আলু, ডিম আর কফিদানা
একবার এক পাচকের মেয়ে তার কাছে এসে নালিশ করল যে, তার জীবনটা নাকি খুবই অসহনীয় এবং এ জীবনে কীভাবে টিকে থাকা যায় তা তার জানা নেই। পাচক কিছুক্ষণ ভেবে, মেয়েকে নিয়ে রান্নাঘরে ঢুকে, তার সামনে চুলায় উচ্চ তাপে তিন হাড়ি পানি বসিয়ে তাতে যথাক্রমে আলু, ডিম আর কফিদানা ছেড়ে দিলেন।
কয়েক মিনিট পর, তিনি মেয়েকে জিজ্ঞেস করলেন যে হাড়িতে কী রয়েছে। মেয়ে উত্তর দিল যে, গরম পানি, আলু, ডিম এবং কফি। তিনি বললেন, “দেখ, আলু, ডিম এবং কফিদানা, প্রত্যেকটি বস্তুকেই কিন্তু আমি একই তাপ প্রয়োগ করে একই জায়গায় রেখেছি। কিন্তু পার্থক্যটা দেখ, আলু শুরুতে শক্ত ছিল অথচ এখন তা কেমন নরম এবং দুর্বল হয়ে গেছে।
আবার ডিম শুরুতে একদম নাজুক ছিল কিন্তু এখন তা কত শক্ত! অন্যদিকে আবার কফিদানা পানিটাকেই বদলে নতুন কিছু তৈরি করেছে। প্রতিকূল সময় যখন আসে, তখন তুমি তাকে কীভাবে সামলাবে? তুমিই বল তুমি কোনটা? আলু? ডিম? নাকি কফিদানা?”
পরিবেশ কখনো আমাদের সাথে মানিয়ে চলে না বরং আমাদেরই পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে হয়। খারাপ সময় সবার জীবনেই আসে কিন্তু সেই সময়ের সাথে নিজেকে কীভাবে মানিয়ে নিতে হবে, তা সম্পূর্ণ ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে। চিন্তা করে দেখুনতো, আপনি কোনটা?
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
Communication Masterclass by Tahsan Khan
সমস্যাটাকে ঝেড়ে ফেলুন
কোনো এক সকালে, এক ব্যক্তির সবচেয়ে প্রিয় গাধাটা, রাস্তায় চলার সময় খাদে পড়ে গেল! অনেক চেষ্টা করার পরও মানুষটা যখন বুঝল যে, নাহ, একে টেনে তোলা একদমই সম্ভব হচ্ছে না বরং এভাবে থাকাতে গাধাটাও কষ্ট পাচ্ছে, তখন সে সিদ্ধান্ত নিল ঐ গাধাকে জীবন্ত মাটিতে পুঁতে ফেলার।
এ কারণে, মানুষটা উপর থেকে গাধাটার উপর মাটি ফেলছিল, আর যতবারই গাধাটার গায়ে ভারী মাটির খণ্ড পড়ছিল, সে তা বারবার করে ঝেড়ে ফেলে ঐ মাটির খণ্ডের উপরেই পা ফেলে আস্তে আস্তে উপরে উঠে আসছিল। এভাবে করে গা থেকে মাটি ঝেড়ে তাতে ভর করে উপরে উঠতে উঠতে, দুপুরের মাঝেই সেই গাধাকে সবুজ ঘাসের উপর চরে বেড়াতে দেখা গেল।
বালিটা হচ্ছে জীবনকে সুন্দর করতে যে ছোট ছোট জিনিষ দরকার, সেগুলো।
আমরাও যদি এভাবে করেই আমাদের সমস্যাটাগুলোকে গা থেকে ঝেড়ে ফেলে বরং সেগুলোকে জীবনে উপরের দিকে ওঠার জন্য ব্যবহার করি, তাহলে দিনশেষে আমাদেরও জীবনের সেই সবুজ প্রাঙ্গণেই দেখা যাবে।
আরো পড়ুন: তিনজন একইরকম দেখতে অপরিচিত মানুষের গল্প
বড় পাথর, নুড়ি পাথর এবং বালি
দর্শন ক্লাসে শিক্ষক ঢুকলেন একটা কাচের জার, বড় কয়েকটা পাথর, বেশ কয়েকটা নুড়ি পাথর আর বালি নিয়ে। এসেই সে কোনো কথা না বলে জারে বড় পাথরগুলো একটার পর একটা দিতে লাগলেন। সব পাথর দেয়া হয়ে গেলে শিক্ষক প্রশ্ন করলেন যে, জারটা পুরোটা ভরেছে কিনা। শিক্ষার্থীরা সম্মতি জানাল।
তখনই শিক্ষক সেই জারে আবার নুড়ি পাথরগুলো ঢালতে লাগলেন। নুড়ি পাথরগুলো জারে আগে থেকে রাখা বড় পাথরগুলোর ফাঁকে ফাঁকে জায়গা করে নিচ্ছিল। নুড়ি পাথর শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা আবার সম্মতি জানাল যে জারটা ভরে গেছে। এরপর সে বালি ঢেলে সত্যি সত্যিই জারটাকে ভরে ফেলল।
এরপর শিক্ষক বললেন, “এই জারটা আমাদের জীবনের মত। এখানে বড় বড় পাথরগুলো আমাদের জীবনের সবচেয়ে জরুরী জিনিষ। যেমন, স্বাস্থ্য, পরিবার। নুড়ি পাথরগুলো হচ্ছে, জীবনকে চালাতে গেলে যা যা দরকার তা। যেমন, অর্থ, চাকরি। আর এখন শুরুতেই যদি আমি জারে নুড়ি পাথর কিংবা বালি দিয়ে ভরে ফেলতাম, তাহলে বড় বড় পাথরের জন্য জায়গায়ই থাকতো না। সেরকম, আমাদের জীবনের কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে বেশি গুরুত্ব দিলে পড়ে সবচেয়ে জরুরী বিষয়গুলো অধরাই রয়ে যাবে। তাই জীবনকে সুন্দর করতে হলে নিজের প্রায়োরিটি লিস্টটা বুঝতে হবে সবচেয়ে ভাল করে।”
এক গ্লাস দুধ
দরিদ্র ছেলেটা লেখাপড়ার খরচ যোগাতে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে হকারি করত। একবার প্রচুর খিদে নিয়ে সে এক রমণীর দরজায় গেলেও লজ্জায় খিদের কথা না বলে এক গ্লাস পানি চাইল।
রমণী বুঝতে পেরে তার জন্য এক গ্লাস পানির বদলে এক গ্লাস দুধ নিয়ে এল। ছেলেটা তার দাম দিতে চাইলে রমণী তা নিতে অসম্মতি জানালেন। ঐদিন ঐ ছেলে শুধুমাত্র ভরপেটেই ঐ বাড়ী থেকে বের হয়নি বরং বেরিয়েছে অনেক অনুপ্রেরণা এবং শ্রদ্ধা নিয়ে।
অনেক বছর পর, বড় শহরের, বিরাট এক ডাক্তার হাওয়ার্ড কেলি এক মৃতপ্রায় রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত হলেন। রোগীর গ্রামের নাম শুনে তিনি তার শৈশবে সেই গ্রামের এক রমণীর থেকে পাওয়া অসীম স্নেহের কথা স্মরণ করে আবেগে আপ্লুত হয়ে গেলেন এবং সাথে সাথে তিনি রোগীকেও চিনে ফেললেন, আরেহ! এতো সেই রমণী!
কেলি তাঁর সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে সেই রমণীকে সুস্থ করে তুললেন। কিন্তু, রমণীর হাসপাতালের খরচ দেবার মত সামর্থ্য ছিল না। তিনি কাউন্টারে গিয়ে দেখলেন, ডা. কেলি ইতোমধ্যে তার হাসপাতালের দেনা চুকিয়ে দিয়েছেন এবং তার বিলের কাগজে লিখে দিয়ে গেছেন, “Paid in full with a glass of milk”
আমরা জীবনে যাই করি না কেন, সবকিছুরই প্রতিদান আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। হোক না একটু দেরি! এই রমণী কি কখনো ভেবেছিলেন যে সে এভাবে এত বছর পর তার প্রতিদান পাবেন?
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
- English Grammar Crash Course by Sakib Bin Rashid
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারেন এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
আপনার কমেন্ট লিখুন