পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবারে শুনে নাও!
ধরো, তুমি একটি চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছো। সেই একই চাকরির জন্য আরও অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী আছে তোমার। যারা হয়তো তাদের স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নিজেদের কেবল ক্লাসরুমের চার দেয়ালের মাঝেই সীমাবদ্ধ করে রাখেনি বরং এর বাইরেও ভিন্নধর্মী কাজে নিজেদের ব্যস্ত রেখেছে, অনেক কিছু শিখেছে, জেনেছে। সেক্ষেত্রে তোমার চেয়ে অন্যদের সেই চাকরিটি পাওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু অনেক গুণ বেশি।
তোমার মাঝে এমন কী আছে যা তোমাকে অন্যদের মধ্যে অনন্য করে তুলবে? তোমার এক্সট্রা কারিকুলাম কাজগুলো।
বন্ধুদের আড্ডায়ও কিন্তু আমরা সেই বন্ধুটিকে রাখতে চাই যে গান গাইতে জানে বা কথার ঝুলি নিয়ে বসে গল্প বলে অনর্গল। অর্থাৎ, শুধু চাকরির ক্ষেত্রেই নয়, জীবনের সব পর্যায়ে একটু এক্সট্রা স্পেশাল হয়ে উঠতে হলে তোমারও কিছু এক্সট্রা কারিকুলাম থাকা চাই।
নিজেকে আবদ্ধ করে রেখো না
ক্লাসে বা পাঠ্যবই থেকে আমরা প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখি। কিন্তু ক্লাস-টিউশন–পাঠ্যবই এসবের মাঝে নিজেকে আবদ্ধ করে রেখো না। অবশ্যই নিয়মিত পড়াশোনা করবে, ক্লাসে যাবে। কিন্তু সেটিই যেন তোমার একমাত্র কাজ না হয়। চার দেয়ালের বাইরে নিজেকে একটু বিকশিত করো। নিজেকে জানতে, তোমার চারপাশের পৃথিবীকে চিনতে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
” To confine our attention to terrestrial matters would be to limit the human spirit.”
– Stephen Hawking
Focus on quality not quantity
আমরা অনেকেই অনেক কাজে নিজেদের ব্যস্ত রাখি। গান, নাচ, আবৃত্তি, খেলাধুলা- এমন কোনো কাজ নেই যেটি করি না। তুমি অনেক কিছু পারো, সেটি নিঃসন্দেহে একটি ভাল ব্যাপার। তোমার আসলেই কোন কাজগুলো করতে ভাল লাগে সেটি বুঝতে হলেও অনেক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা উচিত।
“শুধু কিছু পাওয়ার আশায় নিজের ইচ্ছা বা আগ্রহকে ছোট করো না। এমন কিছু করো যা তুমি আসলেই করতে ভালোবাসো।”
কিন্তু একবার তুমি তোমার সবচেয়ে পছন্দের কাজটি খুঁজে পেলে অন্য অনেক কিছুতে সময় নষ্ট না করে পছন্দের কাজটি নিয়েই লেগে থাকো। হাল ছেড়ে দিও না। প্রতিনিয়ত সেই কাজটিতে নিজেকে পারদর্শী করে তোলার চেষ্টা করো। কেননা, It’s better to be a master of something than being a jack of all trade।
সেই কাজটি করো যা তোমার আসলেই ভাল লাগে
চাকরির বাজার কিংবা অ্যাডমিশন; এই বিষয়গুলো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এসব ছাড়াও আমাদের জীবনে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। ধরো, তুমি তোমার এক বন্ধুর কাছে শুনলে আজকাল গ্রাফিক ডিজাইনারদের খুব কদর চারিদিকে। এটি শিখে তুমি হয়তো চাকরি পেয়ে যেতে পারো কিন্তু গ্রাফিক ডিজাইনিং নিয়ে তোমার নিজের আসলে কোনো আগ্রহ নেই।
শুধু কিছু পাওয়ার আশায় নিজের ইচ্ছা বা আগ্রহকে ছোট করো না। এমন কিছু করো যা তুমি আসলেই করতে ভালোবাসো। যা তোমার মনকে তৃপ্ত করবে। যা তোমাকে ব্যক্তি মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠার পূর্ণ স্বাধীনতা দিবে।
যেসব কাজে যুক্ত হতে পারো
স্কুলে, কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ক্লাব রয়েছে। বিতর্ক ক্লাব, কালচারাল ক্লাব, সায়েন্স ক্লাব, ল্যাংগুয়েজ ক্লাব। তোমার পছন্দ অনুযায়ী যেকোন একটি ক্লাবের মেম্বার হয়ে যাও। ক্লাবগুলো যেমন তোমাকে তোমার পছন্দের বিষয়ে নতুন নতুন কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি করে দিবে তেমনি অনেক বন্ধুও পেয়ে যেতে পারো তুমি সেখান থেকে।
শুধু তাই নয়, অনেকে একসাথে কাজ করার মাধ্যমে তুমি হয়ে উঠবে আরও দায়িত্ববান, অনেক বেশি এম্প্যাথেটিক যা তোমাকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলবে। এছাড়া রয়েছে স্কাউট, গার্লস গাইড, বিভিন্ন ভলান্টারি অর্গানাইজেশন যেখানে কাজ করে তোমার মত তরুণরা সমাজে পরিবর্তন আনছে। তুমিও হতে পারো তাদেরই একজন।
” When I was a teenager , I began to settle into school because I’d discovered the extracurricular activities that interested me; music and theater.”
– Morgan Freeman
এই লেখাটির অডিওবুকটি পড়েছে মনিরা আক্তার লাবনী।
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন