পুরোটা পড়ার সময় নেই ? ব্লগটি একবার শুনে নাও !
বর্তমান প্রজন্মের বড় একটা সমস্যা হলো যে তারা এতো বেশি আর ভিন্ন ভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকে যে, প্রায়ই দেখা যায় কোন না কোন কাজ করার জন্যে সময় জোগাড় করাই যায় না। শুধু সেটাই না, এই কাজগুলো আর পরে করার সময় পাওয়া যায় না। ডেডলাইন মিস হয়, জমা হয় আক্ষেপ।
পরমুহূর্তেই আবার নতুন নতুন ডেডলাইন আসে, নতুন কাজের নিচে চাপা পড়ে যায় না করা কাজগুলো। এভাবে একবার না করা কাজগুলো আর কোনদিনই করা হয়ে ওঠে না। ব্যস্ততা সেগুলোয় আর হাত দিতে দেয় না, একসময় ফুরিয়ে যায় তার প্রয়োজনীয়তা।
আমারও ঠিক এরকমই হতো কাজ করার সময়। একগাদা কাজের ভীড়ে পুরনো কাজ খুঁজে পেতাম না, সেগুলো আসলেই আর করা হতো না কোনদিনই। এরকম সময়ে সন্ধান পেলাম দারুণ একটা ট্রিকের। এটাকে বলা হয় Time hack! খুব বেশি সাধারণ এই পদ্ধতিটা অবলম্বন করার পর থেকে সময়ের কাজ সময়ে করে ডেডলাইন পার করতে আর কোন অসুবিধা হয় নি আমার। আরামসে করে ফেলেছি সব কাজ!
এই পদ্ধতিটা কয়েক ধাপে করে এগোতে হয়। সবগুলো ধাপ শেষ করার পর দেখবে যেকোন ডেডলাইনের আগেই তোমার কাজ প্রস্তুত! দেখে নাও সে ধাপগুলি:
ধাপ ১:
প্রথমেই তোমাকে কাগজে একটা লিস্ট করতে হবে। লিস্টে থাকবে পরের দিন যেই কাজগুলো করবে, সেগুলোর নাম আর বিবরণ। এই কাজটা করতে হবে ঘুমাতে যাবার ঠিক আগে, কারণ তাতে নতুন কোন কাজ যোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।
তোমার হয়তো মনে হবে, কাজ লিস্টে লিখে কী লাভ, এমনিতেই তো মনে থাকে! সত্যিটা হলো, এগুলো আসলে মনে থাকে না। ঠিক যেমন ক্লাসের পড়ার নোট না নিলে দুই দিন পর ক্লাসে কী হয়েছে সেটা আর মনে থাকে না, কাজের ক্ষেত্রেও তাই। এজন্যেই লিস্টে স্পেসিফিক করে সবগুলো কাজের নাম লিখতে হবে।
ধাপ ২:
দিনের শুরু থেকেই লিস্টের কাজ একে একে শেষ করতে হবে। হ্যাঁ, এটা সত্যি যে, দিনের শুরু হলেই আমাদের নিজের কাজ বাদে অন্য কিছু করতে ইচ্ছা করে, কারো হয়ত ইউটিউবে গান শুনতে ইচ্ছা করে, কারো একটু ফেসবুকিং করতে। কিন্তু এগুলো করার আগে লিস্টের কাজ শেষ করার দিকে মন দিতে হবে। লিস্টের কাজ শেষ হয়ে গেলে কোন সমস্যাই নেই, কিন্তু শেষ করার আগে অপ্রয়োজনীয় অন্যান্য কাজ না করাই ভালো।
ধাপ ৩:
এক একটা কাজ শেষ করবে, এবং তারপর সেগুলো এক এক করে কেটে দিবে। হ্যাঁ, তোমার মনে হতে পারে কাজ শেষ হলে সেটা তো মনেই থাকবে, কাটার কি দরকার। কিন্তু এই যে একটা কাজ শেষ করে কেটে দিলে যে একরকম বিজয়ের আনন্দ মেলে, এটা আর কোথাও পাবে না তুমি। তাই কাজ শেষ করা মাত্র সবগুলো কেটে দেবে।
ধাপ ৪:
সবগুলো কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করবে প্রতিদিন। হ্যাঁ, তোমার হয়তো অনেক ব্যস্ততা থাকতে পারে, অন্য কিছুতে তুমি ব্যস্ত থাকতেই পারো, কিন্তু লিস্টের কাজের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। তাই চেষ্টা করবে দিনের কাজ সব দিনেই শেষ করে ফেলতে।
ধাপ ৫:
এটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার যে তুমি প্রতিদিন লিস্টের সব কাজ শেষ করতে পারবে না। বিভিন্ন বিচিত্র কারণে তুমি দেখা গেলো আটকে গেলে, লিস্টের কাজ শেষ হলো না। তাহলে উপায়?
সারাদিন কি কি করলে তার একটা লিস্ট করে ফেলতে পারো
উপায় অতি সহজ। যেদিন লিস্টের কাজ শেষ হবে না কিন্তু দিন ফুরিয়ে যাবে, তুমি সেদিন বাদ পড়া কাজগুলোকে পরের দিনের লিস্টে লিখে ফেলবে! তাহলেই বাদ গেলেও বন্ধ হবে না কাজ, পরের দিন করা হবে সেই কাজটি!
ধাপ ৬:
সারাদিন কি কি করলে তার একটা লিস্ট করে ফেলতে পারো। এতে একটা উপকার হবে; লিস্টের কাজগুলো সব করা হয়েছে কিনা, সেটার Double check করে নিতে পারবে এর মাধ্যমে। বলা যায় না, অসাবধানে কোন কাজ না করা হয়ে গেলে এই লিস্টে সেটা ধরা পড়বেই!
ধাপ ৭:
মানুষের ব্যস্ততা সবসময় একরকম থাকে না। জীবনে এমনও সময় আসতে পারে, যখন কাজের চাপ এত বেশি বড় হয় যে লিস্ট করেও কুলিয়ে ওঠা যায় না। এরকম সময়ে লিস্ট বাড়িয়ে ফেলতে হয়। বিশাল বড় একটা লিস্ট, সেখানে সব কাজ থাকবে। তাহলেই যত বেশি কাজই হোক না কেন, সামলে নেয়া সম্ভব হবে।
সময়কে হার মানানো খুব বেশি সহজ কাজ নয়। কিন্তু নিয়মিত একটা সময় ধরে কাজ করলে যেকোন কাজ শেষ করাটা আর কোন সমস্যাই নয়!
লেখাটি লিখতে সহায়তা করেছে অভিক রেহমান
এই লেখাটি নেয়া হয়েছে লেখকের ‘নেভার স্টপ লার্নিং‘ বইটি থেকে। পুরো বইটি কিনতে চাইলে ঘুরে এসো এই লিংক থেকে!
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন