আপনি কি বিশ্বাস করবেন যদি আমি আপনাকে বলি যে, জানুয়ারি সবসময় ইংরেজি বর্ষপঞ্জিকার প্রথম মাস ছিল না? বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, কথাটা কিন্তু একদম সত্যি! প্রাচীন রোমে যেই বর্ষপঞ্জিকা ব্যবহৃত হত, তার শুরুটা ছিল মার্চ দিয়ে এবং তা ফেব্রুয়ারিতে গিয়ে শেষ হত।
সেই রোমান পঞ্জিকার সাথে বর্তমান পঞ্জিকার অনেক পার্থক্য থাকলেও, প্রাচীন রোমান মাসের নামগুলো কিন্তু বর্তমান পঞ্জিকাতেও ব্যবহৃত হচ্ছে। রোমান এই বার মাসের নামগুলোরও আলাদা অর্থ রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক এই অর্থ গুলো।
মার্চ
প্রাচীন রোমে নতুন বছরের শুরুটা ছিল উৎসবের সময়। এ সময় সবরকমের যুদ্ধে বিরতি থাকত আর যেহেতু মার্চ দিয়েই তখন নতুন বছরের শুরুটা হত, তাই এর নামকরণ করা হয়েছে রোমান যুদ্ধের দেবতা ‘মার্স’ এর নামানুসারে।
এপ্রিল
এপ্রিলের নামকরণের পেছনে মূলত তিন রকমের মতবাদ রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, ল্যাটিন ভাষায় এপ্রিল অর্থ হচ্ছে দ্বিতীয় আর যেহেতু এপ্রিল তখন বছরের দ্বিতীয় মাস ছিল, তাই এভাবে এর নামকরণ হয়েছে।
কেউবা মনে করেন, করা হয়েছে ল্যাটিন শব্দ ‘এপ্রায়ার’ থেকে যার মানে হচ্ছে, উন্মোচন করা। এপ্রিলে ফুলে নতুন কুঁড়ির উন্মোচন হয় তাই এর থেকে এপ্রিল নামটা এসেছে। আবার কারো কারো ধারণা যে, এপ্রিল নামটা এসেছে, রোমান দেবী ‘আফ্রোদিতির’ থেকে।
মে
মে এর নামকরণ করা হয়েছিলো বৃক্ষ উৎপাদনের রোমান দেবী ‘মাইয়া’ এর নাম থেকে।
জুন
জুনকে বরাবরই বিয়ের মাস হিসেবে গণ্য করা হয়। তাই এর নামকরণও করা হয়েছে, বিয়ের দেবতাদের রাণী ‘জুনো’ এর নামানুসারে।
জুলাই
খ্রিষ্টপূর্ব ৪৪ সনে ‘জুলিয়াস সিজারের’ নামানুসারে জুলাই নামটি রাখা হয়। এর আগে জুলাইকে ‘কুয়ান্টিলাস’ বলা হত, ল্যাটিনে যার অর্থ পঞ্চম।
আগস্ট
খ্রিষ্টপূর্ব ৮ সনে ‘অগাস্টাস সিজারের’ নামানুসারে আগস্ট নামটি রাখা হয় যার পূর্বনাম ছিল, ‘সেক্সটেলিয়া’ যার অর্থ ল্যাটিনে ষষ্ঠ।
সেপ্টেম্বর
ল্যাটিন শব্দ ‘সেপ্টেম’ থেকে এসেছে সেপ্টেম্বর নামটি যার অর্থ হচ্ছে, সপ্তম।
অক্টোবর
অষ্টমকে ল্যাটিনে বলা হয় ‘অক্টো’ যা থেকে এসেছে অক্টোবর নামটি।
নভেম্বর
নভেম্বর এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘নভেম’ থেকে যার অর্থ নবম।
ডিসেম্বর
একইভাবে ল্যাটিন শব্দ ‘ডিসেম’ থেকে এসেছে ডিসেম্বর নামটি। ডিসেম অর্থ দশম।
ফেব্রুয়ারি
সেসময় বছর শেষে, ‘ফেব্রুয়া’ নামে এক মাসব্যাপী উৎসব হত। খ্রিষ্টপূর্ব ৬৯০ সনের দিকে, তৎকালীন রোমের রাজা ‘নুমা পম্পিলিয়াস’ ফেব্রুয়া উৎসবকে মাসে রূপান্তর করে ফেলেন এবং এর থেকেই আসে ফেব্রুয়ারি।
জানুয়ারি
সবশেষে পম্পিলিয়াস শুরু এবং শেষের দেবতা ‘জানুস’ এর নামানুসারে বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসের আবির্ভাব ঘটান।
কোর্সটিতে যা যা পাচ্ছেন:
বিসিএস প্রিলি লাইভ কোর্স
এইতো গেল মাসের নামকরণের ইতিহাস। এবার চলুন জেনে নেয়া যাক ইংরেজি সপ্তাহের দিনগুলোর নামকরণের পেছনের কথা।
সানডে
সানডে নামটার উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ ‘ডাইস সলিস’ থেকে যার অর্থ ‘সূর্যের দিন’
মানডে
এ্যাঙ্গলো-স্যাক্সন শব্দ ‘মোনাড্যাগ’ যার অর্থ হচ্ছে ‘চাঁদের দিন’ থেকে এসেছে মানডে।
টিউসডে
নোর্স দেবতা ‘টিয়ার’ এর নামানুসারে নামকরণ করা হয় টিউসডে এর। টিয়ার হচ্ছে ওডিনের পূত্র।
ওয়েডনেসডে
নোর্স দেবতা ‘ওডিন’ এর নামানুসারে ওয়েডনেসডে এর নামকরণ করা হয়।
থার্সডে
নোর্স বজ্রপাতের দেবতা ‘থর’ যাকে আমরা কমবেশি সবাই চিনি, তার নামানুসারেই রাখা হয়েছে এই দিনটার নাম।
ফ্রাইডে
নোর্স দেবী ‘ফ্রিগ’ এর নামানুসারে ফ্রাইডে এর নামকরণ। ফ্রিগ হচ্ছে ওডিনের স্ত্রী।
স্যাটারডে
স্যাটারডেতে আগে রোমান দেবতা ‘স্যাটার্ন’ এর নামানুসারে ‘স্যাটার্নি’ বলা হত যার অর্থ হচ্ছে ‘শনিগ্রহের দিন’
১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দে, মুগল সম্রাট আকবরের বাংলা সনের প্রবর্তনের কথাতো প্রায় সবাই জানি। এখন চলুন জেনে নেই বাংলা পঞ্জিকার বার মাসের নামের প্রবর্তনের কথা।
বাংলা মাসের নামগুলো সবকটাই এসেছে বিভিন্ন নক্ষত্রের নাম থেকে। বিশাখা নক্ষত্রের নাম থেকে এসেছে বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ এসেছে জ্যেষ্ঠা থেকে। আষাঢ়ের উৎপত্তি আষাঢ়া থেকে, শ্রাবণের উৎপত্তি শ্রবণা থেকে। ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক, এসেছে যথাক্রমে, ভাদ্রপদ, অশ্বিনী এবং কৃত্তিকা থেকে। অগ্রহায়ণ মাসের আরেক নাম মার্গশীর্ষ যা এসেছে মৃগশিরা থেকে। পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন এবং চৈত্রের উৎপত্তি যথাক্রমে পুষ্যা, মঘা, ফাল্গুনী এবং চিত্রা থেকে।
ইংরেজির মত বাংলা সপ্তাহের সাতদিনের নামকরণও করা হয়েছে দেবতা এবং গ্রহের নাম থেকে। সোমবারের নামকরণ করা হয়েছে সোম বা শিব এর নামানুসারে এবং মতান্তরে চাঁদের নামানুসারে। মঙ্গলবার, বুধবার, বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং শনিবারের নামকরণ করা হয়েছে যথাক্রমে, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র এবং শনি গ্রহের নামে। রবিবারের নামকরণ করা হয়েছে, রবি বা সূর্য দেবতার নামানুসারে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বাংলা এবং ইংরেজি দিনের সম্পর্কে আমরা জেনেও যে ভুলটা করি, তা হচ্ছে, বাংলা দিন শুরু হয় সূর্যোদয়ের মাধ্যমে এবং ইংরেজি দিন শুরু হয় মধ্যরাতে, ১২ টার পরপর।
এই শব্দগুলো ছাড়া আমাদের নিত্যদিন আমরা চিন্তাই করতে পারি না। অথচ, এগুলোর নামকরণের পেছনেও যে একটা গল্প থাকতে পারে, তা আমাদের মাঝে কয়জন জানত!
আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Study Smart Course by Seeam Shahid Noor
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
- Microsoft Word Course by Sadman Sadik
- Microsoft Excel Course by Abtahi Iptesam
- Microsoft PowerPoint Course by Sadman Sadik
- Personal Finance Course by Nafeez Al Tarik
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন