Study Abroad: বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চাইলে যা যা করতে হবে

October 29, 2023 ...

আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে Study Abroad সংক্রান্ত অসংখ্য সেমিনার বা ফেসবুক গ্রুপের দেখা মেলে। সেখানে একেক জনের একেক মতামত। যারা বাইরে higher studies এর জন্য যেতে চান, তারা উল্টো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান এত এত ভিন্নমত দেখে। আবার অনেকে শুধু স্বপ্নই দেখে যান বাইরে পড়াশুনা করার। কেবল বিদেশে পড়তে চাইলেই তো হবে না, সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়াও প্রয়োজন।

তাই কীভাবে একদম শুরু থেকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে, কীভাবে কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করতে হবে, স্কলারশিপ কীভাবে পাওয়া যায়, কী কী কাগজপত্র লাগবে— Higher Studies নিয়ে বিস্তারিত জানতে ঝটপট এই ব্লগটা পড়ে ফেলুন! কারণ এই ব্লগে আমরা বিদেশে উচ্চশিক্ষা প্রস্তুতির সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে আলোচনা করবো!

 

সঠিক দেশ ও কোর্স বাছাই

প্রথমেই আপনাকে ঠিক করতে হবে যে আপনি কোন দেশে পড়তে যেতে চান। সব দেশে সব বিষয়ের একই চাহিদা থাকে না। তাছাড়া একেক দেশের পড়াশোনা, খরচ, ভর্তি চাহিদায় পার্থক্য আছে। তাই নিজের পছন্দের দেশ ও কোর্স নির্বাচন করার আগে যা যা মনে রাখবেন:

  • Study Abroad এর ক্ষেত্রে আপনি কোন বিষয়ে নিয়ে পড়তে আগ্রহী এবং আপনার ক্যারিয়ারের উদ্দেশ্য কী তা ঠিক করতে হবে।
  • উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করে আসার মতো বাজেট বা আর্থিক সামর্থ্য আপনার আছে কি নেই তা জানা জরুরি। 
  • ভাষা দক্ষতার সনদ লাগবে, নাকি লাগবে না তা জানতে হবে।
  • ভিন্ন সংস্কৃতি, জীবনধারা বা আবহাওয়ায় মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা আপনার আছে কি নেই সেটা বোঝাও জরুরি।

 

দেশ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স শর্টলিস্ট করার আগে

কোন কোন দেশে আবেদন করতে চান তার একটা লিস্ট তৈরি করে নিন। তাহলে সব তথ্য এক জায়গায় থাকবে। লিস্ট তৈরির সময় যা যা খেয়াল রাখবেন:

  • যে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান, Study Abroad-এর ক্ষেত্রে সেগুলোর র‍্যাঙ্ক কতো বা তা কত মর্যাদাপূর্ণ।
  • জব মার্কেটে সেই দেশগুলো বা কোর্সগুলোর সুযোগ কেমন।
  • ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা আছে কি নেই।
  • সেই দেশের জীবনযাত্রার মান কতটা উন্নত এবং কতটা নিরাপদ।
  • আপনার যদি রিসার্চ ফিল্ডে কাজ করার ইচ্ছে থাকে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের আগে দেখে নিন সেখান থেকে প্রতিবছর কয়টি জার্নাল পাবলিশ করা হয় এবং তাদের র‍্যাঙ্ক কেমন। একইসাথে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রি কানেকশন কেমন তা জানাটাও জরুরি।
  • আবার আপনি যদি রিসার্চের বাইরে অন্য ক্যারিয়ার সেক্টরে কাজ করতে চান, সেক্ষেত্রে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার সার্ভিস ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্ক কেমন তার খোঁজ নিন।
  • যেই দেশে পড়তে যেতে চান সেই দেশের জব মার্কেট ও আপনার ফিল্ডের  চাহিদা কেমন সেটা রিসার্চ করুন। এক্ষেত্রে লিংকডইনের সাহায্য নিতে পারেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম সার্চ দিলেই অ্যালামনাইদের আইডি পেয়ে যাবেন। সেখান থেকে ক্যারিয়ার গোল কেমন হওয়া উচিত তার একটা ধারনা পাবেন৷

 

নিচের ছকে দেশের ভিত্তিতে- Study Abroad এর ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোর উপর বিশেষ লক্ষ্য রাখা উচিত তা দেওয়া হলো: 

যুক্তরাজ্য থাকা-খাওয়ার খরচ ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্ক। 
যুক্তরাষ্ট্র ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা ও ট্রেইনিং এর সুবিধা।
কানাডা ভাষা দক্ষতার যোগ্যতা, ওয়ার্ক পারমিট
অস্ট্রেলিয়া চাকরির সুযোগ, রিজিওনাল সুবিধা
নিউজিল্যান্ড রিসার্চ ফিল্ডে কাজ করার সুবিধা-অসুবিধা
জার্মানি ভাষা দক্ষতার যোগ্যতা এবং চাকরি বাজারের বর্তমান অবস্থা৷ 
ফিনল্যান্ড রিসার্চের সুযোগ ও স্টুডেন্ট সাপোর্ট সার্ভিস। 

 


Study Abroad এর জন্য সঠিক দেশ ও কোর্স নির্বাচনের ক্ষেত্রে যদি আপনার আরো কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে এই বিষয়ের উপর করা ভিডিওটি দেখে ফেলুন! 


ভর্তির সময়

আমাদের দেশের মতো বিদেশি ভার্সিটিগুলোতে বছরে কেবল একবার ভর্তি পরীক্ষা হয় না। আবার সারা বছর ধরেও ভর্তি প্রক্রিয়া চলতে থাকে না৷ সাধারণত বছরে দুইটা ইনটেকের মাধ্যমে বাইরের দেশগুলো তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনা করে৷ তবে কিছু কিছু দেশে এর তারতম্য রয়েছে। যেহেতু একেক দেশে একেক সময়ে সেমিস্টার শুরু হয়, তাই বাইরে আবেদনের সময় খেয়াল রাখবেন। 

যুক্তরাজ্য বছরে একাধিক ইনটেকে শিক্ষার্থী নিয়ে থাকে৷ তবে তা সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হয়৷ যুক্তরাষ্ট্র সামার, ফল ও স্প্রিং, এই তিন ইনটেকে ভর্তি নেয়৷ কানাডায়ও এই তিন ইনটেকেই ভর্তি নেওয়া হয়। অস্ট্রেলিয়া সেটি আবার ফেব্রুয়ারি, জুলাই আর নভেম্বরে। নিউজিল্যান্ডে ইনটেক ব্যবস্থা ইউনিভার্সিটি ভেদে ভিন্ন হয়। সাধারণত জানুয়ারি, জুলাই এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বর ও নভেম্বরে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়। জার্মানিতে সাধারণত উইন্টারে সেমিস্টার শুরু হয় এবং সামারেও ভর্তি প্রক্রিয়া চলে। আর ফিনল্যান্ডে অটাম ও স্প্রিং ইনটেকে। 

 

আর্থিক সামর্থ্য 

কোথাও পড়ার আর্থিক সামর্থ্য আপনার আছে কি নেই তা শুধু টিউশন ফি দেখলেই হবে না। বরং Study Abroad এর ক্ষেত্রে আপনি যেই দেশে যাচ্ছেন, সেই দেশে থাকার মতো আর্থিক সামর্থ্য আপনার আছে নাকি, সেইটাও বিবেচনায় রাখতে হবে। তাছাড়া:

  • টিউশন ফি কতো, কোনো স্কলারশিপ আছে কি নেই।
  • জীবনযাত্রার খরচ। 
  • ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের পার্ট-টাইম চাকরির সুযোগ আছে কি নেই তাও দেখে রাখতে হবে৷ 

 

প্রস্তুতি নেওয়ার সঠিক সময়

বিদেশে পড়তে চাইলে শুধু ডকুমেন্ট সাবমিট করলেই হবে না, আনুষঙ্গিক প্রস্তুতিটাও নিতে হবে৷ এই যেমন:

  • IELTS সহ GRE, GMAT, TOEFL, SAT এর মত স্ট্যান্ডার্ড টেস্টস দিতে চাইলে এখনই একটা টাইমলাইন বানিয়ে ফেলুন। আর সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিন। 
  • Transcript, Letter of Recommendation, Statement of Purpose (SOP) এসব এক জায়গায় গুছিয়ে রাখুন। 
  • যেই দেশ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান, সেখানে কোনো স্কলারশিপ প্রোগ্রাম বা ফাইন্যান্সিয়াল এইড আছে নাকি তা নিয়ে রিসার্চ করুন৷ 

 

IELTS Course by Munzereen Shahid

কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • IELTS পরীক্ষার বিভিন্ন অংশের ফরম্যাট, প্রশ্ন ও উত্তরের ধরন, গুরুত্বপূর্ণ টিপস, ট্রিকস ও স্ট্র্যাটেজি।
  • IELTS Reading, Listening, Speaking ও Writing, প্রতিটি মডিউলের নিয়ম-কানুনসহ খুঁটিনাটি বিষয়াদি।
  •  

    আবেদনের যোগ্যতা

    একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য আবেদনের যোগ্যতা অর্থাৎ Eligibility Criteria একেক রকম হয়ে থাকে। তাই কোথাও আবেদন করার সময় সার্কুলারে কী কী চাওয়া হয়েছে তা মনোযোগ দিয়ে দেখুন।

    Minimum CGPA কত হতে হবে, কম সিজিপিএ নিয়েও আবেদন করা যাবে নাকি, IELTS বা GRE-তে ন্যূনতম স্কোর কত হতে হবে এগুলো আগেই জেনে নিতে হবে। 

    যেসব দেশ ও শহর Higher Studies-এর জন্য জনপ্রিয়:

    যুক্তরাজ্য লন্ডন, ম্যানচেস্টার, এডিনবার্গ 
    যুক্তরাষ্ট্র নিউইয়র্ক, সান ফ্রান্সিসকো, বোস্টন
    কানাডা টরেন্টো, ভ্যানকুভার, মন্ট্রিয়ল 
    অস্ট্রেলিয়া সিডনি, মেলবোর্ন, ব্রিসবন
    নিউজিল্যান্ড অকল্যান্ড, ওয়েলিংটন, ক্রাইস্টচার্চ
    জার্মানি বার্লিন, মিউনিখ, ফ্র‍্যাংকফুট
    ফিনল্যান্ড হেলসেংকি, এস্পো, টাম্প্রে

     

    IELTS LIVE Batch

    এই কোর্সটি আপনাকে কীভাবে সাহায্য করবে?

  • IELTS পরীক্ষায় আসতে পারে এমন প্রশ্ন ও সমাধান করার এক্সপার্ট টেকনিকসমূহ।
  • কিভাবে ইংরেজিতে সাবলীলভাবে কথা বলবেন।
  • ১২ সপ্তাহে IELTS পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি।
  • Time এবং Answer যেভাবে Structure করলে বেশি ব্যান্ড স্কোর করা যায়।
  •  

    Study Abroad এর জন্য যেসব বিষয় জেনে রাখা ভালো

    বিদেশে Higher Studies এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া কিন্তু খুব একটা সহজ না। আপনাকে অনেক অনেক ডকুমেন্ট সামলে রাখতে হবে, প্রচুর রিসার্চ করতে হবে। তবে একটু টেকনিক্যালি কাজ করলে সবকিছুই সহজ মনে হবে! এর জন্য আপনি:

    • বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের যোগ্যতা ও আবেদনের শেষ সময় কোথাও নোট করে রাখুন৷ 
    • আবেদন প্রক্রিয়ার একটা চেক লিস্ট বানিয়ে নিতে পারেন৷ 
    • আজকাল প্লে-স্টোর বা অ্যাপ স্টোরে অনেক ফ্রি নোট টেকিং অ্যাপস পাওয়া যায়। তথ্যগুলো গুছিয়ে রাখতে ওই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন৷ 
    • এখন অনলাইনেই Study Abroad সংক্রান্ত অসংখ্য রিসোর্স বিনামূল্যে পাওয়া যায়৷ সেসব ওয়েবসাইট, ব্লগ ও ফোরাম ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তারিত সব তথ্য জেনে নিতে পারেন। একইসাথে scholarship ও ভর্তি প্রক্রিয়াও সেখানে লেখা থাকে৷ 
    • স্টুডেন্ট ফোরামগুলোর মাধ্যমে অনলাইনেই Study Abroad নিয়ে বিভিন্ন টিপস পাওয়া যায়। 
    • প্রফেশনাল কারো থেকে সাজেশন চাইলে কোনো এডুকেশন কনসালটেন্ট এর সাথে কথা বলতে পারেন৷ তারা আপনাকে সেই বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দিবে। 
    • যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে চান, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের  study abroad office- এ যেয়ে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।  
    • আজকাল ফেসবুকে নানান Study Abroad গ্রুপের দেখা মেলে। এসব জায়গায় যারা আগে থেকেই বাইরে পড়াশোনা করছেন, তারা নতুনদের উদ্দেশ্যে Higher Study নিয়ে নানান পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ওইসব গ্রুপ ঘুরে আসতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন কনসালটেন্ট এজেন্সি Study Abroad শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে, সেখান থেকে গাইডলাইন চাওয়ার পাশাপাশি নানান তথ্য জেনে নিতে পারেন৷ আপনার কোনো সিনিয়র বা বাইরে পড়ছে এমন কোনো আত্মীয় থাকলে তার সাথেও আলোচনা করতে পারেন৷ 
    • একেক দেশের সংস্কৃতি যে একেক রকম হবে, তা খুব স্বাভাবিক। তাই ওই দেশে থাকতে হলে সে দেশের সংস্কৃতিতে আপনি মানিয়ে নিতে পারবেন কিনা, আপনার পড়াশোনায় কোনো প্রভাব ফেলবে কি ফেলবে না। 
    • যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের যোগ্যতা কিংবা আর্থিক সামর্থ্য নেই, সেসব জায়গায় আবেদন করারও কোনো দরকার নেই। যেসব দেশে পড়তে চান, সেখানের ৩-৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করুন। 

     


    বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের আগের প্রস্তুতি কেমন হবে তা জানতে এই ভিডিওটি দেখে নিন!

     


    Study Abroad এর জন্য আবেদন করার আগের চেকলিস্ট

    আবেদনের জন্য যা যা প্রয়োজন 

    • পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র। 
    • পাসপোর্ট নবায়ন করতে হলে নবায়ন করে ফেলুন। এসব কাজ আবেদনের ৬ মাস আগে থেকেই করে ফেলা উচিত৷ 
    • একাডেমিক ও নন-একাডেমিক ডকুমেন্ট গুছিয়ে রাখা। যেমন: এসএসসি, এইচএসসি, স্নাতকের সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট, টেস্টিমোনিয়াল।
    • CV
    • Studentship Certificate  
    • Medium of Instructions
    • প্রোগ্রামের মেয়াদ।
    • ইন্টার্নশিপ বা লিডারশিপের দক্ষতা। আপনি যদি জার্মানি যেতে চান, তাহলে আপনার চাকরির অভিজ্ঞতা যত বেশি থাকবে, আপনার সুবিধাও তত বেশি হবে। 
    • Statement of Purpose  বা SOP 
    • Letter of Recommendations  LOR
    • আর্থিক সামর্থ্যের কাগজপত্র।
    • GRE/GMAT, SAT বা ACT বা IELTS ও TOFEL score 

    প্রতিটা ডকুমেন্ট ট্রান্সলেট ও কোনো সরকারি কর্মকর্তা থেকে  অ্যাটেস্টেড করে নিতে হবে৷ 

     

    ভাষা দক্ষতার প্রমাণ

    আপনি যেই দেশে পড়তে যাবেন, সেই দেশের ভাষাটা জানা খুবই জরুরি৷ তাই বাইরের দেশগুলোতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী নেওয়ার আগে তারা ভাষা দক্ষতার সনদ দেখতে চায়৷ ভর্তির সার্কুলারে দেখে নিন আপনার বিশ্ববিদ্যালয় কোন টেস্টের স্কোর চেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোতে ইংরেজি ভাষার জন্য আইএলটিএস বা টোফেল স্কোর চাওয়া হয়৷ আর ফ্রেঞ্চ ভাষা প্রচলিত এমন দেশ যেমন ফ্রান্স ও কানাডায় ডিইএলএফ বা ডিএএলএফ স্কোর জানতে চাওয়া হয়। 

     

    ক্রেডিট ট্রান্সফার

    ধরা যাক, দেশে স্নাতক করার মাঝে মনে হলো বাইরের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যেতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু আপনি এখন তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। সেক্ষেত্রে বাইরে পড়তে হলে কি একেবারে প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করতে হবে? না, তা নয়। কারণ আপনি ক্রেডিট ট্রান্সফারের মাধ্যমে খুব সহজেই বাইরের একটা দেশে তৃতীয় বর্ষের পড়াশোনাই শুরু করতে পারবেন! বাংলাদেশের প্রায় সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সুবিধা থাকলেও, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সুবিধাটা নেই। তবে কিছু কিছু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অস্ট্রেলিয়া-কানাডার মতো কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের MoU থাকায় সেই নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আপনারা ক্রেডিট ট্রান্সফার করতে পারবেন।  একেক দেশে ক্রেডিট ট্রান্সফারের নিয়ম একেক রকম৷ যেমন ইউরোপীয় দেশগুলোতে European Credit Transfer System (ECTS) এর নিয়মানুসারে ক্রেডিট ট্রান্সফার করা হয়৷ তাই আপনি যেই দেশে যাচ্ছেন সেই দেশের নিয়ম জেনে নিন। এটার জন্য আপনার বর্তমানে কয়টি ক্রেডিট শেষ হয়েছে তা জানতে হবে। আর অবশ্যই আপনার বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়কে এই নিয়ে অবগত করতে হবে৷ 

     

    Undergraduation নাকি Postgraduation?

    সবসময়ই দেখা যায় যে আমরা বিদেশে পড়াশোনা করতে যেতে আগ্রহী থাকলেও কিছু Common confusions-এ ভুগি। খুব Common কিছু confusion-গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে, বিদেশে Honours এ পড়তে যাবো নাকি Masters? এটা আসলে সম্পূর্ণ আপনার ক্যারিয়ারের উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে৷ আবার আপনার decision-এ অনেক বড় একটা role play করে স্কলারশিপ। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের scholarships দেয়া হয়ে থাকে। আর স্কলারশিপ আপনার টিউশন ফি-র খরচটাও কমিয়ে দেয়। এসবের পাশাপাশি নেটওয়ার্কিং, জার্নাল পাব্লিশও একটা বিরাট ভূমিকা পালন করে৷ 

     

    স্কলারশিপ ও ফান্ডিং এর প্রকারভেদ  

    বেশির ভাগ দেশই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক government funded scholarship, full free scholarship, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক স্টাইপেন্ড ও প্রাইভেট ফান্ডিং দিয়ে থাকে। এই স্কলারশিপগুলো মেরিট বেজড, একাডেমিক অর্জন, সহশিক্ষা কার্যক্রম ও জাতীয়তার ভিত্তিতে দেওয়া হয়৷ কিছু কিছু স্কলারশিপ আপনাকে ক্যাম্পাসে কাজের সুযোগও করে দিবে৷ 

    Study Abroad এর ক্ষেত্রে কিছু উল্লেখযোগ্য স্কলারশিপ ও ফাইন্যান্সিয়াল এইড হলো:

    Scholarships in UK Commonwealth Scholarship, Chevening Scholarship, British Council Scholarship, Oxford and Cambridge Society of Bangladesh Scholarships, University-specific Scholarships, External Funding Bodies Scholarships,
    Scholarships in USA Fulbright foreign student program, Aga Khan Foundation’s Scholarship
    Scholarships in Australia  Australia Awards Scholarships, University Scholarships, External Organizations, and University based Scholarships
    Scholarships in Germany  DAAD Scholarships, Deutschlandstipendium Scholarship, Erasmus Mundas Scholarship, Heinrich Böll Foundation Scholarships
    Scholarships in Canada ASEAN Scholarships and Educational Exchanges for Development (SEED), Vanier Canada Graduate Scholarships, Ontario Trillium Scholarships
    Scholarships in Finland  Finland Finish Government Scholarships, University Scholarships, IDRC Research Awards

     

    স্কলারশিপের ক্রাইটেরিয়া প্রতি বছর পরিবর্তন হতে পারে৷ তাই নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয় বা স্কলারশিপের ওয়েবসাইটে যেয়ে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া উচিত৷ আপনি যেই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে ইচ্ছুক, তার তার Deadline ও Application Criteria ভালো করে check করে নিতে হবে। সাধারণত Scholarship application এর deadline এবং University-তে apply করার deadline ভিন্ন হয়ে থাকে।

     

    Study Abroad Scholarship

    স্কলারশিপের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া

     রিসার্চ:

    Study Abroad এর জন্য আপনি যেই দেশগুলোতে পড়তে চান, সেই দেশে কোন কোন স্কলারশিপ বা ফান্ডিং আছে তা খুঁজে বের করুন। যেমন জার্মানি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা ফিনল্যান্ডে পড়তে চাইলে সেসব দেশের সরকারি ওয়েবসাইট, ইউনিভার্সিটি ওয়েবসাইট বা স্কলারশিপ ওয়েবসাইটগুলো ঘেঁটে দেখুন। 

    আবেদনের যোগ্যতা আছে কি নেই:

    আপনি যেই স্কলারশিপে আবেদনের জন্য আগ্রহী, তার আবেদন ক্রাইটেরিয়াগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখে ফেলুন৷ সেগুলোর সাথে নিজের একাডেমিক কোয়ালিফিকেশন, জাতীয়তা, বিষয় ও অন্যান্য ক্রাইটেরিয়াগুলো মিলিয়ে নিন। 

    ডকুমেন্টসের চেকলিস্ট তৈরি করে রাখুন:

    বেশিরভাগ জায়গায় আবেদনের জন্য কমন কিছু কাগজপত্রের দরকার হয়। এই যেমন একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, রেকমেন্ডেশন লেটার, স্টেটমেন্ট অব পারপাস, সিভি, ভাষা দক্ষতার সনদ ইত্যাদি৷ এগুলো একটা জায়গায় ডকুমেন্টেড থাকলে দরকার সময়ে পাওয়া যায়। 

    আবেদনের নিয়মাবলী

    • স্কলারশিপের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যেয়ে আবেদনের নিয়মাবলীগুলো দেখে নিন৷ অনেক সময় Essay-তে ওয়ার্ড লিমিট দেওয়া থাকে। সেটাও দেখতে ভুলবেন না। 
    • পর্যাপ্ত সময় হাতে রেখে আবেদন করুন৷ 
    • শেষ সময়ের জন্য বসে না থাকে study abroad related প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে এনে অ্যাপ্লিকেশন ফরম ফিলাপ শুরু করে দিন। শিডিউল মেইনটেইন করতে ক্যালেন্ডার অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। 

    রেকমেন্ডেশন লেটার

    যেন তেন কারো রেকমেন্ডেশন না নিয়ে একাডেমিক বা প্রফেশনাল প্রোফাইল বেশ শক্তিশালী, তাদের থেকে লেটার নিন৷ এমন কারো থেকে লেটার নিন যারা আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন এবং আপনার অর্জন, স্কিল ও আপনার মধ্যে যেই পটেনশিয়াল আছে সেটা জানেন৷ যেসব প্রফেসর বা সহকর্মীকে দেখে আপনার মনে হবে যে তারা আপনাকে লেটার অব রেকমেন্ডেশন লিখে দিতে পারেন, তাদের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখুন। এগুলো আপনার application credibility বাড়িয়ে দেয়। 

    সিভি ঠিক করুন 

    আপনার সিভি এমনভাবে সাজান যাতে  যে কেউ এক নজরেই আপনার একাডেমিক অর্জন, Extra Curricular Activities, কাজের অভিজ্ঞতা বা অন্যান্য অর্জন সম্পর্কে জানতে পারেন। আপনি যেই স্কলারশিপে আবেদন করতে চান, সেটার সাথে আপনার কোন কোন strength মেলে তা highlight করতে পারেন। 

    পার্সোনাল স্টেটমেন্ট তৈরি করুন

    Statement of Purpose (SOP) খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস। কারণ এর মাধ্যমে ভর্তি কর্তৃপক্ষ একজন শিক্ষার্থীর গুণগত মান বিচার করেন৷ তাই এমনভাবে এটি লিখুন যাতে কর্তৃপক্ষ আপনার একাডেমিক ও ক্যারিয়ার গোল নিয়ে একটা স্বচ্ছ ধারনা পান। 

    রিভিউ এবং এডিট

    সব কাগজপত্র রেডি করার পর শুরু থেকে সব রিভিশন দিন। যাতে কোনো ভুল থাকলে তা এডিট করা যায়। ফিডব্যাক পাওয়ার জন্য কোনো মেন্টর, সিনিয়র বা শিক্ষক থেকে সাহায্য নিতে পারেন৷ 

    ডেডলাইনের আগেই সাবমিট করুন

    লেট অ্যাপ্লিকেশন কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। আর শেষ মুহূর্তে সাবমিট করতে গেলে অনেক ভুলও হতে পারে৷ তাই ডেডলাইনের ৫-৬ দিন আগেই সাবমিট করে ফেলুন। 

     

    যেভাবে Scholarship Essay লিখবেন

    • Study Abroad এর ক্ষেত্রে আপনার জন্য এই স্কলারশিপ কেন গুরুত্বপূর্ণ, তা আপনি বাদে আর কেউ জানবে না৷ তাই নিজের মতো করেই essay লিখুন। অন্য কারো থেকে কপি-পেস্ট করা যাবে না। যে বিষয়ে বা বিভাগে আবেদন করবেন তা কেন আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, সম্ভাব্য গবেষণার বিষয়, কীভাবে গবেষণা করতে চান, কিসে আগ্রহ—এসব উল্লেখ করুন। যাতে এই লেখাটা পড়েই আপনার সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের একটা ইতিবাচক ধারনা হয়। 
    • প্রতিটি স্কলারশিপের জন্য আলাদা আলাদা essay তৈরি করুন। কারণ একেকটা স্কলারশিপের objective একেকরকম হয়ে থাকে। তাই সেই অনুযায়ী আপনার সামর্থ্য তাদের কাছে তুলে ধরুন।
    • আপনার একাডেমিক অর্জন, সহশিক্ষা কার্যক্রম, নেতৃত্বের দক্ষতা বা অন্যান্য কোনো উল্লেখযোগ্য অর্জন সম্পর্কে লিখুন।
    • স্টোরিটেলিং এর মাধ্যমে এইটা লিখতে পারেন। নিজের ব্যক্তিগত কোনো ঘটনা যেটা পড়লে আপনার growth, কী কী সমস্যার সম্মুখীন হয়ে এ পর্যন্ত এসেছেন—এসব সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায় এমন কিছু লিখুন। 
    • Essay-এর বিষয় কী, সেটা মাথায় রেখে লিখতে হবে৷ কোনো টপিক যাতে মিস না হয়ে যায়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। 
    • ফরমাল টোন রাখুন।
    • Introduction, Body এবং Conclusion– এইভাবে ফরম্যাট সাজান। Complex শব্দ বা বাক্য ব্যবহার করা যাবে না। Jargon এড়িয়ে চলতে হবে৷ খেয়াল রাখতে হবে শব্দসীমা যেন অতিক্রম না করে৷ 
    • লেখা শেষে গ্রামার, বানান, বিরামচিহ্ন চেক করে নিন। সিনিয়র, বন্ধুবান্ধব, শিক্ষকদেরকে দিয়েও চেক করিয়ে নিতে পারেন। 
    • প্লেজারিজম সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলুন। কারণ এটা আপনাকে ডিসকোয়ালিফাইড করে দিবে। 
    • Essay এমনভাবে লিখুন যাতে আপনার পুরো একাডেমিক ও ক্যারিয়ার গ্রোথটা বোঝা যায়। তাদেরকে বোঝান যে কেন আপনিই এই স্কলারশিপ পাওয়ার একজন যোগ্য দাবিদার। 

     

    তাই যদি Higher Studies-ই আপনার আল্টিমেট গোল হয়, তাহলে সময় নষ্ট না করে আজই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিন! কোনো জায়গা থেকে রিজেকশন মেইল পেলেও ভেঙ্গে পড়ার কিছু নেই, কারণ পরের সেশনে আরো ভালো প্রস্তুতি নিয়েও আপনি আবেদন করতে পারবেন Study Abroad এর জন্য!


    IELTS-এর ফ্রি ক্লাসে জয়েন করতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে: Book Your Free Class @ 10MS English Centre, Uttara


    Higher Study এর ক্ষেত্রে যেই কোর্সগুলো আপনাকে সাহায্য করবে:


    Study Abroad নিয়ে বিস্তারিত জানতে পড়ে ফেলুন আমাদের এই ব্লগগুলো:


     

    আপনার কমেন্ট লিখুন