আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার হিসেবে, তিনটি পরীক্ষা খুব বেশি দরকার হয় ক্যারিয়ারে। প্রথমটি হলো এসএসসি, যার ফলাফলের উপর অনেক বেশি নির্ভর করে তুমি কোন কলেজে ভর্তি হতে পারবে বা কোন কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে। দ্বিতীয়টি হলো এইচএসসি, যার ফলাফলের উপর অনেকাংশে নির্ভর করে তুমি কেমন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে কিংবা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে। আর তৃতীয়টি হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ, যার উপর বেশ কিছুটা নির্ভর করে তোমার প্রথম চাকরি কেমন হবে বা তুমি কেমন চাকরির ইন্টারভিউ দেবার যোগ্য।
এর পাশাপাশি আমি আরেকটা ধাপের কথা বলবো। প্রথম যে চাকরি তুমি পাবে বা পেয়েছো, সেখানে তোমার পারফরম্যান্সই বলে দেবে তুমি এর পরে কেমন চাকরি পাবে বা সেটা কতো ভালো হবে।
Microsoft Office 3 in 1 Bundle
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
একটা বিষয় খেয়াল করে দেখো, এখানে সবগুলো ধাপের ফলাফল কিন্তু শুধুমাত্র তার পরের ধাপের জন্যেই মহা দরকারি। এসএসসির ফলাফল দরকার হবে তোমার এইচএসসিতে, এইচএসসির ফলাফল দরকার হবে তোমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় কিন্তু তোমার এসএসসির নম্বরটা খুব বেশি দরকার হবে না! একইভাবে তোমার প্রথম চাকরিতে জয়েন করতে গেলে কেউ তোমার এইচএসসির জিপিএ জিজ্ঞেস করবে না, বরং তোমার সিজিপিএ কতো, সেটাই জিজ্ঞেস করবে।
শেষ ধাপের ক্ষেত্রেও কথাটা সত্যি, তোমার সিজিপিএ কিন্তু পরের জবগুলোতে দরকারি হবে না ততোটা, দরকারি হবে তোমার আগের জবে কতটুকু এক্সপেরিয়েন্স হলো, সেটা।
এতগুলো কথা বলার উদ্দেশ্য একটাই। এই ধাপগুলোর কোন একটাতে যদি কোন কারণে তুমি ভুল করে হলেও খারাপ করে ফেলো, তবে সেটার ইফেক্ট পড়বে শুধুমাত্র পরের ধাপেই। পরের ধাপে যদি তুমি ঘুরে দাঁড়াতে পারো, যদি ফিরে আসতে পারো আগের সেরা অবস্থানে, তাহলে আসলেই একবার খারাপ করার সমস্যাটা কাটিয়ে উঠতে পারবে।
ধরো, তোমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ খারাপ। চাকরি পেতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যাটা কাটিয়ে একসময় না একসময় চাকরি তো তুমি পেয়েই যাবে। সেটা পাবার পরে যখন তুমি সেই চাকরিতে সব বাধা কাটিয়ে দারুণ উদ্যমে কাজ করে নিজের একটা নাম করে ফেলবে, তখন পরের ভালো চাকরিটা পেতে তোমার আর কোন সমস্যা হবার কথাই না!সেসব থাক, এবার আসা যাক তোমাদের সবথেকে কমন প্রশ্নটা নিয়ে। এই যে ধাপগুলো, এগুলোতে ভালো ফলাফলের মাপকাঠি কী? এই প্রশ্নের উত্তরটাই এখন দেব। এসএসসি আর এইচএসসিতে তো জিপিএ ফাইভের বিকল্প নেই, এ নিয়ে তাই বলারও কিছু নেই। সিজিপিএ ঠিক কতো হলে ভালো হয়, এটা বলতে গেলে সিজিপিএর একটা রেঞ্জ বের করে ফেলি। সেটা অনুযায়ী সব বলা যাক না হয়!
সিজিপিএ ০-২
দুইয়ের নিচে সিজিপিএ থাকার মানে হচ্ছে তুমি এখনো পাশ করতে পারো নি সেমিস্টার। তোমাকে অবশ্যই অনেক বেশি পড়াশোনা করে আগে সেমিস্টার বাঁচাতে হবে, যাতে তুমি মিনিমাম সিজিপিএটা নিয়ে পরের সেমিস্টারে উঠতে পারো।
সিজিপিএ ২-৩
সত্যি বলতে কী, আমরা যদি জব সেক্টর নিয়ে কথা বলি, তাহলে ৩ এর নিচে বেশিরভাগ সিজিপিএকে বাতিল বলা চলে। হ্যাঁ, আমি জানি কথাটা শুনতে খারাপ লাগছে। কিন্তু এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে ৩ এর নিচে সিজিপিএ হলে চাকরির জন্যে এপ্লাই করাই যায় না! তাই ৩ এর নিচে সিজিপিএ থাকলে অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে সিজিপিএ যেন ৩ এর উপরে থাকে। হ্যাঁ, এর থেকে কম সিজিপিএ পেয়েও অনেকে খ্যাতিমান হয়েছে, সেটা মানছি। কিন্তু সে সম্ভাবনা কি সবার ক্ষেত্রে সমান?
সিজিপিএ ৩-৩.৫
এই সিজিপিএ ধারী মানুষদের দু’টো কাজ সমানতালে করা উচিত। এই রেঞ্জে থাকার মানে হচ্ছে মানুষগুলো একটা সেফ জোনে আছে, কিন্তু এখানে পড়ে থাকলে সেই গতানুগতিক চাকরিই পেতে হবে, আরেকটু চেষ্টা করলে যে আরো ভালো চাকরি পেতে পারো সেটা মাথায় রাখতেই হবে।
এই রেঞ্জের মানুষগুলোকে পড়ালেখা আরেকটু বেশি করার পাশাপাশি বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলার কাজকর্মে নিয়মিত হতে হবে। তাতে সিভিটা যেমন বাড়বে, নেটওয়ার্কিংটাও তেমনি জমবে!
ঘরে বসে Freelancing
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
সিজিপিএ ৩.৫-৪.০০
আমার মনে হয় না একটা চাকরি পেতে এর থেকে বেশি সিজিপিএ দরকার আছে। হ্যা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হলে সিজিপিএ সর্বোচ্চ হওয়াটা বেশ দরকারি, কিন্তু আমি মনে করি যেকোন চাকরি পেতে হলে ৩.৫ যথেষ্ট ভালো একটা সিজিপিএ। এই রেঞ্জের মানুষগুলোকে তাই একটা কাজ করতে হবে। তারা যেন তাঁদের সিজিপিএ ধরে রেখে বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলার কাজের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখে।
সিজিপিএটা তো আছেই, কিন্তু এর পাশাপাশি যদি ক্লাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকে, ডিবেট বা কেস কম্পিটিশনের স্কিলটা জোরদার হয়, তাহলে আর তোমাকে আটকায় কে? এই রেঞ্জের মানুষকে তাই এক্সট্রা কারিকুলারে আরেকটু মনোযোগী হতেই হবে।
বলতে গেলে এই ছিলো বাংলাদেশে আমার চোখে সিজিপিএর বিশ্লেষণ। আশা করছি এই লেখাটা পড়ার পরে সিজিপিএ নিয়ে তোমার হাজারো ভ্রান্ত ধারণার অবসান ঘটবেই!
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- HSC Bangla Course
- ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩
- SSC 2023 শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কোর্স [বিজ্ঞান বিভাগ]
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন