“যদি দেশপ্রেম বুকে, গণিতে সুখে করিস বিচরণ
একদিন সত্যিই মিলে যাবে এ দেশের সমীকরণ
আর নেই কোন সংশয়, আজ গণিত করবি জয়
গণিতের ভাষাতে রাখবি বিশ্বে স্বদেশের পরিচয়
আমরাও পারি যে হতে সেরা বিশ্ব দেখবে তা-ই…”
হ্যাঁ, পৃথিবী আজ দেখেছে আমরাও সেরা হতে পারি। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ মিলে গেছে আমাদের স্বপ্নের সমীকরণ। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে গোটা বিশ্বের চোখের সামনে লাল সবুজ পতাকা উড়িয়ে আমরা জয় করেছি স্বর্ণ পদক।রোমানিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের ৫৯তম আসরে মোট ৪২ নম্বরের পরীক্ষায় ৩২ নম্বর পেয়ে স্বর্ণপদক জয় করেছে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের আহমেদ জাওয়াদ চৌধুরী।
ফুল সিলেবাস কোর্সে যা যা থাকছে:
৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৫
এছাড়াও বাংলাদেশ দল তিনটি ব্রোঞ্জপদক ও দুটি অনারেবল মেনশন অর্জন করেছে। ঢাকার নটর ডেম কলেজের তিন শিক্ষার্থী জয়দীপ সাহা, তামজিদ মোর্শেদ রুবাব ও তাহনিক নূর সামিন ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে। আর অনারেবল মেনশন পেয়েছে ফরিদপুরের পুলিশ লাইনস হাই স্কুলের ‘সৌমিত্র দাস’ ও ঢাকা কলেজের ‘রাহুল সাহা’।
বাংলাদেশ থেকে এই ছয় প্রতিযোগীর দলে দলনেতা হিসেবে ছিলেন গণিত অলিম্পিয়াড দলের কোচ মাহবুব আলম মজুমদার এবং উপদলনেতা হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।
গত ৭ জুলাই রোমানিয়ায় শুরু হয় এ বছরের আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড। সেখানে ১১৬টি দেশের ৬১৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। দলগতভাবে ১১৪ নম্বর পেয়ে ১০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৪১তম।
বাংলাদেশে গণিত অলিম্পিয়াড যাত্রা শুরুর কথা
এবার আসি পেছনের গল্পে, আমাদের এই স্বপ্নযাত্রার সূচনাবিন্দুতে।
২০০১ সালের ১৭ জুন প্রথম আলোর বিজ্ঞান বিষয়ক ফিচার পাতা ‘বিজ্ঞান প্রজন্ম’-তে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ‘নিউরনে অনুরণন’ – প্রথম আলো রেডিক্যাশ গণিত অলিম্পিয়াড। মূলত শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে প্রেরণ এবং সামগ্রিকভাবে শিক্ষার্থীদের গাণিতিক মেধার উৎকর্ষ সাধন -এই উদ্দেশ্য দু’টিকে সামনে রেখে এই আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়। মুনির হাসানের তত্ত্বাবধানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং দৈনিক প্রথম আলো’র সম্পাদক মতিউর রহমান এই উদ্যোগ নেন।
প্রথম আলোর বিজ্ঞান প্রজন্ম পাতায় প্রতি সপ্তাহে পাঁচটি করে গণিতের সমস্যা ছাপানো হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অংশগ্রহণকারীরা এই গাণিতিক সমস্যার সমাধানগুলি প্রথম আলো কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেন। নিউরনে অনুরণনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হতো, সমাধান সঠিক হয়েছে কিনা। একজন সমম্বয়কারী কাজ করতেন যিনি শিক্ষার্থীদের পাঠানো সমাধান মিলিয়ে দেখতেন এবং সমাধান সঠিক হলে পোস্টকার্ডের মাধ্যমে সমাধানকারীকে জানিয়ে দিতেন। একই সাথে সকল সমাধানকারীদের একটি ডেটাবেসও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
পরবর্তীতে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে একাধিক জায়গাতে আঞ্চলিক উৎসবের আয়োজন করা হয়। ২০০২ সালের ২৬ জানুয়ারি ঢাকায়, ১৫ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে এবং ১৯ এপ্রিল রাজবাড়ী জেলাতে গণিত অলিম্পিয়াডের আঞ্চলিক উৎসব আয়োজন করা হয়। ঢাকার আঞ্চলিক উৎসবে অধ্যাপক গৌরাঙ্গ দেব রায় ২০০২ সালের জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াড সিলেটে অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন:
মজার নিয়মে vocabulary 5: ২০১৮ সালের মজার ১০টি নতুন শব্দ!
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী? জেনে নিন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড -এর কিছু কার্যকরী ব্যবহার
দেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ের গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয় ২০০৩ সালে। বাংলাদেশ গণিত সমিতির সম্মতিতে ৩১ জানুয়ারি ও ১লা ফেব্রুয়ারি, দুই দিনের এই উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয় সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সামগ্রিকভাবে অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক ছিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ১০৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫০-এর অধিক শিক্ষার্থী প্রথম বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে।
গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি জামিলুর রেজা চৌধুরী এবং সহসভাপতি মুহম্মদ জাফর ইকবাল। অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক হলেন মুনির হাসান।
আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ
২০০৫ সালে মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ প্রথম অংশগ্রহণ করে। পরের বছর থেকে টানা তিন বছর এক বা একাধিক অনারেবল মেনশন পেলেও ছুঁয়ে দেখার সৌভাগ্য হয়নি মেডেল। ২০০৯ সালে আমরা প্রথম পদকের দেখা পাই। সেবছরই দুই দুইটি ব্রোঞ্জ পদক আসে সামিন রিয়াসাত ও নাজিয়া চৌধুরীর হাত ধরে। ২০১২ সালে দেশের পক্ষে ধনঞ্জয় বিশ্বাস প্রথম রৌপ্যপদক অর্জন করেন আর তা আমাদের আত্মবিশ্বাসে যোগ করে এক নতুন মাত্রা। এরপর আর কোনোবছর খালি হাতে ফেরেনি বাংলাদেশ। পদকের আর সেইসাথে অনারেবল মেনশন দিয়ে ভারী হতে থাকে আমাদের অর্জনের ঝুলি। কিন্তু কোথায় যেন একটা শূন্যতা থেকে গেলো। একটা না পাওয়ার কষ্ট আমাদের প্রতিবারই জড়িয়ে ধরলো। এমনকি মাত্র এক বা দুই নম্বরের কমতির জন্য হাতছাড়া হয়েছে স্বপ্নের স্বর্ণপদক। অবশেষে ২০১৮ সালে ছুঁয়ে দেখা হলো দীর্ঘদিনের লালিত সেই স্বপ্নকে।
আমাদের অর্জনের ঝুলিতে এখন আছে একটি স্বর্ণপদক, ৬টি রৌপ্যপদক, ২২টি ব্রোঞ্জ পদক আর ২৭টি অনারেবল মেনশন। দেশের পক্ষে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ উপহারদাতা দুইজন সূর্যসন্তান হলেন ‘আহমেদ জাওয়াদ চৌধুরী’ যিনি ১টি করে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন এবং ‘আসিফ ই. এলাহী’ যিনি দুইটি রৌপ্য, একটি ব্রোঞ্জ ও একটি অনারেবল মেনশন পেয়েছেন।
কোর্সটিতে শিক্ষার্থীরা পাবে:
HSC 23 শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কোর্স (বিজ্ঞান বিভাগ)
আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের ইতিহাস
গণিত অলিম্পিয়াড আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন। প্রথম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫৯ সালে রোমানিয়ায়। তখন থেকে এটি প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হচ্ছে, কেবল মাঝে ১৯৮০ সাল ছাড়া। ঐ বছর মঙ্গোলিয়ায় আভ্যন্তরীণ গণ্ডগোলের কারণে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। এই প্রতিযোগিতাটি প্রথমদিকে সোভিয়েত প্রভাব বলয়ের অন্তর্গত ওয়ারশ চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী পূর্ব ইউরোপের দেশসমূহ নিয়ে চালু হয়, তবে পরবর্তীতে অন্যান্য দেশও এতে অংশগ্রহণ করতে শুরু করে। পূর্ব ইউরোপে শুরু হওয়ার কারণে প্রারম্ভিক পর্যায়ে এটি ওই অঞ্চলের দেশগুলোতেই অনুষ্ঠিত হতো। ধীরে ধীরে অন্যান্য দেশ এটি আয়োজন করতে শুরু করে।
অলিম্পিয়াডের নিয়ম-কানুন
প্রায় ৯০ টি দেশ থেকে (সর্বোচ্চ) ছয় সদস্যের একটি করে দল (ও একজন দলপতি, সহ-দলপতি এবং একজন পর্যবেক্ষক) আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে। যদিও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী দলকে নয়, প্রতিযোগীদের নম্বর প্রদান করা হয়। প্রতিযোগীদের বয়স অনধিক ২০ বছর হতে হবে এবং অবশ্যই মাধ্যমিকের উপরের স্তরের শিক্ষা থাকা চলবে না (অর্থাৎ বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা অনুযায়ী, একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত অংশগ্রহণ করতে পারবে)। এই সকল নিয়মের মধ্যে পড়লে একজন প্রতিযোগী একাধিকবার আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
প্রশ্নপত্রে ছয়টি সমস্যা থাকে, প্রতিটি সমস্যা সমাধানের জন্য ৭ নম্বর দেয়া হয়। তাই পূর্ণমান হচ্ছে ৪২। পরীক্ষাটি হয়ে থাকে দুই দিনব্যাপী; প্রতিযোগীরা একেক দিনে সাড়ে চার ঘণ্টা সময় পায় তিনটি সমস্যা সমাধানের জন্য। মাধ্যমিক স্তরের গণিত হতে সমস্যাগুলো নির্বাচন করা হয়। এগুলোর জন্য উচ্চতর গণিতের প্রয়োজন হয় না, আর সমাধানগুলো হয় ছোট ও বিচিত্র। তবে, সমাধান বের করার জন্য প্রয়োজন বুদ্ধিমত্তা ও গণিতের পারদর্শিতা।
আইএমও-তে দল প্রেরণের জন্য প্রত্যেক দেশই একটি নির্বাচন পরীক্ষার আয়োজন করে। সাধারণত, স্থানীয়, বিভাগীয়, জাতীয় প্রতিযোগিতার পর এক বা একাধিক “দল নির্বাচন পরীক্ষা” (টিম সিলেকশন টেস্ট বা টিএসটি)-এর মাধ্যমে দল নির্বাচন করা হয়।
গাণিতিক সমস্যা ও নম্বর বণ্টন
আইএমও-তে সর্বমোট ৬ টি সমস্যা থাকে এবং প্রতি সমস্যায় ৭ পয়েন্ট থাকে। ক্যালকুলেটরের ব্যবহার নিষিদ্ধ। পরীক্ষা দু’দিন ধরে চলে। প্রথম দিনে তিনটি এবং দ্বিতীয় দিনে তিনটি করে মোট ৬টি সমস্যার সমাধান করতে হয়। প্রতিদিন সাড়ে চার ঘণ্টা করে মোট নয় ঘণ্টা সময় পাওয়া যায়। সমস্যাগুলো মাধ্যমিক স্কুল গণিতের নানা বিভাগ থেকে করা হয় যাদের মোটা দাগে জ্যামিতি, বীজগণিত, সংখ্যাতত্ত্ব এবং কম্বিনেটরিক্স ইত্যাদি বিভাগে ভাগ করা যায়। এই সমস্যাগুলো সমাধান প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের জ্ঞান দিয়ে করা গেলেও প্রচুর অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার প্রয়োজন হয়।
স্বাগতিক দেশ ব্যতীত অন্যান্য অংশগ্রহণকারী দেশসমূহ স্বাগতিক দেশের নির্বাচিত সমস্যা নির্বাচন কমিটির নিকট সমস্যা প্রস্তাব করতে পারে, যেখান থেকে কমিটি সম্ভাব্য প্রশ্নের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করে। দলনেতারা প্রতিযোগিদের পূর্বেই আইএমও ভেন্যুতে পৌঁছে যান এবং তাদের নিয়ে গঠিত হয় আইএমও জুরি যারা প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত সকল আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, যার প্রথমেই থাকে সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে প্রতিযোগিতার জন্যে ছয়টি সমস্যা নির্বাচন করা। দলনেতারা প্রশ্ন সম্বন্ধে পূর্বেই জেনে যান বলে পরীক্ষার পূর্বে তাদের দল থেকে পৃথক রাখার ব্যাপারটি কঠোরভাবে মেনে চলা হয়।
প্রতিটি দেশের প্রাপ্ত নম্বর ঐ দেশের দলনেতা ও উপ-দলনেতার এবং স্বাগতিক দেশের নিয়োগ করা সমন্বয়কের (স্বাগতিক দেশের ক্ষেত্রে সমস্যা প্রস্তাবকারী দেশের দলনেতা) ঐকমত্যের ভিত্তিতে স্থির করা হয় এবং এ নিয়ে কোন বিতর্ক সৃষ্টি হলে তা প্রধান সমন্বয়ক এবং তাতেও সমাধান না হলে শেষ পর্যন্ত জুরির শরণাপন্ন হতে হয়।
পদক
প্রতিযোগীদের ব্যক্তিগত নম্বরের ওপর ভিত্তি করে র্যাংকিং করা হয়। পদকপ্রাপ্তির জন্যে ন্যূনতম নম্বর এমনভাবে নির্ধারণ করা হয় যেন সোনা, রূপা ও ব্রোঞ্জপ্রাপ্ত মোট ছাত্রছাত্রীর অণুপাত প্রায় ১:২:৩ হয়। যেসব প্রতিযোগী কোন পদক জয় করতে পারে না, কিন্তু কোন সমস্যায় সাত নম্বর পায় তাদের সম্মানজনক উদ্ধৃতি বা ‘অনারেবল মেনশন’ প্রদান করা হয়।
অসাধারণ নৈপুণ্য বা চমৎকার সাধারণীকরণের জন্যে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়। এই পুরস্কার ১৯৯৫, ১৯৮৮ ও ২০০৫ সালে দেওয়া হয়েছিল, তবে ১৯৮০ পর্যন্ত এই পদকপ্রাপ্তির সংখ্যা আরো বেশি ছিল।
সর্বোচ্চ পদকের সংখ্যা মোট প্রতিযোগীর অর্ধেক হবে – এই নিয়মটি মাঝে মাঝে রক্ষা করা হয় না, যখন এর ফলে পদকপ্রাপ্তের সংখ্যা অর্ধেকসংখ্যক প্রতিযোগী হতে খুব বেশি এদিক-সেদিক হয়। এমন ঘটনা সর্বশেষ ঘটেছিল ২০১৩ সালে যখন ৫২৮ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ২৪৯ জন নয়তো ২৭৮ জনকে পুরষ্কৃত করতে হতো।
উল্লেখযোগ্য রেকর্ড
(I) ছয়টি সমস্যারই সঠিক সমাধান করে পূর্ণমান অর্থাৎ ৪২ নম্বর অর্জন করাকে বলা হয় ‘পারফেক্ট স্কোর’। সর্বোচ্চ সংখ্যকবার পারফেক্ট স্কোর করার রেকর্ড একমাত্র রোমানিয়ার ‘Ciprian Manolescu’-এর। তিনি ১৯৯৫, ’৯৬, ’৯৭ সালে অর্থাৎ মোট তিনবার আইএমও-তে অংশগ্রহণ করেন এবং তিনবারই পারফেক্ট স্কোর করেছিলেন। তিনি বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গণিতের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত আছেন।
(II) সর্বোচ্চ সংখ্যক স্বর্ণপদক যার অধিকারে তিনি হলেন কানাডার ‘Zhuo Qun (Alex) Song’. তিনি পাঁচটি স্বর্ণ ও একটি ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেছেন।
(III) পদকের ভিত্তিতে শীর্ষস্থানীয় দেশ গণচীন। তাদের অর্জনের ভাণ্ডারে আছে ১৫১টি স্বর্ণ, ৩৫টি রৌপ্য ও ৬টি ব্রোঞ্জ পদক। অপরদিকে, ১২৪টি স্বর্ণ, ১১২টি রৌপ্য, ২৯টি ব্রোঞ্জ ও একটি অনারেবল মেনশন পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র। ৯৭টি স্বর্ণ, ৫৩টি রৌপ্য ও ১২টি ব্রোঞ্জ নিয়ে রাশিয়ার অবস্থান তৃতীয়।
(IV) নারীদের মধ্যে সেরা সোভিয়েত ইউনিয়নের ‘Eugenia Malinnikova’। দুটি পারফেক্ট স্কোরসহ তিনটি স্বর্ণপদক জিতে নিয়েছেন তিনি।
(V) ১৯৯১ ও ২০১০ সালে অর্থাৎ দুই দুইবার গণিত অলিম্পিয়াডে অসৎ পন্থা অবলম্বনের কারণে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়ে উত্তর কোরিয়া। এমন ঘটনার ক্ষেত্রে এটিই একমাত্র দেশ।
স্বর্ণপদক অর্জনের পর এখন থেকে আমাদের প্রত্যাশার পাল্লাটা ভারী হওয়া স্বাভাবিক। প্রতি বছর আমরা অধীর আগ্রহে অনেক স্বপ্ন চোখে নিয়ে তাকিয়ে থাকবো আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের দিকে। অর্জনের গৌরবে লাল সবুজ পতাকাটা উড়বে বিশ্ব দরবারে -এই অসম্ভব সুন্দর দৃশ্যটা দেখার জন্যে। প্রতিবার স্বর্ণপদক পেতেই হবে এমনটি নয়, আমরা শুধু চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা গণিতকে ভালোবাসুক। গণিতের সুপ্ত সৌন্দর্য আবিষ্কার করে তার স্পর্শে বেড়ে উঠুক। আর্কিমিডিস বলেছিলেন, “Mathematics reveals its secrets only to those who approach it with pure love, for its own beauty.”
Reference:
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:
- Adobe Illustrator Course (by Mohammad Yeasir)
- Graphic Designing with Photoshop Course (by Sadman Sadik)
- Graphic Designing with PowerPoint Course (by Anisha Saiyara Taznoor)
- মোবাইল দিয়ে Graphic Designing Course (by Sadman Sadik)
- Facebook Ads Mastery Course (by Mark Anupom Mollick)
আপনার কমেন্ট লিখুন