পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবারে শুনে নাও!
জীববিজ্ঞান বিষয়টা অনেকের কাছে খুব মজার, আবার অনেকের কাছে খুবই জটিল একটা বিষয়। তোমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা এ বিষয়টা প্রচণ্ড ভয় পায়। বায়োলজির ছবি আঁকতে গিয়ে পেন্সিল ভেঙে যাচ্ছে অথবা মানব দেহের বিভিন্ন টার্ম মুখস্থ করতে গিয়ে জান বের হয়ে যাচ্ছে, এমন স্টুডেন্ট অনেক আছে।
বিশ্বাস করো আর নাই করো, এটা দোষের কিছু না। ভবিষ্যতে ডাক্তারি পড়তে চাও অথবা জীববিজ্ঞান বিষয়ক কোন সাবজেক্টে পড়তে চাও আর নাই চাও, এটা কিন্তু মোটেও কোন ভয়ংকর সাবজেক্ট না। মজা নিয়ে পড়লে ও আয়ত্ত করতে পারলে এটা হয়ে উঠতে পারে তোমার পছন্দের সাবজেক্ট। এমনও হতে পারে, এক সময় ডাক্তার না হতে চাওয়া ছেলেটি ভবিষ্যতে বায়োলজি ভালোবেসে মেডিকেলে পড়তেই চলে এলো। আজ তোমাদের সাথে শেয়ার করবো কিছু টিপস আর ট্রিকস। যা ফলো করলে জীববিজ্ঞান আর বোরিং লাগবে না, রেজাল্টও ভালো হবে:
১. নিজস্ব প্রিপারেশন নাও:
বায়োলজি বিষয়টা পছন্দ না হওয়ার একটি অন্যতম কারণ, ক্লাসে টিচার যা পড়ান তার অর্ধেকও হয়তো আমরা বুঝি না। চাইলেই কিন্তু খুব সহজ উপায়ে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। প্রতিদিন ক্লাসে যা পড়ানো হবে, তা অধিকাংশ শিক্ষক আগের দিন বলে দেন। আমরা যেটা করবো, তা হলো- কাল ক্লাস, আজ বসে কাল যে চ্যাপ্টার পড়ানো হবে তা রিডিং পড়বো। টুকটাক বুঝার চেষ্টা করবো। তা হলে পরদিন শিক্ষক যা পড়াবেন একটু হলেও ব্যাপারটা ধরতে পারবে তুৃমি।
২. লেকচার কাজে লাগানো:
জীববিজ্ঞান বিষয়টা বেশ জটিল। তাই লেকচার ক্লাসে মনোযোগী হতে হবে। শিক্ষক লেকচার দেয়ার সময় পাশের বন্ধুর সাথে গল্প করা, ফোনে চ্যাট করা এই কাজগুলো করা যাবে না। অনেকেই হয়তো ভাববে, ধুর বাসায় যেয়ে বন্ধুর কাছে শিখে নিবো, কিংবা কোচিং-এ তো পড়াবেই!!! এই ধরনের মনোভাব নিয়ে এত মূল্যবান প্রফেসরদের লেকচার হেলাফেলা করা একদমই উচিত না, কারণ ঐ প্রফেসর যা পড়াবেন তা অবশ্যই তেমার বন্ধু কিংবা বাসার টিচারের চেয়ে বহুগুণ তথ্যবহুল ও কার্যকরী।
ক্লাসে যা পড়ানো হচ্ছে তার সবটুকু তুমি নাই জানতে পারো। লজ্জা না করে শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করে ঐ ব্যাপারে ধারণাটা ক্লিয়ার করে নাও। কখনো কখনো চাইলে শিক্ষকদের লেকচার রেকর্ডও করতে পারো পরে পড়ার সুবিধার্থে। তবে যেকোন রেকর্ডিং করতে হলে অবশ্যই শিক্ষকের অনুমতিক্রমে করতে হবে।
৩. ল্যাব ক্লাস, প্র্যাকটিকাল:
ল্যাব ক্লাসটা জীববিজ্ঞানের একজন স্টুডেন্ট এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। “জীববিজ্ঞান বোঝার কিছু নেই, সব তো মুখস্থ”- এই কথাটার কোনই যৌক্তিকতা নেই। জীববিজ্ঞান বুঝে বুঝে পড়তে হবে। আর ঐ জ্ঞানটাকে প্র্যাকটিকাল ক্লাসের সময় এপ্লাই করতে হবে। তোমরা সবাই তোলাপোকা, ব্যাঙ, কেঁচো নিয়ে পড়েছো, কিন্তু সবচেয়ে কার্যকরী হয়েছে কখন, জানো? যখন ঐ মাথার জ্ঞানটাকে ব্যবহার করে ব্যাঙ কাটলে ও তা সেলাই করে দিলে। জীববিজ্ঞান অনেকটা এমনই। ব্যবহারিক করতে হবে, বুঝতে হবে, জানতে হবে। তারপর মুখস্থ ব্যাপারটা আসবে।
৪. ছবি আঁকা প্র্যাকটিস:
আমার মনে আছে হার্ট (হৃদপিণ্ড) পড়তে গিয়ে খুব কঠিন লাগতো। পরে একদিন ঠাণ্ডা মাথায় হার্টের ছবই আঁকা শিখলাম আর কঠিন কঠিন নামগুলো মুখস্থ করে মাথায় সেট করে নিলাম। ব্যস, এরপর থেকে যেই হার্ট নিয়ে কিছু লিখতে হয় / বলতে হয়, চটপট মাথায় ঐ হার্ট-এর ছবিটা ভাবি। ব্যস, এত কঠিন একটা জিনিস সোজা লাগে এখন। তেমনিভাবে জীববিজ্ঞানে অন্য যে কোন ছবি খুব গুরুত্ব বহন করে। ভালো ছবি আঁকতে পারলে তা একদিকে যেমন পড়া বুঝতে সাহায্য করবে, তেমনিভাবে পরীক্ষাতে ভালো নম্বর পেতেও সহায়তা করবে।
কোর্সটিতে শিক্ষার্থীরা পাবে:
মেডিকেল এডমিশন কোর্স ২০২২
আরও পড়ুন:
১০ মিনিটেই শিখে ফেলো পর্যায় সারণি
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তুতি: যা যা জানা প্রয়োজন
৫. মুখস্ত করো বুঝে বুঝে :
সায়েন্সে “রুল অব থাম্ব” নামে একটা ব্যাপার আছে। এই রুল অনুযায়ী ক্লাসে থাকা প্রতি ঘণ্টার জন্য বাসায় দুই ঘণ্টা পড়া- অর্থাৎ ক্লাসে যতো পড়াবে তার দ্বিগুণ বাসায় গিয়ে পড়া দরকার। এভাবে হিসাব করলে তোমার যদি সপ্তাহে পাঁচ ঘণ্টা ক্লাস থাকে, তাহলে সপ্তাহে তোমাকে বাসায় পড়তে হবে ১০ ঘণ্টা।
আরেকটা কথা না বললেই না। তা হলো, তোমার পড়ার ধরন কী, তা খুঁজে বের করা ও সে নিয়মে পড়া। যেমন কেউ কেউ ভিজুয়াল ব্যাপারটা বেশি পছন্দ করে অর্থাৎ ছবি, ভিডিও দেখে মনে রাখে। কেউ কেউ আবার কানে হেডফোন লাগিয়ে পড়ে, গানের মিষ্টি আওয়াজ তাদের পড়ার গতি বাড়িয়ে দেয়। কেউ কেউ পড়ে আর লিখে। কেউবা একা জোরে জোরে পড়ে। যেভাবে পড়তে ভালো লাগে ও পড়াটা ফলপ্রসু হয় ঠিক ঐভাবে পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা যেতে পারে।
৬. চর্চাই ভরসা:
ব্রেইনে দুই ধরনের কাজ হয়- শর্ট টাম এবং লং টার্ম মেমোরি। অনেক সময় আমরা পড়া হলে রেখে দেই, কারণ মনে করি আমরা পারবো। আসল কথা হলো ঐ পড়াটা ব্রেইনের লং টার্ম মেমোরিতে জমা হয় না। এই সমস্যার সমাধান হলো, অনেকসময় ধরে পড়ার চেয়ে প্রতিদিন অল্প অল্প করে পড়া। সারাদিন যা পড়বে তা ঘুমাতে যাওয়ার আগে একবার রিভাইস দেয়া আবশ্যক।
৭. পার্টনারশিপ গড়ে তোলা পড়াশোনাতে:
পার্টনারশিপে কোন বন্ধুর সাথে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারো এখন থেকে। জীববিজ্ঞানের টার্মগুলো বেশ কঠিন ও বারবার পড়তে হয়। তাই কোন এক বন্ধুর সাথে আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে অথবা গল্প করার মতো করে পড়াগুলো মনে করতে পারো এবং বলতে পারো। পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি জীবনেও এই অভ্যাস অনেক কাজে দেবে ভালো রেজাল্ট করতে। আর কাউকে পড়া দিলে নিজের পড়া হয়েছে নাকি তাও বোঝা যায় ওএবংপড়াগুলো রিভাইস করে নেয়া যায়।
৮. প্রশ্ন ব্যাংক ও বিগত বছরের প্রশ্ন সমাধান:
জীববিজ্ঞান বিষয়টির বেস্ট পার্ট : এখানে টার্মগুলো ঘুরে ফিরে একই। যেকোন পরীক্ষাতে টিচাররা কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করেন। সেটা এস এস সি, এইচ এস সি এমনকি মেডিকেল এডমিশন টেস্ট হোক। এজন্য যেটা করতে পারো, সব পড়া শেষে আগের বছরগুলোতে আসা প্রশ্নপত্রে চোখ বুলাও, প্রশ্ন সল্ভ করো। দেখবে কম করে হলেও ৫০-৬০% প্রশ্ন কমন পড়েছে। আর দুর্বল স্টুডেন্টদের জন্য এটা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এমনকি মেডিকেল এডমিশন টেস্টেও আগের প্রশ্ন কমন পড়ার নজির আছে।
এই লেখাটির অডিওবুকটি পড়েছে মনিরা আক্তার লাবনী
এইচএসসি ও এডমিশন পরীক্ষার্থীদের জন্য আমাদের কোর্সসমূহঃ
- HSC 25 অনলাইন ব্যাচ ২.০ (বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- HSC 26 অনলাইন ব্যাচ (বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- HSC 25 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি)
- HSC 26 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি)
- মেডিকেল এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- ঢাকা ভার্সিটি A Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- ঢাকা ভার্সিটি B Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- বুয়েট কোশ্চেন সলভ কোর্স
- গুচ্ছ A Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- গুচ্ছ B Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
বছরজুড়ে অভিজ্ঞ টিচারদের সাথে ক্লাস 6-10 এর পড়াশোনা ও পরীক্ষার জন্য সেরা প্রস্তুতি নিতে আজই ভিজিট করো আমাদের অনলাইন ব্যাচ ২০২৫ -এ:
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন