এসএসসি একদম দ্বারপ্রান্তে। নিশ্চয়ই যে যার মত আখের গোছাতে নেমে পড়েছো। তোমার চোখে তুখোড় সব ছাত্ররা সব পড়ে উল্টে ফেলছে বলেই তুমি ভাবছো। আর বাকি একমাত্র তুমিই একদম এখনো ‘কিছুই পারি না’-তে রয়ে গেছো। এমন যদি হয়, তবে তুমিই কিন্তু একা নও; বরং বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের কাছে পরীক্ষার আগে আগে এরকম মনোভাব উঁকি দিয়ে থাকে। এটা তেমন অস্বাভাবিক কোন ব্যাপার নয়। তবে এর মানে এই নয় যে তুমি মনোভাবকে মনে নিয়েই বসে থাকবে।
এই সময়েই অনেকে বেশ কিছু ভুল করে। কিছু ভুল খুবই ক্ষুদ্র। ওগুলো এতই ছোট ভুল যে, সেটিকে ভুল হিসেবে আলাদা করাও দুষ্কর। কিন্তু আবার কিছু ভুল প্রায় মারাত্মক আকারের। এসব ভুলগুলো আমরা হেসে খেলে করি পরীক্ষার আগের দিনগুলোতে। আমরা সম্পূর্ণভাবে এসব থেকে নিজেদের বিরত রাখবো। কেননা বুঝতেই পারছো সময় এখন খুবই কম। কোন ভুল করাই চলবে না।
আমরা এই ব্লগে ছোটখাটো কিছু টিপস ও হ্যাকস নিয়ে আলোচনা করবো। যেটির সাহায্যে আমরা সহজেই নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনে দীপ্তিমান হতে পারবো। আর আশা রাখি সেটি এসএসসির পরীক্ষার হলেও অব্যাহত থাকবে। তো চলো দেখে নেয়া যাক।
ফুল সিলেবাস কোর্সে যা যা থাকছে:
৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৫
নতুনত্ব বাদ দাও
ঠিক এই মুহুর্তে ছাত্রদের মাঝে একটি অদ্ভুত ব্যাপার দেখা যায়। সেটি হলো নতুন কোন টপিক কিংবা অধ্যায় দেখলে তারা সেটি ভালোভাবে পড়া শুরু করে। এই অদ্ভুত সমাধান কিন্তু মোটেও কাম্য নয়। কারণ এখন একদম শেষ মুহুর্তে নতুন কিছু ঠিকভাবে বুঝে ফেলা প্রায় অসম্ভবই বটে। তাই তোমাদের উচিত যেগুলো আগেই পড়া হয়েছে তা পুনরায় পড়ে ভালোভাবে আয়ত্ব করা। কারণ একটু একটু করে পাঁচটা প্রশ্ন লেখার চেয়ে সম্পূর্ণভাবে চারটা প্রশ্ন লেখাও অনেক উত্তম৷
পড়ো পড়ো পড়ো
অনেকেরই ধারণা হয় যে, যা পড়ার দুই বছর পড়ে নিয়েছি। এখন মাথা ঠান্ডা রাখাই শ্রেয়। কথাটা ঠিক যে সবখানেই মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। তা হোক ক্রিকেট ম্যাচের উত্তেজনাকর মুহুর্ত কিংবা এসএসসি পরীক্ষা যে অবস্থাতেই থাকো না কেন, মাথা ঠাণ্ডা রাখতেই হবে। কিন্তু এটা একদমই ভুল যে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পড়াশোনা অব্যাহতি দিতে হবে। বরং এই সময়ে মাথা ঠাণ্ডা করে প্রশ্নের প্যাটার্ন বুঝে পড়াশোনা করলে খুব কম সময়েই বইয়ের বেশিরভাগ অংশ তোমার আয়ত্ত্বে থাকা সম্ভব।
একটু ভাবো। সামনে তোমার এস এস সি পরীক্ষা। মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে যাবার একমাত্র হাতিয়ার। স্কুলের পড়াশোনার পাট চুকাতে হবে এই পরীক্ষার মাধ্যমেই৷ সুতরাং শেষ মুহুর্তে এসে গোলমাল পাকিয়ে ফেলা কিন্তু বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তাই তোমার উচিত এক’টা দিন পড়াশোনাতেই ব্যস্ত থাকা। বাকি সব কাজের প্রক্সি না হয় পরীক্ষার পর দেয়া যাবে।
আর পড়ার মাঝে থাকা মানে সারাদিন বই খুলে অংক কষতে থাকা নয়। ধরো, তুমি ইউটিউবে ঢুকলে, তো অন্যসময় হয়তো সামনে যা আসতো তাই দেখতে। এবার তোমার প্লে লিস্টে দু’তিনটে পড়াশোনা সম্পর্কিত ভিডিও জুড়ে দিতে পারো।
সব বিষয়ে গুরুত্ব দাও
এসএসসি পরীক্ষার শেষপ্রান্তে এসে সাধারণ ছাত্রদের মাঝে ‘শুধু কঠিন বিষয় পড়তে হবে’ বলে এক ধরণের মানসিকতা তৈরি হয়। এটা কিন্তু ফলাফলে বিস্তর প্রভাব ফেলে। বেশিরভাগ ছাত্রদের রেজাল্টেই দেখা যায়, বাংলা দ্বিতীয় পত্র কিংবা সমাজ বিজ্ঞানের মত সাধারণ বিষয়ের কারণে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন সম্ভব হয় না। মূলত আমরা বিজ্ঞানের ছাত্র হলে চিরাচরিত ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি অথবা হায়ার ম্যাথ নিয়েই ব্যস্ত থাকি।
ব্যবসা শাখার ছেলে মেয়েরাও তাই করে থাকে। এজন্য সকল বিষয়ে গুরুত্ব দেয়াই শ্রেয়।
এতে করে যে তোমার মূল বিষয়ে পড়ার ঘাটতি হবে, তা কিন্তু নয়। যেসব বিষয়গুলো খুব বেশি কঠিন নয় অথবা সময়ও বেশি দেবার দরকার নেই সেগুলোর ভিন্ন তালিকা করো। আর যখন তুমি ঘুম থেকে ওঠো তখন দু’ঘণ্টা সে বিষয়গুলোতে চোখ বুলিয়ে নিতে পারো। একদম রাতে ঘুমুতে যাবার আগেও তাই করতে পারো। এতে কিন্তু সেসব বিষয়েও তোমার হাতছাড়া হচ্ছে না একদমই!
নিজেই সাজেশন বানাও
অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, থিওরি খুব ভালোই বুঝতে পারলেও গাণিতিক সমস্যা সমাধানে সে পটু নয়। অথবা ধরো, বাংলা প্রথম পত্রে একটি গল্প তুমি খুব ভালো করে পড়েছো কিন্তু তার উপর করা সৃজনশীল প্রশ্ন তুমি ঠিক ধরতে পারছো না। এটি মূলত অনুশীলনের ঘাটতির কারণে হয়ে থাকে। আর এজন্যই টেস্ট পেপার দেখে সমাধান করতে বলা হয়। বিগত সালের প্রশ্নগুলো দেখে তুমিও কিন্তু প্রশ্নের প্যাটার্ন বুঝে নিতে পারো।
চলো শিখি প্র্যাক্টিকাল!
একটু দেখার চেষ্টা করো কোন কোন অধ্যায় থেকে সব বছরই প্রশ্ন এসেছে। সেগুলোকে তুমি ‘অধিক গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে রাখতে পারো। এভাবে কোন কোন গল্প বা কবিতা থেকে বেশিরভাগ সময় প্রশ্ন করা হয়েছে কিংবা প্রশ্ন কিভাবে করা হয়েছে তা দেখে তুমি নিজেই কিন্তু তোমার সাজেশন তৈরি করতে পারো। এতে বাজার থেকে চমকপ্রদ সব বিজ্ঞাপনের সহায়ক বই কিংবা গাইড কেনার প্রয়োজন পড়বে না।
আরও পড়ুন:
বাংলার প্রাচীন জনপদ ও রাজনৈতিক অবস্থা: কেমন ছিল প্রাচীন বাংলা?
মহাদেশ কী? মহাদেশ কয়টি ও কি কি?
প্রশ্ন পাবার আশায় মূল্যবান সময় নষ্ট করো না
পরীক্ষার ঠিক আগের রাতেই দেখবে কেউ না কেউ ‘প্রশ্ন পেয়েছি’ বলে হাজির হবে। অথবা ঠিক আগ মুহূর্তে কেউ একশো পার্সেন্ট কমন কোন সাজেশন নিয়ে আসবে। এগুলো একদম নতুন কোন ঘটনা নয়। তোমার সিনিয়র কাউকে জিজ্ঞেস করে দেখো, তারাও পরীক্ষার আগে এরকম অবস্থার মুখোমুখি হয়েছে৷ কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এগুলো সবগুলোই থাকে একদম ভুয়া! দু’তিনটে মাঝেমধ্যে মিলে যায়, তবে সেটি একদমই কাকতালীয় ব্যাপার।
তুমি এখন হয়তো বলতে পারো যে, টিভিতে কিংবা নিউজ পেপারে তো দেখা যায় প্রশ্নফাঁস হয় এবং অনেকেই পায়। হ্যাঁ, এটা অস্বীকার করা যাবে না যে মাঝেমধ্যে কিছু প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যায়। কিন্তু তা নিতান্তই কম। বরং এটি দিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করানো হয়। এবং পরীক্ষার ঠিক আগ মুহুর্তে পরীক্ষার্থীদের মনোঃসংযোগ নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য তোমার উচিত এসব বাজে চিন্তা মাথা থেকে একদম ঝেড়ে ফেলা। এবং কোন উড়ো খবরে ভ্রুক্ষেপ না করে নিজের পরীক্ষার প্রস্তুতির দিকে মন দেয়া।
হাতে নাও জাদুর কাঠি
যে কোন বিষয়ের প্রস্তুতির জন্য তোমার দরকার সেই বিষয়ের উপর তোমার পাঠ্য বই। তারপর ধরো সেটি তুমি না বুঝলে এটিকে আরো ডিটেল করে বুঝতে সাহায্য করবে কোন একটি গাইড অথবা সহায়ক বই। সেটি থেকে পড়া হয়তো বুঝলে এবার দরকার অনুশীলন। সেই অনুশীলনের জন্যও তোমার লাগবে কোন বই কিংবা মডেল টেস্টের কোন লিংক।
তারপরও সেখানে একমাত্র পরীক্ষার্থী তুমি একাই। সবার মধ্যে হলে তোমার কী রেজাল্ট হতো তা তুমি জানো না। তার উপর এটা যেন ভুলে না যাও সেজন্য তোমার নোটও করে রাখতে হয়। আচ্ছা এমন যদি হতো, তোমার হাতে থাকতো কোন জাদুর কাঠি! এত্ত সব কাজগুলো করা যেত নিমিষেই। লাগতো না এতসব বই খাতার কারবারি। তবে কেমন হতো?
জাদুর কাঠি কিন্তু তোমার হাতেই৷ ফোন অথবা পিসি থেকে টেন মিনিট স্কুলের ওয়েবসাইটে ঢোকো। এখন যে তুমি ব্লগটা পড়ছো তার একদম উপরের বাম সাইডে দেখো ইংরেজিতে লোগোসহ টেন মিনিট স্কুল লেখা। সেখানে ক্লিক করো। তারপরই দেখবে এইচএসসি, এসএসসি, অ্যাডমিশন সহ বেশ কয়েকটি অপশন। তোমার দরকার এসএসসি। তুমি তাতেই ক্লিক করো। সাথে সাথে দেখবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তোমার সামনে এসএসসির প্রায় সব বিষয়ের নাম তোমার স্ক্রিনে ভেসে উঠবে।
যে বিষয়ের উপর জানা প্রয়োজন সেটিতে ক্লিক করো। শুরু হয়ে গেলো জাদুর কাঠির খেলা! তারপরই দেখবে তোমার অধ্যায় ও টপিক অনুযায়ী একদম যথাক্রমে একের পর এক চমৎকার ভিডিও সেখানে রয়েছে। ভিডিওগুলো আশা করি তোমার ঐ বিষয়ের উপর সব সমস্যার জটলা দূর করবে। এ তো গেলো সমস্যা। এবার একটু অনুশীলন দরকার না? কোন সমস্যা নেই।
পাশেই থাকা কুইজ সেকশনে ঢুঁ মারলে পেয়ে যাবে অসংখ্য এমসিকিউ মডেলের প্রশ্ন। প্রত্যেক দশটি কুইজের জন্য তোমাকে সময় দেয়া হবে দশ মিনিট। আপনা আপনি সময় কাউন্ট হতে থাকবে। তো কুইজ শেষে তোমাকে দেখানো হবে তোমার সঠিক উত্তর দেয়া প্রশ্নের সংখ্যা কত। সাথে সাথে দেখতে পাবে তোমার আগেই এসব কুইজে অংশ নেয়া অংশগ্রহণকারীদের নাম এবং তাদের প্রাপ্ত নম্বর৷ দেখে নিতে পারবে তোমার ভুল উত্তর বাছা প্রশ্নের সঠিক উত্তর কী ছিলো।
এতসবের পরেও থাকবে স্মার্টবুক। যেন যে কোন সময় এই বিষয়ের খুঁটিনাটি পেতে পারো সহজেই। আর তাছাড়া নোটের জন্য অন্যান্য শিক্ষার্থীদের নিজ হাতে তৈরিকৃত নোটের মাধ্যমে প্রস্তুত ‘স্টুডেন্ট নোটস‘ সেকশন তো আছেই। যেখানে টেন মিনিট স্কুল লাইভের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে আপলোড করা সব নোটের লিংক আছে সুবিন্যস্তভাবে। সেখানেও সাজানো আছে প্রত্যেকটি বিষয় ও অধ্যায়ের উপর।
তাহলে দেরি কেন? এক্ষুনি হাতে নাও জাদুর কাঠি! আর হ্যাঁ, আমাকে ধন্যবাদ দিতে হবে না। তারচে’ বরং বহু প্রতিক্ষিত টেন মিনিট স্কুলের অ্যাপ কিন্তু তুমি ডাউনলোড করে নিতে পারো গুগল প্লে স্টোর থেকে একদম ফ্রিতে! সেখানে আরো সহজেই টেন মিনিট স্কুলের নিয়মিত সব সেকশনগুলো পেয়ে যাবে। থাকো টেন মিনিট স্কুলের সাথে৷ আর এসএসসি পরীক্ষার জন্য রইলো শুভকামনা।
এইচএসসি ও এডমিশন পরীক্ষার্থীদের জন্য আমাদের কোর্সসমূহঃ
- HSC 25 অনলাইন ব্যাচ ২.০ (বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- HSC 26 অনলাইন ব্যাচ (বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- HSC 25 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি)
- HSC 26 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি)
- মেডিকেল এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- ঢাকা ভার্সিটি A Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- ঢাকা ভার্সিটি B Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- বুয়েট কোশ্চেন সলভ কোর্স
- গুচ্ছ A Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- গুচ্ছ B Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
বছরজুড়ে অভিজ্ঞ টিচারদের সাথে ক্লাস 6-10 এর পড়াশোনা ও পরীক্ষার জন্য সেরা প্রস্তুতি নিতে আজই ভিজিট করো আমাদের অনলাইন ব্যাচ ২০২৫ -এ:
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন