পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবার শুনে নাও।
অনেককেই দেখি রুটিন তৈরি করে পড়ালেখা করতে। বিশেষ করে যারা ক্লাসের প্রথম সারির ছাত্র তারাই এটি বেশি করে। কোন কাজ কখন করবে তার সব আগে থেকেই ঠিক করা থাকে। কিন্তু কষ্ট করে সময় ব্যয় করে এটি তৈরি করে কি কোন লাভ হয়?
প্রশ্নটা যাদের এমন, তাদের জন্যই লিখছি। স্কুল কলেজে থাকতেই দেখতাম রুটিনের উপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের তিনভাগে ভাগ করা যায়। যারা রুটিন তৈরি করে এবং তা মেনে চলে, যারা রুটিন তৈরির ধার ধারে না আর যারা রুটিনওয়ালাদের নিয়ে কৌতূহলী থাকে।
আমি ছিলাম তৃতীয় দলে। আর তাই বেশ আগ্রহ ছিল রুটিন যারা বানায় তাদের প্রতি। এমনকি আমি তাদের রুটিন সংগ্রহও করে রাখতাম।
কিন্তু ঐ পর্যন্তই। নিজের আর রুটিন করা হয়নি। শেষে যখন একটা রুটিন করে পড়া শুরু করলাম তখন কলেজের সেকেন্ড ইয়ারের অর্ধেক পার হয়ে গেছে। কিন্তু দেখলাম রুটিন মেনে চললে কেমন যেন একটা ভালো লাগা কাজ করে। আর তার সাথে তো আরো অনেক সুফল আছেই। সেগুলো নিয়েই লিখছি আজ:
১। খেলার সময় খেলা, পড়ার সময় পড়া:
এই একটা কথা সেই ছোটবেলা থেকেই বড়দের কাছে শুনে আসছি- খেলার সময় খেলা, পড়ার সময় পড়া। এটি যদি মেনে চলা যায় তাহলে বড়দের খুশি করা যায়। যে কাজের জন্য যে সময় সে কাজ সেই সময়ে করলে কাজটিও ভালোভাবেই করা যায়। আর তাই এই কথাটি আমরা প্রায়ই শুনে থাকি।
যদি আমরা রুটিন মেনে চলি তাহলে খুব সহজেই এটি পালন করতে পারব। খেলার জন্য সময়টুকুতে খেলা, পড়ার সময়টুকুতে পড়া, অন্য কাজের সময়ে অন্য কাজ- এভাবে যদি আমরা চলতে পারি তাহলে দেখা যাবে আমরা সব কাজই ঠিকঠাক মতই করতে পারছি। এজন্য রুটিন আমাদের ভীষণ প্রয়োজন।
২। রুটিন প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন শেষ করতে সহায়তা করে:
একটি রুটিনে উল্লেখ থাকে কখন কী কাজ করতে হবে। যদি আমরা রুটিন ধরে ধরে সেই কাজগুলো করি এবং সেগুলো সময়মত শেষ করি, তাহলে আমাদের প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন শেষ করে ফেলতে পারব।
কিন্তু যদি রুটিন না থাকে, তাহলে বুঝতে পারব না কোন কাজের জন্য কতটুকু সময় নিলে অন্য কাজে তার প্রভাব পড়বে না বা কোন কাজ কখন করলে ভালো হবে। আবার দেখা যাবে যে কখন কোন কাজ করতে হবে তা খুঁজতে খুঁজতেই সময় চলে যাবে। ফলে কাজ আর শেষ করা হবে না।
রুটিন থাকলে একটা লক্ষ্য থাকে যে, এইটুকু সময়ের মাঝে এই কাজ শেষ করতে হবে বা আজকের মধ্যে এই কাজগুলো শেষ করতে হবে। এভাবে রুটিন আমাদের প্রতিদিনের কাজগুলো সেইদিনই শেষ করতে সহায়তা করে।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
Personal Finance Course
৩। রুটিন আমাদের সময় বাঁচায়:
রুটিন আমাদের সময় নষ্ট করা থেকে বিরত রাখে। শুধু একভাবে না, নানাভাবে রুটিন আমাদের সময় বাঁচায়। রুটিনে প্রতিটি কাজ ও তার জন্য কতটুকু সময় প্রয়োজন তা আগে থেকেই ঠিক করা থাকে। প্রতিটি কাজের জন্য বরাদ্দ সময় যদি আমরা সঠিকভাবে ব্যবহার করি তাহলে আমাদের অনেকটা সময় বেঁচে যায়।
এছাড়াও, রুটিনে যেহেতু প্রতিটি কাজের কথা আগে থেকেই লেখা থাকে, সেহেতু একটা কাজের পর আমাদের ভাবতে বসতে হয় না যে এরপর কোন কাজ করতে হবে। ফলে এই ভাবার সময়টুকুও বেঁচে যায়।
আরো পড়ুন: এশিয়া মহাদেশ: জেনে নিন বিস্তারিত
আর তাছাড়াও, রুটিনে আগে থেকেই পরিকল্পনা করা থাকে বিধায় প্রতিদিন পরিকল্পনা করার জন্য সময় নষ্ট হয় না।
সবচেয়ে বড় কথা হল, কোন সপ্তাহের রুটিন তৈরি করতে গেলে প্রায় পুরোটাই আগের সপ্তাহের সাথে মিলে যায়। আর তাই খেটেখুটে একটা রুটিন বানাতে পারলে পরেরগুলো বানাতে বেশি সময় নষ্ট করতে হয় না।
৪। নিজের জন্য সময় রাখা যায়:
একটু আগেই বলেছি যে রুটিন আমাদের সময় বাঁচায়। সেই সময় থেকে কিছুটা সময় আমরা নিজের জন্য রাখতে পারি।
রুটিন নিজেই একটা নিয়ম
যদিও আমরা নিজের জন্য কিছুটা সময় রাখার চেষ্টা করি, কিন্তু রুটিন না থাকলে দেখা যায় সেই সময়টুকুও কোন না কোনভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে দিনশেষে একটু অতৃপ্তি নিয়েই থাকতে হয় আমাদের। কিন্তু রুটিন মেনে চললে আমরা সেখানে নিজেদের জন্যও একটা সময় আলাদা করে রেখে দিতে পারি।
৫। নিয়ম মেনে চলার অভ্যাস তৈরি হয়:
রুটিনে যে কাজগুলো যে সময়ে দেয়া আছে, আমরা চেষ্টা করি সেই সময়েই সেই কাজটি করার। প্রতিদিন এভাবে সময় মেনে কাজ করলে সময়ানুবর্তিতা বৃদ্ধি পায়। এর পাশাপাশি নিয়ম মেনে চলার অভ্যাসও বৃদ্ধি পায়।
কারণ, রুটিন নিজেই একটা নিয়ম। প্রতিদিন একটা মানুষ কীভাবে চলবে সেই নিয়ম। আর তাই, আমরা যদি প্রতিদিন রুটিন অনুযায়ী কাজ করি তাহলে আমাদের মধ্যে নিয়ম মেনে চলার অভ্যাসটা তৈরি হবে। যদি রুটিন না থাকে তাহলে এই অভ্যাস সহজে তৈরি হয় না।
৬। কর্মদক্ষতা বাড়ে:
রুটিন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় কাজগুলো প্রতিদিন করতে সহায়তা করে। অথচ রুটিন না থাকলে হয়তো এগুলোর মধ্যে কিছু কিছু কাজ প্রতিদিন করা হয় না। এভাবে প্রতিদিন একই কাজ করার মাধ্যমে আমাদের কর্মদক্ষতা বাড়ে।
একে কাজে লাগিয়ে আমরা নতুন নতুন অভ্যাস গড়ে তুলতে পারি বা নতুন কিছু শিখতে পারি। যেমন- যদি চাই কোন নতুন ভাষা শিখব এবং প্রতিদিনের রুটিনে ৪০-৫০ মিনিট করে সময় রাখি সেই ভাষা শিখতে, সেই রুটিন মেনে চললে অবশ্যই সেই নতুন ভাষার অনেকটাই আমরা শিখে নিতে পারব।
একটা রুটিন শুধুমাত্র একটা রুটিন না, এটি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনকে শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসার হাতিয়ার। শৃঙ্খলাই একজন ছাত্রকে একাধারে ভালো ছাত্র ও ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলে। যদি একটি সুন্দর রুটিন মেনে চলা যায় তাহলে আমাদের প্রতিদিনের জীবন আরো গোছালো আর সুন্দর হবে। এজন্যই রুটিন তৈরি করা প্রয়োজন।
এখন তো জানলে কেন রুটিন তৈরি করা প্রয়োজন। তাই বসে না থেকে তৈরি করে ফেলতে পারো সুন্দর একটি রুটিন যা তোমাকে আরেকটু গোছালো হয়ে উঠতে সহায়তা করবে। রুটিন তৈরির সময় কোন কোন দিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন, সে সম্পর্কে লেখা নিয়ে আসব শীঘ্রই, ইনশাআল্লাহ।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
ঘরে বসে Spoken English
১০ মিনিট স্কুলের অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Study Smart Course by Seeam Shahid Noor
আপনার কমেন্ট লিখুন