পুরোটা পড়ার সময় নেই ? ব্লগটি একবার শুনে নাও !
হিসাববিজ্ঞানে কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে তোমরা কিভাবে পড়তে পারো এবং উত্তর করতে পারো, তা নিয়ে এই লেখাটি। যা কিছু তোমরা ইতিমধ্যেই জানো, তা নিয়ে কথা বলব না। বরং যা এই মুহূর্তে জানলে সামান্য উপকৃত হবে, তা নিয়েই লিখছি।
তুমি ২ বছরে কতগুলো অংক কতবার করে প্র্যাকটিস করেছ তার কোন মূল্যই থাকবে না যদি পরীক্ষার খাতায় তার প্রতিফলন ঘটাতে না পারো।
পরীক্ষার খাতায় তার প্রতিফলন ঘটাতে প্রয়োজন শুধু একটি জিনিসের। তা হল- ‘স্ট্র্যাটেজি’ (Strategy)। স্ট্র্যাটেজি অর্থ হল, কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে নির্ধারিত কাজগুলো তুমি কিভাবে করবে তার পরিকল্পনা। তাই উভয় পত্রের জন্য কমনভাবে কিছু টিপস শেয়ার করছি।
১। পড়ার স্ট্র্যাটেজি:
- নতুন করে অবশ্যই কিছু পড়বে না। যেই অংকটি ২ বছরে পারো নি, সেটা ২ মাসে সামান্য
- অনুশীলন
- করে পরীক্ষায় দিতে পারবে না। তাই যেগুলো ভালো কিংবা মোটামুটি ভালো পারো, সেগুলোই বারবার অনুশীলন করতে থাকো।
- নৈর্ব্যক্তিকের জন্য কোন অধ্যায়ই বাদ দেওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে যে অধ্যায়গুলোতে তুমি কাঁচা, সেগুলোতে কী করবে? তাই তো?
ধরে নিলাম তুমি ‘প্রাপ্য হিসাবসমূহের হিসাবরক্ষণ’ এর অংকগুলো পারো না। সেক্ষেত্রে তুমি এই অধ্যায়ের থিওরি টাইপ অংশগুলো ভালো করে পড়ে রাখবে। কারণ, এই অধ্যায় থেকে নৈর্ব্যক্তিকগুলো যদি অংক আকারে না এসে থিওরি আকারে আসে, তুমি যেন অন্তত সেটার উত্তর করতে পারো। (আফসোসের সুযোগ রেখো না; এক একটি নম্বরের অনেক মূল্য!)
২। উত্তর করার স্ট্র্যাটেজি:
- ‘ক’ বিভাগ (আর্থিক বিবরণী):
তোমাদের একটি কমন প্রশ্ন হল, “আর্থিক বিবরণী কখন উত্তর করব? শেষে নাকি শুরুতে?”
উত্তরঃ দুটিই করতে পারো (তুমি এতদিনে যেভাবে করে অভ্যস্ত, সেটি অনুসরণ করাই ভালো।) সেক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে,
প্রথমে করলে: তোমার টার্গেট হবে সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টার মধ্যেই দুটি উত্তর করা। কোনোভাবেই এর বেশি সময় নিও না। যদিও একটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার স্ট্যান্ডার্ড সময় হল ২০ মিনিট, তবুও আর্থিক বিবরণীর অঙ্কগুলোতে সময় বেশি লেগেই যায়। তাই সময়ের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। এবং তুমি যদি পুরো ১ ঘণ্টা সময়ই নিয়ে থাকো, তবে ‘খ’ বিভাগের প্রশ্নগুলো অবশ্যই আরও দ্রুত উত্তর করার চেষ্টা করতে হবে।
শেষে করলে: এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয় মেনে চলা আবশ্যক।
১। কোন ৫টি উত্তর করবে তা নিয়ে দ্বিধায় ভুগবে না। কারণ আর্থিক বিবরণী উত্তর করতে হাতে সময় রাখা জরুরি। (পরের পয়েন্টটিতে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে)
২। কোনো অংকে আটকে গেলে সেখানে সময় ব্যয় করবে না। দ্রুত পরবর্তী প্রশ্নে চলে যাবে। তোমার টার্গেট হবে প্রথম ৫টি প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের মধ্যে শেষ করা। এরপর হাতে সময় থাকবে আরও ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট। সেখান থেকে ১ ঘণ্টায় (মাথা ঠাণ্ডা রেখে) আর্থিক বিবরণী উত্তর করে শেষের ১০ মিনিট রিভিশন দিবে।
- খ বিভাগের(অন্যান্য অধ্যায়):
এক্ষেত্রে সামান্য বিচক্ষণ হওয়া চাই। দুইটি বিষয় বিবেচনা করে এই বিভাগ থেকে উত্তর করবে–
(ক) কোনটা সবচেয়ে ভালো পারো
(খ) কোনটা উত্তর করতে ‘কম সময়’ লাগে।
হতে পারে, ৯টা প্রশ্নের মধ্যে তুমি ৭টা প্রশ্নের উত্তরই ভালো করে পারো। তখন বিবেচনা করবে যে কোনটি তুলনামূলক কম সময়ে উত্তর করা যাবে। তাহলেই সিদ্ধান্তটি সহজ হবে এবং অযথা চিন্তা করে সময় নষ্ট হবে না।
- নৈর্ব্যক্তিক:
৩০ টির জন্য ৩০ মিনিট। অবশ্যই একটু কঠিন ব্যাপার কেননা এতে অংকও থাকবে।
বুদ্ধির খেলা এখানেই!
বুদ্ধি-১ঃ সবার আগেই থিওরি টাইপ প্রশ্নগুলো উত্তর করে ফেলবে। অংকের দিকে চোখও দিবে না।
বুদ্ধি-২ঃ এবারে অংকগুলো ধরো। এখানেও তোমার বুদ্ধি খাটানো চাই। সহজ অংকগুলো আগে শেষ করে ফেলবে। জটিলগুলো কখনোই আগে করার চেষ্টা করো না। এতে সময় বেশি ব্যয় হয়।
এক্সট্রা টিপস!
১। একমাত্র আমরা ব্যবসায় শিক্ষার শিক্ষার্থীরাই শুধু জানি যে পরীক্ষার হলে একটি আর্থিক বিবরণী না মিললে কি পরিমাণ মানসিক চাপ অনুভূত হয়।
তবে এটি মিলে যাবার সম্ভাবনা ৯০% বেড়ে যায় যদি তোমরা নিম্নোক্ত কাজটি করতে পারো-
(ক) প্রশ্ন হাতে পেয়েই সবার আগে আর্থিক বিবরণীর প্রশ্ন দুটিতে চোখ বুলিয়ে নেবে। (এক নজরে দেখা আর কি; খুব গভীর মনোযোগ দিয়ো না।)
(খ) এবার ১ম প্রশ্নে আসবে। নিশ্চয়ই সেখানে ১, ২, ৩ সিরিয়াল করে বেশ কিছু সমন্বয় দেওয়া আছে। এবারেই আসল কাজ। ধরে নিচ্ছি, উদ্দীপকে রেওয়ামিল দেওয়া আছে। হাতে পেন্সিল নাও এবং রেওয়ামিলের যেসব আইটেমের সাথে সমন্বয় দেওয়া আছে, সেসবের পাশে সমন্বয়গুলোর সিরিয়াল অনুযায়ী ১, ২, ৩ লিখে রাখো। উদাহরণঃ মোট ৬টি সমন্বয় দেয়া আছে। এর মধ্যে ৩নং সমন্বয়তে বলা আছেঃ ২ মাসের বেতন বকেয়া। এবার তবে রেওয়ামিলে গিয়ে যেখানে বেতন লেখা আছে, তার পাশে ৩ লিখে রাখো। আবার ধরো, রেওয়ামিলের যেই আইটেমটি সমন্বয় করতে হবে কিন্তু তা সমন্বয়ের সেই ৬ টি পয়েন্টে বলা নেই, সেই আইটেমটির পাশে লম্বা দাগ দিয়ে রাখো। যেমন ধরো রেওয়ামিলে যদি এরূপ দেওয়া থাকে- ভাড়া(২ মাস অগ্রিম)।
এরকম করার উদ্দেশ্য হল:
- একটি সমন্বয়ও যেন ভুলেও বাদ না পড়ে।
- পুরো প্রশ্নটা দুই বার করে পড়া হয়ে যায়। ফলে অংক করার সময় আইটেমগুলো মাথায় থাকবে।
- রিভিশন দেয়ার সময় ‘কোনোটা বাদ পড়ল কি না’ চিন্তা করে যেন সময় নষ্ট না হয়।
[বি.দ্র. আর্থিক বিবরণী শেষে উত্তর করতে চাইলেও, দাগিয়ে রাখার এই কাজটি শুরুতে করে নেওয়াই উত্তম। শেষে গিয়ে মানসিক চাপে পড়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।]
২। ‘খ’ বিভাগের কিছু প্রশ্ন মাত্র ১৫ মিনিটেই উত্তর করা সম্ভব। যেমন:
১ম পত্রে: অবচয়, শেয়ার মূলধন, ব্যাংক সমন্বয়
২য় পত্রে: নগদ প্রবাহ বিবরণী, মজুদ পণ্যের হিসাবরক্ষণ, আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণ, ব্যবস্থাপনা হিসাববিজ্ঞানের পরিচিতি
উপরোক্ত অধ্যায়ের সমাধান করতে তুলনামূলক কম সময় লাগে। তাই চেষ্টা করবে ‘খ’ বিভাগ থেকে এগুলোই ‘প্রথমে’ উত্তর করতে।
৩। বোর্ড পরীক্ষায় ‘Partial Marking’ সিস্টেম থাকে। এজন্যে ধরো, তুমি যদি একটি উত্তর কমপ্লিট করতে না পারো, কিংবা সম্পূর্ণ উত্তর করলেও তাতে কিছু ভুল থাকে, তবুও তুমি নম্বর পাবে। যতটুকু ঠিক লিখেছ তার জন্যেই নম্বর পাবে। তাই কখনোই প্রশ্ন ছেড়ে আসবে না। খাতায় যদি একটি অংকের ‘ছকও’ এঁকে রাখো, এবং তা যদি সঠিক হয়, সেটির জন্যে হলেও নম্বর পাবে।
আশা করি তোমরা তোমাদের স্ট্র্যাটেজি এখন থেকেই ঠিক করে রাখবে এবং পরীক্ষার খাতায় তোমাদের এতদিনের পরিশ্রমের প্রতিফলন ঘটাবে। সবার জন্য শুভ কামনা।
এইচএসসি ও এডমিশন পরীক্ষার্থীদের জন্য আমাদের কোর্সসমূহঃ
- HSC 25 অনলাইন ব্যাচ ২.০ (বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- HSC 26 অনলাইন ব্যাচ (বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- HSC 25 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি)
- HSC 26 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি)
- মেডিকেল এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- ঢাকা ভার্সিটি A Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- ঢাকা ভার্সিটি B Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- বুয়েট কোশ্চেন সলভ কোর্স
- গুচ্ছ A Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- গুচ্ছ B Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
বছরজুড়ে অভিজ্ঞ টিচারদের সাথে ক্লাস 6-10 এর পড়াশোনা ও পরীক্ষার জন্য সেরা প্রস্তুতি নিতে আজই ভিজিট করো আমাদের অনলাইন ব্যাচ ২০২৫ -এ:
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন