ইমেইল মার্কেটিং করে ফ্রিল্যান্সিং করার সহজ উপায় – স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন

August 27, 2024 ...

সকালে ঘুম থেকে উঠার পর আমরা সবাই একবার হলেও ইমেইল চেক করি তাইনা? কোনো গুরুত্বপূর্ণ মেইল আসলো কিনা সেটা দেখে আমরা দিনের শুরুটা করি। এছাড়াও আপনি কি খেয়াল করেছেন বিভিন্ন সোর্স, ব্র্যান্ড থেকে আপনার কাছে মেইল আসে! এগুলো কিভাবে আসে? কেন আসে? আর ব্র্যান্ডগুলো কিভাবে এতো মানুষের কাছে ইমেইল পাঠায় কিংবা কেন পাঠায়?

তাছাড়া ইমেইল মার্কেটিং এমন একটি স্কিল যার সাহায্যে আপনি প্রতি মাসে ১০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন ঘরে বসে।  কিভাবে সম্ভব তা ভাবছেন কি?

সব প্রশ্নের উত্তর দিবো আজকের ব্লগটিতে। আমরা আলোচনা করবো ইমেইল মার্কেটিং কী, কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ, ইমেইল মার্কেটিং করে ফ্রিল্যান্সিং করার উপায়, বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে এবং ইমেইল মার্কেটিং করে সফলভাবে ফ্রিল্যান্সিং করার টিপস সম্পর্কে। সর্বোপরি এই ব্লগটি আপনার ইমেইল মার্কেটিং করে ফ্রিল্যান্সিং করার রাস্তা সহজ করে দিবে।

 

ইমেইল কী?

ইমেইল এর পূর্ণরুপ হলো ইলেক্ট্রনিক মেইল যা একটি ডিজিটাল বার্তা যা নেটওয়ার্ক এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়। শুরুতে ইমেইল একটি টেক্সট বেসড কমিউনিকেশন সিস্টেম থাকলেও বর্তমানে আপনি ইমেইলের সাথে যেকোনো ফাইল, ইমেজ, ভিডিওসহ বিভিন্ন এটাচমেন্ট পাঠাতে পারবেন। এটি যোগাযোগের একটি দ্রুত ও নিরাপদ মাধ্যম এবং বর্তমানে বিশেষ করে ফরমাল কমিউনিকেশনের জন্য খুব জনপ্রিয় মাধ্যম। 

 

ইমেইলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস 

বর্তমানে ইমেইল সম্পর্কে জানেন না এমন খুব কম মানুষ আছে। প্রাচীনকালে বিভিন্ন উপায়ে মানুষ যোগাযোগ করতো। প্রথমে পাখির সাহায্য নিয়ে যোগাযোগ শুরু হয়। পরবর্তীতে আসে ডাক ও টেলিগ্রাফ এর যুগ। আর এখন যোগাযোগের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম ইমেইল যার মাধ্যমে মূহূর্তেই কমিউনিকেশন করা যায়। 

ইমেইলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

১৯৭০ সালের দিকে “রে টমলিনসন” নেটেনক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে লোকাল ইমেইল সিস্টেম উদ্ভাবন করেন যা SNDMSG এবং READMAIL হিসেবে নামকরণ করা হয়। ১৯৭১ এর দিকে তিনি পুনরায় আরপানেট উপযোগী একটি ইমেইল সিস্টেম উদ্ভাবন করেন। তিনিই প্রথম ইমেইলের প্রাপপকে চিহিৃত করার জন্য @ সিম্বল ব্যবহার করেন যা বর্তমান ইমেইল সিস্টেমে ব্যবহার হয়ে থাকে।

 

ইমেইলের বিভিন্ন অংশ

১। এই অংশটিতে প্রাপকের নাম লিখতে হয়। অর্থাৎ আপনি যাকে ইমেইলটি করতে চাচ্ছেন তার অ্যাকাউন্ট টি লিখবেন। 

বিভিন্ন ধরনের ইমেইল পাঠানোর প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। যেমন:

প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য একটি ইউনিক ইমেইল অ্যাড্রেস দেওয়া হয়ে থাকে। একটি ইমেইল অ্যাড্রেস এর বিভিন্ন অংশ থাকে।

যেমন:  যদি ইমেইল অ্যাড্রেসটি এমন হয় ‘10minuteschool@gmail.com

 

এখানে, 

10minuteschool হচ্ছে ইউজার নেইম। আপনার ইমেইল অ্যাড্রেস এর এই অংশে আপনি নিজের নাম ব্যবহার করতে পারেন। 

‘@’ সিম্বলের মাধ্যমে ইউজার আইডি/নেইম থেকে পরবর্তী অংশকে আলাদা করা হয়েছে। 

gmail.com হচ্ছে আপনি যে ইমেইল পাঠানোর প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন তার ডোমেইন। এখানে yahoo.com/outlook.com ইত্যাদি হবে আপনি যদি এদের মধ্যে কোনো ইমেইল সার্ভিস প্রোভাইডার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন। 

২। পরের অংশটিতে লিখবেন একটি সংক্ষিপ্ত লাইন যার মাধ্যমে বোঝা যাবে ইমেইলটি কী নিয়ে

৩। আপনার ইমেইলটি তার পরের অংশটিতে লিখবেন 

৪। বিভিন্ন ফরমেটিং টুলস ব্যবহার করে ইমেইলটি আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন

  •   এখানে ফন্ট এর সাইজ পরিবর্তন করতে পারবেন
  • B – কোনো গুরুত্বপূর্ণ অংশ বোল্ড করতে চাইলে এটিতে ক্লিক করে করতে পারবেন
  • I –  লেখাটিকে ইটালিক করার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়
  • U- আন্ডারলাইন করার জন্য এটি ব্যবহার করুন
  • এটি ব্যবহার করে টেক্সট এর এলাইনমেন্ট ঠিক করতে পারবেন
  • টেক্সট এ নাম্বারিং বা বুলেট চিহ্ন দেওয়া যায়

৫। সবশেষে ‘সেন্ড’ বাটনে ক্লিক করলেই ইমেইলটি সেন্ড হয়ে যাবে

 

Email Marketing করে Freelancing

এই কোর্সটি আপনাকে কীভাবে সাহায্য করবে?

  • Email Marketing এর ফান্ডামেন্টালস এবং এডভান্সড।
  • পপুলার প্ল্যাটফর্ম Mailchimp এবং Klaviyo এর সঠিক ব্যবহার।
  • ইমেইল মার্কেটিং এবং ফ্রিল্যান্সিং সংক্রান্ত হ্যাকস এবং টিপস।
  • কাস্টম ইমেইল টেমপ্লেট ডিজাইন তৈরি করা।
  •  

    ইমেইল কয় ধরনের?

    ইমেইল সম্পর্কে তো জানলেন! তবে আপনি কি জানেন ইমেইল ও বিভিন্ন ধরনের হতে পারে?

    চলুন জেনে নেই- 

    ওয়েলকাম ইমেইল 

    আপনার ওয়েবসাইট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা অ্যাপ এ প্রথমবার কেউ রেজিস্ট্রেশন করলে আপনি তাদের ওয়েলকাম জানানোর জন্য যদি কোনো ইমেইল পাঠান, তাহলে সেটি ওয়েলকাম ইমেইল। সাধারণত ওয়েলকাম ইমেইলে নতুন ইউজারদেরকে নিজেদের সেবা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয় এবং রুলস সম্পর্কে জানানো হয়। 

    অফার ইমেইল

    ব্যবসা বা ব্র্যান্ডের বিভিন্ন অফার জানানোর জন্য এই ধরনের ইমেইল করা হয়। এই ইমেইলগুলোর উদ্দেশ্য থাকে নতুন অফার সম্পর্কে পুরোনো কাস্টমার কিংবা পটেনশিয়াল কাস্টমারদের জানানোর মাধ্যমে সেলস বৃদ্ধি।

    সার্ভে ইমেইল

    আপনি যদি আপনার ব্যবসা কিংবা ক্লায়েন্ট এর জন্য কোনো সার্ভে করতে চান তাহলে এই ধরনের ইমেইল পাঠাতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ কোনো পরিসংখ্যান বা কাস্টমারের মতামত জানার জন্য এই ইমেইলগুলো করা হয়ে থাকে। 

    অ্যাবান্ডনড কার্ট ইমেইল

    অনেকসময় কাস্টমাররা ই-কমার্স ওয়েবসাইটের বিভিন্ন প্রোডাক্ট কার্টে এড করে রাখে পরবর্তীতে ক্রয় করার জন্য। আপনি তাদের ইমেইল পাঠাতে পারেন মূল অর্ডারটি কমপ্লিট করার রিমাইন্ডার হিসেবে। 

    রিভিউ রিকোয়েস্ট ইমেইল

    আপনার প্রোডাক্ট বা ব্যবসার জন্য কাস্টমারদের রিভিউ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের ইমেইলের মাধ্যমে আপনি কাস্টমারদের কাছ থেকে প্রোডাক্ট/সার্ভিস এর রিভিউ চাইতে পারেন। 

    অ্যানাউন্সমেন্ট ইমেইল

    কোনো গুরুত্বপূর্ণ অ্যানাউন্সমেন্ট বা প্রাতিষ্ঠানিক আপডেট দেওয়ার জন্য আপনি এই ধরনের ইমেইল করতে পারেন। 

    নিউজলেটার ইমেইল

    আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ক্লায়েন্ট এর যদি কোনো নিউজলেটার থেকে থাকে নিউজলেটার ইমেইলের মাধ্যমে আপডেট পাঠাতে হবে। এই ইমেইলগুলো পাওয়ার জন্য একজন ইউজার ওয়েবসাইটে সাবস্ক্রাইভ করে থাকে। 

    ট্রানজেকশনাল ইমেইল

    কোনো কাস্টমার যখন কোনো কিছু ক্রয় করে তারপর ক্রয়ের ডিটেইলসহ যে ইমেইল পাঠানো হয়, সেটিই ট্রানজেকশনাল ইমেইল। অর্ডারটি কনফার্ম হয়েছে কিনা, ডেলভারির নোটিফিকেশনসহ সাবস্ক্রিপশন রিনিউয়াল সব ধরনের ইমেইল-ই ট্রানজেকশনাল ইমেইল এর উদাহরণ।

    ইভেন্ট এর ইনভাইটেশন ইমেইল

    কোনো ইভেন্টে কাস্টমারদের ইনভাইট করার জন্য এই ধরনের মেইল করা হয়। এই ধরনের ইমেইলে ইভেন্ট এর বিস্তারিত মেনশন করা থাকে এবং ইভেন্টে কিভাবে অংশ নিতে পারবে সেটিরও বিস্তারিত থাকে। 

    এডুকেশনাল ইমেইল

    অডিয়েন্সকে শিক্ষামূলক কোনো কন্টেন্ট কিংবা ইনসাইট পাঠানো হয় এডুকেশনাল ইমেইলে। আপনার ব্যবসা বা ক্লায়েন্ট এর ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইট, রিসার্চ এর ইনফরমেশন, সাকসেস স্টোরি, কিংবা কেস স্টাডি পাঠানো এডুকেশনাল ইমেইলের উদাহরণ। 

    সিজনাল অথবা ছুটির ইমেইল

    আপনি যদি কোনো স্পেশাল দিনে ইমেইল পাঠান আপনার অডিয়েন্সকে, তাহলে তা সিজনাল ইমেইলের অন্তর্গত হবে। ধরুন আপনি হয়তো ঈদ, পূজা ইত্যাদিতে অডিয়েন্সকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ইমেইল করতে চান। 

    ইমেইল কয় ধরনের?

    ফ্রিল্যান্সিং কী?

    ফ্রিল্যান্সিং এর বাংলা অর্থ মুক্ত পেশা বা মুক্তভাবে কাজ করা। যখন কেউ নিজের সময়মতো, নিজের ডিভাইস দিয়ে মুক্তভাবে কোনো কাজ করে এবং বিনিময়ে শুধু সেই কাজের জন্য সম্মানী গ্রহণ করে, এই ধরনের কাজকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং। 

    ধরুন, দুই বন্ধু ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করে। এর মধ্যে এক বন্ধু একটি কোম্পানিতে কাজ করে কোম্পানির এমপ্লয়ি হিসেবে এবং যেই কাজই থাকুক না কেন মাসিক স্যালারি গ্রহণ করে। কোম্পানিতে তার একটি নির্দিষ্ট কাজ আছে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে সে। 

    অপরদিকে অন্য বন্ধু কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানিতে কাজ করে না। সে ইন্টারন্যাশনাল বা ডোমেস্টিক ক্লায়েন্ট এর জন্য কাজ করে দেয় প্রয়োজন অনুযায়ী। তার নির্দিষ্ট কোনো স্যালারি নেই। যতটুকু কাজ করবে তার উপরই নির্ভর করে টাকা পাবে। এই ধরনের কাজকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং। 

    ফ্রিল্যান্সিং কাজের বৈশিষ্ট্য:

    • এই ধরনের কাজের কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই
    • ইন্টারনেট সংযোগ আছে এমন যেকোনো স্থানে কাজ করা যায়
    • ঘণ্টা কিংবা দিন ভিত্তিক অথবা কাজ অনুযায়ী পারিশ্রমিক গ্রহণ করে
    • এই ধরনের কাজে নিজেকেই ক্লায়েন্ট খুঁজে নিতে হয় অথবা ক্লায়েন্ট নিজে যোগাযোগ করে

    বিভিন্ন ধরনের কাজের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব। যেমন: ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক ডিজাইনিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং ইত্যাদি। বর্তমানে ইমেইল মার্কেটিং বেশ জনপ্রিয় একটি ফ্রিল্যান্সিং এর সেক্টর হয়ে উঠেছে, আমরা ধীরে ধীরে ইমেইল মার্কেটিং এর বিস্তারিত আলোচনা করবো এই ব্লগটিতে।

     

    অনলাইনে কিভাবে ফিল্যান্সিং করবেন?

    এতক্ষণে তো বুঝতে পেরেছেন, ফ্রিল্যান্সিং কী! তবে অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কী? কিভাবে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করবেন?

    অনলাইন জগতে ফ্রিল্যান্সিং বলতে বোঝায়, ইন্টারনেটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অন্যের কাজ করে দেওয়া। আপনি অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস দিতে পারবেন আপনার ক্লায়েন্টকে। 

    অনলাইনে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে বিভিন্ন মানুষ একত্রিত হয়। একদল থাকে যারা নির্দিষ্ট কোনো এরিয়াতে সার্ভিস চাচ্ছেন এবং আরেকদল থাকেন যারা ওই এরিয়াগুলোতে দক্ষ হয়ে থাকে। মার্কেটপ্লেসে যারা কাজটিতে দক্ষ তারা সেটি বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করে। অথবা কিছু মার্কেটপ্লেসে ক্লায়েন্ট-ই বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে। তারপর যারা কাজটিতে দক্ষ তারা যোগাযোগ করে ক্লায়েন্ট এর সাথে এবং কাজটি সম্পন্ন করে দেয়। এবং ক্লায়েন্ট নির্দিষ্ট অর্থ প্রদান করে দেয়। 

    এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিই মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে হয়ে থাকে, কাজ শেষ হওয়ার পর মার্কেটপ্লেস ফ্রিল্যান্সারদের থেকে একটি নির্দিষ্ট অর্থ কেটে রাখে কমিশন হিসেবে। 

    ইমেইল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে একজন ইমেইল মার্কেটার ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রথমে মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট  ওপেন করবে এবং নিজের প্রোফাইল সাজাবে। ইমেইল মার্কেটিং এর বিভিন্ন সার্ভিস যেমন- ইমেইল ক্যাম্পেইন ডিজাইন, ক্যাম্পেইন অটোমেশন, ইমেইল লিস্ট জেনারেট করা ইত্যাদি একজন ফ্রিল্যান্সার ক্লায়েন্টকে রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী প্রদান করে থাকে এবং ঘরে বসে আয় করতে পারে। 

    ইমেইল মার্কেটিং দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা যায় তা তো জানলাম। চলুন জেনে নেই ইমেইল মার্কেটিং এর বিস্তারিত।

     

    ইমেইল মার্কেটিং কী?

    ইমেইল মার্কেটিং একটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপায় যার মাধ্যমে একটি ব্র্যান্ড কিংবা ব্যবসা তাদের পণ্য বা সার্ভিস এর মার্কেটিং করে থাকে। এটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি পুরনো তবে কার্যকরী উপায়। ইমেইল মার্কেটিং এ একটি বিজনেস ডিরেক্টলি ইমেইলের মাধ্যমে কাস্টমার কিংবা পটেনশিয়াল কাস্টমারদের সাথে বিভিন্ন কমিউনিকেশন করে থাকে।

     

    ইমেইল মার্কেটিং এর সুবিধাসমূহ

    বর্তমানে ইমেইল মার্কেটিং একটি অন্যতম ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপায়। তবে কেন?

    অপেক্ষাকৃত সহজ 

    খুব সহজেই আপনি ইমেইল মার্কেটিং শিখে নিতে পারবেন। বর্তমানে প্রায় সবাই ইমেইল ব্যবহারে অভ্যস্ত। তাই ইমেইল মার্কেটিং করে পটেনশিয়াল কাস্টমারের কাছে পৌঁছানোও সহজ। 

    খরচ কম

    কম খরচে আপনি পটেনশিয়াল অডিয়েন্সের কাছে ইমেইল পাঠাতে পারবেন। প্রায় বিনামূল্যে আপনি ইমেইল পাঠাতে পারবেন এবং ইমেইল পাঠানোর প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করলে শুধু সাবস্ক্রিপশন ফি দিয়েই অনেক এডভান্সড অটোমেশন এর কাজ করতে পারবেন।

    হাই রিটার্ন

    ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে হাই রিটার্ন পাওয়া পসিবল। শুধু তাই নয়, আপনি ক্যালকুলেট করতে পারবেন প্রতিটি ক্যাম্পেইনের জন্য কেমন রিটার্ন আসছে। 

    অডিয়েন্সের সাথে সম্পর্ক তৈরি করা

    অডিয়েন্স কিংবা কাস্টমারদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করার জন্য ইমেইল মার্কেটিং ইফেক্টিভ! আপনি বিভিন্ন পার্সোনালাইজড মেইল এর মাধ্যমে অডিয়েন্সের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। 

    বিভিন্ন কি-মেট্রিক 

    আপনি যখন ইমেইল মার্কেটিং টুলস এর মাধ্যমে ইমেইল পাঠাবেন, আপনি বিভিন্ন এডভাস্নড কি-মেট্রিক সম্পর্কে জানতে পারবেন; যেমন: কয়জন ক্লিক করেছে আপনার ইমেইএলে, কিংবা কয়জন ওয়েবসাইট ভিজিট করেছে ইত্যাদি। এইসব মেট্রিকগুলো আপনাকে বিভিন্ন ডিসিশন নিতে সাহায্য করবে। 

    টার্গেটেড ইমেইল পাঠানো

    ইমেইল মার্কেটিং এ আপনি শুধুমাত্র আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্সকে ইমেইল পাঠাতে পারবেন। পাশাপাশি বিভিন্ন উপায়ে পার্সোনালাইজড করতে পারবেন। 

    অটোমেশন

    বিভিন্ন ইমেইল মার্কেটিং টুলস ব্যবহার করে আপনি ক্যাম্পেইনটি অটোমেট করতে পারবেন যা অপারেশনাল কাজ অনেক কমাবে। পাশাপাশি আপনার সময় বাঁচিয়ে আপনাকে ইফিশিয়েন্ট করে তুলবে। 

     

    ইমেইল মার্কেটিং এর অসুবিধাসমূহ

    ইমেইল মার্কেটিং এর অসংখ্য সুবিধার সাথে কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন

    স্প্যাম ইস্যু

    অনেকসময় আপনি যখন কাউকে ইমেইল পাঠাচ্ছেন, ইমেইলটি স্প্যাম বক্সে চলে যায় যার জন্য ইমেইল ক্যাম্পেইনের ইফেক্টিভনেস কমে যায়। আপনি যদি ইমেইল পাঠানোর যথাযথ নিয়ম মেনে না চলেন অথবা অতি মাত্রায় প্রমোশনাল জিনিসপত্র রাখেন ইমেইলে, তাহলে স্প্যাম হিসেবে মার্ক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

    ফেইক ইমেইল

    যেহেতু ইমেইল পাঠানো খুবই সহজ এবং যে কেউই পাঠাতে পারে ইমেইল আইডিটি থাকলেই, তাই অনেকসময় অনেকে ফেইক ইমেল পাঠিয়ে থাকে অডিয়েন্স এর কাছে। এতে করে অডিয়েন্স অনেকসময় ফেইক অথবা রিয়েল ইমেইলের মধ্যে পার্থক্য করতে না পেরে কোনোটাতেই রেসপন্স করে না। 

    লিস্ট ম্যানেজমেন্ট

    ইমেইল ক্যাম্পেইনের জন্য যেহেতু অনেক লিস্ট মেইনটেইন করতে হয়, সেহেতু অনেক সময় লিস্ট ভুল হয়ে ভুল অডিয়েন্সের কাছে ইমেইল চলে যেতে পারে। 

    প্রাইভেসি ইস্যু

    অনেকেই প্রাইভেসি ইস্যুর জন্য ইমেইল আইডি শেয়ার করতে চায় না। যার জন্য ইমেইল কালেক্ট করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠে। এছাড়া অনেকে প্রাইভেসি ইস্যুর জন্য ইমেইলে এটাচড কোনো লিংকে ক্লিক করতে চায় না। এতে ইমেইলের ক্লিক-থ্রু রেট অনেক কমে যায়। 

     

    ইমেইল মার্কেটিং করে ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন— ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে চাহিদা কেমন?

    বর্তমানে ইমেইল মার্কেটিং দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বেশ কিছু কারণে। চলুন জেনে নেই কেন আপনার ইমেইল মার্কেটিং করে ফ্রিল্যান্সিং করা উচিত। 

    উচ্চ চাহিদা

    আমরা আগেই ডিসকাস করেছি যেকোনো ব্যবসার জন্য ইমেইল মার্কেটিং কতটা ইফেক্টিভ। তাই সময়ের সাথে সাথে এই স্কিলের ডিমান্ড বেড়ে চলছে পুরো বিশ্বব্যাপী। আর সেই সাথে ইমেইল মার্কেটারদের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আপনি যদি ইমেইল মার্কেটিং দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন ন্যাশনাল এবং ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসে তাহলে আপনার চাহিদাও ব্যাপক থাকবে। 

    ফ্লেক্সিবিলিটি এবং কাজের স্বাধীনতা

    যেকোনো ফ্রিল্যান্সিং এর কাজেই থাকে ফ্লেক্সিবিলিটি এবং নিজের মতো করে কাজ করার স্বাধীনতা। আপনি যেকোনো জায়গায় বসে শুধুমাত্র ডিভাইস, ইন্টারনেট কানেকশন এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। আপনি নিজের ইচ্ছা মতো প্রজেক্টস নিতে পারবেন এবং বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির সাথে কাজ করার সুযোগ পাবেন।

    উচ্চ আয়ের সুযোগ

    অভিজ্ঞ ইমেইল মার্কেটার যাদের পোর্টফলিও অনেক স্ট্রং তারা অভিজ্ঞতা অনুযায়ী হাই-চার্জ করতে পারে তাদের সার্ভিস এর জন্য। এছাড়া ইমেইল মার্কেটিং এর সাথে স্পেশালাইজড সার্ভিস যেমন: অটোমেশন, এ/বি টেস্টিং, সেগমেন্টেশন ইত্যাদি করার মাধ্যমে উচ্চ আয়ের সুযোগ রয়েছে। 

    বিজনেস গ্রোথ

    যেহেতু আপনি ফ্রিল্যান্সিং করবেন তাই আপনি আপনার সময় এবং ইচ্ছা অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিং এর সার্ভিস এক্সপেন্ড করতে পারবেন। আপনি চাইলে কিছু মানুষ হায়ার করে আপনার সাথে রাখতে পারবেন যারা আপনার কাছে সাহায্য করবে এবং বিজনেস গ্রোথে ভূমিকা রাখবে। 

    পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরির উপায়

    ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে আপনি চাইলে একটি পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরি করতে পারবেন। প্রতিনিয়ত হাই কোয়ালিটি কাজ ডেলিভার এবং নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রেজেন্স তৈরি করার মাধ্যমে আপনার এমন একটি ব্র্যান্ড তৈরি হবে যাতে নতুন ক্লায়েন্টরা আপনাকে কাজের জন্য আরও ভরসা করবে। 

     

    এক্সপেরিয়েন্স এবং প্রোফাইলের লেভেল অনুযায়ী, ইমেইল মার্কেটিং করে সম্ভাব্য আয়ের পরিমাণ

    বর্তমানে ইমেইল মার্কেটিং করে আয়ের সম্ভাবনা অনেক। বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজের জন্য বিভিন্ন অ্যামাউন্টে আয় করা পসিবল। 

    যেমন: 

    • লেভেল – ১ঃ একজন লেভেল – ১ ইমেইল মার্কেটার প্রতি মাসে গড়ে ১০ – ১৫ হাজার টাকা আয় করে থাকেন।
    • লেভেল – ২ঃ একজন লেভেল – ২; যাদের কিছুটা অভিজ্ঞতা হয়েছে তারা প্রতি মাসে ২৫ – ৫০ হাজার টাকার মতো আয় করে থাকেন। 
    • লেভেল – ৩ঃ এক্সপেরিয়েন্সড ইমেইল মার্কেটার যারা রয়েছেন তাদের মাসিক আয় ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

     

    ইমেইল মার্কেটিং শেখার রোডম্যাপ

    ইমেইল মার্কেটিং শেখার জন্য এই রোডম্যাপটি ফলো করতে পারেন।

    ইমেইল মার্কেটিং সম্পর্কে জানা

    আপনি ইমেইল মার্কেটিং শুরু করার আগে বুঝতে হবে ইমেইল মার্কেটিং কী, কেন শিখবেন, এর উপকারিতা কী। ইমেইল মার্কেটিং এর জব ও ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কী কী আপরচুনিটি আছে তা সম্পর্কে জানুন।

    টুলস ও প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে জানুন

    ইমেইল মার্কেটিং করার জন্য বিভিন্ন টুলস ও প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন হয়। এসব টুলস সম্পর্কে আইডিয়া নিন যাতে পরবর্তীতে ক্লায়েন্ট কিংবা আপনার প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী যেকোনো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন। 

    ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়: 

    • Mailchimp
    • Klaviyo
    • Hubspot
    • Sender etc

    এই প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে পরবর্তীতে আমরা বিস্তারিত জানবো। 

     

    ইমেইল মার্কেটিং এর টুলস এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, 

    • Smartwriter: ইমেইল কপি লিখে কনভার্শন রেট বাড়াতে সাহায্য করে 
    • Phrasee: ইফেক্টিভ ইমেইল কন্টেন্ট লিখতে ব্যবহৃত হয় 
    • Seventh Sense: ইমেইল ক্যাম্পেইনগুলো আরও পার্সোনালাইজ করতে সাহায্য করে
    • Unspam: আপনার ইমেইল পটেনশিয়াল স্প্যাম চিহ্নিত করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। 

    ইমেইল লিস্ট তৈরি ও ব্যবস্থাপনা 

    ইমেইল লিস্ট কিভাবে তৈরি করতে হয় সেটা জানা অনেক জরুরি। শুধু তৈরি নয়, বরং ইমেইল ম্যানেজমেন্ট এর পদ্ধতিগুলো জানতে হবে। 

    সেগমেন্টেশন ও টার্গেটিং

    ইমেইল লিস্টকে সেগমেন্ট করতে শিখতে হবে এবং সেই অনুযায়ী টার্গেট করতে হবে। গ্রুপ, সেগমেন্ট এবং ট্যাগ ইত্যাদি ব্যবহারের কৌশল জানতে হবে। 

    • Group— গ্রুপ বলতে  তথ্যের ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করাকে বোঝায়। ইমেইল লিস্ট ম্যানেজ করার জন্য গ্রুপ করাটা অত্যন্ত জরুরী। 
    • Segment— যখন নির্দিষ্ট কিছু শর্ত আরোপ করে ইমেইল লিস্ট করা হয় তাকে বলা হয় সেগমেন্ট। যেমন– আপনি কোনো ইমেইল লিস্ট থেকে নারী গ্রাহকদের মধ্যে যাদের বয়স ৩০ এর মধ্যে তাদের একটি লিস্ট করতে চান তাহলে সেগমেন্ট করে রাখতে পারেন।
    • Tag— ট্যাগ হলো নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য বা শব্দের ভিত্তিতে চিহ্নিত করা। যেমন আপনার জিমেইলে তিন ধরনের ট্যাগ দেওয়া আছে—- Primary, Promotional, Social
    • Primary— এখানে সাধারণ মেইল থাকে
    • Promotional— এখানে নিউজলেটার ও সাবস্ক্রিপশন সংক্রান্ত মেইল থাকে
    • Social—  এই ট্যাগে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন মেইল থাকে। 

    ইমেইল ডিজাইন

    একটি ইফেক্টিভ ইমেইল ডিজাইনের কৌশলগুলো জেনে নিন। কিভাবে কপি লিখতে হয়, সাবজেক্ট লাইন কিভাবে লিখলে ইফেক্টিভ হয় কিংবা কী ধরনের ছবি ব্যবহার করবেন সবকিছু আয়ত্ত্ব করে নিন।

    ইমেইল ক্যাম্পেইন সেটআপ

    বিভিন্ন ইমেইল মার্কেটিং টুলস ও প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ইমেইল মার্কেটিং সেট আপ করা শিখুন এবং অটোমেশন এর বিভিন্ন জিনিস আয়ত্ব করুন।

    অ্যানালাইসিস 

    ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনটি সফল হয়েছে কি হয়নি এইসব কিছু বোঝার জন্য বিভিন্ন কি-ম্যাট্রিকগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। ক্যাম্পেইন অ্যানালাইসিস করে রিপোর্ট জেনারেট করা শিখতে হবে। 

    প্র্যাকটিস ও ফিডব্যাক

    একবার শিখে রাখলেই হবে না। ক্রমাগত প্র্যাকটিস ও ফিডব্যাক নেওয়ার মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে হবে।

     

    ইমেইল মার্কেটিং এর স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন

    অনেক তো কথা হলো ইমেইল মার্কেটিং নিয়ে, চলুন এখন জেনে নেই কিভাবে ইমেইল মার্কেটিং শুরু করবেন। 

    আপনার লক্ষ্য ঠিক করুন

    যেকোনো ডিজিটাল মার্কেটিং সফলতা পাওয়ার জন্য শুরুতে লক্ষ্য ঠিক করা প্রয়োজন। ঠিক তেমনি, ইমেইল মার্কেটিং এর জন্যও আপনাকে শুরুতে নির্বাচন করতে হবে ‘ইমেইল মার্কেটিং এর লক্ষ্যটা কী?’ আপনি কি নিজের ব্যবসার কোনো অফার সবার কাছে পৌঁছে দিতে চান? নাকি কোনো নতুন পণ্যের কথা জানাতে চান? এমন অনেক ধরনের লক্ষ্য থাকতে পারে ইমেইল মার্কেটিং এর। ইমেইল মার্কেটিং এর গোল বা লক্ষ্যের মধ্যে হতে পারে- 

    ব্যবসার বিক্রি বৃদ্ধি

    ব্যবসার বিক্রি বৃদ্ধি ইমেইল মার্কেটিং এর একটি অন্যতম উপায়। আপনার ক্লায়েন্ট এর লক্ষ্য যদি ব্যবসার বিক্রি বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে এটি মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে। বিক্রি বৃদ্ধির জন্য হয়তো আপনি কোনো অফার, ডিস্কাউন্ট, লিমিটেড টাইম বান্ডেল অফার, পাঠাতে পারেন কাস্টমারদেরকে। অথবা এবান্ডনড কার্ট ইমেইল, প্রোডাক্ট লঞ্চ ইমেইলের মাধ্যমে বিক্রি বাড়াতে পারবেন। 

    কাস্টমার লয়ালিটি বাড়ানো

    কাস্টমারদের সাথে লং-টার্ম সম্পর্ক বানানো এবং প্রতিনিয়ত ব্যবসার আপডেট দেওয়া উদ্দেশ্য হতে পারে ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের। ওয়েলকাম ইমেইল, পার্সোনালাইজড ইমেইল ইত্যাদির মাধ্যমে এই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। 

    ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বৃদ্ধি 

    আপনার ক্লায়েন্ট এর ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য হতে পারে ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বৃদ্ধি। সেক্ষেত্রে সেভাবে ইমেইলটি ক্রাফট করতে হবে ওয়েবসাইটের লিংকসহ যাতে ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বৃদ্ধি পায়।

    এছাড়া আরও লক্ষ্য হতে পারে-

    • প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এর প্রোমোশন  
    • কাস্টমারের ফিডব্যাক নেওয়া
    • বিভিন্ন সার্ভে করা ইত্যাদি। 

    আপনার ক্লায়েন্ট এর সাথে কথা বলুন এবং চেষ্টা করুন ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য নিয়ে ক্লিয়ার ধারণা নেওয়ার। 

    অডিয়েন্স নির্বাচন করুন

    ইমেইল মার্কেটিং এর লক্ষ্য ঠিক করার পর এবার অডিয়েন্স নির্বাচন করুন। ধরুন, আপনি নতুন কোনো প্রোডাক্ট লঞ্চ করেছেন এবং এই নিউজটি আপনি ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে পাঠাতে চান। আপনি কোন অডিয়েন্সকে পাঠাতে চান এইটা তারপর নির্বাচন করতে হবে। আপনি হয়তো নতুন কোনো অডিয়েন্সের কাছে ইমেইলটি পাঠাতে চান অথবা পুরোনো কাস্টমারদের পাঠাতে চান। অডিয়েন্স নির্বাচনের সময় বেশ কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে। যেমন আপনার অডিয়েন্স এর বয়স, জেন্ডার, ইন্টারেস্ট ইত্যাদি। 

    ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করুন

    পরবর্তী ধাপ হচ্ছে— ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করা। ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য যেকোনো একটি প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করে তার মাধ্যমে সেন্ডারদের ইমেইল পাঠাতে হয়। ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম প্রফেশনালি ইমেইল পাঠানো প্রায় অসম্ভব। কেননা আপনি যখন ইমেইল মার্কেটিং করবেন তখন ১/২ জন অডিয়েন্সের কাছে ইমেইল পাঠাবেন এমন না, লক্ষ লক্ষ রিসিভার এর কাছে পাঠাবেন। ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মগুলো এই জিনিসটি মেইনটেইন করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন ধরনের ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে।

     

    জনপ্রিয় কিছু ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আলোচনা

    ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য বা বড় ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের জন্য অনেক জরুরি। চলুন আজকে কিছু জনপ্রিয় ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে জেনে নেই। 

    Mailchimp

    মেইলচিম্প ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। এটি প্রথমত একটি ফ্রি প্ল্যান প্রদান করে যার মাধ্যমে বেসিক ইমেইল মার্কেটিং ফিচারগুলো ব্যবহার করা যায়। যেমন

    • ইমেইল ক্রিয়েট করা
    • ইমেইল শিডিউল করা ইত্যাদি

    সাবস্ক্রিপশন এর মাধ্যমে আরও এডভান্সড কাজগুলো করা সম্ভব। যেমন: ইমেইল মার্কেটিং অটোমেশন। 

    এই প্ল্যাটফর্মটির আরেকটি সুবিধা হলো ‘রেকমেন্ডেশন ফিচার’। এই ফিচারটি আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ অডিয়েন্স ইনসাইট দিবে যার মাধ্যমে আপনি ইমেইল ক্যাম্পেইনটি আরও ইফেক্টিভ উপায়ে সাজাতে পারবেন।

    MailChimp

    Email Marketing Platform – Mailchimp

    মেইলচিম্প যেসব কারণে ব্যবহার করা হয়
    • ইমেইল মার্কেটিং এর ক্যাম্পেইন তৈরি করা এবং সেগুলো ম্যানেজ করা
    • ইমেইল মার্কেটিং এর রিপোর্ট জেনারেট করবে যাতে আপনি ইফেক্টিভ ডিসিশন নিতে পারেন
    • আপনি সহজ উপায়ে কন্টাক্ট ম্যানেজ করতে পারবেন
    • মেইলচিম্পের সাথে অন্যান্য ওয়েবসাইট বা সার্ভিস পয়েন্ট ইন্টিগ্রেট করতে পারবেন
    • মেইলচিম্প ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন অটোমেট করার জন্য আপনাকে বিভিন্ন সার্ভিস প্রদান করবে। 
    কিভাবে মেইলচিম্প অ্যাকাউন্ট  ওপেন করবেন?

    নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করে খুব সহজেই মেইলচিম্প অ্যাকাউন্ট ওপেন করতে পারবেন।

    ১। প্রথমে www.mailchimp.com লিংক থেকে মেইলচিম্পের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন

    ২। Sign Up for Free – তে ক্লিক করুন। অতঃপর একটি রেজিস্ট্রেশন ফর্ম আসবে যেখানে আপনার সকল ইনফরমেশন দিতে হবে। ইমেইল, পছন্দের ইউজার নেইম, নাম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ‘Get Started’ – এ ক্লিক করতে হবে। 

    ৩। এবার আপনার প্রদানকৃত ইমেইলে মেইলচিম্প থেকে একটি ভেরিফিকেশন মেইল পাঠানো হবে। মেইলে দেওয়া লিংকে ক্লিক করলেই আপনার অ্যাকাউন্ট টি সচল হয়ে যাবে। 

    ৪। অ্যাকাউন্ট  ক্রিয়েশন এর পরে এবার প্রোফাইল সাজানোর পালা! এই ধাপে আপনার থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন জানতে চাইবে। 

    ৫। এরপর একটি কুইজ থাকবে ‘Let’s Find Your Marketing Path’ নামের! এই কুইজের উত্তরের উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে আপনাকে মেইলচিম্প বিভিন্ন সাজেশন দিবে। 

    মেইলচিম্পের খরচ

    মেইলচিম্প ফ্রিতে ব্যবহার করা গেলেও ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য মেইলচিম্প এর বিভিন্ন সাবস্ক্রিপশন নেওয়ার প্রয়োজন হয়। এতে করে আপনি এডভান্সড কাজগুলোও করতে পারবেন। চলুন দেখে নেই মেইলচিম্প এর সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজগুলো। 

     

    ফিচার ফ্রি প্যাকেজ এসেনশিয়াল স্ট্যান্ডার্ড প্রিমিয়াম
    মাসিক ইমেইল পাঠানোর পরিমাণ ১,০০০ ৫,০০০ ৬,০০০ ১,৫০,০০০
    ইউজার আনলিমিটেড
    মেইলচিম্পের ব্র্যান্ডিং থাকবে থাকবে না থাকবে না থাকবে না
    এ/বি টেস্টিং এর সুযোগ নেই আছে আছে আছে
    অ্যাডভান্সড সেগমেন্টেশন  নেই নেই আছে আছে
    আচরণভিত্তিক টার্গেট করা ইমেইল নেই নেই আছে আছে

     

    Klaviyo (ক্ল্যাভিও)

    ক্ল্যাভিও একটি জনপ্রিয় ইমেইল মার্কেটিং ও ইমেইল অটোমেশন প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্মটি আপনাকে ইমেইল, এসএমএস, পুশ নোটিফিকেশনসহ আরও অনেক কিছুর মাধ্যমে অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানো সহজ করে দিবে। 

    ২০১২ সালে এই প্ল্যাটফর্মটি যাত্রা শুরু করলেও ইমেইল মার্কেটিং অটোমেশন টুল হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। মূলত ব্যবসায়ীদের সাথে তাদের গ্রাহকের যোগাযোগ আরও সহজ করাই এই প্ল্যাটফর্মের মূল লক্ষ্য ছিলো। খুব সহজেই ক্ল্যাভিও এর সাথে অন্যান্য ওয়েবসাইট কিংবা সার্ভিস এর ইন্টিগ্রেশন করা সম্ভব যার জন্য যেকোনো ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন আরও সহজতর হয়ে উঠে। 

    ক্ল্যাভিও এর কাজ:
    • ইমেইল তৈরি করা ও পাঠানো
    • গ্রাহকদের কাছে টেক্সট বা এসএমএস পাঠানো
    • বিভিন্ন নোটিফিকেশন পাঠানো
    • পণ্য বা সেবার রিভিউ গ্রহণ করা
    • সকল গ্রাহকদের তথ্য সংরক্ষণ করা ইত্যাদি
    ক্ল্যাভিও অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম

    ১। প্রথমে www.klaviyo.com এ ক্লিক করে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। নিচের Sign Up লেখায় ক্লিক করুন

    ২। আপনার নাম, ইমেইল, কোম্পানি নাম, কোম্পানি ওয়েবসাইট, ফোন নম্বর, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি দিন। আপনি যখন ক্লায়েন্ট এর কাজ করবেন তখন ক্লায়েন্ট এর কোম্পানির নাম ও ওয়েবসাইট লিংক ব্যবহার করবেন।

    ৩। পরবর্তী ধাপে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিন

    ৪। সর্বশেষ ধাপে আপনি ক্ল্যাভিও ব্যবহার করে কোন কাজ করতে চান তা সিলেক্ট করুন। এক্ষেত্রে আপনি SMS ও Email দুটোই সিলেক্ট করতে পারবেন। 

    ৫। সব ইনফরমেশন দিয়ে সাবমিট করলে ক্ল্যাভিও আপনার দেওয়া ইমেইলে একটি ভেরিফিকেশন ইমেইল পাঠাবে। সেখানে Confirm Email অপশনে ক্লিক করলে আপনার ক্ল্যাভিও অ্যাকাউন্টটি সচল হবে। 

    ক্ল্যাভিও এর খরচ

     

    প্ল্যান মাসিক ইমেইল পাঠানোর পরিমাণ মাসিক এসএমএস/এমএমএস পাঠানোর পরিমাণ প্রাইস
    ইমেইল ও এসএমএস ১৫,০০০ ১,২৫০ ৬০ ডলার
    ইমেইল  ১৫,০০০ ১৫০ (ফ্রি) ৪৫ ডলার
    ফ্রি ট্রায়াল ৫০০ ১৫০ (ফ্রি) 

    HubSpot

    আরেকটি ইমেইল মার্কেটিং অটোমেশন প্ল্যাটফর্মের নাম— হাবস্পট। এই প্ল্যাটফর্মটি সম্প্রতি একটি ফ্রি মার্কেটিং টুল লঞ্চ করেছে যার মাধ্যমে ইমেইল ক্যাম্পেইন লঞ্চ, ক্রিয়েশন, শিডিউল করা সম্ভব। এই টুলটি ব্যবহার করা অনেক সহজ এবং অনেক রেডি-মেড ইমেইল টেমপ্লেট আছে যা আপনার জীবন আরও সহজ করে দিবে।

    HubSpot

    Email Marketing Platform – HubSpot

    Sender

    সেন্ডার একটি অন্যতম ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম যেটি ইমেইল ডেলিভারিবিলিটি এনশিওর করে। এমনকি এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আপনি কোনো HTML কোড ছাড়াই নিউজলেটার ক্রিয়েট করতে পারবেন। আপনাকে শুধু বিভিন্ন টেমপ্লেট থেকে বাছাই করে কাস্টমাইজ করতে হবে। 

    এই প্ল্যাটফর্মটি আপনাকে এডভান্সড অ্যানালিটিকস ও অডিয়েন্স ইনসাইট প্রদান করবে যার মাধ্যমে আপনি গুরুত্বপূর্ণ ডিসিশন নিতে পারবেন। 

    Sender

    Email Marketing Platform – Sender

    Sendinblue

    এটি একটি মার্কেটিং কমিউনিকেশন প্ল্যাটফর্ম যা ইমেইল মার্কেটিং এর টুলস এর পাশাপাশি কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট টুলস, লেন্ডিং পেইজ ক্রিয়েশন ইত্যাদি সার্ভিসও দিয়ে থাকে। এই ইমেইল মার্কেটিং টুলসটি ব্যবহার করে আপনি সহজেই ইমেইল ক্রিয়েট করতে পারবেন। এমনিক এ/বি টেস্টিং করে আইডিয়াল অডিয়েন্সের কাছে মেইল পাঠাতে পারবেন সেন্ড-ইন-ব্লু ব্যবহার করে। 

    Sendinblue

     Email Marketing Platform– Sendinblue

    SendPulse

    আরেকটি ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে — SendPulse. এই ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মটি এর বিভিন্ন ইমেইল মার্কেটিং ফিচার এবং প্রফেশনালি ডিজাইন করা  ইমেইল ট্যামপ্লেট এর জন্য জনপ্রিয়। শুধুমাত্র ড্র্যাগ এন্ড ড্রপ করে খুব সহজেই এই ইমেইল ট্যামপ্লেটগুলো কাস্টমাইজ করা যায়। 

    আরেকটি সুন্দর ফিচার হচ্ছে– সাবস্ক্রাইবার রেটিং। এর মাধ্যমে আপনি শনাক্ত করতে পারবেন আপনার ওয়েবসাইটে গুরুত্বপূর্ণ সাবস্ক্রাইবার কারা! এই ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মটি আপনাকে বিভিন্ন ইনসাইট প্রদান করবে যেমনঃ ক্লিক রেট, সাবস্ক্রাইভার রেট ইত্যাদি।

    Sendpulse

    Email Marketing Platform – SendPulse

    ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম সিলেক্ট করার গাইডলাইন

    ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম সিলেক্ট করার আগে অবশ্যই কিছু বিষয় মাথায় রাখবেন।

    ব্যবহারের সুবিধা

    যেকোনো ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম সিলেক্ট করার আগে যাচাই করে দেখুন ইউজার ইন্টারফেস ব্যবহারের এক্সপেরিয়েন্স ভালো কিনা! যদি খুব বেশি কমপ্লেক্স হয় এবং নেভিগেট করার সুবিধা না থাকে কাজ করতে গেলে বিরক্ত হতে পারেন।

    ডেলিভারি রেট

    ইমেইল পাঠানোর পর তার ডেলিভারি রেট ভালো হওয়া জরুরি। যদি প্ল্যাটফর্মের ইমেইল ডেলিভারিবিলিটি রেট কম থাকে, সেই ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা উচিত নয়। ইমেইল ডেলিভারিবিলিটি রেট বলতে বোঝানো হচ্ছে, একটি ইমেইল অডিয়েন্সের কাছে পাঠানোর পর টোটাল অডিয়েন্সের কত পার্সেন্ট ইমেইলটি রিসিভ করেছে।

    ইন্টিগ্রেশন এর সুবিধা

    যেহেতু ইমেইল মার্কেটিং এর লিড এর একটি বড় অংশ আসে ওয়েবসাইট থেকে এবং ওয়েবসাইটের ভিজিটরদের বিভিন্ন বিষয়ে মেইল পাঠানো হয় (যেমন: অ্যাবান্ডনড কার্ট মেইল) তাই ওয়েবসাইটের সাথে সহজে ইন্টিগ্রেশন করার সুবিধা আছে কিনা তা যাচাই করুন। 

    স্কেলেবিলিটি

    দেখে নিন আপনার সিলেক্ট করা ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম সব ধরনের সার্ভিস অফার করে কিনা। অনেকসময় কিছু প্ল্যাটফর্ম সিলেক্টেড কিছু সার্ভিস অফার করে থাকে। তারপর মার্কেটাররা বিভিন্ন ধরনের ভোগান্তিতে পরে। 

    তাই প্ল্যাটফর্ম সিলেক্ট করার আগেই যাচাই করে নিন আপনি ক্লায়েন্ট এর জন্য যেসব কাজ করতে চান, সেসব সার্ভিস প্ল্যাটফর্মটি অফার করছে কিনা। 

    কাস্টমার সাপোর্ট

    কাস্টমার সাপোর্ট ভালো হওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে প্ল্যাটফর্মে কাজ করার সময়। আর এইসব সমস্যায় কাস্টমার সাপোর্ট এর সহযোগিতা প্রয়োজন। 

     

    ইমেইল লিস্ট তৈরি করুন

    ইমেইল করার জন্য আমাদের কাস্টমারদের ইমেইল লাগবে তাইতো? ইমেইল লিস্ট তৈরি করার জন্য আপনি বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। যেমন: 

    ওয়েবসাইট

    আপনার বিজনেস এর ওয়েবসাইট যারা ভিজিট করতে আসে তাদের ইমেইল কালেক্ট করে রাখার একটি উপায় হচ্ছে সাইন আপ ফর্ম। ফর্মটি সিম্পল এবং আকর্ষণীয় করে তুলুন যাতে ভিজিটর নিজের ডিটেইলস দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করে। 

    সাইন আপ ফর্মটি এমন জায়গায় প্লেস করুন যেখান থেকে সহজেই দেখা যাব; যেমন ওয়েবসাইটের হোমপেজ কিংবা ব্লগ বা ফুটারে। 

    সাবস্ক্রাইব করার জন্য রিওয়ার্ড

    আপনার ওয়েবসাইটে সাবস্ক্রাইব করার জন্য কিংবা ইমেইলটি দেওয়ার জন্য কোনো রিওয়ার্ড রাখতে পারেন। কোনো ফ্রি রিসোর্স, ডিস্কাউন্ট কিংবা গিভঅ্যাওয়ের মাধ্যমে অডিয়েন্সকে সাবস্ক্রাইভ করার জন্য উৎসাহিত করতে পারেন। 

    বিভিন্ন অফলাইন ইভেন্ট

    বিভিন্ন ইন-স্টোর ইভেন্ট কিংবা অফলাইন ইভেন্টে ভিজিটরদের থেকে ইমেইল করে পরবর্তীতে নতুন অফার নিয়ে তাদের কাছে ইমেইল মার্কেটিং করা সম্ভব। 

    সোশ্যাল মিডিয়া প্রোমোশন

    সোশ্যাল মিডিয়াতে নিউজলেটার প্রোমোশনের মাধ্যমে ইন্টারেস্টেড অডিয়েন্সের ইমেইল কালেক্ট করা সম্ভব। 

    পপ-আপ ফর্ম

    পপ-আপ ফর্ম আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য ইমেইল কালেক্ট কর। আপনি যখন কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন, আর একটি ফর্ম হঠাত করে স্ক্রিনে চলে আসে, এই ফর্মটিই পপ-আপ ফর্ম। 

     

    Email Writing

    এই কোর্সটি আপনাকে কীভাবে সাহায্য করবে?

  • বিভিন্ন ইমেইল এবং ইমেইল রাইটিং ফরম্যাট।
  • সঠিকভাবে ইমেইল লেখার কৌশল।
  • Email Writing-এর সাধারণ ভুল এড়ানোর উপায়।
  • ইমেইল রাইটিং এর Salutation এবং Closing লেখার কৌশল।
  •  

    ইমেইল  ডিজাইন করা

    এবার আসি সবচেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট পার্টটিতে– ইমেইল ডিজাইন করা। ইমেইল ডিজাইন করা বলতে ইমেইলটিকে টেক্সট ও ছবির মাধ্যমে ভিজুয়ালি সুন্দর করে তোলা এবং রিসিভারকে আগ্রহী করে তোলা ইমেইলটিতে রেসপন্ড করার জন্য। 

    একটি ইফেক্টিভ ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য ইমেইল এর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সুন্দরভাবে তুলে ধরতে হবে।

    সাবজেক্ট লাইন

    প্রথমেই রিসিভার যখন ইমেইলটি রিসিভ করে, সাবজেক্ট লাইনের উপর কিন্তু নির্ভর করে তিনি ইমেইলটি ওপেন করবেন কি করবেন না। তাই সাবজেক্ট লাইন এমন হওয়া উচিত যাতে রিসিভার ইন্টারেস্টেড হয়ে উঠে ইমেইলটি ওপেন করার জন্য।

    পার্সোনালাইজেশন

    ইমেইলটিতে রিসিভার এর নাম যোগ করুন। এবং তারা পছন্দ করবে এমনভাবে ইমেইলটি সাজান। বিভিন্ন ইমেইল মার্কেটিং টুলস ব্যবহার করে নাম যোগ করার এই ব্যাপারটি অটোমেটেড করা সম্ভব। 

    ছবি

    অনেকে ইমেইল মার্কেটিং বলতে শুধু টেক্সট-বেজড মার্কেটিং বুঝে থাকে। তবে ইমেইল মার্কেটিং এ ইমেইল ডিজাইন এর সময় ব্যবহৃত রিলেভেন্ট ও আকর্ষণীয় ছবি ইমেইলটির মেসেজ আরও বোধগম্য করে তোলে।

    ফুটার

    আপনি যখন ইমেইল পাঠাচ্ছেন, অবশ্যই ফুটারে প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন যোগ করে দিবেন। ধরুন আপনি কোনো অফার জানিয়ে ইমেইল করেছেন। অফারটি পেতে হলে কোথায় যোগাযোগ করতে হবে তা মেনশন করে দিন। আপনার ব্যবসার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট  থাকলে তা যোগ করতে পারেন। 

     

    একটি শিডিউল তৈরি করুন

    আপনার ইমেইলটি ডিজাইন করা হয়ে গেলে, এবার একটি সময়সূচী বানিয়ে ফেলুন। নির্ধারণ করুন আপনি কখন ইমেইলটি পাঠাতে চান, কয়দিন পর পর পাঠাতে চান নাকি প্রতিদিনই পাঠাবেন। এসব কিছু নির্ভর করবে  আপনার ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন এবং রিসিভার কখন বেশি এক্টিভ থাকে তার উপর। সময়সূচি বানিয়ে ফেলার পর, সেটার কনসিসটেন্সি মেইনটেইন করার চেষ্টা করুন। 

    টেস্ট করুন

    যেকোনো ইমেইল ক্যাম্পেইন লঞ্চ করার আগে অবশ্যই A/B টেস্ট করে নিতে হবে। তাহলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। 

    তাছাড়া আপনি ইমেইলের কপি, ডিজাইন, কল-টু-একশন, ইমেইল লিস্ট ইত্যাদি পরিবর্তন করে বিভিন্ন ইমেইল ক্যাম্পেইন টেস্ট করতে পারেন। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন যে কোন অডিয়েন্স কী পছন্দ করছে এবং সেভাবে ডিসিশন নিতে পারবেন। এ/বি টেস্ট করার জন্য যেকোনো সময় একটি ভেরিয়েবল নির্ধারণ করুন। 

    চলুন একটা উদাহরণের মাধ্যমে জিনিসটা বোঝা যাক। ধরুন আপনি একটি অডিয়েন্সকে ইমেইল পাঠাতে চাচ্ছেন। আপনার প্রথম ইমেইলে অনেকগুলো ভেরিয়েবল আছে যা আপনি চেঞ্জ করতে পারবেন, যেমন ইমেইলের কপি, ডিজাইন, ছবি, কমিউনিকেশন। এমনকি একই ধরনের অডিয়েন্সের ডিফারেন্ট ইমেইল লিস্ট ও থাকতে পারে। আপনি টেস্ট করার সময় যেকোনো একটি ভেরিয়েবল আগে পরিবর্তন করে দেখুন। হয়তো শুধু টেক্সট পরিবর্তন করতে পারেন, অথবা ছবি অথবা অন্য কিছু। তারপর রেজাল্ট পর্যবেক্ষণ করুন। এতে করে আপনি ক্লিয়ারলি বুঝতে পারবেন কোন ভেরিয়েবল পরিবর্তন করার জন্য কোন রেজাল্ট আসছে। 

     

    রেজাল্ট পর্যবেক্ষণ করুন

    ইমেইল পাঠানোর পরই কি দায়িত্ব শেষ? একদমই না। একজন মার্কেটার হিসেবে আপনাকে সবসময় সব ধরনের ডাটা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। আপনার ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের কি-মেট্রিকগুলো পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন ক্যাম্পেইনটি সফল হয়েছে কিনা! এই কি-মেট্রিকগুলো আপনাকে পরবর্তী ডিসিশন নিতে সাহায্য করবে। 

     

    রিপোর্ট তৈরি করুন

    ইমেইল ক্যাম্পেইনটির রেজাল্ট এবং অ্যানালাইসিস নিয়ে ক্লায়েন্ট এর জন্য একটি রিপোর্ট তৈরি করুন। এই রিপোর্টটির মাধ্যমে ক্লায়েন্ট বুঝতে পারবে ইমেইল ক্যাম্পেইনটি তার ব্যবসার জন্য কতটা ইফেক্টিভ হয়েছে। 

    রিপোর্টে বিভিন্ন ডাটা যোগ করুন, কি-মেট্রিকগুলো কেমন পারফর্ম করেছে তা মেনশন করুন এবং অ্যানালাইসিস করুন। 

    আচ্ছা, এই রিপোর্ট তৈরির জন্য কিংবা ইমেইল মার্কেটিং এর ইফেক্টিভনেস বোঝার জন্য তো বিভিন্ন মেট্রিক সম্পর্কে জানতে হবে, তাইনা?

    চলুন জেনে নেই ইমেইল মার্কেটিং এর গুরুত্বপূর্ণ মেট্রিকগুলো সম্পর্কে যা আপনার ইমেইল মার্কেটিং দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে কাজে লাগবে। 

     

    ইমেইল টেমপ্লেট ডিজাইন করার নিয়ম– কিভাবে কাস্টম ইমেইল টেমপ্লেট ডিজাইন করবেন

    ইমেইল টেমপ্লেট

    ইমেইল টেমপ্লেট বলতে ইমেইলের একটি পূর্বনির্ধারিত ফরম্যাটকে বোঝায় যা আপনি বারবার ব্যবহার করতে পারবেন। ইমেইলকে দৃষ্টিনন্দন করার জন্য আপনি বিভিন্নভাবে ইমেইল টেমপ্লেট ডিজাইন করতে পারেন। ইমেইল টেমপ্লেট বানানোর সুবিধা হচ্ছে আপনি একবার টেমপ্লেট বানালে বিভিন্ন ক্লায়েন্ট এর জন্য একই ধরনের ক্যাম্পেইনে টেমপ্লেটটি ব্যবহার করতে পারবেন। এতে করে অনেকটা সময় বাঁচাবে। 

    ইমেইল টেমপ্লেট এর প্রকারভেদ

    ২ ধরনের ইমেইল টেমপ্লেট রয়েছে-

    Drag & Drop Email Template

    এই ধরনের ইমেইল টেমপ্লেট ব্যবহার করা সহজ এবং কোনো কোডিং এর প্রয়োজন নেই। আগে থেকে রেডি করা কিছু এলিমেন্টকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় Drag করে Drop করার মাধ্যমে ইমেইল টেমপ্লেট তৈরি করা হয়। খুব দ্রুত ও কম সময়ের মাধ্যমে এই ধরনের ইমেইল টেমপ্লেট ডিজাইন করা সম্ভব। তবে এই টেমপ্লেট কিছু ডিজাইনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।

    HTML Email Template

    কোডিং ল্যাঙ্গুয়েজ HTML ব্যবহার করে এই ইমেইল টেমপ্লেটগুলো ডিজাইন করা হয়। এই ধরনের ইমেইল টেমপ্লেট ডিজাইন করা তুলনামূলক কষ্ট ও সময়সাপেক্ষ। তবে আপনি নিজের ইচ্ছামতো ও ক্লায়েন্ট এর রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী ইমেইল টেমপ্লেট ডিজাইন করতে পারবেন। 

    কাস্টম ইমেইল টেমপ্লেট ডিজাইন

    আপনি যখন বিভিন্ন ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করবেন, সেখানে কিছু রেডিমেড ইমেইল টেমপ্লেট থাকে যা একটু কাস্টমাইজ করলেই আপনি বিভিন্ন ক্লায়েন্ট এর জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। তবে কোনো ক্লায়েন্ট যদি নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী কোনো টেমপ্লেট চায়, সেক্ষেত্রে সেই রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী নতুন টেমপ্লেট বানানোর প্রয়োজন হতে পারে– এই টেমপ্লেটগুলোই কাস্টম ইমেইল টেমপ্লেট। 

    যেহেতু যারা ইমেইল মার্কেটিং এর কাজ করে বেশিরভাগই ডিজাইনার না, তাই এই কাস্টম ইমেইল টেমপ্লেটগুলোর জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্যবহার করে কাজগুলো সহজেই করে নেওয়া যায়। 

    কাস্টম ইমেইল টেমপ্লেট ডিজাইন এর জন্য প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট

     

    ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবেন? – স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন

    ইমেইল মার্কেটিং কিভাবে করতে হয় তা শিখে ফেললেন। তবে কিভাবে ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন সেটি এখনো জানা বাকি চলুন জেনে নেই।

    স্টেপ – ১: প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করুন

    প্রথমেই আপনাকে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কিভাবে ইমেইল মার্কেটিং করতে হয়, ইমেইল মার্কেটিং টুলস ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে।

    ইমেইল সেগমেন্টেশন, ট্যাগ, ইমেইল ডিজাইন, ইমেইল মার্কেটিং মেট্রিকস ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা নিন। অনলাইনে বিভিন্ন ফ্রি/পেইড কোর্সের মাধ্যমে আপনি শিখতে পারবেন ইমেইল মার্কেটিং।

    ইমেইল মার্কেটিং করে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য টেন মিনিট স্কুলের ‘Email Marketing করে Freelancing’ কোর্সটি আপনার জন্য বেস্ট চয়েস হবে। এই কোর্সে শুধু ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন সম্পর্কে শেখানো হয়নি। বরং কিভাবে আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ শুরু করবেন, কিভাবে ক্লায়েন্টকে এপ্রোচ করবেন, সেলস ফানেল, যেভাবে Email Marketing করে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায় সবকিছু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

    স্টেপ – ২: আপনার ‘নিশ’ সিলেক্ট করুন

    ইমেইল মার্কেটিং এর শুরুতে সবকিছু নিয়ে বেসিক আন্ডারস্টেন্ডিং রাখুন তবে কোনো একটি স্পেশাল এরিয়াতে এক্সপার্ট হয়ে উঠুন। নির্ধারণ করুন কোন এরিয়াতে আপনি আরও দক্ষ হয়ে উঠতে চান। যেমন: ইমেইল কপিরাইটিং, অটোমেশন, ইমেইল ডিজাইন ইত্যাদি।

    এতে করে মার্কেটে সবার চাইতে এগিয়ে থাকবেন আপনি।

    স্টেপ – ৩: পোর্টফোলিও তৈরি করুন

    আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে পোর্টফোলিও তৈরি করা। পোর্টফোলিওতে সাধারণত আপনার বিভিন্ন কাজের ডিটেইলস থাকে, সাকসেস স্টোরি এবং কেইস স্টাডি থাকে, যা আপনার দক্ষতা সম্পর্কে ক্লায়েন্টকে আইডিয়া দিবে। একটি স্ট্রং পোর্টফোলিও আপনাকে অনেক সুবিধা দিবে যেমন নতুন ক্লায়েন্ট পাওয়া, কিংবা অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বেশি চার্জ করা ইমেইল মার্কেটিং সার্ভিসের জন্য।

    প্রথম দিকে আপনি যখন শিখছেন, তখন পোর্টফোলিও বিল্ড করার জন্য ফ্রিতে কাজ করতে পারেন এবং ধীরে ধীরে এক্সপেরিয়েন্স বাড়াতে পারেন। 

    স্টেপ – ৪: ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে কাজ শুরু করুন

    যখন আপনি কনফিডেন্ট হবেন ক্লায়েন্ট এর কাজ করার জন্য, ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করা শুরু করুন। মার্কেটপ্লেসে নিজের প্রোফাইল তৈরি করুন এবং নিজের দক্ষতা প্রকাশ করুন। 

    জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলো হচ্ছে-

    • Fiverr
    • Upwork
    • TopTal
    • Freelancer

    স্টেপ – ৫: পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং করুন

    ক্লায়েন্ট বা প্রজেক্ট পাওয়ার জন্য পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট  (ফেইসবুক, লিংকড ইন) এ আপনার ইমেইল মার্কেটিং দক্ষতাগুলো নিয়ে লিখুন, ক্লায়েন্ট এর সাকসেস স্টোরি সম্পর্কে জানান। এতে আপনার ক্রেডিবিলিটি বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি নতুন ক্লায়েন্ট পাবেন। 

    স্টেপ – ৬: ক্লায়েন্ট এর কাছে পোঁছান 

    যেকোনো ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে শুরুর দিকে ক্লায়েন্ট পাওয়া খুব চ্যালেঞ্জিং। চেষ্টা করুন বিভিন্ন উপায়ে পটেনশিয়াল ক্লায়েন্ট এর কাছে আপনার সার্ভিস এর কথা পৌঁছে দিতে। তাদের জানান আপনার সার্ভিস কেন নেওয়া উচিত। বিভিন্ন উপায়ে আপনি পটেনশিয়াল ক্লায়েন্ট এর কাছে পোঁছাতে পারেন। যেমনঃ

    • পার্সোনালাইজড ইমেইলঃ পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টকে সার্ভিস অফারিং, রেট সবকিছু নিয়ে পার্সোনালাইজড ইমেইল পাঠান। ইমেইলে মেনশন করুন কিভাবে আপনার ইমেইল মার্কেটিং সার্ভিসটি তাদের ব্যবসায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সাহায্য করবে। 
    • কোল্ড কলিংঃ পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টকে কোল্ড কলিং করতে পারেন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে পারেন। 
    • কন্টেন্ট মার্কেটিংঃ বিভিন্ন উপায়ে কন্টেন্ট মার্কেটিং করে আপনি ক্লায়েন্টদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেন। যেমনঃ ব্লগ, ভিডিও, টেক্সট ইত্যাদি।

    স্টেপ – ৭: আপনার কাজের রেট ঠিক করুন

    কোন ধরনের কাজের জন্য কেমন চার্জ করবেন তা ঠিক করুন। আপনি চাইলে ঘণ্টা বেসিসে তা করতে পারেন অথবা প্রজেক্ট বেসিসে সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করতে পারেন। শুরুতে কম্পিটিটিভ প্রাইসিং রাখুন বেশি ক্লায়েন্টকে অনবোর্ড করার জন্য এবং ধীরে ধীরে চার্জ বৃদ্ধি করুন। 

    স্টেপ – ৮: হাই-কোয়ালিটি সার্ভিস ডেলিভার করুন

    আপনি যখন ক্লায়েন্ট পাওয়া শুরু করবেন, চেষ্টা করবেন সবসময় সেরা কোয়ালিটি প্রদান করতে। নিজের কমিউনিকেশন স্কিল বৃদ্ধি করুন, ক্লায়েন্টের থেকে রেগুলার ফিডব্যাক নিন। চেষ্টা করুন সময়ের মধ্যে হাই কোয়ালিটি সার্ভিস প্রদান করে ক্লায়েন্টকে সন্তুষ্ট করতে। ক্লায়েন্ট একবার আপনার কাজ পছন্দ করলে পরের বার আপনাকেই অ্যাপয়েন্ট করবে।  

    স্টেপ – ৯: টেস্টিমোনিয়াল ও রেফারেল কালেক্ট করুন

    আপনার সন্তুষ্ট ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে টেস্টিমোনিয়াল কালেক্ট করুন। এইসব টেস্টিমোনিয়াল বা রিভিউ আপনার পোর্টফোলিও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে এবং আপনার ক্রেডিবিলিটি বাড়াবে যা নতুন ক্লায়েন্ট পেতেও সাহায্য করবে। 

    স্টেপ – ১০: প্রতিনিয়ত শিখুন

    আপনার এই জার্নি কিন্তু শেষ না। আপনাকে প্রতিনিয়ত শিখতে হবে। বিভিন্ন ক্লায়েন্ট এর সাথে যখন কাজ করবেন, প্রতিবারই নতুন কিছু না কিছু শিখতে পারবেন। আর একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে আপনাকে রিসেন্ট ট্রেন্ড, আপডেট সম্পর্কেও জানতে হবে। তাই শেখা কখনোই থামানো যাবে না।

     

    ইমেইল মার্কেটিং করে ফ্রিল্যান্সিং করার মার্কেটপ্লেস  

    ইমেইল মার্কেটিং করে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনি অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। বিভিন্ন ধরনের অনলাইন মার্কেটপ্লেস রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-

    Fiverr

    ফাইভার অন্যতম ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস। ফাইভারে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস অফার করা হয়। এখানে যারা বিভিন্ন কাজে পারদর্শী হয়ে থাকে তারা সেইসব কাজ শো-কেস করে এবং ‘গিগ’ ওপেন করে। ২০১০ সালে এই প্ল্যাটফর্মটির যাত্রা শুরু হয় এবং ইতিমধ্যে ফাইভার একটি লিডিং ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে।

    এই প্ল্যাটফর্ম ৫ ডলার থেকে শুরু হয় বিভিন্ন কাজের রেট এবং কয়েকশো ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। একজন ক্লায়েন্ট যদি আপনার প্রোফাইল পছন্দ করে তাহলে আপনাকে কাজের জন্য সিলেক্ট করবে এবং কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আপনি নির্ধারিত ফি পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে প্রতিটি অর্ডার সম্পন্ন হওয়ার জন্য ফাইভার ২০% কমিশন নিয়ে থাকে। 

    ইমেইল মার্কেটাররা বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস প্রোভাইড করে থাকে যেমন: 

    • ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন ক্রিয়েশন
    • ইমেইল মার্কেটিং কপিরাইটিং
    • ইমেইল ডিজাইন
    • ইমেইল ক্যাম্পেইনের জন্য লিড জেনারেশন
    • ইমেইল মার্কেটিং অটোমেশন, ইত্যাদি

    Upwork

    আরেকটি অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে– আপওয়ার্ক।  ২০১৫ সালে আপওয়ার্ক যাত্রা শুরু করে এবং ফ্রিল্যান্সার ও ক্লায়েন্টকে একত্রিত করে। 

    আপওয়ার্ক ফাইভারের চেয়ে একটু ভিন্ন। ফাইভারে যেমন ক্লায়েন্ট নিজে খুঁজে নেয় কোন ফ্রিল্যান্সার দিয়ে তিনি কাজটি করাতে ইচ্ছুক, আপওয়ার্কে ফ্রিল্যান্সার ক্লায়েন্ট খুঁজে নেয়।  

    কোনো ক্লায়েন্ট এর সার্ভিস প্রয়োজন হলে তিনি তা পোস্ট করেন এবং যারা এই কাজে পারদর্শী এসে ‘বিড’ করে। তারপর ক্লায়েন্ট যার কাজ ভালো মনে করেন তাকে কাজটি দিতে পারেন। মাইক্রোসফট, গুগলের মতো বড় বড় কোম্পানিগুলো আপওয়ার্ক থেকে ফ্রিল্যান্সার দিয়ে কাজ করিয়ে থাকে কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর প্ল্যাটফর্মটি ফ্রিল্যান্সার এর থেকে প্রতি অর্ডারের জন্য ১০% কমিশন নিয়ে থাকে। 

    ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য আপওয়ার্কে অনেক ধরনের কাজ এভেইলেবল আছে। যেমন:  লিড জেনারেশন, ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন অটোমেশন, ট্যাম্পলেট ডিজাইন ইত্যাদি।

    Freelancer 

    ফ্রিল্যান্সার আরেকটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম।.২০০৯ সালে যাত্রা শুরু এই প্ল্যাটফর্মটির যা বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং সার্ভিস প্রদান করে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মটিতে ক্লায়েন্টরা বিভিন্ন প্রজেক্ট নিয়ে পোস্ট করে এবং ফ্রিল্যান্সাররা বিড শুরু করে। তারপর ক্লায়েন্ট নিজের সুবিধামতো ফ্রিল্যান্সার দিয়ে কাজটি করাতে পারে। 

     

    ইমেইল মার্কেটিং করে ফ্রিল্যান্সিং – কিছু ইফেক্টিভ স্ট্র্যাটেজি

    মোবাইলের জন্য অপ্টিমাইজ করুন

    বেশিরভাগ অডিয়েন্স তাদের ইমেইলগুলো মোবাইলে চেক করে থাকেন। তাই আপনার ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনটি এমন হতে হবে যেন মোবাইল ফ্রেন্ডলি হয়। ওয়েবসাইট কিংবা পেমেন্ট মেথড যেন মোবাইলে খুব সহজে ব্যবহার করা যায়। 

    নতুন লিড এর কাছে দ্রুত পৌঁছান 

    ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের জন্য যে লিডগুলো কালেক্ট করবেন তাদের কাছে দ্রুত সময়ে ইমেইল পাঠান। আপনি যদি কোনো কাস্টমারের কাছে তার প্রশ্ন বা ইনকোয়ারির পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে কন্টাক্ট করেন, তাহলে কাস্টমার এর সেটিসফেকশন লেভেল বৃদ্ধি পায়। 

    ট্রানজেকশনাল ইমেইল কাজে লাগান

    ট্রানজেকশনাল ইমেইলগুলো সবচেয়ে বেশি রিসিভার ওপেন করে থাকে। তাই এই ধরনের ইমেইলগুলো কাজে লাগিয়ে অন্য রেভিনিউ স্ট্রিমগুলো প্রোমোট করার চেষ্টা করুন। বিলিং ইনফরমেশন এর পর, আপনি হয়তো রিলেটেড অন্য কোনো প্রোডাক্ট এর প্রোমোশন করতে পারেন বা ওয়েবসাইট লিংক দিয়ে দিতে পারেন। এতে করে ট্রানজেকশনাল ইমেইলগুলোর মাধ্যমে আপসেলিং ও ক্রসসেলিং বৃদ্ধি পাবে। 

    অ্যানালাইজ করুন সবসময় 

    সবসময় ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন এর রিপোর্ট অ্যানালাইজ করুন এবং রিপোর্ট তৈরি করুন। এই রিপোর্টগুলোর মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনগুলো ইফেক্টিভ হচ্ছে কিনা। ক্লায়েন্ট এর সাথে রেগুলার আপডেট শেয়ার করুন।

     

    Communication Masterclass by Tahsan Khan

    বাস্তব জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে রিটেন, ভার্বাল ও নন ভার্বাল কমিউনিকেশন আরো ইফেক্টিভ করার দারুণ সব কৌশল শিখুন তাহসান খানের Communication Masterclass কোর্সে, এগিয়ে থাকুন ব্যক্তিগত ও প্রফেশনাল লাইফে!

     

    ইমেইল মার্কেটিং এর কিছু কমন ভুল যা এড়িয়ে চলতে হবে

    ক্রমাগত ইমেইল পাঠানো

    অনেকসময় অতিরিক্ত ইমেইল পাঠানো অডিয়েন্সের বিরক্তির কারণ হতে পারে। তাই একটি শিডিউল বানিয়ে নির্দিষ্ট সময় পরপর গ্রাহকদের মেইল পাঠান। এক্ষেত্রে গ্রাহকের Time Zone এর ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে।

    ইমেইল লিস্ট আপডেট না রাখা

    ইমেইল লিস্টটি নিয়মিত আপডেট করে না রাখলে অনেক পটেনশিয়াল কাস্টমার হারানোর সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া অবৈধ বা অকার্যকর ইমেইল এর সংখ্যাও লিস্টে বাড়তে থাকে যা ইমেইলের কনভার্শন রেট অনেক কমিয়ে দেয়। তাই নিয়মিতভাবে ইমেইল লিস্ট আপডেট করা অত্যন্ত জরুরি

    ইমেইলে স্প্যামিং বা ক্লিকবেটিং কিছু দেওয়া

    অনেকে এমন অনেক ধরনের ক্লিকবেটিং তথ্য ব্যবহার করে যা কাস্টমারদের বিশ্বাস হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই সঠিক ও স্পষ্ট শিরোনাম ব্যবহার করুন। 

    ডাটা অ্যানালাইসিস না করা

    ইমেইল মার্কেটিং সফল হচ্ছে কিনা তা জানতে হবে। ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে বের করতে হবে কোন ক্যাম্পেইনটি ভালো করছে, কোনটি করছে না! যেগুলো ভালো করছে সেখান থেকে স্ট্র্যাটেজি নিয়ে যেগুলো ভালো পারফর্ম করছে না, সেখানে কাজ করতে হবে। 

    সারসংক্ষেপ

    ইমেইল মার্কেটিং বর্তমান সময়ে একটি উদীয়মান ইন্ডাস্ট্রি। তাই বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের ঘরে বসে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য ইমেইল মার্কেটিং করে ফ্রিল্যান্সিং করা একটি অভিনব সুযোগ। ঘরে বসেই প্রতি মাসে ১০ থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব ইমেইল মার্কেটিং দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে। 

    আপনি যদি ইমেইল মার্কেটিং করে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান, উপরের ধাপগুলো ফলো করুন। ইমেইল মার্কেটিং ও ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে যথেষ্ট আইডিয়া গ্রহণ করুন। শিখুন কিভাবে ইমেইল মার্কেটিং করা যায়, ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্কে জানুন। 

    অনলাইনে ইমেইল মার্কেটিং এর উপর বিভিন্ন কোর্স আছে। তবে ইমেইল মার্কেটিং করে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য টেন মিনিট স্কুলের ‘Email Marketing করে Freelancing’ কোর্সটি আপনার জন্য বেস্ট চয়েস হবে। এই কোর্সে শুধু ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন সম্পর্কে শেখানো হয়নি। বরং কিভাবে আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ শুরু করবেন, কিভাবে ক্লায়েন্টকে এপ্রোচ করবেন, সেলস ফানেল, যেভাবে Email Marketing করে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায় সবকিছু নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন। 


    ক্যারিয়ারে নিজেকে এক ধাপ এগিয়ে রাখতে, আজই ভিজিট করো আমাদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্সগুলোতে:


    তথ্যসূত্র:


    টেন মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com

    এছাড়াও যেকোনো জিজ্ঞাসায় কল করুন 16910 নম্বরে।

    আপনার কমেন্ট লিখুন