পুরোটা পড়ার সময় নেই ? ব্লগটি একবার শুনে নাও !
“Great things are done by a series of small things brougth together”
– Vincent Van Gogh
ঠিক সেভাবেই আমাদের গড়ে প্রতিদিনের গড়ে তোলা কিছু ছোট ছোট অভ্যাসই একসময় আমাদের অনেক বড় উপকার করবে। চলুন দেখে নেয়া যাক এরকম ছোট ছোট ১৮টি অভ্যাস।
১। প্রতিদিন ১০টা করে নতুন জিনিষ নিয়ে চিন্তা করুন
নতুন ধরণের কোনো গল্পের কাহিনী, কীভাবে কোনো জাতীয় সমস্যার সমাধান করা যায়, কীভাবে কোনো বন্ধুর একটা সমস্যার সমাধান করা যায়, এমন অন্তত যেকোনো দশটি বিষয় নিয়ে প্রতিদিন চিন্তা করুন। এতে করে আপনার মস্তিষ্ক সবসময় সচল থাকবে এবং এভাবে চিন্তা করতে করতেই আপনি অচিরেই একদিন উপস্থিত হবেন বড় কোনো সমস্যার সমাধান নিয়ে।
২। পত্রিকা পড়ুন
পাঠ্যবইয়ের বাইরের জগৎকে জানার জন্য পত্রিকার কোনো বিকল্প নেই। পত্রিকা আপনাকে সাম্প্রতিক পারিপার্শ্বিক ঘটনাগুলো সম্পর্কে সচেতন রাখবে যাতে করে আপনি বাইরে অন্যান্যদের সামনে নিজ মতামত প্রকাশে আত্মবিশ্বাস লাভ করবেন। এতে করে আপনার সাধারণ জ্ঞানও সমৃদ্ধ হবে। নির্দ্বিধায় পত্রিকা পড়া মানুষের সবচেয়ে ভাল অভ্যাসগুলোর মাঝে একটা।
৩। কোনো একটা বিষয় নিয়ে অন্যভাবে চিন্তা করুন
যেকোনো একটা বিষয় নিয়ে আর দশটা মানুষ যে মতামত দিচ্ছে তার থেকে ভিন্ন কোনো একটা মতামত নিয়ে হাজির হতে চেষ্টা করুন যা সহজে মানুষের মাথায় আসে না। আপনার মতামতকে যথাযথ যুক্তি দিয়ে সত্য প্রমাণ করুন। এতে করে আপনার ব্রেইনস্টর্মিং এর ক্ষমতা বাড়বে।
৪। কোনো একটা বই এর এক অধ্যায় পড়ে ফেলুন
“আমার বই পড়ার সময় নেই” এমন অজুহাত দাঁড়া না করিয়ে বরং একদিনে এক অধ্যায়, এভাবে করে এক সপ্তাহে অন্ত্যত একটা বই পড়ার চেষ্টা করুন। আপনি একবার বই পড়ার সংকল্প করে ফেললেই দেখবেন সময় কীভাবে বের হয়ে আসছে।
কাল্পনিক, সত্য ঘটনার অবলম্বনে কিংবা যেকোনো ধরণের বইই আপনি পড়তে পারেন। সত্য ঘটনা অবলম্বনে বই পড়লে আপনার জ্ঞানের পরিধি বাড়বে আর কাল্পনিক বই পড়লে আপনার কল্পনা শক্তি বৃদ্ধি পাবে। আইন্সটাইন তো বলেছেনই,
Imagination is more important than knowledge
৫। টেলিভিশন না দেখে, শিক্ষামূলক ভিডিও বা ডকুমেন্টারি দেখুন
এই ডিজিটাল যুগে শিক্ষামূলক ভিডিও পাওয়াটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। 10 Minute School থেকে শুরু করে খুঁজলে অনেক সাইটই পাওয়া যাবে যেখানে শতাধিক শিক্ষামূলক ভিডিও রয়েছে।
এমনকি আজকাল ইউটিউবেও হ্যান্ডিক্র্যাফট থেকে শুরু করে প্রোগ্রামিং সহ আরো নানা বিষয়ের সহজ টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। অনলাইনেও ইদানিং অনেক কোর্স করা যায়। চাইলে তার থেকেও একটা করে ফেলতে পারেন।
৬। ভাল ভাল ওয়েবসাইট এবং নিউজ পোর্টালগুলোতে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন
যেকোনো ওয়েবসাইটেরই নিচে কিংবা উপরে কোনো এক কোনায় একটা ‘বেলশেপড’ সাবস্ক্রিপশন সাইন দেয়া থাকে (এই ব্লগটির নিচে গেলেও এমন একটি সাইন পাবেন) সেখানে ক্লিক করে সাবস্ক্রাইব করলেই ঐ সাইট থেকে আপনার মেইল ইনবক্সে কিংবা পিসিতে ঐ সাইটের নতুন কন্টেন্টের নোটিফিকেশন আসতে থাকবে।
এছাড়াও ফেসবুকে শিক্ষামূলক পেইজগুলোতে “সি ফার্স্ট” অপশনে সিলেক্ট করে রাখলে আপনার নিউজফিডে সেই পেইজের পোস্ট সবার আগে আসবে।
৭। যা শিখলেন তা অন্যদের শেখান
আপনি তখনই বুঝবেন যে একটা বিষয় নিয়ে আপনি ভালভাবে জেনেছেন যখন তা আপনি অন্যদের বুঝাতে পারবেন। তাই নিজে যা শিখলেন তা অন্যদের বোঝান, সবার সাথে তা নিয়ে আলোচনা কিংবা বিতর্ক করুন।
৮। তৈরি রাখুন টু ডু লিস্ট, ডান লিস্ট এবং নট টু ডু লিস্ট
প্রতিদিন কী কী করতে হবে, কী করা শেষ এবং কী কী করা যাবে না তার একটা লিস্ট তৈরি করে রাখুন।
৯। যা শিখেছেন তা নোট করে রাখুন
ক্লাসে লেকচারের সময় কিংবা কেউ কিছু বলার সময় আমরা যে মিথ্যা কথাটা নিজের সাথে নিজে সবসময় বলি তা হচ্ছে, “লেখার দরকার নেই, মনে থাকবে”। আজ থেকে যা শিখলেন তা কোথাও লিখে ফেলার অভ্যাসটা গড়ে তুলুন।
১০। নেটওয়ার্কিং করুন
আপনার পছন্দের বিষয়টা পছন্দ করে এমন মানুষ কিংবা এমন কোনো মানুষ যার কোনো কাজ আপনার ভাল লাগে, এমন মানুষদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করুন। এতে করে আপনি তাদের থেকে অনেক কিছু শিখিতে পারবেন।
১১। কৌতুহলী হন
কোনোকিছু দেখলে তাকে পাত্তা না দিয়ে চলে যাওয়ার চেয়ে বরং সেই জিনিষটার প্রতি কৌতুহল প্রকাশ করুন। নিজেকে সেই জিনিষটা নিয়ে প্রশ্ন করুন এবং নিজেই তার উত্তর দেয়ার চেষ্টা করুন।
১২। “ওয়ার্ড অফ দ্যা ডে” এ্যাপ ব্যবহার করুন
বিভিন্ন ডিকশনারির মত এ্যাপ আছে যা প্রতিদিন একটা করে শব্দ অর্থসহ আপনার মোবাইলের স্ক্রিনে দেখায়। এরকম এ্যাপগুলো ব্যবহার করুন।
১৩। আপনার মনে ভীতি সঞ্চার করে এমন কিছু করুন
“আমি এই জিনিষটা ভয় পাই, এটা আমাকে দিয়ে হবে না।“ এই ধরণের কিছু থেকে থাকলে প্রতিদিন আস্তে আস্তে চেষ্টা করুন সেই ভয়টা কাটিয়ে উঠতে। যেমন ধরুন, আপনি মানুষের সামনে কথা বলতে পারেন না, তাহলে চেষ্টা করুন কোনো পাবলিক স্পিকিং প্লাটফর্মে গিয়ে স্পিচ দিয়ে আসতে।
১৪। নতুন নতুন জায়গায় ঘুরুন
ভ্রমণ করা আমাদের সবার জন্য সম্ভব না হলেও, আমাদের নিজেদের শহর কিংবা গ্রামের মাঝেই নতুন জায়গাগুলো কিন্তু আমরা ঘুরে দেখতেই পারি।
১৫। বুদ্ধি খোলে এমন খেলা খেলুন
দাবা, সুডোকু, রুবিক্স কিউব, মাইন্সুইপার এরকম কিছু খেলা আছে যা আপনার বুদ্ধি খুলতে কার্যকর। অবসরে এধরণের খেলা খেলার চেষ্টা করুন।
১৬। অবসর রাখুন
দিনে এমন একটা সময় হাতে রাখুন যখন আপনি কোনো কাজ করবেন না, একদম বিশ্রামে থাকবেন। এই সময়টাতেই সাধারণত আমরা সারাদিন যা যা করলাম তার একটা প্রতিচ্ছবি আমাদের চোখে ধরা পরে।
১৭। একটা প্রোডাক্টিভ শখ পালন করুন
বাগান করা, সেলাই করা, ক্র্যাফটিং এ জাতীয় কোনো কাজ যা ভবিষ্যতে কাজে লাগতে পারে, তাকে শখ হিসেবে পালন করুন।
১৮। যা শিখলেন, তাকে কাজে লাগান
এরপর এতক্ষন যা শিখলেন, তাকে বাস্তবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।
এভাবে করেই প্রতিদিন ছোট ছোট কাজের মাধ্যমেই দেখবেন আপনার লাইফস্টাইল কীভাবে বদলে যাচ্ছে!
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন