পুরোটা পড়ার সময় নেই ? ব্লগটি একবার শুনে নাও !
আমাদের প্রজন্মের একটা বড় অসুখ হচ্ছে ‘ভাল্লাগে না’। আমি নিজেই বাসায় এই শব্দটা এতবার উচ্চারণ করি যে, মা তো রীতিমত বলেই দিয়েছেন যে আমি যেন প্রতিদিন কয়বার এই শব্দটা উচ্চারণ করছি তার একটা হিসেব রাখি। তো সেই হিসেব রাখার বদলে আমি অন্য একটা কাজ করলাম, ইন্টারনেট ঘেটেঘুটে বের করে ফেললাম এই ‘ভাল্লাগে না’ রোগের ২০টি নির্ভেজাল ঔষধ।
১। খাতায় লিখে ফেলুন তিনটা ইতিবাচক বিষয়
আজ আপনার সাথে হয়েছে, আপনি দেখেছেন কিংবা আপনি নিজেই করেছেন এমন তিনটি ইতিবাচক জিনিস খাতায় লিখে ফেলুন। তা যেকোনো কিছু হতে পারে। হয়ত আপনি কোনো অসহায়কে কিছু টাকা দান করেছেন কিংবা বন্ধুকে তার সমস্যা সমাধানে সাহায্য করেছেন। যেকোনো কিছু। এই তিনটা বিষয় লিখতে গিয়ে আপনার ঠোঁটের কোণায় যে হাসিটা ফুটে উঠেছে, তা সারাদিন ধরে রাখার চেষ্টা করুন।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
Personal Fitness
২। নিজের টাকা খরচ করে একটু সুখ কিনে ফেলুন
নিজের যেকোনো পছন্দের জিনিষ কিনে ফেলুন। তা হতে পারে কোনো বই, কোনো এক্সেসরিজ, খাবার জিনিষ কিংবা কিছু সুন্দর ফুল। যাই কিনুন না কেন, তা যেন হয় নিজের টাকা খরচ করে। এতে করে নিজের ভেতর একটু স্বস্তি পাওয়া যায়।
৩। পুরোনো কোনো বন্ধুকে ফোন দিন/টেক্সট করুন
আমাদের সবার জীবনেই এমন অনেক বন্ধু বান্ধব রয়েছে যাদের সাথে কিনা অনেকদিন ধরে যোগাযোগ নেই। এমন কোনো বন্ধুর নম্বরটা মনে আছে কি? কিংবা ফেসবুক আইডি? যদি মনে থাকে তবে নিয়েই দেখুন না তার একটু খোঁজ খবর! দেখুন নিজেকে কত হালকা লাগে! এই কাজটা করলে একটু সময়ের জন্য হলেও দেখবেন রেগুলার রুটিনটা থেকে একটু বিরতি নেয়া যায়।
আরো পড়ুন: ফেসবুক মার্কেটিং কী? জেনে নিন ফেইসবুক মার্কেটিং -এর আদ্যোপান্ত
৪। কাউকে ধন্যবাদ দিন
অনেক আগে কারো থেকে কোন সাহায্য পেয়েছেন? ব্যস্ততার কারণে ঠিকমত ধন্যবাদটাও দিতে পারেননি? দেরী না করে এখনই তাকে সেই কাজের কথা মনে করিয়ে ধন্যবাদ দিন। এতে করে সে যে পরিমাণ খুশি হবে তা চিন্তা করেই আপনার সারাটাদিন ভাল যাবে।
৫। যা বলার সোজাসুজি বলুন
“ভাঁইয়াআআআ চ্যানেল চেঞ্জ করোওওও… আমাআআর ভাল্লাগতেসে না” এভাবে না বলে সোজাসুজি বলে দিন “ভাইয়া চ্যানেলটা চেঞ্জ কর” ঘ্যানর ঘ্যানর করার স্বভাব যতদিন বদলাতে না পারবেন, ততদিন ‘ভাল্লাগে না’ আপনাকে ছাড়বে না।
৬। নতুন কিছু শিখুন
আজকাল ইউটিউবে স্লাইড মেকিং থেকে শুরু করে রান্না কিংবা অরিগ্যমি পর্যন্ত নতুন অনেক কিছুই শেখা যায় তাই অলস বসে না থেকে নতুন কিছু শিখে ফেলুন, নিজেকে বের করে নিয়ে আসুন ছকে বাঁধা জীবন থেকে। এতে করে স্কিল ডেভেলপ হবে আর আপনি ‘ভাল্লাগে না’ বলার সুযোগও পাবেন না।
৭। নতুন কিছু পড়ুন/দেখুন
অবসরে বসে না থেকে নতুন কিছু পড়ে ফেলুন কিংবা দেখে ফেলুন। তা যে কোনো বড় উপন্যাস কিংবা মুভি হতে হবে এমনটা নয়। হতে পারে তা কোনো ছোট্ট ব্লগ কিংবা কোনো শর্ট ফিল্ম।
৮। কেন ভাল্লাগেনা তা দু’এক জনকে খুলে বলুন
ভাল না লাগার কারণ নিজের মাঝে চেপে না রেখে কাউকে খুলে বলুন। এতে করে মন হালকা হবে, সমাধান বেরিয়ে আসবে এবং তখন ভাল না লাগার কারণটাকে আর বড় কিছু মনে হবে না।
৯। ছোট ছোট বিষয়ে খুশি হতে শিখুন
বাইরে বাতাস বইছে? খুশি হোন। আজকে একটু বেশি ঘুম হয়েছে? খুশি হোন। এভাবে ছোট ছোট বিষয়গুলোতে বেশি করে খুশি হোন তাহলে আর বিরক্তির জায়গাই থাকবে না। এমনকি বিরক্তিকর জিনিষেও খুশি হোন। ছোটবোনকে কিছু আনতে দিয়েছিলেন আর সে ১৫ মিনিট দেরী করেছে? খুশি হোন যে সে এনে দিয়েছে!
১০। নিজের প্রশংসা করে কিছু লিখুন
‘ভাল্লাগে না’ রোগের উৎপত্তি হয় মূলত কোনো কারণে নিজের উপর বিরক্তি থেকে। তাই আপনার ভাল গুনগুলোকে একটা কাগজে লিখে ফেলুন। নিজেকে আর বিরক্ত লাগবে না।
১১। নিজেকে ক্ষমা করতে শিখুন
কোনো একটা ভুল করে ফেলেছেন যার জন্য নিজেকে ক্ষমা করতে পারছেন না? বারবার তা মনে পড়ছে আর নিজেকে তুচ্ছ মনে হচ্ছে? বাদ দিন না! যা হবার হয়ে গেছে, পরবর্তীতে যেন আর না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
১২। আচ্ছা, ব্যাপার না
Keep you negativeness away! কোনো বিরক্তিকর কিছু ঘটেছে? অন স্পট বলে দিন “যাক, ব্যাপার না!”
অতিরিক্ত চিন্তা বাদ দিয়ে সবকিছুকে সহজভাবে নিতে শিখুন।
১৩। আত্মবিশ্বাসী হোন
অনেক তো নেতিয়ে থাকলেন আর কত? এবার সোজা হয়ে দাঁড়ান, নিজেকে বোঝান যে আপনিও পারেন এবং কাজে লেগে পড়ুন।
১৪। কারো উপকার করুন
একটা মানুষকে সাহায্য করুন। তা হতে পারে মা কে বাসার কাজে সাহায্য করা কিংবা পাশের বাসার মানুষটার ভারী ব্যাগটা এগিয়ে দেয়া, যেকোনো কিছু। অন্যকে সাহায্য করলে সেই মানুষটা যেমন উপকৃত হয়, তেমনি আপনিও মানসিকভাবে শান্তি পান।
১৫। অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করা বন্ধ করুন
ক্যারিয়ার বাদে বাকি সবকিছুতে অল্পেই সন্তুষ্ট হতে শিখুন। “ওর এটা আছে আমার নেই কেন?” এভাবে চিন্তা করলে সুখ সেই সোনার হরিণই থেকে যাবে।
১৬। নিজের পছন্দের রঙের জিনিষ বেশি করে ব্যবহার করার চেষ্টা করুন
যদিও এই জিনিষটা সবসময় করা সম্ভব হয় না, তারপরও যতটুকু সম্ভব, নিজের পছন্দের রঙের জিনিসপত্র ব্যবহারের চেষ্টা করুন। নিজের কাছেই ভাল লাগবে।
১৭। বাইরে থেকে ঘুরে আসুন
অনেক সময় একঘেয়েমিতা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাই একঘেয়েমিতা দূর করার জন্য বাইরে থেকে ঘুরে আসুন, একটু হেঁটে আসুন।
১৮। ঘুমানোর আগে মন ভাল করে নিন
মন খারাপ করে ঘুমাতে গেলে তার প্রভাব সকালেও থাকবে আর দিনটাও খারাপ যাবে। তাই ঘুমানোর আগেই মন খারাপের কারণ বের করে তার সমাধান করে ফেলুন।
১৯। অতিরিক্ত চিন্তা করা বন্ধ করুন
অতিরিক্ত চিন্তায় কখনো কোনো লাভ হয় না বরং তা একটা সাধারণ বিষয়কে জটিল করে ফেলে। তাই অতিরিক্ত চিন্তা বাদ দিয়ে সবকিছুকে সহজভাবে নিতে শিখুন।
২০। মনের কথা শুনুন
আমরা অনেক সময় মনে বিরুদ্ধে অনেক কাজ করে থাকি যার জন্য দেখা যায় সারাদিন মন কেমন খুঁতখুঁত করতে থাকে তাই অনেক বড় সমস্যার সম্ভাবনা না থাকলে নিজের মনকে প্রায়োরিটি লিস্টের একদম উপরে রাখুন।
“The Pursuit of Happyness” মুভিটাতে একটা উক্তি রয়েছে, “The world is your oyster. It’s up to you to find your pearls” আপনার ‘ভাল্লাগে না’ রোগের সমাধান কিন্তু আপনার আশেপাশেই রয়েছে, তাকে বের করার দায়িত্বটা পুরোপুরি আপনার!
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Study Smart Course by Seeam Shahid Noor
আপনার কমেন্ট লিখুন