পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবার শুনে নাও।
অনেক সময়ই বলা হয়, “মানুষ অভ্যাসের দাস।” অভ্যাসের দাস হওয়ার সমস্যা হচ্ছে, তোমার চিন্তা-ভাবনা একটা গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে, মানুষ হিসেবে তোমার বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। তুমি কোন উদ্ভূত পরিস্থিতি অথবা সমস্যার সমাধান করার ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মাঝেই চিন্তা করো এবং সেই সমস্যা সমাধান করা তোমার জন্য কঠিন হয়ে যায়।
কিন্তু তুমি যদি একটা সমস্যাকে নতুনভাবে ভিন্ন আঙ্গিক থেকে দেখো, তাহলে হয়তো সমস্যাটার সমাধান তুমি সহজেই করতে পারবে। আজকের লেখায় ভিন্নভাবে চিন্তা করার সাতটি উপায়ের কথাই বলবো। উপায়গুলো হলো:
১। নতুন বিষয় শেখা:
একটি নতুন বিষয় শেখা তোমাকে কেবল জ্ঞানই দেবে না, বিষয়টি তোমাকে তোমার আশেপাশের সকল বিষয়কে নতুনভাবে দেখতে শেখাবে। ফলে, কোন সমস্যাকেও তুমি ভিন্নভাবে দেখতে শিখবে এবং হরেক রকমের নতুন সমাধানও তুমি বের করতে পারবে।
২। কবিতা লেখা:
অধিকাংশ সমস্যা সমাধানের কাজ আমাদের মস্তিষ্কের যুক্তি কেন্দ্রগুলো করে থাকে। তবে, কবিতা আমাদের মস্তিষ্কের যৌক্তিক দিক এবং সৃষ্টিশীল দিকের মাঝে মেলবন্ধন ঘটায়। তুমি যেই সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছ, সেই সমস্যা নিয়ে একটি কবিতা লিখে ফেলো।
কবিতাটিকে সেই সমস্যার কোন সমাধান তুলে ধরতে হবে এমন কোন কথা নেই। তোমার চিন্তাভাবনাকে তোমার মস্তিষ্কের যৌক্তিক দিক থেকে সরিয়ে মস্তিষ্কের সৃষ্টিশীল দিকে নিয়ে আসাই কবিতা লেখার মূল লক্ষ্য। এর ফলে একদম নতুন আঙ্গিকে তুমি সমস্যাটিকে দেখতে পারবে। এক্ষেত্রে কবিতা লেখাটাই মূল কথা, তুমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না করলে কবিতাটি কাউকে দেখাতেও হবে না।
৩। ছবি আঁকা:
ছবি আঁকাও মস্তিষ্কের সৃষ্টিশীল অংশের কাজ। এই কাজটিও কোন সমস্যাকে মস্তিষ্কের যৌক্তিক দিক থেকে দেখার বদলে সৃষ্টিশীল দিক থেকে দেখতে সাহায্য করে। এছাড়াও কোন সমস্যাকে চিত্রিত করলে আমাদের ভাবনার মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
৪। নতুন ধরণের উপন্যাস পড়া:
বই পড়া আমাদের মননকে সমৃদ্ধ করার সর্বোৎকৃষ্ট উপায়গুলোর একটি। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়া সহজ। এমন একটি বই পড়তে হবে, যেই বইটি তুমি সাধারণত পড়তে না। যদি তোমার বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী পছন্দ হয়, তাহলে একটি রহস্য কাহিনী পড়ো।
শুধু উপন্যাসের কাহিনী নয়, লেখককে কী ধরণের সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়, সেদিকেও নজর দাও। যেমন, রূপকথার লেখক কীভাবে তোমার জাদুর প্রতি অবিশ্বাসকে পাশ কাটিয়ে তোমাকে গল্পের প্রতি আকৃষ্ট করে, সেদিকে নজর দাও। সেসব সমস্যাকে তোমার নিজের জীবনের সমস্যার সাথে তুলনা করো।
৫। শেষ থেকে শুরুর দিকে চিন্তা করা:
এভাবে কাজ করলে আমাদের মস্তিষ্কের চিরাচরিত কার্যকারণ সম্পর্কিত ধারণার মাঝে পরিবর্তন আসে। উদাহরণ দিয়ে বিষয়টা বোঝানো যাক- যেমন ধরো, কোন একটি লক্ষ্যের কথা চিন্তা করো এবং ক্রমাগত তার আগে তোমাকে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে, সে বিষয়ে চিন্তা করো।
৬। কোন বাচ্চার কাছ থেকে উপদেশ নেওয়া:
বাচ্চারা নির্ভয়ে তাদের মনে যা আসে, তাই বলে। তারা সমাজের কোন রীতিনীতির ধার ধারে না। এ ধরণের চিন্তা-ভাবনা অনেক সময় আমাদের চিন্তাভাবনার জন্য সহায়ক। কোন বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করো যে তারা একটা সমস্যা ঠিক কীভাবে সামলাতো অথবা আশেপাশে কোন বাচ্চা না থাকলে বাচ্চারা কীভাবে সমস্যাটাকে দেখতো, সেটা ভাবতে চেষ্টা করলো।
পোলক তাঁর কাজের সময় ভুলকে স্বাগত জানান
বাচ্চাটি যা বলছে, তা-ই করতে হবে, এমন কোন কথা নেই। তবে, তার কথা শুনে নিজের চিন্তা-ভাবনা করার চিরাচরিত পদ্ধতিকে পরিবর্তন করা সম্ভব।
৭। এলোমেলোভাবে কাজ করা:
জ্যাকসন পোলক যখন আঁকেন, তখন তিনি ইচ্ছা করেই এলোমেলোভাবে কাজ করেন। পোলক তাঁর কাজের সময় ভুলকে স্বাগত জানান এবং সেগুলোকে নিজের কাজের অংশ হিসেবে কাজে লাগান। একইভাবে তোমার জীবনে যদি এলোমেলোভাবে কাজ করো, তবে তুমি তোমার দৈনন্দিন জীবনের গতানুগতিক ধারার বাইরেও নতুন কিছু করতে পারবে।
জীবনের হরেক রকম সমস্যার সমাধান করতে আজকে থেকেই নিজের চিন্তাভাবনাকে প্রসারিত করার প্রচেষ্টা শুরু করে দাও!
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন