পুরোটা পড়ার সময় নেই ? ব্লগটি একবার শুনে নাও !
তোমরা যারা ২০২১-২২ সেশনে বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা দেবে, তোমাদের কাছে সামনের দিনগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই কয়েকদিনে তোমার ভর্তিপ্রস্তুতি কেমন হবে তা জানার আগে চলো জেনে নেই গতবার কীভাবে প্রাথমিক বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল বুয়েটে।
প্রাথমিক বাছাই:
প্রথমত,
২০২০-২১ সেশনের বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল দুই ধাপে। প্রথম ধাপে ছিল প্রিলিমিনারি বা প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা। এই অংশে উত্তীর্ণ হলেই কেবল পরবর্তী অংশ বা লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ মিলবে।
দ্বিতীয়ত,
প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণদের মধ্যে উচ্চতর গণিত,পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়নে সর্বমোট মার্কের ভিত্তিতে যারা প্রথম ৬০০০ জনের মধ্যে ছিল তাদের নিয়ে প্রকাশ করা হয়েছিল প্রাথমিক বাছাই তালিকা।
ভর্তি প্রস্তুতি:
তোমরা ইতোমধ্যে জানো যে, এ বছরের বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার প্রিলিমিনারি অংশে উচ্চতর গণিতে ৩৪, পদার্থবিজ্ঞানে ৩৩ ও রসায়নে ৩৩- মোট ১০০ নম্বরের বহুনির্বাচনী প্রশ্নে পরীক্ষা হয়েছিল। এছাড়াও লিখিত অংশে উচ্চতর গণিতে ১৪০, পদার্থবিজ্ঞানে ১৩০ এবং রসায়নে ১৩০- এই তিন বিষয়ে মোট ৪০০ মার্কের পরীক্ষা নেয়া হয়ে হয়েছে।
বহুনির্বাচনী অংশে প্রতিটি প্রশ্নের মান ১ এবং লিখিত অংশে প্রতিটি প্রশ্নের মান ১০। বহুনির্বাচনী অংশে সময় থাকে ১ ঘণ্টা আর লিখিত অংশে ২ ঘণ্টা। প্রিলিমিনারি অংশে নির্বাচিত হলেই তুমি লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
তবে প্রশ্নপদ্ধতির ক্ষেত্রে প্রতিবারই কিছু পরিবর্তন আসে। অর্থাৎ সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয় থেকে প্রতিবার প্রশ্ন হয় না। তাই কমন বলে কোনো কিছু নেই। এই চিন্তা তোমাদের দূর করতে হবে।
তবে কিছু কৌশল অবলম্বন করলে তুমি এই ভর্তিযুদ্ধে হতে পারো একজন বিজয়ী বীর। এসো জেনে নেওয়া যাক বিষয়ভিত্তিক সেসব কৌশল।
আরো পড়ুন: ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া স্বপ্ন যাদের, তাদের যা কিছু জানতেই হবে
পদার্থবিজ্ঞান:
পদার্থবিজ্ঞানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তুমি থিওরিগুলো কতটুকু ভালোভাবে বুঝেছ এবং সেগুলো কীভাবে কাজে লাগাচ্ছো। আসলে তোমার থিওরি মুখস্থ করার দরকার নেই, দরকার সেগুলো কাজে লাগানোর।
আমাদের বইগুলোতে কিছু নির্দিষ্ট প্রমাণের জন্য আলাদা করে কিছু সূত্র রয়েছে। তোমার কাজ হচ্ছে শুধু সেই সূত্রগুলো কোন প্রেক্ষিতে আসছে, সেটা ভালোভাবে আয়ত্ত করা। কেননা বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় কখনোই এক সূত্রের অঙ্ক আসে না। তোমাকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সেগুলো সমাধান করে উত্তর বের করে আসতে হবে। এজন্য তোমাকে যেমন বুঝতে হবে, তার সাথে চর্চা করে যেতে হবে।
সাধারণত ১ম পত্রে অঙ্ক বেশি করে দেয়া থাকে, ২য় পত্রে থিওরি বেশি থাকে। শাহজাহান তপন স্যারের বই এবং ইসহাক স্যারের বইয়ের সমাধানের অঙ্কগুলো অবশ্যই ভালো করে তোমাকে করে যেতে হবে। কারণ দেখা গেছে, এই বইগুলোতে করে দেয়া অঙ্কগুলো এইচ. এস. সি’র যেকোনো বইয়ের মাঝেই ঘুরেফিরে করে দেয়া আছে।
পরীক্ষায় অনেক সময় এই অঙ্কগুলো হুবহু চলে আসে শুধু মান আলাদা থাকে। আর এই সময়ে যে জিনিসটা বুঝতে পারছ না, অবশ্যই যে জানে তার কাছে বুঝে নিবে। অঙ্কগুলোর একক, অন্য এককে রূপান্তর করা এই বিষয়গুলো এখন থেকেই ভালোভাবে তোমাকে আয়ত্ত করতে হবে। কেননা এক অঙ্কেই যেসবের মান দেয়া থাকে সেগুলো আলাদা হয়ে থাকে।
আর একটা বিষয় মাথায় রাখবে, অনেক বড় লেখার অঙ্কের কোনোকিছু দেখে ঘাবড়ে যেও না, অপেক্ষাকৃত সেই অঙ্কগুলোই বেশি সহজ হয়ে থাকে। তবে তুমি কোনো কিছু সম্পূর্ণ না পারলেও সূত্র জেনে থাকলে লিখে দিয়ে আসবে।
রসায়ন:
রসায়ন হচ্ছে ভর্তি পরীক্ষায় তোমাকে এগিয়ে দেয়ার অন্যতম এক হাতিয়ার। অনেকেই ভাবছ এটা কীভাবে সম্ভব? আসলেই তাই। একটু মাথা খাটিয়ে পড়লেই তুমি রসায়নে ভালো করবে- এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।
রসায়নের ২ পেপারেই ১ম এবং ৫ম অধ্যায়ের পড়াগুলো প্রায় একইভাবে পড়তে হয়। এখানে বেশিরভাগই জ্ঞাননির্ভর প্রশ্ন থাকে। তাহলে ১০ নাম্বারের প্রশ্নে সেগুলো কীভাবে আসবে? আমাদের যেমন ৪টি আলাদা আলাদা বস্তুর pH লিখতে বলা হয়েছিল। আবার কোন রাসায়নিক বস্তু কীভাবে তৈরি হয় সেটার উপাদানসহ লিখতে বলা হয়েছিল। তাই খুব ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।
১ম পত্রে বেশিরভাগ হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের বৈশিষ্ট্যভিত্তিক আচরণ মনে রাখা। এই বৈশিষ্ট্যগুলো খুব ভালো করে আয়ত্ত্ব করতে হবে। বারবার লিখে মনে রাখতে হবে। রাসায়নিক সমীকরণ, বিভিন্ন মৌল, যৌগের সংকেত, তাদের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
২য় পত্রে জৈবযৌগের প্রতি ভীতি রয়েছে অনেকেরই। চিন্তা নেই। অনেক সময় তোমাদের হাতে আছে। তুমি এখন থেকেই নোট করে পড়া শুরু কর।
কোন যৌগ থেকে অন্য যৌগ উৎপন্ন হয়, কোন অবস্থায় এক যৌগের পরিবর্তে অন্য যৌগ তৈরি হয়, কোনো যৌগের সাথে অন্য যৌগের কী বিক্রিয়া হয় এবং সেই যৌগ থেকে আর কী কী উৎপাদ পাওয়া যায়, বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগের রাসায়নিক গঠন, নাম, বিক্রিয়া ইত্যাদি তুমি নোট করে পড়ার অভ্যাস রাখলে পরীক্ষার আগে শুধু চোখ বুলিয়ে নিলেই পারবে।
এরপর তোমাকে কিছু অঙ্ক করতে হবে রসায়নের। যেমন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের, pH বের করার, রাসায়নিক সাম্যাবস্থা ইত্যাদি আরো বেশ কিছু। সূত্র মনে রাখলেই হয়, বেশি কঠিন আসার সম্ভাবনা খুবই কম।
আরো পড়ুন: আমার ভর্তিযুদ্ধের গল্প!
উচ্চতর গণিত:
গণিত বিষয়টা সবটুকুই হচ্ছে তোমার চর্চার উপর। কারণ চর্চা ছাড়া এখানে ভালো করার অবকাশ নেই। প্রথমেই বলে নেই, অঙ্ক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বই থেকেই আসে। তাই ঘাবড়ে যেও না। এখন প্রশ্ন হলো কোন বই থেকে?
তুমি যদি এস. ইউ. আহমেদ স্যারের বইয়ের অঙ্ক করে থাকো, তাহলেও ঠিক আছে আবার যদি কেতাব স্যার বা বোর্ডের অনুমতিপ্রাপ্ত অন্য বইয়ের অঙ্ক করে থাকো তাহলেও কোন সমস্যা নাই। অঙ্ক বোর্ড প্রদত্ত বই থেকেই হয়ে থাকে। তবে একটা কথা মাথায় রাখতে পারো যে, কেতাব স্যারের বইয়ে কিছু বেশি নিয়মের অঙ্ক করে দেয়া আছে, যেগুলো মাঝে মাঝে খুব উপকার করে।
এবার আসি কীভাবে পড়লে ভালো করা যেতে পারে?
বুয়েটে মোটামুটি সব অধ্যায় থেকেই কমবেশি প্রশ্ন আসে। তাই এটা বলা যাবে না যে এখান থেকে আসবেই। ধরে নিচ্ছি তুমি কলেজে মোটামুটি অনুশীলনীর সব অঙ্ক করে এসেছ। তাই এখন তোমার কাজ হচ্ছে সেই অঙ্কগুলো একবার চোখ বুলিয়ে বুয়েটের বিগত প্রশ্নগুলো সলভ করা।
কেননা প্রশ্নগুলো তোমার জানাশোনার মধ্যেই আসবে কিন্তু কিছু ব্যতিক্রম ব্যাপার থাকে এখানে, তোমার কাজ হচ্ছে সেটা খুঁজে বের করে সমাধান করা। তাই যত বেশি প্রশ্নব্যাংকের অঙ্ক সলভ করবে ততই তুমি দক্ষ হয়ে উঠবে। তবে অবশ্যই আগে বইয়ের অঙ্ক তোমাকে করতে হবে।
কোন কিছু না বুঝলে তা ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেবে না
আর একটি ব্যাপার, অনেক সময় তোমার জানার মাঝে প্রশ্ন আসবে কিন্তু দেখবে যে প্রশ্নের উত্তর দেখতে একটু আলাদা রকমের। ভয় নেই। আগে চেনা উত্তর বের করে সেটা থেকে তুমি চাওয়া উত্তর আনার চেষ্টা করবে। আর ক্যালকুলাসের উপর জোর দিবে। ক্যালকুলাসের অঙ্ক পারলে ভর্তি পরীক্ষায় তা অনেক সহায়ক হবে বলে আশা রাখি।
কিছু ব্যাপার যা তোমাকে মাথায় রাখতে হবে:
১. হাজার হাজার জনের মাঝ থেকে তোমাকে টিকে থাকতে হবে। সেই মানসিকতা তৈরি করতে হবে এখন থেকেই। কিন্তু তোমাকে ঘাবড়ে গেলে হবে না। তোমাকে নিজের জায়গা নিজের মেধা দিয়েই অর্জন করতে হবে।
২. সময় একদম অপচয় করা যাবে না।
৩. কে কত ভালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে সেটা একদমই খেয়াল রাখবে না। তুমি শুধু নিজের প্রস্তুতি ভালো করে নেবে।
৪. কোনো কিছু না বুঝলে তা ভবিষ্যতের জন্য রেখে দিবে না। অবশ্যই সময় থাকতে তা বুঝে নেবে।
৫. বুয়েটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছো, তাই অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কীভাবে চান্স পাব-এসব নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাবে না। তোমার লক্ষ্য অটুট রাখবে সবসময়।
৬. পড়ার মাঝে হতাশা আসে, স্বাভাবিক। এই হতাশা কাটিয়ে উঠতে আবার পড়ালেখা ছেড়ে দিও না। একটু অবসর কাটিয়ে আবার পুরোদমে শুরু করো।
৭. তোমাকে চান্স পেতেই হবে-এই চিন্তা করে পরীক্ষা দিতে যাবে না। তোমাকে নিজের সেরাটা দিতে হবে, এটাই তোমার মূলমন্ত্র।
৮. স্বাস্থ্যের প্রতি অবশ্যই যত্নবান হও।
কোর্সটিতে শিক্ষার্থীরা পাবে:
বুয়েট কোশ্চেন সলভ কোর্স
সকলের প্রতি শুভকামনা রইলো।
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- HSC Bangla Course
- ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩
- SSC 2023 শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কোর্স [বিজ্ঞান বিভাগ]
HSC 2023 ব্যাচের জন্য
- HSC 2023 শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কোর্স বান্ডেল
- HSC 2023 শর্ট সিলেবাস ক্র্যাশ কোর্স [বিজ্ঞান বিভাগ]
- HSC 2023 শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কোর্স [বিজ্ঞান বিভাগ]
- HSC 2023 শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কোর্স [বাংলা, ইংরেজি, ICT]
HSC 2024 ব্যাচের জন্য
- HSC 2024 ক্র্যাশ কোর্স – প্রথম পত্র [বিজ্ঞান বিভাগ]
- HSC 2024 ক্র্যাশ কোর্স – দ্বিতীয় পত্র [বিজ্ঞান বিভাগ]
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন