বিদেশ ভ্রমণ, বিদেশে চিকিৎসা কিংবা IELTS পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ইত্যাদি নানাবিধ কাজে E-Passport তথা পাসপোর্ট অনিবার্য একটি বিষয়। কিন্তু E-Passport মুখের কথা নয় যে, চাইলেই যখন-তখন বানিয়ে ফেলা যাবে। তার উপর আমাদের দেশে পাসপোর্ট সময়মতো পাওয়া প্রায় অসম্ভব বলা যায়। ফলে E-Passport বানিয়ে রাখতে হবে আগে থেকেই। এই লেখায় আমি ই পাসপোর্ট করার নিয়ম, ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে, আবেদন প্রস্তুতি, আবেদন ফি প্রদান ও ই পাসপোর্ট ডেলিভারি চেক করার নিয়ম, সবই আলোচনা করব যেন ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন নিজেই করতে পারেন।
IELTS Course by Munzereen Shahid
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
পাসপোর্ট কী?
আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র যেমন আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ কাজকর্মের জন্য একটি পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ নথি বা ডকুমেন্ট তেমনি পাসপোর্ট আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কাজকর্মের জন্য একটি পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ নথি বা ডকুমেন্ট। অর্থাৎ, পাসপোর্ট থাকলে আপনি যেকোনো দেশে খুব সহজেই নিজেকে রিপ্রেজেন্ট করতে পারবেন। কেননা সেখানে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রকে মূল্যায়ন করা হবে না। সেখানে পাসপোর্টই আপনার প্রধান পরিচয়।
একটি পাসপোর্টে সাধারণত বাহকের নাম, জন্মের তারিখ ও স্থান, ছবি, স্বাক্ষর, এবং অন্যান্য চিহ্নিতকরণের তথ্য থাকে। যেটা দিয়ে খুব সহজেই সকলকে আইডেন্টিফাই করা যায়। আগে একসময় হাতে লেখা পাসপোর্ট ছিল। যেটা জালিয়াতি করা সবচেয়ে সহজ ছিল। তারপর একসময় বাংলাদেশে মেশিন রিডেবল (এমআরপি) পাসপোর্ট আনা হলো। কিন্তু সেখানেও নিরাপত্তা ইস্যুটা রয়েই গেল। তাছাড়াও, এটার কর্মদক্ষতাও অনেক বেশি নয়। ফলে, বাংলাদেশ ২০২০ সাল থেকে আধুনিক বিশ্বের মতো E-Passport সেবা প্রদান শুরু করেছে। এখন আমরা জানবো ই পাসপোর্ট কী এবং ই পাসপোর্ট কীভাবে কাজ করে।
আরো পড়ুন: Birth Certificate তৈরি বা জন্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়া
E-Passport কী? / ই পাসপোর্ট কী?
হাতে লেখা, মেশিন রিডেবল যুগ শেষ করে বর্তমানে বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট যুগে চলে এসেছে। ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট শব্দটির সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ই পাসপোর্ট। E-Passport খুবই নিরাপদ। কেননা এটি একটি বায়োম্যাট্রিক পাসপোর্ট। E-Passport -এ একটি ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ সংযুক্ত আছে। পাশাপাশি একটি অ্যান্টেনাও আছে। এই চিপের মধ্যেই পাসপোর্টধারীর সকল তথ্য দেয়া থাকবে। এই ই পাসপোর্ট এর চিপে থাকবে যেসব তথ্য:
- ৩ ধরণের ছবি
- ১০ আঙুলের ছাপের তথ্য
- চোখের আইরিশ তথ্য
ফলে যেকোনো দেশের কর্তৃপক্ষ সহজেই ভ্রমণকারীর সম্পর্কে সব তথ্য জানতে পারবে সহজেই! আর, এক্ষেত্রে পাবলিক কি ইনফ্রাস্ট্রাকচার তথা পিকেআই দ্বারা E-Passport -এ বিদ্যমান তথ্য যাচাই করা হয়। এজন্যই এই ই পাসপোর্ট জালিয়াতি করা খুবই কঠিন।
MRP ও E-Passport -এর পার্থক্য
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ও ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই পাসপোর্ট / E-Passport) এর মধ্যে পার্থক্যকে তুলনা করা যেতে পারে অনেকটা চেকবই আর এটিএম কার্ডের মতো। চেকবই যেভাবে স্বাক্ষর যাচাই-বাছাই করে ব্যাংক কর্মকর্তারা অনুমোদন করে টাকা প্রদান করেন। কিন্তু এটিএম কার্ড দিয়ে যে কেউ নিজে থেকেই টাকা তুলতে পারেন। সেক্ষেত্রে অপারেটর প্রয়োজন হয় না। মেশিন নিজে নিজেই যাচাই করতে পারে।
তেমনি এমআরপি পাসপোর্টে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা মেশিন থেকে তথ্য যাচাই বাছাই করে পাসপোর্টে সিল দিয়ে থাকেন। কিন্তু ই-পাসপোর্টধারী যন্ত্রের মাধ্যমে নিজে থেকেই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারেন। কেননা এতে এটিএম কার্ডের মতো চিপ থাকায়, আলাদা করে কারো যাচাই করার প্রয়োজন পরে না।
IELTS LIVE Batch
এই কোর্সটি আপনাকে কীভাবে সাহায্য করবে?
ই পাসপোর্টের সুবিধা কী?
হাতে লেখা পাসপোর্ট, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ও ই পাসপোর্ট – এ তিনটির মধ্যে ই পাসপোর্ট (E-Passport) সবচেয়ে সুবিধাজনক। ই পাসপোর্টের সুবিধা হলো:
- খুব দ্রুত ও সহজে ভ্রমণকারীরা যাতায়াত করতে পারবেন।
- এখানে ৩৮টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকায় এ ধরণের পাসপোর্ট জাল করা খুবই কঠিন।
- ই-গেট ব্যবহার করে তারা যাতায়াত করবেন। ফলে বিভিন্ন বিমানবন্দরে তাদের ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না। মুহূর্তেই তাদের ইমিগ্রেশন হয়ে যাবে।
- একজন যখনই ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করে যাতায়াত করবেন, সঙ্গে সঙ্গে সেটি কেন্দ্রীয় তথ্যাগারের (পাবলিক কি ডিরেক্টরি – পিকেডি) সঙ্গে যোগাযোগ করে তার সম্পর্কে তথ্য জানতে পারবে। ফলে তথ্যের ভ্যালিডেশনও সহজেই হয়ে যাবে।
- ই-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট রেখে দাঁড়ালে ক্যামেরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি তুলে নেবে। পাশাপাশি ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাইয়ের ব্যবস্থাও থাকবে। সব ঠিকঠাক থাকলে ভ্রমণকারী ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যেতে পারবেন।
- কোনো গরমিল থাকলে বা যাচাইয়ে সমস্যা হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লালবাতি জ্বলে উঠবে।
- কারো বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলে, সেটিও সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে এবং তাকে আটকানো যাবে।
- ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও) এই ‘পাবলিক কি ডিরেক্টরি’ পরিচালনা করে। ফলে ইন্টারপোলসহ বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য যাচাই করতে পারে কারও সাথে যোগাযোগ না করেই।
ফলে, ই পাসপোর্টের সুবিধা কী জানার পরে বলাই যাচ্ছে, এই পাসপোর্ট আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ক্ষেত্রে অনেক বেশি সুবিধাজনক ও নিরাপদ!
ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?
ই পাসপোর্ট আবেদন করতে হলে আগে জানতে হবে যে, ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে।
- অনলাইনে আবেদনের সারসংক্ষেপ বা সামারি
- আবেদনের কপি
- জাতীয় পরিচয়পত্র / অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- ঠিকানার প্রমাণপত্র / ইউটিলিটি বিলের কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- পূর্ববর্তী পাসপোর্টের ফটোকপি ও অরিজিনাল পাসপোর্ট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি (শিশুদের ক্ষেত্রে আবশ্যিক)
- পেশাগত সনদের ফটোকপি বা চাকরির আইডি কার্ড (পেশাজীবির ক্ষেত্রে- যেমন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, হিসাবরক্ষক, আইনজীবি)
- নাগরিক সনদ/ চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
আশা করছি এখন এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই যে, ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে।
ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে?
যারা E-Passport করতে চান তাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে? ২০২৩ সালে ই পাসপোর্ট আবেদন ফি নিম্নরূপ:
বছর | পৃষ্ঠা | রেগুলার ডেলিভারি (১৫-২১ দিন) | এক্সপ্রেস ডেলিভারি (৫-৭ দিন) | সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি (২ দিন) |
---|---|---|---|---|
৫ বছর | ৪৮ | ৪,০২৫ | ৬,৩২৫ | ৮,৬২৫ |
৬৪ | ৬,৩২৫ | ৮,৬২৫ | ১২,০৭৫ | |
১০ বছর | ৪৮ | ৬,৩২৫ | ৮,৬২৫ | ১০,৩৫০ |
৬৪ | ৮,০৫০ | ১০,৩৫০ | ১৩,৮০০ |
উপরে প্রদত্ত সময় মূলত বায়োমেট্রিক তথ্য দেয়ার পর থেকে হিসেব করা হয়। ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে, সেটা তো জানা হলো; এখন চলুন জেনে নিই যে, ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন কীভাবে করবেন।
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম এবং ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন
ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
ধাপ ১: আঞ্চলিক অফিস ও থানা নির্বাচন
ভিজিট করুন এই লিঙ্কটি: E-Passport Application. আপনি নিচের মত একটি পেইজ দেখবেন। এখানে আপনার জেলা ও পুলিশ থানার নাম সিলেক্ট করুন।
এবার আপনাকে আপনার ইমেইল ভেরিফিকেশন করতে হবে। আপনার ইমেইল অ্যাড্রেসটি লিখুন এবং নিচের রোবট ভেরিফিকেশন টিক দিয়ে Continue বাটন ক্লিক করুন।
ধাপ ২: ইমেইল ভেরিফিকেশন
এখন পাসপোর্ট ওয়েবসাইট থেকে আপনার ইমেইলে একটি ভেরিফিকেশন লিংক পাঠাবে। আপনাকে সেই লিংকে ক্লিক করে আপনার ইমেইলটি ভেরিফাই করতে হবে।
ধাপ ৩: ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ
ইমেইল ভেরিফিকেশনের পর, পুনরায় ওয়েবসাইটে লগইন করুন। এবার “Apply for a New Passport” বাটনে ক্লিক করুন। Passport Type হিসেবে সাধারণ পাসপোর্ট হলে “Ordinary” এবং সরকারি আদেশে বা NOC এর মাধ্যমে পাসপোর্ট “Official” সিলেক্ট করুন।
এখন “Save and continue” তে ক্লিক করুন।
তারপর নিছের পেইজ আসবে। এখানে আপনার সকল ব্যক্তিগত তথ্য ইংরেজিতে সঠিকভাবে ও ছবিতে দেখানো উপায়ে পূরণ করুন।
এখানে আপনার নাম, তথ্য ও জাতীয় পরিচয়পত্র বা নম্বর দিন এবং Save and Continue তে ক্লিক করুন।
ই পাসপোর্ট করতে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন কোনটি প্রয়োজন?
জাতীয় পরিচয়পত্র নাকি জন্ম নিবন্ধন, এটা নিয়ে অনেকেই চিন্তায় থাকে। নিচে বয়স অনুযায়ী একটি ধারণা দেয়া হলো:
- বয়স ১৮ বছরের কম হয়ে থাকলে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্টের আবেদন করতে পারবেন।
- ১৮-২০ বছরের মধ্যে বয়স হলে, আপনি জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্ম নিবন্ধন (BRC) উভয়টির যে কোন একটি দিয়ে আবেদন করতে পারবেন।
- যদি আপনার বয়স ২০ বছরের বেশি হয়, আপনাকে অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর দিতে হবে।
এক্ষেত্রে, আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মাট কার্ড না পেলে, জাতীয় পরিচয়পত্র অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারেন। আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। জন্ম নিবন্ধন যেন অনলাইন ভার্সন হয়; নতুবা কাজ হবে না।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
২৪ ঘণ্টায় কোরআন শিখি
ID Documents: ID Documents ধাপে আপনার আগের পাসপোর্ট আছে কিনা, অন্য কোন দেশের পাসপোর্ট আছে কিনা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধনের তথ্য দিতে হবে।
আপনার পূর্বের কোন পাসপোর্ট থাকলে “Yes” দিন আর না থাকলে “No, I don’t have any previous/ handwritten passport.”
পাসপোর্ট সংশোধন বা রিনিউ আবেদন: যারা পাসপোর্ট সংশোধন বা রিনিউ আবেদন করবেন তারা এক্ষেত্রে অবশ্যই “Yes” দিয়ে আগের পাসপোর্টের তথ্য দিবেন।
Address: আপনার Present Address ও Permanent Address সঠিকভাবে লিখুন। যদি বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা একই হয়, নিচের বক্সে টিক দিন।
Emergency Contact: জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য আপনার পরিবারের বাবা, মা, ভাই বা অন্য কারো নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দিন।
Passport Option: এবার আপনার পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা ও মেয়াদ সিলেক্ট করুন।
Delivery Option: Passport Delivery সাধারণ না জরুরি তা সিলেক্ট করুন। সাধারণ হলে “Ordinary” এবং জরুরি হলে “Express” সিলেক্ট করুন। পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে তা উপরে ইতোমধ্যে আলোচনা করা হয়েছে।
সবশেষে আপনার সব তথ্য পূনরায় যাচাই করে আবেদন জমা দিতে “Submit” বাটনে ক্লিক করুন।
আরো পড়ুন: ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম ও ভিডিও তৈরি করার গাইডলাইন
ই পাসপোর্ট ফি প্রদান ও আবেদন প্রিন্ট
আপনার আবেদন করা হলে প্রিন্ট করার জন্য আপনি ২টি পৃষ্ঠা পাবেন। সেগুলো হলো:
- Application Summary
- Online Registration Form
এগুলো আপনি প্রিন্ট করে নিতে পারেন বা পিডিএফ ফাইল হিসেবে আপনার কম্পিউটারে সেইভ করতে পারেন। Application summary-টি ১ পৃষ্ঠা ও Online Registration form-টি উভয় পৃষ্ঠায় প্রিন্ট করবেন। আপনার ই পাসপোর্টের ফি বিকাশের মাধ্যমে ঘরে বসেই কীভাবে প্রদান করবেন তা নিচে আলোচনা করা হলো।
অনলাইনে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম
অনলাইনে ই-পাসপোর্টের টাকা জমা দেয়ার জন্য “A Challan” ওয়েবসাইট থেকে পাসপোর্ট ফি সিলেক্ট করুন। এরপর পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা, মেয়াদ ও ডেলিভারীর ধরণ বাছাই করুন। তারপর, ব্যক্তির পরিচিতি নম্বর, নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর লিখুন। সবশেষে সুবিধামত ব্যাংক বাছাই করে পেমেন্ট করুন এবং চালানের প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করুন।
ধাপ ১: অনলাইনে এ চালান করার জন্য Automated Challan System Bangladesh (A Challan) ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন এখান থেকে।
ধাপ ২: পাসপোর্ট অপশন থেকে পাসপোর্ট ফি তে ক্লিক করুন। আপনার সামনে নিচের মত একটি ওয়েবপেইজ আসবে। এখান থেকে প্রথমে পাসপোর্টের পৃষ্ঠার সংখ্যা বাছাই করুন। তারপর পাসপোর্টের মেয়াদ ও ডেলিভারির ধরণ বাছাই করুন। স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকার পরিমাণ দেখাবে। নিচ থেকে OK বাটন ক্লিক করুন।
ধাপ ৩: এবার আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন নম্বর, সনাক্তকরণ নম্বর, নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর লিখতে হবে। ইমেইল চাইলে দিতেও পারেন না আবার চাইলে নাও দিতে পারেন। নাম লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই পাসপোর্ট আবেদনের সাথে মিল রেখে নাম লিখতে হবে। নাহলে নামের ভুলের কারণে পুরো প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়ে যাবে। কেননা, এ চালানে ও পাসপোর্ট আবেদনে নামের বানানে পার্থক্য থাকলে চালান গৃহীত হবে না।
বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে সোনালী ব্যাংক সিলেক্ট করুন। সোনালী ব্যাংকের অনলাইন একাউন্ট, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড থেকেও পেমেন্ট করতে পারবেন।
এখন Save বাটনে ক্লিক করুন। এখন আপনাকে সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়েতে নেয়া হবে।
ধাপ ৪: এখান থেকে Account অথবা Visa/ Master Card/ Amex Card অথবা Mobile Banking অপশন সিলেক্ট করে পেমেন্ট করুন।
বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেয়ার নিয়ম
নগদ রকেট ও বিকাশ বহুল ব্যবহৃত মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি জমা দেয়ার জন্য, ৪ নং ধাপ থেকে সোনালী ব্যাংক সিলেক্ট করবেন।
এখন Save বাটনে ক্লিক করুন। আপনাকে সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়েতে নেয়া হবে। এখানে Mobile Banking বাটনে ক্লিক করে পেমেন্ট করুন।
আপনার সুবিধামত যে কোন একটি সেবা বাছাই করুন। এক্ষেত্রে আমি বিকাশ সিলেক্ট করলাম।
এখানে, Pay with bKash বাটনে ক্লিক করুন। বিকাশের পেমেন্ট অপশন আসলে, আপনার মোবাইল নম্বর দিন। তারপর আপনার বিকাশ মোবাইল নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। ভ্যারিফিকেশন কোড ও আপনার বিকাশের পিন দিয়ে পেমেন্ট করুন।
মোবাইলের মাধ্যমে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম
আপনি চাইলে আপনার মোবাইল থেকেও ই পাসপোর্টের টাকা জমা দিতে পারেন। এজন্য সবচেয়ে ভালো হয় আপনার মোবাইলে বাংলাদেশ অর্থ মন্ত্রণালয়ের A Challan অ্যাপ ইনস্টল করে নেওয়া। উপরে দেখানো ধাপ গুলোর মতই এ চালান অ্যাপ থেকে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে পারবেন।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
সহজে Spoken আরবি
ই পাসপোর্ট ডেলিভারি চেক
এখন আলোচনা করব, ই পাসপোর্ট ডেলিভারি চেক করার উপায়। তার আগে জেনে নিই, কী কী লাগবে।
ই পাসপোর্ট চেক করতে যা লাগবে
ই পাসপোর্ট ডেলিভারি চেক করার জন্য আপনার ইন্টারনেট সংযোগ সহ একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার লাগবে। এছাড়া আপনার প্রয়োজন হবে,
- Online Registration ID (OID) অথবা Application ID
- পাসপোর্ট আবেদনে দেয়া জন্ম তারিখ
ই পাসপোর্ট চেক
ই পাসপোর্ট চেক করার জন্য আপনার Google Chrome ব্রাউজার থেকে ভিজিট করুন- www.epassport.gov.bd সাইটে। এরপর Check Status মেন্যুতে ক্লিক করে, Online Registration ID অথবা Application ID এবং জন্ম তারিখ দিন। নিচের I am human লেখার পাশে টিক দিয়ে Check বাটনে ক্লিক করে পাসপোর্ট চেক করতে পারবেন।
পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে পাসপোর্ট চেকিং করার কোন সুযোগ রাখা হয়নি। তবে, BMET রেজিস্ট্রেশন করা থাকলে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে পাসপোর্ট চেক করতে পারবেন। তাছাড়া, আপনি পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট চেক করতে পারবেন।
শেষ কথা
আশা করছি উপরের ধাপগুলো অনুসরণ করে সঠিকভাবে আপনার কাঙ্ক্ষিত ই পাসপোর্ট আবেদন করতে সক্ষম হয়েছেন। এরপর রেগুলার পাসপোর্ট হলে মাসখানেকের মধ্যে এবং এক্সপ্রেস পাসপোর্ট হলে সপ্তাহখানেকের মধ্যে ছবি তোলা, বায়োমেট্রিক তথ্য দেয়া ইত্যাদি কাজের জন্য আপনাকে ডাকা হবে। সময়মতো গিয়ে ওসব তথ্য প্রদান করে আসতে হবে।
এরপরপরই আপনার পুলিশ ভ্যারিফিকেশন হবে। সেক্ষেত্রে পুলিশ আপনার স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানায় গিয়ে আপনার সম্মন্ধে তথ্য সংগ্রহ এবং আপনার তথ্যের সত্যতা যাচাই করবে। সবকিছু হয়ে গেলে, এখন শুধু অপেক্ষার পালা। ওয়েবসাইট থেকে স্ট্যাটাস চেক করে সময়মত পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সংগ্রহ করুন আপনার আপনার বহুল আকাঙ্ক্ষিত ই পাসপোর্ট।
IELTS-এর ফ্রি ক্লাসে জয়েন করতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে: Book Your Free Class @ 10MS English Centre, Uttara
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- ঘরে বসে Spoken English Course (by Munzereen Shahid)
- Microsoft Word Course (by Sadman Sadik)
- Microsoft Excel Course (by Abtahi Iptesam)
- Microsoft PowerPoint Course (by Sadman Sadik)
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle Course
- Web Design Course (by Fahim Murshed)
- Communication Masterclass Course (by Tahsan Khan)
- Facebook Marketing Course (by Ayman Sadiq and Sadman Sadik)
- Data Entry দিয়ে Freelancing Course (by Joyeta Banerjee)
- SEO Course for Beginners (by Md Faruk Khan)
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন