পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবারে শুনে নাও!
চৌধুরী অ্যান্ড হোসাইন-এর ইংরেজি ব্যাকরণের বই পড়েনি, বাংলাদেশের শিক্ষিত সমাজে আজকাল এমন ‘অমাবস্যার চাঁদ’ নেই বললেই চলে। বাংলাদেশের পাঠ্যক্রমের অত্যাবশ্যকীয় পাঠ্যপুস্তক এটি। প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে ভর্তিপরীক্ষা পর্যন্ত বিভিন্ন রংয়ের কভারের ভেতরে থাকা একই কথাগুলো আমরা বারবার পড়ে যাই, পরীক্ষা দেই এবং যথাসময়ে ভুলেও যাই।
অবাক করার মতো হলেও এটা কিন্তু সত্যি যে, সুদীর্ঘ বারো বছর ধরে ইংরেজি পড়ে আসার পরও ইংরেজিটা আমাদের কাছে এখনও একটা আতংক হিসেবেই বিরাজ করে। আমাদের মধ্যে এখনও এমন অনেকে আছে যাদেরকে ইংরেজিতে কোনও কথা বলতে বললে রীতিমতো ভয় পেয়ে, লেজ তুলে উল্টোদিকে দৌড়ে পালাবে।
কিন্তু কেন?
কারণ, ইংরেজি একটা ভাষা। আমরা দীর্ঘ বারো বছর ধরে শুধু এর ব্যাকরণই পড়ে এসেছি। আর, কোনও ভাষা শেখার ক্ষেত্রে কথ্যরূপে ব্যাকরণ তেমন একটা ভূমিকা রাখে না। তাই, আমাদের ইংরেজি বলতে গেলে এমন পরিস্থতির সম্মুখীন হতে হয়।
এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায়ই বা কী?
ইংরেজি শেখার জন্য আমরা অনেকের কাছ থেকেই ইংরেজি মুভি দেখা, খবরের কাগজ/ম্যাগাজিন পড়া, বই পড়া কিংবা আয়নার সামনে বা বন্ধুদের সাথে চর্চা করার মতো বিচিত্র সব পরামর্শ নিয়মিত পেয়ে থাকি।
কিন্তু, বই বা খবরের কাগজ পড়া কিংবা মুভি দেখার মতো কাজগুলো ক্ষেত্রবিশেষে করা হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বন্ধুদের সাথে চর্চা করার বিষয়ে আমরা তেমন একটা আগ্রহী নই। কারণ, বন্ধুদের সাথে চর্চা করতে গেলে তিরস্কার আর কটুক্তির আশংকায় আমরা এক পা এগিয়ে আবার দু’পা পিছিয়ে যাই। অথচ, কোনও ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে সে ভাষাতে কথা বলার চর্চা করাটা খুবই জরুরি।
আজ তোমাদেরকে একটা মজার আইডিয়া দিতে চাই, যেটা কিনা তোমাদের ইংরেজিসহ যেকোন ভাষায় দক্ষ হয়ে উঠতে অনেক সাহায্য করবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অশেষ কৃপায় সামনাসামনি বসে আড্ডা দেওয়ার প্রথা বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায়! এখন, সাতসমুদ্র- তেরো নদীর ওপারের বন্ধুদের সাথেও ফেইসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারের গ্রুপে বসে আরামে আড্ডা দেওয়া যায়।
আমরা সবাই কিন্তু রোজই সারাদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা নতুন কাজের পরিকল্পনা বা ক্ষেত্রবিশেষে অনেকের সমালোচনার ঝুড়ি নিয়েও গ্রুপে চ্যাট করতে বসে যাই।
আইডিয়াটা খুবই সোজা। নতুন একটা চ্যাটিং গ্রুপ খুলে ফেলো। একই কাজ, একই গ্রুপ তবে এবার শুধু ভাষাটা বদলে গিয়ে ইংরেজি হয়ে যাবে।
আর কয়েকটা শর্ত অনুসরণ করো:
১) যাই লেখা হোক না কেন সেটা যেন ইংরেজিতে হয়।
চ্যাটিং গ্রুপে নতুন ভ্রমণের পরিকল্পনা বা সারাদিনের বিবরণ কিংবা কারো সমালোচনা, যাই লেখা হোক না কেন সম্পূর্ণ ইংরেজিতে লিখতে হবে।
২) বাক্যের শুরুর শব্দ লেখা হোক ক্যাপিটাল বা বড় হাতের আদ্যক্ষরে।
আমরা অনেকেই ইনবক্সে ছোট হাতের অাদ্যক্ষরে লেখা শব্দ দিয়ে বাক্য লিখি। এ অভ্যাসটা বর্জনীয়।
“প্রতিটা শব্দে a, e, i, o, u বা পাঁচটি vowel এর সঠিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।”
৩) বানানে সতর্কতা অবলম্বন করাটা জরুরি।
লেখার সময় সর্বদা শুদ্ধ বানানে লিখতে হবে। এতে করে শুদ্ধভাবে লেখার দক্ষতা বাড়বে।
৪) শব্দ সম্পূর্ণ লেখাটা বাধ্যতামূলক।
অনেকে চ্যাটিং এ ইংরেজি শব্দ ছোট করে লিখতে লিখতে ওই শব্দের আসল চেহারা আর বানানটাই ভুলে বসে আছে। ফলাফলস্বরূপ, ইংরেজি পরীক্ষার খাতায়ও সংক্ষিপ্ত বানানে ভুল শব্দ লিখে আসে।
যেমন: Phone না লিখে phn, Thanks না লিখে tnx, Hello না লিখে hlw, Welcome এর পরিবর্তে wlcm ইত্যাদি।
৫) শব্দের বানানে সংখ্যা নয়।
অনেকে Right, Fight, Night, Sight এ শব্দগুলোকে যথাক্রমে r8, f8, n8, s8 লেখে। এটা বর্জন করতে হবে।
৬) Vowel এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
অনেকেই সংক্ষেপে ইংরেজি লিখতে গিয়ে ইংরেজি ভাষায় ‘কার’ নামে পরিচিত Vowel শব্দটিকে রীতিমতো অস্তিত্বের সংকটে ফেলে দিয়েছে। Good না লিখে gd, wait না লিখে wt, Thank you এর বদলে Tnq লেখে। এটা বর্জন করতে হবে। প্রতিটা শব্দে a, e, i, o, u বা পাঁচটি vowel এর সঠিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
৭) এক অক্ষরে শব্দের প্রকাশকে না বলতে হবে।
ইংরেজি Are, See, You ইত্যাদি শব্দের উচ্চারণ এক একটি ইংরেজি বর্ণের অনুরূপ! অনেকে তাই লিখতে গিয়েও পূর্ণ শব্দের পরিবর্তে r, c, u ই লিখে ফেলে। এটা পরিবর্তন করতে হবে।
এ শর্তগুলো মেনে মাসখানেক গ্রুপে চ্যাটিং করার পর নিজেই নিজের পরিবর্তনটা দেখতে পাবে।
তাহলে, আর দেরি না করে আজই তোমার সব প্রিয় বন্ধুদেরকে নিয়ে একটি মেসেন্জার বা হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাটিং গ্রুপ খুলে ইংরেজিতে কথোপকথন শুরু করো। শুধু ইংরেজি নয় শুদ্ধ বাংলা বলা ও লেখার দক্ষতা বাড়াতেও এ প্রক্রিয়া অনুসরণ বেশ ফলপ্রসূ!
এই লেখাটি নেয়া হয়েছে লেখকের ‘নেভার স্টপ লার্নিং‘ বইটি থেকে। পুরো বইটি কিনতে চাইলে ঘুরে এসো
এই লেখাটির অডিওবুকটি পড়েছে তাহমিনা ইসলাম তামিমা
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন