SEO কী? জেনে নিন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সম্পর্কে বিস্তারিত

January 26, 2023 ...

বর্তমান সময়ে আমরা সবাই গুগল সার্চ ইঞ্জিন কি তা জানলেও SEO কি বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কি এটি খুব কম মানুষই জানেন। তাই এই ব্লগটি হবে তাদের জন্য এসইও করার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন। কারণ এই ব্লগের পুরোটা জুড়েই আমরা আলোচনা করবো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও নিয়ে। এছাড়াও সব শেষে আপনি আরো জানতে পারবেন, এসইও কিভাবে শিখবো, SEO শিখতে কি কি লাগে, এস ই ও শিখতে কত দিন লাগে এবং কিভাবে এস ই ও করে আয় করবো এমন বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর।

SEO কি? (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কি?)

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization) বা এসইও (SEO) হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিনের কিছু নিয়মকানুন যা অনুসরণ বা প্রয়োগ করা হলে সার্চ ইঞ্জিন কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটটিকে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এবং র‌্যাঙ্ক করে থাকে।

গুগলসহ যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনে যখন আমরা কিছু লিখে সার্চ করি, তখন সার্চ রেজাল্ট যে পেজে আসে সে পেজকে বলা হয় SERPs (Search Engine Result Pages)। কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটটিকে SERPs-এ প্রথম দিকে দেখানোই এসইও -র মূল কাজ।

SEO কী?
এসইও কি? (Image source: Freepik)

এসইও -র মাধ্যমে কন্টেন্টের প্রাসঙ্গিকতা এবং ওয়েবসাইটের টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর সম্পর্কে লক্ষ্য রাখা হয় যাতে গুগল বা সার্চ ইঞ্জিনে বিভিন্ন রকম কন্টেন্ট র‍্যাংক করে এবং ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়ে। এসইও বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন: Technical SEO, On-Page SEO, Off-Page SEO, E-commerce SEO ইত্যাদি। 

অন পেজ এসইও কি?

যখন কোনো সার্চ ইঞ্জিনকে টার্গেট করে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর কাজ করার হয় তাকে অন পেজ এসইও বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, আপনার ব্লগ পেজ বা কোনো ই-কমার্স ওয়েবসাইটের ভিজিটর বৃদ্ধির জন্য অন পেজ এসইও ব্যবহার করতে পারেন।

এতোক্ষণ জানলাম, অন পেজ এসইও কি। এবার জেনে নেই অফ পেজ এসইও কি।

অফ পেজ এসইও কি?

অফ পেজ এসইও হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের বাইরে থেকে অপটিমাইজ করা। আরো সহজ ভাষায় বললে, লিংক বিল্ডিংয়ের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক বৃদ্ধি করাই অফ পেজ এসইও।

টেকনিক্যাল এসইও কি?

টেকনিক্যাল এসইও হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যা একটি ওয়েবসাইটকে অর্গানিক র‌্যাঙ্কিং(Organic Ranking) পাওয়ার জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ব্যবহার করে প্রযুক্তিগত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।

SEO কেন প্রয়োজন?

  • এসইও সোশ্যাল মিডিয়ার চেয়ে বেশি কার্যকর পদ্ধতি কারণ এর মাধ্যমে আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্সরা খুব সহজেই আপনার কন্টেন্ট খুঁজে পাবেন।
  • কোনো প্রকার পেইড মার্কেটিং ছাড়া অল্প সময়ে অনেক অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানো যায়।
  • কোনো প্র্রকার পেইড প্রোমোশন ছাড়াই ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বাড়ানো যায়।
  • লম্বা সময়ের জন্য ব্যবসাকে লাভজনক করতে সহায়তা করে।

SEO কীভাবে কাজ করে? SEO এর কাজ কি?

  • লিঙ্ক: এসইও করার সবচেয়ে শক্তিশালী টেকনিক হলো লিংক বিল্ডিং। এক ওয়েবসাইটের লিংক থেকে আরেক ওয়েবসাইটে যাওয়া আপনার এসইও র‍্যাঙ্ক বৃদ্ধি করে। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর হয়ে এসে আপনার মেনশন করা আরেকটা লিংকে ক্লিক করে, তাহলে সেটা অফ পেজ এসইও হয়ে গেলো। যে লেখায় যত বেশি র‍্যাঙ্ক করা ওয়েবসাইটের লিঙ্ক মেনশন করা হয়, সেসব পেজ সার্চ ইঞ্জিনের উপরের দিকে থাকে।
How does SEO work?
এসইও করার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন (Image source: MOZ)
  • কন্টেন্ট: এসইও এর ক্ষেত্রে কন্টেন্ট বলতে সাধারণত ব্লগকে বোঝানো হয়। আপনার ব্লগ যদি কীওয়ার্ড সমৃদ্ধ হয় তাহলে খুব সহজেই ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আনা যাবে। আর কীওয়ার্ড রিসার্চ হলো, এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) -এর একটি এমন গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি ভাগ, যেখানে জনপ্রিয় এবং সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে অধিক পরিমাণে সার্চ হওয়া keywords এবং key phrase খুঁজে বের করা হয়।
  • পেজ স্ট্রাকচার: এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো ওয়েবসাইটের যে কোনো পেজ অপটিমাইজ করে বেশি ট্রাফিক বা ভিজিটর পাওয়া যায়। এটিকে অপটিমাইজ করতে আমরা ওয়েবপেজ ও এইচটিএমএল সোর্স কোড ব্যবহার করে থাকি। এটাকে অন পেজ এসইও বলা হয়। এটা দিয়ে ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ কাজ যেমন: মেটা টাইটেল, ইউআরএল সেটআপ, মেটা ডেসক্রিপশন, ইমেজ অপটিমাইজ, ইন্টারনাল লিঙ্কিং, সাইট স্পিড, ওয়েবমাস্টার টুল সাবমিশন, অ্যানালিটিকস সেট আপ ইত্যাদি অন্তর্ভূক্ত।

এসইও করার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন: এসইও শুরু করবেন যেভাবে

এসইও সম্পর্কে আমরা অনেকেই অনেক কিছু জানলেও কীভাবে এটা নিয়ে কাজ করা যায় তা অনেকেরই অজানা৷ চলুন তাহলে কীভাবে এসইও -এর কাজ করা যায় তা জেনে আসা যাক!  

গোল সেট করুন

আপনি যদি এসইও নিয়ে কাজ করার শুরুতেই একটা প্ল্যান তৈরি করে রাখেন তাহলে তা অত্যন্ত সময় সাশ্রয়ী হবে। যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন: 

    • অর্গানিক ট্রাফিক বৃদ্ধি: গুগল অ্যানালাইসিস করে আপনি খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক এনালাইসিস করতে পারবেন। স্বল্প কোয়ালিটি ও অপ্রয়োজনীয় পেজ সাইটে যুক্ত করা থেকে বিরত থাকুন। 
    • স্টার্টআপের জন্য লিড জেনারেশন: লিড জেনারেশন হলো একটি তথ্য সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া। অর্থাৎ কোনো সার্ভিস বা প্রোডাক্ট প্রোমোশন বা বিক্রি করার জন্য টার্গেটেড কোম্পানি বা ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করা। তথ্যগুলো সাধারণত ইমেইল, নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার ইত্যাদি হয়।
    • ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস তৈরি: ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস বাড়াতে সোশ্যাল মিডিয়া অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কারণ মানুষ অনলাইন ব্র্যান্ডগুলোর সম্পর্কে সর্বপ্রথম সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই পরিচিত হয়ে থাকে। আর এসইও সোশ্যাল মিডিয়ার ফুয়েল হিসেবে কাজ করে। শুধু আপনার অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানোর জন্যই নয় বরং তাদের সাথে দীর্ঘ সময় যোগাযোগ করার এক দুর্দান্ত উপায় এসইও অপটিমাইজেশন এবং এটি সেলস বাড়ানোর ক্ষেত্রেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
    • সেলস বৃদ্ধি: অসংখ্য ব্র্যান্ড বা কোম্পানিগুলো সোশ্যাল মিডিয়াতে মার্কেটিং করছে। আর তাই এত প্রতিযোগীর ভিড়ে আপনার কোম্পানি বা ব্র্যান্ডকে গ্রাহকদের নিকট তুলে ধরাটা কিছুটা কঠিন বটে। তবে আপনি যদি ঠিকমতো এসইও এর ব্যবহার করতে পারেন তাহলে খুব সহজেই সেলস বৃদ্ধি করতে পারবেন।
    • কাস্টমার সার্ভিসের মানোন্নয়ন: আজকাল সব ই-কমার্স সাইটেই পণ্য বা সেবা গ্রহণের আগে ও পরে ক্রেতাদের জন্যে কাস্টমার সার্ভিসের ব্যবস্থা থাকে। ৭৪% মার্কেটারের মতে, নির্দিষ্ট গ্রাহকের রুচি এবং চাহিদা অনুসারে মার্কেটিং করা হলে গ্রাহকদের অংশগ্রহণ বা এনগেজমেন্ট বৃদ্ধি পায়। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের গড় সেলস ২০% পর্যন্ত বাড়তে পারে। তাই আপনি যখন সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রাহকের জন্যে আলাদা করে এসইও মার্কেটিং করবেন, তখন আপনার ই-কমার্স সাইট দ্রুতই সফলতার দিকে এগিয়ে যেতে থাকবে।

কীওয়ার্ড রিসার্চ

সঠিক কীওয়ার্ড আপনার কন্টেন্ট যথাযথভাবে তার টার্গেটেড অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে দেয়। যেকোনো আর্টিকেল সার্চ ইঞ্জিনে অপটিমাইজ করার সবচেয়ে প্রথম ধাপ (step) হলো কীওয়ার্ড রিসার্চ। এতে করে সাইটে দ্রুত ট্রাফিক ও ভিজিটর আসবে। কীওয়ার্ড ব্যবহার করার ৩টি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম আছে। সেগুলো হলো:

  • আপনার কনটেন্ট এর মার্কেটিং করার জন্য যখন আপনি অডিয়েন্সকে বিচার বিশ্লেষণ করে টার্গেট কীওয়ার্ড খুঁজে বের করতে হবে। আপনার কীওয়ার্ড যেন টার্গেট অডিয়েন্সের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়। 
  • শুধু অডিয়েন্সই না, প্রোডাক্ট, ব্র্যান্ড ও সার্ভিসের উপর নির্ভর করেও সঠিক কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখবেন, সব জনপ্রিয় কীওয়ার্ড কিন্তু সবধরনের প্রোডাক্টের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
  • কীওয়ার্ড যত জনপ্রিয় হয়, তত তার র‍্যাঙ্ক করা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ একসাথে অনেকে সেই একই কীওয়ার্ড তাদের কন্টেন্টে ব্যবহার করে থাকেন। ফলে বুঝেশুনে ভালো কোয়ালিটি মেইনটেইন করে কীওয়ার্ড ব্যবহার করা দরকার।

কন্টেন্ট প্ল্যানিং

প্রথমেই কন্টেন্টের সাথে মিলিয়ে কীওয়ার্ডগুলো নোট করে রাখুন। আপনার কীওয়ার্ডগুলো যতো ভালো আর অথেনটিক হবে, এটা তত সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম সারিতে র‍্যাঙ্ক করবে। আপনি যেই টপিকে ব্লগ লিখবেন, সেই টপিকের উপর লেখা অন্যান্য ওয়েবসাইটের ব্লগগুলো চেক করুন। দেখুন তারা কীভাবে কীওয়ার্ডগুলো ব্যবহার করছে। 

নিয়মিত ওয়েবসাইটে এসইও বেজড কোয়ালিটি কন্টেন্ট আপলোড দিতে থাকলে গুগল আপনাকে বিশ্বাসযোগ্য ভাববে এবং search engine results pages (SERPs) এর উপরের দিকে আপনাকে সাজেস্ট করবে। অতিরিক্ত কীওয়ার্ড লেখার মধ্যে না দিয়ে রিডারদের জন্য তথ্যবহুল লেখা দিন যা তারা আসলেই পড়তে চান। এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে:

  • কীওয়ার্ডগুলো স্বাভাবিকভাবে লেখার মধ্যে ব্যবহার করবেন। দেখে যাতে মনে না হয় জোর করে এখানে বসিয়েছেন। রিডাররা যাতে সহজেই আপনার লেখা উপভোগ করতে পারেন, এটাও খেয়াল রাখতে হবে।
  • প্রথমে নিজের মতো করে কন্টেন্টটি লিখুন। এরপর সুবিধামতো কীওয়ার্ড বসিয়ে দিন।
  • গুগলের টপ র‍্যাঙ্ক করা ওয়েবসাইটের লেখাগুলো পড়তে পারেন। তাহলে বুঝতে পারবেন কী কারণে তাদের লেখাগুলো এত উপরে থাকছে।
  • নিজের কন্টেন্ট এমনভাবে অপটিমাইজ করুন যাতে তা পাঠক ও সার্চ ইঞ্জিন দু’টোতেই মানানসই হয়। সেক্ষেত্রে স্ট্রাকচার্ড ডাটা মার্কআপ ব্যবহার করতে পারেন।

আরও পড়ুন:

ওয়ার্ডপ্রেস কী? ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন যেভাবে

লোগো ডিজাইন কীভাবে করে? জেনে নিন ১০টি সেরা লোগো ডিজাইনিং টিপস


এসইও টেকনিক্যাল অপটিমাইজেশন

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ব্যবহার করে টেকনিক্যাল অপটিমাইজেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন যেমন Google, Yahoo, Bing ইত্যাদি ব্যবহার করে কোনো একটা ওয়েবসাইট থেকে বেশি পরিমাণে ভিজিটর ও ট্রাফিক নিয়ে আসা যায়। এটা এসইও অর্গানিক র‌্যাঙ্কিং পাওয়ার ভালো উপায়। এর মধ্যে যেসব এলিমেন্টের উপর বেশি ফোকাস রাখতে হবে:

  • টাইটেল ট্যাগ: HTML Page এ টাইটেল দেওয়া জন্য টাইটেল ট্যাগ ব্যবহার করা হয় । এই ট্যাব সবার উপরে শিরোনাম হিসেবে থাকে। এর সঠিক ব্যবহার আপনার কন্টেন্টগুলোকে SEO Friendly করবে।
  • মেটা ডেস্ক্রিপশন: মেটা ডেস্ক্রিপশন কোনো র‍্যাঙ্কিং ইন্ডিকেটর নয়। তাই এতে অযথা কীওয়ার্ড স্টাফিং এর দরকার নেই। আপনার  click-through rate (CTR) র‍্যাঙ্কিং সিগন্যাল। তাই মেটা ডেস্ক্রিপশন স্পেসিফিক করে তুলু

    What is meta description in SERP?
    মেটা ডেস্ক্রিপশন দেখতে যেমন হয়
  • হেডিং ও সাব-হেডিং: হেডিং ও সাব-হেডিং স্পেসিফিকভাবে লিখে দেখুন। এতে করে ক্লিক রেট বাড়বে।
  • পেজ লোডিং স্পিড: আপনার পেজ যদি লোড হতে ৩ সেকেন্ডের বেশি সময় নেয় তাহলে অডিয়েন্স অধৈর্য হয়ে আপনার ওয়েবসাইট থেকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। তাই এই ব্যাপারটা খেয়াল করতে হবে।
  • মোবাইল ফ্রেন্ডলি: মোবাইল ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইটগুলো খুব সহজেই সার্চ র‍্যাঙ্কের উপরে জায়গা করে নেয়।

এসইও ব্যাকলিঙ্ক

ব্যাকলিঙ্ক অফ পেজ এসইও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ এর মাধ্যমে আপনি নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের অনেক ভালো র‍্যাঙ্কে নিয়ে যেতে পারবেন। ওয়েবসাইটের ব্যাকলিঙ্ক যত বেশি হবে ততো আপনার ব্লগের ডোমেইন অথোরিটি  ভালো হবে। আর ডোমেইন অথোরিটি যত ভালো হবে ততো দ্রুত আপনার আর্টিকেলগুলো গুগলের প্রথম সারিতে জায়গা করে নিবে। এর অর্থ হলো আপনার ওয়েবসাইটের URL link অন্য আরেকটি ওয়েবসাইটে উল্লেখ থাকা। এভাবে আপনি সেই ওয়েবসাইট থেকে নিজের ওয়েবসাইটের জন্য একটি এক্সটার্নাল লিঙ্ক পাবেন। এই ব্যাকলিঙ্কগুলোর মধ্যে Google bots আপনার ওয়েবসাইটের লিঙ্ক সরবারহ করে দেয়। এর ফলে গুগলের আপনার ওয়েবসাইটের প্রতি বিশ্বাস বাড়ে এবং ধীরে ধীরে ওয়েবসাইটের  Google search ranking ভালো হয়।

SEO Course for Beginners

কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • SEO Basics, সার্চ ইঞ্জিন, ডোমেইন-হোস্টিং, কি-ওয়ার্ড রিসার্চ, অনপেজ SEO, অফপেজ SEO গুগল সার্চ কনসোল-সহ SEO-এর বিভিন্ন টুলের ব্যবহার।
  • SEO শিখে ক্যারিয়ার গড়ার উপায়।
  •  

    একজন SEO Expert-র আয়

    এস ই ও করে আয় কতো হবে তা নির্ভর করে আপনি কি ধরনের বা কোন কোম্পানির জন্য SEO করছেন। সাধারণত ২-৩ বছরের অভিজ্ঞ একজন SEO Expert এর আয় মাসে গড়ে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকার বেশি। কারণ যারা অভিজ্ঞ একজন SEO Expert মার্কেটপ্লেসে তাদের মূল্য অনেক বেশি।

    SEO-র কয়েকটি জনপ্রিয় টুল যা শেখা প্রয়োজন

    ওয়েবসাইটের স্পীড, ইনডেক্সিং অথবা যেকোনো ধরনের টেকনিক্যাল ব্যাপার অর্গানিক সার্চে প্রভাব রাখে। এসব নিয়ন্ত্রণের জন্য SEO Tools রয়েছে।

    SEO শিখতে কি কি লাগে
    SEO শিখতে কি কি লাগে? (Image source: EDUCBA)

    এসইও -র জন্য যেসব সফটওয়্যার বা টুল ব্যবহার শেখা উচিত- 

    ১) কীওয়ার্ড রিসার্চ ও ব্যাকলিংকের জন্য: 

    কীওয়ার্ড রিসার্চ হলো সেই পদ্ধতি যার মাধ্যমে গুগল বা বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে যেসব শব্দ বা টার্ম মানুষ বেশি সার্চ করে তা নিয়ে গবেষণা করা হয় এবং সেই শব্দগুলো কন্টেন্টের মধ্যে ব্যবহার করা হয় যেন কন্টেন্ট র‍্যাংক করে। কীওয়ার্ড রিসার্চ ও ব্যাকলিংকের জন্য যেসব টুল ব্যবহার শেখা উচিত

    • Google Keyword Planner
    • Google Trends
    •  Ahrefs
    • SEMrush

    ২) ওয়েবসাইট অডিটের জন্য:

    ওয়েবসাইট অডিট হলো পেজের পারফর্ম্যান্স ঠিকঠাক আছে কি না তা নির্ধারণ করার পদ্ধতি। ওয়েবসাইট অডিটিং এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটে ঠিকমতো ট্রাফিক আসছে কি না এবং এর কার্যক্ষমতা বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেয়া উচিত তা নির্ধারণ করা যায়। SEO Audit-র  জন্য যেসব টুল ব্যবহার শেখা উচিত-

    • Screaming Frog
    • Google Search Console
    • Google Pagespeed Insights.

    এছাড়াও বিভিন্ন Chrome Extension ব্যবহার করতে পারেন, যেমন: SEOquake, Detailed SEO Extension, Keyword Surfer।

    SEO টুল ডাউনলোড বা কেনার খোঁজখবর

    Ahrefs

    Ahrefs এর Keywords Explorer যেকোনো সার্চ কোয়েরির জনপ্রিয়তা পরিমাপ করতে পারে এবং অসংখ্য প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড আবিষ্কার করতে সাহায্য করে। তাছাড়া ওয়েবসাইটের লিঙ্ক প্রোফাইল, কীওয়ার্ড র‌্যাঙ্কিং বিশ্লেষণ করতে এটি ব্যবহৃত হয়। আপনি চাইলে Google, YouTube এবং Amazon-এর জন্য কীওয়ার্ড রিসার্চ পরিচালনা করতেও Ahrefs ব্যবহার করতে পারেন। 

    Ahref এর ফ্রিমিয়াম (ফ্রি+প্রিমিয়াম) মডেল, অর্থাৎ ফ্রি ও পেইড দুই ধরনের ভার্সনই রয়েছে। পেইড মডেলের মাসিক খরচ  ৯৯ থেকে ৯৯৯ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।

    Ahref এর সুবিধা:

    • এসইও সম্পর্কে জানতে পারবেন।
    • কি-ওয়ার্ড সার্চ দিতে পারবেন।
    • অর্গানিক ট্র্যাফিক অ্যানালাইসিস করতে পারবেন। 

    Ahref এর অসুবিধা: খরচ বেশি।

    Ubersuggest

    ট্রাফিক বৃদ্ধির জন্য সহজে ব্যবহার করা যায় এমন একটি টুল Ubersuggest. তাছাড়া নির্দিষ্ট কোনো ডেটার ওপর ভিত্তি করে এটি কীওয়ার্ড রেজাল্টকে ফিল্টার করতে পারে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র Google Suggest বা AdWords এর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, জনপ্রিয়তা ও প্রতিযোগিতার উপর ভিত্তি করে কীওয়ার্ড ফিল্টার করে।


    আরও পড়ুন:

    ওয়েব ডিজাইন কী? জেনে নিন ৯টি অসাধারণ ওয়েব ডিজাইন স্ট্র্যাটেজি

    বিশ্বসেরা পাঁচ ব্লগসাইট: কাজে লাগবে আপনারও!


    Ubersuggest এরও ফ্রিমিয়াম মডেল (ফ্রি + প্রিমিয়াম)। পেইড ভার্সনে প্রতি মাসে ১২ ডলার থেকে ৪০ ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে।  

    Ubersuggest এর সুবিধা:

    • বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়।
    • নতুন নতুন কীওয়ার্ড আইডিয়া দেয়।
    • লোকেশন বেইজড ডাটা ব্যবহার করে।
    • দ্রুত রেজাল্ট বের করে দেয়।
    • ইউজার ফ্রেন্ডলি।

    Ubersuggest এর অসুবিধা:

    • টার্গেট মার্কেট লিমিটেশন।
    • মোবাইল অ্যাপ নেই।

    SEMrush

    বড় ধরনের কীওয়ার্ড বা ফ্রেজ ( Phrase) রিসার্চের জন্য SEMrush ব্যবহৃত হয়। শুধু কীওয়ার্ড রিসার্চ নয়, ওয়েবসাইট অডিটিং এর কাজও এটি করে থাকে। 

    SEMrush এর খরচ মাস প্রতি ১১৯ ডলার থেকে ৪৪৯ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।

    SEMrush এর সুবিধা:

    • ব্যবহার করা সহজ।
    • কন্টেন্টের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ কিওয়ার্ড বের করে।
    • অর্গানিক সার্চ ডাটা পাওয়া যায়।
    • ইউজার ফ্রেন্ডলি।
    • ৩০ দিনের ফ্রি ট্রায়াল রয়েছে।

    SEMrush এর অসুবিধা:

    • SEMrush থেকে শুধু গুগলের ডাটা পাওয়া জ্যায়।
    • একজন শুধু একটা একাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন।

    এসইও শিখতে কতদিন লাগে?

    এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনি এসইও শিখতে কতটা সময় আর প্রচেষ্টা ব্যয় করছেন তার ওপর। তবে সাধারণত এসইও-র মৌলিক বিষয়াদি শিখতে ৬ মাসের বেশি সময় লাগে না। তবে একইসাথে থিওরিটিক্যাল ও প্র্যাক্টিক্যাল বিষয় শিখতে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।

    কিছু পপুলার সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization) টেকনিক

    SEO অপটিমাইজেশনের অনেক টেকনিক থাকলেও, কিছু কিছু টেকনিক অনেক বেশি জনপ্রিয় এবং কার্যকর। সেগুলো হলো:

    কীওয়ার্ড রিসার্চ

    কীওয়ার্ড রিসার্চ এর মাধ্যমে আপনি আপনার টার্গেট অডিয়েন্সকে খুঁজে বের করতে পারবেন। অর্থাৎ, আপনার কনটেন্ট এর মার্কেটিং করার জন্য যখন আপনি অডিয়েন্সকে বিচার বিশ্লেষণ করে টার্গেট কীওয়ার্ড খুঁজে বের ককরবেন। এসইও এর প্রথম ধাপই হলো কীওয়ার্ড রিসার্চ।

    কন্টেন্ট মার্কেটিং

    কন্টেন্ট মার্কেটিং (Content Marketing) এক ধরনের মার্কেটিং স্ট্র‍্যাটেজি যা গ্রাহককে বিভিন্ন কন্টেন্ট যেমন: ব্লগ, ভিডিও, পডকাস্ট ইত্যাদির মাধ্যমে প্রোডাক্ট সম্পর্কে অবগত করে। ফলে গ্রাহক প্রোডাক্ট এর ব্যাপারে আগ্রহী হয় এবং ওয়েবসাইট নিয়মিত ট্রাফিক অর্জন করে। সহজ কথায়, কন্টেন্টের মাধ্যমে মার্কেটিং করা-ই হলো কন্টেন্ট মার্কেটিং। কন্টেন্ট মার্কেটিং এর জন্য বিভিন্ন রকমের কন্টেন্ট (Content Type) ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন: ভিডিও কন্টেন্ট (Video Content), মিডিয়া কন্টেন্ট (Media Content), ব্লগ, ইনফোগ্রাফিকস ইত্যাদি।

    ব্যাকলিঙ্ক তৈরি

    যখন কোনো ওয়েবসাইটের কনটেন্ট বা পোস্টে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক করানো থাকে, তখন ওই ওয়েবসাইট থেকে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসার সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। একেই ব্যাকলিঙ্ক বলে। এর মাধ্যমে যখন অন্য কেউ তাদের ওয়েবসাইটের কোনো এক কনটেন্টে আপনার সাইটের লিংক প্রকাশ করে, তখন আপনার সাইট গুগলে র‍্যাঙ্ক করে এবং ভিজিটরও বেড়ে যায়। একটি সাইটের গুরুত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে ব্যাকলিংক বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। কোনো ব্লগ সাইটে আর্টিকেল লেখার মাধ্যমে এবং কোনো ব্লগে মন্তব্য করার মাধ্যমে ব্যাকলিঙ্ক পাওয়া যায়।

    অন পেইজ অপটিমাইজেশন

    আপনি যদি গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে অধিক পরিমাণে ট্রাফিক বা ভিজিটর পেতে চান, তাহলে অবশ্যই অন পেইজ অপটিমাইজেশন সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। কারণ এর অর্থই হলো এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল তৈরি করা। অপটিমাইজ করতে ওয়েবপেজ ও এইচটিএমএল সোর্স কোড ব্যবহার করা হয়।

    এসব ছাড়াও সাইট আর্কিটেক্ট অপটিমাইজেশন ও সেমান্টিক মার্ক আপও এসইও অপটিমাইজেশনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

    কিছু সাধারণ প্রশ্ন- FAQ

    SEO কিভাবে কাজ করে?

    গুগল ২০০ টিরও বেশি র‌্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর ব্যবহার করে। পেজের কন্টেন্টের প্রাসঙ্গিকতার ওপর ভিত্তি করে সার্চ ইঞ্জিন অ্যালগরিদমের মাধ্যমে ওয়েবসাইটগুলো র‌্যাঙ্ক করে। 

    SEO শুরু করার পর র‍্যাঙ্কিং পেতে কত সময় লাগে?

    এসইও রাতারাতি কোনো পরিবর্তন আনে না। প্রথম কয়েক মাস সাইট আপডেট হতেই লেগে যায়। ওয়েবসাইটের ওপর নির্ভর করে সাধারণত নতুন র‍্যাঙ্কিং দেখাতে ৩-৯ মাস সময় লাগে।

    ভালো র‍্যাঙ্কিং পাওয়ার পরও কি SEO চালিয়ে যাওয়া উচিত?

    র‍্যাঙ্কিং অর্জন করা অনেকটা অর্ধেক যুদ্ধ জয় করার মতো অবস্থা। সার্চ ইঞ্জিনগুলো ক্রমাগত তাদের অ্যালগরিদমগুলোকে আপডেট করতে থাকে। তাই র‍্যাঙ্কিং একদিন যেমন, পরের দিন তেমন নাও থাকতে পারে। বর্তমান র‌্যাঙ্কিং ধরে রাখাটা অনেকটা নতুন র‌্যাঙ্কিং পাওয়ার মতো বিষয়। আপনার ইউআরএলকে শীর্ষে রাখতে ক্রমাগত রিসার্চ, আপডেট ও টেস্ট প্রয়োজন। র‌্যাঙ্কিং অর্জন করার পর এসইও বন্ধ করে দেয়াটা তাই বোকামিই বলা যায় এমনকি আপনি র‌্যাঙ্কিং হারিয়েও ফেলতে পারেন।

    আমার ওয়েবসাইটের অর্গ্যানিক ট্রাফিক কমে যাওয়ার কারণ কি?

    অর্গানিক ট্রাফিক কমে যাওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। আপনার ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক হঠাৎ কমে গেলে ওয়েবসাইটে ভুলবশত noindex ট্যাগ যোগ করা হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করুন। কখনও কখনও ডেভেলপারদের ভুলে এটি হতে পারে।  তাছাড়া ম্যালওয়ারের কারণে আপনার সাইটটিকে SERPs থেকে সরানো হতে পারে। Google যদি মনে করে আপনার সাইট ব্যবহারকারীদের জন্য ক্ষতিকারক তাহলে এমনটা হতে পারে। গুগলের অ্যালগরিদম আপডেটের কারণে আপনার সাইট র‍্যাঙ্কিং এ নিচে চলে যেতে পারে যার ফলস্বরূপ  সময়ের সাথে সাথে ধীরে ধীরে ট্রাফিক কমে যেতে পারে।  

    এসইও কীভাবে শিখবো?

    ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম সারিতে দেখতে অথবা একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে হলে এসইও জানা অত্যাবশ্যক। বিভিন্ন ব্লগ ও ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে এস ই ও টিউটোরিয়াল দেখে এসইও সম্পর্কে ভালো ধারণা পাবেন। পাশাপাশি বিভিন্ন অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মে SEO Course রয়েছে, যার মাধ্যমে সহজেই এসইও স্ট্র্যাটেজি শিখে, এসইও করে আয় করতে পারবেন! তাই দেরি না করে এস ই ও টিউটোরিয়াল দেখে আজই এসইও শিখুন।


    তথ্যসুত্র:


    আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:


     

    ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩

    দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই দেশসেরা শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হও ইন্টারেক্টিভ লাইভ ক্লাসে, নাও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির সম্পূর্ণ সিলেবাসের 💯তে💯 প্রস্তুতি!

    আপনার কমেন্ট লিখুন