পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবারে শুনে নাও!
বেশ কিছুদিন আগের কথা। 10 Minute School এর তখন কোন অফিস ছিল না। একটা ফেসবুক গ্রুপ ছিল, সেখানে সব মেম্বাররা ছিল। ওই গ্রুপেই কে কোন কাজ করবে, কি কি কাজ হবে সবকিছুর হিসেব রাখা হতো। যখন যার কোন এনাউন্সমেন্ট দেয়া লাগবে, সে তখন ফেসবুকে লাইভে গিয়ে সবকিছু বুঝিয়ে দিতো। এরকমই একটা লাইভ সেশনে একদিন শামির মোন্তাজিদ বিভিন্ন স্কিল শেখাচ্ছিলো, সবাই গোগ্রাসে গিলছিল ওর লেসনগুলো।
লাইভ ভিডিওর একেবারে শেষদিকে ছিল আমাদের মেন্টাল হেলথ নিয়ে ডিসকাশন। এখানে ও কথা বলছিল বর্তমান প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের হতাশার কারণগুলো। তাদের Anger, Frustration, Stress, Depression এসব নিয়ে কথা বলতে বলতে দেখা গেলো যে, কমবেশি সবারই এই সমস্যাগুলো আছে।
সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হলো, এই মানসিক সমস্যাগুলো চলে যায় না। আমরা যতোই ভুলে থাকতে চাই, এরা আরো তত বেশি জেঁকে বসে। একটা সময় পারমানেন্টলি এই সমস্যাগুলো আমাদের ভেতরে গেঁথে যায়। ডিপ্রেসড জম্বি হয়ে ঘুরে বেড়ায় তরুণ প্রজন্ম।
আমরা চিন্তা করে দেখলাম, এর একটা সমাধান দরকার। যেই ভাবা সেই কাজ, শামির বুদ্ধি দিল, এখনই আমরা একটা মেসেঞ্জার গ্রুপ থ্রেড খুলে ফেলি না কেন! এই থ্রেডে আমরা প্রতিদিন তিনটা করে কাজ বা ঘটনার নাম বলব, যার জন্যে আমরা জীবনের কাছে কৃতজ্ঞ। ব্যাপারটা শুনতে অবাক লাগলেও, ধীরে ধীরে দেখা গেল আমাদের সবার জীবনেই তিনটার অনেক বেশি কারণ রয়েছে বাকি জীবনভর কৃতজ্ঞ থাকার!
এতে যে ব্যাপারটা হলো, এই সুখের অভিজ্ঞতা, এই কৃতজ্ঞতার সন্ধান করতে গিয়ে সবার মনটাই ভালো হয়ে যায়, আর তাতে এই যে মানসিক সমস্যাগুলো, ডিপ্রেশন বা স্ট্রেস আর হানা দিতে পারছে না কাউকেই! রাতারাতি ডিপ্রেসড প্রজন্ম হয়ে উঠলো প্রাণোচ্ছল এক প্রজন্ম, আনন্দের আর শেষ নেই!
তুমি আর তোমার বন্ধুদের মাঝেও কি এমন ডিপ্রেশন আর অন্যান্য মানসিক সমস্যা বিরাজ করছে? তোমারও কি মনে হচ্ছে এই Anxiety বা Frustration এর সাথে চলতে বড্ড কষ্ট হচ্ছে? তাহলে তুমিও তোমার বন্ধুদের নিয়ে শুরু করে দিতে পারো এই প্রক্রিয়াটি, হাসি ফুটবেই তোমাদের মুখে! এছাড়াও আরো বেশ কিছু কাজ করতে পারো এসব মানসিক সমস্যা দূর করতে, যেমন:
১। রুটিন মেনে চলা:
একটি সুন্দর নিয়ন্ত্রিত জীবন থাকলে কিন্তু হতাশা ঘিরে ধরতে পারে না। নিজের জীবনের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকলে কাজ কর্ম করেই আসলে দিন কেটে যাবে, ডিপ্রেশন পাত্তাই পাবে না!
নতুন নতুন আইডিয়ার জন্ম দিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখো
২। অনিদ্রাকে না বলো:
এটি একটি পরীক্ষিত ব্যাপার, যে বেশি রাত জাগলে সেটি মনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, জন্ম নেয় বিভিন্ন মানসিক সমস্যা। তাই রাত জাগা নিশাচর পাখি না হয়ে ঠিক সময়ে ঘুমিয়ে গেলে মন সুস্থ থাকবে, সুস্থ থাকবে দেহ। ফলশ্রুতিতে ফ্রাস্ট্রেশন দূরেই থাকবে!
৩। নৈরাশ্যবাদী হবে না:
একটা গ্লাসের অর্ধেক পানি ভর্তি। গ্লাসটি সম্পর্কে একজন আশাবাদীর বক্তব্য হবে, যে গ্লাসটি অর্ধেক ভর্তি। আর একজন নৈরাশ্যবাদী বলবে, গ্লাসের অর্ধেক খালি। তুমি অবশ্যই নৈরাশ্যবাদী হবে না। কারণ নিরাশা একবার যদি নিজেকে ভর করে তাহলে অন্যান্য মানসিক সমস্যাগুলো এসে জুড়বে সাথে সাথে।
৪। নিজেকে ব্যস্ত রাখো:
Procrastination বা অকারণে সময় নষ্ট করা টা এই প্রজন্মের জন্যে ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোন কাজ না করে সময় নষ্ট করার পরপরই একটা সময় নিজের মধ্যে হতাশা কাজ করে। মনে হয়, জীবন নিয়ে কি করলাম আমি? এখান থেকেই নানান মানসিক সমস্যা এসে যোগ দেয়। তাই নিজেকে সবসময় কিছু না কিছু করে ব্যস্ত রাখলে তবেই না রক্ষা মিলবে এসব সমস্যা থেকে। নতুন কিছু করার চেষ্টা করো, নতুন নতুন আইডিয়ার জন্ম দিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখো।
তুমি নিজেই কিন্তু নিজের হতাশাকে সাফল্যে রূপান্তর করতে পারো, দরকার কেবল একটু নিজের ওপরে নিয়ন্ত্রণ আর আত্মবিশ্বাস।
এই লেখাটি লিখতে সহায়তা করেছে অভিক রেহমান
এই লেখাটি নেয়া হয়েছে লেখকের ‘নেভার স্টপ লার্নিং‘ বইটি থেকে। পুরো বইটি কিনতে চাইলে ঘুরে এসো এই লিংক থেকে!
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন