আচ্ছা চিন্তা করা কি খারাপ কিছু?
আমাদের সকলের ক্ষেত্রে সেই ছোটবেলা থেকেই, এমনকি এখনও প্রায়ই শুনতে হয় যে– “একটু চিন্তা করে কাজ করো তো!” তাহলে চিন্তা করা খারাপ কেন হবে? বরং ভালোই তো! আসলে অতিরিক্ত যে কোনো জিনিসই কিন্তু খারাপ ঠিক তেমনি অতিরিক্ত চিন্তাও অনেক সমস্যার জন্ম দিতে পারে আপনার বিশ্লেষণ ক্ষমতা কমে যাওয়া, নিজেকে গুটিয়ে ফেলা, মানসিক চাপ বেড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে আপনার পুরো জীবনটাই না–বোধক হয়ে যেতে পারে। আর যদি তাই হয়, তাহলে নিচের ৮টি উপায়েই আপনি অতিরিক্ত চিন্তা দূর করতে পারেন।
Personal Fitness
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
১. যেকোন পরিবর্তনের শুরুতেই প্রয়োজন সচেতনতা
অতিরিক্ত চিন্তার সাথে মানিয়ে নেয়ার আগে, শুরুতেই আপনাকে জানতে হবে কখন আপনি অতিরিক্ত চিন্তা করছেন এরপর নিজেকে প্রশ্ন করুন কেন চিন্তা করছেন, কী নিয়ে চিন্তা করছেন? সেই চিন্তা ঠিক কতখানি গুরুত্ব বহন করে কিংবা আদৌ কোনো গুরুত্ব আছে কি না! ঠিক সেই মূহুর্তে সচেতনতাই আপনার পরিবর্তনের বীজ হিসেবে কাজ করবে।
“The first step toward change is awareness. The second step is acceptance.” – Nathaniel Branden
২. কী কী খারাপ হতে পারে সেটা না ভেবে কী কী ভাল হতে পারে সেটা ভাবুন
সবচেয়ে বেশি যেসব কারণে অতিরিক্ত চিন্তা হয় তার মধ্যে ‘ভয়’ অন্যতম এই ভয় থেকেই যখন আপনি কী কী খারাপ হতে পারে চিন্তা করছেন ঠিক তখনি আপনি আটকে যাবেন। আরো বেশি করে চিন্তার ভিতর ঢুকে যাবেন। কিন্তু আর না, এবার থামুন। এবার যা যা ভাল হতে পারে সেইসব নিয়ে ভাবুন, সব খারাপগুলোকে মন থেকে ঝেড়ে ফেলুন। আপনি চাইলে ভাল খারাপ যাই ঘটুক না কেনো সবকিছুকেই ভাল চিন্তায় পরিণত করতে পারেন। কারণ সবকিছু জীবনেরই অংশ।
একবার ভেবে দেখুন, আপনি কিন্তু প্রতিনিয়ত শিখছেন, অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন। সেটা যেমন ভাল থেকে, ঠিক তেমন খারাপটা থেকেও কিন্তু। আর এগুলো ছাড়া আপনার জীবনের পরিপূর্ণতা কখনই আসবে না। নিচের উক্তিটি খেয়াল করুন–
“No experience in life is wasted. Everything in life is happening to grow you up, fill you up, to help you become more of what you were created to be.” – Oprah Winfrey
৩. নিজের খুব ভালো লাগার কাজগুলো করুন
অনেক সময় নিজের ভালো লাগা, পছন্দের কাজগুলো করতে পারা খুব কাজে দেয়। এমন কিছু যেটা আপনি অনেকদিন থেকে করতে চাচ্ছেন কিন্তু কোন কারণে করা হয়ে উঠেনি, সেটা এবার করে ফেলুন। মেডিটেশন, নাচ, যেকোন বাদ্যযন্ত্র শেখা, গান শেখা, সেলাই করা, আঁকাআকি করা অতিরিক্ত চিন্তা দূর করতে সহায়ক। সময়গুলোকে উপভোগ করুন, জীবনকে ভালবাসুন, দেখবেন সবকিছু আপনা–আপনি ভাল লাগতে শুরু করবে।
“I have found that if you love life, life will love you back.” – Arthur Rubinstein
৪. চিন্তাগুলোকে আর একটু সামনে এগিয়ে নিয়ে যান
অতি ক্ষুদ্র জিনিসকে অতি বৃহৎ বস্তুতে পরিণত করা এবং কোনো বিষয়ের খারাপটা চিন্তা না করে ভালোটা চিন্তা করার থেকে সহজ কাজ আর হয় না।আপনি যখন চিন্তাই করছেন তখন আর একটু ভাবুন আগামী পাঁচ বছর পর জিনিসটার কি আসলেই কোনো মূল্য থাকবে আপনার জীবনে কিংবা আগামী মাস পর্যন্ত? তাহলে কেন এত চিন্তা করছেন, এই সময়ের বাধাই আপনাকে অতিরিক্ত চিন্তা করে সময় নষ্ট করা থেকে বাঁচিয়ে দেবে।
আরও পড়ুন:
১১টি বৈশিষ্ট্য যা বলে দিবে অতিরিক্ত চিন্তা করার অভ্যাস আছে কিনা
নামাজ পড়ার নিয়ম: কোন নামাজ কত রাকাত ও নামাজের ফরজ কয়টি?
৫. সবকিছু নিখুঁত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা ছেড়ে দিন
এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যারা এখনো সবকিছু নিখুঁত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন তারা সেই আশা ছেড়ে দিতে পারেন। উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকা দোষের কিছু নয়, কিন্তু একই সাথে সবকিছু নিখুঁত আশা করা অবাস্তব। আপনি যতক্ষণ সেই অপেক্ষা করছেন ততক্ষণ আপনি সময় নষ্ট করছেন। জীবনে সবকিছু কখনই নিঁখুত হয় না।বরং সবরকম প্রতিবন্ধকতা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়াতেই জীবনের সফলতা। তাই এটি কখনই কোন বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে না। নিচের কথাটিই দেখুন–
“Life is not about waiting for the storms to pass. It’s about learning how to dance in the rain.”– Vivian Greene
৬. উপলব্ধি করুন আপনি ভবিষ্যৎ বলতে পারেন না
শুধু আপনি না কেউই ভবিষ্যৎ বলতে পারে না। আপনি যখন নিজের বর্তমানের মূহুর্তগুলোয় ভবিষ্যতে কী হবে, না হবে এইসব নিয়ে চিন্তা করছেন তার মানে তখন আপনি নিজেই নিজের জন্য বরাদ্দ সময়গুলো নষ্ট করছেন। আবার অতীতের কোন ভুলের ফলাফল যে সবসময় একই হবে এটা কখনই উর্বর চিন্তা নয় বরং বর্তমানের সময়গুলোকে নিজের আনন্দের ও উপভোগের কারণ বানিয়ে ফেলুন।
“I try not to get involved in the business of prediction. It’s a quick way to look like an idiot.” – Warren Ellis
৭. নিজের সেরাটাকে মেনে নিতে শিখুন
আমি যথেষ্ট ভাল নই, পরিশ্রমী নই, কার্যক্ষম নই, উপযুক্ত নই– ঠিক এই কথাগুলোই নিজের ভিতর ভয় ঢুকিয়ে দেয়। যখন আপনি নিজের সেরাটা দিচ্ছেন তখন এটিও মেনে নিন যে, সফলতা এমনকিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে যার পুরোটার নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতে নেই। আবার অনেক সময় সঠিক মানুষ ও পরিবেশের অভাবে সেরাটাই সবথেকে খারাপ এবং সবথেকে খারাপটাই সেরা হয়ে যায়। কিন্তু মাথায় রাখুন আপনি আপনার সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করেছেন।
নিচের কথাটাও কিন্তু সেটাই বলে–
“At your absolute best, you still won’t be good enough for the wrong person. At your worst, you still be worth it to the right person.” – Karen Salmansohn
৮. কৃতজ্ঞ হোন
একই সময়ে কেউ সুখী ও দুঃখী উভয়ই হতে পারে না। তাই সবার আগে সময়ের প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই একটা তালিকা করে ফেলুন আপনি কীসের কীসের জন্য এবং কাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এরপর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। এবার আর একটা তালিকা করুন আপনি কী কী ভাল কাজ করেছেন বা ভাল কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন।ভাল সময়ের রোমন্থন মন ভাল করে দেয়। এভাবে দিনের শুরুতেই মনটা ভাল হয়ে গেলে দেখবেন সারাদিনটাও ভালভাবেই শেষ হবে।
সবশেষে নিজের ঘড়ির দিকে তাকান, পাঁচ(৫) মিনিট সময় নিন। চোখ বন্ধ করে নিজের সমস্ত মনোযোগ দিয়ে চিন্তা করুন। এবার চোখ খুলে একটা পেপারে লিখতে শুরু করুন যে ঠিক কোন কোন জিনিস আপনাকে চিন্তায় ফেলে দেয়, উদ্বিগ্ন করে। এবার পেপারটা সুন্দর করে ভাঁজ করে ফেলে দিন। আসলে জীবনটা অনেক অনেক চিন্তা করার জন্য খুব ছোট। তাই পরের সময়টুকু শুধু উপভোগ করুন।
আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Study Smart Course by Seeam Shahid Noor
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
- Microsoft Word Course by Sadman Sadik
- Microsoft Excel Course by Abtahi Iptesam
- Microsoft PowerPoint Course by Sadman Sadik
- Personal Finance Course by Nafeez Al Tarik
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন