পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবারে শুনে নাও!
পরীক্ষা চলার সময়টাতে কত কিছু মনে হয়! পরীক্ষা শেষ হলে এটা করব, সেটা করব, এখানে ঘুরতে যাব, সেখানে বেড়াতে যাব ইত্যাদি ইত্যাদি। যেই পরীক্ষাটা শেষ হয়, অমনি দেখা যায় মাথায় আর কোনো আইডিয়াই আসছে না। ভোর ছয়টায় উঠে মর্নিং ওয়াকে যাওয়ার প্ল্যান থাকলেও দেখা যায় সকাল দশটার আগে কেউ তোমাকে বিছানা থেকেই তুলতে পারছে না! সামনের ছুটিটা যাতে তোমাকে একটা আলুর বস্তার মত ঘরের কোণায় অলস বসে কাটাতে না হয়, তার জন্য এখন থাকছে কিছু টিপস।
১। প্ল্যান করো
প্ল্যান বলতে রীতিমত কাগজ কলম নিয়ে গ্রাফ-ফ্লোচার্ট এঁকে প্ল্যান করার কথা বলছি না। প্ল্যানটা আগে নিজের মাথার মধ্যে করে নাও। প্ল্যান করার সময় মনে রাখবে যে তুমি যেহেতু একজন স্টুডেন্ট, সেহেতু তোমার ছুটির প্ল্যানটা একজন স্টুডেন্টের মতই হতে হবে, ব্যবসায়ী বা চাকরিজীবীর মত হলে চলবে না।
Model United Nations বা MUN নিয়ে অনেকেরই আগ্রহের কোন কমতি নেই। কিভাবে এই কম্পিটিশনে অংশ নিলে সাফল্য পাওয়া যাবে, সেটি অজানা থাকার কারণে অনেকে ইচ্ছা সত্ত্বেও অংশগ্রহণ করার বদলে দু’পা পিছিয়ে যায়।
ছুটিতে আরাম তো করবেই, সেই সাথে কিছু প্রোডাক্টিভ কাজও করে ফেলো। তোমার প্ল্যানের মধ্যে ঘুম, বিস্তর আড্ডাবাজি, মুভি আর খাওয়া-দাওয়া’র পাশাপাশি নিজের বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য একটা আলাদা সময় অবশ্যই রেখো।
২। রুটিনের মধ্যে থাকো
পরীক্ষা শেষে একটু ফ্রি হলেই দেখা যায় আমরা হঠাৎ একটা রেগুলার রুটিন থেকে বের হয়ে আসি। ঘুম-খাওয়া সব এলোমেলো হয়ে যায়। এই এলোমেলো হওয়াটা একটু ব্যালেন্স রেখে হওয়া উচিত। সকালবেলা অন্যান্য দিনের তুলনায় দু’এক ঘ এক্সট্রা ঘুম দেয়া যেতেই পারে। তাই বলে সকাল আটটার জায়গায় দুপুর একটায় ঘুম থেকে ওঠা কোনো কাজের কথা নয়। তেমনি আলসেমি করে অসময়ে খাবার খাওয়া, কোনো বেলার খাবার স্কিপ করে যাওয়া, নিয়মত গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকা- এগুলো ছুটির পরের নিয়মতান্ত্রিক জীবনে ফিরে যাবার সময় সমস্যা সৃষ্টি করবে।
৩। নতুন কিছু করো
প্রতি ছুটিতেই সেই একই বোরিং কক্সবাজার ট্যুরে বা প্রতিবার একই দামী রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে যদি তুমি অবশেষে ক্লান্ত হয়ে থাকো, তাহলে এবার প্লিজ নতুন কিছু করার চেষ্টা করো। ভেবে দেখো কী করতে ভালো লাগে, কোন কাজটা করব করব করেও করা হচ্ছে না। অনেকদিন ধরেই ভাবছিলে গিটারটা শিখে ফেলবে অথবা ফটোশপিং বা ওয়েব পেজ ডেভেলপিংয়ের মত কিছু কাজ শিখে নেবে।
এই ছুটিটাকে কাজে লাগাও, মনস্থির করো কোন একটা বা দু’টো কাজ তুমি ভালোভাবে করতে চাও। বাগান করা, গান গাওয়া, লেখালেখি বা ছবি আঁকার মত কোনো শখ থাকলে সেগুলোকে সময় দাও। এসব করতে বিভিন্ন নন-একাডেমিক ক্লাসে যোগ দিতে পারো বা অনলাইনে শিখে নিতে পারো। তোমার আসল পটেনশিয়াল আবিষ্কার করতে এই ছুটিটাকে ব্যবহার করো। বিভিন্ন পার্টটাইম চাকরি, ফ্রিল্যান্সিং, টিউশন বা বিভিন্ন সংস্থায় ইন্টার্নশিপ – এগুলোও ভালো অপশন।
৪। লক্ষ্য নির্ধারণ করো
ছুটি ব্যাপারটাই মূলত বিগত দিনের ক্লান্তি থেকে অবসর নিয়ে সামনের দিনের জন্যে তৈরি হওয়ার একটা সময়। এই সময়টাতে তুমি ঠিক করে ফেলো সামনের দিনগুলোতে কী করতে চাও। জীবন নিয়ে তোমার ধারণা কী, জীবনে কী করতে চাও, যা হতে চেয়েছিলে তার দিকে কতটুকু এগোতে পেরেছো, আরো কী কী করলে ভালো হবে- একটা অলস সন্ধ্যাবেলায় কফির কাপ হাতে নিয়ে এগুলো একবার ভেবে ফেলো। বিভিন্ন মোটিভেশনাল লেখা পড়তে পারো। নিজের আলটিমেটাম নিজেই ঠিক করো, ঠিক করো যে ‘ছুটির পর এক মাসে আমি এতটুকু কাজ করব।’ পরবর্তী দিনগুলোর জন্যে মানসিক ও শারীরিকভাবে তৈরি হও।
৫। স্ট্রেসকে ছুটি দাও
অনেক হয়েছে পরীক্ষা, অনেক হয়েছে পড়াশোনা, এবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটা সেরে ফেলো, তা হলো, নিজেকে স্ট্রেসের হাত থেকে মুক্তি দাও। মানসিক চাপ যত আছে সব ঝেড়ে ফেলো। নতুন কোনো জায়গায় ঘুরতে যেতে পারো, সেটা একটা পার্কও হতে পারে, যেখানে তুমি কিছু ভালো সময় কাটাতে পারবে। কেউ কেউ ইয়োগা, মেডিটেশন এসবও করে থাকে। স্ট্রেস ঝাড়ার জন্যে শারীরিক পরিশ্রমের জুড়ি নেই। ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, সাইক্লিং, সাঁতার- যেটা ভালো লাগে করতে পারো। কোনোটা না পারলেও সমস্যা নেই, ছুটি তো আছেই, চাইলে শিখে ফেলতে পারো। মোট কথা, নিজেকে কিছুটা ভালো সময় দিতে যা করতে ইচ্ছে হয় তাই করে ফেলো।
পরিবারের সাথে সময় কাটানোর জন্য ছুটি একটা দারুণ সময়। সামাজিকীকরণের জন্যেও। অনেক কিছুই করতে পারো, শুধু পরে যেন আফসোস করতে না হয়, ‘ইশ! এত লম্বা একটা ছুটি এভাবে নষ্ট করলাম!’
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন