে। সেগুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে এবং মিটিংকে সংক্ষিপ্ত রাখতে হবে।
মিটিং-এ যাদের উপস্থিত থাকার কথা তাদের সবাইকে ইমেইল পাঠাতে হবে এবং ফোনকলের মাধ্যমেও জানাতে হবে। মিটিং-এ আসার পর সবাইকে প্রস্তুত হওয়ার জন্য পাঁচ মিনিট সময় দিতে হবে। মিটিং-এর আয়োজন যিনি করছেন, তাকে অবশ্যই স্পষ্টভাবে জোরে কথা বলতে হবে যাতে উপস্থিত সবাই তার কথা এবং বিষয়বস্তু সম্পর্কে বুঝতে পারে। তবে অতিরিক্ত উঁচু গলায় আওয়াজ করে কথা বলা যাবে না। এতে করে একই ফ্লোরে থাকা অন্যদের বিরক্ত লাগতে পারে। প্রয়োজনীয় আওয়াজ বজায় রেখে কথা বলতে হবে।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
Communication Masterclass by Tahsan Khan
ভার্চুয়াল মিটিং-এ শিষ্টাচার:
প্রযুক্তির এই যুগে মিটিং বলতে সবসময় বদ্ধ একটা ঘরে সবাই মিলে একটা টেবিল এর পাশে বসে গুরুগম্ভীর কথা বলবে এমনটা নাও হতে পারে। এই Skype, Infinite Conferencing এর যুগে মানুষ ঘরে বসেই ভার্চুয়ালি মিটিং-এর কাজ সেরে ফেলে। কিন্তু এই ভার্চুয়াল মিটিং এর ক্ষেত্রেও মেনে চলা উচিত কিছু শিষ্টাচার। এগুলো হচ্ছে –
- ক্যামেরার দিকে তাকান। আপনার নিজের চেহারা কিংবা স্ক্রিনে থাকা অন্যদের চেহারার দিকে তাকাবেন না। তাহলে তাদের কাছে মনে হবে আপনি তাদের সাথে চোখে চোখ রেখে কথা বলছেন।
- দরজা বন্ধ করে ভার্চুয়াল মিটিং-এ উপস্থিত হোন। যাতে করে কোনো রুমমেট, পোষা প্রাণী বা অন্য কেউ বিরক্ত করতে না পারে। মিটিং-এর পূর্বে ক্যামেরাতে কী কী দেখা যাচ্ছে তা দেখে নিন। সবচেয়ে ভালো হয় পেছনে দেয়াল বা কোনো এক রং এর ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করলে।
- আপনিই যদি মিটিং এর আয়োজন করে থাকেন, তাহলে সবাই যাতে কথা বলতে পারে এবং নিজেদের আইডিয়া উপস্থাপন করতে পারে সেই ব্যাপারটি নিশ্চিত করুন।
কর্পোরেট জবে ঢোকার আগেই এতো এতো শিষ্টাচার দেখে হয়তো আপনার মাথা খারাপ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এতগুলো শিষ্টাচার এর একটি ভালো দিক হচ্ছে – একবার যদি আপনি এগুলে জেনে ফেলতে পারেন তবে আপনার কাজে যেমন প্রফেশনালিজম আসবে, আপনি তেমনি অন্যদের সাথে অত্যন্ত পেশাদারভাবে যোগাযোগ করতে পারবেন। আপনার ক্যারিয়ারে তখন উপরের দিকে উঠে যাওয়া খুবই সহজ হয়ে যাবে। আর যেহেতু এই ব্লগে আমরা জেনে গেলাম Corporate World এ ঠিক কী ধরণের শিষ্টাচার অনুসরণ করতে হবে, তাহলে তো আমরা আশা করতেই পারি যে আপনারা এগুলোর চর্চা এখন থেকেই করবেন। তাই না?
তথ্যসূত্র:
- 5 Types of Business Etiquette
- The 10 Basics of Business Etiquette
- 15 rules of good workplace manners
- কোথায় পাবেন কর্পোরেট জব সার্কুলার?
- Corporate Etiquette – Do’s and Dont’s
- কর্পোরেট জব কি ? কর্পোরেট জব বেতন
- 21 Business Etiquette Rules You Should Never Break
- 10 Essential Business Etiquette Tips to Improve Company Culture
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- Adobe Illustrator Course (by Mohammad Yeasir)
- Graphic Designing with Photoshop Course (by Sadman Sadik)
- Graphic Designing with PowerPoint Course (by Anisha Saiyara Taznoor)
- মোবাইল দিয়ে Graphic Designing Course (by Sadman Sadik)
- Facebook Ads Mastery by Mark Anupom Mollick
- Web Design Course (by Fahim Murshed)
- Graphic Design করে Freelancing Course (by Md. Kamruzzaman Shishir and A.S.M Arifuzzaman)
- Communication Masterclass Course by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course (by Ayman Sadiq and Sadman Sadik)
- Data Entry দিয়ে Freelancing Course (by Joyeta Banerjee)
- SEO Course for Beginners (by Md Faruk Khan)
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন