এসএসসি-তে রসায়ন জয় করতে যা প্রয়োজন

July 13, 2017 ...

পুরোটা পড়ার সময় নেই ? ব্লগটি একবার শুনে নাও !

জে.এস.সি. পরীক্ষার পর নবম শ্রেণিতে উঠে প্রথম পরিচয় হয় ‘রসায়ন’ বইটির সাথে। ব্যাপক উত্তেজনা নিয়ে পড়ালেখা শুরু করি অনেকেই। বছর শেষে হয়তো বইটির এক-তৃতীয়াংশ আত্মস্থ করতে সক্ষম হই। দেখতে দেখতে চলে আসে দশম শ্রেণির শেষ সময়। প্রিটেস্ট-টেস্টের আগ দিয়ে পণ করি, সমস্ত বই তুলে নিব মস্তিষ্কে। কিন্তু সেটা করা হয়ে ওঠে না। যার একমাত্র কারণ ভুল পন্থা অবলম্বন।

শুরুর দিকের গুরু কথ্য:

আমরা প্রথম যে ভুলটা করি, একদম প্রথম অধ্যায় থেকে পড়া শুরু করি। একেবারে ‘শেষ প্রস্তুতি নিচ্ছি’ ভেবে অধ্যায়টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুখস্ত করি। টেস্ট পেপার, নৈর্ব্যক্তিক সমাধান করি। এভাবে করে বেশ সহজ একটা অধ্যায়ের জন্য আমরা বিশদ গুরুত্বপূর্ণ সময় অপচয় করে বসি। তাই রসায়নের প্রস্তুতি শুরু করে শেষ করার ক্ষেত্রে যা যা করবে-

ধাপ ১:

শুরুটা অবশ্যই প্রথম অধ্যায় দিয়ে করবে না। পাঠ্যে আসল পড়া শুরু হয় পদার্থের গঠন অধ্যায়টি থেকে। এই অধ্যায় পাড়ি দিতে অবশ্যই পর্যায় সারণির প্রথম ৩৬টা মৌল মুখস্থ করে ফেলতে হবে। অধ্যায়ের কিছু দূর যেতে যেতেই পেয়ে যাবে মৌলের পারমাণবিক ভর বা আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর নির্ণয়ের অঙ্কগুলো। বইয়ের উদাহরণে আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর নির্ণয়ের অঙ্ক দেয়া থাকলে দ্রুত আবিষ্কার করে ফেলো আনবিক ভর নির্ণয়ের নিয়ম।chemistry tips, study hacks

বিভিন্ন বিদ্যালয়ের পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করতে গেলে দেখবে, পর্যাপ্ততার শতকরা পরিমাণ নির্ণয়ের অঙ্ক। সেগুলো চট করে সমাধান করতে হলে আবার নির্দিষ্ট মৌল সম্পর্কিত গাণিতিক মান জানা জরুরি। সেগুলো অবশ্যই মনে করে নিতে হবে। মনে রাখার কৌশল খুবই সহজ। একটা মৌল সংক্রান্ত আঙ্কিক তথ্যের সাথে আরেকটা মৌল সংক্রান্ত আঙ্কিক তথ্যের মিল খুঁজে বের করে ধারা মেনে আত্মস্থ করে ফেলা কোনো ব্যাপারই না।

৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৪

ফুল সিলেবাস কোর্সে যা যা থাকছে:

  • প্রতি ক্লাসে ২ জন শিক্ষক পড়াবেন; একজন ক্লাস নিবেন, অন্যজন সমস্যার সমাধান দিবেন
  • দেশের যেকোনো জায়গায় বসে দেশসেরা শিক্ষকদের কাছ থেকে অনলাইনে সর্বোচ্চ মানের পড়ালেখার সুযোগ
  • লাইভ ক্লাসের ভেতরেই পরীক্ষা দেওয়ার সুবিধা
  •  

    ধাপ ২:

    এরপর চতূর্থ অধ্যায় শুরু করা উচিত। যেহেতু বইয়ের বাকি অধ্যায়গুলোর তথ্যগুলো পর্যায় সারণী দ্বারা প্রভাবিত, খুব মনোযোগ দিয়ে অধ্যায়টি পড়তে হবে। মৌলের আকার পরিবর্তনের কারণ, পর্যায় ও গ্রুপ সংখ্যা নির্ণয়ের পদ্ধতি শিখে নিতে হবে। ধাপ ১ আর ২ এর দুইটা অধ্যায় খুব, খুব এবং খুব সহজ। এই দুই অধ্যায় শেষ করতে বেশি সময় নেয়া যাবে না একদমই।

    ধাপ ৩:

    মোলের ধারণা ও রাসায়নিক গণনা অধ্যায় বুঝতে হলে অবশ্যই রাসায়নিক বন্ধন অধ্যায়টি পড়ার সময়ে কোনো প্রকার ফাঁকিবাজি করা যাবে না। শুরুতেই যোজ্যতা এবং যোজনীর মারপ্যাঁচ খুলে নাও। নির্দিষ্ট কিছু মৌলের যোজনী সংখ্যা মনে রাখার পরামর্শ শিক্ষকরা ইতোমধ্যে দিয়ে ফেলেছেন, নিশ্চয়ই।

    অ্যানায়ন আর ক্যাটায়নের মাঝে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করে রাসায়নিক বন্ধনগুলো কীভাবে হয়, তা পড়ে ফেলো। এমনভাবে অধ্যায়টা পড়ো এবং বোঝার চেষ্টা করো যাতে “আর্গন কেন বন্ধন গঠন করতে পারে না?” কিংবা বিদ্যুৎ পরিবাহিতার পরীক্ষা প্রশ্নে দেখে ঘাবড়ে না যাও।


    Prototype Blog Coverআরো পড়ুন: মজার প্রশ্ন, সহজ উত্তর: রসায়ন


    ধাপ ৪:

    এরপর আসে মোলের ধারণা ও রাসায়নিক গণনা যা শুধু পড়লেই হবে না। একদমই হবে না। বিক্রিয়ার সমতাকরণ শেখার পর একলাফে দশ-বারোটা অঙ্ক সঠিকভাবে শেষ করার মতো আত্মবিশ্বাস যতক্ষণ পর্যন্ত না আসে, ততক্ষণ এই অধ্যায়ের বিষয়বস্তু বোঝার চেষ্টা করবে।

    ধাপ ৫:

    রাসায়নিক বিক্রিয়া অধ্যায়টি অনেকের কাছেই ভীষণ জটিল লাগতে পারে। এর কারণ হলো, এই অধ্যায়ের আগের দু’টি অধ্যায়ে কিছু বিষয় তাদের কাছে পরিষ্কার না। সেক্ষেত্রে আগের দুই অধ্যায়ের না বোঝার জায়গাগুলো আরেকবার ঝালাই করে নিলে ভালো হবে।

    এরপর পুরো অধ্যায় জুড়ে থাকা বিক্রিয়াগুলোকে দরকার পড়লে খাতায় লিখে লিখে মনে করে ফেলো। আরেকটা কথা, বিক্রিয়া মুখস্থ না করে বরং বিক্রিয়ার কারণ পড়ে ফেলো। বারবার লিখে লিখে পড়লে এমনেই মস্তিষ্কে ঢুকে বসে থাকবে সেগুলো।ssc chemistry tips, chemical reaction gif, study hacks

    ধাপ ৬:

    উপরের কৌশলগুলো অবলম্বন করে এগোলে রসায়ন ও শক্তি অধ্যায়টি কোনো ব্যাপারই না।

    ধাপ ৭:

    এই সাতটি অধ্যায় সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়ার পর হাতের কাছে যেই বিদ্যালয়ের প্রশ্নই পাও না কেন, যাচাই করে দেখো সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারো কি না। এই সাতটি অধ্যায় পড়া থাকলে কেবলই তখন বাকি অধ্যায়গুলো বুঝতে পারবে।

    ধাপ ৮.

    এসিড-ক্ষার ক্ষমতা অধ্যায়টি শুরু করতে করতে মাথায় ঢুকিয়ে ফেলো ধাতুর সক্রিয়তা সিরিজটি। বেশ বড় এই অধ্যায়ে পাবে অনেকগুলো শিখে ফেলার মতো বিক্রিয়া। একটু বড় হলেও, মনোযোগ দিয়ে পড়লে পুরো অধ্যায় সন্তোষজনকভাবে পড়ে উঠতে বেশি খাটতে হবে না।pH scale, ssc chemistry

    পরপরই খনিজ সম্পদ: ধাতু-অধাতু পড়ে ফেলো। অধ্যায় দু’টি কীভাবে পড়তে হবে, তা নতুন করে বলার কিছু নেই। এই দুইটা অধ্যায়ই বিক্রিয়া নির্ভর। কিছু খুঁটিনাটি জেনে পড়ে প্রশ্ন সমাধান করে নিজেকে যাচাই করে নিও।

    ধাপ ৯:

    একদম শেষের দিকে গিয়ে পাবে খনিজ সম্পদ-জীবাশ্ম আর আমাদের জীবনে রসায়ন অধ্যায়টি। এক্কেবারে নতুন এই খনিজ সম্পদ-জীবাশ্ম অধ্যায়ের বিষয়বস্তু রপ্ত করার উপায় হলো, ধারাবাহিকতা মেনে পড়া। অর্থাৎ জৈব যৌগ শনাক্ত না করেই পলিমারকরণ বিক্রিয়া নিয়ে মাথা ঘামালে চলবে না। বুদ্ধি করে শুরু থেকে এগোতে হবে।

    এই অধ্যায় শেষ হলে আমাদের জীবনে রসায়ন অধ্যায়টি অনেক সহজ মনে হবে। দুই- তিনটা বিক্রিয়া আছে, শিক্ষকরা শুরুতেই বলেছিলেন নিশ্চয়ই। সেগুলো পড়ে ফেলো। বেশকিছু প্রশ্ন সমাধান করে ফেলো। অনেকে এই অধ্যায় থেকে উত্তর করতে ভয় পায়।
    শেষের দিকের অধ্যায় নিয়ে এই ধরণের উদ্বেগ থাকে সব বিষয়ের ক্ষেত্রেই। কিন্তু জেনে রেখো, কলেজে উঠলে মস্ত বড় একটা বই মাথায় ঢুকাতে হবে এই অধ্যায়ের জন্য। কাজেই সব অধ্যায়ের মতো এই অধ্যায়ও সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে।

    ধাপ ১০:

    বাকি রইলো শুরুর দিকের দুইটা অধ্যায়। এই অধ্যায়গুলো কম গুরুত্বপূর্ণ বলে যে ধরতে মানা, তা কিন্তু না। সৃজনশীল আর নৈব্যক্তিক, উভয়ের জন্যই অধ্যায় দুইটি গুরুত্বপূর্ণ। তবে খুব বেশি সময় যাতে এই অধ্যায়ের পিছনে না যায়, খেয়াল রাখা জরুরি।

    শুরুতেই যোজ্যতা এবং যোজনীর মারপ্যাঁচ খুলে নাও

    পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে দেখবে, এক অধ্যায় না পড়েই হুট করে আরেকটি অধ্যায় ধরে বুঝে ফেলা কঠিন কিছু না। কেননা, অধ্যায়গুলোর বিষয়বস্তুতে কোনো সংযোগ নেই। কিন্তু রসায়নের ক্ষেত্রে যা হয়, একটা অধ্যায় হেলা করে পড়লে কিছুতেই বাকি অধ্যায়গুলো মাথায় ঢুকতে চায় না। তাই কৌশল করে ধারাবাহিকতা মেনে পুরো বই মগজে গুছিয়ে ফেলা সম্ভব।

    এরপর ততক্ষণ পর্যন্ত ইতিউতি থেকে পাওয়া প্রশ্ন সমাধান করো, যতক্ষণ পর্যন্ত নিজে সন্তুষ্ট না হও। রসায়নের ভীতি দূর করার একমাত্র উপায় হলো রসায়নের মুখোমুখি হওয়া। পড়তে পড়তে গড়িমসি করতে ইচ্ছা হবে। ফাঁকি দেয়ার চিন্তা মাথায় আসাটা অতি স্বাভাবিক। তবে মাথায় রেখো, সময়ের কথা। আর লক্ষ্য রেখো, রসায়নের ভীতি জয়।


    ১০ মিনিট স্কুলের অনলাইন ব্যাচগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করো:


    ১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারেন এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com

    ১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/

    ১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com

    ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩

    দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই দেশসেরা শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হও ইন্টারেক্টিভ লাইভ ক্লাসে, নাও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির সম্পূর্ণ সিলেবাসের 💯তে💯 প্রস্তুতি!

    আপনার কমেন্ট লিখুন