অনুপ্রেরণা বিষয়টি নিঃসন্দেহে যে কোন কাজ অনেক উদ্যমের সাথে পরিচালিত করতে সহায়তা করে। অনুপ্রেরণা সৃজনশীলতা নামক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক, একই সাথে অনুপ্রেরণা যে কোন কাজে সফলতা এনে দেয় । অনুপ্রেরণা আমাদের যে কোন কাজ করতে মানসিক সাহস যোগায়। কাজটি করার জন্য গতি বৃদ্ধি করে এবং আমাদের সেই কাজটির সাথে একাত্ম করে। আর এভাবেই অনুপ্রেরণা আমাদের নতুন নতুন কাজ করার জন্য সাহস যোগাবে। আমরা যেনো সাহসিকতা আর দক্ষতার সাথে কাজে সফলতা অর্জন করতে পারি সেজন্য অনুপ্রেরণা আমাদের জীবনে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ তা হয়তো এখন আমরা সহজেই অনুধাবন করতে পারছি।
Personal Finance Course
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
অনুপ্রেরণার অভাব আমাদের সততার সাথে কাজ করার মানসিকতা নষ্ট করে দেয়। এরকম হতেই পারে যে তুমি কোন কাজ করতে পারছো না, অথবা কোন কাজে মন বসছে না। এর মানে যে তুমি সবসময় অনুপ্রেরণার অভাবে ভুগছো তা নয়। মনে রাখতে হবে অনুপ্রেরণার অভাব বিষয়টি শুধু একটি বা দু’টি উপসর্গ বা লক্ষণ নয়, বরং অনুপ্রেরণার অভাব হচ্ছে অসংখ্য সমস্যার তালিকা। আর তাই যেকোন একটি সমস্যাকেই অনুপ্রেরণার অভাব অভাব ভেবে বসাটা ঠিক হবে না।
যেকোনো একটি বা দু’টি মানসিক সমস্যায় ভুগছি বলে আমরা মনে করি আমাদের হয়তো কোন বড় সমস্যা হয়েছে, আমাদের হয়তো অনুপ্রেরণার অভাব হচ্ছে আর তাই আমরাও গতানুগতিক সমাধানের দিকে এগোই। হয়তো আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করি, প্রতিদিনের রুটিন ঠিক করি অথবা নতুন করে রুটিন বানাই বা প্রতিদিন নিয়ম করে পড়তে বসার পরিকল্পনা করি অথবা সেই কাজগুলো বেশি করি যেগুলো আমাদের চিত্তবিনোদনের খোরাক হিসেবে কাজ করে।
আরো পড়ুন: মাদার তেরেসার ১০টি অনুপ্রেরণামূলক উক্তি
এভাবেই আরো অনেক সমস্যা মনে করে, যথেষ্ট পরিমাণে না ভেবেই সমাধানের পথ খুঁজে বের করি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা মনে করি অনুপ্রেরণার অভাবে গতানুগতিক বিষয় ঠিক করলে হয়তো তুমি পুনরায় অনুপ্রেরণা খুঁজে পাবে, বাস্তবিক অর্থে অনেক সময় সেই সমাধান খুঁজে বের করি, যেগুলো আমাদের আরও বেশি বিষণ্ণ করে তোলে।
আমরা যেহেতু অনুপ্রেরণা বিষয়টি কীভাবে আমাদের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে সে বিষয়ে জানতে পারলাম, সেহেতু কোন বিষয়গুলো আমাদের অনুপ্রেরণা নষ্টের হাতিয়ার সে বিষয়গুলো সম্পর্কেও আমাদের অবগত হতে হবে। জেনে নিতে পারো কোন বিষয়গুলো আমাদের অনুপ্রেরণার নষ্ট করছে এবং কীভাবে আমরা পুনরায় অনুপ্রেরণা খুঁজে পাবো তার কিছু সহজ পন্থা।
শুধু সমস্যা জানলে হবে না সমাধানের রাস্তাও জানতে হবে। এছাড়া তুমি যখন অনুপ্রেরণা নষ্টের কারণ সম্পর্কে জানতে পারবে তখন তুমি গতানুগতিকভাবে সমাধানের দিকে না গিয়ে যেভাবে সমাধান করলে পুনরায় তুমি অনুপ্রাণিত হতে পারবে সে বিষয়ে বেশি মনোযোগ দেবে।
১. ভয় তোমার অনুপ্রেরণা নষ্ট করে দেয়
ভয় সব সময়ই আমাদের অনুপ্রেরণা নষ্টের অন্যতম হাতিয়ার। কারণ, যখনই তুমি ভয় পাবে তখনই তুমি এমন একটি পথ খোঁজার চেষ্টা করবে যেখান থেকে খুব সহজেই গা বাঁচিয়ে সে কাজটি শেষ করতে পারবে। এমন একটি রাস্তা নিঃসন্দেহে মনোযোগ সহকারে এমনকি পূর্ণ মনোনিবেশে সে কাজটি করার মানসিকতা নষ্ট করে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে ভয় তোমাকে অনেক সতর্ক করবে, সেক্ষেত্রে ভয় ব্যাপারটি যেকোন বড় কাজ করার ক্ষেত্রে কিছুটা উপকারী হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা অপকারী।
কারণ হচ্ছে ভয় তোমার একটি কল্পনা। যা যতটা ঝুঁকি তুমি নিচ্ছো তার থেকে বেশি তোমাকে ভাবাচ্ছে। আর তোমার ভয় যদি তোমার ঝুঁকির চেয়ে বড় হয়, সে ভয় তোমাকে সামনে এগোতে দেবে না, কারণ, এই ভয় তোমার ঝুঁকিকে বাস্তবতার চেয়ে আরো বেশি ভয়ঙ্করভাবে তোমার সামনে উপস্থাপন করবে। আর এই ভয়ই যখন তোমাকে বড় কাজ করতে দেবে না বা বড় কোনো ঝুঁকি নিতে দেবে না, তখন তা তোমার অনুপ্রেরণা নষ্টের জন্য অন্যতম হাতিয়ার হয়ে থাকবে।
পুনরায় অনুপ্রাণিত হবে যেভাবে:
পুনরায় অনুপ্রাণিত হতে হলে তোমার ভয়কে জয় করতে হবে। তোমার ভয়কে ধন্যবাদ জানাও, আর যাই হোক তোমার ভয়গুলো তোমাকে নেতিবাচক ভাবে হলেও রক্ষা করতে চেয়েছে। এরপর নিজেকে প্রশ্ন করো, “আমি কেন ভয় পাচ্ছি? ভয় আমাকে দমাতে পারবে না, ভয়ের জন্য আমি কাজটি করব না?”
এই প্রশ্নগুলো খুব দ্রুত তোমার মন থেকে সাধারণ ভয়গুলোকে তাড়িয়ে দেবে, এরপর যে ভয় তোমার ভেতর থেকে সরে গিয়েছে সেগুলোর দিকে তাকাও আর ভাবো অনেক ভয়কে তুমি তাড়িয়ে দিতে পেরেছো। বাকি কিছু ভয় যেগুলো তোমাকে বড় কাজ করতে বাধা দিচ্ছে তাদেরকে সময় দাও ভেবেচিন্তে নিজের ভেতর থেকে ঝেড়ে ফেলো।
ভয় তোমাকে কোনোভাবেই নামাতে পারবে না, দমাতে পারবে না। বারেবারে নিজেকে চ্যালেঞ্জ করো। যখন ভয়কে হারিয়ে তুমি জয়ী হবে, দেখবে যে ভয় তোমার অনুপ্রেরণা নষ্ট করতে চেয়েছিলো, সে ভয়ই তোমাকে নতুনভাবে অনুপ্রাণিত করে আরো নতুন উদ্যোমে কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত করেছে।
২. ভুল লক্ষ্য নির্ধারণ তোমার অনুপ্রেরণা নষ্ট করছে
আমরা সাধারণত দুইভাবে ভাবনাচিন্তা করি। প্রথমত, নিজস্ব ভাবনা, দ্বিতীয়ত, সামাজিক ভাবনা। তোমার নিজস্ব ভাবনা তোমাকে অনেক সৃজনশীল করে তোলে ,তুমি যা ভাবো তাই করতে চাও বা করার চেষ্টা করো তখন তোমার নিজস্ব ভাবনা ধাপে ধাপে তোমাকে একজন দক্ষ চেতনার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।
আর আমাদের দ্বিতীয় ভাবনা হলো, যা সামাজিক ভাবনা হিসেবে পরিচিত তা আমরা জন্মগতভাবে পেয়ে থাকি। এই সামাজিক ভাবনা আমাদেরকে প্রতিনিয়ত ভাবায়, যে সামাজিক সকল নিয়মকানুন আমাদেরকে মানতে হবে। অবশ্যই সমাজে চলতে গেলে সামাজিক নিয়ম মেনে চলতে হবে, তবে যখন তোমার লক্ষ্য সামাজিক নিয়মের গতানুগতিক ঘাটে বাঁধা পড়ে যাবে তখন তোমার লক্ষ্য আর তোমার থাকবে না। সেটা সমাজের প্রয়োজনে সামাজিক ভাবনার প্রয়োজনে তুমি সেটাকে গুরুত্ব দেবে।
অনেক সময় আমরা ভেবে পাইনা যে লক্ষ্যটি আমরা নির্ধারণ করেছি সেটাকে নিজের জন্য করেছি নাকি সামাজিক ভাবনা থেকে করেছি। লোকে কী বলবে সে ভাবনাটি আমাদের প্রতিনিয়ত তাড়া করে, তাই আমরা সামাজিক ভাবনা থেকে লক্ষ্য নির্ধারণ করার অভ্যাসটি জন্মগতভাবে নিজেদের মধ্যে গড়ে তুলি। যখন কোন কাজ করতে ভালো লাগছে না বা কোন বিষয় তোমাকে আর উদ্বেলিত করে তুলছে না, তখনই ভাবতে হবে সে কাজটি তুমি আসলে কি নিজের জন্য করছ নাকি সমাজের জন্য বা অন্য কারো জন্য ভেবে করছো।
যে কাজগুলো করতে আমরা অনুপ্রাণিত বোধ করি না সে কাজগুলো আমরা নিজেদের ভাবনা থেকে করি না। আর তাই লক্ষ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে তোমার আকাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যটি যদি তোমার না হয়ে অন্য কারো হয়, আর সেই ভাবনা যদি তোমার মস্তিষ্কে জায়গা করে নেয় তাহলে অবশ্যই সে ভুল লক্ষ্যটি তোমার অনুপ্রেরণা নষ্ট করবে।
পুনরায় যেভাবে অনুপ্রাণিত হবে:
তোমার লক্ষ্য নিয়ে পুনরায় ভাবো। সময় থাকতে লক্ষ্যভেদে তা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্তটি মোটেও ভুল সিদ্ধান্ত হবে না। যেহেতু সামাজিক ভাবনা আমাদের জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয় না, সেহেতু চাইলেই তুমি নিজস্ব ভাবনায় প্রবেশ করতে পারো। নিজের ভাবনায় ঢুকে দেখো তুমি আসলে কী করতে চাও। কোন ভাবনাগুলো তোমাকে উদ্বেলিত করে তোলে তুমি আসলে জীবনে কী করতে চাও।
যে বিষয়গুলো তোমাকে আনন্দ দিচ্ছে যেগুলো তোমাকে হাসাচ্ছে ,যে ভাবনাগুলো তোমাকে প্রতিনিয়ত সামনে এগিয়ে যাবার জন্য প্রেরণা যোগাবে যোগাচ্ছে নিঃসন্দেহে সে ভাবনাগুলো তোমাকে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। আর তাই ভুল লক্ষ্য থেকে বের হয়ে এসে সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করো দেখবে আবার অনুপ্রাণিত হয়ে পুনরায় কাজে মনোনিবেশ করতে পেরেছ।
৩.অনুপ্রেরণা নষ্ট করে স্বচ্ছতার অভাব
যখন তুমি সচেতনতার সাথে এবং স্বচ্ছতার সাথে জানবে তুমি আসলে কী চাও তখন তোমার ভবিষ্যতের ছবি তোমার কাছে অনেক বেশি অনিশ্চিত এবং অস্পষ্ট মনে হবে। আমরা হয়তো অনেক সময় জোর করে ভাবার চেষ্টা করি যে আমি জীবনে এটা চাই, এরকম হতে চাই, এই ভাবনা থেকেই ভুলভাবে ভুল পথে এগোতে থাকি। অনেক সময় দেখা যায় সেই ভুল বা অস্পষ্ট ছবি থেকে নেওয়া ভাবনাতে যে কাজগুলো আমরা করে থাকি সে কাজগুলো জন্য মনের ভেতর কোন অনুপ্রেরণা কাজ করে না।
একটু গভীরে ভাবলেই বোঝা যায় বিষয়টি আসলে স্বচ্ছতার অভাব। তুমি কি চাও এই প্রশ্নটির উত্তর যখন তোমার কাছে স্পষ্ট নয় তখন তোমার ভবিষ্যতের দর্পণটিও কিন্তু তোমার কাছে অস্পষ্ট মনে হবে। আর ঠিক সে সময় তুমি অনেক বেশি অনুপ্রেরণা অভাবে ভুগতে থাকবে আর ভাববে আমি এটা করতে চাই, ওভাবে করতে চাই কিন্তু আমি করতে পারছিনা। আমাকে দিয়ে আসলে কিচ্ছু হবে না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তুমি আসলে কী চাও সে ব্যাপারে তুমি স্পষ্ট নয় বলে তুমি অনুপ্রেরণার অভাবে ভুগছো।
পুনরায় যেভাবে অনুপ্রাণিত হবে:
যখন তুমি ভিন্ন কিছু করতে চাইবে অথবা পুনরায় তোমার অনুপ্রেরণা ফিরে পেতে চাইবে, তখন শুধু জানতে হবে না তুমি আসলে কী চাও না সেইসাথে তোমার স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে তুমি আসলে কী চাও ,কেন চাও। এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারলেই তোমার অনুপ্রেরণা খুঁজে পাবে। কিছুটা সময় নাও ভেবে দেখো তুমি আসলে কী? এই প্রশ্নের উত্তর কোন বিষয়টি তোমার ভবিষ্যৎ কে তোমার সামনে উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরবে। আর তখনই তুমি পুনরায় অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের লক্ষ্যের জন্য লড়াই করে যেতে পারবে।
আরো পড়ুন: অনুপ্রেরণার অভাব?
৪. মূল্যায়ন এর অভাব
মূল্যায়ন হচ্ছে তোমার জীবনে যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা নিয়ে ভাবা বা কাজ করে যাওয়া। অনুপ্রেরণা নষ্টের জন্য মূল্যায়নের অভাব অনেক বড় ভূমিকা রাখে। একই সাথে দুই বা তিনটি জিনিসকে বিষয়কে তুমি মূল্যায়ন করতে পারবে না। যখন তোমার মূল্যায়ন দুই বা তিন দিকে বিভাজিত হবে, তখনই কোন কাজে মনোযোগ সহকারে করতে পারবে না। ঠিক সেসময়ই তুমি চূড়ান্ত অনুপ্রেরণার অভাব বোধ করবে। মূল্যায়ন বিষয়টি কখনোই দুই বা তিন দিকে বিভাজিত হবার নয়।
পুনরায় যেভাবে অনুপ্রাণিত হবে:
মনোযোগের বিষয়টি দুই বা তিন দিকে বিভাজিত না করে যেকোনো একটি দিকে সর্বোচ্চ মূল্যায়ন দিতে হবে। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে একটি কাগজে তোমার মূল্যায়নের দুই বা তিনটি বিষয় দু’টি বা তিনটি কলামে লিখো। এরপর প্রতিটি বিষয় নিয়ে তুমি কী ভাবছো তা নিয়ে ওই কলামের ভিতর লেখো। ততক্ষণ লিখতে থাকো যতক্ষণ পর্যন্ত প্রতিটি বিষয় নিয়ে তোমার ভাবনাগুলো শেষ না হয়।
দেখবে তোমার সর্বোচ্চ মূল্যায়নের বিষয়টি নিয়ে তুমি সবচেয়ে লিখতে পারছো, অন্য বিষয়গুলো হয়তো খুব অল্প কথাতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখান থেকেই তুমি নির্বাচন করতে পারবে তোমার সবচেয়ে বেশি মূল্যায়ন জায়গা কোনটি। সেটি নিয়ে কাজ করো, বাকি বিষয়গুলো মূল্যায়নের জায়গা থেকে এক, দুই, তিন এভাবে নাম্বারিং করো। যখন যে সময়টি যে বিষয়টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ সে দিকে বেশি মনোযোগ দাও। দেখবে তোমার হারানো অনুপ্রেরণা খুঁজে পাবে।
৫. ব্যক্তিস্বাধীনতার অভাব তোমার অনুপ্রেরণা নষ্ট করে:
ব্যক্তিস্বাধীনতার মাধ্যমে আমরা সবাই উন্নত জীবন লাভ করি। আমাদের সকলের মস্তিষ্কে সিদ্ধান্ত নেবার মত একটি অবস্থান রয়েছে। আর সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে সেই অবস্থান নিয়ে আমাদের সকলের ভাবা উচিত। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে আমরা পারিপার্শ্বিক দিকে অনেক বেশি মনোযোগী হই এবং সিদ্ধান্ত নেবার বিষয়টি আমাদের মধ্যে থাকলেও সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আমরা পরাধীন হয়ে যাই।
আমরা যখন সৃজনশীল কাজ করি তখন আমাদের মস্তিষ্ক নানান রকম প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। এ কাজগুলো আমরা কেন করছি, কাদের জন্য করছি, কোন সময় করব এরকম নানান কৌশলে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো যদি আমরা নিজস্ব মস্তিষ্ক থেকে নিজস্ব ভাবনার জায়গা থেকে দিতে পারি একইসাথে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারি কোন কাজগুলো আমাদের জন্য সঠিক তাহলে কিন্তু অনুপ্রেরণার সেইকাজগুলো শেষ করতে পারি। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্তহীনতার পরাধীনতা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা নষ্টের কারণ হিসেবে কাজ করে
পুনরায় যেভাবে অনুপ্রাণিত হবে:
খুঁজে বের করার চেষ্টা কর কতটুকু স্বাধীনতা তোমার রয়েছে লক্ষ্য অর্জন করবার জন্য। হ্যাঁ অবশ্যই যেকোনো লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা অনেক বেশি প্রয়োজন। ব্যক্তি স্বাধীনতা তোমাকে তোমার নির্ধারিত লক্ষ্যের জন্য অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করবার জন্য শক্তি যোগাবে। আর তাই হারানো অনুপ্রেরণা খুঁজে পেতে নিজের লক্ষ্যের জন্য কতটুকু স্বাধীনভাবে তুমি কাজ করতে পারবে সেই উত্তরটি খুঁজে বের করো। একই সাথে নিজের পরাধীন মনটাকে স্বাধীন করে দাও।
৬. চ্যালেঞ্জের অভাবে তোমার অনুপ্রেরণা নষ্ট হয়:
জীবনের যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ থাকাটা অনেক জরুরি। কারণ, যখন আমাদের চ্যালেঞ্জ থাকবে না তখন যে কোন কাজ করার ক্ষেত্রে খুব জলদি আমরা বিরক্ত হয়ে যাবো। ভেবে দেখো যে কাজগুলো করতে তোমাকে খুব বেশি অপরপক্ষের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে না, সেই কাজগুলো কিন্তু তোমাকে খুব বেশিদিন আনন্দ দিতে পারে না। কেননা, প্রতিযোগিতা হচ্ছে এমন একটি বিষয় যেখানে থেকে প্রতিনিয়ত কাজ করবা অনুপ্রেরণা খুঁজে পাই আমরা।
আর তাই যে কাজের মধ্যে চ্যালেঞ্জ নেই ,সেই কাজের মধ্যে কোনো অনুপ্রেরণা নেই। আমাদের প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জের প্রয়োজন, আমাদের দক্ষতাগুলোকে আরও বেশি দক্ষতার সাথে কাজে লাগাবার জন্য। যে কাজগুলোর জন্য কোন ধরনের প্রতিযোগিতা বা চ্যালেঞ্জ কাজ করে না সে কাজগুলো করতে আমরা অনুপ্রেরণা হারিয়ে ফেলি।
পুনরায় যেভাবে অনুপ্রাণিত হবে:
তোমার নির্ধারিত লক্ষ্যটাকে ঘাঁটিয়ে দেখো। নিজের লক্ষ্যের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী খুঁজে বের করো। নিজের কাছে থেকে লক্ষ্যটিকে চ্যালেঞ্জিং করে তোল। কারণ, এই চ্যালেঞ্জে তোমাকে অনুপ্রেরণা যোগাবে তোমার লক্ষ্য অর্জন করার জন্য। যে কাজে কোনো প্রতিযোগিতা নেই বা যে লক্ষ্যটি অর্জন করবার জন্য তীব্র কোন আকাঙ্ক্ষা নেই সেই লক্ষ্য অর্জিত হবার জন্য কোন অনুপ্রেরণাও নেই।
আর তাই অনুপ্রেরণা খুঁজে পেতে হলেও নিজের সাথে নিজেকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড় করাতে হবে। প্রতিনিয়ত ভাবতে হবে কীভাবে তোমার লক্ষ্য তুমি সহজে অর্জন করতে পারবে। এভাবেই এবার হারানো অনুপ্রেরণাকে খুঁজে নাও।
৭. বিষন্নতার জন্য তোমার অনুপ্রেরণার নষ্ট হয়:
যেকোন কাজ শুরু করবার পূর্বে আমাদের মাঝে নানান ধরনের ভাবনা কাজ করে। কাজটি কী আমরা করতে পারবে কিনা বা সময়মতো শেষ করতে পারবে কিনা অথবা আমাকে দিয়ে হবে কিনা। বিশ্বাস করো আমাদের এই ধরনের ভাবনায় আমাদের বিষন্নতার জন্য দায়ী।
যেকোনো ধরনের দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা অনুপ্রেরণা নষ্ট করবে তাই বিষণ্ণতাকে তুমি যত বেশি গুরুত্ব দেবে ঠিক তত বেশি ব্যর্থতাকে ব্যর্থতাকে স্বাগতম জানানোর রাস্তাটি আরো বেশি সহজ হয়ে যাবে। যে কোন বিষয়ে অতিরিক্ত ভাবনা তোমার বিষণ্ণতার জন্য দায়ী, আর এই বিষয়টিই তোমার অনুপ্রেরণা নষ্ট করবে।
পুনরায় যেভাবে অনুপ্রাণিত হবে:
যে কোন পরিবর্তন নিয়ে আসতে চাইলে কঠিন কাজ করতেই হবে। কোনরকম নেতিবাচক ভাবনা না ভেবে সে কাজটি শুরু করে দাও। বলা হয়ে থাকে যখন তুমি কোন কাজ শুরু করবে, তখন তার অর্ধেক করবার সমান। অর্থাৎ তুমি কাজটি না করে যত বেশি অযাচিত ভাবনা নিয়ে ভাববে তত বেশি বিষণ্ণ হবে। বিষণ্ণতাকে গুরুত্ব না দিয়ে এককথায় অতিরিক্ত ভাবনাকে গুরুত্ব না দিয়ে তোমার নির্ধারিত লক্ষ্যের জন্য কাজ শুরু করে দাও। বিশ্বাস রেখো, তোমার এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে অনেক বেশি অনুপ্রেরণা হয়ে তোমার জন্য কাজ করবে।
৮. একাকীত্ব দ্বারা অনুপ্রেরণা নষ্ট হয়
আমরা সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণার অভাবে ভুগি যখন আমরা বেশি একা থাকি। এর মানে এই নয় যে তোমাকে সবসময় বন্ধুবান্ধব নিয়ে থাকতে হবে মূল কথা হচ্ছে একাকীত্ব মানে হচ্ছে সেটা যা তোমাকে অনুপ্রেরণা থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। নিজের হাজার ব্যস্ততার মাঝেও কাজের মাঝেও বন্ধুদের সাথে এবং পরিবারের সাথে খানিকটা সময় কাটাও।
যাতে করে তোমার ভেতরের একাকীত্ব বোধ জাগ্রত না হয় । আমরা সকলেই সবার সাথে থেকেও অনেক একা। তবে যখন তুমি তোমার জীবনের গুরুত্বটাকে বিভাজন করে কিছুটা সময় পরিবার এবং বন্ধুদের জন্য নির্ধারিত রাখবে তখন একাকীত্ব তোমাকে ছুঁতে পারবে না। যে কোন কাজের ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা হারানোর অন্যতম মাধ্যম হল একা হয়ে যাওয়া।
যেভাবে পুনরায় অনুপ্রাণিত হবে:
কাজের মাঝে বিরতি নাও। বন্ধু এবং পরিবারের সাথে সময় কাটাও। তুমি অনেক বেশি অবাক হয়ে যাবে যখন দেখবে বন্ধু এবং পরিবারের সাথে কাটানো সময়ের পর থেকে তোমার অনেক কাজে গতি বেড়ে গেছে। অনেকাংশে সেই সাথে তুমি কাজ করার জন্য অনেক অনুপ্রেরণা পাচ্ছো। তোমার মনকে বোঝাও যে তুমি একা নও, তোমার লোকের পক্ষে ইতিবাচক ভাবে অনুপ্রেরণা যোগায় এমন বন্ধুদের সান্নিধ্য এবং পরিবারের সদস্যদের সান্নিধ্য তোমার হারানো অনুপ্রেরণা ফিরে পেতে সহায়তা করবে।
৯. হুট করে রাগ তোমার অনুপ্রেরণা নষ্ট করে:
অতিরিক্ত পড়াশোনার চাপ অথবা কাজের চাপ যাই হোক না কেন অনেক সময় আমাদের উপর অর্পিত যে কোন ধরনের চাপ সামলাতে গিয়ে হুট করে রেগে যাওয়ার বিষয়টি অনেক কাজ করে। যেকোনো কাজে হুট করে রেগে যাওয়া বিষয়টি অনুপ্রেরণা নষ্টের জন্য দায়ী। কারণ, যখন তুমি অকারণে রেগে যাবে সেই রাগটি কিন্তু স্থায়ী হবে না, কিছু সময় পর যখন তুমি শান্ত হবে বুঝতে পারবে তোমার আচরণ ঠিক হয়নি তখন আপনাআপনিই তোমার আচরণ তোমার অনুপ্রেরণা নষ্ট করবে।
যেভাবে পুনরায় অনুপ্রাণিত হবে:
পড়াশোনা বা কাজের চাপে মাঝে নিজেকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত রাখার কৌশল হচ্ছে পরিমিত ঘুম এবং খাওয়া-দাওয়া। যত কাজ বা ব্যস্ততাই থাকুক না কেন পরিমিত ঘুম তোমার ভাবনা গুলোকে আরো বেশি দক্ষতার সাথে কাজ করতে সহায়তা করে। আর এতে করে হুট করে রেগে যাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। কেননা তখন তুমি অনেক বেশি শান্ত হয়ে যেকোনো চাপ সামলাবার জন্য প্রস্তুত থাকো। তাই ঘুম এবং খাওয়া-দাওয়া কিন্তু তোমার অনুপ্রেরণা খুঁজে পেতে সহায়তা করবে।
১০. পরবর্তী ধাপের জন্য না ভাবা তোমার অনুপ্রেরণা নষ্ট করে:
যেকোনো বড় লক্ষ্য অর্জন করার সময় সেই লক্ষ্যের জন্য কাজের পাশাপাশি অন্যান্য কাজ ঠিক মত করতে পাচ্ছো কিনা তা খেয়াল করো। অর্থাৎ বড় লক্ষ্য অর্জনের জন্য ছোট ছোট কাজগুলোকে গুরুত্ব না দিলে তোমার বড় লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে সাহস এবং একই সাথে অনুপ্রেরণার প্রয়োজন তা পাবে না। কেননা তুমি যদি সঠিকভাবে পরবর্তী ধাপে কোন কাজটি করতে হবে তা বুঝে উঠতে না পারো তাহলে তোমার সেই কাজের প্রতি অনুপ্রেরণা থাকবে না।
Communication Masterclass by Tahsan Khan
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
যেভাবে পুনরায় অনুপ্রাণিত হবে:
তোমার অনুপ্রেরণাকে যদি চলমান রাখতে চাও তাহলে সুনির্দিষ্টভাবে পরবর্তী ধাপে কী কী করবে সেজন্য ছোট ছোট কাজগুলোকে গুরুত্ব দাও। যাতে করে তোমার ভেতরে প্রস্তুতি পাকাপোক্ত হয় বড় লক্ষ্য অর্জন করবার জন্য। যখন তুমি ছোট ছোট কাজ থেকে সফলতা থেকে তখন তুমি আরো বেশি অনুপ্রাণিত হয়ে তোমার বড় লক্ষ্যের জন্য কাজ করতে পারবে।
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
- Microsoft Word Course by Sadman Sadik
- Microsoft Excel Premium Course
- Microsoft PowerPoint Course by Sadman Sadik
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন