১. গণিত কাকে বলে?
● গণিতের সাথে আমরা সকলে পরিচিত হলেও এর তাত্ত্বিক সংজ্ঞা আমরা অনেকেই জানি না। গণিত শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো ‘‘Mathematics’’, যা গ্রিক শব্দ ‘Mathein’ অথবা ‘Mathemata’ থেকে উদ্ভূত। গ্রিক ‘Mathein’ শব্দের অর্থ ‘শিক্ষা করা’ এবং ‘Mathemata’ শব্দের অর্থ ‘যেসব জিনিস শিক্ষা করা যায়।’ আর বাংলা ‘গণিত’ শব্দটি এসেছে ‘গণনা’, শব্দ হতে। গণনা, পরিমাণ, পরিমাপ, গঠন, বৈশিষ্ট্য/ধর্ম, সমাবেশ, স্থান ইত্যাদির মধ্যকার সম্পর্ক অনুসন্ধান, তুলনাকরণ প্রভৃতি উদ্দেশ্যে গভীর পর্যবেক্ষণ, নিরীক্ষণ ও চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান, সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহারের মাধ্যমে ঐ জ্ঞানের প্রকাশ পদ্ধতি এবং মানবকল্যাণ ও বাস্তব সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ঐ জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগকে সামষ্টিকভাবে গণিত বলে।
২. ব্যাবিলনীয়রা কী ধরনের গণিত চর্চা করত?
● ব্যাবিলনীয়দের গণিতচর্চার ইতিহাস প্রায় ৫ হাজার বছর পুরনো। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটি সত্য। ব্যাবিলনীয়া ছিল দক্ষিণ মেসোপটেমিয়ার একটি রাজ্য, যা আধুনিক ইরাকের অন্তর্গত। ব্যাবিলনীয় গণিত সম্পর্কে আমরা জানতে পারি এই সভ্যতার নিদর্শনবাহী কাদামাটির চাঙড় থেকে। সবচেয়ে প্রাচীন চাঙড়গুলো খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দের বলে ধারণা করা হয়। তারা অর্থ ও পণ্যদ্রব্য আদানপ্রদানের জন্য পাটিগণিত ও সরল বীজগণিত ব্যবহার করত। বর্তমানে বৃত্তকে যে ৩৬০টি ভাগে ভাগ করা এবং প্রতি ডিগ্রি ও মিনিটকে আরো ৬০ ভাগে ভাগ করার রীতি এসেছে ব্যাবিলনীয় জ্যোতির্বিজ্ঞান থেকে। স্থানিক মানের উদ্ভাবনও এ সভ্যতায় হয়েছে। অর্থাৎ, তাদের গণিত অনেক সমৃদ্ধশীল ছিল।
৩. প্রাচীন মিশরীয়দের গণিত কেমন ছিল?
● মিশরীয়রা তাদের স্তম্ভগুলোতে হায়ারোগ্লিফের মাধ্যমে সংখ্যা অঙ্কিত করেছিল। কিন্তু মিশরীয় গণিতের আসল নিদর্শন হলো আনুমানিক ১৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দুটি প্যাপিরাস। এগুলোতে পাটিগণিত ও জ্যামিতিক নানা সমস্যা আছে। মিশরীয়দের সংখ্যা ব্যবস্থা ছিল ১০ ভিত্তিক। তারা ১০ এর বিভিন্ন ঘাতের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হায়ারোগ্লিফ প্রতীক ব্যবহার করত।
৪. সংখ্যা এবং অঙ্কের মধ্যে পার্থক্য কী?
● সংখ্যা হলো পরিমাপের একটি বিমূর্ত ধারণা। আর অঙ্ক হলো সংখ্যা প্রকাশের প্রতীক। যেমন− ৪৯৫ একটি সংখ্যা এবং এটি লিখতে ব্যবহৃত ৪, ৯, ৫ প্রতীকগুলো হলো অঙ্ক।
৫. বাস্তব সংখ্যা ও স্বাভাবিক সংখ্যার মধ্যে পার্থক্য কী?
● ধনাত্মক, ঋণাত্মক এবং শূন্য-এই সকল সংখ্যা বাস্তবসংখ্যা (Real Number)। অপরদিকে শুধু ধনাত্মক সংখ্যাকেই বলা হয় স্বাভাবিক সংখ্যা (Natural Number)।
৬. মূলদ সংখ্যা এবং অমূলদ সংখ্যা বলতে কী বোঝায়?
● যে বাস্তব সংখ্যাকে দুটি পূর্ণ সংখ্যার ভাগফল হিসেবে প্রকাশ করা যায় তাকে মূলদ সংখ্যা বলে এবং প্রকাশ করা না গেলে তাকে অমূলদ সংখ্যা বলে। অমূলদ সংখ্যাকে দশমিকে প্রকাশ করার চেষ্টা করলে দশমিকের পর যত ঘর অবধিই দেখা হবে, কোনো পৌনঃপুনিকতা দেখা যাবে না। যেমন− ৩ কে ৭ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল হবে ০.৪২৮৫৭১৪৪৪৪….. এখানে ৪ এর পৌনঃপুনিক রয়েছে। এটি মূলদ সংখ্যা কিন্তু অমূলদ সংখ্যার ক্ষেত্রে বারবার একই রূপের আবর্তন হবে না।
৭. দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি কি? এর প্রচলন কোথায় হয়েছিল?
● দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি হলো ১০। এতে ০ এবং ১ থেকে ৯ পর্যন্ত প্রতীকগুলো ব্যবহার করা হয়। খ্রিস্টীয় প্রথম থেকে ষষ্ঠ শতকের মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশে এর প্রচলন ঘটে। ভারতীয়দের থেকে শিখে ইউরোপে এ পদ্ধতির প্রচলন ঘটায় আরবরা।
৮. বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি কী? এর জনক কে?
● বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি হলো ২ এবং ০, ১ প্রতীক দুটি এতে ব্যবহার করা হয়। প্রাচীন মিশর, চীন ও ভারতে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির প্রচলন থাকলেও আধুনিক বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির জনক বলা হয় লিবনিজকে।
আরও পড়ুন:
৯. কম্পিউটারে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় কেন?
● কম্পিউটার কাজ করে ইলেক্ট্রনিক সার্কিটের মাধ্যমে। সার্কিট দুটি অবস্থায় থাকতে পারে− বন্ধ ও চালু। এ অবস্থা দুটিকে যথাক্রমে ০ ও ১ ধরে বাইনারি কোডের মাধ্যমে কম্পিউটারকে কোনো নির্দেশ দেয়া হলে কম্পিউটার তা সহজেই বুঝতে পারে। তাই কম্পিউটারে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া মোর্স কোড, বার কোড ইত্যাদিও বাইনারির মাধ্যমে লেখা হয়।
১০. অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি কী? এর ব্যবহার হয় কোথায়?
● অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি হলো ৮-ভিত্তিক যাতে ০−৭ অঙ্কগুলো ব্যবহৃত হয়। ক্যালিফোর্নিয়া ও মেক্সিকোর কিছু অঞ্চলে এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। তারা গণনার কাজে হাতের আঙুলের পরিবর্তে আঙুলের মাঝের ফাঁকা স্থান ব্যবহার করে।
মেডিকেল এডমিশন কোর্স ২০২২
কোর্সটিতে যা যা থাকছে
১১. কম্পিউটারে অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় কীভাবে?
● অক্টালের একটি অঙ্ককে তিনটি বাইনারি বিট দ্বারা প্রকাশ করা যায়। যেমন− অক্টালের ৭ হলো বাইনারি ১১১. বাইনারি সংখ্যা মেশিনের জন্য বোঝা সহজ হলেও মানুষের জন্য তা কষ্টসাধ্য। অক্টালকে সহজে বাইনারিতে রূপান্তর করা যায় বলে প্রোগ্রামাররা অক্টালের মাধ্যমে নির্দেশ প্রদান করেন, কম্পিউটারে অক্টাল কোডকে বাইনারিতে রূপান্তর করে নির্দেশ সম্পাদন করে।
১২. হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি কী?
● ১৬-ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতিকে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। এতে ০-৯ অংক দশটির সাথে প্রতীক হিসেবে A, B, C, D, E, F ব্যবহার করা হয়। A এর দশ ভিত্তিক মান ১০ এবং এভাবে F এর মান ১৫।
১৩. টোনাল সিস্টেম কী?
● ১৮৫৯ সালে জন ডব্লিউ নিস্ট্রম ১৬-ভিত্তিক একটি পদ্ধতি প্রস্তাব করেন। এতে তিনি পরিমাপের নতুন পদ্ধতিসহ ক্যালেন্ডারে ১৬ মাস থাকা এবং ঘড়িকে ১৬টি প্রধান ভাগে ভাগ করার কথা বলেন। তার প্রস্তাবিত এ পদ্ধতিটিকে টোনাল সিস্টেম বলা হয়। এ পদ্ধতিটি চালু হলে কেমন হয়?
১৪. প্রোগ্রামিং-এর ক্ষেত্রে হেক্সাডেসিমেল পদ্ধতি অধিক সুবিধাজনক কেন?
● বাইনারি পদ্ধতির এক বাইট বা ৮ বিট হেক্সাডেসিমেলে দুটি অঙ্ক দ্বারা প্রকাশ করা যায়। যেমন− দশমিক পদ্ধতির ২৫৫-কে বাইনারিতে লিখতে প্রয়োজন ৮টি ডিজিট (১১১১১১১১), যা হেক্সাডেসিমালে দুই ডিজিটে প্রকাশযোগ্য (EE)। অর্থাৎ, বাইনারির চার ৪টি ডিজিট প্রকাশের জন্য একটি হেক্সাডেসিমেল ডিজিট প্রয়োজন হয়। হেক্সাডেসিমেল থেকে বাইনারি রূপান্তরও সহজ। তাই কম্পিউটার প্রোগ্রামারদের কাছে এটি অধিক প্রিয়।
HSC 2024 ক্র্যাশ কোর্স - প্রথম পত্র [বিজ্ঞান বিভাগ]
কোর্সটিতে শিক্ষার্থীরা পাবে:
১৫. দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি দৈনন্দিন জীবনে অধিক ব্যবহার করা হয় কেন?
● অনেকের মতে, আমাদের হাতে আঙুল দশটি বলে দশ-ভিত্তিক গণনা আমাদের জন্য সহজ। তবে দশমিক পদ্ধতির অপর সুবিধা হলো এর স্থানিক মানের বৈশিষ্ট্য। দশমিকের বাম দিকের ঘরগুলো যথাক্রমে একক দশক, শতক ইত্যাদির। এ পদ্ধতিতে স্থানগুলোরে মান সহজে নির্ণেয়। মানগুলো দশের গুণিতক।
এইচএসসি ও এডমিশন পরীক্ষার্থীদের জন্য আমাদের কোর্সসমূহঃ
- HSC 25 অনলাইন ব্যাচ ২.০ (বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- HSC 26 অনলাইন ব্যাচ (বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- HSC 25 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি)
- HSC 26 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি)
- মেডিকেল এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- ঢাকা ভার্সিটি A Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- ঢাকা ভার্সিটি B Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- বুয়েট কোশ্চেন সলভ কোর্স
- গুচ্ছ A Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- গুচ্ছ B Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
বছরজুড়ে অভিজ্ঞ টিচারদের সাথে ক্লাস 6-10 এর পড়াশোনা ও পরীক্ষার জন্য সেরা প্রস্তুতি নিতে আজই ভিজিট করো আমাদের অনলাইন ব্যাচ ২০২৫ -এ:
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন