ডিপ্রেশনকে হারিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ায় গল্প

December 8, 2017 ...

পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবার শুনে নাও।

আমরা অনেকেই শারীরিক অনেক অসুস্থতায় ভুগে থাকি। জ্বর-ঠাণ্ডা-কাশি থেকে শুরু করে মাইগ্রেন, অ্যালার্জি, ইনফেকশন – এমন নানান রকম শারীরিক অসুস্থতায় ভুগতে হয় আমাদের রোজই। এবং ছোট থেকে ছোট অসুখেও আমরা অস্থির হয়ে পড়ি। হালকা জ্বর হলেই হয়তো কেউ কেউ ছুটে যাই ডাক্তারের কাছে। হাত-পায়ে একটু চোট লাগলে আমাদের বাবা-মায়েদের দুঃশ্চিন্তার শেষ থাকে না।

কিন্তু, কেন যেন আমাদের শারীরিক সুস্থতার মতো আমাদের মানসিক সুস্থতা নিয়ে কারোই, এমনকি আমাদের নিজেদেরও তেমন কোন চিন্তা থাকে না। আমাদের ব্রেইনেরও যে কখনো অসুখ হতে পারে, তা যেন আমরা ভাবতেই পারি না। যেন এটা আমাদের শরীরের কোন অংশই না!

যখন কেউ আমাদের তার গলা ব্যথার কথা বলে, আমরা মুহূর্তের মধ্যেই কত কিছু বলে ফেলি। গরম পানি খাও, আদা চা খেয়ে দেখো, ডাক্তারের কাছে যাও – কত কিছু !

কিন্তু কেউ যখন আমাদেরকে এসে তার ডিপ্রেশন নিয়ে কথা বলে, আমরা দায়সারা ভাবে বলে ফেলি, “ঠিক হয়ে যাবে”। বিষণ্ণতা নামক এই ব্যাধি কিন্তু এতো সহজে ঠিক হয়ে যায় না। এর থেকে বেরিয়ে আসা একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া।

কিন্তু আশার বিষয় হচ্ছে, অন্যান্য অসুখের মতো প্রফেশনালদের সাহায্য নিয়ে এই রোগেরও নিরাময় সম্ভব। কীভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব তা সবচেয়ে ভাল বলতে পারবেন একজন বিশেষজ্ঞই।

আমরা যারা বিশেষজ্ঞ নই, তারা ডিপ্রেশন নিয়ে লড়তে থাকা আমাদের আশেপাশে যারাই রয়েছে তাদের প্রতি আরেকটু সহানুভূতিশীল হতে পারি। কোন সমাধান দিতে না পারলেও, একজন ভালো শ্রোতা হতে পারি। তাদের কাছের বন্ধু হতে পারি।

প্রার্থনা করতে পারি, যাতে আমাদের কাছের মানুষগুলোর এই অবসাদে ভরা যাত্রা শেষ হয় । কিন্তু শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ক্রমাগত মাথার ভেতরের নেতিবাচক চিন্তার সাথে নিজের এই যুদ্ধ কীভাবে আরেকটু সহনীয় করা যায়, কীভাবে প্রতিদিন ডিপ্রেশনকে হারিয়ে একটু একটু করে জেতা যায়; তা নিয়েই আজকের আয়োজন।

২৪ ঘণ্টায় কোরআন শিখি

কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • সঠিক কোরআন তিলাওয়াতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি, যেমন: মুক্তবর্ণ, যুক্তাক্ষর, হরফ, হরকত, তানভীন, জযম, তাশদীদ, মাদ্দ, ওয়াকফ
  • কোরআন তিলাওয়াতের নিয়ম-কানুন এবং বিভিন্ন বিধি-নিষেধ
  •  

    ১। নিজের ছোট ছোট আনন্দগুলো রেকর্ড করে রাখা:

    ডিপ্রেশন একটা মানুষকে জীবন সম্পর্কে কতটা হতাশ করে তুলতে পারে, তা বাইরে থেকে কারো পক্ষে বোঝা সম্ভব না। নিজেকে প্রতিনিয়ত পরাজিত, অপ্রয়োজনীয়, বোঝা মনে করা মানুষগুলো একটু একটু করে হারিয়ে যেতে থাকে। এবং এই হেরে যাওয়াটাই তখন সহজ মনে হয়। কিন্তু, এতো কষ্টের মধ্যেও প্রতিদিনই আমাদের জীবনে ছোট ছোট আনন্দের কিছু না কিছু কিন্তু ঘটেই থাকে, যেগুলো আমরা দেখেও দেখি না।

    ছোট ভাই-বোনের হাসিমাখা মুখ, মায়ের হাতের রান্না, পরিবারের সবার একসাথে বসে বিকেলের চা – খুব সাধারণ, কিন্তু এই টুকরো টুকরো মুহূর্তগুলোই জীবনকে সুন্দর করে, স্মরণীয় করে।

    anti-depression, daily life, depression, hotasha, inspirational people, life hacks

    তাই, জীবনের এই ছোট ছোট আনন্দগুলোকে একটি ডায়েরীতে লিখে রাখলে, দিনশেষে চোখ বুলালে আমাদের ডিপ্রেশন হয়ত চলে যাবে না, কিন্তু এর সাথে লড়াইটা সহজ হবে।

    ২। নিজের অর্জনগুলোর একটি লিস্ট তৈরি করা:

    ড্যান বেকারের মতো একজন হ্যাপিনেস এক্সপার্ট বলেছেন, নিজের ছোট থেকে বড় সব অর্জন বা সফলতার লিস্ট তৈরি করতে। এবং সেখান থেকে নিজের শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস খুঁজে নিতে।

    সেই লিস্টে থাকতে পারে কোন পথশিশুকে খাবার কিনে দেয়ার কথা, কোন বন্ধুকে পড়া বুঝতে সাহায্য করা, কোন কুইজে ভাল গ্রেড পাওয়া, বাসার বাজারটা নিজ হাতে করা, মাকে এক কাপ চা বানিয়ে খাওয়ানোর মতো সাধারণ অর্জনগুলো।

    এই লিস্টই আমাদের নিজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা পজিটিভিটি নতুন করে খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।


    আরও পড়ুন:

    মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী? জেনে নিন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড -এর কিছু কার্যকরী ব্যবহার

    নামাজ পড়ার নিয়ম: কোন নামাজ কত রাকাত ও নামাজের ফরজ কয়টি?


    ৩। ব্যায়াম করা:

    ব্যায়াম করা ডিপ্রেশনের সাথে লড়াই করার সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার। অনুশীলন করলে আমাদের শরীরে এন্ড্রোফিন রিলিজ হয়, যা স্ট্রেস হরমোনকে ব্লক করে। তাই, প্রতিদিন কিছু সময় ব্যায়াম করা যেমন সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, দৌড়ানো – এসবই আমাদের শরীরের সাথে সাথে মনকেও প্রফুল্ল করে।

    প্রাণ খুলে হাসার বিষয়টা শুনতে খুব কঠিন মনে হতেই পারে।

    ৪। প্রার্থনা করা:

    প্রতিদিন কিছুক্ষণ একমনে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা আমাদের মনে শান্তি এনে দেয়। উপরে কেউ আছেন যিনি সব দেখছেন এবং তিনি চাইলেই আমাদের সব কষ্ট এবং যন্ত্রণা দূর করে দিতে পারেন – এটা জানা এবং মনে-প্রাণে বিশ্বাস করা শুধু আমাদেরকে শান্তিই না; বরং শক্তিও দেয়। তাই, প্রতিদিন নামাজ-পূজা-অর্চনা যেই উপায়ই হোক না কেন, সৃষ্টিকর্তার সাথে কথা বলা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা খুব ভাল একটি প্র্যাকটিস।

    ৫। মেডিটেশন করা:

    রিসার্চে দেখা গিয়েছে, মেডিটেশনে স্ট্রেস কমে, টেনশন দূর হয়। মনে প্রশান্তি আসে। এবং নিয়মিত মেডিটেশন করলে ভবিষ্যতে ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার চান্সও কমে যায় অনেকগুণ। শুধু মেডিটেশনে ডিপ্রেশন সারিয়ে ফেলা কখনোই সম্ভব না। কিন্তু, মানসিক স্বাস্থ্যে মেডিটেশনের ইতিবাচক প্রভাব এখন বিশ্বজুড়ে প্রমাণিত।

    ৬। প্রাণ খুলে হাসা:

    প্রাণ খুলে হাসার বিষয়টা শুনতে খুব কঠিন মনে হতেই পারে। বিষাদগ্রস্ত একজন মানুষ যে জীবনে বেঁচে থাকার মানেই হয়তো খুঁজে পাচ্ছে না, তার কাছে পুরো আইডিয়াটাই হাস্যকর, অবাস্তব মনে হতে পারে। কিন্তু, জোর করে হলেও হাসতে পারাটা আসলেই ডিপ্রেশনকে হারাতে খুব প্রয়োজনীয় অস্ত্র।

    মুচকি হাসি নয়, বরং প্রাণ খুলে হাসলে আমাদের স্ট্রেস হরমোনের রিলিজ কমে যায়, এন্ড্রোফিন রিলিজ হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই হাসতে হবে প্রাণ খুলে ।

    Personal Fitness

    কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • বাসায় ব্যায়ামের নিয়ম এবং ব্যায়ামের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ব্যবহার
  • ফুল বডি ট্রেইনিংয়ের পাশাপাশি শরীরের আলাদা আলাদা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করা


  • উপরের ৬ টি উপায় ডিপ্রেশন সারিয়ে দিবে না, কিন্তু এর সামনে নিজেকে শক্ত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে । সেই সাথে সাহায্য করবে হারিয়ে ফেলা নিজেকে খুঁজে পেতে।


    আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:



    ১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com


     

    ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩

    দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই দেশসেরা শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হও ইন্টারেক্টিভ লাইভ ক্লাসে, নাও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির সম্পূর্ণ সিলেবাসের 💯তে💯 প্রস্তুতি!

    আপনার কমেন্ট লিখুন