বিনিয়োগ কাকে বলে? বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় মাথায় রাখতে হবে যে বিষয়গুলো

March 13, 2023 ...

বিনিয়োগ কি? / বিনিয়োগ কাকে বলে?

বিনিয়োগ (Investment) হলো সঞ্চিত অর্থ অন্য কোনো মাধ্যমে রেখে নতুন মূলধন সৃষ্টি। বিনিয়োগ কি বা বিনিয়োগ কাকে বলে এই প্রশ্নের উত্তরে অন্য কথায় বলা যায় বিনিয়োগ হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে উচ্চ লভ্যাংশ পাওয়া সম্ভব।

আপনার সঞ্চয় তখনই বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হবে যখন একটি নির্দিষ্ট সময় পরে আপনার সঞ্চিত অর্থ থেকে কিছুটা বেশি অর্থ পাবেন। বিনিয়োগকৃত অর্থ আপনি Emergency Fund (জরুরী তহবিল) কিংবা Retirement Corpus হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন অথবা এই অর্থ ব্যবহার করে বাড়ি কিনতে পারেন, গাড়ি কিনতে পারেন, সন্তানের লেখারপড়ার খরচ চালাতে পারেন ইত্যাদি।

যদি আপনার কাছে বিনিয়োগ করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ না থাকে, তাহলে আপনি Leverage করতে পারেন। Leverage হলো একটি বিনিয়োগ কৌশল। কারও থেকে অর্থ ধার নিয়ে কোনো আর্থিক খাতে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে লভ্যাংশের পরিমাণ করার প্রক্রিয়াই হলো Leverage.

যদিও সময়ের সাথে মানুষের কাছে বিনিয়োগের ধারণা বদলে যাচ্ছে, তবে বিনিয়োগ উদ্দেশ্য সবসময়ই একই আছে।

আপনি হয়তো মাস শেষে আপনার বেতন পান এবং এই টাকা থেকে আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবনে চলার জন্য বিভিন্ন খাতে অর্থ খরচ করেন। আপনি আপনার বেতন থেকে যদি কিছু অংশ আলাদা করে রাখেন, তাহলে এটিই হবে আপনার সঞ্চিত অর্থ। আপনি যদি এক বছরের জন্য প্রতি মাসে ১০,০০০ টাকা সঞ্চয় করেন, তাহলে বছর শেষে ১ লাখ ২০ হাজার সঞ্চয় করতে পারবেন।

Personal Finance Course

কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • সবচেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়ার জন্য বিনিয়োগ করার গাইডলাইন।
  • স্টক মার্কেট, মিউচুয়াল ফান্ড, DPS, FDR, সঞ্চয়পত্র ইত্যাদির ক্ষেত্রে বিনিয়োগের টিপস এন্ড ট্রিক্স।
  • রিটায়ারমেন্ট প্ল্যান ও ইমার্জেন্সি ফান্ড গঠন করার উপায়
  •  

    এখন, এক বছর আগে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার যে মূল্যমান ছিল বা সহজ কথায় এই টাকা ব্যবহার করে আপনি যা কিছু কিনতে পারতেন, এক বছর পরে একই পরিমাণ জিনিস কিনতে পারবেন না। এখানেই বিনিয়োগের ধারণা কাজে আসে। সঠিক বিনিয়োগের মাধ্যমে মুল্যস্ফীতির এই অভিশাপ থেকে মুক্তি তো পাওয়া সম্ভবই, এমনকি লাভজনক একটা ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। আমরা ধাপে ধাপে এগুলো সম্পর্কেই জানবো।

    বিনিয়োগের মাধ্যমে আপনার সম্পদ বৃদ্ধি পায় যেভাবে

    ব্যক্তিগত আর্থিক ব্যবস্থায় বিনিয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিনিয়োগ করার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি বিভিন্ন পরিমাপকে বৃদ্ধি করতে পারেন।

    বিনিয়োগের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো Compounding. এটি হলো মূলত সময়ের সাথে সাথে আপনার বিনিয়োগকৃত অর্থ থেকে আপনি কী পরিমাণ রিটার্ন পাচ্ছেন তার একটি পরিমাপক।

    বিষয়টি আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য, চলুন একটা উদাহরণ দেখে নেওয়া যাক। মনে করুন, আপনার কাছে ১ লাখ টাকা আছে এবং আপনি এই অর্থ একটি স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করেছেন যেখান থেকে আপনি প্রথম দুই বছর ১০% হারে লভ্যাংশ  পাবেন। আপনাকে যদি বলা হয়, আপনি দুই বছর শেষে কত টাকা ল্ভ্যাংশ হিসেবে পাবেন? আপনি হয়তো বলবেন ১০০০০ টাকা। কিন্তু চক্রবৃদ্ধি মুনাফার এই চক্রে আসলে আপনি এর থেকেও বেশি লভ্যাংশ পাবেন।

    প্রথম বছর শেষে, আপনার মূলধন ১ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা হয়েছে। দ্বিতীয় বছরে আপনার মূলধন ১ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং এই ১ লাখ ১০ হাজার টাকার ১০% হলো ১১ হাজার টাকা। অর্থাৎ দ্বিতীয় বছরান্তে আপনি ১ হাজার টাকা বেশি লভ্যাংশ পাচ্ছেন। একইভাবে দুই বছর শেষে আপনার মূলধন ১ লাখ ২১ হাজার টাকা এবং পরবর্তী বছর এই মূলধনের ১০% টাকা আপনি লভ্যাংশ হিসেবে পাবেন।

    অবশ্যই আপনি প্রতি বছর ১০% হারে লভ্যাংশ পাবেন না। কোনো বছর আপনি ৫% হারেও লভ্যাংশ পেতে পারেন আবার কোনো বছর ৫০% হারেও লভ্যাংশ পেতে পারেন, এটা নির্ভর করে আপনি কোন ধরনের ব্যবসায় বিনিয়োগ করছেন এবং কোন সময় আপনার শেয়ার কিনছেন বা বিক্রি করছেন। কখনও কখনও এমনও হতে পারে যে, লাভ করার পরিবর্তে আপনি আপনার মূলধনের টাকা থেকেই কিছু অংশ হারিয়ে ফেললেন। এজন্যই এটা বুঝা গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি কোথায় এবং কেন বিনিয়োগ করছেন।

    বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের প্রতি উৎসাহ প্রদান করতে বাংলাদেশ সরকারের Securities and Exchange Commission (SEC), Financial Industry Regulatory Authority (FINRA) এবং অন্যান্য আরও কিছু সংস্থা বিভিন্ন আইন কানুন প্রয়োগ করার মাধ্যমে অবিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানকে মার্কেট থেকে নির্মূলের কাজ করে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থার প্রকাশ করা বিভিন্ন আর্টিকেলের মাধ্যমেও বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করার জন্য বিশ্বস্ত ও লাভজনক প্রতিষ্ঠান খুঁজে পেতে পারেন।

    আপনি যদি একজন নতুন বিনিয়োগকারী হন এবং বিনিয়োগ সম্পর্কে আপনার তেমন ধারণা না থাকে তাহলে আপনার উচিত বিশ্বস্ত এবং জনপ্রিয় কোনো প্রতিষ্ঠানে আপনার কষ্টার্জিত অর্থ বিনিয়োগ করা।

    স্বল্প মেয়াদী বিনিয়োগ ও দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ

    স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগ বা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত। নিচে এগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

    স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগ:

    স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগ শব্দ থেকেই এর হালকা একটি ধারণা পাওয়া যায়। অল্প সময়ের জন্য যে খাতে বিনিয়োগ করা হয়, তাকেই স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগ বলে (Short Term Investment)। স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগ মূলত ৩ বছরের কম অবধি মেয়াদের হয়। এই খাতে বিনিয়োগ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা কম, সেই কারণেই স্বল্পমেয়াদের বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন অনেকে।

    স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগের কয়েকটি খাত:

    • মিউচুয়াল বন্ড
    • সরকারি বন্ড
    • স্বল্পমেয়াদী আমানত
    • শেয়ার
    • ট্রেজরি বিল

    দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ:

    দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ স্বল্প-মেয়াদী বিনিয়োগ থেকে ভিন্ন হয়ে থাকে। স্বল্প-মেয়াদী বিনিয়োগকৃত সম্পদ সম্ভবত বিক্রি করা হবে স্বল্প সময়ের মধ্যেই, যেখানে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগগুলি বছরের পর বছর বিক্রি হবে না এবং কিছু ক্ষেত্রে কখনও বিক্রি করা যাবে না।

    যেই বিনিয়োগগুলিতে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পার করার পর বিনিয়োগ করার অর্থের পাশাপাশি মোটা অঙ্কের রিটার্ন পাওয়া যায়, সেগুলিই লং টার্ম বা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ (Long Term Investment)। ন্যূনতম ৫ বছরের হয় এই বিনিয়োগ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সর্বাধিক ২৫ বছর অবধি বিনিয়োগ করা যায়। এই বিনিয়োগের সবথেকে বড় সুবিধা হলো এই বিনিয়োগে সুদের হার স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগের তুলনায় অনেকটাই বেশি হয়। সেই কারণে মেয়াদ শেষের পর তুলনামূলকভাবে বেশি টাকা ফেরত পাওয়া যায়। তবে এই বিনিয়োগের ঝুঁকিও রয়েছে বেশ কিছু।

    একদিকে যেমন মেয়াদ শেষ হওয়ার জন্য অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়। প্রয়োজন পড়লেও, আগে সেই টাকা ফেরত পাওয়া যায় না। কিছু বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পূরণ হওয়ার পরে টাকা তুলতে দেওয়া হলেও, সেক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হয়। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে লগ্নিকারী সংস্থা দেউলিয়া হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে শেয়ারে পতনের কারণে বিনিয়োগ করা অর্থ ডুবে যেতে পারে।

    দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের কয়েকটি খাত:

    • স্টক
    • বন্ড
    • রিয়েল এস্টেট

    বিনিয়োগের বিভিন্ন ধরন

    সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগের ক্ষেত্র অগণিত। আপনি আপনার মেধা, দক্ষতা, জ্ঞান, আগ্রহ, অভিজ্ঞতা ইত্যাদির আলোকে বিনিয়োগের ক্ষেত্র নির্বাচন করতে পারেন। নিচে জনপ্রিয় কয়েকটি বিনিয়োগক্ষেত্র সম্পর্কে বলা হয়েছে।

    Stocks/Equities

    স্টকের শেয়ার হলো কোনো সরকারি বা বেসকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানার একটি অংশ। স্টক কেনার মাধ্যমে, একজন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের একটি নির্দিষ্ট অংশের মালিক হয়ে যান এবং প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের কিংবা লোকসানের সমানভাবে অংশীদার হন। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি লাভ করতে থাকে, তাহলে একজন বিনিয়োগকারী লভ্যাংশ পাওয়ার পাশাপাশি তার কেনা শেয়ারটি অপেক্ষাকৃত বেশি দামে বিক্রি করতে পারেন যেহেতু প্রতিষ্ঠান লাভ করতে থাকলে প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে।

    বিনিয়োগ করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি স্টকের ধরণ হলো Common Stock এবং Preferred Stock. Common Stock কেনার মাধ্যমে একজন বিনিয়োগকারী কখনও কখনও কোম্পানির কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের মতামত উপস্থাপন করতে পারেন এবং উক্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্তকরণে নিজের ভোট দিতে পারেন। অন্যদিকে Preferred Stock কেনা বিনিয়োগকারী Common Stock কেনা বিনিয়োগকারীর আগে লভ্যাংশ/লোকসানের অংশ পান।

    Bonds/Fixed-Income Securities

    বন্ড হলো বিনিয়োগের আরেকটি মাধ্যম যেখানে আপনি একবারে বড় পরিমাণের একটা অর্থ ব্যয় করে বন্ড কিনবেন এবং তার বিপরীতে প্রতি সপ্তাহে/মাসে/বছরে কিছু পরিমাণ লভ্যাংশ পাবেন। এটি সাধারণত নির্ধারিত থাকে যে প্রতি সপ্তাহ/মাস/বছর শেষে আপনি কী পরিমাণ লভ্যাংশ পাবেন। আমাদের দেশে সরকারিভাবে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সর্বাধিক হওয়ায়, আমাদের দেশের মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে সঞ্চয়পত্র কেনার প্রবণতা দেখা যায়।

    Index Funds and Mutual Funds

    নিজে আলাদাভাবে বিনিয়োগ করার জন্য প্রতিষ্ঠান না খুঁজে আপনি কোনো Index Fund কিংবা Mutual Fund – এ আপনার অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেন। বিষয়টি বোঝার জন্য, চলুন আরেকটি উদাহরণ দেখে নেওয়া যাক। ধরুন, আপনার কাছে ১ লাখ টাকা আছে এবং আপনি ভাবছেন এই টাকা কোথায় বিনিয়োগ করা যায়। আপনি যেহেতু এই বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ না, তাই আপনার নিজে থেকে রিসার্চ করে লাভজনক প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করে বিনিয়োগ করা একটু কষ্টসাধ্য।

    এখানেই Index Fund কিংবা Mutual Fund আপনাকে সাহায্য করতে পারে। Mutual Fund সাধারণত আলাদা একটি কোম্পানি যেখানে বিশেষজ্ঞ টিম রিসার্চ করে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে রাখে এবং এই Mutual Fund – এ বিনিয়োগ করার মাধ্যমে আপনি ঐসব কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারেন কোনো ধরনের রিসার্চ করার ঝামেলা ছাড়াই। এখানে আরও মজার বিষয় হচ্ছে, Mutual Fund – এ বিনিয়োগ করার মাধ্যমে আপনি হয়তো ১ লাখ টাকা দিয়ে ১০০টি কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারছেন যেটা আলাদাভাবে সরাসরি কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনতে চাইলে হয়তো সম্ভব হতো না।

    বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণে যে বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে

    বিনিয়োগ কাকে বলে
    Source: bstudies.co.za

    মানুষ সাধারণত তার ব্যক্তিগত চাহিদা, লক্ষ্য, আগ্রহ বিবেচনা করে বিনিয়োগ করে। তবে কিছু বিষয় মাথায় রেখে বিনিয়োগ করলে কম সময়ে যেমন বেশি লভ্যাংশ পাওয়া সম্ভব, একইভাবে লোকসানের সম্ভাবনাও অনেকাংশে কমে যায়। চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন বিষয়গুলো মাথায় রেখে বিনিয়োগ করলে আপনি বেশি লাভবান হতে পারবেন।

    Return on Investment

    বিনিয়োগ

    আপনি কোম্পানিতে যে অর্থ বিনিয়োগ করেন এবং ব্যবসার নিট লাভের উপর ভিত্তি করে সেই অর্থের উপর আপনি যে রিটার্ন পান, সেটাই মূলত ROI বা রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট। ROI বিনিয়োগের খরচের সাপেক্ষে একটি নির্দিষ্ট বিনিয়োগে রিটার্নের পরিমাণ সরাসরি পরিমাপ করার চেষ্টা করে।

    একটি উদাহরণ দিলে ব্যপারটা আরও সহজে বোঝা যাবে। ধরে নিন আপনি একটি টি-শার্ট ব্যবসায় আপনার শ্রমের পাশাপাশি মোট ১০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করে মোট ৮০টি টি-শার্ট তৈরি করে ৭০টি বিক্রি করতে সক্ষম হলেন। প্রতিটি টিশার্ট আপনি ২৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন। তাহলে এখানে আপনার মোট আয়: (২৫০*৭০) = ১৭,৫০০ টাকা, এবং আপনার লাভ ৭৫০০ টাকা।

    ROI হিসাব করার সূত্র হলো: [{(বিনিয়োগ থেকে মোট আয় – মোট বিনিয়োগ )/মোট বিনিয়োগ}*১০০]।

    তাহলে উপরের উদাহরণে আপনার ROI হলো: [{(১৭,৫০০ – ১০,০০০)/১০,০০০}*১০০] = ৭৫%

    অর্থাৎ আপনি যা বিনিয়োগ করেছেন তার ওপর আপনার ৭৫% লাভ হয়েছে। লসের ক্ষেত্রে ROI নেগেটিভ হয়ে থাকে।

    Risk

    আপনি কোনো ব্যবসায় বিনিয়োগ করলে লাভ কিংবা ক্ষতি যেকোনো কিছুর অংশীদার হতে হবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সাধারণত যে ব্যবসায় লাভের সম্ভাবনা বেশি সেই ব্যবসায় ক্ষতি সম্ভাবনাও বেশি এবং যে ব্যবসায় লাভের সম্ভাবনা কম সেই ব্যবসায় ক্ষতির সম্ভাবনাও কম।

    উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ফিক্সড ডিপোজিটে বিনিয়োগের সাথে তুলনা করলে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে রিস্ক একটু বেশি থাকে। তবে শেয়ার মার্কেট থেকে লাভও বেশি হতে পারে। বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে আপনি কতটুকু রিস্ক অ্যাফোর্ড করতে পারবেন, এই বিষয়টি মাথায় রাখা জরুরী।

    Investment Period/Investment Term

    বিনিয়োগের সময়কাল বিভিন্নরকম হতে পারে। আপনি স্বল্পমেয়াদী কিংবা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করতে পারেন। দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করলে আপনি স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগের তুলনায় তুলনামূলক বেশি লভ্যাংশ পাবেন। স্বল্প মেয়াদী বিনিয়োগ কি এবং দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ কি – এ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা জরুরী।

    আপনার জন্য কোন ধরনের সময়কাল উপযোগী সেটা বুঝে বিনিয়োগ করতে হবে। ধরুন, আপনার কাছে ৫০ হাজার টাকা আছে এবং আগামী ৬ মাস আপনার এই টাকার প্রয়োজন হচ্ছে না। আপনি খুব সহজেই এই টাকা স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে মূল্যস্ফীতিকে কাটিয়ে উঠার পাশাপাশি, বিনিয়োগ সম্পর্কে আপনার ধারণা বৃদ্ধি করতে পারেন।

    Personal Finance Course

    সঞ্চয় ও বিনিয়োগের সঠিক গাইডলাইন পেয়ে জীবনের কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক লক্ষ্যগুলো পূরণ করার যাত্রা সহজ করতে আজই এনরোল করুন এই কোর্সটিতে।

     

    Liquidity

    এই বিষয়টি অত্যন্ত জরুরী। ধরুন, আপনার কাছে ৫ লাখ টাকা আছে এবং আপনি ভাবছেন এই টাকা আপনার আগামী ১ বছর কোনো কাজে লাগবে না। তাই আপনি কিছু পরিমাণ জমি কিনলেন বা অন্য কোনো সম্পত্তি কিনলেন। কিন্তু হঠাৎ বিশেষ কোনো কারণে আপনার নগদ অর্থের প্রয়োজন হলো, সেই মুহুর্তে আপনার জমি/সম্পত্তি বিক্রি করার জন্য যে সময় প্রয়োজন সেটা আপনার নেই। অর্থাৎ, জমি/সম্পত্তির Liquidity কম। এই বিনিয়োগকে খুব সহজেই নগদ অর্থে রূপান্তর করা যায় না।

    অন্যদিকে আপনি ব্যাংকে বা অন্য কোথাও ফিক্সড ডিপোজিট করলে, যেকোনো মুহুর্তে নগদ অর্থ পেতে পারেন। এক্ষেত্রে ব্যাংকে বা কোথাও ফিক্সড ডিপোজিট করলে, সেই বিনিয়োগকৃত অর্থের Liquidity বেশি।

    আমাদের লাইফস্টাইলের উপর ধারণা রেখে কিছু পরিমাণ লিকুইড বিনিয়োগ সবসময়ই রাখা উচিত যাতে জরুরী মুহুর্তে আমরা সেই অর্থ ব্যবহার করতে পারি।

    Taxation/Tax Implications

    দেশের প্রত্যেক নাগরিকের কর প্রদান করা বাধ্যতামূলক। বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভিন্ন ধরনের কর হিসাব প্রযোজ্য। তাই বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে, লভ্যাংশ থেকে করবাবদ অর্থ কেটে নেওয়ার পর কী পরিমাণ অর্থ অবশিষ্ট থাকছে এবং এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি মাথায় রেখে বিনিয়োগ করা উচিত। আশা করছি ব্লগটি আপনাদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করবে। শুভ কামনা আপনাদের জন্য।

    ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩

    দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই দেশসেরা শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হও ইন্টারেক্টিভ লাইভ ক্লাসে, নাও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির সম্পূর্ণ সিলেবাসের 💯তে💯 প্রস্তুতি!

    আপনার কমেন্ট লিখুন