সমস্যা যদি একটা শক্তির উৎস হত তবে একে খুব করে নবায়নযোগ্য বলা যেত। কারণ, আমাদের জীবনে একটা সমস্যা শেষ হতে না হতেই উৎপত্তি ঘটে যায় আরো বহু সমস্যার। এভাবে জীবন সামনে এগুতেই থাকে একেকটা সমস্যার উপরে ভর করে। কিন্তু, আমাদের জীবনে এমন কোনো সমস্যাই নেই যার কিনা সমাধান করা সম্ভব না। কোনো সমস্যাই বড় না, যদি সমাধানটা তার চেয়েও বড় হয় আর সেই বড় সমাধান বের করার ১০টি ধাপই আজকে আমরা জানব।
১। আসল সমস্যাটা চিহ্নিত করুন।
যেকোনো সমস্যার মাঝেই থাকে অনেকগুলো ছোট ছোট সমস্যা। আমরা বেশিরভাগ সময়ই এইসব ছোট সমস্যাগুলোকে নিয়ে পরে থাকি। তাই আসল যে সমস্যা, তা রয়ে যায় আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তাই প্রথমেই আসল সমস্যাটা কী এবং তার উৎপত্তি কোথা থেকে হচ্ছে তা নির্ধারণ করতে হবে।
যেমন ধরুন, আপনার ভার্সিটির টার্ম পেপারগুলো সাবমিট করতে করতে সবসময় ডেডলাইন পার হয়ে যায়। এক্ষেত্রে, আপনি হয়ত আপনার টার্ম পেপারের কন্টেন্ট কমিয়ে আনছেন কিংবা রিপ্রেজেন্টেশনের থেকে শেষ করাতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন কিন্তু আসলে সমস্যাটা হচ্ছে আপনার এক গ্রুপমেটের মাঝে যে কিনা সব কাজ খুব ধীরে করে, কাজের বিঘ্ন ঘটায়। এটা হচ্ছে আপনার মূল সমস্যা।
এখন আপনি যদি এই গ্রুপমেটকে নিয়ে কিছু না করে অন্য সব ছোট ছোট সমস্যাগুলো সমাধান করতে থাকেন তাহলে আপনার সমস্যা কখনোই শেষ হবে না বরং একসময় আপনিই হাঁপিয়ে উঠবেন।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
Communication Masterclass by Tahsan Khan
তবে অবশ্যই খেয়াল করে দেখবেন যাতে সমস্যাটা আপনার নিজের সৃষ্ট হলে তা চোখ এড়িয়ে না যায়। এমনতো হতেই পারে যে আসলে সবাই ঠিকমতই কাজ করছে, কিন্তু আপনার প্রত্যাশাটাই বেশি বড়।
২। জরুরি সিদ্ধান্তগুলো আগে নিন।
একটা সমস্যা সমাধানের জন্য আপনাকে বিভিন্ন ধরণের সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে ঠিক করতে হবে যে, কোন সিদ্ধান্তটা জরুরি ভিত্তিতে নেয়ার উচিত আর কোনটা পরে নিলেও হবে। সিদ্ধান্ত নেয়ার পরে খুব সমস্যা না হলে আর পেছনে ফিরে তাকাবেন না।
আমাদের একটা বাজে স্বভাব হচ্ছে যে, আমরা ভবিষ্যতে কী করব তা ভাবার চেয়ে, অতীতে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে অনুশোচনা করে বেশি সময় নষ্ট করি। এই কাজটা করা একদম ঠিক না। সিদ্ধান্ত যা নেয়ার ছিল নিয়েছেন, তাকে শোধরানোর কোনো সুযোগ না থাকলে তা মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে, শুধু শুধু অনুশোচনা করলে কোনো লাভ হবে না।
আরো পড়ুন: বর্তমান প্রজন্মের একটি বড় সমস্যা- আত্মবিশ্বাসহীনতা
৩। সমস্যাগুলোকে ভেঙে ফেলুন।
একটা বড় সমস্যাকে ভেঙে ছোট ছোট সমস্যায় পরিণত করুন। এতে করে সমাধান করা সহজ হয়। ধরুন, আপনার অনেকগুলো অ্যাসাইনমেন্ট একত্রে করতে হবে। সেক্ষেত্রে, সেগুলোকে ডেডলাইনের ভিত্তিতে ভাগ করে নিন। যেমন, ডিসেম্বর ১১ এর আগে যেই অ্যাসাইনমেন্টগুলোর ডেডলাইন আছে, সেগুলো ডিসেম্বরের ১০-এর মাঝে শেষ করতে হবে। এর মাঝে আর কোনো অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে চিন্তা করা যাবে না।
এভাবে করলে অ্যাসাইনমেন্টের সংখ্যা অনেক কমে যাবে, আর করাটাও সহজ হবে।
৪। কী জানেন আর কী জানেন না তার তালিকা করুন।
একটা সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় কোন কোন তথ্য আপনার কাছে আছে আর কোন কোন তথ্য থাকা দরকার কিন্তু নেই, তার তালিকা করে ফেলুন। যেমন, এক রাতে সিলেবাস শেষ করতে গেলে, আপনার কোন কোন টপিক নিয়ে আগে থেকে ধারণা আছে আর কোন কোন টপিক সম্পর্কে কিছুই জানেন না তা লিখে রাখুন।
৫। সম্ভাব্য একাধিক সমাধান ঠিক করে রাখুন।
সবসময় একটা প্ল্যান বি হাতের কাছে রাখুন। এছাড়াও সমস্যা সমাধানের শুরুতেই সম্ভাব্য যেই যেই সমাধান রয়েছে তা লিখে ফেলুন। এরপরে সেগুলো নিরীক্ষা করে, সবচেয়ে সুবিধাজনক সমাধানটি বেছে নিন।
৬। ‘রিসোর্স এলোকেট’ করুন।
আপনার কাছে যেসব রিসোর্স আছে, যেমন আপনার এনার্জি, সময়, টাকা ইত্যাদি। কোনো সমস্যায় পড়লে, এসবকে সচেতনভাবে ব্যবহার করতে হবে। আপনি কোন জিনিসে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেবেন তাও ঠিক করে নিতে হবে।
যেমন ধরুন, আপনার কাছে কিছু টাকা আছে। এখন আপনার এই টাকা দিয়ে নোট কিনতে হবে, আবার আপনার খাওয়াও দরকার। এখন কালকে আপনার পরীক্ষা। এর মাঝে আর নোট কেনার সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে আপনার ঐ টাকাটা দিয়ে আপনার নোট কেনা উচিত হবে।
৭। মস্তিষ্ক এবং হৃদয়, দু’দিকেরটাই শুনুন।
থ্রী ইডিয়ট মুভিটাতে, আমির খান তার বন্ধুর বাবাকে বাঁচানোর জন্য পরের দিনের পরীক্ষার পড়া বাদ দিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। বাস্তব জীবনে আমাদের এমন অনেক পরিস্থিতিতে পফড়তে হয়ে যেখানে আমরা নিজেরাও বুঝে উঠতে পারি না যে, আবেগের বশে সিদ্ধান্ত নেবো নাকি যুক্তি দিয়ে। এক্ষেত্রে একচেটিয়া একভাবে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে চিন্তা করে দেখতে হবে।
আরো পড়ুন: Case Solving Guide (Tips and Tricks)
৮। অন্যের থেকে উপদেশ নিন।
মাঝে মাঝে আমাদের আশেপাশের মানুষের চোখে কোনো সমস্যার এমন অনেক দিক ধরা পড়ে, যা আমরা ধরতে পারি না। এজন্য যেকোনো সমস্যা সমাধানের অনেক বিশ্বাসযোগ্য কিছু মানুষের সাথেও পরামর্শ করে নিতে হবে। সমস্যার কথা যত কম মানুষ জানবে ততই ভাল, আর উপদেশ নিলেই যে তাকে বাস্তবায়ন করতে হবে, এমনটা না। নিজের বিবেকবোধ যেসকল উপদেশকে কাজে লাগাতে বলবে, শুধু সেগুলোই আমলে আনতে হবে।
৯। অগ্রগতি নিরীক্ষা করুন।
কতটুকু এগোচ্ছেন তা হিসেব করে রাখুন। সমস্যা সমাধানের একটা আদর্শমান রাখুন, নির্দিষ্ট সময় পরপর অগ্রগতি পরিমাপ করে দেখুন।
১০। পেছনের সমস্যাটা বের করুন।
একটা সমস্যার কারণ অন্য আরেকটা সমস্যা হতে পারে। যেমন ধরুন, আপনার পরীক্ষার নম্বর ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এর কারণ হয়ত আপনার ডিপ্রেশন যা হচ্ছে কোনো একটা ঘটনার জন্য। এখন আপনার মূল সমস্যা হচ্ছে, ঐ ঘটনা থেকে বের হয়ে আসা। এমন সমস্যার পেছনের সমস্যা বের করে নিয়ে আসতে হবে।
We should not give up and we should not allow the problem to defeat us.
– A. P. J. Abdul Kalam
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- ঘরে বসে Freelancing Course
- Data Entry দিয়ে Freelancing Course
- Facebook Marketing Course (by Ayman Sadik and Sadman Sadik)
- T-Shirt Design করে Freelancing Course
- SEO Course for Beginners
- Web Design Course
- Cartoon Animation Course by Antik Mahmud
- Graphic Designing Course with Photoshop (by Sadman Sadik)
- Adobe Illustrator Course
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Microsoft Word Course by Sadman Sadik
- Microsoft Excel Premium Course
- Microsoft PowerPoint Course by Sadman Sadik
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন