বই পড়তে গিয়ে তুমি যদি দুশ্চিন্তায় ভোগো কোন বইটি পড়বে, তা নিয়ে, তাহলে তোমার জন্যই আমরা বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক সর্বাধিক পাঠকপ্রিয়তা পাওয়া বইগুলো সম্পর্কে জানাতে চেষ্টা করছি। সেই চেষ্টার ধারাবাহিকতায় তোমাদের জন্য আজ থাকছে সেরা পাঁচ ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিষয়ক বইয়ের খোঁজ:
১৯৭১ : ভেতরে বাইরে
ইতিহাস রচনার দুটি উৎস: একটি হচ্ছে দলিল-দস্তাবেজ, আর অন্যটি হলো অংশগ্রহণকারী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান বা তাদের স্মৃতিকথা। এই দুইয়ের সার সংগ্রহ ও সংকলন করেই ইতিহাস রচিত হয়। এ কে খন্দকার বীর উত্তম ইতিহাসবিদ নন—কিন্তু তিনি মুক্তিযুদ্ধের একজন অংশগ্রহণকারী, যুদ্ধের সামরিক নেতা এবং অনেক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তাঁর এই বইটি সে কারণেই ইতিহাসের একটি অন্যতম দলিল।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যারা বুঝতে চান, যারা বাংলাদেশের ইতিহাস লিখতে চান, তাদের জন্য এই বই অবশ্যপাঠ্য। বইটি লেখা হয়েছে সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে, যেখানে বেশিরভাগ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই রচনা করা হয়েছে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে। এছাড়াও বইটিতে এমন অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যা পূর্বে দৃষ্টির আড়ালেই ছিল।
তাই, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গর্বের ইতিহাস জানতে এই বইটি হতে পারে তোমার যোগ্য সঙ্গী।
কোর্সটিতে যা যা পাচ্ছেন:
বিসিএস প্রিলি লাইভ কোর্স
তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা
ইতিহাসের বইগুলো লেখা হয়ে থাকে গবেষণালব্ধ তথ্য হতে, প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা হতে, অথবা সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কথোপকথন হতে। কিন্তু, এ বইটি এখানেই ব্যতিক্রম। এই বইয়ের লেখক প্রত্যেকটি অভ্যুত্থানকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে।
এই বইয়ে উপজীব্য হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য তিন সেনা বিদ্রোহ- পনের আগস্ট, ১৯৭৫ এর রক্তাক্ত সেনা অভ্যুত্থান, তেসরা নভেম্বর অভ্যুত্থান:খালেদের উত্থান-পতন এবং সাত নভেম্বর ঐতিহাসিক সিপাহী বিদ্রোহ। দেশের দুই রাষ্ট্রপতির হত্যা এবং তৎকালীন পরিস্থিতির যথাসম্ভব নিরপেক্ষ বর্ণনা দেয়ার চেষ্টা করেছেন লেখক।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকলে তোমার পড়েই ফেলা উচিত এই বইটি!
একাত্তরের চিঠি
একাত্তরের চিঠি কোন একক ব্যক্তির ব্যক্তিগত ডায়রি নয়, সমষ্টিগত চিঠির সংকলন, যাতে রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে রণাঙ্গন থেকে স্বজনদের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের আবেগমথিত কথামালা, চেতনা ও প্রত্যয়ের দৃঢ় উচ্চারণ আর যুদ্ধজয়ের প্রগাঢ় আকাঙ্ক্ষার বাণী।
যে মুক্তিযোদ্ধারা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন এটি শুধু তাদের বীরত্বগাঁথাই নয়, পেছনে রেখে আসা তাদের পরিবারেরও গল্প। মূলত এটি একটি জনযুদ্ধের ইতিহাস। সেসব ঘটনা, অনুভব, ত্যাগ ও স্বপ্নের দলিলই হচ্ছে স্বজনদের কাছে লেখা মুক্তিযোদ্ধাদের এসব চিঠি। আর মুক্তিযোদ্ধাদের সেসব চিঠি নিয়েই ‘একাত্তরের চিঠি’।
মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা এই চিঠিগুলো মুক্তিযুদ্ধের শুকনো ইতিহাস নয়, বরং জীবন্ত আখ্যান। চিঠিগুলো পড়ে তুমি কাছ থেকে অনুধাবন করতে পারবে একজন মুক্তিযোদ্ধার অনুভূতি, দেশকে এবং মুক্তিযুদ্ধকে দেখতে শিখবে অন্য চোখে।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও ভারতের অর্থনৈতিক ইতিহাস
সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দী জুড়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছিল ব্রিটেন ও এশিয়ার বৃহত্তম এবং সবথেকে ক্ষমতাশালী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। কোম্পানির প্রতিষ্ঠা হয় ব্রিটেনের বাজারের জন্য এশিয়ার পণ্য কিনবার উদ্দেশ্য নিয়ে। এই কেনাবেচার পরিণাম পারস্য থেকে ইন্দোনেশিয়া, এশিয়া থেকে উত্তর আমেরিকা পর্যন্ত বিস্তৃত এক নেটওয়ার্ক।
রাজনীতি এবং বাণিজ্যের মধ্যে যে জটিল পারস্পারিক নির্ভরতা থেকে ভারতে ব্রিটিশ রাজ্যের শুরু, তা নিয়েই এই বই। সাম্প্রতিক গবেষণা এবং ঐতিহাসিক তথ্যের সমন্বয়ে লেখক ভারতের অর্থনৈতিক ইতিহাসে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তাৎপর্য বিশ্লেষন করেছেন।
ভারতবর্ষের ইতিহাসের একটি সুখপাঠ্য বই হাতে নিতে চাইলে চোখ বন্ধ করে তুলতে পারো এই বইটি।
এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য স্বাধীনতার প্রথম দশক (১৯৭১-১৯৮১)
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমাদের সামরিক বাহিনীর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাত, অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থান ইত্যাদি নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত সেনা-কর্মকর্তাদের কেউ কেউ ইতোমধ্যে স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ লিখেছেন। কিন্তু সে-সব গ্রন্থের সঙ্গে মেজর জেনারেল (অবঃ) মইনুল হোসেন চৌধুরীর এ- বইটির পার্থক্য হলো তিনি এই ঘটনাপ্রবাহের সুবিধাভোগী কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত-কোনটাই নন।
একজন দায়িত্বশীল, কর্তব্যনিষ্ঠ, আইনানুগ ও শৃঙ্খলাপরায়ণ সেনা-কর্মকর্তা হিসেবে লেখক শেষদিন পর্যন্ত পক্ষপাতহীনভাবে তাঁর পেশাগত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থেকেছেন। আর এই দায়িত্ব পালনের সূত্রেই খুব কাছ থেকে সবকিছুকে দেখার, উপলব্ধি করবার সুযোগ তাঁর হয়েছে।
নির্মোহ ও বস্তুনিষ্ঠভাবে সে দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করেছেন লেখক তাঁর এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য : স্বাধীনতার প্রথম দশক গ্রন্থটিতে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই বইটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্ভরযোগ্য দলিল।
বাংলাদেশে সর্বাধিক পাঠকপ্রিয়তা পাওয়া ইতিহাস-ঐতিহ্য বিষয়ক এই বই পাঁচটি সম্পর্কে তোমার মতামত আমাকে জানিও কমেন্টবক্সে। ইতিহাস আমার নিজেরও খুব পছন্দের একটি বিষয়। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলতে পারি, সত্যিকার ইতিহাস বিস্তারিতভাবে জানার চেয়ে আনন্দের অনুভূতি আর হতে পারে না! তাহলে আর দেরি কেন? শুরু করে দাও আজই! শুরু করে দাও এই বইগুলো দিয়েই!
এই লেখাটির অডিওবুকটি পড়েছে তাওহিদা আলী জ্যোতি।
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
- English Grammar Crash Course by Sakib Bin Rashid
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারেন এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন